তুমি আমার ভালোবাসা – বাংলা প্রেম

তুমি আমার ভালোবাসা – বাংলা প্রেম: আমি এমন না করলেও আমার জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যেদিন তোমাকে অন্য কারো সাথে বিয়ে করতে দেখেছিলাম। তোমাকে রুমে রেখে এখানে কেন চলে এসেছি সেটা জানতে চাও? কারণ আমি তোমার মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছি।

মূলগল্প

~ প্লিজ, আমার কাছে আসবেন না, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি এখান থেকে চলে যাব।
~ কি করে ছেড়ে দিই বল? আজ রাতের জন্য যে আমি তোমাকে কিনে নিয়েছি।
বলেই বলেই বিহান মেয়েটির দিকে যেতে থাকল। যখন ওর অনেক কাছাকছি পৌঁছে গেল তখন একটা কথাই ওকে থামিয়ে দিল।
~ বিহান, আমাকে বাঁচান।

~ এই মেয়ে তুমি আমার নাম জানলে কি করে?
~ আমি আপনার নাম জানব কেন?
~ তুমি যে বললে বিহান?
~ বিহান তো আমার…
~ পুতুল?

নিজের এই নাম শুনে দিশা চোখ উপরে তুলল। এতেক্ষন ভয়ে মাথা নামিয়ে রেখেছিল। অস্ফুটস্বরে আবার বলে উঠল,
~ বিহান? তুমি এখানে?

বিহান কিছু না বলে দিশার কাছে গিয়ে ওর ডান কাধ থেকে শাড়ির আঁচল ফেলে দিয়েসেখান থেকে ব্লাউজ টেনে ধরল। দেখল সেখানে গাড় করে B লেখা। এই একই লেখা যেটা ওর পুতুল লিখেছিল ওর অগোচরে। হ্যাঁ দিশাই ওর পুতুল। ওর ভালোবাসা। এতক্ষণ নেশার রেশ থাকায় চিনতে পারে নি। কিন্তু এখন সেটা কেটে গিয়েছে।

বিহান ওর কাছে B লেখাটার উপর গভীর ভাবে ঠোঁট ছুঁইয়ে সরে এসে দিশার পাশে বসল। তারপর গম্ভীর স্বরে জিজ্ঞেস করল,
~ তুমি এখানে কেন? এসব কিভানে হল?

দিশা কাঁদতে কাঁদতে বলতে শুরু করল,
~ তুমি বলেছিলে ফিরে আসবে, কিন্তু আসতে অনেক দেরি করে ফেলেছিলে সেদিন। যার ফল স্বরুপ আমার বিয়ে আরেক জনের সাথে হয়ে যায়। আমার বিয়ের কয়েক মাস পর আমার স্বামী মারা যায়। বিয়ের পর থেকেই আমাকে ওই পরিবারের কেউ সহ্য করত না। অনেক অপমান করত, তাও চুপচাপ সহ্য করে গিয়েছি। কিন্তু আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ওর চাচাতো ভাই আমাকে …
আর শেষ করতে না পেরে বিহানের বুকে ঢলে পড়ল দিশা। বিহানের কপালের রগ ফুলে উঠেছে। সে হাত মুঠ করে নিয়ে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে।

~ আমাকে না ওরা কিছু হলেই মারত, অনেক ব্যথা করত তাও কিছু বলি নি। কয়েকদিন আগে আমার শাশুড়ি বলল যে আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে। বলে আমার চোখ বেঁধে দিয়েছিল। তারপর এখানে নিয়ে আসে। আমি প্রথমে কিছু বুঝতে পারি নি। কিন্তু ওই মহিলা বলল আমাকে না কি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে বিশ্বাস করি নি। কিন্তু তারপর ওই রাত থেকে ওই লোকগুলো এই রুমে আসতো আর আমাকে…আ…আমা…
~ আর কিছু বলা লাগবে না।বলে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে সরে আসে বিহান। দিশাকে কোলে তুলে নেয় আর সেখান থেকে বের হয়ে যায়। ওখানকার মালকিন কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু বিহানের কথা তাকে থামিয়ে দেয়,

~ কেউ যদি আমাকে বাঁধা দিতে আসে তাহলে তাকে শেষ করতে আমার ১ সেকেন্ড ও লাগবেনা।
এই কথা শুনে আর কেউ আগানোর সাহস পায় নি। সবাই বিহানের ক্ষমতা সম্পর্কে জানে। আর বিহান ও এখন তেমন ঝামেলা করে নি কারণ দিশা এখন স্বাভাবিক নয়।
বিহান দিশাকে নিজের বাড়িতে এনে ওর হাতে একটা শাড়ি ধরিয়ে বলে ফ্রেশ হয়ে বের হতে। দিশা ও বাধ্য মেয়ের মতো সেটা ধরে ওয়াসরুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে বের হলে বিহান ওর হাত ধরে বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে কাজী বসে ছিল। দিশা অবাক হয়ে তাকায়।

~ তুমি চাও আর না চাও, আজ আমাকে বিয়ে করতেই হবে তোমার।
দিশা কিছু বলে নি। শুধু বিহানের কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিল। বিয়ে শেষ হলে বিহান ওকে রুমে গিয়ে বসতে বলে। দিশা চুপচাপ চলে যায়।

বিহান ওর সব কাজ শেষ করে নিজের রুমে প্রবেশ করে। তারপর সোজা বেলকনিতে চলে যায়। বিহানকে ওদিকে যেতে দেখে দিশাও ওর পিছন পিছন যায়।

~ কেন করলে তুমি এমন? আমার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করলে? এটা না করলেও পারতে।
~ আমি এমন না করলেও আমার জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যেদিন তোমাকে অন্য কারো সাথে বিয়ে করতে দেখেছিলাম। তোমাকে রুমে রেখে এখানে কেন চলে এসেছি সেটা জানতে চাও? কারণ আমি তোমার মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছি। তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি বলে নিজের জিদ থেকেই অনেক মেয়ের সাথে রাত কাটিয়েছি। আর আজও… কিন্তু তোমার সাথে দেখা হয়ে গেল। নিজের ভুল এর জন্য এখন অনুতপ্ত হলেও আমি তোমার চোখে অনেক নিচু হয়ে গিয়েছি।

~ তাহলে নিচু তো আমিও হয়েছি। এই কয়েক দিন ওখানে ওই লোকগুলো…
~ তুমি নিচু নও। তুমি আমার ভালোবাসা। তাই এই কথা একদম মনে আনবে না পুতুল। তুমি আমার পুতুল।

~ তুমিও আমার ভালোবাসা।
বলতেই বিহানের মুখে হাসি ফুটে উঠল।
~ শুনেন, একটা জিনিস চাইব?
~ বল পুতুল।

~ আজ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিবেন?
বিহান আর দেরি না করে সাথে সাথে দিশাকে কোলে তুলে নিল আর রুমে গিয়ে খাটে শুইয়ে দিল। তারপর ওর পাশে শুয়ে ওকে বুকে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলাতে থাকল।

লেখা – সাদিয়া সৃষ্টি

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “তুমি আমার ভালোবাসা – বাংলা প্রেম” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – কী দোষ ছিল আমার – Bertho premer golpo

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *