রোমান্টিক লাভ স্টোরি ৬

রোমান্টিক লাভ স্টোরি – সিনিয়র আপু যখন বউ – পর্ব ৬

রোমান্টিক লাভ স্টোরি – সিনিয়র আপু যখন বউ – পর্ব ৬: রিমঝিম আপুর উপর আমারও এখন অনেক রাগ, অভিমান হয়। ভালবাসলে বোধয় এরকমি হয়, কেমন যেন এক অদ্ভুত না পাওয়ার অস্থির অনুভুতিতে ভুগছি। দেখা যাক আজ কি হয়?

ভালবাসার ঝড়

ফোন বের করার সাথে সাথে রিমঝিম আপু ফোন দিয়েছে।

আমিঃ হ্যালো।

রিমঝিম আপুঃ কই তুই?

আমিঃ ব্রিজের উপর বসে আছি। কেন? (আমি)

রিমঝিম আপুঃ দরকার আছে, ওখানেই থাক। আমি আসছি।

বলেই রিমঝিম আপু ফোনটা কেটে দিলো।

তারপর দিশাকে নাম্বার দিয়ে ওর সাথে কথা বলছিলাম।

কথা বলার ইচ্ছে করছিলো না। কিন্তু মুখের উপর কেমন করে চলে যেতে বলি। নিজে থেকে কথা বলতে এসেছে চলে যেতে বললে ওর সম্মানে লাগবে। কিন্তু কথা বলতে খুব বিরক্ত লাগছিলো।

হটাৎ রিমঝিম আপুর গাড়ি এসে দাড়ালো।

রিমঝিম আপু বাইরে বেরিয়ে আসলো। আমাকে মিমের সাথে দেখে মুখের ভাব বদলে গেলো। আমার কাছে এসে বলল,

রিমঝিম আপুঃ চল, দরকার আছে।

আমিঃ দাঁড়াও একটু।

আমি দিশার সাথে আরেকটা কথা বলার আগেই রিমঝিম আপু আমাকে টেনে গাড়ির ভিতর বসালো আর গাড়ি চালাতে লাগলো।

রিমঝিম আপুঃ তোকে না বলছি, কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবি না।

আমিঃ আমি বলি নি আর ও নিজে থেকেই কথা বলতে এসেছিলো।

রিমঝিম আপুঃ তারপরেও তুই কথা বলবি না।

পছন্দের ঝুমকা

রিমঝিম আপুর কাছেই আসলে কেমন যেন দূর্বলতা কাজ করে!

আমিঃ কোথায় যাচ্ছি আমরা?

রিমঝিম আপুঃ মার্কেটে যাবো।

আমিঃ কেন?

রিমঝিম আপুঃ কাল আমার জন্মদিন তাই ড্রেস কিনবো। আর তুই সেটা পছন্দ করে দিবি।

আমিঃ আমি পছন্দ করে দিব কেন? তোমার হবু বর পছন্দ করে দিবে। (শুকনো হাসি দিয়ে আমি)

রিমঝিম আপুঃ খোটা মারা কথা গেলো না তোর।

আমিঃ খোটা মারার কথা আবার কখন বললাম যেটা সত্যি সেটাই বললাম।

রিমঝিম আপু আর কোনো কথা বললো না। মার্কেটে গিয়ে রিমঝিম আপু ড্রেস দেখতে লাগলো। একটা নীল কালারের ড্রেস দেখে খুব পছন্দ হলো।

রিমঝিম আপু হয়তো সেটা লক্ষ্য করলো।

তাই ড্রেসটা কিনলো।

রিমঝিম আপু বিল দিতে দিতে আমি একজোড়া পায়েল আরেক জোড়া ঝুমকো কিনলাম।

তারপর সেগুলো চুপ করে রিমঝিম আপুর ব্যাগে রেখে দিলাম।

রিমঝিম আপু আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিলো। আমি বাসার ভিতর ঢুকতে যাব তখুনি আবার ডাক দিলো।

আমি রিমঝিম আপুর কাছে গেলাম।

রিমঝিম আপুঃ শোন, কাল আমি কলেজে যাব না। কিন্তু সন্ধ্যায় তোকে নিতে রনি আসবে। তখন ওর সাথে আমার বাসায় চলে আসবি। আর তুই না আসলে কাল সত্যি তোর কপালে মাইর পরবে।

কথাটা বলার পরেই রিমঝিম আপু চলে গেলো।

নীল পরি লীলাঞ্জনা

পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কলেজে গেলাম না।

গিফট তো রিমঝিম আপুকে দিয়েই রেখেছি তাই যাওয়ার কোনো প্রয়োজন হয় না। আর আমি ওর কাছে গিয়ে মায়া বাড়াতে চাই না।

যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে।

আমি জানি, রিমঝিম আপু গাড়ি পাঠাবে আমাকে নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি যাব না।

তাই সন্ধ্যা লাগতে বাইরের থেকে গেট লাগিয়ে দিয়ে পিছনের একটা ছোট দরজা আছে ওটা দিয়ে বাসায় ঢুকলাম। যাতে যে কেউ আসলে বুঝতে না পারে আমি বাসায় আছি।

সকাল ১০ টার দিকে বাড়ির সামনে গাড়ির আওয়াজ পেলাম।

(আমার ঘরের লাইট সব সময় বন্ধই থাকে। অন্ধকার কেন জানি খুব ভালো লাগে। তার কারণ আজও জানি না। অন্ধকারে আলাদা একটা অনূভুতি আছে)

জানালা দিয়ে দেখলাম রনি গাড়ি থেকে নামলো।

তারপর বাসার দিকে তাকালো।

তালা ঝুলানো দেখে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।

ফোনটাও অফ করে রেখেছি যাতে কেউ ফোন দিতে না পারে। বিছানায় গিয়ে কানে হেড ফোন লাগিয়ে দিয়ে গান শুনতে লাগলাম।

রিমঝিম আপু মনে হয় রনির সাথে জন্মদিনে খুব মজা করছে। করবেই না কেন কয়েক মাস পর তাদের বিয়ে। কেনো যে আমি রিমঝিম আপুকে ভালোবাসতে গেলাম। খুব ঘুম পাচ্ছিলো।

তখুনি আবার গাড়ির আওয়াজ পেলাম।

জানালার কাছে গিয়ে দেখি রিমঝিম আপু গাড়ি থেকে বের হয়ে আসলো।

রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের আলোতে রিমঝিম আপুকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

নীল ড্রেস এ একদম পরীর মতো লাগছিলো। কিন্তু এই পরীতো ধরা ছোয়ার বাইরে।

রিমঝিম আপু ফোন হাতে নিয়ে ফোন দিতে লাগলো হয়তো বা আমাকে ফোন দিচ্ছিলো।

কিচ্ছুক্ষণ পর ফোনটা রাস্তায় জোরে ছুরে মারলো। তারপর গাড়ি করে চলে গেলো।

আমি গিয়ে শুয়ে পরলাম। পরেরদিন কলেজে গেলাম। কেন জানি আজ কলেজে যাওয়ার খুব ইচ্ছে করলো।

ঝগড়াটে ভালবাসা

কলেজে ঢুকতেই দিশার সাথে দেখা।

দিশাঃ কেমন আছো?

আমিঃ ভালো, তুমি।

দিশাঃ ভালো। কাল কলেজে আসতে বললাম আর আজ আসছো!

আমিঃ আসলে কাল একটু কাজ ছিলো তাই আসতে পারি নি।

দিশাঃ ও তা ফোনটা অফ কেনো?

আমিঃ চার্জ ছিলো না। আর চার্জে দেওয়ার কথা মনেও ছিলো না।

দিশার সাথে কথা বলতে বলতে রিমঝিম আপুর গাড়ি চলে আসলো। আমি দিশার সাথে কথা বলে মাঠের এক কোণায় গিয়ে ফোন টিপতে লাগলাম।

হটাৎ কারো ছায়া আমার উপর পরলো। তাকিয়ে দেখলাম রিমঝিম আপু। আমি উঠে দাঁড়ালাম।

আমিঃ আপু, তুমি কখন আসলে?

রিমঝিম আপুঃ কাল কই ছিলি?
আমিঃ ল্যাপটপটা সার্ভিসিং করতে গিয়েছিলাম আসতে আসতে দেরি হয়ে যায়।

ঠাসস, ঠাসস….

রিমঝিম আপুঃ মিথ্যা কথা বলবি না। তুই কি মনে করিস আমি তোকে জানালার কাছে দেখি নি।

আমি চুপ হয়ে আছি।

রিমঝিম আপুঃ তুই আমার সাথে এমন টা করলি। কতো আশা নিয়ে বসে ছিলাম আমি তোর জন্য। আজ থেকে তুই আমার সাথে কথা বলবি না।

আমিঃ সেটাই হয়তো ঠিক হবে। আপনার সাথে কথা বললে হয়তো আপনার হবু বর খারাপ মনে করতে পারে। আর আপনাদের সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা আসতে পারে। তাই আমার মতো একটা বখাটে খারাপ ছেলের সাথে না মেশায় ভালো।

রিমঝিম আপু কিছু বলছে না। রিমঝিম আপুর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, চোখ দিয়ে পানি বয়ে পরছে।

কারণটা এখনো অজানা। রিমঝিম আপু আর কিছু না বলে চলে গেলো। আমি আর ওখানে না থেকে বাসায় চলে আসলাম।

আবার আগের মতো হয়ে গেলাম।

সেই কলেজে গিয়ে আগের মতো সিগারেট খাওয়া কারো পরোয়া না করা। একা চলা, কোনো মায়ায় না জড়ানো।

তিনদিন পর মাঠের কোণায় বসে নোট করছিলাম, সাথে একটা সিগারেট খাচ্ছিলাম।

তখন দেখলাম…চলবে….

পরের পর্ব- রোমান্টিক লাভ স্টোরি – সিনিয়র আপু যখন বউ – পর্ব ৭

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *