কষ্টের ভালবাসার গল্প – ধোঁকা ও করুণ পরিণতি: হ্যালো বন্ধুরা, আজ আমি এমন একটি বেদনাদায়ক প্রেমের গল্পের কথা বলতে যাচ্ছি যেখানে একটি ছেলে রাজ আছে যারা তার সিমরনকে খুব ভালবাসত। তবে এই দুজনের গল্পটি শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল তা এবার আমরা জানব।
বন্ধুত্ব অধ্যায়
গল্পটি এমন একটি ডিগ্রি কলেজ থেকে শুরু হয় যেখানে রাজ এবং সিমরান প্রায়শই একই বাসে তাদের বাড়ি থেকে আসত। তবে শুরু থেকে তারা একে অপরের সাথে কথা বলেনি। সিমরানের একদিন বাস ভাড়া দেয়ার টাকা ছিল না। তাই রাজ তার ভাড়া দিয়ে কথা বলতে শুরু করে এবং বাড়ি চলে যায়। পরের দিন আবার তাদের দেখা, এভাবে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে একটি বন্ধুত্ব সম্পর্ক তৈরি হয়।
রাজ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ছিল। একদিন সে তার বাবার কাছে আবদার করে একটি বাইক কিনল। যে বাইকে সিমরানকে নিয়ে প্রতিদিন একই সাথে দুজনেই কলেজে যেতে শুরু করে। এভাবে সিনেমা, পার্ক ইত্যাদি উভয়ই প্রতিদিন একসাথে যেতে শুরু করে এবং তাদের বন্ধুত্ব খুব গভীর হয়। এভাবে প্রায় ২ বছর কেটে গেছে, একদিন রাজ তার হৃদয়ের কথা সিমরনের কাছে বলতে যাচ্ছিল। যদিও রাজ প্রথম দিন থেকেই সিমরানকে ভালবেসেছিল কিন্তু বলতে ভয় পেত, ভাবত যদি সিমরান ভালবাসা ফিরিয়ে দিয়ে তাকে একা রেখে চলে যায়।
ভালবাসা শুরুর অধ্যায়
তাই সেদিন রাজ সাহস করে সিমরানকে একটি রেস্তোঁরা এ ডেকেছিল এবং ভয়ে কাঁপা গলায় বলে, যে সে সিমরনকে খুব ভালবাসে। সিমরন রাজের প্রপোজে খুব খুশি হয়েছিল এবং রাজকে বলেছিল যে আমি তোর মুখ থেকে এটা অনেক আগেই শুনতে চাইছিলাম, গাধা একটা।
রাজ যখন জানতে পারে যে সিমরনও তাকে ভালবাসে, তখন তার সুখের কোনও জায়গা নেই। রাজ সিমরানকে কোলে তুলে নিয়ে চিৎকার করতে শুরু করে- “আই লাভ ইউ সিমরন”। এখন রাজ এবং সিমরান অনেক রাত জেগে কথা বলা শুরু করে এভাবে তাদের কলেজ জীবন কখন শেষ হয় তার বুজতেই পারে নি। চাকরির ব্যাপারে রাজ এখন নিজের শহর থেকে চলে যায় এবং সিমরান তার মামার বাড়িতে যায়।
কথোপকথন এভাবেই চলতে থাকে তবে কয়েকদিন পরে সিমরান রাজের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এতে রাজ খুব বিরক্ত হতে শুরু করে এবং কয়েক দিন পরে রাজ সিমরানের মামার বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কষ্টের ভালবাসার গল্প অধ্যায়
একদিন রাজ চলে আসে সিমরানের মামার বাড়িতে কিন্তু সিমরান রাজকে দেখে অনেক খারাপ ব্যবহার শুরু করে। এতে রাজ কষ্টে অপমানে সেখান থেকে চলে আসে, কিছুদিন পর সে জানতে পারে যে সিমরান তার মামাতো ভাইয়ের সাথে প্রতিদিন ঘুরে বেড়ায় বাইকে করে, হাত ধরে হাঁটে দুজনে। কিছু দিন পরে রাজ এটাও জানতে পারে যে, সিমরান ঐ ছেলেটার সাথে প্রেম করে।
একদিন রাজ সিমরানের সাথে দেখা করতে চায়। সিমরান রাজি হয় না তারপর রাজের অনেক অনুরোধের পরে একবার দেখা করতে রাজি হয়। রাজ সিমরানকে জিজ্ঞাসা করল কেন সে তার সাথে এটি করল, কেন তার ভালবাসাকে এভাবে অপমান করল? তখন সিমরান রাজকে বলে যে- তোমার সাথে আমার ভালবাসা ছিল টাইম পাস শুধু। শুধু ভালবাসা থাকলে হবে না ভালবাসার মানুষটিকে পেতে ভাল চাকরি আর অর্থেরও দরকার আছে, যেটা তুমি পারবা না।
রাজের দুচোখ বেঁয়ে অঝোরে অশ্রু নামছিল, তারপর ভাঙ্গা গলায় বলল- একসাথে হাঁটা, সিনেমা দেখা, সারারাত কথা বলা কি তাহলে অভিনয় আর অর্থহীন ছিল? তখন সিমরান রাজকে বলে মন খারাপ করার দরকার নেই আর এত কথা শোনার আমার সময় নেই, তুমি চলে যাও, আমার চেয়ে অনেক ভাল মেয়ে পাবে। এই বলে সিমরান হনহন করে হাঁটা শুরু করল।
শেষ পরিণতি
তারপর রাজ নিজেকে সামলে নিয়ে বাসায় ফিরল। নিজেকে নিয়ে ভাবতে লাগল, নিজের যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে লাগল। আর মনে মনে সংকল্প করল যে, তাকে অনেক ভাল কিছু করতে হবে। চাকুরির জন্য মনপ্রাণ দিয়ে পড়াশোনা শুরু করল, তিন মাস পর অনেক ভাল একটা প্রিপারেসন সে নিল। এরপর অনেক বড় একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে তার চাকুরি হল।
আর এদিকে সিমরান সেই প্রেমে ধোঁকা খেয়ে মনমরা হয়ে দিন কাটাতে লাগল। একদিন শহরে রাজের সাথে তার দেখা। রাজকে দেখে সিমরান জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল, আর মাফ করে দিতে বলল, সাথে সিমরান এও বলল যে- সে আর কখনো রাজকে ছেড়ে যাবে না।
এখন আপনারাই বলুন, এমত অবস্থায় রাজের কি করা উচিত?
আরো পড়ুন: কষ্টের প্রেমের গল্প – অসমাপ্ত ফেসবুক প্রেম