রোমান্টিক প্রেমের গল্প ১৪

রোমান্টিক প্রেমের গল্প – বান্ধবী যখন বউ – শেষ পর্ব

রোমান্টিক প্রেমের গল্প – বান্ধবী যখন বউ – শেষ পর্ব: আজকের এই শেষ পর্ব অনেক বেশি উত্তেজনাকর ও ভয়ানক। সবশেষে কি হতে চলেছে কেউ বুঝতে পারবেন না। গত পর্বে নীলা তার আসল চেহারা দেখায়, পুরো গল্প জুড়ে নীলা শুধু একজন বান্ধবী ছিল সবার কাছে কিন্তু সে যে এত কিছু কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে তা কি কল্পনা করা যায়? আজ মিরা ও স্বর্ণাকে মারার জন্য সে রিভলবার হাতে নিয়েছে। চলুন দেখি এরপর কি হয়?

কাব্যের তিরস্কার নীলার যন্ত্রণা

যাইহোক, আজকে খুব আফসোস লাগছে কারণ তোরা আমার হাতে মরবি। একথা বলেই মিরা আর স্বর্নার দিকে দুই হাতে দুইটা রিবালভার দিয়ে মারার জন্য রেডি হয়েছে নীলা।

এদিকে আমি নীলার মুখে এসব কথা শুনে পুরাই স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আমি এখন কি করবো, কিছুই মাথায় আসছেনা।

আমি যা দেখেছি আর যা শুনেছি তা কি ঠিক শুনেছি নাকি ভুল? আমি…আমি কি করবো এখন কিছুই মাথায় আসছে না। শুধু একটাই কথা…

আর এটা ভাবতেই মনের ভিতর আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছে! যে আমার জীবনটা এভাবে এলোমেলো করে দিয়েছে তাকে শাস্তি পেতে হবে।

তারপর আমি হাত তালি দিতে দিতে নিশার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম। (এখনকার নীলা আর আগের নাম নীশা)

কাব্যঃ বাহ্, নীশা বাহ্! কী অসাধারন তোর ভালোবাসা। আমাকে তুই এতটাই ভালোবাসতি যে ভালোবাসার জোরে তুই আমাকে আজ আমার পরিবারের কাছ থেকে আলাদা করে দিলি। আর দুইটা র্নিষ্পাপ মেয়ের কাছে আমাকে অপরাধী বানিয়ে দিলি। সত্যিই তোর ভালোবাসা মহৎ রে। তোর এমন জঘন্য নীচু মনের ভালোবাসা দেখে তোকে স্যালুট করতে মন চাচ্ছ।

মিরাঃ কাব্য…কাব্য তুমি আমাদের বাঁচাও।

আমি মিরার দিকে তাকিয়ে আবারো নিশার দিকে তাকালাম। নিশা (নীলা) আমাকে দেখে যেন ভুত দেখার মত চমকে উঠলো। তারপর তোতলাতে তোতলাতে বললো…

নিশাঃ কাব্য, তোমার জ্ঞান ফিরলো কখন?

কাব্যঃ অনেক আগেই ফিরেছে। উপর ওয়ালার কি টাইমিং দেখ এতগুলো দিন যাকে অপরাধি ভেবে এসেছি আজ যদি আমার জ্ঞান না ফিরতো তাহলে আমি হয়তো জানতেই পারতাম না যে আসল অপরাধি স্বর্না নয় তুই। আজ আমার নিজের প্রতিই ঘৃনা আসছে যাকে আমি ভালোবাসতাম তাকে আমি হয়তো কখনো চিনতেই পারি নাই। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও স্বর্না। (স্বর্না শুধুই আমার দিকে তাকিয়ে আছে)

কি অপরাধ করেছিলাম তোর সাথে, হ্যাঁ? কি অপরাধ করেছিলাম আমি যার কারণে তুই আমার সাথে এত বড় খেলা খেললি। (চিৎকার করে বললাম কথাটা)

নিশাঃ কি বললি তোর কোন অপরাধ নেই কাব্য? আচ্ছা, তুইকি সব কিছু ভুলে গেছিস? তুই ভুলতে পারলেও আমি পারি নি। সেই ছোট থেকেই আমি তোকে ভালোবেসে আসছি। সেই ছোট থেকে। যখন আমি এটা বুঝতে পেরেছি ভালোবাসা কি সেই তখন থেকেই আমি তোকে আমার স্বপ্নের পুরুষ ভেবে কত রঙ্গিন স্বপ্ন দেখেছিলাম। আর তোক কত ভাবে আমার ভালোবাসা বোঝাতেও চেয়েছিলাম। কিন্তু তুই কি করলি আমার ভালোবাসা না বুঝে এই শাঁকচূর্ণী স্বর্নাকে ভালোবাসলি।

আর জানিস আমি যখন জানতে পেরেছিলাম তখন কতটা কষ্ট পেয়েছিলাম। না তুই জানিস না। তুই জানবি কি করে? তুই তো তখন ঐ স্বর্নার সাথে সুখের এক রঙ্গিন দুনিয়া তৈরি তে ব্যস্ত ছিলি। জানিস আমি বার বার, বার বার একটা কথাই দিন রাত ভাবতাম আমি ওর থেকে কোন অংশে কম ছিলাম? যে স্বর্নার কপালে কেন তুই লেখা থাকবি? আর ওর সুখ আমার সহ্য হতো না। তাই ওকে তোর জীবন থেকে সরানোর জন্য আমি ওর রুপ নেই।

আর তোর লেখাপড়ার ক্ষতি করি। আর ওকে তোর কাছে খারাপ বানাই। আমি ভেবেছিলাম তুই এত কষ্টের ভিতর নিজেকে একা মনে করবি। আর আমি তখন তোর পাশে থাকবো। কিন্তু না তুই সব কিছু ভুলে আবারো নতুন করে মিরাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলি। আর এবার মিরার জীবনা সুখের সাগরে ভাসিয়ে দিলি। কিন্তু এত কিছু করার পরেও আমি কি পেলাম? কিছুই না। শুধু কষ্ট ছাড়া আর কি?

নীলার পাগলামী

আর আমি কি এতটাই অবহেলার পাত্রী হয়েছি যে আমিই শুধু সারাজীবন কষ্ট করে যাবো।

আর অন্যরা আমার ভাগের সব সুখ লুটে নিয়ে যাবে। নো নেভার। যে সুখ আমি পাই নাই তা ওদের কেও পেতে দিবো না। আজকে ওদের আমি শেষ করে তোর সাথে আমি বিয়ে বসবো। তারপর দুজনে ছোট একটা স্বপ্নের সংসার সাজাবো। যেখানে শুধু তুমি আর আমি আর আমাদের ছোট দুইটা ছেলে মেয়ে থাকবে। এই কাব্য বল না তুমি আমাকে বিয়ে করে আমার স্বপ্ন গুলো পুরন করবে প্লিজ কাব্য বলো না।

কাব্যঃ কিহ্ আমি বিয়ে করবো তোকে। আমার জীবন থাকতে নয়। তোর স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে।

নিশাঃ কিহ্ তুই আমাকে বিয়ে করবি না।

কাব্যঃ না, করবো না।

নিশাঃ কাব্য ভালোয় ভালোয় বলছি। আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও। তা না হলে…

কাব্যঃ কি তা না হলে? আমাকে মারবি তো মেরে ফেল।

নিশাঃ না না তোমাকে মারতে যাবো কোন দুঃখে। তুমি মরে গেলে আমার কি হবে। তবে হ্যাঁ তুমি জানতে চাইলে না আমি কি করবো। তাহলে এই দেখো…

ঠাস ঠাস করে স্বর্নাকে গুলি করি।

আমি চিৎকার করে…
কাব্যঃ স্বর্নাআয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া

বলেই ওর দিকে দৌঁড়াতে ধরলাম।

নিশাঃ খবরদার কাব্য একপাও নড়বে না। যেখানে আছো সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকো। নয়তো তোমার আঁদরের মিরাকেও শেষ করে দিবো।

কাব্যঃ নিশা, তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? তুই কিভাবে এটা করতে পারলি? একটা বারও কি তুই এটা ভাবলি না স্বর্না মা হতে চলছে।

নিশাঃ হ্যাঁ হ্যাঁ আমি পাগল হয়েগেছি। তোমাকে ভালোবেসে। আর আমার ভালোবাসার পথে সব চেয়ে বড় কাটা ছিলো এই স্বর্না। কারন ও তোমার সন্তানের মা হতে চলেছিলো। ও যত দিন বেঁচে থাকতো তত দিন তোমাকে আমার করে পাবো না। এখন আর থাকলো মিরা, আর তুমি যদি মিরাকে জীবিত দেখতে চাও তাহলে আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও কাব্য। যদি রাজি না হও বুঝতেই পারছো।

মিরাঃ না তুমি, না তুমি ওই ডাইনিকে বিয়ে করতে রাজি হবে না। এতে যদি ও আমারো জীবন নিয়ে নেয় তো নিক। আমি ওকে তোমার পাশে দেখতে পারবো না কাব্য। (মিরা কাঁদতে কাঁদতে বললো)

নিশাঃ ঐ শাঁকচূর্ণী চুপ একদম চুপ। বেশি কথা বললে না তোর অবস্থাও তোর বোনের মতো হবে।

(এদিকে স্বর্না মৃত্যুর যন্ত্রনায় ছট ফট করছে। যা আমার সহ্য হচ্ছে না। ওকে যদি হাসপাতালে না নেওয়া হয় তাহলে যে কোন মুহুর্তে স্বর্না মারা যেতে পারে)

বিয়ে পাগলী নীলা

জান তোমাকে বলছি প্লিজ একটু ভেবে দেখো স্বর্নার পর তুমি যাকে নিজের থেকেও বেশী ভালোবাসো। সেই মিরারও এমনভাবে কষ্ট পেতে পেতে মরে যাবে। আর তুমি তাকি দেখতে পারবে? মিরার সেই ভয়ানক কষ্ট তুমি সহ্য করতে পারবে কাব্য। (নিশা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো)

মিরাঃ কাব্য, তুমি আমাদের কথা ভেবো না, আমাদের যা হওয়ার হবে। কিন্তু তুমি নীলাকে বিয়ে করার জন্য জীবনেও রাজী হবে না।

নিশাঃ চুপ, একদম চুপ। বেশি কথা বললে না তোর অবস্থাও তোর বোনের মতো হবে।

(এদিকে স্বর্না মৃত্যুর যন্ত্রনায় ছট ফট করছে। যা আমার সহ্য হচ্ছ হচ্ছে না। এই মুহুর্তে ওকে যদি হাসপাতালে না নেওয়া হয় তাহলে যেকোন মুহুত্যে স্বর্না মারা যেতে পারে)

আর জান তোমাকে বলছি একটু ভেবে দেখো স্বর্নার পর তুমি যাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসো। সেই মিরা এমন ভাবে কষ্ট করে মরে যাবে। আর এতা তুমি দেখতে পারবে? ওর সেই ভয়ানক কষ্ট তুমি সহ্য করতে পারবে? (নিশা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো)

আমি কি করবো কিছুই মাথায় আসছে না। এখন যদি ওকে বিয়ে করতে রাজি না হয় তাহলে স্বর্না মারা যেতে পারে। সেই সাথে নিশা মিরাএও ক্ষতি করতে পারে। অনেক ভেবে দেখলাম আমি যদি নিশাকে বিয়ে করি তাহলে আমার কাছের দুজন মানুষ তো বেঁচে থাকবে। আর ওরা বেঁচে থাকলে আমি হাজারো কষ্টের মধ্যেও একটা সুখ খুজে পাবো। তাই আমি নিশাকে বললাম,

কাব্যঃ তোকে বিয়ে করতে আমি রাজি আছি। তবে আমার একটা শর্ত আছে।

নিশাঃ সত্যি বলছো, তুমি আমাকে বিয়ে করবে। আমি স্বপ্ন দেখছি না তো। এই আবার বলো না তুমি আমাকে বিয়ে করতে সত্যি রাজি আছো।

কাব্যঃ হ্যা, আমি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি আছি। তবে আমার একটা শর্ত আছে।

নিশাঃ তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি আছো। আজ আমি খুব খুব খুশি। বলো তোমার কি শর্ত? তোমার যা মন চায় আমি তাই তোমাকে দিতে রাজি আছি।

কাব্যঃ আমার শর্ত হলো এই যে তুমি আজ এখন এই মুহুর্তে মিরা এবং স্বর্নাকে ছেরে দিবে। আর আমাদের স্বর্নাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দিবে। (মিরা শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর কান্না করছে)

এরপর নিশা আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে কি যেন ভাবলো। আর তারপর বলল..

নিশাঃ হ্যাঁ ঠিক আছে তুমি যখন বলছো তখন আমি মিরাকে ছেড়ে দিবো। আর স্বর্নাকেও হাসপাতালে নিয়ে যেতে দিবো। কিন্তু তার আগে তোমাকে এখন এই মুহুর্তে আমাকে বিয়ে করতে হবে।

কাব্যঃ নিশা তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? এই মুহুর্তে তোকে আমি কিভাবে বিয়ে করবো? আর এখন যদি তোকে বিয়ে করতে যাই তাহলে কি হতে পারে তুই কি ভেবে দেখেছিস একবার? মুখে বিয়ে করবো বলটা যত সহজ বাস্তবে ততটা সহজ নয়। বিয়ে পড়ানোর জন্য কাজির দরকার। আর কাজির এখানে আসতে অনেক সময় লাগবে।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় কাব্য

নিশা প্লিজ, তুই একটু বোঝার চেষ্টা কর। আমরা বিয়ে পড়েও করতে পারবো। আগে স্বর্নাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দে প্লিজ।

নিশাঃ হা হা মিস্টার কাব্য, তুমি নিজেকে খুব চালাক ভাবো, তাই না। আমি তোমাদের যেতে দিবো আর তুমি আমার সাথেই গেম খেলবে। তা আমি হতে দিতে পারি না। আমি তোমাকে এখনি বিয়ে করবো। আর তার জন্য কাজির কোন দরকার নেই।

কাব্যঃ দেখ নিশা, পাগলামো করিস না। কাজি ছাড়া কিভাবে বিয়ে হতে পারে?

নিশাঃ সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না। এই নাও এই কাগজে ছোট একটা সিগনেচার করে দাও। তাহলেই হবে।

কাব্যঃ কিসের কাগজ এটা?

নিশাঃ আমাদের বিয়ের কাবিন নামা। এটাতে যত তাড়াতাড়ি তুমি সই করবে তত তাড়াতাড়ি ওদেরকে আমি ছেরে দিবো।

তারপর আমি মনের সব দুঃখ কষ্ট রাগকে মনের ভিতর পাথর চাপা দিয়ে নিশার হাত থেকে কাগজটা নিতে যাবো তখনি মিরা কাঁদতে কাঁদতে বললো..

মিরাঃ না, কাব্য না, তুমি এটা করতে পারো না। আমি নিজের চোখে তোমার সাথে ঐ বিশ্বাসঘাতকের বিয়ে হতে দেখতে পারবো না। এমন দৃশ্য দেখার আগে তুমি আমাকে মেরে ফেলো। মেরে ফেল আমাকে, প্লিজ।

(আমি শুধুই মিরার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে মনে মনে বললাম, মিরা তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। এটা করা ছাড়া তোমাদের বাচানোর ২য় কোন রাস্তা আমার জানা নেই। তবে তুমি এটা মনে রেখো নিশাকে আমি বিয়ে করলেও কোন দিন ও আমার সাথে সংসার করতে পারবে না। কারণ তোমাদেরকে এখান থেকে নিরাপদে বের করে দিয়ে আমি কি করবো তা তোমরা ভাবতেও পারছো না)

তারপর নিশার কাছ থেকে কাগজটা নিয়ে যখনি সিগনেচার করতে যাবো। তখনি একটা ভয়ানক আত্নচিৎকার আমার কানে আসে। যার ফলে আমার অন্তর আত্না পর্যন্ত কেপে ওঠে। আমি ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকিয়ে যা দেখলাম তা দেখে আমি যেন পাথর হয়ে গেছি। একি দেখছি আমি….

মিরাঃ কাব্য তুই যদি ওই ডাইনি নিশা কে বিয়ে করিস! তাহলে এই কাচ দিয়ে আমার হাতের রগ কেটে এখানেই মারা যাবো। (মিরা একটা কাচের টুকরা হাতের উপর দিয়ে বললো কথাটা)

তারপর আমি সাথে সাথেই মিরার কাছে যাই আর ওকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু কিছুতেই মানলো না! আর এদিকে স্বর্না বেহুশ হয়ে পড়ে আছে।

রিয়ার সাহায্য

তারপর মিরা যখনই সেই কাচের টুকরো দিয়ে নিজের হাত কাটতে যাবো, ঠিক তখনই কেউ একজন বল্লো নিশা তোমার খেলা খতম।

কথাটা শুনেই আমি পিছনে ফিরে অবাক। কারণ যে এই কথাটা বললো তাকে দেখেই খুব বেশি অবাক হয়েছি। কারণ কথাটা যে রিয়া বল্লো।

(আর আপনারা জানেন রিয়া মিরার বান্ধবী। আর রিয়ার সাথে পুলিশও নিয়ে এসেছে)

এদিকে নিশা পুলিশের দিকে তাকাতেই আমি তার হাতের বন্দুকটা কেড়ে নিয়ে ফেলে দিলাম।

আর পুলিশ এসে নিশাকে ধরে নিয়ে গেলো যাওয়ার আগে নিশা বল্লো

নিশা/নীলাঃ কাব্য তোকে আমি পেয়েই ছাড়বো।

পুলিশঃ আরে শালি চুপ কর আগেই নিজেই বাঁচ তারপর…।

তারপর রিয়াকে আমি বললাম,

কাব্যঃ আরে রিয়া তুই এসব কি করে জানলি?

রিয়াঃ আমি মিরাকে ফলো করেই সব শুনছিলাম! তারপর পুলিশকে ফোন করলাম?

কাব্যঃ তোকে কি বলে যে ধন্যবাদ দেই?

আচ্ছা এসব কথা ছাড় আর স্বর্নাকে নিয়ে চল হাসপাতালে..!

তারপর মিরা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।

মিরাঃ তাড়াতাড়ি স্বর্নাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

কাব্যঃ হুম! (একটু খুশি হয়ে)

তারপর মিরাকেও দেখলাম ও খুশি। মিরাকে খুশী দেখে মনে হলো সে আমাকে পেয়ে খুব খুশি। তারপর আমরা সবাই স্বর্নাকে নিয়ে হাসপাতালে চলে গেলাম।

হাসপাতালে স্বর্ণা

অনেকক্ষণ ধরে হাসপাতালে বসে আছি কারো মুখে কোন কথা নাই।

তারপর একটু পর আমি বললাম,

কাব্যঃ আমারই সব দোষ স্বর্নার এ অবস্থার জন্য।

মিরাঃ কাব্য শুধু নিজেকে দোষী ভেবো না। দেখবে স্বর্না আপু থুক্কু স্বর্না সতিন থুক্কু স্বর্না আপু ঠিকই বাঁচবে!

কাব্যঃ হুম, তাই যেনো হয়।

একটু পর যেখানে স্বর্নার ট্রিটমেন্ট চলছিলো সেখান থেকে একটা ডাক্তার বের হয়ে এসে মুখ কালো করে বললো,

ডাক্তারঃ সরি মিঃ কাব্য।

কাব্যঃ কি হয়েছে স্বর্নার। (অনেকটা কেঁদে)

ডাক্তারঃ মিস স্বর্নার কিছুই হয়নি তবে?

কাব্যঃ তবে কি ডাক্তার সাহেব?

ডাক্তারঃ বাচ্চাটাকে বাচানো সম্ভব হলো না। পেটে আঘাত পাওয়ার ফলে আমরা বাচ্চাটাকে বাচাতে পারলাম না।

কাব্যঃ ডাক্তার সাহেব আমরা কি স্বর্নার সাথে কথা বলতে পারি।

ডাক্তারঃ হুম অবশ্যই, তবে বেশি কথা বলবেন না!

তারপর মিরা আর আমি স্বর্নার কাছে গেলাম।

স্বর্না আমাদের দেখার সাথে সাথেই,

স্বর্নাঃ কাব্য আমি জানি এখন তুমি আমাকে আরো ঘৃণা করবে! কারণ আমি বাচ্চার মা আর তুমি বাবা হতে পারবে না।

কাব্যঃ আরে পাগলী যা হয়েছে ভুলে যাও। সব নিয়তি! তবে আজকেই আমি তোমাকে আর মিরাকে বিয়ে করবো। কারণ আমি দুজনকেই খুব ভালোবাসি। আর মিরা তুমি কি বলো? (মিরাকে উদ্দেশ্য করে)

(সুপ্রিয় পাঠক/পাঠিকা স্বর্না এবং মিরা আপন বোন না। চাচাতো বোন যেটা মিরার কাছ থেকে স্বর্না সম্পর্কে জানার পর জানলাম)

মিরাঃ হ্যাঁ আমিও রাজি। (মিরাও খুশি হয়ে)

স্বর্নাঃ তবে এখানে একটা কথা?

কাব্যঃ আবার কি স্বর্না?

মিরা ও স্বর্ণাকে বিয়ে কাব্যের

স্বর্না আর কথাটা বলতে পারলো না, কারণ রিয়া গিয়ে স্বর্নার বাবা মাকে নিয়ে এসেছে।

স্বর্নার আব্বু আম্মুঃ মারে তুই ঠিক আছিস তো।

স্বর্নাঃ হুম আব্বু/আম্মু, আমি সম্পূর্ণ ঠিক আছি।

তারপর আমি স্বর্নার বাবা মায়ের সাথে বিয়ের কথাবার্তা পাকা করলাম/আর মিরার আব্বু আম্মুর সাথে কথাবার্তা আগে থেকেই মিরা বলে রেখেছেন। তারপর মিরাও তার আব্বু আম্মুকে ফোন মরে তাদেরও আসতে বললো। আর একটু পর মিরার আব্বু আম্মুও এলো এবং তারাও মেয়ের কথা চিন্তা করে বিয়েতে রাজি হলো।

এরপর সবার মাঝখানে স্বর্না বলে উঠলো,

স্বর্নাঃ আমি চাই আমরা বিয়ে করার পর তোমার মা বাবার কাছে যাবো! কারণ ওখানেই তো আমার, মিরার এবং তোমার ঘর।

কাব্যঃ কিন্তু আমি যাবো না। কারণ আব্বু আম্মু আমাকে ভুল বুঝে বাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।

মিরাঃ দেখো কাব্য, এবার তোমাকে দেখলে তারা তোমাকে আপন করে নিবেই। ওরা এখন ভুল বুঝতে পেরেছেন, আর মা বাবার সাথে সন্তানের রাগ মানাই না।

কাব্যঃ কিন্তু।

মিরা/স্বর্নাঃ কোন কিন্তু নয়!

তারপর আর কি। এর কিছুদিন পর স্বর্না সুস্থ হলো এবং তিন পরিবারের সমন্নয়ে তাদের দুই পরিবার মিলে ধুমধাম করে বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ করলো।

(আর প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাদের বুঝতে হবে আমার দুইডা বউ আর বউদের একটাই কথা তারা শ্বশুড় বাড়িতে বাসর করবে)

বান্ধবী যখন বউ

অবশ্য আমার মা বাবাকে ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই এবং তারাও তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তারপর বিয়ে হবার পর রাতে চললাম ট্রেনে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে আর পৌছে গেলাম রাতে মানে একটু রাতেই ধরুন 8 টায়। তারপর বাসার ভিতরে যেয়ে তো আমি অবাক কারন আমাদের বাড়িটা সম্পূর্ণ ভাবে ফুল নিয়ে সাজানো হয়ছে। বাসার ভিতরে মা বাবা আমাকে দেখে এসে জড়িয়ে ধরলো। আর আমার কাজিনরা এসে স্বর্না এবং মিরাকে ঘরে নিয়ে গেলো। আর আমি চলে গেলাম ছাদে চাঁদ দেখতেছে।
একটুপর কাজিনরা এসে আমাকে জোড় করে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দিলো।

তারপর….

তারপর স্বর্না এবং মিরা আমার কাছে এসে পায়ে ধরে সালাম করলো। তারপর তাদের দুজনকে আমি জড়িয়ে ধরলাম। এরপর শুরু হলো আমাদের নতুন একটা জীবন! যেখানে নেই কোন হিংসা। শুধু আছে সবসময় ভালোবাসা দিয়ে পরিপূর্ণ। আমার এই জীবনের গল্পটা এখানেই সমাপ্ত।

আপনাদের কেমন লেগেছে লেখক কাব্যের লেখা এই রোমান্টিক প্রেমের গল্প? ভাল লাগলে কমেন্টে জানাবেন প্লিজ। আর আমাদের ওয়েবসাইটে আপনিও লেখা পাঠাতে পারেন। আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করুন।

আরো পড়ুন- মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১ | স্যারের সাথে প্রেম

1 thought on “রোমান্টিক প্রেমের গল্প – বান্ধবী যখন বউ – শেষ পর্ব”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *