রোমান্টিক লাভ স্টোরি – সিনিয়র আপু যখন বউ – পর্ব ৭: প্রেম না হতেই যেন ব্রেকাপ হয়ে গেল, আমার কিছু খোঁটা মারা কথায় রিমঝিম আপু এবার প্রচণ্ড ক্ষেপে গেছেন। তবে কি আমাদের সব সম্পর্ক ভেস্তে চলে যাবে? চলুন দেখি কি হয়?
চোখের ভাষায় ভালবাসা
একা চলা কোনো মায়ায় না জড়ানো। এর ঠিক তিনদিন পর মাঠের কোণায় বসে নোট করছিলাম। সাথে একটা সিগারেট খাচ্ছিলাম।
তখম দেখলাম, রিমঝিম আপুর গাড়ি এসে মাঠের মাঝখানে দাঁড়ালো।
রিমঝিম আপু গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলো।
হয়তো আমাকে দেখতে পারে নি।
আমি নিজের মতো নোট করতে লাগলাম।
কিছুক্ষণ পর সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি রিমঝিম আপু আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে চোখের নিচে কালো দাগ। রিমঝিম আপুকে দেখে একবার সিগারেটটা ফেলে দিতে চাইলাম।
কিন্তু কি যে মনে হলো ফেলে না দিয়ে মাথাটা নিচু করে নোট করতে লাগলাম।
রিমঝিম আপু সেখান থেকে চলে গেলো।
আমি একটু পর বাসায় চলে আসলাম।
এরপর প্রতিদিন কলেজে গেলাম রিমঝিম আপুকে একটু আড়াল থেকে দেখার জন্য।
প্রতিদিন নিজের মনকে বলি কাল আর যাব না। কিন্তু পরেরদিন ঠিকি কলেজে চলে যাই।
রিমঝিম আপু কলেজে আসে। চুপচাপ মনমরা হয়ে বসে থাকে।
রনিকে দেখি তার সাথে বসে থাকতে। প্রতিদিন কলেজে গেলে দিশা মেয়েটা কথা বলতে আসবে। রিমঝিম আপু মাঝে মাঝে আমার সাথে ওকে কথা বলতে দেখে তাকিয়ে থাকে।
হয়তো মেয়েটাকে আমার সাথে কথা বলতে নিষেধ করতে চায় আমি খারাপ হয়তো সেই জন্য। আমিও যতটা সম্ভব দিশার থেকে দূরে থাকি।
এভাবে ২০ দিন কেটে গেলো। আজ পাঁচ দিন হলো আর কলেজে যাই না।
আজ কলেজে যেতে কেনো জানি খুব মন চাইলো। ব্যাগটা নিয়ে কলেজে গেলাম।
কলেজে গিয়ে চোখ দুটো কাকে জানি খুজছিলো। কিন্তু তাকে খুঁজে পাচ্ছিলো না।
থ্রিলিং সময়
কলেজের চত্ত্বরে বসে ছিলাম।
একটু পর একটা পুলিশের গাড়ি এসে দাঁড়ালো।
গাড়ি থেকে একজন পুলিশ অফিসার নেমে এসে চারদিকে দেখতে লাগলো। তারপর আমাকে দেখে আমার দিকে আসতে লাগলো।
বুকের ভেতরটা কেমন জেনো করছিলো। মনে হচ্ছিলো, দৌড় দিয়ে পালিয়ে যাই। কিন্তু আমি তো কোনো দোষ করি নি তাই চুপচাপ বসে রইলাম। পুলিশ অফিসারটি আমার কাছে আসলো।
পুলিশ অফিসারঃ তোমার নাম রিয়াদ?
আমিঃ জি, স্যার।
পুলিশ অফিসারঃ তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে চলো।
আমিঃ কিন্তু কেন আর আপনি কে?
পুলিশ অফিসারঃ আমি রিমঝিমের ভাইয়া।
আমিঃ ওহ কিন্তু কেন যাব?
রিমঝিম আপুর ভাইয়াঃ গেলেই বুঝতে পারবে।
আমিঃ কিন্তু কোথায়?
রিমঝিম আপুর ভাইয়াঃ আমাদের বাসায়।
আমিঃ আচ্ছা, চলুন।
রিমঝিম আপুকে দেখার খুব ইচ্ছে করছিলো। আর মনে মনে খুব ভয় হচ্ছিলো, রিমঝিম আপু কি এমন করলো যে রিমঝিম আপুর ভাই আমাকে তাদের বাসায় নিয়ে যাচ্ছে।
কিচ্ছুক্ষণ পর রিমঝিম আপুদের বাসায় গিয়ে পৌছালাম।
বাসার ভিতরে গেলাম। রিমঝিম আপুর ভাইয়া আমাকে বসতে বলে কোথায় জেনো গেলেন।
আমি সোফায় বসে রইলাম। কিচ্ছুক্ষণ পর দুইজন মহিলা আসলেন।
বাবার আকুতি
একটু পর রিমঝিম আপুর ভাইয়া আর একজন লোক উপর থেকে নেমে আসলেন?
হয়তো মহিলাদের মধ্যে একজন রিমঝিম আপুর মা আর আরেকজন ভাবি আর রিমঝিম আপুর ভাইয়ের সাথে লোকটি হয়তো তার বাবা।
সবাই আমার সামনে বসলেন। আমি ভয়ে কুঁকড়ে মুকরে যাচ্ছিলাম।
রিমঝিম আপুর আব্বুঃ তাহলে তুমি রিয়াদ। (রিমঝিম আপুর আব্বু)
আমিঃ জি কিন্তু আপনারা আমাকে চিনেন কেমন করে?
রিমঝিম আপুর আব্বুঃ রিমঝিম বলেছে এমনকি তোমার ব্যাপারে সব জানি আমরা। তুমি কী জানো যেদিন তুমি রিমঝিমের বার্থেডে তে আসুনি সেদিন ও বাসার সব জিনিসপত্র ভেংগে ফেলে।
আমিঃ এত রাগ। (মনে মনে)
রিমঝিম আপুর আব্বুঃ তোমার কথা ও প্রত্যেকদিন আমাদের কাছে এসে বলতো। আমার মেয়েটা জীবনে যা কিছু চেয়েছে তাই এনে দিয়েছি। কিন্তু শেষ মেষ যা চাইলো তা আমার এনে দেওয়ার ক্ষমতা নেই।
আমিঃ কি চেয়েছে আপু?
রিমঝিম আপুর আব্বুঃ শুধু তোমাকে চেয়েছে।
আমিঃ আমাকে মানে?
রিমঝিম আপুর আব্বুঃ হুম, তোমাকে। আমার মেয়েটা যে তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। ও যখন আমাকে এসে বললো, ও তোমাকে ভালোবাসে তখন ও চোখে মুখে খুশি দেখে আমি বেশ অবাক হই। কারন আমি এতটা খুশি ওকে কখনোই দেখি নি। তোমার সাথে কিছুদিন আগে ঝগড়া হওয়ায় বাসায় এসে কান্নাকাটি করে। ভালো মতো খাওয়া করে না। শুধু বলে রিয়াদকে এনে দেও। দয়া করে আমাদের ফিরিয়ে দিও না। আমার মেয়েটা তোমাকে ছাড়া যে মরে যাবে।
আমিঃ আরে কি করছেন আপনি আমার গুরুজন। আপনার মাথা নত করা শোভা পায় না। কিন্তু আমার মতো একটা অনাথ ছেলের কাছে আপনার মেয়ে দিবেন আরেকবার ভেবে দেখুন।
রিমঝিম আপুর আব্বুঃ আমার মেয়ের খুশিতেই আমার খুশি।
আমিঃ আচ্ছা, আপনারা যা ভালো বোঝেন। কিন্তু রিমঝিম আপু কোথায়?
রিমঝিম আপুর ভাবিঃ উপরে আছে যাও। প্রথম রুমটাই ওর।
দুষ্টু মিষ্টি প্রেম
রিমঝিম আপু রুমে গেলাম। দরজা খোলাই আছে কিন্তু জানালা সব বন্ধ।
ঘরের ভিতরটা কেমন অন্ধকার হয়ে আছে। রিমঝিম আপু ঘুমিয়ে আছে।
চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে সারা রাত হয়তো ঘুমায় না।
আমি চুপচাপ গিয়ে রিমঝিম আপুর পাশে শুয়ে পরলাম।
একটু পর রিমঝিম আপুর ঘুম ভেংগে গেলো।
আমার দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আছে। কিছু বলতে যাবে। তার আগেই রিমঝিম আপুর গোলাপি ঠোঁট দুটোর সাথে আমার ঠোঁট এক করে দিলাম।
রিমঝিম আপু ছটফট করতে লাগলো। কিন্তু আমি ছাড়বার পাত্র নই।
কিছুক্ষণ পর রিমঝিম আপু চুপচাপ হয়ে গেলো। তখন রিমঝিম আপুকে ছেড়ে দিলাম। রিমঝিম আপুকে ছেরে দেওয়ার সাথে সাথে,
ঠাসসসসসস……..
রিমঝিম আপুঃ তোর সাহস কেমন করে হয় আমাকে কিস করার। আর তুই এখানে কি করছিস?
আমিঃ চুপ।
রিমঝিম আপুঃ কি হলো কথা বলছিস না কেনো এখানে কি করছিস?
আমিঃ আমার বউয়ের কাছে আমি আছি কার কি?
রিমঝিম আপুঃ বউ মানে?
আমিঃ বউ মানে বউ।
রিমঝিম আপুঃ আমি কারো বউ না!
আমিঃ ওহ তাহলে তুমি আমাকে ভালোবাস না।
রিমঝিম আপুঃ না, আমি রনিকে ভালোবাসি।
আমিঃ কি মেয়েরে বাবা এতো রাগ আর অভিমান। (মনে মনে)
আমিঃ ওহ আচ্ছা ঠিক আছে। আমি তো ভাবছিলাম, তুমি আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু তুমি যখন আমাকে ভালোবাস না তাহলে কি আর করার। আমি দিশার কাছে যাই। চলবে….
পরের পর্ব- রোমান্টিক লাভ স্টোরি – সিনিয়র আপু যখন বউ – শেষ পর্ব