তোমায় হৃদয় মাঝে রাখবো (১ম খণ্ড) – Premer golpo new Bangla: হঠাৎ কেউ এসে দাড়ালো নিলার সামনে। অন্ধকারে ভালো বুঝছে না কিন্তু এই রাতে কে এলো রুমে। চিৎকার করতে যাবে ওমনি মুখ চেপে ধরে।
পর্ব ১
ভার্সিটির সবার সামনে কানে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে নিলা চোখ দিয়ে টুপ টুপ করে পানি পরে যাচ্ছে। ভার্সিটির সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন এখানে সুটিং হচ্ছে সবাই হাসি তামাশা করছে। আর নিলা লজ্জায় মাথা উচু করতে পারছে না। সবাই দাঁড়িয়ে দেখছে কোন কিছু বলছেন।
মেয়েটির নাম নিলা আক্তার। গরীব পরিবারের মেয়ে। বাবা কৃষি কাজ করে নিলা পড়ালেখায় অনেক ভালো তাই পড়ানোর আগ্রহটা ও বেশি নিলাকে পরাতে চাই তাই তো কষ্ট করে হলে ও ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে। আজই গ্রাম থেকে এসেছে এসেই এমন এক অবস্থায় পরেছে। নিলা দেখতে অসম্ভব সুন্দর, চুল গুলো লম্বা, গায়ে রং হলুদ ফর্সা। অনেক নরম মনের যখন তখন যাকে তাকে বিশ্বাস করে ফেলে লেখা পরা ছাড়া আর কোন কিছু বুঝে না। গরীব হলেও অনেক আদরের নিলা সবার চোখের মনি।
কিছুক্ষণ আগে ….
নিলা এতো বড় ভার্সিটি দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে আর ভাবছে এতো বড় ভার্সিটিতে পরবো আমি চার পাশে দেখছে আর খুশি মনে হাটছে। কতো ছাএ ছাএী ঘুরে বেরাছে আশে পাশে বড় বড় বিল্ডিং। মাঠ দিয়ে হেটে যাচ্ছে আর সপ্নের রাজ্যের কথা ভেবে চলেছে একটু পর পর চোখের চশমাটা ঠিক করছে এটা নিলার একটা অভ্যস ধরতে গেলে। নিলার ইচ্ছে ছিল এমন বড় ভার্সিটিতে লেখা পড়া করার আজ তা পূরণ হতে যাচ্ছে ভাবতেই খুশি লাগছে।
হঠাৎ কারো সাথে ঠাস করে করে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে গেলাম। সপ্নের কথা ভাবতে ভাবতে একটু বেশি অন্যমনষক হয়ে গেছিলাম। নিচে পরে উপরে তাখাতে ও পারলাম না তার আগেই কেউ ঝরের গতিতে আমাকে উঠিয়ে ঠাস করে গালে চর বসিয়ে দিল আমি গালে হাত দিয়ে সামনের মানুষটার দিকে তাকিয়ে আছি। একটা মেয়ে অনেক ইসটাইলিস ছোট্ট একটা টপস আর পান্ট পরে আছে গায়ে রং ফর্সা রাগী ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
~ তোর তো সাহস কম না আমাকে ধাক্কা দিস আমাকে?
আরো কয়েকটা ছেলে মেয়ে ছুটে এলো মেয়েটার কাছে।
~ জুলি কি হয়েছে রে (রনি)
~ এই রাসকেল মেয়েটার জন্য আমি পরে গেছিলাম ওর সাহস কি করে হলো আমাকে ধাক্কা দেওয়ায়। (জুলি)
~ কে এই মেয়ে নতুন মনে হচ্ছে (নিলা কে দেখিয়ে ঐশি জুলির ফ্রেন্ড)
~ ওকে আমি (জুলি)
~ দাড়া জুলি এই নতুন হলে তো আমরা এর একটু র্যাগিং করাতেই পারি কি বলিস।
(আশিক)
~ হুম ঠিক বলেছিস জুলির শাস্তিটা ও হয়ে যাবে (রনি)
~ কিন্তু জয় তো এখনো আসে নাই ওকে ছাড়াই কি করবি (অভি)
~ ও আসলে করতে দিব নাকি ওর আসার আগেই করতে হবে (রনি)
নিলা ওদের কথার কোন কিছু বুঝতে পারছে না কি র্যাগিং কি বলছে ওর মাথায় ঢুকছে না। গালে হাত দিয়ে ভাবছে আমাকে কেন মারলো আমি কি ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছি। অনেক কষ্ট লাগছে কিন্তু কিছু বলতে পারছি না চুপ করে আছি।
~ এই যে মেয়ে তোমার নাম কি? (অভি)
~ নিলা (একটু তুতলিয়ে)
~ একটু দেখে চলতে পারলে না এখন তো ওরা তোমার শাস্তি দেবে। (অভি)
আমি কথা গুলো ভাবছিলাম হঠাৎ ওই ছেলে এসে গুলো বলল ওই মেয়েরা সবাই আমার দিকে অসছে দেখে আবার তাদের কাছে চলে গেল। এতো জোরে থাপ্পড় দিয়েছে আবার শাস্তি দেবে কেন। সবাই আমার কাছে এসে নাম কি, বাড়ি কোথায়, কিসে পরি সব জিগ্গেস করতে লাগল। তারপর আমাকে গান গাইতে বলল, আমি গান পারি না বলাতে আমাকে কানে ধরিয়ে রেখেছে।
এদিকে….
জয় আজ একটু দেরি করে ভার্সিটিতে এসেছে। এসেই দেখে সবাই ভীড় করে দাঁড়িয়ে আছে জয় আসার সাথে সাথে সবাই ভীড় কমিয়ে চলে গেল আর। সব মেয়েরা হা করে তাকিয়ে আছে কারণ জয় হচ্ছে ভার্সিটির ক্রাশ বয়। সব মেয়েরা জয়ের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। জয় গাড়ি থেকে নেমে ওর ফ্রেন্ডদের দিকে যেতে লাগল।
পর্ব ২
দূর থেকে লক্ষ্য করেছে একটা মেয়ে কানে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। জয় তা দেখে একটু রেগে যাচ্ছে কারণে ও যানে ওর ফ্রেন্ড রা র্যাগিং করায়। এটা ও নিশ্চয়ই তাই ওদের এতো মানা করার পর ও আমি একটু লেট করে এসেছি আর এসব শুরু করেছে। জয়কে আসতে দেখেই তো ওর ফ্রেন্ডরা সবাই ভয় পেয়ে যায়।
রনিঃ জুলি ওই দেখ জয় আসছে এই মেয়েকে তারাতারি যেতে বল ন য়লে আমাদের সবার খবর করে ছারবে জয়। (ভয়ে ভয়ে)
ঐশিঃ হুম এই মেয়ে কান ছার তোমার শাস্তি শেষ যাও এবার? (জোর)
জুলিঃ ওফ এই জয় কে এতো ভয়ের কি আছে এখন আমরা র্যাগিং করালে বকে ঠিক আছে কিন্তু এখন তো একে আমি আমাকে ধাক্কা দেওয়ার শাস্তি দিচ্ছি এতে জয় কিছু বলবে না। (খুশি হয়ে)
ঐশিঃ আহ জুলি বকা কয়টা খেলে কি তুই শান্তি হবি তাই বল।
জুলিঃ এই মেয়ে কান ছেরু না আর কিছু ক্ষণ থাক।
রনিঃ আমার কিন্তু মনে হয় এখন একে যেতে দেওয়াই ভালো।
সবাই বলছে নিলাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু জুলি আরও কিছুক্ষণ রাখবে তার শাস্তি নাকি শেষ হয় নি। সবাই তো ভয়ে ভয়ে আছে জয় এসেই চিৎকার করে বলতে লাগল,
জয়ঃ এখানে কি হচ্ছে এসব (রেগে সবার দিকে তাকিয়ে)
জয় একবার নিলার দিকে তাকালো সিমপুল একটা ড্রেস মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে মুখ বুঝা যাচ্ছে না। জয় একবার তাকিয়ে অভির দিকে তাকাল,
জুলিঃ ও বেবি তুমি চলে এসেছো? (জয়ের কাছে এসে ন্যাকামি করে)
জয়ঃ আমি তোদের এসব করতে বারণ করেছিলাম না (চিৎকার করে)
জুলিঃ ওদের কেন বকছো জয় তুমি জানো এই মেয়ে টা কি করেছে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল। একে আমরা র্যাগিং করাচ্ছি না আমি শাস্তি দিচ্ছি তুমি খুশা হয়েছো বেবি?
জয়ঃ হোয়াট (চিৎকার করে এ সামান্য কারণে এই মেয়েটাই পারে মন চাইছে)
হঠাৎ খেয়াল করলো ওই মেয়েটা পরে যাচ্ছে জয় দৌড়ে গিয়ে ধরে ফেলে। মেয়েটার মুখ আমার বুকে এসে পরেছে। এতোক্ষণ মাথা ওরনা দিয়ে ঢাকা ছিলো পরে যাওয়াতে ওরনা পরে যায় মাথা থেকে আর লম্বা কালো বেনি করা চুল বেরিয়ে পরে অনেক লম্বা, ছোট বেলা থেকেই জয়ের লম্বা চুল পছন্দ জয়ের আম্মুর ও লম্বা চুল, জয় মুগ্ধ হয়ে চুল দেখছে হঠাৎ মনে পরলো মেয়েটা নরছে না কেন বুকের উপর থেকে মাথা উঠিয়ে দেখল মেয়েটার চোখ বন্ধ তাহলে কি অগ্যান হয়ে গেল।
মুখের দিকে তাকিয়ে অন্য এক জগত হারিয়ে গেল জয় এতো মায়াবী দেখতে কারো চেহারা হতে পারে জয়ের জানা ছিল না। একে বারে নিষ্পাপ লাগছে চোখ গুলো ফুলে লাল হয়ে গেছে মনে হয় কান্না করেছে। গায়ের রং হলুদ ফর্সা ঠোঁট নিচের তিলটা আরও বেশি আকর্ষণ করেছে জয়কে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। আশেপাশের কেউরি খেয়াল নেই হঠাৎ কানে কারো আওয়াজে বাস্তবে ফিরলো,
জুলিঃ ওফ জয় তুমি এই নোংরা মেয়েটা টাচ করলে কেন ছারু একে ছারু। (এমন ভাবে বলছে যেন পৃথিবীর সব চেয়ে নোংরা জিনিস নিলা জুলি হাত জয়ের দিকে বারিয়ে)
জয় আগুন চোখে একবার জুলির দিকে তাকিয়ে, মেয়েটার যদি কিছু হয় তোদের একটা কেউ ছারবো না। আর অভি তুই আমাকে জানাতে পারতি কিছু তুই কি করে এসব দেখলি।
অভিঃ আসলে
জয়ঃ আর আসলে নকলে করতে হবে না তোরা সবাই সমান একটা মেয়ে হয়ে আরেকটি মেয়ের সাথেকি করে করলি এগুলো জুলি? অভি আমার সাথে আয় তো।
জয় আর কিছু না ভেবে নিলা কে কোলে উঠিয়ে হাটতে লাগে। অভি ওর পেছনে পেছনে আসছে, আর এদিকে জুলি রাগী ভাবে দেখছে সব এই সামান্য একটা মেয়ের জন্য আমার সাথে এমন করলো জয় আর এতো আদিক্ষেতা কিসের বুঝি না। জুলি ও গেল সাথে সাথে সবাই গেল জয় দের পেছনে।
জয় নিলাকে নিয়ে ওর গাড়ির ভেতরে শুয়িয়ে দিলো, এই যে মেয়ে চোখ খুলো
গালে হাত দিয়ে ডেকে যাচ্ছে কিন্তু নিলার কোন সারা শব্দ নেই। গাড়ি থেকে পানির বতল বের করে পানি ছিটিয়ে দিলো মুখে।
নিলা ঠান্ডা কিছু মুখে পরায় ধরফরিয়ে উঠে বসলো, আর উঠেই সামনে একটা অপূর্ব সুন্দর ছেলেকে দেখলো যে ওর খুব কাছে বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। কে এই ছেলে আর আমি তো মাঠে ছিলাম। এখানে কি করে এলাম ছেলেটাকে ভালো করে দেখে মনে হচ্ছে অনেক ধনী ঘরে দেখতে এতো সুন্দর ভাষা প্রকাশ করতে পারবো না। নীল কালারের শার্ট পরে আছে আর সাদা দবদবা ফর্সা। এতো ফর্সা আমি আগে কখনো কাউকে দেখেছি নাকি জানা নেই। গালে খোচাখোচা দাড়ি চুল গুলো কতো সুন্দর। অনেক সুন্দর যাকে বলে হঠাৎ ছেলেটির কথায়,
জয়ঃ তুমি ঠিক আছ?
আমিঃ (কথাগুলো এতো সুন্দর করে বলছে। আমি মাথা দিয়ে হুম জানালাম) আমি এখানে কেন আমি তো
আর বললাম না বাইরে তাকিয়ে দেখি এটা মাঠেই কিন্তু এটা একটা গাড়ি।
জয়ঃ তোমার নাম কি আর কিসে পর?
আমিঃ আমি নিলা আমি এবার এখানে ভর্তি হয়েছি।
জয় কথা বলে এটা বুঝতে পারছে মেয়েটা ফাস্ট ইয়ারে পরে। এটা ও যে মেয়েটা অনেক বোকা নয়লে কেউ বললেই কি এমন কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।
জয়ঃ কোন বিভাগে।
আমিঃ অর্থনীতি
জয় একটু অবাক চোখে তাকালো অর্থনীতি তে পড়ে দেখে তো বোকা সোকা সে অর্থনীতি বিভাগে ভাবা যায়।
হঠাৎ কিছু খুজতে লাগল নিলা।
জয়ঃ কি খুজছো?
নিলাঃ আমার চশমা টা!
জুলি এসব ন্যাকামি অসহ্য লাগছে দেখছে আর জলছে কিছু বলতে পারছে না। জয় এমনি তেই রেগে আছে কিছু বললে আরও রেগে যাবে তাই চুপ করে থাকায় ভালো।
চারপাশে হণ হয়ে খুজছে নিলা চশমা টা এটা ওর বাবা দিয়েছিলো কিনে অনেক কষ্ট করে। হারিয়ে গেলে বাবার দেওয়া সৃতিটা হারিয়ে যাবে না ওটা খুজে পেতেই হবে।
জয় হতো খুজতে দেখে ভেবেছিল হয়তো অনেক দামি হবে চশমা টা তাই নিজেও খুজত লাগে আর পেয়ে ও যায়।
জয়ঃ দেখো তো এটা কিনা (চশমা দেখিয়ে)
নিলাঃ (ছুটে এসে কান্না করে দেয় চশমা টা নিয়ে) হুম এটাই;
জয় অবাক হয় কারণে ও ভেবেছিল চশমাটা অনেক দামি হয়তো তাই এমন কান্না করছে কিন্তু না চশমাটা একে বারে নিম্ন দামের। অদ্ভুত মেয়েটি এক দম সাদাসিধ কোন অভিযোগ ও করলো না কারো বিষয়ে।
নিলা পুরো ভার্সিটি খুজে ও ক্লাস কোনটা ওর খুজে পেল না। কেউ ওর সাথে কথা বলে না কথা বলতে গেলে এরিয়ে যায় কারণ ও বুঝেছে সবাই ভালো ভালো ড্রেস পরে এসেছে একমাত্র ওইই কম দামি সবার থেকে খারাপ ড্রেস সবাই অনেক ইসমাট। হতাশ হয়ে দাড়াল, হঠাৎ কেউ পেছনে থেকে বলে উঠলো, এনি প্রবলেম?
পর্ব ৩
জয় ফ্রেন্ড দের সাথে বসে আছে যেখানে ওরা আড্ডা দেয়। সবাই জয় কে খেয়াল করছে কেমন যেন অন্য মনষ্ক লাগছে জয় কে কিন্তু কেউ কিছু বলছে না। কারণ জয় এমনিতেই রেগে আবার কিছু বলে বকা খেতে চায় না তাই সবাই চুপ করেই আছে। আর জুলি রেগে জয়ের দিকে একবার তাকাছে তো ভাবছে ওই মেয়েকে নিয়ে এতো আদিক্ষেতার কি আছে আমি ও ওকে শাস্তি দিয়ে ছারবো। আর জয়কে আজ একটু অন্য রকম লাগছে এমনিতে তো কোন মেয়ের ধারের কাছে ঘেষে না আর আজ মেয়েকে একেবারে কোলে তোলে নিলো।
মন চাইছে মেয়েটার মাথা ফাটিয়ে দিতে। রাগে ফেটে যাচ্ছে জুলি আর পাশে বসে আর ও রাগীয়ে তুলছে ঐশি।
ঐশিঃ এতো দিন ধরে জয়ের পেছনে পরে আছিস কোন দিন তোর পাওা দিল না আর আজ ওই গাইয়া আন্সর্মাট মেয়েটার প্রতি জয়কে বেশি সিরিয়াস হতে দেখলাম এমনিতে তো কোন মেয়েকে কাছে ঘেষতে দেখলেই রাগে ফেটে যায় আর এই মেয়ে।
আর শুনতে না পেরে জুলি জোরে চিৎকার করে উঠল, ওর চিৎকার শুনে সবাই ওর দিকে অবাক চোখে তাকালো সাথে ঐশি ভয়ে সরে গিয়ে দাড়ালো। সবাই জিগ্গেস করছে কি হয়েছে কিন্তু জুলি কিছু বলছে না চুপ করে আছে।
জয় ভাবছিল মেয়েটির কথা কেন জানি মেয়েটিকে মন থেকে সরাতেই পারছে না। সেই বোকা বোকা কথা নিষ্পাপ চেহারা কিছুতেই ভুলতে পারছেনা। সেই চেহারা চোখে ভাসছে হঠাৎ জোরে চিৎকার শুনে ধ্যান ভাঙল,
জয়ঃ কি হয়েছে এভাবে চিৎকার করছিস কেন তোরা? (রেগে বেঞ্চে থেকে উঠে)
অভিঃ কি জানি হঠাৎ জুলি চিৎকার করে উঠল, এখন জিগ্গেস করছি কিন্তু কিছু বলছে না।
জয়ঃ জুলি সব সময় রেগে না থাকলে তোর হয় না তাই না। একটু আগে এক ঘটনা ঘটিয়ে এলি এখন আবার চিৎকার করছিস।
ঐশি তো ভয়েই আছে না জানি ওর কথা টা বলে দেয় তাহলে তো জয় আমাকে মেরেই ফেলবো।
জুলিঃ আমি রেগে থাকি জয় তুই এইটা বলছিস। ওই মেয়ের কোন দোষ নেই কোথায় তুই আমার পক্ষ নিবি তা না ওই গাইয়া মেয়েটার পক্ষ নিচ্ছিস। (রেগে চিৎকার করে)
জয়ঃ হ্যা নিচ্ছি কারণ আমি জানি দোষ তোর।
জুলিঃ জয় (চেচিয়ে)
জয়ঃ একদম চেচাবি না নিজের দোষ টা বুঝ সব সময় অন্য দোষারোপ করা বন্ধ করে।
জুলিঃ তুই কি দেখলি ওই মেয়ের মধ্যে যে ওর নামে কিছু বুলতে দিচ্ছিস না।
জয়ঃ তোর ফালতু কথা উওর আমি দিতে চাই না।
বলেই রেগে বেরিয়ে গেল জয়। হঠাৎ নজর যায় সিরির দিকে ওই মেয়েটা এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে।
নিলা অনেক ক্ষণ ধরে ক্লাস কোন খুজে যাচ্ছে কিন্তু চিনতে পারছে না ব্যথ হয়ে এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছিল। অনেক মেয়ে আছে আশে পাশে কিন্তু কেউ ওকে সাহায্য করছে না। সবাই এরিয়ে চলছে চোখ দিয়ে পানি পরছে এতো অবহেলা কেন করছে সবাই ভাবছে আর চশমা ঠিক করছে আবার খুলে পানি মুচছে। হঠাৎ পেছনে থেকে কেউ বলে উঠে, এনি প্রবলেম!
নিলা পেছনে তাকিয়ে দেখে ওই সময় যে ছেলেটা চশমা খুজে দিয়েছিল সেই।
নিলাঃ আপনি;
জয়ঃ হুম আমি অনেক ক্ষণ ধরে দেখছি তুমি শুধু ঘুরে চলেছো কোন প্রবলেব হয়েছে নাকি। আমাকে বলতে পারো হয়তো সাহায্য করতে পারবো।
নিলা সাহায্য করার কথা শুনে আর কিছু না ভেবে বলেই দিলো ওর প্রবলেম। একজন তো তাও জানতে চাইলো যদি সত্যি সাহায্য করতে পারে নয়তো আর ক্লাস করা হবে না।
জয়ঃ ওহ এই প্রবলেম তুমি তো কাউকে জিগ্গেস করতে পারতে।
নিলাঃ কাকে জিগ্গেস করবো কেউ তো আমার সাথে কথা বলে না (মাথা নিচু করে)
জয় ব্যাপার টা বুঝতে পারলো আর কিছু বলল না আসলে এতো ক্ষণ দেখেছে কেউ কথা বলেনি। সবাই এটিডিউট নিয়ে থাকে আর নিলা মেয়েটা যে নিম্ন পরিবারের সেটা তার ড্রেস আপেই বুঝা যায় এজন্য সবাই ইগনোর করেছে। কিন্তু জয় কিছু বললো না নয়লে কষ্ট পাবে।
~ আচ্ছা চলো আমি দেখিয়ে দিচ্ছি (জয় নিলার হাত ধরে)
কিন্তু হাত ধরাটা নিলার পছন্দ হলো না সে চুপ করে দাড়িয়ে রইল,
জয়ঃ কি হলো (ভ্র কুচকে)
নিলা হাত দেখালো জয় এতো ক্ষণ খেয়াল এই ছিলো না স্বাভাবিক ভাবেই হাত ধরেছিল কারণ এখানে ছেলে মেয়ের হাত সবাই ই ধরে কিন্তু সবাই এটা ঠিক নেয় না বুঝতে পেরে ছেড়ে দিয়ে, ওফ সরি এখন আস?
হাত ছেড়ে দিয়ে এবার যেতে লাগল জয়ের পেছনে পেছনে একবার তাকাছে জয়ের দিকে আবার নিচের দিকে আবার ভাবছে ছেলেটা অনেক ভালো আমাকে অনেক সাহায্য করলো। হঠাৎ চেচামেচি শুনে দেখলো ক্লাসের ভিতরে থেকে সব মেয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে নিলা ভাবছে আমার দিকে কেন তাকিয়ে আছে হঠাৎ দাড়িয়ে পরলো জয় একটু সামনে চলে গেছে এখন বুঝলো মেয়েগুলো ওর দিকে না ওই ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছে।
জয়ঃ কি হলো আবার দাড়িয়ে পরলে যে?
নিলাঃ কিছু না। সবাই আপনার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে।
জয়ঃ ওই সব বাদ দাও তোমার ক্লাসের সময় হয়ে গেছে চলো তারাতারি।
আমাকে ক্লাসে নিয়ে এলো দুতালায় আমার ক্লাস। আমার সাথে ভেতরে ঢুকেছিল সবাই হা করে তাকিয়ে ছিলো ছেলেটার দিকে কিন্তু কেন আমার মাথায় কিছুই ঢুকলো না। বাই বলে চলে গেল এখন আমি কোথায় বসবো সবাই অদ্ভুত নজরে আমাকে দেখছে মনে হয় আমি কোন এলিয়ন একটা মেয়ের পাশে সিট ফাঁকা বসতে গেলেই মেয়েটা নাক সিটকে একবার আমার দিকে তাকালো মনে হয় পৃথিবীর সব চেয়ে নোংরা জিনিস আমি এখন কান্না পাচ্ছে এতো ঘৃণা মানতে পারছি না। গরীব বলে আমি লেখাপড়া ও করতে পারবো না সবাই এমন কেন করছে। তার পাশে না বসে পেছনে খালি সিটে বসতে এলাম হঠাৎ একটা মেয়ে এসে দাড়ালো আর সামনে হাসি হাসি মুখ করে। আমি ভাবছি এ হাসছে কেন অপমান করবে না কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল,
~ হাই আমি সীমা তুমি চাইলে আমার পাশে বসতে পারো বসবে?
অনেক সুন্দর করে কথা বলল তাকে দেখে মনে হচ্ছে না আমাকে অবজ্ঞা করে বলছে। একজনের মুখে অন্তত ভালো করে কথা বলল আমি ও খুশি হয়ে রাজি হয়ে গেলাম।
সীমা মেয়েটার সাথেই বসলাম আমি কেউ আমাকে ভালো নজরে দেখে নি একমাত্র সীমার সাথে বন্ধুত হয়ে গেল সীমা অনেক ভালো আর ধনী পরিবারের মেয়ে দেখতে ও সুন্দর কিন্তু ধনী হলে ওমনটা অনেক ভালো। সীমার জন্য আমার ভার্সিটির প্রথম দিন সব খারাপ হলেও ভালো কাটলো।
আর খুশি হলাম কারণ সীমায় আমার রুম মেট আর ও দুজন আছে কিন্তু ওরা আমাদের সাথে মেশে না একটু অহংকারী ওরা কিন্তু একজন তো আছে। দুজন গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে পরলাম।
জয় আর কারো সাথে আড্ডা না দিয়ে নিলাকে ক্লাসে পৌঁছে দিয়ে এসে বাড়ি চলে আসে। সবাই অনেক অবাক হয়েছে করতে সব সময় লেট করে আসি আজ এতো আগে আসায়।
বাসার এসে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়েই শুয়ে পরল। সবাই অনেক প্রশ্ন করেছে কিন্তু উওর দেয় নি। এদের বুঝে উঠে না দেরি আসলে বলে তারাতারি আসতে পারিছ না আর আগে আসলে আগে কেন এলি, না না প্রশ্ন।
শুয়ে শুয়ে নিলাকে ভাবছে এতো মেয়েকে দেখিছি কতো প্রপোজ পেয়েছি কিন্তু কখনো কারো জন্য মনে একটু ও ফিলিংস আসে না আজ এই মেয়েকে কেন ভুলতে পারছি না এক দেখায় কি কাউকে ভালোবাসা যায়। খালি মন চাইছে ওর মুখে কথা শুনতে ওই ভয় পাওয়া মুখটা দেখতে আচ্ছা ওকে হাসলে কেমন লাগবে নিশ্চয়ই অনেক সুন্দর কি ও তো একটু হাসলো না আর হাসবে বা কিভাবে হাসার মতো কিছু ঘটেছে নাকি ওর সাথে।
পরদিন
নিলা আর সীমা একসাথে ভার্সিটিতে আসে সিরি দিয়ে উঠতে যাবে সীমা সামনে আছে তাই সিরি দিয়ে উঠে গেছে নিলা উঠতে যাবে হঠাৎ কারো পায়ের সাথে বেজে ঠাস করে পরে গেল।
পর্ব ৪
সীমা ঠাস করে পরার শব্দ পেয়ে পেছনে ফিরে তাকালো আর দেখলো জুলি আর নিলা নিচে পরে আছে। কিছু বুঝতে পারছে না এরা দুজন পরলো কি করে। জুলি তো পরে গিয়ে চিৎকার করছে আর নিলার মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে ব্যাথা পেয়েছে কিন্তু নিরব ভাবে আছে। আবার জুলির সাথে কথা ও বলছে সীমা দৌড়ে এলো নিলার কাছে।
নিলাঃ আপনার কি খুব লেগেছে? (জুলিকে উদ্দেশ্যে করে)
জুলিঃ ইউ তোমার জন্য আমি পরে গেছি এখন আবার জিগ্গেস করছো ব্যাথা পেয়েছি নাকি তোমাকে আমি ছারবো না।
বলেই উঠতে যাবে কিন্তু উঠতে পারে না আহ করে আবার বসে পরে।
ঐশিঃ জুলি তুই পরলি কেমনে তোর তো খালি ওই মেয়েকে ফালানোর কথা ছিলো। (কানের কাছে গিয়ে)
জুলিঃ আমি কি পরেছি নাকি ওই মেয়েটাই তো নিজে পরার সময় আমার সাথে ও ধাক্কা লাগে আর আমি ও পরে যাই (জোরে)
ঐশিঃ ওফ আস্তে বল শুনে ফেলবে তো।
সামনে তাকিয়ে দেখে নিলা আর সীমা তাকিয়ে আছে বুঝার চেষ্টা করছে হয়তো। জুলি কিছু বলতে যাচ্ছিল ঐশি থামিয়ে ওকে ধরে উঠিয়ে নিয়ে চলে গেল।
সীমাঃ তোরা পরলি কি করে বলতো।
নিলাঃ জানি না তবে আমার পায়ে কিছু বেজেছিল আমি পরে যেতে যাই হঠাৎ ওনার সাথে ধাক্কা খেয়ে দুজনেই পরে যাই।
সীমাঃ এই জুলি মেয়ে খুব ডেন্জারাস।
নিলাঃ হুম আমি জানি।
সীমাঃ তুই তো আজই দেখলি জানলি কি করে। (ভ্র কুচকে)
নিলাঃ রাতে বলব এখন ক্লাসে চল।
(বলেই উঠতে লাগল)
সীমাঃ তুই যেতে পারবি
নিলাঃ হুম তেমন ব্যাথা পায় নাই।
সীমা আর নিলা ক্লাসে চলে গেল।
এদিকে জয় সারা রাত ঘুমাতে পারে নি সব সময় খালি নিলার কথা মনে পরেছে। শুধু দেখতে মনে চাইছে তাই সকাল হওয়ার সাথে সাথে রেডি হয়ে নেয় ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য যে কিনা দশটার আগে ঘুম থেকে উঠে না সে আজ আটটার সময় রেডি হয়ে নিচে আসে। বাড়ির সবাই তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
জয়ঃ কি হয়েছে এভাবে তাকিয়ে আছো কে সবাই?
জয়ের আম্মু~ সূর্য আজ কোন দিকে উঠেছে রে মিরা আজ ডাকার আগেই উঠে পরেছে এমনি তে তো ডেকে ও উঠানো যায় না।
মিরাঃ (জয়ের ছোট বোন দশম শ্রেণিতে পরে) আমি তো তাই ভাবছি আম্মু।
জয়ঃ ওফ আমি আগে উঠলে ও তোদের প্রশ্ন আবার পরে উঠলে ও।
মিরাঃ ভাইয়া তুই সব সময় লেট করিছ তাই বলি কিন্তু আজ হঠাৎ আগে উঠাতে সত্যি শক হয়েছি।
জয়ঃ এতো শক হওয়ার কি আছে আগে উঠতেই পারি।
নানা কথা লেগে গেল জয় কোন মতে কাটিয়ে চলে এলো ওফ আগে উঠলে ও কি যন্ত্রণা দেখা যাচ্ছে এতো প্রশ্ন কেউ করে।
ভার্সিটিতে ও এসে জয়কে অনেক কথা শুনতে হয় এতো আগে আসার জন্য। কিন্তু তার তো সেদিকে খেয়াল নেই শুধু তাকিয়ে আছে গ্রেটের দিকে কখন আসবে। সবাই মিলে জোর করে কানটিনে নিয়ে গেল জয়কে যেতে চাইছিল না কিন্তু ওদের সাথে পেরে উঠে নাই। এর মাঝে নিলা রা আসে তাই আর দেখা হয় না। জয় ব্যথ হয়ে মন খারাপ করে বসে আছে আর ভাবছে তাহলে কি আজ আসবে না।
অভিঃ কি রে মন খারাপ করে আছিস কেন আর গ্রেটের দিকে তাকিয়ে আছিস কেন?
জয়ঃ ও কি আজ আসবে না।
অভিঃ ও টা আবার কে (ভ্র কুচকে)
জয়ঃ নিলা
অভিঃ এই নিলা আবার কে ওহ মনে পরেছে কালকের ওই মেয়েটা না? (অবাক হয়ে কারণ কখনো জয়ের মুখে কোন মেয়ের কথা শুনে নি আজ হঠাৎ) কি হলো বল?
জয়ঃ হুম জানি না কেন জানি শুধু ওর কথা মনে পরতেছে সারা রাত আমি ঘুমাতে ও পারি নি ওর ওই অসহায় মুখ বোকা বোকা কথা আমাকে পাগল করে দিচ্ছে কিছু তেই মন থেকে সরাতে পারছি না।
অভি অবাক হয়ে জয়ের কথা গুলো শুনছি না,
জয়ঃ কি হলো কিছু তো বল
অভিঃ ভাই তুই প্রেমে পরেছিস?
(খুশি হয়ে)
জয়ঃ দূর কি বলিস এসব আমি আর প্রেম অসম্ভব।
অভিঃ অসম্ভব এখন সম্ভব হয়ে গেছে তুই প্রেমে পরেছিস এটাই সিউর আর ওই নিলা মেয়েটার ই তাই তো ওকে ভুলতে পারছিস না।
জয়ঃ এক দেখাতে কেউ প্রেমে পরে না।
অভিঃ পরে ভাই পরে যেমন তুই পরেছিস।
দুজনে কথা কাটাকাটি করলো জয় বিশ্বাস করছে না প্রেমে পরেছে। কিন্তু অভি সিউর প্রেম পরেছে কিন্তু বুঝাতে পারছে না পরে বলল সামনে দেখা যাবে প্রেমেপরেছো নাকি।
নিলা আর সীমা দুইটা ক্লাস শেষ করে এখন ক্লাস না এক ঘন্টা পরে আছে তাই বাইরে বেরিয়ে এলো। কোথায় যাবে নিলা ভাবছে সীমা বলছে কানটিনে গিয়ে খেতে কিন্তু নিলার যাওয়া ইচ্ছে নেই কারণ কানটিনে গিয়ে বারতি খরচ করতে চায় না ও তাই না করা দিলো কিন্তু সীমা মানছে না সে এখন যাবেই তার নাকি খিদে পেয়েছে।
নিলা বলছে তাকে একা যেতে কিন্তু না সে নিলাকে ছাড়া যাবে না কি মহা বিপদে পরলো এখন গেলেই তো টাকা খরচ হবে আর নিলার কাছে টাকা ও নাই। কিন্তু সেটা তো আর সীমাকে বলা যায় না সীমা টেনে নিয়ে যেতে লাগল।
কানটিনে বসে আছে সীমা অনেক কিছু অর্ডার করছে আর নিলাকে ও অর্ডার করতে বলছে কিন্তু নিলা বলেছে আমার খিদে নেই তুমি খাও। আর কিছু না বলে সীমা অর্ডার দিলো অনেক কিছু নিলা ভাবছে, এতো খাবার খাবে মেয়ে টা কি করে। আমি একপাশে আর সীমা অন্য পাশে।
কথা গুলো ভাবছিলাম হঠাৎ কেউ এসে আমার পাশে বসলো ঘুরে দেখি কালকের সেই ভাইয়াটা। আমি তাকানোর সাথে সাথে একটা হাসি দিয়ে, হাই বলল।
ভাইয়াটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে কাল কৃতজ্ঞার জন্য হলে ও তাকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।
আমি ও একটা হাসি দিলাম।
জয়তো নিলার হাসি দেখে মুগ্ধ হয়ে আছে এতো সুন্দর হাসি আগে কখনো দেখেছি কিনা জানা নেয়। হা করে তাকিয়ে আছে নিলার দিকে আজ সাদা ড্রেস পরেছে চুল গুলো বেনি করা মুখে কোন সাজ নেয় ওরনা দিয়ে মাথা ডেকে আছে এতো সুন্দর লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না। আর একটু পর ফর চশমা ঠিক করে এইটা এতো ভালো লাগে।
নিলাঃ ধন্যবাদ ভাইয়া!
জয়ঃ (ভ্র কুচকাল হঠাৎ ধন্যবাদ কেন বুঝছে না আবার ভাইয়া ডাক শুনে রাগ ও হলো) কেন
নিলাঃ আপনি কাল অনেক সাহায্য করেছে নয়তো কি যে হতো আমি তো।
জয়ঃ সামান্য কারণে ধন্যবাদ দেওয়ার দরকার নেই। তোমরা কি খেতে এসেছো।
সীমা তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর থেকেই শুনেছে। সব মেয়েদের ক্রাশ জয় সে কাউকে পান্তা দেয় না মেয়েদের সাথে তো মেশেই না। শুধু নিজের দলে লোক বাদে সে নিলার সাথে এতো ভালো করে কথা বলছে কেন। সীমা উওর দিলো বলল, হুম।
সাত দিন কেটে গেল নিলার ভার্সিটিতে ভালোই কাটছে
এর মাঝে জয়ের সাথে ও অনেক ভালো সম্পর্ক হয়েছে।
আজ ভার্সিটিতে নবীনবরণ।
সীমা শাড়ি পরে যাবে বলে নাচছে। কিন্তু আমাকে ও শাড়ি পরতে হবে কিন্তু আমার কাছে এখন শাড়ি নেই। ওকে বললাম তুই পর না আমার তো শাড়ি নেই আমি কি পরবো। ও বলল, সমস্যা নাই আমার দুইটা শাড়ি একটা তুই আরেকটি আমি।
সীমার কাছে লাল আর হলুদ গোলাপি রং এর শাড়ি আমাকে বলল, আমি কোনটা পরবো আমি না করছি চয়েজ ও করছি না চুপ করে বসে আছি।
জোর করে আমাকে লাল শাড়ি পরিয়ে দিল। নিজেই সাজিয়ে দিলো চুল ছারতে বলেছিল আমি বেধে রেখেছি কারণ আমার চুল ছারলে ভালো লাগে না।
সীমাঃ যা লাগছে না আজ সব ছেলেরা তোর দিকে হা করে তাকিয়ে থাকবে দেখিস।
নিলাঃ (ওর মাথায় ঠোকা দিয়ে) দূর কি বলিস এসব তোকে অনেক সুন্দর লাগছে আমি সুন্দর নাকি।
সীমা আমাকে আয়নার সামনে নিয়ে দাড় করিয়ে।
সীমাঃ দেখতো কতো সুন্দর লাগছে তোকে আমি তো চোখ ফিরাতে পারছি না।
নিলা আয়নার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে আছে সত্যি অন্য রকম লাগছে দেখতে নিজেই নিজেকে দেকে চিনতে পারছি না। আগে কখনো এতো সাজ সাজা হয় নি তাই।
জয় ভার্সিটিতে এসেই আশে পাশে নিলাকে খুজছে। আর মাঝে এসে জুলি বলতে লাগে, দেখতে আমাকে কেমন লাগছে।
জুলি আজ একে বারেই শট ড্রেস পরে এসেছে পুরো পা দেখা যাচ্ছে উপর হাতা ছাড়া টপস।
জয় একবার তাকিয়ে বিরক্তি নিয়ে গ্রেটের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে, অপূর্ব
জুলি তো ভাবছে ওকে বলেছে ও খুশি হয়ে।
জুলিঃ অন্য দিকে তাকিয়ে বলছিস কেন আমার দিকে তাকিয়ে বল।
হঠাৎ জয় রেগে সামনে এগুতে লাগে রাগে ফেটে যাচ্ছে ওর সামনে এমন কি দেখবে ভাবে নি রেগে নিলাদের দিকে যেতে লাগে।
পর্ব ৫
নিলা আর সীমা ভার্সিটিতে ঢুকছিল কথা বলতে বলতে হঠাৎ নিলার সামনে একটা ছেলে হাটু গেরে বসে পরলাম হাত গোলাপ। সীমা আর নিলা তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
সীমাঃ কি বলেছিলাম না;
নিলার এইসব একদম ভালো লাগে না ও ভীতু চোখে তাকিয়ে আছে ছেলেটির দিকে। ছেলেটির গায়ের রং শ্যামলা লম্বা আর একেবারে চিকনা টাইপের নিলার দিকে তাকিয়ে একটা ইয়া বড় হাসি দিলো যা দেখে নিলা অসহায় চোখে সীমার দিকে তাকালা আর সীমা তো হাসতে হাসতে শেষ।
ছেলেটি : আই লাভ ইউ তোমাকে প্রথম দেখেই আমি ভালোবেসে ফেলেছি। তোমার জন্য আমার তরফ থেকে এই লাল গোলাপ ফুল টা নিয়ে আমাকে ধন্য করো জানু। (ফুলটা নিলার দিকে ধরে আরেকটা হাসি দিল) তোমাকে না পেলে আমি মরে যাব। তোমার জন্য আমি সব কিছু করতে রাজি তবুও তুমি রাজি হয়ে যাও জানু।
সীমা তো পাশে দাড়িয়ে মজা নিচ্ছে আর নিলা তো ভীতু চোখে সীমার দিকে তাকিয়ে, কিছু তো কর।
সীমাঃ সব করতে পারবে তো ভেবে বলছেন। (ছেলেটির দিকে তাকিয়ে)
ছেলেটি: হ্যা সব করতে পারবো।
সীমাঃ ওকে তাহলে কিছু একটা করে দেখান কেমন যদি পারেন তো ও রাজি। (নিলার দিকে তাকিয়ে) কি রে ঠিক বলছি না।
নিলাঃ কি বলছিস এসব। (রেগে সীমার দিকে তাকিয়ে)
সীমাঃ তুই মাথা নারা কথা বাদ দিয়ে।
নিলাঃ না আমি
সীমাঃ দূর বোকা। ও রাজি আমি বলি কি করতে হবে আপনি কানে ধরে এক পা উচু করে পুরো ভার্সিটিতে ১০০ টা ঘুরান দেন। যদি দিতে পারেন তাহলে ও রাজি তাই নারে নিলা। (নিলার দিকে তাকিয়ে একটা চোখ টিপ দিয়ে)
নিলা তো হা করে তাকিয়ে আছে সীমার দিকে। ও ভাবতেই পারেনি এমন কিছু বলবে।
জয়ের সামনে জুলি নাচানাচি করেই যাচ্ছে কিন্তু জয়ের সে দিকে খেয়াল নেই সে তাকিয়ে আছে গেটের দিকে কখন দেখবে তার মায়াবতী কে সব সময় খালি তাকেই দেখতে মন চাই। তখন অস্বীকার করলে ও আস্তে নিলার প্রতি বেশি দূর্বল হয়ে যাচ্ছে সব সময় শুধু ওর কথা ই মনে পরে।
হঠাৎ গেট দিয়ে নিলাকে ঢুকতে দেখলে লাল শাড়ি এসেছে। হা করে তাকিয়ে আছে এতো সুন্দর লাগছে বলে বুঝানো যাবে না কিন্তু একটা জিনিস কমতি লাগছে চুল বেধে এসেছে। খুশি মনেই তাকিয়ে ছিল হঠাৎ একটা ছেলে গোলাপ নিয়ে ওর সামনে বসে পরল,
যা দেখে জয় রেগে আগুন হয়ে গেলে ওই ছেলের সাহস কি করে হলো আমার মায়াবতীকে ফুল দেওয়ার।
রেগে ওই দিকে যেতে লাগল,
জুলি জয়ে কে এটা ওটা বলেই যাচ্ছে হঠাৎ দেখলো জয় ওর কথা না শুনে গেটের দিকে যাচ্ছে তাকিয়ে দেখে ওই মেয়েটা সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে রেগে তাকিয়ে নিজে ও যেতে লাগল আর ভাবতে লাগল,
জয়ের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে আগে যে কিনা কোন মেয়েদের সাথে কথা বলতো না এখন সেই ই মেয়ের সাথে এতো মেশে আমাদের সাথে ও থাকে না বেশি। এই মেয়ের মধ্যে কি পেয়েছে জয় গাইয়া আনকালচার একটা। দেখলেই গা জলে যায়।
জয় গিয়ে কিছু বলবে তার আগেই ছেলেটা দৌড়ে পালায়। জয় ভ্র কুচকে তাকিয়ে আছে ছেলেটার দিকে সে জানলো কি করে আমি ওকে মারতে আসছি পেছনে হাসির শব্দ পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে সীমা আর নিলা হাসছে। জয় অবাক হয়ে ওদের দিকে।
জয়ঃ কি হয়েছে তোমরা হাসছো কেন?
সীমাঃ আর বইলেন না ভাইয়া ওই ছেলেটারে যে কথা বলছি আর আসবো না প্রেম করতে।
জয়ঃ কি বলেছো।
সীমাঃ (সব বলল)
জয় ও হাসছে ওর কথা শুনে হঠাৎ খেয়াল করলো নিলা হাসি থামিয়ে চুপ করে আছে মুখে চিন্তার ভাব। আরেকটা জিনিস খেয়াল করল আজ নিলা চশমা পরে নি চশমা ছাড়া আর ও সুন্দর লাগছে চোখে মোটা করে কাজল পরেছে।
জয়ঃ তোমার কি কোন প্রবলেম হচ্ছে?
নিলা জয়ের আওয়াজ শুনে একবার তাকালো আবার চোখ নামিয়ে নিলো তার পর সীমাকে কাছে ডাকলো।
সীমাঃ কি হয়েছে?
নিলাঃ দেখ
শাড়ি দেখিয়ে আসলে নিলার শাড়ি খুলে গেছে কুচি সীমা ও চিন্তায় পরে গেল মাঠের মাঝখানে থেকে কি করবো।
জয় দেখলো দুজনের মুখে চিন্তার ছাপ এগিয়ে এসে জিগ্যেস করলো। সীমা বলতে যাবে নিলা মানা করলো তার লজ্জা লাগে অন্য কাউকে এই কথা বলতে। জয় হঠাৎ নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে শাড়ির কুচি খুলে যাচ্ছে এখন আর বুজতে অসুবিধা নেই কি হয়েছে।
জয় ওদের কাছ থেকে নিজের গাড়ির নিয়ে এলো।
জয়ঃ গাড়িতে গিয়ে ঠিক করে এসো।
নিলা অবাক হয়ে কাজ দেখছিল আসলে ই এনার মাথায় বুদ্ধি আছে। নিলা ভিতরে চলে গেল।
সীমাঃ তুই ঠিক কর আমি সে পযর্ন্ত কমন রুমে থেকে আসছি।
নিলাঃ আচ্ছা।
সীমা চলে গেল। জয় বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ভিতরে থেকে দরজা লাগানো শিখিয়েছে দিয়েছে নিলাকে। অনেক ক্ষণ হয়ে গেল বের হচ্ছে না নিলা। এতো সময় লাগে নাকি আরও কিছু ক্ষণ পর জয় বাইরে থেকে গাড়ির জানালায় ঠুকার শব্দ পেল দেখলো নিলা ধাক্কা দিচ্ছে। মুখে চিন্তার ভাব জয় তো ভয় পেয়ে গেলে।
জয়ঃ নিলা কি হয়েছে এমন করছ কেন তোমার হয়ে গেলে বেরিয়ে আস।
নিলা কিছু বলছে কিন্তু বুঝা যাচ্ছে না গাড়ি জানালা আটকানো ভিতরে কথা শুনা যাচ্ছে না। জয় অনেক কিছু বলল কিন্তু নিলা হয়তো শুনছে না কি করবে এখন আরেক প্রবলেম হঠাৎ মাথায় এলো সামনের দরজা খুলে ভিতরে গিয়ে দেখে এসির মধ্যে ও নিলা গেমে একাকার হয়ে গেছে।
জয়ঃ নিলা তুমি ঠিক আছ কি হয়েছে তোমার।
নিলাঃ (কান্না করে দেয়)
জয় তো ভয় পেয়ে যায় নিলা র কান্না দেখে সামনে সিটে থেকেই পেছনে সিটে নিলার পাশে গিয়ে বসে।
জয়ঃ বলো কি হয়েছে।
নিলা কিছু না বলেই জয় কে আচমকা জরিয়ে ধরে কান্না করতে লাগে। জয় বারবার জিগ্যেস করছে কি হয়েছে কিন্তু নিলা কিছু বলছে না। জয় নিলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগে।
জয়ঃ বলো আমায় কি হয়েছে
নিলাঃ আমি দরজা খুলতে পারছিলাম না। (জরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে)
জয়ঃ (হাসবো নাকি কাদবো বুজতে পারছি এই সামান্য কারণে) এই জন্য কান্না করেছো।
নিলাঃ হুম
জয়ঃ দূর পাগলি এর কাদতে হয় নাকি।
নিলাঃ আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম।
জয়ঃ ভয় পেয় না আমি আছি না।
বলেই জরিয়ে ধরলো। নিলা ভয়ে কি করছিল খেয়াল ছিলো না নিজেকে স্বাভাবিক করে বুঝতে পারলো কি করছিল সঙ্গে সঙ্গে জয়কে ছারিয়ে সরে বসলো। লজ্জা কাজ করছে নিলার মধ্যে ছি ছি কি ভাবে জরিয়ে ধরলাম কি ভাবছে আমাকে নিশ্চয়ই খারাপ ভাবছে।
নিলাঃ সরি আসলে বেশি ভয় পেয়ে গেছিলাম তো তাই।
জয়ঃ ভ য় পেয়েই ভালো হয়েছে নয়তো জরিয়ে ধরতে না।
নিলাঃ (জয়ের দিকে তাকিয়ে) কিহ
জয়ঃ কিছু না।
জয় দরজা খুলে দিল। নিলা বের হত যাবে হঠাৎ জয় হাত টেনে ধরলো। নিলা জয়ের দিকে তাকিয়ে, কি
জয়ঃ একটা কথা বলবো রাখবে
নিলাঃ কিহ
জয় আচমকা নিলার চুলের কাটা খুলে দিল নিলা তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। নিলা ভাবেনি এমন কিছু করবে। জয় মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে,
জয়ঃ এখন পার্ফেক্ট লাগছে সত্যি অপূর্ব লাগছে তোমাকে। চুলটা ছেড়েই রাখো প্লিজ।
নিলা অবাক হয়ে জয়ের কথা শুনছিল আর যখন সুন্দর বলেছে কেন জানি অনেক ভালো লাগছিল অদ্ভুত এক অনূভুতি হচ্ছিল। কেন জানি জয়ের কথা রাখতে মন চাইলো তাই চুল ছেড়েই রাখলো।
পর্ব ৬
অনেক ক্ষণ ধরে জুলি জয়কে খুজছে এখানেই তো ছিল হঠাৎ ঐশির সাথে কথা বলে তাকিয়ে জয় হাওয়া হলো কিভাবে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখছে রনি, অভি ওরা ওই পাশে গল্প করছে জয় নেই আবার ওই নিলা না ফিলা মেয়েটাকে ও কোথাও দেখছি না ওর সাথে মেয়েটাও একা তাহলে কি জয় আর ওই মেয়েটা একসাথে। হঠাৎ জয়ের গাড়ির দরজা খুলে জয় আর নিলাকে একসাথে বের হতে দেখলো।
ওরা একসাথে ভিতরে কি করছিল। দুজনের মুখে হাসি আর নিলা তো ছুল বেধে ছিল এখন খোলা কেন। এসব দেখে তো জুলি রেগে ওদের সামনে গিয়ে দাড়ালো।
জুলিঃ জয় তুই ওর সাথে এই গাড়ির ভেতরে কি করছিলি?
জয় আর নিলা তো জুলির রাগে কারণ বুঝতে পারছে না। নিলা এমনিতে এই মেয়েকে ভয় পায় আজ আবার রেগে চিৎকার করে বলছে তাই আর ও ভয় পাচ্ছে।
জয়ঃ চিৎকার করছিস কেন।
জুলিঃ তোকে যা জিগ্গেস করলাম তা উওর দে কি করছিলি ওর।
জয়ঃ যা খুশি তাই করেছি তোকে কেন বলব আর তুই এতো হাইফাই হচ্ছি স কেন।
জুলিঃ হব না কেন তুই কেন ওর সাথে।
আর কিছু বলার আগেই ঐশি এসে টেনে নিয়ে যায় জুলিকে।
জুলিঃ তোর সাহস কম না তুই আমাকে টেনে আনলি।
ঐশি; আমি টেনে না আনলে সবার সামনে চর খেতে।
জুলিঃ কি বললি আমি চর খাবো কার সাহস আছে আমার গায়ে হাত তুলার।
ঐশিঃ কারো না থাকলে ও জয়ের আছে। যে ভাবে চিৎকার আর রিয়াক্ট করছিলি জয় আর একটু হলে থাপ্পড় দিয়ে বসতো।
জুলিঃ আমি ওই মেয়েকে ছারবো না আমার জয়কে কেরে নেওয়া আমি ওকে উচিত শিক্ষা দিয়েই ছারবো নয় আমার নাম জুলি না।
এদিকে জয় বুঝতে পারছে না এতো রাগার কারণ টা। ও জুলির যাওয়া দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
নিলাঃ ওনি এমন করলো কেন
জয়ঃ জানি না আমি ও। আচ্ছা ওইসব বাদ যাও অনুষ্ঠানে যাও।
নিলাঃ আপনি যাবেন না।
জয়ঃ হুম
নিলা আর সীমা চলে গেল। জয় ওর ফ্রেন্ডদের কাছে গেল।
রনিঃ জয় ভাই তোকে তো আজ কাল পাওয়াই যায় না।
আশিক: একদম ঠিক কথা বলেছিস রনি। জয় তুই তো এখন বেশি সময় ওই মেয়েটার সাথেই থাকিস ব্যাপার টা কি বলতো।
জয়ঃ কিসের ব্যাপার
রনিঃ কেন ভাই তুমি বুঝনা আমরা কি বলছি। যে কিনা মেয়েদের ধারের কাছে ঘেষতো না সে এখন একটা মেয়ের পেছনে পরে আছে সারা ভার্সিটির সব মেয়েরা তোর জন্য পাগল এখন তারা তো সন্দেহের চোখে তোকে দেখে। ভাই প্রেম করিস নাকি সত্যি করে বল।
জয় একবার অভির দিকে তাকিয়ে তুই কিছু বল। অভি ও কিছু বলল না হতাশ হয়ে সব জানিয়ে দিল। সবাই তো অবাক হয়ে শুনছিল সত্যি যে জয় কাউকে ভালোবাসবে ভাবেনি। সবাই অনেক খুশি ও হ য়েছে।
সাতটার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।
রাতে নিলা আর সীমা শুয়ে আছে।
সীমাঃ তুই চুল ছারলি কেন?
নিলাঃ মানে
সীমা; বাড়িতে থাকতে তো আমি ও বললাম চুল ছেড়ে যা তুই তো বললি তোর চুল ছারলে ভালো লাগে না তাহলে ওইখানে গিয়ে ছারলি কেন অনেক ক্ষণ ধরেই কথাটা ভাবছি কিন্তু বলি নি এখন বল।
নিলা সব বলল,
সীমাঃ সত্যি (খুশি হয়ে)
নিলাঃ হ্যা কিন্তু তুই এতো খুশি হচ্ছিস কেন।
সীমাঃ আমি সেই প্রথম থেকেই ভাবছি এতো কেয়ার কেন তোমার প্রতি আমি সিউর ভাইয়া তোকে ভালোবাসে।
নিলাঃ অসম্ভব এটা তোর ভুল ধারনা এতো এতো মেয়ে তার জন্য পাগল সে তাদেরকে বাদ দিয়ে আমাকে অসম্ভব।
সীমাঃ এতো এতো মেয়েকি আমাদের নিলা নাকি যে তাদের ভালো বাসবে। এখন বিশ্বাস না করলি খুব তারাতারি জানতে পারবি দেখিস।
অনেক ক্ষণ কথা কাটাকাটি করে ঘুমিয়ে পরলাম।
পরদিন
ভার্সিটিতে ঢুকার সাথে সাথে জুলি রাগী চোখে আমার সামনে এসে দাড়ালো।
জুলিঃ ভালো ভাবে বলছি জয়ের থেকে দূরে থাক নয়তো আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না।
নিলা চুপ করে হা হয়েআছে এমন কিছু বলবে কল্পনা ও করে নি। কিন্তু সীমা তো রেগে আছে।
সীমাঃ তুমি বলবে আর হবে নাকি আর আমরা জয় ভাইয়া সাথে নয় জয় ভাইয়াই আমাদের সাথে থাকে।
জুলিঃ তোমাদের মতো মেয়ের সাথে জয় যে কেন কথা বলে বুঝিনা।
সীমাঃ সেটা জয়কে জিগ্গেস করো আমাদের একদভ হুমকি দিতে আসবে না।
জুলিঃ আমি ওর সাথে কথা বলছি তুমি ঔ দিচ্ছো কেন
আর কিছু বলতে যাবো ওমনি জয় ভাইয়াকে আসতে দেখে জুলি আর ওর ফ্রেন্ড চলে যায় আর আমি জয় ভাইয়াকে সব বলতে গেলে নিলা মানা করে বসে।
নিলার জন্য কিছু বলতে পারি না।
জয়ঃ কেমন আছ তোমরা
নিলাঃ ভালো আপনি
সীমা নিলার সাথে রেগে চলে যায়।
জয়ঃ ও চলে গেল কেন
নিলাঃ ওর দরকার আছে তাই।
জ য়: ওহ একটা জিনিস চাইবো দিবে
নিলাঃ বলুন
জয়ঃ তোমার ফোন নাম্বার টা আসলে এমনি কথা বলতাম খুজ খবর নিতাম এই আর কি।
নিলা পরলো মহা বিপদে ওর ফোন নেই নাম্বার কোথা থেকে দেবে। মাথা নিচু করে আছে কি বলবে এখন সিমা টাও চলে গেল রাগ করে।
জয়ঃ তুমি কি রাগ করেছে আমি তোমায় ডিসটার্ব করবো না জাস্ট একটু আকটু কথা বলবো।
জয় নানা কথা বলেই যাচ্ছে নিলা কি বলবে বুঝতে পারছে না আবার বলতে ও পারছে না এখন কার দিনে কি কেউ আছে নাকি যার ফোন নেই। এখন ফোন নেই এইটা বলতে ও লজ্জা পাচ্ছে। তাই আর কিছু না বলে দৌড়ে চলে গেল।
জয় হা করে তাকিয়ে আছে চলে গেল কেন না দিলে না করতো। কিছু না বলে গেল কেন ও কি রাগ করেছে কিছু মাথায় আসছে না।
পর্ব ৭
নিলা হাতে একটা ফোনের প্যাকেট নিয়ে চিন্তা হ য়ে একবার ফোনে দিকে তো একবার সীমার দিকে তাকাচ্ছে। এই ফোন কোথায় থেকে এলো কার ফোন এটা। কিছু ক্ষণ আগে র্পাসেল এ এই ফোন এসেছে। হঠাৎ সীমা দিকে তাকিয়ে দেখি হাসছে।
~ হাসছিস কেন?
~ ফোন টা খুলনা দেখি একটু কেমন ফোন।
~ তুই কি পাগল হইলি কার না কার ফোন আমি কেন খুলবো। আমি সিউর ভুল ঠিকানা আসছে আসল ফোনের মালিককে আমি ফোন ফিরিয়ে দেবো।
~ কার্ডে তোর নাম ছিল তাই ফোন টাও তোর জন্য ই এসেছে বুঝছিস।
~ না আমি কিছু বুঝছি না কে আমাকে ফোন দেবে শুনি।
~ কেউ তো দিয়েছে আমার যা সন্দেহ হচ্ছে সে যদি হয় তাহলে তো কেলাপতে।
~ তোর আবার কাকে মনে হয় বল তারাতারি কিছু জেনে থাকলে আমি ফোন দিয়ে আসবো।
~ ফোনটা খুল সে দিয়ে থাকলে এখন ই তার কল আসবে।
~ মানে কে কার কথা বলছিস আমাকে বল।
সীমা কিছু না বলেই চলে গেল পরতে আমি কতো জিগ্গেস করছি কে কে কিন্তু সে কিছু ই বলবে। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না কার না কার ফোন খুলবো আবার সীমা কথা ভনে করে খুলতে ও মন চাই এ কোন দুটানায় পরলাম। হাতে নিয়েই এটা ওটা ভাবছি। ঝড়ের গতীতে সীমা এসে আমার হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলো।
~ তোর ধারা হবে না আমি ই খুলে।
বলেই ফোনের প্যাকেট খুলতে লাগল আমি মানা করছি কিন্তু কে শুনে কার কথা।
~ ওয়া অনেক সুন্দর তো ফোনটা ভাইয়ার পছন্দ আছে বলতে হয়। সো নাইস
আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি আর ওর কথা শুনে আমি সিউর জানে কে দিয়েছে। ফোন ওন করার সাথে সাথে রিংটন বেজে উঠল,
~ এই যে আপনার ফোনের মালিক কল করেছে ধরেন কথা কন?
~ তুই জানতি তাও বললি না কে দেখি।
ফোন হাতে নিয়ে আমি শক এটা তো জয় নাম দিয়ে সেভ তার মানে কি জয় ভাইয়া এই ফোন দিয়েছে কিন্তু সে জানলো কি করে আমার ফোন নেই আমি তো তাকে কিছু বলি নি। একবার সীমার দিকে তাকাল রাগি চোখে, তুই
~ সরি দোস্ত তুই তখন নাকি ভাইয়া নাম্বার চেয়েছিল কিছু না বলে চলে এসেছিস তাই ভাইয়া ভেবেছিল তুই নাম্বারের জন্য রাগ করেছিস। আমাকে বলল তোর ব্যাপার আমি দেখেছিলাম ভাইয়া মুখটা মলিন করে রেখেছে তাই সত্যি টা বলেদিয়েছি প্লিজ রাগ করিস না।
~ তবুও আমি পার্রসনাল বিষয়ে কাউকে কিছু জানাতে পছন্দ করি এই যে এখন ফোন দিলো আমি কিছুতেই এই ফোন রাখবো না কালই এইটা ফেরত দিয়ে আসবো আমার কারো দয়া চাই না আমার যেমন আছি তেমনি ভালো আছি।
রেগে ফোন আবার প্যাকেটে ভরে রাখলাম। সীমা অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু আমি শুনি নি।
পরদিন
ভার্সিটিতে গিয়েই জয় ভাইয়াকে খুজছি তাদের আড্ডার জায়গায় ও গেলাম ভেতরে উকিঁ দিয়ে দেখি ওইখানেই বসে আছে।
এদিকে জয়
রাতে অনেক বার কল করেছে ফোনে একবার খোলা পেয়েছিল ফোন আর পায় নি। টেনশন হচ্ছে নিলা কি রাগ করলো ফোন দেওয়ায় একবার জেনে দেওয়া উচিত ছিলো বন্ধু দের সাথে বসে আছে ঠিক ই কিন্তু কোন গল্প আড্ডা দিচ্ছে না নিলার কথায় ভেবে চলেছে। হঠাৎ দরজার দিকে নজর পরলো নিলা। সাথ সাথে অবাক হয়ে বসা থেকে উঠে দাড়ালো এতো দিন ধরে নিলার সাথে কথা বলে অনেক টা ফ্রেন্ডলি হয়ে গেছে কিছু এখন পযর্ন্ত নিলাকে এখানে আসতে দেখেনি। জয় নিলাকে দেখেই নিলার কাছে চলে গেল।
আর একজন অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
~ নিলা তুমি এখানে;
~ আপনার সাথে আমার একটু দরকার ছিলো।
~ ওকে বলো না না চলো ওইপাশে যাই। (খুশি হয়ে)
নিলা জয়ের পেছন পেছন যায়।
~ বলো কি কথা
নিলা কিছু না বলে ব্যাগে থেকে ফোন বের করে দেয়। জয় অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কোথায় ভেবেছিল কিছু বলবে তা না ফোন দিচ্ছে।
~ ফোন দিচ্ছ কেন তোমার কি ফোন পছন্দ হয় নি।
~ আপনাকে কি আমি বলেছি আমাকে ফোন কিনে দিন।
~ তা বলবে কেন আমি তো একাই
~ আপনি তো একাই কিন্তু কেন কেন আমাকে ফোন কিনে দিবেন কে আপনি। ফোন দিয়ে আপনি কি বুঝাতে চাইছেন আপনাদের অনেক টাকা আছে আর আমাদের তা নেয় তাই তো।
~ কি বলছো এসব আমি এসব কেন বুঝাবো।
~ তাহলে দিয়েছেন কেন।
~ আমি তোমায়
~ বলুন কেন
~ তোমার সাথে কথা বলতে
~ বাট হুয়াই আমার সাথে আপনি কেন কথা বলবেন আর আমি ই বা কেন বলবো যেটুকু বলার ভার্সিটিতে ই তো বলি এর বেশি কেন বলব আপনি কি আমার বয়ফ্রেন্ড যে কথা বলবো। এই আপনি ফোন রাখুন এটা আমাকে দিতে আসবেন না। বাই
কথাগুলো বলেই নিলা আর উওরের অপেক্ষা না করেই চলে গেল। জয় হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নিলার যাওয়ার দিকে ও ভাবতে ও পারেনি ফোন দেওয়া নিয়ে এতো কিছু হবে বা নিলা এতো কিছু ভাববে জানলে কখনো নিলাকে এভাবে কষ্ট দিতো না।
এক সপ্তাহ হয়ে গেছে
জয় নিজের রুমে ছটফট করছে না আর নিলার ইগনোর মেনে নিতে পারছি না। সেই দিনের পর থেকে পিলা জ য় কে ইগনোর করে চলে আগে দেখা হলে কথা বলতো আড্ডা ও দিয়েছে এখন নিলা দেখা হলে অচেনা মানুষের মতো ইগনোর করে যেন আমাকে চিনেই না কথা বললে ও উওর দেয় না জয়ের বুকের ভেতরে কষ্টের সাগর বয়ে যাচ্ছে। এই ইগনোর কিছু তেই মানতে পারছে না ইদানিং নিলা একটা ছেলের সাথে ও বেশি মেশে হেসে হেসে কথা বলে। কে ওই ছেলে ও কি আমার নিলাকে আমার কাছে থেকে কেরে নেবে না কিছুতেই নিলাকে হারাতে দেবো না নিলা শুধু আমার।
পরদিন ভার্সিটিতে গিয়েই আশে পাশে নিলাকে খুজছে কোথাও নেই সীমা ওদের বাড়ি গেছে তিন দিন হয়েছে ও থাকলে একটা হেপ্ল হতো। হঠাৎ ছাদের কথা মনে পরলো জয় সোজা ছাদে চলে গেলো আর গিয়ে ওর মাথায় আগুন ধরে গেল।
পর্ব ৮
নিলা আর রোহান ছাদে দাড়িয়ে কথা বলছিল।
~ নিলা আমি সিরিয়াস কিন্তু ও কি মানবে।
~ আরে মানবে মানবে তোমাকে আমি প্রথমেই বুঝেছিলাম এই ব্যাপারটা।
~ কিন্তু আমার ভয় করছো!
~ ভয়ের কিছু নেই তুমি সব জানিয়ে দাও তাহলেই হবে, না বলে ভয় পেলে কি হবে বলো।
~ সীমা যদি রিজেক্ট করে দেয়।
~ বলে তো দেখো, !
রোহান নিলাদের ক্লাস মেট সীমা লাইক করে আগে সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু কিছু বলে না রোহানের বলার অপেক্ষায় ছিলো। দুইদিন ধরে সীমা বাড়ির গেছে এর মাঝে রোহানের তো অবস্থা খারাপ ও চিন্তা আর করতে না পেরে আমাকে সব জানিয়ে দিয়েছে। এই কয় দিন এগুলো নিয়েই কথা হয়েছে। হঠাৎ আমার চোখে কি যেন ঢুকে যায় আমি চোখ বন্ধ করে চুলকাচ্ছি। রোহান কিছু সমস্যা হয়েছে বুঝতে পেরে আমাকে জিগ্গেস করে আমি, কি যেন ঢুকলো মনে হয় জলে যাচ্ছে ওফ।
রোহান : এদিকে এসো আমি দেখছি।
রোহান আমার চোখে ফূঁ দিয়ে বের করে দেয়। চোখে পানি এসে গেছে আমি রোহানকে ধন্যবাদ দিয়ে সরে এসে ছাদের দরজার কাছে চোখ যায়।
হঠাৎ জয় ভাইয়াকে দেখলাম তাকিয়েই আতঙ্কে উঠলাম, চোখ মুখ লাল টকটকে হয়ে আছে রেগে আমার দিকে এগিয়ে আসে এসেই একবার আমার দিকে তাকিয়ে রোহানের কলার ধরে মারতে যায় আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে এমন করছে কেন আমি তারাতারি গিয়ে জয়ের হাতে ধরে বলি,
~ কি করছেন কি ওকে মারছেন কেন কি করেছে ও,
~ নিলা হাত ছারু ওকে আজ আমি মেরেই ফেলবো ওর সাহস কি করে হলো তোমার দিকে নজর দেওয়ায়।
~ মানে কি বলছেন এসব।
~ কি বলছি বুঝতে পারছো না নাকি বুঝতে চাইছো না।
বলেই আবার মারতে গেলে নিলা টেনে জয়কে ছারিয়ে আনে আর রোহানকে চলে যেতে বলে। রোহান যেতে চাই না কিন্তু জোর করেই নিলা পাঠিয়ে দেয়। জয় এতে অনেক রেগে যায় ও নিলার হাত মুছরে ধরে পেছনে।
~ তোর সাহস কি করে হলো ওকে পালাতে দিয়ে আমি ওকে ছারবো ও তোকে টাচ করেছে।
নিলা তো অবাক হয়ে জয়ের কথা শুনছে কেমন যেন অধিকার নিয়ে কথা বলছে জয়।
~ ও যদি আমাকে টাচ করে ও থাকে এতে আপনার কি, ?
~ আমার কি তুই বুঝিস না সত্যি করে বল বুজিসনা তুই।
আমাকে একদম নিজের সাথে চেপে ধরে হাতে ব্যাথা পেয়ে আহ করে উঠলাম সঙ্গে সঙ্গে জয় হাত ছেড়ে দিয়ে দেখতে লাগল হাত। হাত লাল হয়ে গেছে জয় নিজের চোখে পানি ফেলছে আমার ব্যাথা দেখে আমি তো অবাক হয়ে দেখছি জয়ে হাতে চুমু দিতে লাগল পাগল মতো যেন চুমু দিলেই সব ব্যাথা চলে যাবে। জয়ের কাজে অদ্ভুত এক অনূভুতি হচ্ছে হার্টবিট ফাস্ট হয়ে গেছে না এবাবে থাকতে পারছি না।
আমি হাত সরিয়ে নিতে গেলাম জয় আমার দিকে তাকিয়ে মুখ উঠিয়ে অসহায় দৃষ্টি দিয়ে তাকালো দুই হাত আমার মুখে ধরে বলতে লাগল,
~ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে খুব আমি থাকতে পারছিনা কিছু করতে পারছি শুধু তোর কথা মনে পরছে। যেদিকে তাকাচ্ছি শুধু তোকে দেখচ্ছি। এই কয়দিনে তোর করা ইগনোর আমাকে শেষ করে দিচ্ছে কেন ইগনোর করছিস বল ফোন দিয়েছি বলে। সত্যি বিশ্বাস কর আমি তোকে নিচু করে ফোন দেয় নি শুধু তোর সাথে কথা বলার জন্য দিয়েছিলাম। প্লিজ অন্য কোনো ছেলের সাথে মিশিস না আমার খুব কষ্ট হয়ে।
মুখে থেকে হাত সরিয়ে জয় আমার মাথা ওর বুকের মাঝে ধরে বলতে লাগে,
~ দেখ কিছু শুনতে পাচ্ছিস আমার হার্টবিট কি বলছে।
আমাকে জয় ওর বুকে মাঝে চেপে ধরে আছে আমি এক অদ্ভুত সিহরন কাজ করছে এই প্রথম কোন ছেলের বুকের ধুকধুকনি শুনতে পাচ্ছি। সারা শরীর কেপেঁ উঠছে,
~ জয় প্লিজ ছারুন আমাকে,
~ না তোকে ছারলেই পালিয়ে যাচ্ছ তোকে ছাড়া আমি বাচতে পারবো না এই হৃদয়ে শুধু তোর নাম আছে। আমি তোকে বড্ড বেশি ভালোবাসি।
বলেই উঠলো আমি তো এমন কিছু শুনবো কল্পনা ও করি না এতোটাই শক হয়েছি যে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
.
.
রাতে
খাটের মাঝা মাঝিতে বসে ভাবছি জয়ে কথা গুলো জয় কি সত্যি ভালোবাসে আমায়। জয়ের সাথে মিশতে মিশতে আমি ও জয়কে পছন্দ করে ফেলি আমি কেন যে কেউ জয় কে পছন্দ করবো। জয়ের প্রতি অনেক টা দূর্বল হয়েছি আমি চাইনি আর হতে তাই ফোনকে ইসো করে কথা বলা বন্ধ করতে চাইছিলাম।
কিন্তু আজ জয়ের মুখে ভালোবাসার কথা শুনে যেমন খুশি হয়েছি তেমনি আবার ভয় ও লাগে। জয় কতো ধনী পরিবারের ছেলে দেখতে মাশআল্লাহ অনেক সুন্দর। যদি জয় পরে আফসোস করে আমার মতো গরীব পরিবারের কাউকে মেনে নেওয়া জন্য না না তাহলে আমি কি করবো আমার জয়ের থেকে দূরেই থাকতে হবে।
পরদিন সীমা আসে সীমাকে ও সব বলি ও বলে না জয় ভাইয়া অনেক ভালো সে তোকে ঠকাবে না তুই রাজি হয়ে যা ওর তো এক কথা কিন্তু আমি মানতে পারছি না কিছু তেই না। পরে জয় এমন মনে হতেই পারে তাই আমাকে ৎর থেকে দূরেই থাকতে হবে।
একমাস পর
জয় অনেক ভাবে বুঝাতে চেয়ে আমাকে ভালো বাসে কিন্তু আমি কিছুতেই ইন্টারেস্ট দেখায় নি। সীমা আর রোহানের প্রেম টা হয়ে গেছে। আজ সীমা আর রোহান বেরাতে যাবে তাই আমি একাই ভার্সিটিতে যাচ্ছি গেটের কাছে আসতেই হঠাৎ কেউ পেছনে থেকে আমার চোখ ও মুখ বেধে দিলো আমি চিৎকার ও করতে পারছি না কোন গাড়ি তে মনে হয় ওঠাল এখন গাড়ি চলতে শুরু করছে ভয়ে আমার আত্মা বের হওয়ার উপকম।
হঠাৎ গাড়িটা থেমে গেল আমার হাত চোখ মুখের বাধন ও খুলে দেওয়া হলো সামনে তাকিয়ে দেখি জয়। হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে তার মানে জয় ভাইয়া এই সব করেছে আর আমি কতো না ভয় পেয়েছি।
~ আপনি তাহলে এইসব করেছেন।
~ হুম আমি বললে তো আর আসতে না তাই এমন কিডনাপ করতে হলো।
~ আপনি আমাকে এখানে কোথায় এনেছেন আর কেন আসবো শুনি।
~ কেন আসবে মানে
~ আপনার সাথে আসতে যাব কেন
~ ঘুরতে আসবে চলো তো
বলেই আমাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। আমাকে ও গাড়ি থেকে বের করলো আমি নামবো না বলেছিলাম বলে টেনে বের করেছে। বাইরে বের হয়ে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি এইটা একটা নদীর পার পাশে অসংখ্য কাশ ফুল যা আমার ফ্রেভারেট বলতে পারেন। ছোট থেকেই আমার কাশফুল অনেক পছন্দের। আমি তো রাগে কথা ভুলে দৌড়ে কাশ ফুলের কাছে চলে গেলাম। এতো ভালো লাগছে বলে বুঝাতে পারবো ঠান্ডা হাওয়া ছুয়ে যাচ্ছে জায়গাটা নিরিবিলি এক দুইজন এসেছে তারা অনেক দূরে দূরে। আমি চোখ বন্ধ করে দুহাত মেলে উপভোগ করতে লাগলাম।
এদিকে জয় জানতো এখানে আসলে নিলা আর রেগে থাকতে পারবে না সীমার কাছে শুনেছিল কাশ ফুল আর নদীর পার অনেক পছন্দ নিলার তাই এখানে নিয়ে এসেছে। নিলার মুখে হাসি আর বাচ্চামু থেকে জয়ের মুখেও হাসি ফুটে উঠল।
নিলা চোখ বন্ধ করে ছিলো হঠাৎ কিছু কানে গুজে দেওয়া সম্মতি ফিরে চোখ খুলল, দেখলো জয় কাশ ফুল কানে গুজে দিচ্ছে নিলা এখন বুঝলো ও রেগে ছিলো হাসি মিলিয়ে আবার মুখটা রাগী ভাব করে জয়ের দিকে তাকিয়ে ফুল সরিয়ে দিতে গেলে জয় হাত ধরে ফেলল।
জয় টেনে নিলাকে নিয়ে ঘাসের উপর বসে পরলো তারপর নিলার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো। নিলা তো অবাক চোখে তাকিয়ে আছে কি ছেলে রে বাবা এমন করছে মনে হয় আমি এনার বিয়ে করা বউ।
~ আপনি এখানে শুলেন কেন (রেগে)
~ মাথা ব্যাথা করছে একটু টিপে দাওনা বউ
নিলা তো আর ও শক বউ শুনে কেবল কথা টা মনে ভপে ভেবেছে আর জয় তা মুখে বলল,
~ কে আপনার বউ
~ যার কোলে শুয়ে আছি।
~ সরুন বলছি আমি কোন দুঃখে আপনার বউ হতে যাব।
~ দুঃখে কেন বউ হবে সুখে হবে এখন টেপো তো মাথাটা।
~ অসম্ভব আমি কিছু করতে পারবো বিয়ে করে বউ কে দিয়ে টেপান।
~ বউকেই তো বলছি আর বিয়ে তুমি বললে এখন ই করত পারি। চলো তাহলে করে আসি তারপর না হয় মাথা টিপে দেবে। তুমি তো আমার থেকে ও চালু প্রেম না সোজা বিয়ে চলো চলো।
বলে নিজে শুয়া থেকে উঠে দাড়ালো আমাকে ও জোর করে তুললো এ কোন জালায় পরলাম। এখন তো এর বিয়ের ভূত ঢুকেছে কেন যৃন বলতে গেলাম এখন নিজের জালে নিজেই ফেসে গেলাম এখন কান্না করতে মন চাইছে। আমি হাত সারিয়ে,
~ কিসের বিয়ে আমি কি আমাকে বিয়ে করতে বলছি নাকি।
~ তাহলে কার কথা বলছো আমি তো এখানে আর কাউকে দেখছি না
আশেপাশে খুজার চেষ্টা করে।
~ আমি বলছি বিয়ে করে মাথা টেপান এর মানে তো এখনই বিয়ে করতে বলি নি (দাতে দাত চেপে)
~ তুমি ই তো বললে বউকে দিয়ে মাথা টেপাতে কিন্তু এখন বউ কই পায় বলতো আর আমার মাথা টা এখনই ব্যাথা করছে তাই তোমাকে বউ করে তারপর।
~ থাক বউকে লাগবে না আমি টিপে দিচ্ছি (রেগে)
জয় আবার শুয়ে পরলো আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি ওর চুল গুলো অনেক সফট। হঠাৎ ওর দিকে তাকিয়ে দেখি এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে আমার দিকে আমি মাথায় থেকে হাত সরিয়ে উঠে যেতে লাগলাম এমন করে তাকিয়ে থাকলে কি থাকা য়ায় কিন্তু উঠতে পারলাম না জয় আমার হাত ধরে ফেলল আমার হাত ওর বুকের উপর রেখে বলতে লাগল,
পর্ব ৯
সারাদিন জোর করে রেখেছিল জয় নিলাকে। একটা একটা কথা বলে রেখেছেই নিলা ট্রাপে পরে আসতে ও পারে নি। ঘরে বসে কথা গুলো ভাবছে নিলা ওর যে খারাপ লেগেছে এমন না। কিন্তু প্রকাশ করিনি সারাদিন জয় জোর করে রাখলে ও অনেক ভালো কেটেছে। কিন্তু জয় কে বুঝিয়েছি আমি বিরক্ত ওর প্রতি। যত চাই জয় কে ইগনোর করবো ভুলে যাব ততই ও আর ও কাছে টানে ওর প্রতি আর ও দূর্বল হয়ে পরছি। কি করবো আমি ওকে কি আমি মেনে নেব নাকি।
~ কিরে এতো কি ভাবছিস, ?
হঠাৎ সীমার কথায় সম্মতি ফিরে পেলাম, কই কিছু না তো!
~ আমাকে মিথ্যে বলছিস আমি জানি কি ভাবছিলি?
~ মানে
~ মানে হলো তুই দুটানায় পরছত জয় কে নিয়ে ভাবছিলি তাকে মানবি নাকি মানবি না।
~ জি না আমি ওসব নিয়ে ভাবছিলাম না। (ইচ্ছে করেই মিথ্যে বলল)
~ আমাকে মিথ্যে বলে লাভ নেয়। আমি তোর মুখ দেখেই বুঝতে পারিস এভাবে জয় ভাইয়া দূরে ঠেলে দিস না ভাইয়া তোকে অনেক ভালোবাসে। আমার বিশ্বাস সে কখনো তোকে ঠকাবে না। প্লিজ মেনে নে না ভাইয়া অনেক কষ্ট পায় তোর ব্যবহারে।
~ ওর হয়ে কথা বলা বাদ দিবি!
~ বলতেই তো দেস না কিছু তুই নিজে ও তো ভালোবাসিস তাহলে কেন এমন করিস বুঝিনা।
বলেই রেগে চলে গেল। আর নিলা হা করে সীমার চলে যাওয়া দিকে তাকিয়ে আছে।
~ এই দরজা খুলে কোথায় যাচ্ছিস শুন।
কে শুনে কার কথা সীমা তো চলেই গেছে নিলা বুঝলো না কিছু হঠাৎ এই সামান্য কথায় এতো রাগ করার কি আছে। আর রাগ তো কম না একেবারে বাইরে বেরিয়ে গেল।
আমি কথা গুলো ভাবছিলাম হঠাৎ বারান্দায় কিছু আওয়াজ পেলাম। গিয়ে আমি শক এ এখানে কি করছে জয় ভাইয়া আমি ভ্র কুচকে তার দিকে তাকিয়ে আছি।
~ আ আপনি এখানে কেন এই সময়?
~ কেন তুমি খুশি হওনি আমাকে দেখে।
~ খুশি হব কেন আমার তো রাগ হচ্ছে সারাদিন জালিয়ে কি শান্তি হন রাতে ও চলে এসেছেন। আরেকটা কথা আমি আসলেন কি করে দাড়োয়ান দেখেনি।
~ নাহ
~ এখানে উঠলেন কি করে?
~এতো কি জানার দরকার নেই চলো।
~ চলো মানে কোথায় যাবো।
~ পালিয়ে যাব আজ তোমাকে নিয়ে বুঝছো।
বলেই আমার হাত ধরে বারান্দায় দিয়ে নামত দেখালো নিচে তাকিয়ে আর ও অবাক হলাম নিচে সীমা দাড়িয়ে আছে মই ধরে। তার মানে সীমা তখন রেগে নয় ওই কারণে বের হয়ে গেছিল আর আমি কিনা কি ভাবলাম। ইডিয়েট একটা মন চাইছে ওর মাথা ফাটিয়ে দেয়।
~ কি হলো নামছো না কেন তারাতারি করো নয়তো তোমার জন্য ই ধরা পরে যাব।
~ না আমি নামবো না। আর কেনই বা নামবো আপনি সাথে কোথাও যাব না আমি (নিলা সরে আসতে যায়)
জয় নিলার হাত ধরে টান মেরে নিজের কাছে এনে।
~ ভালো মতো বলছি নামো নয়তো আমি।
~ নয়তো কি
~ নয়তো কোলে নিয়ে নামবো,
~ যতসব ফালতু কথা কোলে নিয়ে আবার মই দিয়ে নামা যায় নাকি।
~ তুমি আমার কথা বিলিভ করছো না তো।
~ হ্যা করছি না।
~ ওকে,
বলেই জয় আচমকা নিলা কোলে তুলে নিলো নামতে যাবে তখনি চেচিয়ে নিলা বলতে লাগল,
~ নামান নামান প্লিজ পরে যাবে।
~ তা তো হবে না, ?
~ আচ্ছা আমি নিজেই নামছি আপনি আমাকে নিচে নামান।
জয় জানতো নিলা এমনটাই বলবে। বাকাঁ হেসে নিলাকে কোল থেকে নামিয়ে দেয়। আর নিলা বুকে ফূ দিতে থাকে আল্লাহ একবার পরে গেলে আর রক্ষা পাওয়ার উপায় পেতনা।
নিলা নেমে যায়। জয় ও নামে নিলা নেমেই তো সীমার সাথে ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে। ওকে না জানিয়ে এসব করার জন্য আর জয়ের পক্ষ নেওয়ার জন্য।
~ তোমাদের ঝগড়ার জন্য আজ ধরা পরতে হবে চলোতো।
বলেই জয় নিলার হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগল। নিলা যাবে না বলছে কিন্তু জয়ের সাথে পারলে তো হঠাৎ খেয়াল করলো সীমা আসছে এটা দেখে নিলা ছটফট করা বন্ধ করে দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে যেতে লাগল।
কিছু মাথায় ঢুকছে না আমরা যাচ্ছি কোথায় জিগ্গেস করলে কেউ কিছু বলছে না। সীমা তো চেনেই না রাগ উঠছে প্রচুর কিন্তু কেউ কিছু বলছে না তাই চুপ করেই বসে রইলাম।
হঠাৎ সীমা আমার চোখ বাধতে লাগল,
~ কি হচ্ছে কি সব সময় কেন আমাকে বাধা হচ্ছে সকালে ও আবার এখন সীমা তুই আমার চোখ বাধছিস কেন খুল।
~ একটু পরই বুঝতে পারবি এখন মুখটা বন্ধ রাখ।
~ না আমি কিছু বুঝতে চাইনা তুই আমার চোখ খুল।
হাত দিয়ে খুলতে যাব সীমা হাত ও বেধে দিল।
~ এ হাত বাধছিস কেন
~ তোর হাত চলে বেশি তাই। এখন বেশি কথা বললে মুখ ও বেধে দেব।
~ না না আমি আর কথা বলবো না। কিন্তু তোরা সবাই আমাকে ঠকালি কারো সাথে আমি কথা বলবো না তুই আমার ফ্রেন্ড হয়ে।
জয়ঃ সীমা হয়েছে।
~ হুম চলনে।
পর্ব ১০
চোখ খুলে অবাক চোখে তাকিয়ে দেখছি। আমি বিশ্বাসী করতে পারছিনা এই সব আমার জন্য করেছে সবাই আর আমি কিনা না কি ভেবেছি। নিজের ভুল ভাবনায় জন্য নিজের কাছেই ছোট মনে হচ্ছে।
খুশিতে আমার ছোখ দিয়ে পানি পরছে। এই প্রথম এভাবে আমার জম্মদিনের আয়োজন হয়েছে।
নিলা সীমার দিকে ঘুরে ওকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিল আর বলতে লাগল,
~ আই আম সরি সীমা তোকে আমি কি না কি বলেছি আর তুই আমার জন্য এতো কিছু করেছিস আমি সত্যি এসব ভাবি নি থান্কু।
~ নিলা আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে লাভ নেই এসব কিছুই আমি করি নি।
~ তাহলে কে করেছে।
~ জয় ভাইয়া সব করেছে আমি জাস্ট বলেছিলাম আজ তোর জম্মদিন আর সেই সব করেছে।
~ কি বলছিস তুই।
~ আমি ঠিকই বলছি।
নীলা সীমা কে ছেড়ে দিলো এখানে সীমা আর নিলাই আছে আশেপাশের নিলা জয় কে খুজতে লাগল,
হঠাৎ গানের শব্দ কানে এলো অপূর্ব কণ্ঠ নিলা মুগ্ধ হচ্ছে গান শুনে গান কে গাইছে। তাকিয়ে দেখে তার মুখ বুঝা যাচ্ছে না। কারণ সে উল্টো দিকে ঘুরে আছে। নিলা অধির আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে মুখটা দেখার জন্য।
হঠাৎ সামনেল দিকে ঘুরে দাড়ালো আর নিলা চরম অবাক হলো কারণ এই আর কেউ না জয়।
জয় গান গাইতে গাইতে আমার দিকে এগিয়ে এলো হঠাৎ একদল চেচিয়ে আসতে লাগল তাকিয়ে দেখি জয়ের সব ফ্রেন্ডরা ও সবাই অনেক খুশি মনে না না কথা বলছে শুধু ঐশি আর জুলি বাদে ওরা মুখ গম্ভীর করে আছে। জয় আমার চারপাশে ঘুরে ঘুরে গান গাইছে।
চারপাশে অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে জয়ের গান শেষ হলে। আমি ওর সামনে গিয়ে দাড়িয়ে,
কিছু বলবো তার আগেই জয় বলে উঠে,
~ জানি কি বলবে তাই আগেই বলছি ওইসব বলতে হবে না আমি শুধু তোমার মুখে হাসি দেখার জন্য এসব করেছি।
জয়ের মুখটা মলিন ও ভাবছে আমি ফোনের সময় যেমন করেছি আজও তাই করবো। সত্যি ও ভাবে না বললে ও পারতাম জয় অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমি একটা হাসি দিয়ে বললাম,
~ জি না আমি ওইসব কিছু বলবো না।
~ মানে
~ মানে আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এই সারপ্রাইজটা দেওয়ার জন্য আমি অনেক খুশি হয়েছি।
আমার মুখে থেকে জয় এই কথা আসা করেছিলনা ওর মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমার কথা শুনে ওর মলিন মুখ অবাকসহয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ ও হেসে ফেলল,
~ সত্যি তুমি খুশি হয়েছ।
~ হুম অনেক খুশি হয়েছি আগে এভাবে কখনো কেউ আমার জম্মদিনের কথা আমাকে মনে করিয়ে দেয়নি।
~ আগে দেয় নি তো কি হয়েছে এখন থেকে আমি দেবো তোমাকে পৃথিবীর সব সুখ এনে দেবো কখনো কষ্ট পেতে দেব না শুধু একবার আমার হয়ে দেখো।
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে জয়ের কথা শুনছিলাম। এতো লাঞ্চনা করেছি ইগনোর করেছি এখনো কতো ভালবাসে কতো আসা দেখতে পাচ্ছি ওর চোখে। কিছু বলবো তার আগেই সবার ডাক সবাই চেচিয়ে বলছে,
কিরে তোরা কি খালি গুজোর ফুজোর করে ই কাটাবি নাকি কেক কাটবি। আমাদের সবার কিন্তু খিদে পেয়েছে।
~ আচ্ছা চলো কেক কাটবে।
~ হুম।
আমি কেকের কাছে এসে দাড়ালাম আমার পাশেই জয় দাঁড়িয়ে আছে অন্য পাশে সীমা। একবার জয়ের দিকে তাকালাম এই ফাস্ট কেক কাটছি মনে একটু সংকোচ কাজ করছে। জয় হয়তো বুঝেছে ব্যাপার টা ও মুখে আমাকে কাটতে বলল সাথে আস্তত ও করলো। ভয়কে দূর করে কাপাকাপা হাতে চাকুটা হাতে নিলাম যেই কাটতে যাব বিরাট একটা শব্দ করে সবাই একসাথে বলতে লাগল, হ্যাপি বাথড্রে টু ইউ সবাই একসাথে বলতে লাগল সাথে কি যেন দিল ছিটিয়ে সারা শরীর ফেনা ফেনা হয়ে গেল আমি চিৎকার শুনে ভয়ে।
হাত থেকে চাকু নিচে পরে গেছে।
সবাই বলছে কেক কাটতে আমি তো আর বলতে পারছি না চাকুটা আমার হাতে নেয় লজ্জা নিচের দিকে তাকিয়ে আছি হঠাৎ জয় আমার কানের কাছে মুখ এনে জিগ্গেস করল,
~ কি হয়েছে কাটছো না কেন।
আমি তাও নিচের দিকেই তাকিয়ে আছি। জয় আর ও কথা বলছে আমি উওর দিচ্ছি না হঠাৎ নিচু হয়ে চাকু উঠালো আমি লজ্জিত চোখে তাকালাম জ য়ের দিকে।
এবার জয় নিজের হাত আমার হাতের উপর রেখে কেক কাটলো আমি জয়কে যত দেখিছি মুগ্ধ হচ্ছি। কেকের প্রথম অংশ আমি জয়ের দিকে ধরলাম এতে জয় তো অবিশ্বাস্য চোখে দেখছি ও কল্পনা ও করে নি এটা। ও নিজে একটু খেয়ে আমার মুখের সামনে ধরলো আমি খুশি হয়ে হা করে মুখে নিতে যাব। এমন সময় এমন একটা কাজ হবে আমি বোকা হয়ে হা জুবিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে ফেললাম প্রচণ্ড কষ্ট হলো কেন জানি।
জয় কেক নিলার মুখের সামনে ধরেছিল হঠাৎ জুলি এসে কেক খেয়ে নেয় জয় তো রেগেমেগে শেষ এমন ঘটনায়। জুলির সাথে ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে।
পর্ব ১১
নিলা আর জয়ের দিকে না তাকিয়ে চেয়ারে গিয়ে বসে পরলো। সীমা ওখানেই দাড়িয়ে ছিলো জুলি এমন করায় রাগী চোখে একবার ওর দিকে তাকিয়ে নিজে কেকের একটা টুকরা করে নিলার পাশে গিয়ে বসে আর নিলার মুখে সামনে ধরে।
কিন্তু নিলা সীমার হাত সরিয়ে দিয়ে নিজে হাতে নিয়ে সীমা কে খাইয়ে দেয় পুরো টুকু।
~ এটা কি করলি? সব আমাকে কেন খাওয়ালি আমি তো তোর জন্য এনেছিলাম! (সীমা)
~ আমি খাব না তুই খা। (নিলা)
~ তা খাবে কেন আমি তো এখন পর একজনের কাছ থেকে খেতে পারনি এখন আমার কাছে থেকে কেন খাবে। (সীমা)
~ আহ তা না সীমা আমি এমনি খাব না আমার ভালৌ লাগছে না।
(নিলা)
সীমা বুঝেছে নিলার খারাপ লেগেছে ওর মন চাইছে ওই জুলি পানিতে চুবাতে অসভ্য মেয়ে। ও নিলার মন ভালো করার জন্যই এতো কিছু বলছিল কিন্তু নিলা আবার মন বেজার করে আছে। সীমা আবার কেক নিয়ে আসে এনে যেই সীমাকে জোর করে খাওয়াতে যাবে হঠাৎ কেউ হাত ধরে ফেল তাকিয়ে দেখে জয়।
~ সীমা তুমি যাও আমি নিলার রাগ ভাঙাচ্ছি।
~ আচ্ছা
সীমা চলে এলো ও জানে জয় ভাইয়াই পারবে। জয় গিয়ে নিলার সামনে নিচেই বসে পরলো। তারপর নিলার দিকে তাকিয়ে এক কানে হাত দিয়ে সরি বলতে লাগল।
হঠাৎ জয়ের কণ্ঠ পেয়ে তাকিয়ে দেখে জয় কানে হাত দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আর সরি বলছে। নিলা ভ্র কুচকে তাকালো জয়ের দিকে।
~ কি হয়েছে আপনি এভাবে নিচে বসে আছেন কেন আর কানেই বা হাত দিয়েছেন কেন?
~ প্লিজ রাগ করো না। হঠাৎ জুলি এমন একটা কাণ্ড করে বসবে আমি বুঝতে পারি নি ও সব সময় এমন মজা করে থাকে।
~ আমি কিছু মনে করি নি। আর কিছু মনেই বা কেন করবো ও আপনার ফ্রেন্ড
আর কিছু বলতে না দিয়ে জয় নিলার মুখ সেপে ধরে।
~ আর বলতে হবে না আমি জানি তুমি কষ্ট পেয়েছে।
~ নাহ আমি কষ্ট পায় নাই।
~ মিথ্যা কেন বলছো তোমার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
প্লিজ কষ্ট পেয় না এই যে ধরো আমি আবার তোমার জন্য কেক নিয়ে এসেছি।
~ আমি খাব না।
~ একটু খাও
বলেই নিলার মুখের সামনে ধরলো কিন্তু নিলা মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
নিলা ভেবেই নিয়েছে খাবে না জয় জোর করছে তাই অন্য দিকে ঘুরে গেল। আচমকা কিছু আমার মুখে পুড়ে দিলে তাকিয়ে দেখি জ য় হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি রাগী ভাবে তাকালাম।
~ এটা কি হলো।
~ খাওয়া হলো।
~ আমি বলেছিলাম খাব না।
~ আমি ও বলেছিলাম খাওয়াবো।
জয় আমার সাথে তর্ক করতে লাগল তাই আর কিছু বললাম না। মুখের ভেতরে দিয়েছে এখন ফেলা ও যাবে না তাই খেয়ে নিলাম।
জয় আমার সামনে আবার বসে আমার হাত দুটো নিজের হাতের মাঝে নিয়ে নিলো। তারপর আমার দিকে মায়া ভরা চোখে তাকিয়ে বলতে লাগল,
~ নিলা প্লিজ মুখটা মলিন করে রেখ না। তোমার মুখ এমন থাকলে আমার অনেক কষ্ট হয়। আমি সব সময় তোমাকে খুশি দেখতে চাই সব সময়।
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে জয়ের কথা শুনছি কতো ভালোবাসে আর আমি কিনা একে এতো অবহেলা করেছি। ছলছল চোখে তাকিয়ে জয়ের দিকে।
~ আপনি আমায় এতো ভালোবাসেন কেন। আমি তো আপনার যোগ্য না আপনি আমার থেকে ও অনেক ভালো মেয়ে পাবেন।
~ আমি এতো ভালো মেয়ে চাই না আমার শুধু তোমাকে চাই শুধু তোমাকে। প্লিজ একবার ভালোবাস না কথা দিচ্ছি কখনো ঠকাবো না। কখনো তোমার চোখে জল আসতে দেবোনা।
জয়ের চোখে অসীম চাওয়া। ও অধীর আগ্রহ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে না আমি আর ফিরিয়ে দিতে পারব না। আমি উঠে দাড়িয়ে জয়কে ও নিচে থেকে দাড় করালাম।
হঠাৎ নিলা আমাকে দাড় করিয়ে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো। হঠাৎ এমন কিছু করবে আমার কল্পনার বাইরে ছিলো তাহলে নিলা আমাকে মেনে নিয়েছে। খুশিতে আমি নিজে জরিয়ে ধরতে ভুলে গেছি।
নিলা হঠাৎ সরে যেতি লাগল এখন মনে পরলো আমি এবার নিজেও জরিয়ে ধরলাম শক্ত করে যেন কেউ কখনো আমার বুকে থেকে নিতে না পারে।
নিলার মাথা উঠিয়ে ওর চোখে পানি মুছে দিলাম কপালে একটা ভালোবাসার পরশ দিয়ে আবার জরিয়ে ধরলাম।
এদিকে জয়ের সব ফ্রেন্ড রা এতোক্ষন কি হয়েছে সব দেখেছে আর ওদের মিল দেখে ও খুশি হয়েছে মাঝে শুধু জুলি আগুন চোখে দেখছে আর রাগ কিটমিট করছে।
পরদিন
পর্ব ১২
নিলা আর সীমা একসাথে ভার্সিটিতে আসে। সীমা নিলাকে রেখেই রোহানের কাছে চলে যায়। আর নিলা একাই যাচ্ছিল হঠাৎ সামনে এসে জুলি দাড়ায়।
~ আপনি
~ হ্যা আমি তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
~ জি বলেন।
~ এখানে না আমার সাথে আয়।
নিলা কিছু বুঝছেনা কোথায় যাবে আর এখানে বলতে সমস্যা কি? নিলা জুলির পেছনে পেছনে যাচ্ছে হঠাৎ পেছনে থেকে জয় ডেকে উঠল, পেছনে তাকিয়ে দেখি জয় আমাকে দেখেই দৌড়ে আমার কাছে আসে।
এদিকে জুলি মনে মনে পণ করেছে আজই নিলাকে বলবে যে ও ভালোবাসে জয়কে ও যেন জ য়ের জীবন থেকে চলে যায় যদি না যায় তো জোর করে সরিয়ে দেব এই গাইয়া মেয়েকে। জয় শুধু আমার ভাবতে ভাবতে যাচ্ছে আর শয়তাই হাসি দিচ্ছে হঠাৎ জয়ে কণ্ঠ শুনে তারাতারি পেছনে তাকালো আর ভয় পেয়ে গেল জ য় এদিকে আসছে দেখেই তারাতারি করে জুলি একা রুমে ঢুকে গেল। নয়তো জয় যদি প্রশ্ন করে কি কথা বলতে নিয়ে যাচ্ছি না না তা বলা যাবে না।
জয় নিলার সামনে এসেই জিগ্গেস করলো………
~ এই দিক কোথায় যাচ্ছো?
নিলা সামনে জুলি কে খুজে এ আবার কোথায় গেল।
~ কি হলো বলো আর কাকে খুজছো তোমার ক্লাস তো ওই দিকে এদিকে যাচ্ছো কেন?
~ আসলে জুলি আপু বলল কিছু বলবে আমাকে তাই ওইদিকে নিয়ে যাচ্ছিল।
~ কি জুলি? কিন্তু ও ক ই ওকে তো দেখছি না?
~ কি জানি এখানেই তো ছিলো হঠাৎ উদাও হলো কিভাবে?
~ থাক বাদ দাও তোমার সাথে আমার কিছুকথা ছিলো।
~ ওহ বলেন।
~ আমি না বাড়িতে তোমার কথা বলে দিয়েছি। আরা তোমাকে নিয়ে যেতে বলেছে তুমি কি আজ যেতে পারবে আমার সাথে আম্মু তোমাকে দেখার জন্য তো পাগল হয়ে গেছে।
~ আপনি বলে দিয়েছেন।
~ হ্যা
~ তারা কিছু বলে নি আপনাকে।
~ কি বলবে আমি তাদের একমাত্র ছেলে বলে কথা সবাই তোমাকে মাথায় করে রাখবে দেখো। তুমি যাবে।
~ ইস, আমার লজ্জা করে যেতে।
~ ওরে আমার লজ্জা বতী রে। প্লিজ লজ্জা পেয়ো না চলো আমি আম্মু আববু কে বলে এসেছি তোমাকে নিয়ে যাবো।
~ আমার ভয় করছে তারা যদি আমায় পছন্দ না করে।
~ তোমাকে অপছন্দ করবে এমন কেউ আছে নাকি। প্লিজ রাজি হয়ে যাও নয় আম্মুর সামনে আমার নাক কাটা যাবে।
~ আচ্ছা যাবো।
নিলা রাজি হয়েছে শুধু মাএ জয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তবুও ভ য় করছে তারা কেমন হবে।
ভার্সিটি শেষে জয় দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি নিয়ে নিলার জন্য। আজ জয় অনেক খুশি এতো দিনে নিলা ওর হয়েছে এখন শুধু বাড়িতে বলে বিয়ে।
নিলা ক্লাস শেষে মাঠে এসে দেখতে পায় জ য় কে নীল শার্ট, কালো পান্ট, চোখে সানগ্লাস দিয়ে আছে অনেক সুন্দর লাগছে নিলা হা করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল আর ভাবছে এতো দিন জয় কে কতো দেখছি কিন্তু কখনো এতো সুন্দর লাগে নি আজ নিজের মনে হচ্ছে। জয় নিলাকে দেখেই দূর থেকে হাই দিল। নিলা লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নিয়ে জয়ের কাছে গিয়ে দাড়ালো।
জয় কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল এভাবেই যাবে।
নিলা জ য়ের কথা শুনে মাথা উচু করলো।
~ কেন কি হয়েছে?
~ ওয়েট গাড়িতে উঠে বসো।
বলে গাড়ির দরজা খুলে দিল। নিলা উঠে বসলো ও ভাবেছে কি হলো জ য় এই কথা বলল কেন। গাড়িতে উঠে জয় আমাকে আয়নার নিজের মুখ দেখাল আর আমি তো নিজেই নিজেকে চিনছি না এগুলো কি আমার মুখে। গাল ভর্তি লাল রং এতো রং কোথায় থেকে আসলো হঠাৎ সীমার কথা মনে পরল ওই তো হঠাৎ আমার মুখে হাত দিয়ে বলল…… তোর গাল গুলো কি সফ্ট রে। আমি বলল….. মানে আগে দেখিস নি আজ এতো হাত দিয়ে দেখছিস।
কি অসভ্য এই জন্য তাহলে এসব কররেছে। ওরে তো বলি ও নি আজ জয়ের বাড়ি যাব জানলে হয়তো এমন করতো না কিন্তু এখন কি হবে এভাবে যাব কি করে।
~ এগুলো সীমার কাজ আজ যাওয়া লাগবে না।
~ তাহলে আমাকে এতো গুলো কথা শুনতে হবে তুমি যান। এগুলো দূলে যাবে না।
~ জানি না।
~ টাই কর।
~ গেলে ও খারাপ লাগবে দেখতে।
~ না লাগবে না তুমি ধও প্লিজ জান এই কাজ টা করো আমার জন্য।
এতো রিকোয়েস্ট করলে কি আর না করা যায় আমি ব্যাগ থেকে পানি বের করে ধুলাম কিন্তু পুরো পুরি যাচ্ছে না হালকা গেছে।
~ দেখেন কতো বাজে লাগছে এগুলো যাবে না।
~ এই তোমার কাছে কোন ফ্রেস পাউডার নেই।
~ মানে সেগুলো দিয়ে কি হবে।
~ মুখে লাগাও তাহলে আর বুঝা যাবে না।
~ কিন্তু আমার তো ওইগুলো নেই।
~ নেই মানে তুমি সাজ না।
~ না
~ তাহলে নবীনবরণের দিন সাজলে কি করে।
~ ওই দিন তো সীমার তা দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছিল।
এখন কি হবে।
জানি না। আজ যাওয়া হবে না কাল যাব কেমন।
আচ্ছা কিন্তু তুমি সত্যি সাজ না।
নাহ।
কথাটা শুনেই জ য়ে আমার একদম মুখের কাছে চলে এলো তারপর গালে হাত দিয়ে কি জানি দেখতে লাগল।
~ ওফ গালে হাতাচ্ছেন কেন?
~ দেখছি আসল জিনিস খাত নেয়।
~ ধূর আমাকে দিয়ে আসেন হটেলে।
জয় আমাকে দিয়ে এলো সেদিন সত্যি যাওয়া হলো না।
পরদিন গাড়িতে বসে আছি।
~ জয় আমার খুব র্নাভাস লাগছে তাদের যদি আমাকে পছন্দ না হয়।
~ এতো চিন্তা করো না তো হবে না মানে আমার জানপাখিকে কেউ অপছন্দ করবে এমন কেউ আছে নাকি। আর পছন্দ না করলে ও তুমি আমার ই থাকবে।
যত যাই বলুক আমার তো চিন্তা হচ্ছেই।
পর্ব ১৩
জয়দের বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামলো জয় নেমে নিলার পাশের দরজা খুলে দিল। নিলা গাড়ি থেকে নেমে হা করে তাকিয়ে আছে এতো সুন্দর বাড়ি ইয়া বড় বাড়ির সামনে ফুলের বাগান মনে হচ্ছে সব ধরনের আছে নিলা মুগ্ধ হয়ে দেখছে। এখন আরওভয়টা বেশি হচ্ছে নিলা জানতো জয় রা ধনী কিন্তু এতো ধনী ভাবে নি।
এরা এতো ধনী যদি আমাকে মেনে না নেয়। হাসি বন্ধ করে মুখ মলিন করে ফেলল…
জয় গাড়ি রেখে এসে নিলার দিকে তাকিয়ে দেখে মুখ মলিন করে রেখেছে।
~ এনি প্রবলেম?
মাথা নেরে না করলো জয় হাতের ইশারায় হাসতে বলল…
তারপর নিলার হাত ধরে ভিতরে নিয়ে যেতে লাগল।
~ আমার ভয় করছে।
~ কেন?
~ আমি আপনার জন্য উপযুক্ত না।
~ নিলা আবার সেই এক কথা তুমি শুধু আমার জন্যই উপযুক্ত বুঝছো। আর ভয় পেয়ু না চলো তো।
বলেই কলিং বেল দিলো জয় যতই বলুক আমার তো টেনশন হচ্ছেই। একটা মহিলা দরজা খুলে দিল অনেক সুন্দর মহিলাটি একদম জয়ের চেহারা সাথে মিল আমি জয়ের দিকে তাকাল… কে উনি জানার জন্য।
~ নিলা আমার আম্মু? আর আম্মু এই হচ্ছে নিলা তোমাকে যার কথা বলছিলাম।
জয় ওর আম্মু বলার সাথে সাথে আমি তার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা জন্য কিন্তু তা করতে পারলাম না ওনি আমাকে টেনে সোজা করে দাড় করিয়ে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। মুখ হাত দিয়ে দেখছে হঠাৎ টেনে ভেতরে নিয়ে এলো আমি তো হা করে তাকিয়ে আছি ওনি কী কথা বলতে পারে না নাকি। চুপ করে আছে যে আমাকে নিয়ে সোফায় বসাল আমি ঘুরে জয়ের দিকে তাকালাম তার মুখ হাসি আমি কিছু বুঝানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু জয়তা না দেখে আমার পাশে এসে বসলো।
~ মাশআল্লাহ দেখতো তো একদম পরী এই জন্যই তো আমার ছেলে তোমার জন্য পাগল হয়ে গেছে। দুইদিন ধরে আমার কান জালা পালা করে ফেলেছে তোমার কথা বলতে বলতে। বলে কিনা তোমাকে দেখাবোকালকেই নিয়ে আসবো আমি বললাম পরে আনিস কিন্তু না কালকেই তোমাকে দেখাব।
তার কথা শুনে লজ্জা পেলাম অনেক তাই মাথা নিচু করে আছি। জয় আমার কথা এতো বলেছে শুনে জয়ের দিকে রেগে তাকালাম আমার তাকানো দেখে সে ভয় পাওয়া ভঙ্গি করলো কি অসভ্য আমাকে বলে আম্মু যাওয়া জন্য পাগল করে ফেলে। আন্টি অনেক কথা বলল…
তারপর বলল খাবার আনতে যাই আমি বললাম লাগবো না কিন্তু সে জোর করে গেল। আসার আগে অনেক ভ য় পেয়েছি কেমন হবে কে জানে কিন্তু এখন দেখছি এনি তো খুবই ভালো কতো সুন্দর করে কথা বলল। মনে হয় কতো আপন। আন্টি যাওয়ার সাথে সাথে জয়ের দিকে রেগে তাকালাম।
~ আপনি কি বলছিলেন আমাকে আন্টি আসতে বলেছে?
~ আহ রাগ করছো কেন এই কথা না বললে কি তুমি আসতে। তাই তোমাকে রাজি করানোর জন্য আর আম্মু সত্যি আসতে বলেছে কিন্তু যে কোন সময়।
~ তাই এতো মিথ্যে কেউ বলে।
বলে আমি রাগ করার মতো করে অন্য দিকে তাকালাম জয় আসতে আসতে একেবারে আমার গা ঘেষে বসলো আমি রেগে তাকালাম আর আরেকটু চেপে বসলাম। আবার এগিয়ে আসলো আমি চাপতে চাপতে একেবারে কিনারে চলে গেছি এখন আর যাওয়া জায়গা নেই।
~ আমি উঠে দাঁড়িয়ে যাবো এতো এদিকে আসছেন কেন? (দাতে দাত চেপে)
~ না না তা কেন হবে।
~ তাইতো করছেন।
বলেই রেগে উঠে দাড়াতে গেলে জয় নিলার হাত ধরে ফেলল।
নিলা কিছু বলতে যাবে তার আগেই জয় জোর করে আবার বসিয়ে নিলার পেছনে দিয়ে হাত জরিয়ে ধরলো।
~ এসব কি হচ্ছে আন্টি এখন ই চলে আসবে ছারুন।
~ আরে আসবে না আম্মুর আসতে দেরী আছে।
~ মানে।
~ কতো কিছু রাধবে এখন তারপর না আসবে আর সামান্য কিছু ওই যে দেখে পাঠিয়ে দিয়েছে।
আমি তাকিয়ে দেখি ফল মূল চা বিস্কুট একটা ছেলে নিয়ে আসছে আমাকে জ য় জরিয়ে ধরে রেখেছে ছেলে টা কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে।
~ ছারুন ওই ছেলেটা কি ভাবছে দেখেন তো।
~ কে
জয় ছেলেটার দিকে তাকানোর সাথে সাথে ছেলেটি তারাতারি সব রেখে চলে গেল। আমি হা করে তাকিয়ে আছি ছেলেটা যে জয় কে ভয় পায় বুঝা গেল।
~ খাও
~ নাহ
জয় আমাকে খেতে বলছে কিন্তু আমার খেতে মন চাইছে না জয় নিজে জোর করে আমার মুখে আগুর ঠুকিয়ে দিল আর নিজে ও খেতে লাগল। তারপর আমার হাত ধরে কোথায় জানি যেতে লাগল।
~ আমরা কোথায় যাচ্ছি।
~ চলো গেলেই দেখতে পাবে।
জয় একটা রুমে নিয়ে এলো আমি ভ্র কচকে জিগ্গেস করলাম কার রুমে হঠাৎ চোখ পরলো ইয়া বড় একটা ছবিতে জ য়ের ছবি তার মানে এটা জ য়ের রুমে অনেক সুন্দর রুমটা এদিকে সেদিকে তাকিয়ে রুম দেখছিলাম। একটা সোফা আছে বারান্দা আছে পুরো রুমে ছোট বড় ছবি জয়ের ডেসিংটেবিল ঘুরত ঘুরতে দেখছি হঠাৎ পেছনে থেকে জয় আমাকে জরিয়ে ধরলো। আমি তখন আয়নার সামনে ছিলাম জয় আমাকে জরিয়ে ধরেছে আমি আয়নায় দেখতে পাচ্ছি জ য় একধ্যানে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিলাম। ছুটার জন্য ছটফট করছি।
~ আহ নরো না তো দেখো কতো সুন্দর লাগছে আমাদের এক সাথে।
আমি নিচের দিকেই তাকিয়ে আছি লজ্জা তাকাতে পারছি না।
~ কি হলো তাকাও।
~ না আমার কেমন জানি লাগে।
~ কেমন লাগে।
~ জানি না।
হঠাৎ জয় পেছনে থেকে আমার মুখ উচু করে ধরলো। আমি আয়নার দিকে তাকালাম সত্যি অনেক সুন্দর লাগছে জ য়কে ও কতো সুন্দর আমি ওর সাথে যাচ্ছি না।
আচমকা জয় আমার চুল খুলে দিল তারপর নিজের মুখ নিলো। আমি চোখ বন্ধ করে আছি অদ্ভুত এক অনূভুতি হচ্ছে জয় কাছে আসলেই এমন হয়। হার্টবিট বেরে যায়। এভাবে কতোক্ষণ ছিলাম জানি না হঠাৎ কারো চিৎকার শুনে দুজন দুজনের থেকে সরে দাড়ালাম। জয়ের মুখে বিরক্তির ছাপ দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি জুলি। আমি জুলিকে দেখে বারি অবাক হয় এই মেয়ে এখানে কেন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।
জয় এই সময় জুলিকে দেখে রেগে বলল।
~ তুই এখানে ভার্সিটিতে যাস নি।
~ গেছিলাম তোকে পেলাম না তাই চলে এসেছি। আর এই মেয়ে এখানে কি করছে।
~ সেটা তোর জানার দরকার নেই আর এই মেয়ে এই মেয়ে করিস কেন ওর নাম আছে জানিস না।
জয় আর জুলি কথা বলছে আর আমি দাড়িয়ে ভাবছি এইমেয়ে এখানে কেন।
হঠাৎ তাকিয়ে দেখি জুলি রেগে চলে যাচ্ছে। জয় এসে আমার পাশে দাড়ালো।
~ ওনি এখানে কেন?ওনার বাড়ি কোথায়
~ জুলি তো আমার চাচার মেয়ে।
~ ওও
জয়ের রুমে অনেক ক্ষণ রইলাম। নিচে এসে দেখি আন্টি খাবার দিচ্ছে টেবিলে আমাকে যেতে বলল পাশে জুলি ও বসে আছে মুখি রাগ স্পসট আমি দাড়িয়ে আছি জয় আমার হাত ধরে নিয়ে বসিয়ে দিলো বসে তো আছি খেতে মন চাইছে না।
আন্টি জয় খাচ্ছি না দেখে এটা ওটা জিগ্গেস করছে।
জুলিঃ এসব খাবার কখনো খেয়েছে নাকি যে খেতে পারবো গাই য়া জানি কোথাকার।
হঠাৎ জুলি কথা গুলো বলে উঠলো, আমি এমন কিছু শুনবো ভাবি নি মাথা আর ও নিচু করে আছি জুলি অবশ্য সত্যি বলেছে এসব খাবার আমি কখনো দেখিনি। কিন্তু এভাবে বলবে ভাবিনি চোখ দিয়ে পানি পরে যাচ্ছে।
জয়ঃ (জুলি বলেই চিৎকার করে উঠে দাড়ালো) তোর সাহস কি করে হলো এসব নিলাকে বলার।
জুলিঃ যা সত্যি তাই বলেছি। ওকে জিগ্গেস করে দেখ ও এসব খাবার কখনো চোখে দেখেছে কিনা গাইয়া মেয়ে একটা। এমন কাউকে তুই চয়েজ করলি কি করে আমি তাই ভাবছি।
জয় কিছু বলতে যাবে হঠাৎ দেখলো নিলা দৌড়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
জয়ঃ তোকে আমি পরে দেখে নিচ্ছে।
বলেই জয় ও নিলার পেছনে ছুট লাগায়।
পর্ব ১৪
জয় নিলার পেছনে যাওয়ার জন্য দৌড়ে দিতে গেলে জুলি জয়ের হাত ধরে ফেলে। জয় আগুন চোখে জুলির দিকে তাকায়।
~ জুলি হাত ছার।
~ নাহ তুমি যাবে না ওই গাইয়া মেয়ের পেছনে। কি আছে ওই মেয়ের মাঝে যে তুমি ওর জন্য এতো পাগল হলে। ওই মেয়ে তোমার যোগ্য না জয় তুমি ওকে যেতে দাও।
~ জুলি হাত ছার বলছি।
~ না ছারবো না আমি কিছুতেই ওই মেয়ের সাথে তোমাকে যেতে দেবো না।
জয় জুলি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে চলে যায়। জুলি পেছনে থেকে অনেক কিছু বলেছে কিন্তু জ য় সেদিকে আর খেয়াল দেয় নি।
জয়ের আম্মু রান্না করে অস্থির হয়ে গেছিলো তাই খেতে দিয়েই রুমে চলে যায়। একটু ফ্রেশ হয়ে জ য়ের আম্মু নিচে এলো কিন্তু এসেই চারপাশে জয় আর নিলাকে খুজতে লাগল খাবার সেই ভাবে আছে পাশে জুলি বসে আছে কিন্তু জয় নিলা নেই।
~ জুলি জয় কই রে।
জুলি একবার জয়ের আম্মুর দিকে তাকিয়ে কিছু না বলে দৌড়ে বেরিয়ে আসে বাড়ি থেকে। জয়ের আম্মু কি হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছে না।
এদিকে
জয়ে তারাতারি বেরিয়ে দেখে নিলা গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে।
~ নিলা
নিলা জয়ে ডাক শুনে তারাতারি করে চোখ মুছে সামনে হাটতে লাগে।
জয় পেছন থেকে নিলার হাত ধরে আটকে ধরে।
~ নিলা তুমি এভাবে চলে এলে কেন? জুলির কথায় কষ্ট পেয়েছো প্লিজ কষ্ট পেয় না ও তোমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি বলছি।
~ জয় আমি কষ্ট পায় নি আর জুলি যা বলেছে ঠিকই বলেছে আমি তো সত্যি গরীব এতো ভালো খাবার কখনো খাওয়া তো দূরে থাক দেখি ও নি। তোমার জন্য আমি উপযুক্ত না এতে সবাই তোমাকে কথা শুনাবে তুমি আমাকে ছেড়ে দাও তোমার যোগ্য কাউকে নিয়ে সুখে থাক।
জয় ঠাস করে নিলার গালে চর দিয়ে দিলো। নিলা এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলো না। ও হা অবাক হয়ে গালে হাত দিয়ে জয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
জয় নিলার কাধে হাত দিয়ে বলতে লাগে..
~ কি বললি তুই আমি তোকে ছেড়ে দেবো।
কি হলো কথা বল। আমি কি তোর পরিবারের দেখে ভালোবেসে ছি যে ছেড়ে দেবো আমি তোকে ভালোবাসি। যত যাই হয়ে যাক আমি তোকে কখনো ছাড়তে পারবো না যেদিন ছারবো সেদিন আমি আর এই পৃথিবীতে থাকবো না। আর কোন দিন যদি এমন কথা বলিস তোকে আমি।
বলেই জয় নিলা জরিয়ে ধরলো নিলাকে। ওরা যে রাস্তায় আছে সে খেয়াল জয়ের নেই ই ও নিলা জরিয়ে ধরে আছে চোখ দিয়ে পানি পরছে দুজনের ই।
জয় নিলাকে ছেড়ে দিয়ে ফোন বের করে গাড়ি নিয়ে আসতে বলে। দুই মিনিটের মধ্যে গাড়ি নিয়ে আসে ড্রাইভার। জ য় নিলাকে নিয়ে গাড়িতে উঠেবসে আর ড্রাইভার কে চলে যেতে বলে।
নিলা মাথা নিচু করে চুপ করে বসে আছে। জ য় গালে খেয়াল করলো লাল হয়ে গেছে একদম। জয় এগিয়ে এসে নিলার গালে হাত দিয়ে বলতে লাগল…..
~ অনেক ব্যাথা পেয়েছো তাই না।
নিলা হাত সরিয়ে দিয়ে ~ না
~ মিথ্যে বলছো তোমার গাল দেখেই বুঝা যাচ্ছে সরি।
নিলা কিছু বললো না চুপ করে আছে।
~ সরি বললাম তো আর হবে না তুমি ওইসব না বললে কি আমি মারতাম। আম্মু ও ভাবছে কোথায় হাওয়া হয়ে গেলাম আমরা। কি হলো কথা বলবে না। আচ্ছা মারছি এখন একটু আদর করে দেয়।
বলে জয় নীলার যে গালে থাপ্পড় দিয়েছে সে গালে চুমু দেয় কয়েকটা। নিলা মাথা ঘুরিয়ে নেয়।
~ কি হলো আদর করতে ও দেবে না।
~ লাগবো না আমার আদর।
~ তোমার না লাগলে আমাকে দাও আমার তো আদর করলে অনেক ভালো লাগে।
বলেই জয় গাল এগিয়ে দেয়।
~ এই দাও না।
~ পারুম না যে আমাকে মারে তাকে আমি আদর দিতে।
~ সরি
কানে হাত দিয়ে। নিলা আর রেগে থাকতে পারলো না হেসে দিলো।
~ চলো আম্মু আমাদের খুজছে নিশ্চয়ই।
~ নাহ আমি আর যাব না।
~ কেন
~ ভালো লাগছে না।
~ আম্মুকে আমি কি বলবো।
~কিছু একটা বলে দিয়েন।
এভাবে কাটতে থাকে সময় জুলি আর কিছু করে নি ওদের সামনেই আসে নি। এর মাঝে নিলার প্রচুর জর আসে জরে ভার্সিটিতে ও যেতে পারে না।
রাতে নিলা শুয়ে আছে পাশে সীমা গভীর ঘুমে। নিলার জর এখন কমই সারাদিন ঘুমিয়ে কাটানোর জন্য এখন জেগে আছে। কিন্তু সীমা ডিসটার্ব করতে চাই না তাই নরছে না। হঠাৎ কেউ এসে দাড়ালো নিলার সামনে। অন্ধকারে ভালো বুঝছে না কিন্তু এই রাতে কে এলো রুমে। চিৎকার করতে যাবে ওমনি মুখ চেপে ধরে।
~ চেচিয়ে ও না, আমি জয়।
~ আপনি এখন এখানে।
~ তোমাকে কয়দিন ধরে দেখি না অনেক দেখতে মন চাইছিল তাই চলে এলাম।
~ কাল তো আমি ভার্সিটিতে যেতামই।
~ তবুও আমি থাকতে পারতাম না।
জ য় ফোনের লাইট ধরে রেখেছে। একধ্যানে তাকিয়ে আছে চোখের পলক ও ফেলছে না। আধা ঘন্টা হয় গেল সরছেই না।
~ আর কতো দেখবেন যান আলা।
~ কেবল না এলাম এখন ই চলে যাব আর একটু থাকি।
~ না সীমা জেখে যাবে যান আপনি।
~ নাহ আর একটু প্লিজ।
জয় আমার মুখে কাছে মুখ এনে বলল… নিলা আমি যদি তোমার (ঠোঁট দেখিয়ে) এইখানে চুমু দেয় তুমি কি রাগ করবা।
আমি জয়ের এমন কথায় রেগে তাকালাম। সাথে লজ্জা ও পেলাম।
~ হুম অনেক রাগ করবো।
~ তাহলে আর করবো না।
জয়ের কথা শুনে হেসে দিলাম জয় আমার কপালে কিস করে চলে গেল।
পর্ব ১৫
ভার্সিটিতে বসে আছি আমি আর সীমা। ক্লাস শেষ করে এখানেই বসে আছি সীমা যাওয়ায় জন্য হামবি তামবি করেই চলেছে কিন্তু আমি চুপ করেই বসে আছি। আর ওর বিরক্তি মাখা কথা বলে চলেছে। আমি কিছু বললাম না চুপ করে আশেপাশে একজনকে খুজে চলেছে কোথায় সে আজ একবার ও দেখা হয় নি তার সাথে খুব মিস করছি সে তো অপেক্ষা করতে বলেছিল করছি ও তাহলে আসতে এলো লেট কেন। নাকি ভুলে গেছে সব সময় তো পিছেই লেগে থাকে আজ তার দেখা নেই। দুচোখ এক নজর দেখার জন্য হায় হতাশ হচ্ছে কিন্তু সাহেবের খবর নেই।
আর কতোক্ষণ থাকবো বল তো ভাইয়া সিউর বিজি আছে চল চলে যাই।
কিছু বলতে যাব হঠাৎ ঝড়ের গতীতে দৌড়ে এসে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে হাটু বাজ করে দাড়িয়ে হাপাতে লাগল। দেখেই বুঝা যাচ্ছে দৌড়ে এসে হাপিয়ে গেছে। কিন্তু এতো দৌড়ের কারণে কি আমি জয়ের দিকে তাকিয়ে আছি অসম্ভব সুন্দর লাগছে লাল রঙের শার্ট পরেছে এই লাল রং আমার একেবারে না পছন্দের কখনো আমি এই রঙ পছন্দ করি না।
কখনো এই রঙের ড্রেস ও পরি না ওই দিন জোর করে সীমা আমাকে এই রঙের শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিল। ওর জন্য শুধু পরেছিলাম আজ জয় কে এই অসহ্য কালারে ও ভালো লাগছে দেখতে মনে হচ্ছে রঙটা উনার জন্য তৈরি ওনি কপালের গাম টিসু বের করে মুছে নিলেন সাথে চোখের সানগ্লাস খুলে হাতে নিলো। আমি হা করে কতোক্ষণ ধরে তাকিয়ে ছিলাম জানি না হঠাৎ কেউ মুখে চাপ দিয়ে কথা বলতেই সম্মতি পেলাম।
তাকিয়ে দেখি জয় আমার একদম কাছে এসে নিজের হাত দিয়ে মুখ বন্ধ করে বলতে লাগল….. কি ব্যাপার জানপাখি আজ তুমি পলকহীন তাকিয়ে আছে। আমায় কি আজ একটু বেশিই কিউট লাগছে যে তুমি চোখ সরাতে পারছো না।
বলেই দুষ্টুমি হাসি দিয়ে চোখ টিপ দিলো। আমি তারাতারি চোখ সরিয়ে নিলাম ছি ছি ছি কি ভাবছে জয় আমাকে কেমন নিলজ্জের মতো তাকিয়ে ছিলাম। একরাশ লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে আছি।
এই যে লজ্জা বতী লজ্জা পরে পেয় এখন চলো তারাতারি।
কোথায় যাবো?
কে শুনে কার কথা সে কি আর আমার কথার উওর দেবে নাকি। আমার হাত ধরে হাটতে লাগল আমি প্রশ্ন করেই যাচ্ছি কি ফলাফল শূন্য কিছু বলছে না। হঠাৎ সীমা কথা মনে এলো পেছনে ফিরে সীমাকে খুজছি নাহ নেই কোথাও নেই। ও আবার কোথায় গেল। জয় আমাকে গাড়ির সামনে এনে দাড় করিয়ে দরজা খুলে দিল। আমি কিছু বলতে যাব।
জানপাখি গাড়িতে উঠে যা বলার বলো আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে প্লিজ।
কিন্তু সীমা। আমাকে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে দিলো।
গাড়িতে আপনি এই ভাবে সীমা মিথ্যে বলে তারিয়ে দিলেন। ও আমাকে কত কথাই শুনাবে আজ আল্লাহ জানে।
রাগ করে বসে আছি গাড়িতে জয় বলল ও নাকি সীমাকে বলেছে আমরা আলাদা একটু সময় কাটাবো। কি বিচ্ছিরি ব্যাপার আমাকে বলল ও না কেন যে এতো দেখতে গেলাম। নিজের মাথার চুল নিজেকেই ছিরতে ইচ্ছে হচ্ছে তবুও চুপচাপ বসে আছি। হঠাৎ একটা রেস্টুরেন্টের সামনে এনে গাড়ি থামালো জয়।
আমি ভ্র কুচকে তাকালাম এখানে কি কি বুঝলো কে জানে সে তরিধগতীতে নেমে গেল গাড়ি থেকে আর আমাকে ও নামিয়ে রেস্টুরেন্টের ভিতরে নিয়ে এলো। রেস্টুরেন্টে বসে আছি এখানে খেতে এসেছে রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। ওই দিকে সীমা নিশ্চয়ই রেগে আছে আর এই লোক খেতে আনার জন্য ওকে রেখে এলো।
কি হলো ফুলে আছ কেন খাও? তোমার কি খিদে টিদে পায় না কখনো তো খেতেই দেখি না এভাবে খাও না দেখেই শরীরেই এই হাল। কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেন খাও?
খাব না আমি আপনার ইচ্ছে আপনি খান।
আমার ইচ্ছে এটা কেমন কথা জানপাখি আমি তো তোমার জন্যই এসেছি।
আমি কি আসতে বলেছি। আমি কি বলেছি আমার খিদে পেয়েছে এই খাওয়ার জন্য আপনি সীমাকে নিয়ে আসেন নি।
আহ সীমা কে আমি তোমার সাথে একটু একা থাকতে চেয়েছি তাই তুমি কি খুব বেশি রাগ করেছো। ওকে যাও এর পর থেকেই যেখানে যেখানে তোমার সাথে যাবে ওকে নিয়ে যাবো চাইলি বাসর ঘরেও নিয়ে যাবো এবার হ্যাপি।
আমি তো হা হয়ে কথা শুনছি একটু বললে এনি যে বেশি বুঝে তা তার জাতি গত সমস্যা।
একটু পরেই জানতে পারলাম আমাকে নিয়ে শপিং মলে যাবে মায়ের জন্য শাড়ি আর বাবার জন্য পান্জবী কিনতে। আর আমাকে পছন্দ করার জন্য আনা। কাল বাবা মায়ের এ্যানির্ভাসিটি তাই। বাড়িতে নাকি অনেক কাজ তাই লেট হয়েছে।
আমি বললাম আমার পছন্দ ভালো না কিন্তু কে লুনে কার কথা সে তো আমার পছন্দ ছাড়া নেবেই না। কিন্তু আমি পরলাম মহা মশকিলে জয়ের মাকে দেখেছি অনেক ইসমাট তার কেমন পছন্দ আমি কি করে বুঝবো যদি আমার পছন্দ ভালো না লাগে। অনেক ভেবে মেরুন রঙের একটা শাড়ি চয়েজ করে দিলাম। অনেক টেনশন নিয়ে না জানি ভালো লাগে নাকি খারাপ। বাবার জন্য সাদার সাথে গোলডেনের পান্জাবী সেটা জয় পছন্দ করলো। গাড়িতে বসে আছি শপিং শেষ করে। আমাকে রেখে জয় আবার শুট দিয়েছে কেন জিগ্গেস করলে কিছু না বলেই চলে গেল কিছু ক্ষণ পর হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে এলো।
রুমে বসে আমি আর ভাবছি কি কিনলো জয় যেটা আমাকে দেখাতে পারলো না। কি এমন ছিলো খুব কি পারছনাল কিছু হবে হয়তো। তবুও খারাপ লাগছে কেন জানি।
সকালে সীমা দৌড়ে একটা প্যাকেট নিয়ে এলো আমার সামনে আর বলতে লাগল।
তোর জন্য গিফট এসেছে দেখ।
কে দিলো গিফট।
খুলে দেখি একটা শাড়ি কালো রঙের মধ্যে হালকা কাজ লাল। অনেক সুন্দর শাড়িটা। কে দিলো এই শাড়ি হঠাৎ চিরকুট পরলো চোখে।
জানপাখি
শাড়িটা পরে রেডি হয়ে থেকো। আমি পাচঁটার দিকে নিতে আসবো নয়তো গাড়ি পাঠিয়ে দেবো লেট করো না কেমন। আর তখন এই শাড়ি কিনেছিলাম তোমায় সারপ্রাইজ দেবো তাই বলি না।
তোমার জয়
লেখা ~ শিলা আক্তার
চলবে
(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “তোমায় হৃদয় মাঝে রাখবো – Premer golpo new Bangla” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)
আরো পড়ূন – তোমায় হৃদয় মাঝে রাখবো (শেষ খণ্ড) – Premer golpo new Bangla