হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প ২৩

হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ২৩ | Love Story

হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ২৩: গত পর্বে আমরা নীলের কষ্টের পাস্ট জেনেছি, যেটা নিয়ে প্রিয়ন্তী বেশ চিন্তিত। নীলকে আগের নীলে ফিরিয়ে আনার জন্য সে বেশ ভাবনায় পড়ছে। চলুন দেখি এরপর কি হয়?

অপরূপ রূপসী প্রিয়ন্তি

আজ নিহার গায়ে হলুদ। সবাই সকাল থেকেই ব্যস্ত। প্রিয়ন্তী, অর্ন, রাকা তিনজনই খুব ব্যস্ত। ডেকোরেশন থেকে শুরু করে সব কিছুই তারা তদারকি করছে।
প্রিয়ন্তী আজ সবার আগে দোলনচাপা এনেছে। সেই এঙ্গেইজমেন্টের মত ভুল এবার আর হতে দেবেনা সে।
বেলা হয়ে গেছে। নিহাকে নিয়ে পার্লারে যেতে হবে।
অর্ন আর রাকা নিহাকে নিয়ে দ্রুতই রওনা হয়ে গেল। প্রিয়ন্তী আরো পরে যাবে।

প্রিয়ন্তী ডালা সাজাচ্ছে। কোন ডালায় মেহেদী তো কোনোটায় আবার চকলেট। এসব ডালা নিয়ে সন্ধ্যায় বরপক্ষকে বরন করা হবে।
কাজের মাঝে হঠাৎই প্রিয়ন্তীর মা এলো ওর কাছে।এসেই বলল,
: বাহ! আমার মেয়েটা কত কাজ করছে। তা শুধু বান্ধুবীর বিয়েতেই কাজ করলে হবে? নিজেরটা কিছু ভেবেছো?
: উফফো মা তুমিও না!
: আমি আবার কি? আমি তোমারই মা।
শুনো কাউকে পছন্দ করা আছে? থাকলে আমায় বলো।
প্রিয়ন্তীর খুব ইচ্ছে হলো নীলের কথা মাকে বলতে। কিন্তু যে মানুষটা তাকে চায়না, তার কথা বলেই কি লাভ! তাই ছোট্ট করে জবাব দিল,
: কেউ নেই। পারলে বিয়েই করবনা আমি।

চারপাশের আয়োজনের মাঝেও প্রিয়ন্তী নীলকে মিস করছে। আজ কি নীল আসবে? নীলকে কি একটা ফোন করবে ও? নির্লজ্জের মত বারবার ফিরে যাচ্ছে নীলের কাছেই। কেন এমন হয়?
আগেতো এমন হয়নি! কেউ কখনো ইগ্নোর করলে ফের তার সাথে কথা অবধি বলেনি আর আজ!
তবে কি ভালোবাসলে এমনই হয়? জানা নেই প্রিয়ন্তীর,

রুমে গিয়েই তুরিন আপুকে কল দিল,
: আপু কেমন আছেন?
: এই আলহামদুলিল্লাহ ভালই। তোমার কি খবর বলো?
: আলহামদুলিল্লাহ। আপু আজ আসবেন না হলুদে?
: হ্যা আমিতো আসবই। তবে নীলের সাথে এখনো কথা হয়নি, কল দিয়েছিলাম ধরেনি। তুমি একটু দেখো তো কথা বলে।
: আচ্ছা আপু দেখি কল দিয়ে।
প্রিয়ন্তীর মন খারাপ হয়ে গেল। বাধ্য হয়েই নীলকে কল দিল। কিন্তু নীল ফোন পিক করল না।
মন খারাপ করেই বের হলো পার্লারের উদ্যেশে।

পার্লারে ঢুকেই প্রিয়ন্তীর চোখ আকাশে উঠলো! নিহাকে কি সুন্দরই না লাগছে!
প্রিয়ন্তী যেতেই ওকে সাজতে বলা হলো। প্রিয়ন্তী সাজতে গিয়ে ভাবল,
নীল বলেছিল মেকাপ ছাড়াই তাকে ভারী সুন্দর লাগে।
তাই প্রিয়ন্তী সাজার ডিসিশন চেঞ্জ করলো।
কেবল লাল খয়েরী শাড়ীটা পড়ল, হাতে খয়েরী চুড়ি, কপালে খয়েরী রঙ্গের টিপ আর ঠোঁটে খয়েরী লিপ্সটিক।
সবার এতো এতো সাজের মাঝে প্রিয়ন্তীর এই অল্প সাজই যেন বেশী সুন্দর দেখাচ্ছে,

রোমান্টিক মুহুর্ত

সন্ধ্যা নেমে এলো। স্টেজের জন্য সব প্রিয়ন্তী নিজেই বানিয়েছে আর সাজিয়ে দিয়েছে। বরপক্ষ মানে তানুদের আসার সময় হয়ে গেল। তাই প্রিয়ন্তী সহ বাকীরা ডালা হাতে গেটে দাড়ালো বরণের জন্য।
তানুরা আসার আগেই দেখা গেল তুরিন আপু আর ভাইয়া গেট দিয়ে ঢুকছে। প্রিয়ন্তী হেসে এগিয়ে গেল কথা বলতে। তাদের ভেতরে পাঠিয়ে ঘুরে ফিরতে গিয়েই জোড়ে ধাক্কা খেল প্রিয়ন্তী। এদিকে রাকা আর অর্ন ফুলের পাপড়ি ছুড়ে দিল। চারপাশে গান বাজছে,
তুম মিলে
দিল খিলে
অর জিনে কো কেয়া চাহিয়্যে!

কিছু বোঝার আগেই দেখল লাল পাঞ্জাবী পড়া কারো বুকে ধাক্কা খেয়েছে সে।
উপরে তাকাতেই বুকটা ধুকপুক করে উঠলো। এ যে আর কেউ না! স্বয়ং নীলের বুকেই ধাক্কা খেয়েছে,

নীল হেসে হেসে বলল,
: একটু দেখে ঘুরবে তো। বরপক্ষের কেউ হলে কি হতো!
: কি আবার হতো! বেয়াইদের(তানুর ভাই/বন্ধুদের) সাথে ধাক্কা খেতাম।
এই কথা শুনে নীল কেমন গোমড়া মুখ করে ভেতরে চলে গেল।
এদিকে ওদের এই কান্ড দেখে রাকা আর অর্ন হেসে কুটিকুটি হয়ে গেল।
প্রিয়ন্তী কাছে যেতেই রাকা বলে উঠল,
: আহা কি ভালোবাসা! নাইকা যখন নায়কের সাথে ধাক্কা খায়! কি রোমান্টিক সিন বাবাহ!
প্রিয়ন্তী হেসে দিল।

বরপক্ষকে বরণ শেষে নিহাকে স্টেজে নিয়ে আসা হলো! তানুর সাথে সবাই মজা করছিল।
প্রিয়ন্তী ফুলের ডালা নিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ শাড়ীর আচলে টান অনুভব করতেই ফিরে তাকালো। দেখলো নীলের চেয়ারের কোণায় ওর আচলের কোণা আটকে গেছে। (চলবে)

পরের পর্ব- হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ২৪

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *