উনি তো আমারই – valobasar golpo 2020
উনি তো আমারই – valobasar golpo 2020: ছোটকাল থেকেই বলার পর আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। এমনকি উনিও। আসলে উনাকে এতদিনেও বলা হয়নি একথা।
মূলগল্প
ঠাস ঠাস ঠাস, ঠিস ঠিস ঠিস, ঠুস ঠুস ঠুস…
বল আর জ্বালাবি আমায়? জলদি বল। নিজেকে কি মনে করেন আপনি? আজ তোর একদিন কি আমার ২৪ ঘণ্টা।
ঠাস ঠুস ঠাস ঠুস………
আরে আরে কি ভাবছেন? ভাববেন না যে আমি কাউকে মারছি। আমি তো আসলে কাপড় ধুতে এসেছিলাম। তারই আওয়াজ শুনলেন এখন। এই অসময়ে আমি ইচ্ছা করে কাপড় ধুতে আসি নি। আমাকে জোর করে পাঠানো হয়েছে।
আমি রিমিকা আইরিন। অনার্স ফাইনাল এ পড়ুয়া একটা বাচ্চা মেয়ে। আর যার জন্য এবং যার কাপড় এখন আমি ধুতে এসেছি সে আমার চাচাতো ভাই, ৬’২’ এর ল্যাম্পপোস্ট, খাম্বা কোথাকার, একটা অভদ্র ছেলে। ঐ রায়মানের বাচ্চা; ওহ; সরি রায়হান চাচুর বাচ্চা রায়মান আহমেদ হল আমার গুনধর চাচাতো ভাই। ইশ… সেই ছোটকাল থেকে তার উপর আমি ক্রাশ নামক বাশের গ্লাসে আমি জুস পান করে এসেছি।
কি আর বলি বলেন? কিন্তু উনি আমাকে মানুষ বলে ভাবেন কিনা তাতে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমার আব্বু রা ২ ভাই। এক সাথেই থাকেন। সেই সূত্রে উনি আর আমিও একই বাড়িতে বসবাস করি। এই আর কি?
আজ সকালের ঘটনা। ছুটি থাকায় সকালে ঘুম থেকে উঠা আমার কাছে এভারেস্টে চড়ার সমান। কিন্তু উনার জন্য সেই সকালেই উঠতে হবে। আচ্ছা, এ পর্যন্ত না হয় মানলাম; কিন্তু তারপর খাওয়া, ‘ইয়ে তো আন্যায় হে’ আর এই জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি না খেতে চাওয়া সত্ত্বেও যখন উনি জোর করে আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলেন, তখন অসাবধানতা বশত কিছু খাবার উনার শার্ট এর উপর ল্যান্ডিং করল।
এতে আমি কি করতে পারি বলুন? অফিসে যাওয়ার আগে একটি আক্রমণাত্মক বাণী শুনিয়ে গেলেন– ‘অফিস থেকে এসে যেন এই শার্ট টা পরিষ্কার দেখি। ধুয়ে দিবি। নিজ হাতে। আম্মু বা ছোট আম্মুর কাছে সাহায্য চাইলে এর ফল ভালো হবে না। বিদায়।’ এতেই আমার হাওয়া টাইট। তাই আর দেরি না করে চলে আসলাম ধুতে। যা রাগ,সব মনে হয় উনার শার্ট এর উপরই ঝাড়ছি।
কিন্তু মন ভরছে না। বেশি রাগ নির্গমনের ফলে যদি শার্ট এর সুতো আহত হয় তবে আমাকেই তো তার ব্যান্ডিজ করতে হবে, আম্মু আর বড় আম্মুর হেল্প নিতে পারব না। তাহলে সেই সেলাই আবার খুলে আমাকে করতে আদেশ দিবেন। তাই একবার বাড়ি মারছি আর ১০ বার চেক করছি। কেন যে আজই শুক্রবার হল সেটা আমি এখনও বুঝলাম না। নাআহলে ক্লাসের বাহানায় এটা থেকে বাচা যেত।
এই লোকটাকে আমিও বুঝতে পারি না। কখনো ভালো তো কখনো পচা আলু। সেই ছোট থেকে কত বার যে ক্রাশ খেয়েছি তার হিসেব নেই। কখনো এক নজরে একাধিক বার। কিন্তু তার আচরণে মাঝেমধ্যে এমন লাগে যেন আমার জাত শত্রু। উনি আমার ছোট্ট মস্তিষ্কের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
আমার হাঁটাচলা,কথা বলা, ঘুমানো সব কিছুর খেয়াল রাখবেন। আমার পোশাক ও তার বাইরে নয়। উনার জন্য আমি শাড়ি পড়তে পারি না, সাজগোজ তো দূরে থাক। বোরকা পড়ে চলতে হয়।
ফ্রেন্ড ও কে কে তাকে জানিয়ে দিতে হয়। একবার রান্না করতে গিয়ে হাত কেটে গিয়েছিল। তার পর থেকে ৫ মাস আমি তো রান্নাঘরে ঢুকতেই পারি নি। উনি আমাকে রোজ ক্লাসের আগে পৌঁছে দেন আবার বাসায় নিয়ে আসেন। কোথাও গেলে আমার সাথে যাবেন। পিকনিক বা স্টাডি ট্যুর ও বাদ নেই। বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে। কিন্তু এই বৃষ্টি তে ভিজতে আমার তাকে বলতে হবে। অনেক বলার পর ৫-১০ মিনিট,বড়জোর ১৫ ভেজার অনুমতি মেলে। যদিও এটুকু ভিজেই জ্বর আমাকে হ্যালো বলতে চলে আসে। আমার খোঁজ কবর নেয়। আর এই সময় আমার যত্ন নেয়া, ওষুধ খাওয়ানো, খাবার খাওয়ানো, সারা রাত জেগে থাকা উনিই করেন। উনি সত্যিই অদ্ভুত!!!
কাপড় ধুয়ে ছাদে গেলাম বেচারাকে একটু খোলামেলা জায়গায় বাতাস খাওয়াতে। বেচারা বলছি কারন এতক্ষণ কম জ্বালাতন করি নি আমি তাকে। তাই তার বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। তারপর নেমে যেই বাসায় ঢুকলাম, শুনতে পেলাম আব্বু আর বড় আব্বু কথা বলছেন, তাদের কথা শুনে বুঝতে পারলাম আমার সেই দিন চলে এসেছে।
এ হল সেই দিন যে দিন আমি প্রচণ্ড কঠোর হয়ে যাই। এ হল সেই দিন যে দিন আমি সারাদিন অনশনে থাকি। এ হল সেই দিন যে দিন আমি … আচ্ছা; এবার থামি; আসলে আমি তখন শুনলাম বড় আব্বু আর আব্বু বলছিলেন আগামীকাল উনার জন্য মেয়ে দেখতে যাবে। বছরে এমন দিন আসলে আমি সেদিন সারাদিন আমার রুমে দরজা বন্ধ করে বসে থাকি। আম্মু বা বড় আম্মু এসে শুধু খাবার ঘরে দিয়ে আসে। সারাদিন মনমরা হয়ে বসে থাকি। একেবারে রাতে যখন কেউ এসে বলে যে উনার মেয়েকে পছন্দ হয় নি তখন চলে যাই বাইরে। মন ভরে খাই। মুখে হাসি ফুটে উঠে। তবে আজও জানি না যে এতগুলো মেয়ের মধ্যে একজনকেও উনার পছন্দ হয় নি কেন?
তাই ভেবেই রেখেছি আগামিকাল আমাকে সারাদিন ঘরেই থাকতে হবে।
বিকালে উনি কাজ শেষে বাসায় আসেন, এসেই
রায়মানঃ রিমিকা এই রিমিকা
আমি চলে গেলাম উনার কাছে। আমকে দেখে আবার বলতে শুরু করলেন-
রায়মানঃ শার্ট টা কি ধুয়েছিস?
আমিঃ হ্যাঁ
রায়মানঃ কোথায় আছে এখন?
আমিঃ ছাদে হাওয়া খেতে গিয়েছে।
রায়মানঃ ঠিকমতো ধুয়েছিস তো?
আমিঃ নিজেই দেখে নে ছাদে গিয়ে।
রায়মানঃ আচ্ছা, খুব টায়ার্ড লাগছে। যা তো, এক কাপ চা নিয়ে আয়
আমি চলে গেলাম চা বানাতে। চা নিয়ে এসে দেখি উনি ফ্রেশ হয়ে এসে চুল মুছছেন। আমার মনে পড়ে গেল উনার মেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা। তাই রাগ উঠে গেল। চা এর কাপটা টেবিলের উপর রেখে চলে যেতে গেলাম।
রায়মানঃ কাল কি হবে শুনেছিস?
আমিঃ হুম
রায়মানঃ কাল তোর জন্য ভাবী দেখতে যাচ্ছি
আমিঃ আমি কি চেয়েছি তোর কাছে?
রায়মানঃ না, ভাবছি পছন্দ হলে কাল হতেও পারে। তুই কি যাবি?
আমিঃ না, তোর বউ, তুই দেখতে যা, আমি ‘কাবাব মে হাড্ডি’ হতে যাব কেন রে?
আমি সাধারণত উনাকে মনে মনে প্রচণ্ড শ্রদ্ধা করি। একা থাকলে উনাকে উনি বলেই ডাকি। তবে বাইরে সবার সামনে উনাকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করি। তবে উনার উপর রাগ হলেই আমি উনাকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করি। উনি আমার রাগ টা বুঝতে পারলেন,তাই বললেন-
রায়মানঃ এই রিম শোন;
এই এই গেল; সব রাগ গেল; রাগ নামক যে বরফ জমছিল, সব গেল তো পানি হয়ে। উনার মুখা ‘রিম’ নামটা আমার বড্ড ভালো লাগে। আমাকে সবাই ডাকনামে ডাকে, কিন্তু উনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি আমাকে হয় রিমিকা বলে ডাকেন নাহয় রিম বলে। আমার রাগ উঠলেই উনার মুখ থেকে এই নামটা শোনা যায়। এই নাম শুনলেই আমি গলে যাই কেন জানি। উনি আবার বললেন–
রায়মানঃ এই রিম। এদিক আয় তো। আজ প্রচুর কাজের চাপ ছিল। এদিকে এসে আমার মাথাটা মুছে দিয়ে একটু ম্যাসাজ করে দে তো
আমিঃ আচ্ছা তুই বস।
আমি দিচ্ছি
উনি চা নিয়ে চেয়ার এ বসে পড়লেন, আমি উনার মাথা মুছে দিতে লাগলাম। যদিও ইচ্ছা করছিল মাথার চুলগুলো টেনে টেনে ছিঁড়তে, কিন্তু উনি সত্যিই অনেক ক্লান্ত। তাই নিজের রাগ কে মাটি চাপা দিয়ে কাজে লেগে পড়লাম।
পরের দিন আসলো। আমি আজ কোনভাবেই রুম থেকে বের হব না। বাড়ির সবাই এ কথা জানে। তাই কেউ আজ সকালে ডাকতে আসলো না। খাবার রুমে দিয়ে চলে গেল মেয়ে দেখতে। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে এই মেয়েটাকেও উনার পছন্দ হবে না। তবুও রাগ আমি দেখাবই।
রাতে আমাকে খেতে ডাকতে আসলো আম্মু। রুমে ধুক্তে দেখেই আমি ৭০% শিয়র। তারপর আম্মুর বলার পর বুঝতে পারলাম এবারও উনাকে দিয়ে বিয়ের টিকেট কাটাতে ব্যর্থ হয়েছে আমার পরিবার। তাই আম্মু রুম থেকে বের হওয়ার পর আস্তে করে দরজা লাগিয়ে লক করে দেখে নিলাম যে লক হয়েছে কি না। তারপর আস্তে করে Chammak Challo গান টা ছেড়ে কিছুক্ষণ নাচলাম।
খুশি মনে চলে গেলাম খেতে। খেয়েদেয়ে আবার ঘরে ফিরে এসে দরজা লক করে চেক করলাম। তারপর Lungi dance গানটা ছেড়ে লুঙ্গি পরে নেচে নিয়ে চললাম ঘুমের রাজ্যের উদ্দেশ্যে। লুঙ্গিটা অবশ্য আমার আব্বুর উপহার ছিল আমার ৯ম জন্মদিনের জন্য। খুব বায়না ধরতে হয়ে ছিল ওটার জন্য। বলা যায় -‘এক লুঙ্গি পানেকি কিমাত তুম ক্যায়া জানো রামেস বাবু’ অবশ্য এখানে তো আর কোন রামেস বাবুও নেই।
রাতে উনি আমাকে ডাকলেন ১১.৫০ মিনিটে। আমি বুঝতে পারলাম না, এত রাতে ডাকার কারণ কি? কিছু সেকেন্ড এই মস্তিষ্ক খাটিয়েও প্রশ্নের উত্তর পেলাম না। উনি আমাকে বললেন–
রায়মানঃ এই রিমিকা। উঠ। ছাদে চল। একটা জিনিস দেখাব।
আমিঃ হে ভ্রাতা, সে শক্তিমান, এত রাত্রে আমার কক্ষে তোর কি কাজ? আমি কোথাও যেতে পারব না। পারলে তুলে নিয়ে যা আমাকে।
ঘুমের ঘোরেই ছিলাম। মনে হল আমি অভিকর্ষজ ত্বরণের বিপরীতে চলমান। বুঝলাম, উনি আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। তবুও উনাকে জ্বালানোর জন্য বললাম
আমিঃ mummy, daddy, big mummy, big daddy please sahajjo me. some vut is tuling me upore and taking me to the batash, sahajjo me, ammu abbu, vut…. এই ভুত, আমাকে ছেড়ে দে, নইলে তোর একদিন কি আমার ৩৬০০ সেকেন্ড।
রায়মানঃ হয়েছে? এবার চুপ কর। তোকে নামিয়ে দিচ্ছি। ঠিকমতো দাড়া আর সামনে তাকা।
আমি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। খুব সুন্দর করে ছাদ সাজানো। একটা টেবিল এর উপর কেক আর তাতে ‘হ্যাপি বার্থডে রিমিকা’ লেখা দেখে বুঝতে পারলাম যে আমার জন্মদিন আজ। উনি কাউন্ট ডাউন শুরু করলেন
রায়মানঃ ৩…২…১… হ্যাপি বার্থডে রিমিকা
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। আরও বেশি অবাক তখন হলাম যখন পিছনে ফিরলাম। দেখি উনি এক হাঁটু গেড়ে বসে আছেন। তারপর উনি বলতে শুরু করলেন-
রায়মানঃ জানিস আজ তোকে কিছু কথা বলার আছে। তুই হয়তো অবাক হবি।
আমি জিজ্ঞাসাবোধক দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকালাম। উনি আবার বললেন-
রায়মানঃ আমার তখন ৭ বছর বয়স জখন তুই এই পৃথিবীতে আসলি। জানিস তোকে সবার আগে আমি কোলে নিয়েছিলাম। ছোট থেকে সব সময় তোকে চোখে চোখে রাখতাম। আগলে রাখতাম। তোর যখন যা প্রয়োজন হত সবা এনে হাজির করতাম। তক চোখের পানি যে সহ্য করতে পারতাম না। তোকে শাড়িতে দেখতে কতটা সুন্দর লাগে, জানিস? আর একটু সাজলে তো কথাই নেই। তোকে সেভাবে কেউ দেখুক আমি চাইতাম না, তাই ওসব পরতে বারণ করতাম। বৃষ্টিতে ভিজে যখন জ্বর বাধাতি তখন আমার কি অবস্থা হত তুই জানিস না।
তাই সারা রাত তোকে চোখের সামনে রাখতাম। কোথাও ঘুরতে গেলে তোর যদি কিছু হয়ে যায় সেই ভয়ে তোর পিছে পিছে যেতাম। এদিন রান্না করতে গিয়ে তুই যখন হাত কাটলি, কিছুক্ষণের জন্য আমার পুরো পৃথিবী থেমে গিয়েছিল যেন। তারপর যখন হুঁশ ফিরল তখন এত রাগ উঠেছিল যে আমি ভেবেই নিয়েছিলাম সারাজিবন তোকে আর রান্নাঘরের সামনেও যেতে দেব না; দরকার হলে আমি নিজে রান্না করে খাওয়াব তোকে। তারপর তুই এর জন্য যখন এত করে বললি।আমি আর না বলতে পারলাম না তোকে।
এটুকু বলে উনি আমার দিকে তাকালেন, আমি তখনও ছলছল চোখে তাকিয়ে আছি উনার দিকে। উনি আবার বললেন–
রায়মানঃ জানিস তোকে আমি শুধু ‘রিমিকা’ নাহয় ‘রিম’ বলে ডেকেছি।কখনো রিমি বলে ডাকি নি কেন? কারণ আমি চাইতাম না যে আমি তোকে যে নামে ডাকি সেই নামে অন্য কেউ ডাকুক। আমি এই দুই নামে অন্য কাউকে ডাকতেও দেই নি। সবাইকে বারণ করে দিতাম। জানিস রিম আমি এত দিন কেন সব মেয়েকে দেখতে জেয়েও না করে দিতাম। কারণ আমি তোর জায়গাটা যে কাউকে দিতে পারব না। হ্যাঁ রিম; আমি তোকে অনেক ভালোবাসি। সেই ছোটকাল থেকে।
অনেক। আর আমি তোকেই বিয়ে করব। Will you marry me Rim?
আমি এতক্ষণ যুদ্ধ করে চোখের পানি আটকে রাখলেও আর পারলাম না। উনার কথা গুলি আমার যুদ্ধে হার মেনে নিতে বাধ্য করল। আমি উনাকে জড়িয়ে ধরে বললাম–
আমিঃ না, আমি তোর কোন কথা শুনব না। আমি এতক্ষণ কিচ্ছু শুনি নি। আর পরেও কোন কাথা শুনব না। কানে তালা দিয়ে রাখব।
রায়মানঃ কি রে রিম? রাগ করেছিস?
আমিঃ হুম
রায়মানঃ তো রাগ ভাংতে কি করতে হবে?
আমিঃ কিছু করতে হবে না। রাগ ভেঙ্গে গেছে। তোর মুখে রিম ডাক শুনলেই ভেঙ্গে যায়
রায়মানঃ তাই না কি? তাহলে এবার জলদি জলদি বলে ফেল; আমাকে ভালবাসিস কি না আর আমাকে বিয়ে করবি কি না?
আমিঃ হুম
রায়মানঃ এটা কোন বলা হল? ঠিক করে বল
আমিঃ আমি তোকে ভালোবাসি আর আমি তোকে বিয়ে করতে রাজি।
আড়াল থেকে তালির শব্দ শোনা গেল। সবাই খুব খুশি। তাহলে এতদিন পর উনার ছেলে বিয়ে রাজি হয়েছে, আর নিজেদের মেয়ে বিয়ের পর নিজেদের বাড়িতেই থাকবে বলে। সবাই মিলে কেক কাটলাম।
তারপর আমি রিমিকা আইরিন হয়ে গেলাম মিসেস রায়মান আহমেদ।
আজ বিকালে–
আমিঃ এই রায়মান উঠ, এত দেরি হয় কেন উঠতে? সবাই অপেক্ষা করছে ছাদে।
রায়মানঃ আচ্ছা, ফ্রেশ হয়ে আসছি
ছাদে গিয়ে দেখলাম সবা কাজিনরা হাজির। হাতে বালিশ দেখে বুঝতে পারলাম আজ কি খেলা হতে চলেছে? খেলার এক পর্যায়ে বালিশ আমার কাছে আস্তেই মিউজিক বন্ধ হয়ে গেল। আমাকে একজন জিজ্ঞেস করল–
রোদঃ তুই কবে থেকে রায়মান ভাইকে ভালবাসিস বল তো?
আমিঃ ছোটকাল থেকেই বলার পর আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। এমনকি উনিও। আসলে উনাকে এতদিনেও বলা হয়নি একথা। তবে যাই হোক; উনি তো আমারই ……
লেখা – সাদিয়া সৃষ্টি
সমাপ্ত
(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “উনি তো আমারই – valobasar golpo 2020” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)
আরো পড়ূন – উঠতি বয়সের অবাধ্য অনুভূতি – আবেগ শুরুর গল্প