নেতার মেয়ে – ভালোবাসার সাহসী গল্প: ওর খুব কাছাকাছি যখন আসলাম তখন ও আমাকে টান দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো। ও আমাকে এতই জোড়ে টান দেয় যে আমি ওর উপরেই পড়ে যাই। কিন্তু আমি ওর উপরে পড়লাম ঠিক আছে। কিন্তু আমি পড়তেই ওর ঠোট এর সাথে আমার ঠোট এক হয়ে গেলো।
পার্ট ০১
_ ওই যে ছেলে চল চল…
কথাটা শুনে ওপরের দিকে তাকালাম। দেখি লাবণি মেডাম। আর কথাটা না বাড়িয়ে গাড়িতে বসে চালানো শুরু করলাম। ম্যাডাম কে কলেজে নিয়ে যেতে হবে। আগে নিয়ে যাই তারপর কথা বলি আপনাদের সাথে।
_ শোন… কলেজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকবি। এসে যদি না পাই। খবর আছে। (রেগে রেগে বলল)
_ জ্বি…ম্যাডাম। (আমি)
_ যত্তসব..
তারপর ম্যাডাম চলে গেলো। আসলে ম্যাডাম এমনই। এই তো ৩ বছর আগেও ঠিক ছিলো। কিন্তু গত ৬ মাস ধরে ম্যাডাম কেমন যেনো হয়ে যায়। আগে আমাকে তুমি করে বলতো। এখন তুই করে বলে। আগে ভালোভাবে কথা বলতো সবার সাথে। কিন্তু এখন রেগে রেগে কথা বলে সব ছেলেদের সাথে (ওনার আব্বু ছাড়া)।
তো। অনেক কথা বললাম। আমার পরিচয় তো দিলাম না। আমি রাকিবুল হাসান। পড়ালেখা তা জানতে চাবেন না। পরে আমিই বলবো। আর ইনি হলেন ইশতা ম্যাডাম। পুরা নাম “লাবণি নূর মায়াবতি”। সবাই লাবণি বলে ডাকে তাই আপনারাও তাই শুনবেন।
সংসদ সদস্য মির্জা মোজাম্মেলের মেয়ে। একমাত্র মেয়ে। কিন্তু ম্যাডাকে দেখে মনে হয়না যে তিনি এত বড় নেতার মেয়ে। অহংকার, রাগ কোনটাই ছিলো না। কিন্তু ওই যে ৬ মাস। ওই ৬ মাসেই ম্যাডামের এত পরিবর্তন।
ম্যাডামের ছুটি হয়ে গিয়েছে। ম্যাডাম একা একা আসছে। গত ৬ মাস ধরে ম্যাডামের মুখে হাসি দেখছি না। তা কেন আমি জানি না। আর জানার চেস্টাও করিনি। নেতার মেয়ে। কখন কি করবে কে জানে। তাই কিছুই বলি না। ম্যাডাম এসেই……
_ ওই গাড়ির গেট খুল। বাসায় যেতে হবে। (ম্যাডাম)
আমি প্রতি উত্তরে কিছু না বলে গাড়ির দরজা খুলে দিলাম। ম্যাডাম বসার পরে দরজা লাগিয়ে আমি ড্রাইভিং করতে লাগলাম। গন্তব্য বাসা।
বাসায় এসে পরেছি। গাড়িটা থামানোর পরে দেখি ম্যাডাম ঘুমিয়ে গিয়েছে। ম্যাডামকে কয়েক বার ডাকলাম কিন্তু ওঠলো না। তারপর আমি গাড়ি থেকে নেমে ম্যাডামের দরজার কাছে যেতে ডাকলাম। কিন্তু ম্যাডাম উঠছে না। তাই দজরা খুলে ম্যাডামকে ঢাক্কা দিলাম।
_ ম্যাডাম…বাসায় এসে পড়েছি। (হাল্কা ঢাক্কা দিয়ে)
_ ঠসসাসসসসসসসস…..মেয়ে দেখলেই গায়ে ধরতে ইচ্ছে করে না? হুম….তোরা ছেলেরা সব এক। লুইচ্চা একেকটা।
এই বলে আমাকে ঢাক্কা দিয়ে বের হয়ে চলে গেলো। আমি শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। কি করলাম আমি? আমাকে শুধু শুধু মারলো। ম্যাডামই তো ওঠতেছিলো না। তাই তো ম্যাডামকে ডাকলাম। আর ম্যাডাম আমাকে মেরে দিলো? আজ আমি গরিব বলে আমাকে মারলো। আমি আর কিছু ভাবলাম না। গাড়িটা ঠিক জায়গায় রেখে আমি গেলাম চাচার কাছে। আর চাচা কে বুঝলেন না তো? চাচা মানে মির্জ্জা মোজ্জামেল। সবাই তাকে বাঘের মত ভয় পায়। কিন্তু কেন পায় তা জানি না।
চাচা কত কিউট আর সুন্দর মানুষ তাকেও ভয় পায় সম্ভব। তিনিই তো আমাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এসে এখানে আশ্রই দিলো। আর আমাকে অঘাত বিস্বাস করে বলে আমাকে তার বাসায় থাকতে বলেছে। ঘরে তার মেয়ে ও আছে। কিন্তু তবুও তিনি আমাকে থাকতে দিয়েছেন। আমাকে তার সাথে তার টেবিলে বসে খেতে দেন। শুধু আমি না বাড়ির সব চাকর না অন্যান্য রাও। আসলেই মানুষটা অনেক ভালো।
এই সব কথা ভাবতে ভাবতেই চাচার ঘরে চলে আসলাম। চাচার ঘরে নক করতেই চাচা বলল ভিতরে যেতে। আমি ভিতরে ঢুকলাম। তারপর……
_ আসসালামু আলাইকুম চাচা। (আমি)
_ ওয়ালাইকুমুসসালাম। তো কেমন আছিস? সারাদিন দেখলাম না যে? (চাচা)
_ ম্যাডামকে নিয়ে ওনার কলেজে গিয়েছিলাম।
_ তোকে না বলেছি লাবণিকে নাম ধরে ডাকতে?
_ ন…না…মানে….
_ চুপ… থাক। ওকে নাম ধরে ডাকবি। ভুলে যাসনা তুই ও আমার ছেলে। আর ওর থেকে তোর যোগ্যতাও বেশি(ওঠে দাড়িয়ে আমার কাধে হাত রেখে বলল)
আমার চোখ থেকে ১ফোটা পানি পড়লো। শক্ত করে চাচাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম। চাচা আমার পিঠে থাপ্পড় দিয়ে বলল,
_ আরে..বেটা কাঁদিস কেন? (চাচা)
_ তুমি..খুব ভালো চাচা। খুব। বাবা মা যদি বেঁচে থাকতো!
_ পুরানো কথা ভুলে যা। নতুনকে সাথে নিয়ে শুরু কর।
_ জ্বী চাচা।
_ আচ্ছা যা।
রাত ১১টা।
ছাদে গেলাম। আজ ছাদে ওঠতেই আমি অবাক। কারণ ছাদে একটা ছায়া মূর্তি। এত রাতে তো কেউ ছাদে আসে না। কে তাহলে এটা। আমি ছায়া মূর্তির পিছনে গিয়ে দারালাম। আমি বললাম,
_ কে আপনি? (আমি)
আমার কন্ঠো স্বর শুনে ছায়ামূর্তিটা ধড়ফড় করে ওঠলো। সাথে যে চোখটা মুছে নিলো তা আমার নজর এড়ায় নি। ছায়ামূর্তি আমার দিকে ঘুরতেই আমি অবাক। কারণ ইটা লাবণি ম্যাডাম থুক্কু লাবণি। আমাকে দেখে বলল,
_ তুই এখানে কেনো? (ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায়)
_ না। মানে এমনিই।
_ এমনি হলেই আসতে হবে নাকি? যা তারাতারি নিচে চলে যা। (অনেক টা রেগে)
_ জ্বী।
তারপর নিচে চলে আসলাম। কিন্তু লাবণি কাদতেছিলো কেন? কারণ টা কি? কোননা কোন কিছু হয়েছেই। আর তা লাবণির মনে প্রচন্ড আঘাত এনেছে। আর তাই লাবণি চুপ করে আছে। না। আমাকে জানতেই হবে। ঘাপলা টা কোথায়। এই সব ভাবতে ভাবতেই আমার ঘরে চলে এলাম। আমার ঘরে এসে আমি….
তারপর আর কিছু না ভেবে ঘুমাতে গেলাম। সকালে আবার একজায়গায় যেতে হবে। সেটা সকালেই বলি কেমন?
সকাল ৯ টা……
_ এই আলসের বাচ্চা সকাল কয়টা বাজে বের হবি না? (লাবণি ম্যাডাম রেগে বলল)
_ জ..জ্বি যাবো।
_ চল। তাহলে।
_ জ্বি। চলুন।
তারপর আমি গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলাম। কোথায় যাবেন তা আমাকে বলতে হল না। কারণ ম্যাডাম তার প্রতি ছুটির দিন যান সেই যায়গায়। আসলে সেই জায়গা টা হলো একটা বাড়িতে। আমি জানি না কেন তবে আসেন আর যখন বের হন তখন চুল ঠিক থাকে না। আর তখন ম্যাডামের চেহারা দেখলে মনে হয় সে খুব ক্লান্ত। খুব কস্ট করে এসেছে।
চলে আসলাম। ম্যাডাম বের হয়ে চলে গেলেন। আমি বাহিরে বসে আবার সেই ভাবনাই ভাবতে লাগলাম। ম্যাডাম কেন আসেন এই জায়গায়। ৫ মাস ধরে নিয়মিত আসছেন। ভাবছেন কিভাবে বললাম? আসলে আমি হিসেব করে রাখছি দিন গুলো।
৩ ঘন্ট পর।
দেখলাম ম্যাডাম বের হলেন। আজও সেই একই ভংগিতে। কিন্তু আজ যেনো একটু বেশি ক্লান্ত। আজ একেবারেই হাটতে পারছে না। আমি বুঝতে পারছি না। কিছু। ম্যাডাম গাড়িতে এসে সোজা বসলেন। তারপর বললেন…….
_ তারাতারি বাসায় চল। খুব খারাপ লাগছে। (ম্যাডাম)
_ জ্বি।
আমি আর কথা না বলে গাড়ি চালাতে শুরু করলাম। গাড়ি চালাচ্ছি। লুকিং গ্লাসে ম্যাডামের দিকে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম ঘুমিয়ে পরেছে। ম্যাডামের চেহারায় ক্লান্তি, ভয়, ঘৃনা সব এক হয়েছে। কিন্তু কেন? সেই কেন এর উত্তর এখন না খুঁজে গাড়ি চালানোতে মনযোগ দিলাম।
বাসায় এসে পরেছি। ম্যাডামকে ডাকলাম কিন্তু ম্যাডাম ওঠছে না। কিন্তু গায়ে হাত দিলেতো থাপ্পড় খেতে হবে। ধুর যা হবার তা হবে। আগে ডেকে নেই।
_ ম্যাডাম….ও…ম্যাডাম। ওঠুন। বাসায় চলে এসেছি তো। (হাল্কা ধাক্কা দিয়ে)
ম্যাডাম নড়ে ওঠলো। তারপর হাল্কা হাল্কা ভাবে চোখটা খুলল। আমার দেখে মনে হচ্ছিলো চোখ দুটু খুলতেও খুব কস্ট হচ্ছিলো। অনেক কস্টে বলল,
_ আমাকে কোলে করে নিয়ে আমাকে একটু আমার ঘরে দিয়ে আজ আমার খারাপ লাগছে। প্লিজ, (অনেকটা মিনোতির স্বরে)
আমি কোলে নিলাম ম্যাডামকে। তারপর ম্যাডামকে নিয়ে উপরে উঠছি। সবাই হয়তো অবাক হচ্ছে। আমার কি? তারপর দেখি চাচা(ম্যাডামের বাবা) আমাকে দেখে দৌড়ে আসলো। তারপর বলল,
_ ক..ক…কি হয়েছে রাকিব? ওর এই অবস্থা কেন? (চাচা কেদে দিলেন)
_ কিছু না। চাচা। মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলো। তারপর বাসার সামনে নিয়ে আসার পরে আমাকে বলল যে কোলে করে নিয়ে যেতে। তাই…..
_ বুঝেছি। আমি ডাক্তার কে আসতে বলছি। তুই ওর কাছে থাক।
_ আচ্ছা।
তারপর ম্যাডামকে তার ঘরে নিয়ে শুইয়ে দিলাম। মুখটা কত্তো কিউট লাগছে। কিন্তু কস্টের ছাপ বুঝা যাচ্ছে। আমি কিছু বুঝতেছি না।
মহিলা ডাক্তার আসলো। তারপর ম্যাডামকে দেখলো। ম্যাডামকে দেখার সময় ডাক্তার এর চোখগুলা এমন হয়ে গিয়ে ছিলো যেনো কি না কি দেখছে। তারপর চাচাকে বলল, .
_ ভাই আমার সাথে তারাতারি বাহিরে আসুন।
_ জ্বী চলুন।
তারপর চাচা আর ডাক্তার চলে গেলো। কিছুক্ষন পরে চাচা এলো বেশ গুলুগম্ভির চেহারা নিয়ে। আমার কাছে এসেই বলল,
_ রাকিব…বাবা..আমার সত্যিই করে বলনা তোর ম্যাডাম কোথায় গিয়েছিলো। (আমার হাত ধরে)
তারপর চাচা কে সব বললাম। তবে শুধু আজকের টাই। তারপর চাচা বলল,
_ জানিস ডাক্তার কি বলেছে? জানিস? (কান্নার মাত্রা বেড়ে গেলো)
_ কি?
তারপর চাচা যা বললো তা শুনে আমার মাথা ঘুরে গেলো। আমি অবাক হয়ে তাকয়ে রইলাম ম্যাডামের দিকে। তারপর চাচা আমার হাত ধরে বলল,
পার্ট ২
চাচা আমার হাত ধরে বলল,
_ ওর এই সব কথা যদি মিডিয়ার কাছে যায় তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। এমনিই বিরোধী দল গুলু কেচাল করতেসে। আবার যদি এই খবর পায় তো মিডিয়া পুরাই গরম করে ফেলবে। (ভয়, ধীধা মিস্রিত কন্ঠে)
আমি একটু ভাবতে লাগলামন। তারপর চাচাকে বললাম,
_ আমি আছি তো চাচা। টেনশন নেই। ভরসা রাখুন আমার উপর। (আমি)
_ তোর আশাতেই আছি। আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে তোল। (চাচা)
_ আল্লাহ এর উপর ভরসা রাখুন।
_ হুম। তুই লাবণির কাছে যা। আমার কাজ আছে। আমি আসি।
_ আচ্ছা চাচা।
এই বলে চাচা চলে গেলো। আর আমি ম্যাডাম এর ঘরে এলাম। ম্যাডাম এখনও ঘুমাচ্ছে। ম্যাডামের কথা ভাবতে লাগলাম। যা করেছে নিজের ইচ্ছায়। কিন্তু তাই বলে এই অবস্থা হবে কেন? তার মানে কিছু সমস্যা আছে। জানলতেই হবে সমস্যা গুলো।
১০ দিন। পর…….
ম্যাডাম আজ সুস্থ। সম্পুর্ন সুস্থ। আমার ও কাজ শেষ। এই ১০ দিন একটু কস্ট হয়েছে। তবে ওইটা ব্যাপার না। ম্যাডামের জন্য এই টুকু করাই যেতে পারে। চাচা তো আর আমার জন্য কম করে নি। আমি আমার ঘরে শুয়ে আছি এমন সময় ম্যাডামের আগমন….
_ রাকিব….(ম্যাডাম)
_ জ্বি ম্যাডাম বলুন…..(আমি)
_ ধন্যবাদ।
_ কেন? (অবাক হয়ে)
_ আমার সুস্থ করে তোলাফ জন্য।
_ না..না…ম্যাডাম ধন্যবাদ দেওয়ার কিছু নেই এটা তো আমার দায়িত্ব। আর ম্যাডাম একটা কথা বলি,
_ হুম। বল…..
_ আগে বলেন থাপ্পড় দিবেন না।
_ হি হি হি…মারবো না বল।
_ আপনার এই অবস্থা কে বা কারা করলো?
আমার এই প্রশ্নটা ম্যাডাম আশা করেছিলো মনে হয়। কারণ ম্যাডাম আমার প্রশ্নটা শুনে অবাক হয় নি ঠিকই। কিন্তু ম্যাডামের মুখটা শুকনো হয়ে গেলো। তারপর ম্যাডাম বলল,
_ তার আগে বল আমার একটা ভালো বন্ধু হবা? (করুনার দৃষ্টি তে বলল ম্যাডাম)
_ জ্বি ম্যাডাম। (আমি)
_ উহু….ম্যাডাম নয় লাবণি। আমরা বন্ধু না?
_ আচ্ছা বাবা লাবণিই। এখন…
_ তাহলে শুনো….
ম্যাডাম বলতে শুরু করলো।
অনার্স ১ম বর্ষ। কলেজে নতুন। আমার বাবার পরিচয়টা গোপন করেই আমি গিয়েছিলাম কলেজটাতে। আমি চায়নি যে আমার বাবা পরিচয়ে সব জায়গায় সুবিধা পেতে। তাই গোপন করা। ৬মাস পর আমার অনেক বন্ধু হয়। সুন্দরী ছিলাম বলে ছেলেরা প্রোফোজ করতো। কিন্তু রিজেক্ট করতাম। এর মধ্যে লক্ষ করলাম একটা ছেলে আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে। আমি তাকালেই মুখটা ঘুরিয়ে নেয়। আমিও অনেক মজা পেতাম বোকা ছেলেটার এই কান্ড দেখে।
এভাবেই অনার্স ২য় বর্ষে উঠলাম। ছেলেটাকে আমিও ভালোবেশে ফেললাম। কিন্তু ছেলেটা আমাকে কিছুই করে না। আমি প্রতিদিন একটু সেজে যেতাম। কারণ আমি মনে করতাম আজ ও প্রোফোজ করবে কিন্তু ও করতো না। তবে একদিন হুট করে প্রোফোজ করে ফেলে। আমিও অবাক হয়ে যায়। আমিও রাজি ছিলাম বলে প্রোফোজটা এক্সেপ্ট করে নেই। শেয়ারিং, কেয়ারিং, ঘুরাঘুরি, আড্ডা সব মিলয়ে ভালোই ছিলাম। ওর বন্ধুরা যখন ভাবী বলে ডাকতো তখন খুব লজ্জা লাগতো। তারপর এখন থেকে ৮ মাস আগে। একদিন রাতে আমাকে বলে,
_ লাবণি আমি আর থাকতে পারছি না। সবাই সবার গফ এর সাথে কত কিছু করে। চুমু খায়। আরও কত কি। আর তুমি? কিছুই করতে দাও না।
_ দেখো সালমান বিয়ের আগে এই গুলা ঠিক না।
_ আমি জানি না। হয় তুমি আমার সাথে রুমডেট করবা। না হলে তোমার রাস্তা তুমি মাপতে পারো…..টু ট টুট
সেই দিন ও ফোনটা কেটে দেয়। ও ফোন কেটে দেওয়ার পর আমি অনেক কন্না করি। অনেক। খুব ভালোবাসতাম ওকে। আমাদের রিলেশন এর কথা সবাই জানতো। আমি ফ্রেন্ডদের ওর কথা বলি। ওরা কিছু বলে না। আর ও আর ফোন দেয় না। আর আমিও না। এভাবে ১মাস চলে যায়।
একদিন আমার বান্ধরিরা বাসায় আড্ডার আয়োজন করে। আমি আড্ডর জন্য পাগল ছিলাম। তাই চলে যাই ওদের বাসায়। ওদের বাসায় সেইদিন কেউ ছিলো না। শুধু আমার বান্ধবিরা ২জন ছিলো। আড্ডার ফাকে ফাকে চা, কফি, রান্না সবই চলছিলো। আমি রান্না পারতাম বলে ওরা আমাকে রান্না করতে দেয়। আমি রান্না শেষ করে। ফ্রেস হয়ে এসে দেখি ওরা খাবা প্লেটে বেড়ে ফেলেছে। আমার জন্যও বেড়েছিলো। আমি খাবারটা খাওয়ার কিছুক্ষন পরেই আমার মাথাটা ঘুরতে লাগলো। তারপর আর কিছু মনে না। যখন চোখ খুললাম। তখন দেখি সিফাত আমার মুখ এর উপর তাকিয়ে আছে।
আমি ভয় পেয়ে উঠতেই বলল,
_ আজ কই যাবি?
_ সসায়ায়ায়াকিইইব….কিছু করনা প্লিজ। আমাকে যেতে দাও। প্লিজ।
_ যাবি? যা। তবে তোর শরিরের দিকে তাকিয়ে দেখতো।
আমি তখন আমার শরিরের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার শরিরে কোন কাপড় নেই। আর ওর দিকে তাকাতেই ও পৈচাসিক হাসি হাসতে লাগলো। এমন সময় আমার পিছন থেকে শব্দ আসলো। আমি তাকাতেই দেখি সিফাতের আরও কিছু বন্ধু। ওর আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। জানো আমার না মরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো। ও আমাকে তখন বলল যে….
_ এতক্ষন আমার সাথে করেছিস। আর ওরা ভিডিও করেছে। আর এখন যদি ওদের সাথে না করিস তাহলে এই ভিডিওটা…….বুজতেই তো পারছিস….
তারপর থেকে আজ ৬ মাস ধরে। এই ভিডিও এর ভয় দেখিয়ে ওর কত বন্ধুদের যে নিয়ে এসেছে।
তার হিসেব নেই। কলেজে যখন যাই ওর বন্ধুরা আমাকে খুব খারাপ খারাপ কথা বলে। গালি দেয়। আমার না সহ্য হয় না। কিছু বলিনা ভিডিও এর কারণে। আর কাল ওর অনেকে ছিলো। আর তারপর এই অবস্থা। । রাকিব আমি মুক্তি চাই। প্লিজ আমাকে মুক্ত কর। আমি আর পারছি না। আমি….
বলতে পারলো না। আমাকে জড়িয়ে ধরে জোড়ে জোড়ে কাঁদতে লাগলো।
আর আমার চোখ থেকেও পানি পড়ছিলো!
আর বলতে পারলো না। আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। আর আমি? কি বলব তার উত্তর খুজতেছিলাম।
যে ভালোবাসে একটা মেয়েকে সে কিভাবে এ কাজ করতে পারে? এমন নোংরা কাজ? ইনসাল্ট করে জোড় করে রুম ডেট করা? এটাই কি প্রকৃত ভালোবাসা? না। এটা বিকৃত ভালোবাসা। নিজের শারীরিক শান্তির জন্য এটা শুধু মাত্র। তা ছাড়া আর কিছুই না। ধক্কার জানাই তাদের….
_ রাকিব…(লাবণি)
_ জ্বি ম্যাডাম।
_ আমার প্রতি ঘৃনা হচ্ছে, তাই না?
_ ছি ছি কি বলেন?
_ আমি জানি তো। আর ঘৃনা করলেও আমার কিছু যায় আসে না। কারণ ৬টা মাস ধরে আমাকে গালি শুনতে হচ্ছে। কলেজে তো (মাগ*) এই গালিটা ছাড়া কথাই বলো না। Infact আর বলবেও না
আমি তো আর ওদের কাছ থেকে মুক্তি পাবো না। ওরা আমাকে আমার পুরো জীবন আমাকে কুকুরের মত লাঞ্চনা করে যাবে। আমাকে নস্ট করবে। জানো রাকিব আমি না তবুও চাই সিফাত ভালো থাকুক। ভালোভাবে বাঁচুক। সুন্দর একটা মেয়েকে বিয়ে করুক। আমাকে তো করবে না।
নস্ট মেয়ে। জানো রাকিব ওকে না কেন যেনো ঘৃনা করতে পারি না। কেন পারি না? তা আমি জানি না। হয়তো ভালোবাসি বলে। আত্নহত্যা মহাপাপ তাই করিনি। তা না হলে কবেই মরে যেতাম। আব্বুকে বলতে পারি না। কারণ আব্বুর কলিজা আমি আব্বু যদি জানে তাহলে মরে যাবে। আমি মুক্তি চাই রাকিব। প্লিজ। আমাকে মুক্তি করে দাও। আমি আর পারছি না এই ভাবে থাকতে….প্লিজ রাকিব। প্লিজ, (কান্নার মাত্রা বেড়ে গেলো)
আমি বরাবরের মত শুধু শুনেছিলাম। আমার কিছু বলার নেই। মেয়েটা কত টা ভালোবাসে ছেলেটাকে? যে ছেলেটা ওর এত বড় ক্ষতিটা করার পরও চায় ছেলেটা ভালো থাকুক? এটাই কি প্রকৃত ভালোবাসা?
_ কি হল রাকিব বল…আমাকে মুক্তির ব্যবস্থা করতে?
এই সব কথাটা শুনে আমি ম্যাডামের চোখের দিকে তাকালাম। চোখ দুইটা কত দিন ঘুমায় না। শান্তিতে ঘুমাতে পারে না। কত রাগী চোখ গুলো যেনো আহত। ব্যথিত। যন্ত্রনার অসহ্য কর গ্লানি বয়ে নিয়ে যেতে পারছে না। কিন্তু আমি কিভাবে ম্যাডামকে মুক্ত করবো? একটু ভাবলাম। আর পেয়েও গেলাম। তারপর বললাম,
_ মুক্তি চান? (আমি)
_ হুম।
_ যা বলবো তা করতে পারবেন?
_ পারবো নাকি পারবো না তা পরের হিসাব। আগে বল তারপর।
_ (প্লেনের কথাটা বললাম)
তারপর ম্যাডাম বলল,
_ এটা করলে বেশি হয়ে যাবে না? (ম্যাডাম)
_ না। আমি যা বলেছি সেটাই…..(আমি)
_ আচ্ছা।
_ আর ওদের ছবি গুলো নিয়ে আসেন। যারা সবার প্রথমে ছিলো। আর সেই দুইটা মেয়ের ও…..
_ কেন? (প্রশ্নবোধকক দৃষ্টি তে)
_ কাজ আছে নিয়ে আসুন……(রাগী গলায়)
_ আরে বাবা আনছি। এত রেগে বলার কি আছে?
_ যান আগে……
তারপর ম্যাডাম চলে গেলো। আমি ভাবতে লাগলাম কি করবো। আর চাচাকে বলবো। কারণ যেই কাজটা করবো তাতে চাচার সাহায্য লাগবে। একটু পর ম্যাডাম এসে ছবি গুলো দিয়ে গেলো। আমি ছবি গুলো নিয়ে চাচার ঘরে গেলাম…….
_ চাচা আসবো? (আমি)
_ আরে…আয় আয়। তোর আবার অনুমতি লাগে নাকি….
তারপর ভিতরে গেলাম। তারপর কথা বললাম না। আমার কথা না বলা দেখে চাচা বলল,
_ কিরে কি হল? কেউ কিছু বলেছে? (অস্থিরতার সাথে)
_ না।
_ তাহলে?
_ চাচা। তোমাকে একটা গল্প বলবো। তারপর মতামত জানাবা।
_ আচ্ছা বল…..
তারপর ম্যাডামের সাথে ঘটনা গুলো পুরাটা বললাম। বলা শেষ হবা পর চাচার দিকে তাকিয়ে দেখি তার চোখেও পানি। তারপর চাচা বলল, ……
_ মতামত না? কি বলবো। আমি এমন জায়গায় যদি আমি হতাম তাহলে শুনার সাথে সাথে ছেলে গুলাকে মেরে ফেলতাম। আর কস্ট দিয়ে। যে ছেলেটা সবার আগে অভিনয় করেছে তাকে হাতুরি দিয়ে বাড়ি দিয়ে মেরে ফেলা উচিত। আর বাকিগুলাকে মেরেই ফেলতাম। আচ্ছা। আর একটা কথা বল আমাকে…
_ কি চাচা?
_ এটা কি গল্প না বাস্তব।
_ বাস্তব। আর আমি প্রতিশোধ নিতে চাই।
_ কিভাবে?
_ তুমি যেভাবে বললা। বল না চাচা আমাকে সাহায্য করবা।
_ করবো। কিন্তু যার ঘটানা বললি। তাকে দেখাবি না।
_ হুম। কিন্তু পরে…
পার্ট ৩
_ তুই এটা করতে চাস মানলাম। কিন্তু তোর কিছু লাগবে না? (চাচা)
_ কিছু লাগবে মানে কি চাচা? বুঝলাম না তো। (আমি)
_ আয় আমার সাথে আয়। আর হাসিব(চাচার গোপন সহযোগী) জিনিস নিয়ে আয়।
_ জ্বি ভাই…(হাসিব)
তারপর চাচা আমাকে একটা রুম এ নিয়ে গেলো। হাসিব কাপড়ে পেচানো একটা কিছু নিয়ে আসলো। তারপর চাচা কে দিলো। চাচা কাপড় টা সরাতেই দেখি একটা রিভালবার। চাচা আমার দিকে তাকিয়ে হয়তো আমার অবস্থাটা বুঝতে পারছে। তাই মুচকি মুচকি হাসছে। তারপর আমার কাছে এসে বলল,
_ নে…এটা নে..(চাচা)
_ ক…ক..ক..কি হবে এটা দিয়ে? (আমি)
_ এটা দিয়ে ওদের শেষ করবি। কিন্তু। ওদের এক গুলিতে মারলে হবে না। ওদের মতো ছেলেদের কস্ট দিয়ে মারতে হবে। আর তা কঠিন কস্ট দিয়ে। এমন কস্ট দিতে হবে যেনো শয়তাম ও যেনো কেঁপে ওঠে। (কঠোর কন্ঠে বলল চাচা)
_ জ্বি চাচা..
_ আর তোকে কিছু শিখায়ে দিবো। সেটা মেনে ওদের মারিস তাহলে পুলিশ কেন? রেব আসলেও তোদের খুঁজে বের করতে পারবে না। বা পারবেনা আসল খুনি কে?
_ আচ্ছা.। তাহলে বলো।
তারপর চাচা আমাকে বলল। কি বলল তা আপনাদের না জানলেও চলবে। তারপর চাচার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ম্যাডাম এর ঘরে এসে ম্যাডামকে সব বললাম। আর এটাও বললাম যে কাল যাবো। মারতে। একদিনে ৭০ জন কে মারবো। সাথে মেয়ে দুটোকেও। কারণ ওরাও কম দোষী নয়। তারপর আমি আমার ঘরে এসে কালকের অপেক্ষায় থাকলাম।
ভোর ৫ টা……….
ম্যাডাম আর আমি বেড়িয়ে পড়লাম। সাথে প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো। প্রথমে যাবো সিফাতদের বাসায়। সিফাত একা থাকে। ম্যাডাম আগে ওঠে গেলো। তারপর আমি। ম্যাডাম দরজা খুলাই রেখেছিলো। ম্যাডামকে দেখি সিফাতকে জড়িয়ে ধরে আছে। তারপর সিফাত গেলো ওয়াশরুমে। আমি তারাতারি করে রিভালবারটা বের করে সাইলেন্সার লাগালাম। তারপর ওয়াশরুমের দিকে তাক করে থাকলাম। ম্যাডামের চোখে পানি। হয়তো ভালোবাসার মানুষটাকে আজ হারিয়ে ফেলবে বলে।
আমি আর না তাকিয়ে থেকে সিফাত বের হতেই সিফাতের হাতে গুলি করলাম। সিফাত মাগো বলে চিৎকার দিলো। তারপর ম্যাডাম এর দিকে তাকিয়ে দেখি তার ড্রেস চেঞ্জ। আমি অবাক হয়ে গেলাম। ড্রেস চেঞ্জ এত তারতারি করলো কিভাবে। আমি ভালোভাবে লক্ষ্য করতেই দেখি ম্যাডাম এর জামা নিচে পড়ে আছে। ম্যাডাম এর একহাতে হাতুরি। আর এক হাতে রান্দা। ম্যাডাম সিফাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তারপর একটা কাগজ বের করলো। তারপর সিফাতকে লিখতে বলল। সিফাত ভয়ে তা লিখে ওর সাইন করে দিলো। আর আমি সিফাতের বাঁ হাতে গুলি করি। সিফাত লিখতের ম্যাডাম ওকে লাত্থি মেরে ফেলে দিলো। আর বলতে শুরু করলো……..
_ সিফাত। জানো খুব ভালোবাসতাম তোমায় খুব। তুমিই আমার সব ছিলে। তুমি যেইদিন রুম ডেট এর কথা বল তখন আমার বেশি খারাপ লাগতো। আমাকে তুমি এড়িয়ে চলতা। তুমি না আমায় ভালোবাসতে? তুমি কিভাবে এটা পারলে সাকি ব? আমি তোমাকে ভালোবাসতাম তাই বলে এই না যে আমি আমার শরিরে অধিকার তোমায় দিয়েছিলাম।
আমি তোমাকে কিস বা অন্য কিছু করতে দিতাম না। Infact তোমাকে আমার হাত পর্যন্ত ধরতে দিতাম না। আর তুমি? কিভাবে এই নোংরা কাজটা করতে পারলা? আমার সব কিছুর উপরে আমার স্বামির অধিকার আছে। আমি তা মানি আর বিস্বাস করতে। আর তোমার জন্য তাকে ঠকাতে হবে আমাকে। তোমার বেঁচে থাকার অধিকার নাই। তোর মত শয়তান বেঁচে থাকলে আরও অনেক। মেয়ে নস্ট হবে।
_ আমায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ার…কথ………..ওম্মামামামামামাম্মামায়াম্মামামাম্মম্মামামামামা…….গোগও…..(এক ভয়ংকত চিৎকার দিলো সিফাত)
কারণ ম্যাডাম। সিফাতের ২ পা এর ফাকে সজোড়ে বাড়ি মারে। আর ছেলে বলে তার প্রান এই একবারেই চলে যায়। তারপর ম্যাডাম রান্দা হাতে নিলো। তারপর বলতে লাগলো,
_ আমি তোকে ভালোবাসি না…..
এটা বলতে লাগলো আর কোপাতে লাগলো। আমি কিছু না বলে দেখতে লাগলাম। সিফাতের শরির টা পুরা গরুর কাটা মাংস এর মত হয়ে গেসে। আর মুখটা ম্যাডাম হাতুরি দিয়ে বিস্রি একটা অবস্থা করে কাগজ টা সিফাতের মুখে ছুডে দিয়ে চলে আসলাম। আর কাগজে লিখা ছিলো…..”আমি ধর্ষক”
এভাবে ৭০ জনকেই শেষ করলাম। সাথে ওই মেয়ে দুটোকেও। মেয়ে দুটোকে আরও কস্ট দিয়ে মেরেছে ম্যাডাম। আর ভিডিও গুলাও উদ্ধার করে।
বাসায় ফিরছি। ম্যাডাম আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। আর কান্না করছে। আমি কান্নার কারণ টা বুঝতে পারছি। তাই কিছু বলছি না….
ম্যাডাম আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে। আমি কান্নার কারণ টা বুঝতে পারছি। তাই কিছু বলছি না। আমিও সময়ের সাথে তাল মিলাতে ম্যাডামকে জড়িয়ে ধরলাম। ম্যাডাম কিছু বলল না। তবে কান্নার বেগ বেড়ে গেলো।
আমরা বাসায় এসে পড়েছি। ম্যাডাম কোন কথা না বলে দৌড়ে বাড়ির ভিতরে চলে গেলো। আমিও আমার ঘরে এসে একটু ঘুমাতে চেস্টা করলাম। আর ঘুমিয়েও পড়লাম।
ঘুম ভেংগে গেলো। কেনো তা জানি না। একটা অপরাধ বোধ জেগে ওঠছে মনের মধ্যে।
অন্যরকম একটা ফিল তা ভাষায় বোঝানো যাবে না। আমি আর না ভেবে ফ্রেস হতে গেলাম। ফ্রেস হয়ে এসে চাচার ঘরে গেলাম। চাচার জিনিসগুলো তো দিতে হবে। তাই চাচার ঘরে গেলাম।
_ চাচা আসবো? (আমি)
_ হুম। রাকিব আয়। (চাচা)
_ চাচা এই যে তোমার রিভালবার আর বুলেট গুলো নাও।
_ আরে.. আরে…কি করছিস? আমি এইগুলো দিয়েছি তোকে নেওয়ার জন্য নাকি?
_ তাহলে?
_ আরে পাগল। এই গুলো হল এখন কার নিরাপত্তার জিনিস। রাখ এইগুলো তোর কাছে। আর এইটা রাখ(কাগজ বাড়িয়ে দিলো)। এটা হল লাইন্সেস। এটা দেখালে পুলিশ তোকে ধরবে না। যদি দেখে।
_ ওহ। আচ্ছা।
_ আচ্ছা। রাকিব একটা সত্যিই কথা বলবি?
_ কি চাচা?
_ তুই আজ কার জন্য প্রতিশোধটা নিলি?
_ সেটা জানা কি খুব জরুরি?
_ হ্যা।
_ লাবণির……
চাচা পানির গ্লাস নিয়ে পানি খেতে নিয়েছিলো। ধুপ করে চাচার হাতের পানির গ্লাস টা পড়ে গেলো। কারণ চাচা চমকে গিয়েছিলো। কারণ কোন বাবা যদি তার মেয়ের এই রকম বাজে একটা হেরেসমেন্ট এর কথা শুনে তাহলে চমকাবেই।
কারণ মেয়ে বাবাকে আর বাবা মেয়েকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। চাচা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চাচার চোখ থেকে টুপ করে একফোটা পানি পড়লো কাঁচের টেবিলের উপর। চাচা উঠে দাড়ালো। তারপর আমাকে কিছু না বলে হাঁটতে লাগলো। আমি জিনিস গুলো নিয়ে চাচার পিছু যেতে শুরু করলাম। চাচা লাবণি ম্যাডামের ঘরে যাচ্ছিলেন। চাচা ম্যাডামের ঘরে ঢুকলেন। আর সাথে আমিও।
আমিও ম্যাডামের ঘরে ঢুকলাম। দেখলাম ম্যাডাম ঘুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। কত্ত মায়াবী লাগছে ম্যাডামকে। চাচা ম্যাডামের কাছে যেয়ে ম্যাডামের কপালে একটা চুমু দিলেন। তারপর ম্যাডামের হাত ধরে কান্না করতে লাগলেন। চাচা রাজনীতি করেন। চাচাকে এভাবে আমি কখনো দেখিনি। দেখিনি এভাবে ভেংগে পড়তে। চাচা এভাবে কান্না করছে আর ম্যাডাম জাগছে না আমার খুব চিন্তা হচ্ছে। ম্যাডামের পাশে তাকিয়ে দেখি ঘুমের ঔষধ। তার মানে ম্যাডাম ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়েছেন। সহজে ওঠবেন না। চাচা আমাকে ডাক দিলো।
_ রাকিব….(চাচা)
_ জ্বি। চাচা। (আমি)
_ তুই আমাকে আগে কেন বলিস নি বাপ? তাহলে আমিই যেতাম খুন করতে!এমন নোংরা কাজ আমার মেয়েকে দিয়ে করিয়েছে। আর তুই আমাকে বলিস নি!কেন? (কান্নাজড়িত গলায়)
_ লাবণি ম্যাডাম বলতে নিষেধ করেছিলো। তাই করিনি।
_ আমার ২টা কথা রাখবি?
_ বল চাচা….
_ ১/ তুই মাস্টার্স এ ভর্তি হয়ে যা। আর…..(চাচা থেমে গেলেন)
_ আর কি চাচা?
_ জানি না কথাটা তুই কিভাবে নিবি। আমাকে হয়তো স্বার্পর ভাববি কিন্তু বলছি। লাবণিকে। তুই বিয়ে করবি? দেখ আমি তোকে জোড় করবো না। তোর ইচ্ছা। তোকে যখন আমি আমার বাড়িতে নিয়ে আসলাম। তখন থেকেই আমি ঠিক করে রেখেছিলাম। তাই লাবণির কাছাকাছি রেখেছিলাম। যাতে ওকে বুঝতে পারিস। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা আমি জানতাম না রে!তোর ইচ্ছা তুই কি করবি…
_ আমি রাজি। চাচা।
_ ভেবে দেখ। রাকিব।
_ আমার ভাবা শেষ চাচা।
_ আচ্ছা। কাল সকালের মধ্যে তোর কলেজে ভর্তি হবার কাগজ পেয়ে যাবি।
_ আচ্ছা চাচা।
_ হুম।
এই বলে চাচা চলে গেলো। আমি কেন রাজি হলাম তা নিয়ে প্রশ্ন এসেছে নিশ্চই? আসলে চাচা আমাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছে। আমি চাচার কাছে না আসলে খারাপ পথে চলে যেতাম কিন্তু চাচা থাকাতে তা হয় নি। যে চাচা আমাকে না চিনে না যেনে আমাকে তার ঘরে জায়গা দিলো আর আমি সেই চাচার মেয়েকে চিনেও বিয়ে করতে পারবো না? তার Affair এর কথা জেনে। এতটা অকৃতজ্ঞ আমি হতে পারিনি তাই। রাজি হলাম। হতে পারে সে ধর্ষিতা।
”আলো আর আধারে মিলে না হয় গড়ে তুলবো নতুন একটা পৃথিবী।”
পার্ট ৪
সকাল বেলা…
ঘুম থেকে ওঠলাম। চাচা সকালে দেখা করতে বলেছিলো। তাই দেখা করতে গেলাম…..চাচা আমাকে কলেজে এডমিট করিয়ে দিয়েছে। আর তার কাগজ ই আমাকে দিয়েছে। আমি চাচার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। তারপর রেডি হতে লাগলাম। ম্যাডাম এখন ও ঘুম থেকে ওঠেনি। তাই ম্যাডামকে ডাকতে ম্যাডামের ঘরে যেতে লাগলাম। চাচা দেখেছিলো। আর দেখে একটু মুচকি হেসেছিলো। আর কেন তা আপনারা জানেন। হি হি হি
তারপর ম্যাডামকে দেখি পা এর জায়গায় মাথা আর মাথা এর জায়গায় পা। মানে বালিশে পা আর খাটে মাথা। চুল গুলো মুখের উপর পরে আছে। দেখতে পেত্নির মত লাগছিলো। সেই পেত্নি টাকে কি যেনো বলে…….হু হু..মনে পড়েছে চুলওয়ালি পেত্নি হি হি হি। আপনারা আবার ওকে বইলেন না কিন্তু। তারপর ম্যাডামের কপালে ছোট করে একটা চুমু দিলাম। তারপর ডাক দিলাম……..
_ লাবণি….এই…. লাবণি….ওঠো। কলেজে যেতে হবে….ওঠো….. (ওর সামনে ওকে ম্যাডাম বললে খবর আছে)
_ (কোন সাড়া নাই)
_ পানি ঢেলে দিবো কিন্তু…ওঠো…ওঠো….বলছি…..(আমি)
_ (সাড়া নাই)
_ বুঝেছি কি করতে হবে। শুয়ে থাকো দেখাচ্ছি মজা…..(মনে মনে বললাম আমি)
পানি আনতে যাওয়ার জন্য যখন ওঠে দরজার চোখ পড়লো। তখন দেখলাম কি যেনো একটা ছায়া সরে গেলো দরজা থেকে। আমি কিছু মনে না করে পানি নিয়ে আসলাম। কম না এক বালতি। তারপর ধুপ করে লাবণির শরিরের উপর মারলাম…পানিটা অনেক ঠান্ডা ছিলো। পানির স্পর্শ পেতেই লাবণি লাফ দিয়ে ওঠে চিৎকার দিতে যাবে এমন সময় আমি ওর মুখে হাত দিয়ে দিলাম। ও আমার দিকে রাগি দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে। আর আমি ভিলেন মার্কা হাসি দিলাম। তারপর লাবণি…..
_ হু…হু…..হু….হু……আব্বুউউউউউ…..(কান্না করে দিছে)
হায় হায় এখন কি করি। লাবণির কান্না শুনে চাচা দৌড়ে আসলেন। আর লাবণিকে দেখে বললেন….
_ কীরে মা কাঁদছিস কেন? (চাচা)
_ দেখোনা বাবা রাকিব ভিজায়ে দিছে…..উহুহুহুহুহুহু…. (বাচ্চাদের মত কান্না করতে করতে বলল)
_ হা…হা..হা…রাকিব আরেক বালতি ঢেলে দে..
_ জ্বি…চাচা। তোমার কথা কি ফেলতে পারি নাকি আমি?
_ হুম…
চাচা চলে গেলো। লাবণির দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আর আমি ভিলেন এর মত হাসছি। আর লাবণির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। লাবণি আমার দিকে তাকিয়ে থাকায় মনে করেছে আমার হাতে বালতি আছে। আমার হাতে বালতি আছে ঠিক আছে কিন্তু তাতে পানি নেই। লাবণি আমার এই ভাবে তাকিয়ে থাকা আর ওর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয় পেয়েছে হয়তো। তাই বলছে…..
_ এই…তু..তুমি.আ..আ..আমার দিকে এই ভাবে এগিয়ে আসছো কেন?
_ (নিশ্চুপ আমি)
_ ক..ক…কি হল? কথা বল না কেন?
_ (নিশ্চুপ ভাবে ওর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি)
ওর খুব কাছাকাছি যখন আসলাম তখন ও আমাকে টান দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো। ও আমাকে এতই জোড়ে টান দেয় যে আমি ওর উপরেই পড়ে যাই। কিন্তু আমি ওর উপরে পড়লাম ঠিক আছে। কিন্তু আমি পড়তেই ওর ঠোট এর সাথে আমার ঠোট এক হয়ে গেলো।
কিছুক্ষন পরে ও আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে ঘরের এক পাশে গিয়ে দাড়ালো। তারপর আবার আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে আমার কাছে এসে আমার জামার কলার ধরে উঠালো। তারপর আবার ফেলে দিলো। আমি পড়ে যাবার পর ও আমার উপরে উঠলো। তারপর আমাকে বলল,
_ পিচ্চি…পন্ডিত…..আমার। খুব পাজি হয়ে গেসো…
এই বলে আমার গাল দুটো টেনে দিয়ে দৌড় দিয়ে পালালো। আমি একটু আগের ঘটানা মনে করার চেস্টা করতেছি। কিন্তু মনে করতে পারতেছি না। তাই আর চেস্টা করলাম না। আবার তো কলেজে যেতে হবে। তাই রেড়ি হতে গেলাম।
রেড়ি হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে নিচে নামলাম। চাচা খবর দেখছে। আমিও গেলাম নাস্তা করতে। চাচা আমাকে দেখে বসতে বলল। আমি বসলাম। ঘরটা শুনে আমি অবাক হলাম। কারণ খবরটা ছিলো এরকম….”একদিনেই ৭২ খুন। আর নিহতের সবাই ধর্ষনের শিকারক্তি দিয়েছে। আর সরকার সেই হত্যা কারীর শাস্তি প্রকাশ্যে মাফ করে দিয়েছে”
আমার ভিতরের অপরাধ বোধ কমে গেলো অনেক খানি। লাবণিও কখন এসেছে জানি না। কিন্তু ওর মুখেও প্রশান্তির হাসি ঠোটের কোনে দেখা যাচ্ছে। অনেক দিন পরে আমি এই হাসিটা দেখলাম।
বের হলাম কলেজে যাবার জন্যই। তবে আজ পার্থক হচ্ছে আমি কলেজে যাচ্ছি। আর লাবণিও। আজ লাবণির ড্রাইভার না। বন্ধু হয়ে। কলেজে গেলাম। চাচা আগেই বলে দিয়েছিলো ক্লাস কোথায় পাবো। আমি ঢুকবো এমন সময় লাবণি বলল,
_ তুমি তোমার ক্লাস তো তুমি চিনো না। চল আমি নিয়ে যাচ্ছি। (লাবণি)
_ আমি চি…(আমার কথা শেষ হবার আগেই লাবণি বলল)
_ চুপ। একদম চুপ। চল আমার সাথে। (রাগী কন্ঠে বলল)
_ মুখে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলাম।
_ এই তো গুড বয়।
তারপর লাবণি আমার হাত ধরে ক্লাসে নিয়ে গেলো। ক্লাসের সবাই অবাক
আর হবেই বা না কেন? সেমিস্টারের ৬ মাস পরে কলেজে গিয়েছি তা আর কি হবে। পরে লাবণিকে বিদায় দিয়ে ক্লাসে ঢুকলাম। ক্লাসে স্যার আসলো তখন আমাকে দেখে বলল দাড়াতে। আমি দাড়ালাম। পরে আমাকে বলল,
_ আমার প্রিয় ছাত্র আর ছাত্রীরা এই হল তোমাদের নতুন বন্ধু রাকিবুল হাসান। তোমরা ওকে রাকিব বলে ডাকবা। (স্যার)
_ হাই….রাকিব…..(সবাই)
_ হাই..(আমি)
তারপর ক্লাসের পর ক্লাস শেষ হয়ে গেলো। কলেজ ছুটি হবার পরে ক্লাস থেকে বের হতে যাবো এমন সময় পিছন থেকে একটা মেয়ে আমাকে ডাক দিলো……
_ এই…যে রাকিব শোনছো? (অপরিচিতা)
_ জ্বি। বলুন। (একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে)
_ আমরা কি পরিচত হতে পারি?
_ জ্বি। আমি রাকিব…
_ আমি রাইসা … আমরা তো ক্লাসমেট তুমি করে বলি?
_ আপনি বলতে পারেন। কিন্তু আমি তুমি করে বলতে পারবো না।
_ কেন? (অবাক হয়ে)
_ এমনি।
_ ওহ। আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
_ ঠিক আছে। এখন বাই।
_ ওকে। ধন্যবাদ। বাই।
রাইসাকে বাই দিয়ে পিছনে ফিরতেঈ আমি অবাক হয়ে গেলাম!
আমি পিছনে তাকাতেই দেখি লাবণি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি লাবণির কাছে আসতেই লাবণি বলল,
_ ওনি কে রাকিব? (লাবণি)
_ আমার বন্ধু। আমার সাথে ওনার মাত্র বন্ধুক্ত হল। (আমি)
_ ওহ। চলো বাসায় যাওয়া যাক?
_ হুম। অবশ্যই।
তারপর লাবণি আর আমি বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে খেয়ে একটু ঘুমালাম। তারপর ঘুম থেকে ওঠে গল্প লিখতে শুরু করলাম। গল্প লিখে পোস্ট করে ঘর থেকে বের হলাম। লাবণির ঘর এ যাবার জন্য। লাবণির ঘর এ যেয়ে নক করলাম। লাবণি ভিতর থেকেই বলল,
_ হুম। আসো রাকিব। (ভিতর থেকে)
তারপর আমি ভিতরে গেলাম। ভিতরে গিয়ে লাবণির দিকে তাকাতেই আমি ভয় পেয়ে গেলাম। লাবণির চোখ লাল হয়ে আছে। চোখে কোনে পানি চিকচিক করছে। লাবণি ওর দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে আমাকে বলল, ..
_ কিছু বলবা রাকিব? (লাবণি)
আমি এগিয়ে গিয়ে খাটের সামনে চেয়ার নিয়ে বসলাম। তারপর লাবণিকে বললাম,
_ কি হয়েছে তোমার? (আমি)
_ ক…ক..কই? কিছু না তো…আমার কিছু হয় নি তো। আর আমার কি হবে? (লাবণি)
_ লাবণি..মিথ্যা বলছো তুমি আমার সাথে? আমরা না ফ্রেন্ড। তুমি কস্ট পেয়ে কান্না করছো আর যার জন্য কান্না করছো তার কারণটা যানবার অধিকার ও কি নেই আমার? (আমি)
_ না..না..তুমি যা ভাবছো তা না। আসলে আমার না সিফাতের কথা খুব মনে পরছে। খুব মিস করছি। রাকিব ওকে না খুব ভালোবাসি। খুব। যানো কাল রাতে স্বপ্নে না ওকে দেখেছিলাম। কলেজে যেদিন ওকে প্রথম দেখি সেই দিনের মত একই হাসি একই লুক। বোকা বোকা আর টমেটোর মত কিউট গাল গুলা নিয়ে হাসি খুশি একটা ছেলে। কিন্তু…..
আর বলতে পারলো না কেঁদে দিলো। আমি কি বলবো। তাই ভাবছি। ওকে সমাবেদনা দেওয়ার মত ভাষা আমার নেই। ওর হাত টা শক্ত করে ধরলাম। তারপর ওর চোখের পানি মুছে দিলাম। ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। কিছুক্ষন যাবার পরে লাবণি বলল,
_ রাকিব আমার একটা কথা রাখবা? (কান্নারত অবস্থায়)
_ হুম। বল…(আমি)
_ এভাবে আমার একটা ভালো বন্ধু হয়ে সারাজীবন থাকবা?
_ হুম। থাকবো। লাবণি। (শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম)
লাবণি আর কোন কথা বলল না। আমিও বললাম না।
সন্ধ্যায় আমি পড়তে বসেছি এমন সময় লাবণি আমার ঘরে আসলো। আমি লাবণিকে দেখে বললাম,
_ কিছু বলবা? (আমি)
_ হুম। (মাথা নেড়ে)
_ বল…
_ আমি তোমার সাথে পড়বো। (বাচ্চাদের মত করে বলল)
অবাক হলাম এমন আবদার শুনে। তারপর বললাম,
_ আচ্ছা আসো…
_ থ্যাংকিও….
তারপর আমার পাশের চেয়ারে বসে পড়তে লাগলো। আমার সন্ধেহ হচ্ছে ও। পড়তে আসছে নাকি আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে আসছে। আমি যখন ই তাকাই তখনি দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
একটু পরে লাবণি আমাকে বলল,
_ রাকিইইইব…
_ কি?
_ এই পড়াটা বুঝায়ে দাও। (বই দেখিয়ে)
_ আচ্ছা। দাও দেখি…(ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে)
_ হুম। এই যে এটা।
তারপর আমি বইয়ের দিকে তাকিয়ে বুঝাতে লাগলাম। আমি বুঝাচ্ছি আর ও আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার একটু রাগ হল তাই বললাম,
_ এই…তোমার সমস্যা কি হুম? তুমি পড়া বাদ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন? (ধমক দিয়ে)
_ এই…তুমি..আমাকে বকা দিলা? উহু হুহুহুহুহুহুহুহহুহ….তোমার সাথে আড়ি। তুমি পঁচা…আমাকে বকা দাও। উহুহুহুহুহুহুহুহুহু…..
বাচ্চাদের মত কান্না করতে করতে আমার ঘর থেকে চলে গেলো। মেয়েটা আসলেই কেমন যেন। একটু পাগলি পাগলি।
রাতে খাবার খেতে টেবিলে গেলাম। লাবণি আমার সামনের চেয়ারে বসলো। আমাকে দেখে ভেংচি দিয়ে মুখটা ঘুরিয়ে খাবার নিয়ে ওর ঘরে চলে গেলো। বুঝলাম পাগলিটা অনেক রাগ করেছে। আমি খাবার খেয়ে ঘরে গেলাম।
রাত ২ টা…
ঘর থেকে বের হলাম ছাদে যাবো বলে। গভীর রাতে শহরের বাতাস টা ভালো লাগে। গায়ে শিহরন ধরিয়ে দেয় বাতাস টা। ঢাকার এই সময় টায় সমস্ত নিস্ত্বধতা চলে আসে মনে। এক অন্যরকম অনুভুতি। সুখ। সুখ। অনুভুতি। যা সবাই চায়। আমিও নেই। রোজ রাতে নেই । জোনাকি পোকার জি জি ডাক।
আর বাঁদুরের ছুটাছুটি দেখতে খুব ভালোলাগে। আমি ছাদে দাড়িয়ে আছি এমন সময় কারো পায়ের আওয়াজ শুনলাম। আমি পিছনে তাকাতেই দেখি লাবণি আসছে। লাবণি ওঠতেই আমাকে দেখলো। তারপর ছাদের অন্য পাশে গিয়ে দাড়ালো। রাগ কমে নি। রাগ আমাকে ভাংগাতেই হবে। তাই আমিও গেলাম। লাবণির কাছে যেয়ে বললাম,
_ লাবণি আমি সরি..
_ (নিশ্চুপ)
_ প্লিজ মাফ করে দাও?
_ প্লিজ…
_ ২ মাত্র শর্তে মাফ করতে পারি। (অবশেষ এ মুখ খুললো)
_ সব শর্ত মানবো, বলো।
_ ১ / আমি যখন বলবো তখনি আমাকে কোলে নিতে হবে…..
_ ২ / আমাকে পাপ্পি দিতে হবে।
পার্ট ৫
_ ১ /আমি যখন ই বলবো তখন ই আমাকে কোলে নিতে হবে।
২ / আর আমাকে পাপ্পি দিতে হবে…
আমি অবাক হলাম এমন অবদার শুনে। আর খুশিও হলাম। পাপ্পি আর কোলে নিতে হবে। উফফ…কি ফিলিংস..পুরাই পাং্খা। লাবণির দিকে তাকিয়ে আছি। লাবণি আমার দিকে নয়। ও তাকিয়ে আছে নিচের দিকে। হটাৎ লাবণি বলে ওঠলো,
_ কি? রাজি না তাই তো…না হলে নাই। আমি গেলাম।
এই বলে চলে যেতে লাগলো। আমি আবুল হয়ে গেসি এমন কথা শুনে। তারপর তারাতারি করে বললাম,
_ আমি রাজী তো…
_ সত্যিই? (পিছনে ফিরে)
_ হুম।
_ নাও..এখন কোলে করে নিয়ে আমাকে আমার ঘরে দিয়ে আসো।
_ যথাস্থস মহারাণী…
এই বলে লাবণিকে কোলে তুলে নিলাম। আমি কোলে নিতেই মেয়েটা লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে। দুহাত দিয়ে আমার গলা জড়িয়ে ধরেছে। আমি ওকে ওর ঘরের সামনে এনে ওকে আমার কোল থেকে নামিয়ে দিলাম। আমি চলে আসবো এমন সময় লাবণি বলল,
_ আমার শর্তের আরেকটা জিনিস কই?
_ ওহ। । ভুলে গেসিলাম। সরি। এই নাও উম্মম্মাহ…..
_ থেংকু…#পিচ্চি_পন্ডিত..আমি জানতাম তুমি আমার কপালে কিস করবা?
আমার ধাক্কা লাগলো। ও আমার নিক নেম কিভাবে জানলো? তাই প্রশ্ন করলাম,
_ তুমি এই নাম কোথায় পেলা?
_ কেন?
_ না..মানে…আমি তো তোমাকে আমার এই নাম তোমায় বলি নি…তাহলে?
_ এত জানার দরকার নাই তোমার। তুমি ঘরে গিয়ে ঘুমাও। (ঝাড়ি মেরে বলল)
_ আচ্ছা…(মন খারাপ করে)
তারপর আমি পিছনে ঘুরে আমার ঘরে আসছি এমন সময় লাবণি আমায় ডাক দিলো….
_ রাকিব? (লাবণি)
_ হুম। বল..(লাবণির দিকে ঘুরে)
_ তুমি কি রাগ করেছো? (আমার দিকে এগিয়ে এসে)
_ না..রাগ করিনি। রাগ করবো কেন? (অভিমান করে বললাম)
_ এই..রাকিব। আমার দিকে তাকাও। মাথাটা ওঠাও বলছি। ওঠাও…
_ হুম। বল…(মাথা উঠিয়ে বললাম)
_ এ কি? তুমি আমার উপর অভিমান করেছো কেন? আমি খুব সরি গো…আমার পিচ্চিটা খুব ভালো। এই নাও তোমাকেও একটা জিনিস দিলাম….উম্মম্মমাহ…(আমার গালে কিস করলো)
আমি শকড হয়ে গেলাম। হটাৎ করে এমন হওয়ায় আমার সাড়া শরির কাঁপতে লাগলো। আমি লাবণির দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। আমার এমন ভাবে তাকানো দেখে লাবণি বলল,
_ এই..পোলা..হা করে তাকিয়ে না থেকে ঘুমাতে যাও…(ধমকের শুরে)
_ আচ্ছা।
তারপর আমি আর কিছু না ভেবে ঘুমাতে গেলাম। এটা এটা ভাবতে ভাবতে ঘুমাতে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে…
আমি ঘুম থেকে ওঠলাম। তারপর নামাজ পড়ে ব্রেক ফাস্ট করতে গেলাম। চাচাও আছে। চাচার সাথে কিছু কথা আছে তাই বললাম,
_ চাচা আমি আলাদা থাকতে চাই…..(মাথা নিচু করে বললাম)
_ কি? (অবাক হয়ে)
_ হুম। চাচা আমি নিজেই নিজের খরচ চালাতে চাই।
_ তুই কি মনে করছিস আমি তোকে আমার নিজের ছেলে মনে করি না? তোকে কি আমি বোঝা মনে করি? (হালকা রাগে)
_ না..মানে তা না। আমি নিজে এখন থেকেই চেস্টা করি দেখি কি করতে পারি।
_ তোর ইচ্ছা। কিন্তু আমাদের ভুলে যাস না বাবা…(আমার হাত ধরে বলল)
_ কি যে বল না চাচা। যেইদিন তোমাদের ভুলে যাবো সেইদিন আমিও আর এই পৃথিবীতে থাকবো না।
_ এই সব কথা বলিস না। আর দোয়া করি তুই তোর আশা অনুযায়ী তুই যেন সাফল্য পাশ।
_ ধন্যবাদ চাচা।
এই বলে চাচা নাস্তা না করে চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলো। হয়তো বেশি ভালোবাসে বলে আমার চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছে না। কি জানি কেন কেন কান্না করছে চাচা। কিন্তু আমার বাবা মায়ের পরে হল আমার চাচা। খুব খুব খুব ভালোবাশি চাচাকে।
_ না গেলে হয় না রাকিব? (অনুরুধের কন্ঠে বলল লাবণি)
আমি চলে যাবো লাবণিকে এটা যখন বলতে এসেছি তখন লাবণি এই কথা বলল, । তারপর আমি বললাম,
_ প্লিজ…তুমি না করো না।
_ আচ্ছা যাও। তবে প্লিজ আমি কিন্তু মাঝে মাঝে যাবো তখন কিন্তু রাগ করতে পারবা না।
_ আচ্ছা বাবা যেও। আমি এখন আসি?
_ আচ্ছা। খোদা হাফেজ
_ খোদা হাফেজ!
চলে আসবো এমন সময় লাবণি বলল,
_ রাকিব শোন।
_ হুম…বল।
আমার সামনে এসে আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আর বলতে লাগলো,
_ খুব…খুব…খুব….মিস করবো তোমায় রাকিব…..(কাঁদতে কাঁদতে বলল)
_ আমিও মিস করবো। তোমায়….(আমার চোখ থেকেও পানি পড়লো কয়েকফোটা)
তারপর লাবণিকে ছাড়িয়ে নিয়ে আমি আমার গন্তব্যপথে রওনা দিলাম!
আমি বের হয়ে গেলাম আমার গন্তব্যস্থানে।
ওহ আপনাদের তো বলিনি আমি কোথায় যাচ্ছি। আসলে আমি অনেক দিন ধরেই চাকরীর চেস্টা করছিলাম। আর আল্লাহ এর রহমতে চাকরীটা পেয়ে যাই। আর তারপর বাসা ভাড়া নিয়ে নেই। আর বাকিটা তো আপনারা জানেন ই। ওহ। আমার বেতন ৩০ হাজার টাকা। আর মাস্টার্স শেষ করলে আরও বাড়তে পারে।
আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে আমি আমার বাসায় চলে এসেছি। তারপর প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো কিনতে গেলাম। সব কিনে বাসায় আসলাম। আর টাকা পেলাম কোথায় তা জানতে চান তো। আসলে অফিস থেকে ১মাস এর বেতন আগে দিয়ে দেয়। আর তা দিয়েই এই গুলো কিনলাম। ওহ। অনেক কথা হল। এবার রান্না করতে হবে। আসার সময় মুরগী আর চাল কিনে নিয়ে এসেছিলাম। আর আমি রান্না পারি তাই আর কোন সমস্যা নেই। রান্না করলাম। গোসল করলাম। তারপর খাবার খেতে বসলাম।
খাবারের এক লোকমা মুখে দিতেই চাচার কথা আর লাবণির কথা মনে পড়ে গেলো। কতো কথা হত খাবার সময়। সাথে যারা কাজ করতো তারাও খেতো। দেখে মনে হত পুরাটাই যেন একটা পরিবার। খুব মিস করছি চাচাকে। খুব। আর লাবণি? আমি তো খাবার খাচ্ছিলাম। ঘড়ির দিকে তাকালাম। ঘড়ি দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারণ আমি খেতে বসেছিলাম। ৩:০০ টায়। আর এখন বাজে ৪টা ৩০…অবাক হয়ে গেলাম। আমি এত সময় ভাবতলাম। আবার ও ফোনের শব্দ পেলাম। ফোনের স্কিনে তাকিয়ে দেখি লাবণির ফোন। তাই তারাতারি করে ফোন টা ধরলাম। ফোন ধরতেই লাবণি বলল,
_ ওই…কুত্তা, বিড়াল, ছাগল, হারামি পঁচা ছেলে তোরে কত গুলা ফোন দিসি তুই ধরোস নাই কেন? জানিস কতো চিন্তা হইসে আমার! (কেঁদে কেঁদে বলল)
_ না…মানে….(আমার কথা শেষ হবার আগেই লাবণি বলল)
_ চুপ….একদম চুপ। একটা কথাও বলবা না। আগে বল তুমি খেয়েছো রাকিব?
_ হুম। তুমি খেয়েছো?
_ এই তোমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ হবার পর থেকে তোমাকে ছাড়া খেয়েছি?
_ না।
_ তাহলে? হুম। তোমাকে তো এর জন্যই ফোন দিলাম । আচ্ছা আমি খেয়ে তোমাকে ফোন দিচ্ছি।
_ আচ্ছা।
_ রাকিব….রাকিব শোন না।
_ হুম। বল….
_ আমাকে পাপ্পি দাও।
_ কিহ? (অবাক হয়ে বললাম)
_ শর্তের কথা ভুলে গেসো?
_ ওহ। এই নাও উম্মম্মম্মাহ!
_ থেংকু।
এই বলে কেটে দিলো। আসলেই পাগলি মেয়ে একটা। কখন যে কি করে। আর পাগলি না হলে কি এই রকম আবদার করে।
পরেরদিন সকালে…..
পরের দিন সকালে ওঠে আগে কলেজে গেলাম। কারণ আমি যে চাকরি করি তাতে একটা কাগজ লাগবে তাই। না হলে আজকে থেকেই জয়েন দিতাম। কলেজে গিয়ে প্রিন্সিপাল স্যার এর কাছ থেকে কাগজ টা নিয়ে চলে আসছি এমন সময় পিছন থেকে ডাক এলো।
_ রাকিব…
পিছনে তাকিয়ে দেখি রাইসা। আমি রাইসার দিকে এগিয়ে গেলাম। রাইসা আমাকে বলল,
_ কাল কলেজে আসো নি কেন? (রাইসা)
_ বাসা চেঞ্জ করেছি তো তাই। (আমি)
_ হটাৎ বাসা চেঞ্জ করেছো কেন?
_ চাকরির জন্য। চাকরি পেয়েছি তো, তাই!
_ তাই? (খুশির কন্ঠে)
_ হুম।
_ ট্রিট কোথায়?
_ চলেন তাহলে…
_ না। থাক। পরে নেওয়া যাবে। আচ্ছা। শোন তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।
_ হুম। বল!
পার্ট ০৬ (অন্তিম)
_ তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো। একটু শুনবা। (রাইসা)
_ হুম। বল..(আমি)
_ আমার সাথে সারাজীবন ফ্রেন্ডশিপ রাখবা? (মাথা নিচু করে বলল)
_ হুম। আপনার সাথে সারাজীবন ফ্রেন্ডশিপ রাখবো।
_ ধন্যবাদ তোমায় রাকিব। আর আসল কথা হল আমার বিয়ে। আগামি মাসের ১২ তারিখে। তুমি কিন্তু অবশ্যই আসবা….না করতে পারবা না। (একটা কার্ড বাড়িয়ে দিয়ে)
_ ওহ। খুব ভালো কথা। আমি আসার জন্য চেস্টা করবো।
_ হুহ। চেস্টা না। তোমাকে আসতেই হবে। আর সাথে তোমার বউ কেও।
আমি টাসকি খেলাম রাইসার কথা শুনে। ও আবার জানলো কিভাবে আমার বউ আছে। আর বউ আবার বউ আসলো কোথা থেকে? আমি তো বিয়ে করি নি। তাহলে? এত কথা ভাবার চেয়ে রাইসাকে জিজ্জাসা করলেই তো হয়। তাই রাইসাকে জিজ্জাসা করলাম…..
_ আ..আমার বউ মানে? (আমি)
_ মানে হল লাবণির সাথে তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। (রাইসা মুচকি হেসে বলল)
_ তু..তুমি জানলা কিভাবে? (তোতলাতে তোতলাতে বললাম)
_ আমি জানবো না তো কে জানবে হুম? লাবণি আমার আপন চাচাতো বোন। আমি এতদিন বিদেশে ছিলাম। এই বছর ই আসলাম। তারপর লাবণির আব্বু আমাকে বলল তোমার কথা কয়েকদিন আগে বলেছে। আর ৭০ জনের কি অবস্থা করেছো তা আমি জানি। আর ভালো করেছো।
লাবণির জায়গায় আমি থাকলে ওদের ভিডিও দিয়ে ওদের ই বারোটা বাজাতাম। আর লাবণি মেয়েটা খুব সহজ সরল। ওর মনে এত প্যাচ ছিলো না। আমি সব জানতাম সিফাতের সম্পর্কে ওকে না করেছিলাম রিলেশন করতে। কিন্তু ও হয়তো অনেক ভালোবেসে ফেলেছিলো। আর এটাই ওর জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল। আর এটাই সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে ওকে। আমি জানি না কেন তুমি রাজী হয়েছো এই বিয়েতে। কিন্তু যাই করো প্লিজ লাবণিকে কস্ট দিয়ো না। অনেক কস্ট সহ্য করেছে মেয়েটা। প্লিজ রাকিব কস্ট দিয়ো না! (কেঁদে কেঁদে বলল রাইসা)
আমি রাইসার কথা গুলো শুনছিলাম। রাইসা মিথ্যা বলে নি। লাবণি মেয়েটা অনেক বোকা। কিন্তু অসম্ভব ভালো। লাবণি আমাকে বলল না কেন যে রাইসা ওর বোন। লাবণি তো দেখেছিলো রাইসা আর আমাকে তাহলে ও বলল না কেন? আমার ভাবার সময় রাইসা বলল,
_ কি হল? দাও কথা দাও……(রাইসা)
_ হুম। দিলাম কথা। লাবণিকে আমি কস্ট দিবো না। (ভাবনা থেকে ওঠে)
_ খুব খুব খুব ধন্যবাদ তোমায়।
_ হুম।
_ আর কাল সকালের বাসে আমরা যাবো। তুমি আর তোমার বউ একসাথে আসবা। আর কয়টার সময় আসবা তা আমিই বলে দিবো।
_ আচ্ছা।
_ এখন যাই। আল্লাহ হাফেজ
_ আল্লাহ হাফেজ…
দুপুর ৩টা ২০…..
কফি বানিয়ে নিয়ে বারান্দায় আসলাম। ব্যাস্ত নগরির রাস্তাঘাট একটু শান্ত লাগছে। রাস্তায় গাড়ির এত চাপ নেই। গাড়ি গুলো ছুটে চলছে আপন গতিতে, নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে। গাড়ি গুলোতে হয়তো কারো প্রিয়জন কারো বাবা। অথবা কারো মা।
কেউ বা যাচ্ছে কাজে আবার হয়তো কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছে। কিন্তু আর যাই হোক সবার ই নির্দিষ্ট গন্তব্য আছে। কিন্তু আজ আমার মনটা গন্তব্য ছাড়া ঘুরছে। হটাৎ মোবাইলের আওয়াজে ভাবনার ছেদ পরলো। কফির মগটা রেখে ফোনটা ওঠাতেই দেখি লাবণির ফোন। ওর কথাই ভাবছিলাম। তারপর ফোনটা ধরলাম….
_ হ্যালো…লাবণি বল….(আমি)
_ কান্নার শব্দ আসছে।
_ হ্যালো লাবণি তুমি কান্না কারছো কেন?
_ আ..আমায় মাফ করে দাও রাকিব। (কেঁদে বলল)
আমি অবাক হলাম লাবণির কথা শুনে। ও তো কিছু করেনি। তাহলে মাফ চাচ্ছে কেন? কিছু বললাম না। সুধু বললাম,
_ কেন?
_ আমি তোমায় মিথ্যা বলেছি। আমি রাইসা আপুকে চিনি। ও বিদেশে থাকতো। আর ও আমাকে বলতে বারণ করেছিলো যে ও আমার বোন। (কেঁদে কেঁদেই বলল)
_ কিন্তু কেন?
_ আমি জানি না। সত্যিই বলছি আমি জানি না কেন আপু ওই রকম করেছে। কিন্তু রাকিব Trust me আমি তোমাকে বলতাম। কিন্তু ও আমাকে না করেছিলো বলে বলতে পারি নি। প্লিজ রাকিব……মাফ করে দাও। প্লিজ….(ফোফাতে ফোফাতে বলল)
আমি মনে মনে একটু হাসলাম। মেয়েটা আসলেই বোকা। নিজেই নিজেকে #অপরাধী বানায়। তারপর ওকে বললাম,
_ তুমি আমার সাথে মিথ্যা বলেছো। আমি তোমার সাথে কথা বলবো না। (মিথ্যা অভিমানের অভিনয় করে)
আমি এর উত্তর শুনলাম না। লাবণি কাদঁতে থাকলো। আমি চুপ করে আছি। একটু মজা নিবো হি হি হি। তারপর হুট করে ফোন কেটে গেলো। ফোনটা কাটতেই আমার বুকে কেমন করে যেনো ধাক্কা লাগলো। আমি কিছু মনে না করে আমার কাজে মনোযোগী হলাম।
পরের দিন…..
পরের দিন আমি রেডি হয়ে রওনা হলাম লাবণিদের বাসার উদ্দশ্যে। লাবণিকে নিয়ে তারপর যাবো। কিন্তু লাবণি কেমন আছে কে জানে। কারণ ও আমার কাছে মাফ চেয়েছিলো। কিন্তু আমি করিনি। আর ও আমায় ওর বেস্ট ফ্রেন্ড মনে করে। আর আমি রাগ করলে ওর সাথে কথা বলবো না।
আর ও এটা সহ্য করতে পারে না। তাই। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে লাবণিদের বাসায় চলে আসলাম। বাসার ভিতরে ঢুকলাম। আজ সব কিছু কেমন যেনো শান্ত শান্ত লাগছে। চাচা নেই কোথাও। আমি সোজা লাবণির ঘরে গেলাম। লাবণির ঘরে অবাক হয়ে গেলাম। চাচা লাবণির পাশে বসে আছে। চাচার চোখ এ পানি। আমি এবার ভয় পেয়ে গেলাম। লাবণি আবার কিছু করে বসে নি তো?
_ সরি লাবণি।
_ আমাকে মাফ করেছো।
_ হুম।
_ আমার কিস কোথায়? কত দিন দাও না। দাও কিস দাও…(বাচ্চাদের মত আবদার করে গাল পেতে দিলো। )
_ উম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মহ…….হয়েছে?
_ উহু…না। হয়নি। মাত্র তো একটা আর কাল যে অপরাধ করেছো তার জন্য আরও দিতে হবে।
_ ইশশ….নিজে মনে হয় কিছুই করনি। তুমিও অপরাধ করেছো …. (পল্ট্রি নিলাম)
_ ওওওও….তাই? তাহলে এই নাও…….উম্মম্মম্মমাহহ.. (আমার ঠোটে কিস করলো)
আমি আমার গায়ে ৪২০ ভোল্টের মত শকড লাগলো। আর সাথে টাসকি খেয়ে গেলাম। লাবণি কিস করার কথা গালে কিন্তু ও করলো ঠোটে। তারমানে রাইসার কথাই সত্যিই। হুম। ব্যাপারটা বুঝতে হবে? তারপর লাবণির দিকে তাকালাম। ও লজ্জায় লাল হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর গাল দুটো লাল টমেটোর মত হয়ে গিয়েছে। বিনোদন পাচ্ছিলাম আমি। তারপর হটাৎ………..
_ আমি আসতে পারি?
তাকিয়ে দেখি চাচা খাবার নিয়ে দরজার সামিনে খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে দাড়িয়ে। তারপর আমি বললাম,
_ আরেহ…চাচা তুমি এসো ভিতরে এসো।
_ হুম। খাবারটা নে। আর এই টাকাগুলো রাখ। তুই তো মাত্র চাকরী পেলি। হাতে তো আর টাকা নেই। এই গুলো রাখ। আর ফেরত দেওয়ার চেস্টা করলে মার খাবি। (আমার হাতে টাকার পেকেট দিয়ে)
_ আচ্ছা। (টাকা আর প্লেট টা নিলাম)
_ হুম। আর সাবধানে যাবি।
_ আচ্ছা। চাচা।
_ আসিরে মা। ভালো থাকিস!
_ আচ্ছা বাবা। তুমিও ভালো থেকো….(লাবণি)
_ আচ্ছা। খোদা হাফেজ। (চাচা)
_ খোদা হাফেজ….(আমরা একসাথে)
তারপর চাচা চলে গেলো। চাচা চলে যেতেই লাবণি বলল, .
_ রাকিব…খুব খুদা লেগেছে তো…
_ হুম। হাত ধুয়ে এসো।
_ তুমি হাত ধোও….
_ কেন? (হালকা অবাক হয়ে)
_ বারে…..আমি কাটা বাছতে পারি না তো। যদি কাটা গলায় ঢুকে যায়? তখন?
_ ওওওওওওও……তাও তো ঠিক।
_ হুম। যাও হাত ধুয়ে এসে আমাকে খাইয়ে দাও।
_ হুম।
তারপর প্লেট রেখে আমি হাত ধুতে গেলাম। হাত ধুয়ে এসে লাবণিকে খাইয়ে দিতে লাগলাম!
_ ওই তোমার কতক্ষন লাগবে? ৫০ মিনিট তো হয়ে গেলো।
_ আর….একটু।
_ ধুর…বাবা। এতক্ষন যে কি করে কে যানে?
তারপর অপেক্ষা করতে লাগলাম। পাক্কা ৫০ মিনিট হয়ে গেলো মহারানির কোন খবর নেই। তারপর ১০ মিনিট পরে মহারানি বের হল। লাবণিকে দেখে আমি আবার ক্রাস নামক বাঁশ খেলাম। লাবণি একটা কালো শাড়ী পরেছে। আর মেকাপ করে নি। তাহলে এত দেড়ি হল কেন? তাই একটু জিজ্জাসা করলাম।
_ তোমার এত দেরি হল কেন? (আমি)
_ দেড়ি হল মানে? (লাবণি)
_ মানে সাজলা না কিন্তু এত দেড়ি হল কেন?
_ আরে….আমি শাড়ি পড়তে পারি না। আর ইউটিউব দেখে পড়তেই তো এত দেড়ি হল!
_ ওহ। চলো তাহলে!
_ হুম চল।
তারপর আমরা বাস স্টেন্ড এ গেলাম। গিয়ে দেখি রাইসা অপেক্ষা করছে। তারপর আমরা বাসে ওঠলাম। আমি আর লাবণি, রাইসা আর তার বাবা। ওর বাবা কেন আসলো বুঝলাম না। আমি আর লাবণি এক সিটে যাচ্ছি। যেতে যেতে কাল সকাল হয়ে যাবে। আমি বাসে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম থেকে ওঠতেইঈ আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারণ আমি লাবণিকে জড়িয়ে ধরে আছি আর লাবণি আমাকে। তারপর লাবণিকে ছাড়িয়ে নিলাম। লাবণিকে ছাড়াতেই লাবণি জেগে গেলো।
লাবণি আমাকে বলল,
_ পানি খাবো রাকিব। পানি দাও। (লাবণি)
তারপর বেগ থেকে পানি বের করে লাবণিকে দিলাম। লাবণি পানি খেয়ে আমাকে আবার জড়িয়ে ধরলো। আমি পানির বোতল রাখতে যাবো এমন সময় সময় লাবণি আমাকে টান দিয়ে বসিয়ে বলল,
_ এ দেখ। আবার যদি ওঠিস। তাহলে মার খাবি কুত্তা। চুপচাপ বসে থাক। (রেগে তুই করে বলল)
_ আচ্ছা।
লাবণি রেগে গিয়েছে তাই আর কিছু বললাম না। বসে পড়লাম। আর লাবণিও আমায় জড়িয়ে ধরলো। লাবণির শরির থেকে একটা মিস্টি আসছে। সেই গন্ধ আমাকে!
পরের দিন সকাল ১০টায়…..
রাইসার ডাকে ঘুম ভাংলো। ঘুম থেকে ওঠতেই রাইসা বলল আমরা এসে পড়েছি। তাই লাবণিকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে বাস থেকে নামলাম। তারপর লাবণির মুখ ধুইয়ে দিয়ে আমার মুখও ধুলাম। পরে রাইসা অটোতে করে ওদের বাসায় নিয়ে এলো। বাসায় ঢুকে সবার সাথে পরিচিত হলাম। তারপর রাইসা আমাকে আর লাবণিকে পাশাপাশি আলাদ রুম দেখিয়ে দিলো।
তারপর ঘরে এসে ফ্রেস হয়ে নিলাম। পরে একটা ঘুম দিলাম। তারপর হটাৎ পানির ছিটা আমার মুখে পড়ায় আমার ঘুম ভেংগে গেলো। তারপর তাকাতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। লাবণি শাড়ি চেঞ্জ করেছে। মিস্টি রংয়ের একটা শাড়ি। আর হালকা মেকাপ। এক কথায় মিস্টি মেয়েটাকে মিস্টি পরির মত লাগছিলো। আমার এই ভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে হয়তো ও লজ্জা পাচ্ছিলো। তাই আবার আমার মুখে পানি মেরে দৌড়ে পালালো!
লাবণি আমার মুখে পানি মেরে আবার দৌড়ে পালালো। আমি একটু হাসলাম। মেয়েটা একদিনেই কেমন করে চাঞ্চল্য হয়ে গিয়েছে। ভালোই লাগছে।
ফ্রেস হয়ে বাহিরে বের হলাম। কাল গায়ে হলুদ তাই আজ সব কিছু গুছাবার তোড়জোড় চলছে। আমি আনন্দের। সহকারেই তা উপভোগ করতে লাগলাম।
আস্তে আস্তে বিয়ের দিন এসে পড়লো। রাইসা আর তার বর আবিরের বিয়ে হয়ে গেলো। বিয়েতে যখন রাইসা “কবুল” নামক (3 golden word’s) বলছিলো তখন ওর চোখে পানি দেখেছিলাম। হয়তো চিন্তা করছিলো ছেলেটা কেমন বিয়ের পরে ওর সাথে মেচ করবে কিনা? বা ছেলেটা ভালো হবে কিনা? অবশ্য আমি আমার সোর্স আর মাধ্যমে খবর নিয়েছিলাম। ছেলেটা ভালো। শুধু ভালো না খুব ভালো। সেটা অবশ্য রাইসাকে বলেছিলাম কিন্তু নিজের তো চিন্তা হয়। তাই হয়তো করছিলো।
বিয়ে শেষ হয়ে গেলো। রাইসাকে নিয়ে চলে গিয়েছে। যাওয়ার সময় রাইসা শুধু এতটুকুই বলেছিলো আমাকে “লাবণির চোখের একফোট পানিও যেন মাটিতে না পড়ে। আর যদি পড়ে তাহলে দেখো কি করি আমি”। । আমি তখন এমন করলাম যে রাইসা কান্নার মাঝেও হেসে দিয়েছিলো। এমন কি শুধু রাইসা না। যারা যারা এই খানে ছিলো তারা আমাদের কথা না শুনলেও আমার মুখ দেখেও হেসে দিয়েছিলো। তারপর রাইসা লাবণির কানে কানে কি যেন বলল। তারপর চলে গেলো।
রাইসার বিয়ের ১ দিন পর আমরাও চলে আসলাম। তারপর থেকে আবার সেই পুরোনো রুটিনে চলতে লাগলাম। সপ্তাহে ১ দিন কলেজে যাবা। লাবণির সাথে ঘুরা, রাতে কথা বলা, মেসেজিং করব, শেয়ারিং, কেয়ারিং, মজা, মাস্তি, আড্ডা এভাবেই চলে গেলো ২ টা বছর।
২বছর পর…
আজ অফিসে যাবার জন্য বের হব এমন সময় ফোন বেজে ওঠলো। ফোনটা তুলে দেখি চাচার ফোন। তারপর ফোনটা ধরলাম…….
_ আসসালামু আলাইকুম চাচা। (আমি)
_ ওয়ালাইকুম ….. তো ২ বছর তো হয়ে গেলো। কি ভুলে গেলি নাকি?
_ না। চাচা ভুলি নাই। মনে আছে।
_ হারামজাদা। চাচা না বাবা বলবি বাবা।
_ আচ্ছা। বাবা বাবা বাবা ।
_ হুম। আজ রাতে বিয়ে বড় করে করবো না। বাসায় কাজি ডেকে বিয়ে পড়াবো। আর এতিমখানা আর মসজিদে মিলাদ পড়িয়ে দিবো।
_ হুম। চাচা এটাই ভালো হবে।
_ আবার চাচা?
_ নাহ। থুক্কু বাবা।
_ হুম। আল্লাহ হাফিজ।
_ আল্লাহ হাফিজ।
ফোনটা কেটে দিলাম। চাচার প্রতি সম্মান আমার আবার বেড়ে গেলো। কারণ চাচা লোক খাওয়ানোর মত অযথা টাকা নস্ট করার চেয়ে। এতিমখানায়। দিচ্ছে। সেলিউট চাচা।
বিয়েটা হয়ে গেলো। লাবণিকে নিয়ে আমার বাসায় আসলাম। আর ভাবছেন লাবণি আগে থেকেই জানতো? আসলে তা না। লাবণিকে চাচা থুক্কু বাবা বলেছিলো আজকেই। আমি জানি লাবণি আমায় ভালোবাসে তাই না করবে না। কিন্তু লাবণিকে বাবা অনেক কস্টে রাজি করিয়েছিলো। লাবণি যখন রাজি হচ্ছিলো না। তখন বাবা নাকি বলেছিলো যে ২ বছর আগে থেকেই ঠিক করা। তখন নাকি লাবণি রাগি গলায় বলেছিলো “আমি রাজি। আর রাকিবের খবর আছে”। বাবা আমাকে এই নিয়ে সাবধান করেছিলো। লাবণির কিছু বান্ধবি এসেছিলো লাবণির সাথে। তারা লাবণির সাথে কথা বলে শেষ করে। যাবার সময় আমাকে বলল,
_ “বিড়ালকে আপনার মারতে হবে। আজকে বিড়লাই আপনাকে মেরেদিবে”
এই বলে ওর হাসতে হাসতে চলে গেলো। আমি ওদের এই কথার মানে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। তারপর আমি সবার আমার বাঁশ উফ সরি বাসর ঘর। আজ আমার জন্য যম এর ঘর বললেও ক্ষতি নেই। লাবণি যেই ভাবে ফায়ার হয়ে আছে। তাতে করে ফায়ার সার্ভিস এসেও ওর আগুন নিভাতে পারবে কি না সন্ধেহ আছে। তারপর ঢুকলাম। ঢুকতেই আমি অবাক। একি বউ কই? আমার পাশে তাকাতেই দেখি লাবণি আর্জেন্টিনার জার্সি আর টাওজার পরেছে। আর টাওজার টাও হাঁটু পর্যন্ত। ওকে এই অবস্থায় দেখে আমার নিজের ও লজ্জা লাগছিলো। আমাকে দেখেনি। আর যখন আমাকে দেখলো তখন বলল,
_ ওই….কি হইসে? এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? (লাবণি)
_ বাবু হইসে…থুক্কুক্কু….কিছু না। (এই রে কি বলে দিলাম)
_ বাবু? কোথায়? এখন ও ইই হল না আবার বাবু। হুহ। আর তোর কপাল টা আজ ভালো। যে আর্জেন্টিনার খেলা আছে। না হলে তোর খবর ছিলো। যাই হোক, এখন লক্ষি ছেলের মত আইস্ক্রিম এনে দে। খাবো আর খেলা দেখবো।
_ রাত ১টা বাজে আইস্ক্রিম কোথায় পাবো?
_ কিহ? রাত ১টা? খেলা তো শেষ। উহুহুহুহুহুহুহুহুহুউউউউউউউউউউউউ…..আব্বব্বব্বব্ববুউউউউউউউ……….খেলা শেষ……… আমাকে আগে বললা না। কেন উহুহু…….(কান্না জুড়ে দিলো)
_ আমার মনে ছিলো না। তো সরি।
_ তুমি ইচ্ছা করে বলনি। উহুহুহু…..(কান্না করতে করতে)
_ সত্যিই…. বলছি। আমিও তো আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। আর কাল তো রিপিট দিবেই। তখন না হয় দেখে নিবো। (অবস্থা বেগতির দেখে বললাম)
_ তুমি। চুপ থাকো। একটা কথাও বলবা না। আমার খুদা লেগেছে। বিরিয়ানি আন। আর আইস্ক্রিম আনো।
_ বিরানির সাথে আইস্ক্রিম?
_ হুম। যাও।
_ আচ্ছা।
হি হি হি। আইস্ক্রিম তো ফ্রিজে অনেক আছে। আর আসার সময় বিরানির প্যাকেট ও এনেছি। বেঁচে গেলাম। হুহ। তারপর আইস্ক্রিম আর বিরানির প্যাকেট নিয়ে ঘরে গেলাম। ঘরে যেয়ে একটু শব্দ করতেই লাবণি ভয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠলো। তারপর আমাকে দেখে বলল,
_ তু….তু….মি? এত তারাতারি কিভাবে আসলা? (লাবণি)
_ হি হি হি। নিচে যাবো কেন? বাসায় ই তো সব ছিলো।
_ কুত্তা, । আগে আনবা না আরও। কত ক্ষুদা লেগেছে। সারাদিন রাগে কিছুই খাই নি।
আমি আর কথা না বলে বাড়িয়ে দিলাম খাবারগুলো। লাবণি টপাটপ খেতে শুরু করলো। আমি যে তাকিয়ে তাকিয়ে হাসছি তার কোন খেয়াল নেই। হটাৎ খাওয়া থামিয়ে আমার দিকে তাকালো। আমি সাথে সাথে হাসি বন্ধ করে দিলাম। না হলে খবর আছে। কিন্তু ও মনে হয় দেখে ফেলেছে। আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল, .
_ তুমি খাবা না? (লাবণি)
_ হুম। (আমি)
_ কখন?
_ তুমি খেয়ে নাও। তারপর।
_ না। তা হবে না। এখন থেকে আমরা একসাথে খাবো।
_ আচ্ছা।
_ হইসে। এখন এখানে আমার সামনে বস। আমি তোমাকে আর তুমি আমাকে খাইয়ে দাও।
_ জু। হুকুম রানী।
তারপর লাবণি আমাকে আর আমি লাবণিকে খাইয়ে দিলাম। খাওয়া শেষ করার পর লাবণি গেলো প্লেট ধুতে। আমি অবশ্য না করেছিলাম কিন্তু শোনেনি। প্লেট ধুতে যাবেই। প্লেট ধুয়ে লাবণি ঘরে আসলো। তারপর মাথাও ওড়না দিলো। আমি আগে থেকেই দাড়িয়ে ছিলাম। লাবণি আমাকে সালাম করলো। আমি ওকে ওঠাতেই ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আর কাদতে লাগলো।
আমি ওর কান্না দেখে ওকে বললাম,
_ কাদঁছো কেন? (আমি)
_ তুমি। আমাকে কেন বিয়ে করলে রাকিব? তুমি আরও ভালো মেয়ে পেতে। কেন নিজের জিবনটা নিস্ট করলা? কেন? (কেঁদে কেঁদে বলল)
_ ভালোবাসি বলে! (মাথাটা নিচু করে বললাম)
_ হাহাহা… ভালোবাসো? কেন? কি আছে আমার? তোমায় দেবার মত কিছু নেই আমার মাঝে! (কান্নার বেগ বেড়ে গেলো)
_ আছে। তোমায় ওই মনটা আছে। ওই চোখ গুলো আছে। ওই মায়াবী চোখের মায়াবীনিকে চাই। তোমার মিস্টি মনটা চাই। আমার তোমাতে চাই আমাতে। আমার রাজ্যের রাণির জায়গাটা খালি তো। তুমি এসে পূর্ণ কর সেই জায়গা। তোমায় ছাড়া যে সেখান কার অধিকার আর কারও নেই লাবণি। ভালোবাসি। ভালোবাসি বলেই তোমাকে চাই। মন পিঞ্জরায় খুব যতনে সাজিয়েছি তোমায়। ভালোবাসি। (হাঁটু গেড়ে বসে বললাম)
_ আমাকে কস্ট দিবা নাতো? আমাকে অনেকগুলা ভালোবাসবা তো? (আমাকে উঠিয়ে বলল)
_ কস্ট দিবো না। আর এত্তত্তত্তত্তত্তত্তত্তত্তত্ত্রগুলা ভালোবাসবো তোমায়। (দুই হাত বাড়িয়ে বললাম)
_ ভালোবাসি তোমায় রাকিব। (জড়িয়ে ধরলো)
_ আমিও ভালোবাসি তোমায় লাবণি।
আমিও জড়িয়ে নিলাম লাবণিকে আমার ভালোবাসার চাদরে।
লেখক: রাকিবুল হাসান
সমাপ্ত
(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “ভালোবাসার সাহসী গল্প” টি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)
আরো পড়ুন – মাই ওয়াইফ ইস এ ল্যাডি গ্যাংস্টার – বাংলা লাভ স্টোরি