শিশিরের বিন্দু – Best love story bd

শিশিরের বিন্দু – Best love story bd: বিন্দু ঘুম থেকে জেগে দেখে সে শিশির জরিয়ে ধরে আছে। তারাতারি সরে এলো সে বুঝেছে শিশির না সে নিজেই ধরে রেখেছিল সেটি যে কেউ দেখলে বুঝতে পারবে শিশিরের হাত বিন্দু কে ধরে বিন্দু ধরে ছিল।


পর্ব ১

হঠাৎ আমার পাশে কেউ বসে বলতে লাগল, আন্টি একটু চেপে বসবেন আমার সমস্যা হচ্ছে? আন্টি বলাতে রেগে তাকালাম আমি কোনদিন দিয়ে আন্টি অসভ্য ছেলে রেগে উঠে দাড়িয়ে বলতে লাগলাম, উঠুন আর কিছু বলতে পারলাম না ঝাকিতে ছেলেটির কোলের উপর পরে গেলাম ভুল বশত আমার মুখ গিয়ে টাচ করলো ছেলেটির ঠোটে। দুজনের কেউই এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না হা হয়ে তাকিয়ে আছি দুজন দুজনের দিকে।

~ এটা কি হলো;
~ আপনার জন্য শুধু মাএ আপনার জন্য এমন একটা,
বলেই কেদে দিলাম। ছেলেটা হা করে তাকিয়ে আছে আমার কান্নার দিকে।
~ আপনি কাদছেন কেন?
~ কাদবো না আপনি জন্য আমার সব শেষ কতো আসা ছিলো প্রথম চুমু টা আমি আমার বরকে দেবো। সেটা আপনার জন্য হলো না।

শিশির তো হতবাক হয়ে তাকিয়ে কথা শুনছে এই মেয়ে বলে কি এমন কথা কেউ বলে কিনা জানা নেই।
বিন্দু এখন ও শিশিরের কোলেই বসে আছে কাদছে আর নাক টানছে হঠাৎ নাক ঝেরে শিশিরের শাটে মুছলো।
শিশির সঙ্গে সঙ্গে বিন্দুকে কোলে থেকে ঠাস করে ফেলে দিয়ে।

~ ছি ছি ছি কি বাজে মেয়ে? ছি কি করলেন এটা আপনি, (নাক ছিটকে)
হঠাৎ পরে যাওয়ায় বিন্দু কান্না থামিয়ে দিলো সে পরলো কি করে তার মানে ছেলেটার কথা শুনে রাগি চোখে তাকিয়ে,
~ আপনি আমায় ফেলে দিলেন?

~ হ্যা ছি কি বাজে আপনি দেখুন কি করেছেন আমার শার্ট।
~ এই সামান্য কারনে আপনি আমায় ফেলে দিবেন এখন যদি আমার পা ভেঙে যায় তাহলে আমি পালাবো কি করে।
~ হুয়াট
~ আপনার জন্য যদি আমার পা ভেঙেছে তো আপনাকে আমি।
বলেই হাত উঠিয়ে মারতে যায়। আশে পাশের লোক সব জরো হয়ে গেছে ঝগড়া শুনে।

~ কি হয়েছে এখানে
কারো কথায় বিন্দু আশেপাশে তাকিয়ে দেখে ট্রেনের সব যাএী ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। বিন্দু তারাতারি সিটে বসে পরলো না না বিন্দু মাথা ঠান্ডা কর এটা পাবলিক জায়গা এখানে ঝগড়া করা যাবে না সবাই যদি গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।
সবাই শিশির কে ঝেকে ধরে কি হয়েছে এতো চেচামেচি কেন কি বলবে ভেবে না পেয়ে কিছু না বলেই সিটে এসে বসে পরে দেখে ওই মেয়ে টা বোরকা খুলছে এবার বুঝতে পারলো মেয়েটার রাগে কারণ একে তো আমি আন্টি বলেছিলাম বোরকা আর হিজাবে তাকে এটাই ভেবেছিলাম।

শিশির টিসে বের করে শাট মুছতে লাগল, আর
~ আপনার মতো মেয়ে আমি জীবনে দেখি নি। কি করলেন ওয়াক।
~ একদম বাজে কথা বলবেন না ঠিক হয়েছে আমাকে আন্টি বলা না আবার ফেলে দেওয়া।
~ আমি আপনাকে ইচ্ছে করে ফেলি নি আর তখন আপনাকে আন্টি লাগছিল।

~ ইউ আবার আমাকে আন্টি বলছো, তুমি জানো কতো ছেলের ক্রাশ আমি আর তুমি আমাকে আন্টি বলছো।
এই মেয়ের অহংকার বেশি এর সাথে কথা না বাড়ানোই ভালো। দেখতে অবশ্য খারাপ না কিন্তু এমন অহংকারী মেয়ে অসহ্য লাগে। ভেবেই শিশির চুপ করে অন্য দিকে তাকিয়ে রইল।
বিন্দু কি করবে ভেবে ফোন বের করে গান ছেরে কানে ইয়ার ফোন দিলো। গান শুনছে আর ডোলছে শিশির বিরক্ত হয়ে তাকালো মেয়েটির দিকে।

~ এই যে আপনি নাচচ্ছেন কেন?
~ হুয়াট আমি নাচছি কোথায় আপনার চোখ কি অন্ধ নাকি চোখে দেখেন না।
~ না আমার চোখ ঠিকি আছে আপনার এই দোলা আমার কাছে নাচ মনে হচ্ছে দয়া করে একটু শান্ত হয়ে বসে থাকেন আমার প্রবলেম হচ্ছে।

~ আপনার কথা মতো আমাকে চলতে হবে আমি যা করছি সবই তো আপনার প্রবলেম হচ্ছে। এতো প্রবলেম হলে উঠে অন্য জায়গায় বসুন একদম আমাকে ডিসটার্ব করবেন না।

শিশির আর কিছু বলল না এই মেয়ের সাথে কথায় পারা যাবে না। চুপ করে আছে হঠাৎ কিছু পলে যাওয়ায় তাকিয়ে দেখে মেয়েটা ভয়ে নিয়ে ফোনটা নিচে পরে গেছে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা ফোন এসেছে। কিন্তু ফোন দেখে এতো ভয়ের কি আছে। অবাক হ য়ে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি।


পর্ব ২

~ কি হলো আপনি এতো ভয় পাচ্ছেন কেন?
বিন্দু কোনো কথা বলছে না। শিশির ফোন উঠিয়ে দেখলো আববু লেখা।
~ আপনার আববু ফোন দিয়েছে ধরেন কথা বলুন।

বলেই শিশির ফোন রিসিভ করতে যায় বিন্দু টান মেরে ফোনটা নিয়ে নেয় তারপর কল কেটে ফোন বন্ধ করে দেয়। শিশির হা হয়ে আছে ফোন কাটলো কেন আর বন্ধই বা করলো কেন ওর মাথায় ঢুকছে না।
~ এটা কি হলো আপনি ফোন বন্ধ করলেন কেন আপনার পরিবারের সবাই তো চিন্তা করবে।
~ করুক?

~ আপনি তাদের ইচ্ছে করে চিন্তা করাবেন। কেমন মেয়ে আপনি বাবা মাকে চিন্তিত রাখতে আপনার ভালো লাগে।
~ দূর যা জানেন না তা নিয়ে কথা বলেন না তো। আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি কি তাদের ফোন রিসিভ করার জন্য।
~ হুয়াট আপনি পালিয়ে এসেছেন।

~ হুম
~ কিন্তু কেন?
~ আমার ইচ্ছে বিরুদ্ধে বিয়ে দিতে চাইছিল তাই আমি পালিয়ে এসেছি একমাস পর বাড়ির ফিরে যাব।
শিশির হা হয়ে কথা শুনছিল কি মেয়েরে বাবা।

~ সবাইকে বলতে পারতেন আপনি রাজি না পালিয়ে এলেন কেন?
~ সবাইকে বলেছিলাম কিন্তু শুনে নি তাই তো।
~ এখন কোথায় যাবেন আই মিন কার বাসায়?
~ তাও জানি না।

~ কি না জেনেই ট্রেনে উঠে বসেছেন।
~ আমি আমার এলাকা থেকে পালাতে চাই তাই তো ট্রেনে উঠেছি। কিন্তু কোথায় যাবো জানি না যেখানে গাড়ি থামবে সেখানেই নামবো।

~ এভাবে আপনার আসা টা উচিত হয় নি রাস্তা ঘাটে অনেক বিপদে পরতে পারেন আপনার ফিরে যাওয়া উচিত।
~ একদম জ্ঞান দিতে আসবেন না ফিরে যাওয়া উচিত ফিরে গেলেই জোর করে ধরে বিয়ে দিয়ে দেবে। তার থেকে এভাবেই ঠিক আছি আর বিপদে আমি পরবো না আমি অনেক সাহসী।
~ আমি জাস্ট,
~ হয়েছে আর বলতে হবে না আচ্ছা আপনার নাম কি?

~ শিশির কেন
~ এমনি অনেক ক্ষণ ধরি ঝগড়া করছি তো তাই নাম জেনে রাখলাম।
~ কি
~ জি
~ আপনার নাম কি?

~ বলবো না?
বলেই জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইল,
আর শিশির যত দেখছে মেয়েটাকে অদ্ভুত বলে বিবেচনা করছে। ট্রেন থেমে গেছে সবাইকে খাওয়া জন্য কিছু কিনে নিতে বা খেয়ে আসতে বলছে।

বিন্দু তো সব শুনে নেমে গেল একাই শিশির নেমে ফ্রেশ হয়ে এসে দোকানে থেকে কিনতে যাবে হঠাৎ চোখ পললো বিন্দুর দিকে এক গাদা খাবার নিয়ে বসে খাচ্ছে মনে হচ্ছে ছয় মাস খায় নি শিশির দেখছে আর অবাক হচ্ছে। হঠাৎ ডাক এলো কানে ওই মেয়েটা ডাকছে শিশির এগিয়ে গিয়ে।
~ কি হয়েছে ডাকছেন কেন?

~ আপনি কিছু খাবেন না আসেন এখানে বসেই খান।
শিশির ভাবলো হয়তো এতো খাবার খেতে পারবে না তাই বলছে শিশির বসে একটা খাবারের হাত দিতে যাবে ওমনি বিন্দু।
~ একি আপনি আমার খাবারের হাত দিছেন কেন?

~ মানে
~ মানে আমার খাবারে হাত দিচ্ছেন কেন?
~ আপনি তো বললেন।
~ আমি আমার খাবার খেতে বলি নি বলেছি খেতে মানে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো অর্ডার করে খান।
শিশির এতো লজ্জা পেল যে খিদে ছিলো কিন্তু আর খাওয়ার ইচ্ছে নেই। রেগে চলে আসতে গেলে।
~ কি চলে যাচ্ছেন কেন খাবেন না?

~ নাহ আপনি খান বেশি করে (রেগে)
~ ওকে না খেলেন আমার খাওয়া শেষ বিল টা প্রে করে আসেন।
~ হুয়াট
বিন্দু শিশিরের সাথে কথা না বলে।
~ আপনি এনার কাজ থেকে টাকা টা রেখে দিন।

বলেই বিন্দু চলে গেল আর এদিকে শিশির আগুন চোখে তাকিয়ে আছে যাওয়ার দিকে কি অসভ্য মেয়ে নিজে খেয়ে আমাকে দিয়ে বিল মেটানো। কিন্তু এই লোক তো টা নেবেই বারবার চাইছে। তাই টাকা টা দিয়ে এলো।
~ আপনি এভাবে টাকা না দিয়ে চলে এলেন কেন খেলেন আপনি আর টাকা দিলাম আমি।(রেগে)
~ আসলে আমার কাছে টাকা নাই।
~ কিহ টাকা নাই তো খেতে গেলেন কেন?

~ সত্যি প্রচণ্ড খিদে পেয়েছিল তাই টাকা যে নাই মেনেই ছিল না।
~ আপনি ট্রেনের টিকেট কিনেছেন।
~ নাহ সব শুনার পর বুঝল ওর কাছে টাকা নাই গয়না আছে কয়েক টা ও গুলো বিক্রি করবে আমার টাকা ও নাকি শুধ করে দেবে।

আমি আর কিছু বললাম না। কিছু ক্ষণ চোখ বুজে রইলাম হঠাৎ গারে কিছু পরায় তাকিয়ে দেখি মেয়েটা ঘুমিয়ে পরেছে। আর মাথা টা আমার গারে আমি একটু ইতস্তত বোধ করলাম এভাবে থাকতে তাই মাথাটা সরিয়ে আবার সিটে রেখে দিলাম। ঝাকিতে মাথাটা পরে যাচ্ছে তবুও কিছু করলাম না। আবার ঘুমের ঘুরেই মেয়েটি আমাকে জরিয়ে ধরলো।

এই প্রথম কোন মেয়ে এভাবে জরিয়ে ধরায় একটা অদ্ভুত অনূভুতি হচ্ছে না না এটা ঠিক না একবার মেয়েটির মুখে দিকে তাকালাম অনেক মায়াবী লাগছে দেখতে তারাতারি সরিয়ে নিলাম দৃষ্টি। এখন হাত দিয়ে ধরে রেখেছে ছুটাতে গেলে আর ও চেপে ধরে তাই আর কিছু বললাম নাই।

বিন্দু ঘুম থেকে জেগে দেখে সে শিশির জরিয়ে ধরে আছে। তারাতারি সরে এলো সে বুঝেছে শিশির না সে নিজেই ধরে রেখেছিল সেটি যেখেউ দেখলে বুঝতে পারবে শিশিরের হাত বিন্দু কে ধরে বিন্দু ধরে ছিল। শিশির ঘুমিয়ে আছে তাই বিন্দু ভেবেছে শিশির কিছু জানে না।

শিশির গাড়ি থেকে নেমে যাবে।
~ আপনি নামছেন কেন।
~ আমি চলে এসেছি।

~ আপনি চলে গেলে টাকা দেবো কি করে।
~ সেটা আপনার ব্যাপার।
বলেই শিশির নেমে গেল।


পর্ব ৩

শিশির হেটে যাচ্ছে আর ভাবছে কি অদ্ভুত মেয়েটা এভাবে কেউ বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। আচ্ছা মেয়েটা কোথায় যাবে” দূর আমি এসব কেন ভাবছি যেখানে খুশি যাক আমার কি আমি এতো ভাবছি কেন।

কথাগুলো ভেবেই শিশির অটো তে গিয়ে বসলো। পাচঁ মিনিট লাগবে যেতে শিশরের এখানে থেকে বাড়ি। যতই বলুক আমার কি তবুও বারবার মেয়েটির কথা মনে পরছে। গাড়ি ছেরে দিলো হঠাৎ পেছনে থেকে কারো ডাক কানে এলো কণ্ঠ টা পরিচিত মনে হচ্ছে।

আমি মাথা বের করে পেছনে তাকালাম আর তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম আমার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না। হাত দিয়ে চোখ ডলে দেখতে লাগলাম ভুল দেখেছি কিনা কিন্তু না সত্যি তো ওই মেয়েটা দৌড়ে আসছে আর চিৎকার করে গাড়ি থামাতে বলছে।

~ ভাই গাড়ি থামান, ।
~ কেন ভাই,?
~ আহ থামান তারাতারি।
গাড়ি থেমে গেল শিশির তারাতারি করে নেমে গেল গাড়ি থেকে।

এদিকে বিন্দু তো দৌড়াতে দৌড়াতে হাপিয়ে গেছে গাড়ির কাছে এসের ঠাস করে নিজের হাতে ব্যাগটা শিশিরের হাতে দিয়ে হাপাতে লাগল,
শিশির এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। পরনে হলুদ রং এর ফোরক সাদা ওরনা গলার সাথে পেছিয়ে রেখেছে। চুল গুলো জুটি করা মুখে কোন সাজ নেই এমনিতে গায়ের রং একদম ফর্সা, মুখে ক্লান্তির ভাব অপূর্ব সুন্দর লাগছে শিশির হা হয়ে তাকিয়ে আছে।
বিন্দু খেয়াল করলো শিশির ওর দিকে ওর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
~ এই যে মিস্টার এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন,?

হঠাৎ কথায় শিশিরের ঘোর কাটল ও তারাতারি নিজের চোখ সরিয়ে নিলো।
~ না মানে,
~ আর মানে মানে করতে হবে না আমি জানি আমি অনেক সুন্দর। এভাবে কতো ছেলে তাকিয়ে থাকে।
একটা ভাব নিয়ে কথাটা বলল বিন্দু।

শিশিরের এখন নিজের মাথা নিজেই ফাটাতে ইচ্ছে হচ্ছে এই মেয়েটা সব সময় ভাব নিয়ে কথা বলে কেন যে তাকাতে গেলাম।
~ আপনার ভাবনা চিন্তা শেষ হলে আমাকে পানি দেন।
~ মানে
~ আপনার কাছে পানি আছে না পানির বতল সেইটা দেন।

শিশির পানির বতল বের করে দিল। আর বলল
~ আপনি নেমে এলেন যে,!
বিন্দু কথার উওর না দিয়ে পানির বতলে থেকে পানি বের করে মুখ ধুয়ে নিলো তারপর কিছু পানি মুখে দিলো।
~ আপনাকে কিছু জিগ্গেস করেছি।

বিন্দু ভাবছে কি বলা যায় ও তো এসেছে এর সাথে এর বাড়ি যাবে বলে কিন্তু এখন বলা যাবে না বলল এখানেই রেখে চলে যাবে। কিছু বলতে যাবে তার আগেই গাড়ি ওয়ালা বলল, ভাই আর কতো সময় লাগবো তারাতারি করেন আমার তো দেরি হয়ে যাচ্ছে।
~ কি হলো বলেন(শিশির)
~ আহ বলবো তো আগে গাড়ি তে চলুন তারপর বলছি।

~ মানে আপনি ও গাড়ির যাবেন নাকি।
বিন্দু আর কিছু না বলে গাড়িতে গিয়ে উঠে বসলো।
শিশির ও উঠে এলো ওর মাথায় কিছু ঢুকছে না এইমেয়ে আবার এখানে এলো কেন।
~ এবার বলেন।

~ আসলে হয়েছে কি আপনি নামার সাথে সাথে আমার ও মনে পরলো এখানে আমার আত্মীয় আছে। তাই আমি ও নেমে গেলাম।
~ তাই তা কোথায় সেই বাড়ি।
~ এদিকে ই তাই ভাবলাম আপনার সাথেই যাই।

হাসার চেষ্টা করে। এদিকে শিশিরের ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না কথা গুলো ও ভাবছে এখানে আত্মীয় থাকলে আগে বলল না কেন। আবার ভাবলো হয়তো মনে ছিল না তাই কথা গুলো ভাবা বাদ দিলো।
~ আচ্ছা আপনার নামটা কিন্তু এখন ও বললেন না।
~ ও তখন রেগে ছিলাম তাই বলিনি এখন বলছি। আমার নাম বিন্দু।

শিশির নাম টা শুনে অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলো বিন্দুর দিকে তারপর বিন্থুর সেই সময়ের কথা মনে পরে তারাতারি চোখ সরিয়ে নিলো। আর ভাবছে বিন্দু এই নামটা যে হবে শিশির কল্পনা ও করে নি।
হঠাৎ গাড়ি থামায় শিশির ব্যস্তবে ফিরল,
~ ভাই আপনি এসে গেছেন।

শিশির দেখলো ও বাড়ির সামনে চলে এসেছে। বিন্দুর দিকে তাকিয়ে বাই বলে নেমে গেল। বিন্দু ও তারাতারি নেমে গেল শিশির ভ্র কুচকে তাকালো বিন্দুর দিকে।
~ আপনি নামছেন কেন?
~ আমার আত্মীয় বাড়ি তো এখানেই।
~ কি এখানে।

~ হ্যা,
~ কার বাড়ি নাম বলেন তো দেখি।
~ আগে বাড়া টা দেন তারপর বলছি।
~ আচ্ছা,
~ সাথে আমার টা ও দিয়েন।

শিশির আর কিছু না বলে ভাড়া দিয়ে দিলো।
~ এখন বলেন কার বাসা।
~ আপনার বাসা টা কোনটা।
~ আগে আপনি বলেন?

~ আপনি আগে বলেপ না।
শিশির ওদের বিল্ডিং টা দেখিয়ে দিলো। বিন্দু এবার ওদের বাড়ির দিকে যেতে লাগল,
~ এই যে আপনি আমার বাসার দিকে যাচ্ছেন কেন?

~ আরে আসেন তো এটাই আমার আত্মীয় র বাসা।
~হুয়াট,
~ আমি খুব টায়ার্ড আছি প্লিজ এবার ভিতরে চলুন।

~ এটা কি ইয়ারকি হচ্ছে নাকি আমার বাসার যাবেন কেন অনেক ক্ষণ ধরে আপনার পাগলামকো দেখছি যান এখানে থেকেসযত সব উটকো জামেলা।
~ এভাবে বলছেন কেন আমি জাস্ট একমাস থাকবো এখানে তারপর চলে যাব যান। প্লিজ থাকতে দিন না কোথায় যাবো এখন আমি।

~ সেটা আপনার ভাবার বিষয় আমার না।
~ হুম কিন্তু এখন আমি আপনার বাসায় ই যাব।
~ একদম না যান বলছি।
কে শুনে কার কথা বিন্দু বাড়িতে ঢুকে পরে।

পর্ব ৪

শিশির পেছনে থেকে ডাকতে ডাকতে ভেতরে ঢুকে এলো। বিন্দু দরজার কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে ভিতরে ঢুকতে ভয় করছে না জানি কি বলে না শিশির আসুক তারপর যাব বলে দাড়িয়ে আছে।

শিশির দৌড়ে এসে বিন্দুর হাত শক্ত করে ধরে বলতে লাগল,
~ কি অভদ্র মেয়ে আমি আমার বাসা এভাবে জোর করে ঢুকে পরলেন এখন ও বলছি চলে যান নয়তো আমি আমাকে জোর করে বের করে দেবো।

~ ওফ ছারুন আমার লাগছে হাতে।
~ লাগুক যান বলছি বের হোন ওয়েট আপনি কি কলিং বেল বাজিয়ে ছেন।

~ নাহ
~ গুড কেউ দেখার আগে চলে যান।
~ না আমি যাব না প্লিজ একমাসের ই তো ব্যাপার থাকতে দিন না। আমি একা একটা মেয়ে কোথায় যাব একবার ভাবুন।
~ আপনি না অনেক সাহসী তাহলে এখন এতো ভীতু হলেন কি করে। আর আপনি কোথায় যাবেন না যাবেন সেটি একান্তই আপনি প্রবলেম আমার না।

বলেই জোর করে গেট দিয়ে বের করে দিতে লাগে। বিন্দু তো যাবেই না হাত ছারানোর অনেক চেষ্টা করছে অবশেষে শিশিরের হাতে জোরে একটা কামর দিয়ে বসে। হঠাৎ কামর দেওয়ায় আহ করে হাত ছেরে দেয়। আর এদিকে বিন্দু দৌড়ে এসে বেল বাজাতে থাকে।
.
.
তাহেরা বেগম রান্না শেষ করে কেবলই বসে পানি খাচ্ছিলো। হঠাৎ বেল বেজে উঠলো গরমে হাপিয়ে গেছে উঠতে ও পারছে না চিৎকার করে মেয়েকে ডাকতে লাগল,
~ অলি অলি কই রে তুই দেখতো কে আসলে তোর ভাইয়া নাকি।
কিন্তু মেয়ের খবর নেই রেগে বকতে বকতে নিজেই উঠতে গেলে শিশিরের বাবা বেরিয়ে এলো।

~ কি হয়েছে চেচামেচি করছো কেন? আর এতো বেল বাজছে কেন এমন করে কেউ বেল বাজায়।
~ আমি কি জানি একটু শান্তি নেই পুরা কপাল আমার সারা দিন খেটে খেটে মরছি এখন একটু তোমার আদরের মেয়ে ডাকলাম সেই উওর পযর্ন্ত নিলো না।
~ ওফ কথা কম বলো তুমি বসো আমি দেখে আসছি কে এসেছে।

শিশির এসে বিন্দুকে আবার ধরে বের করতে যাবে এমন সময় পেছনে কথার আওয়াজ এলো।
শিশির আর বিন্দু সোফায় বসে আছে। আর ওদের সামনে বসে আছে তাহেরা বেগম আর শিশিরের বাবা আজিম হোসেন।
তাহেরা বেগম তো সেই কখন থেকে কান্না করেই যাচ্ছে।

~ কতো আশা ছিলো ছেলি টাকে নিয়ে কতো গর্ব করতাম মেয়ে আমার যেমন তেমন ছেলে ভালো। এই তার ভালোর নমুনা বিয়ে করে এসেছে বাবা মাকে জানানোর প্রয়োজন বুদ করে নি। হায় আমার কি হয়ে গেল এখন আমি পারায় মুখ দেখাব কি করে।
নানা কথা বলেই চলেছে আর চিৎকার করছে। শিশিরের বাবা বার বার কাদতে মানা করছে কে শুনে কার কথা। এদিকে শিশির কিছু বলতে গেলে শুনছেই না। বিন্দু মনে মনে ভাবছে কি বলবো এরা তো নিজেরাই ভেবে কাদছে সত্যি টা বলে দেয়।

আবার ভাবছে বলে দিলে যদি তারিয়ে দেয় নানা থাক এভাবেই একমাস পর চলে যাওয়ার আগ সব বলে দিয়ে যাব নি এখন ভুল ধারনাটা থাক আমার ভালোই হলো চিন্তায় ছিলাম ভিতরে ঢুকে কি বলবো কিভাবে মানেস করবো। ওফ এই আন্টি টাকে ধরে চুমু খেতে হচ্ছে করছে এনি এই কথাটা না বললে মাথাটেই আসতো না এমন কিছু।

কথা গুলো ভাবছিলাম হঠাৎ ধাক্কা তে বাস্তবে ফিরলাম তাকিয়ে দেখলাম শিশির।
~ কি হলো এমন বোবার মতো বসে আছেন কেন দেখছেন না সবাই ভুল ভেবে আমাকে অবিশ্বাস্য করছে আপনি সত্যি টা বলুন। যে আমি আপনাকে বিয়ে করি নি।

~ আমার এতো ইচ্ছে নেই যা খুশি ভাবুক আপনার ইচ্ছা আপনি বলুন।
শিশির রেগে কিছু বলতে যাবে ওর বাবার কথা শুনে শান্ত হয়ে বসলো।

বাবা: আহ তাহেরা চুপ করো তো শিশির কি বলতে চাইছে শুনো তো আগে। তুমি সব সময় বেশি রকম করো।
~ কি আমি বেশি করি।
~ এখন তর্ক না করে চুপ করে শুনো। শিশির তুমি বলো এই মেয়েকে।

~ বাবা এই মেয়েকে
আর কিছু বলতে না দিয়ে বিন্দু বলতে লাগল, কারণে ও জানে এখন সত্যি বলে দেবে না এখন তো সত্যি বলা যাবে না।
~ আমি আর শিশির দুজন দুজনকে ভালোবাসি। আমার বাড়িতে বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিল অন্য জায়গায় তাই আমার বিয়ে করে নিয়েছি।

বলেই শিশিরেরে দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিতে যায় কিন্তু শিশিরের মুখ দেখে যায় তাই চুপ হয়ে যায়।
~ বাবা ও সব মিথ্যে বলছে বিশ্বাস করো আমি তো ওকে চিনিই না।

বিন্দু শিশিরের রুমে খাটে বসে আছে। আর শিশির একবার রুমের ঔইপাশে তো এপাশে যাচ্ছে আর ইচ্ছে মতো কথা শুনাচ্ছে। বিন্দু এক কান দিয়ে ঢুকাচ্ছে আরেক কান দিয়ে বের করছে।

শিশির অনেক কিছু বলে খাটের দিকে তাকিয়ে দেখে বিন্দু ঘুমিয়ে পরেছে। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে শিশিরের রেগে টেনে তুলতে যাবে হঠাৎ কথাল আওয়াজে থেমে গেল।

পর্ব ৫

শিশির রেগে গেল ঘুম দেখে অসভ্য বাজে একটা মেয়ে এই ভাবে আমাকে ফাসিয়ে দিল। ওর জন্য শুধু মাএ ওর জন্য বাড়ির কেউ আমার কথা বিশ্বাস করলো না। ও নাকি আমার বউ পাচঁ বছর রিলেশন করে বিয়ে করেছি কি মিথ্যে কথা টাই না বলল আর বাড়ির সবাই তা বিলিভ ও করলো। এখন আবার কি শান্তিতে ঘুমাচ্ছে দাড়াও তোমার ঘুম আমি বের করছি।

শিশির রেগে বাথরুমে গেল এক মগ পানি এনে যেই না ঠেলে দেবে ওমনি ডাক আসলো,
~ ভাইয়া ওই ভাইয়া কোথায় তুই (বলেই রুমে ঢুকে গিল) কিরে কি করছিস হাতে পানির মগ কেন আর ভাবি কই। আম্মা তোদের ডাকছে নিচে খেতে চল।

~ কই কিছু না এমনি। তুই যা আমি ওকে ডেকে আনছি।
~ তুই যা আমি ভাবিকে নিয়ে আসছি।
শিশির নিচে চলে গেল। অলির জন্য আজ মেয়েটা বেচে গেল নয়লে ওর মাথায় আমি পানি দিয়েই ছারতাম। বিরবির করতে করতে নিচে এলত।

কারো ডাকে ঘুম ভাঙে বিন্দুর তাকিয়ে দেখে ওই মেয়েটি এ তো শিশিরের বোন একে আমার ননদ বলতে হবে। ওফ মেয়েটা আমার সময় বয়সী ভালোই হয়েছে এর সাথে ভালো আড্ডা দেওয়ি যাবে।
~ হাই ননদিনি?

অলি রেগে তাকিয়ে বলল, একদম আমাকে ননদ বলবে না।
~ (বিন্দু তো ভ্যাবাচেকা খেল কথায় ননদ বলতে মানা করছে কেন ) কেন?
~ আমার অনেক দিনের ইচ্ছে আমার ভাবিকে আমার বোন বানাবো তাই তুমি আমাকে নাম ধরে ডাকে আর আমি আপু বলবো।

~ ও আচ্ছা
এতোক্ষণে মনটা শান্ত হলো কি না কি ভাবছিলাম। সবাইকে মিথ্যে বলতে হচ্ছে তার জন্য সরি। মনে মনে।
নিচে এসে দেখে সবাই যার যার সিটে বসে আছে বিন্দু ও হাসি মুখ করে শিশিরের পাশে গিয়ে বসে পরে। শিশির রাগী চোখে তাকায় বিন্দু ফট করে চোখ পিট দেয় সঙ্গে সঙ্গে শিশিরের খাবার গলায় আটকে যায়।

বিন্দু সেগুলোর দিকে মন না দিয়ে খেতে থাকে হঠাৎ খেয়াল করে সবাই কেমন করে যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে। তখন ও ও না খেয়ে হা করে সবার তাকিয়ে থাকার কারণ বুঝার চেষ্টা করে। শিশীরের দিকে তাকিয়ে দেখে সে হাসছে।

এবার আমি সিউর এই ছেলেই কিছু করেছে কিন্তু কি।
~ কি হলো সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন?
~ তুমি কি সত্যি শিশিরের বউ।

এই কথায় বিন্দুর ও গলায় খাবার আটকে যায় ও কাশতে থাকে শিশির পানি এগিয়ে দেয় আর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলতে লাগে বলো।
বিন্দু পানি খেয়ে নেই।
~ হুম সত্যি আমি শিশিরের বউ বিশ্বাস করেন।

সবার মধ্যে অবিশ্বাস্য দেখছি হঠাৎ শিশিরের কাশের কথা মনে পরলো তার মানে ওইখানে ইস কি বড় একটা ভুল করলাম এখন তো আমি ধরা পরে যাব এরা আমাকে তাড়িয়ে দেবো কোথায় যাবো।
হঠাৎ হাসির আওয়াজ এলো বিন্দু সামনে তাকিয়ে দেখে সবাই হাসছে।
ওফ কী ভয়টাই পা পেয়েছিলাম। সবাই আমাকে ভয় দেখানোর জন্য এমন করেছে শিশিরের দিকে তাকিয়ে দেখি মুখ মলিন করে রেখেছে।

খাবার শেষ করে রুমে এসে দেখি শিশির খাটের মাঝে শুয়ে আছে। আমি কোথায় শুবো এখন।
~ এই যে আপনি খাটে কেন শুয়েছেন। আমি কোথায় শুবো।
~ সেটা আপনার বিষয় আমার না।
~ উঠুন প্লিজ আপনি অন্য কোথাও গিয়ে শুয়ে পরুন আমি এখানে শুবো।

~ কি শক এখানে শুবে এটা আমার ঘর আমার খাট সো আমি এখানে শুব। আপনার ব্যবস্থা আপনি করে নিন।
~ এমন করছেন কেন আমি জাস্ট একমাস থাকবো তারপর চলে যাব বলছি তো তত দিন এখানে থাকতে দিন না।
~ আপনি জন্য আমার পরিবারের সবাই আমাকে ভুল বুজেছে সবাই এখন আমাকে অবিশ্বাস করে।

~ সবাই আবার বিশ্বাস করবে দেখেন আমি চলে যাওয়ার আগে সবাইকে সব সত্যি জানিয়ে দিয়ে যাব প্রমিস।
শত কথা বলে ও শিশির গললো না আর বিছানা থেকে ও উঠলো না। এদিকে বিন্দু কোথায় শুবে ভেবে সোফায় চোখ পরলো কি আর করবে শিশির তো সত্যি বলেছে আমার জন্য তার পরিবারের তার দিক থেকে ভুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তার রাগ করাটা স্বাভাবিক। বিন্দু সোফায় শুয়ে পরলো।

পরদিন সকালে
শিশির ঘুম থেকে উঠে দেখে বিন্দু সোফায় শুয়ে আছে রেগে তাকালেও রাগ থাকলো না ওর মায়াবী মুখটা দেখে ঘুমে অপূর্ব লাগছে দেখতে কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে রইল হঠাৎ ওর করা কাজের কথা মনে পরলো আর রেগে উঠে বসলো।

ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখে নয়টা বাজে। বাথরুমে গিয়ে কালকের মতো পানির মগ এনে বিন্দুর গায়ে ঠেলে দিল।
হঠাৎ ঠান্ডা কিছু পরায় ধরফরিয়ে উঠলো বিন্দু তাকিয়ে দেখি শিশির হাতৈ মগ নিয়ে দাড়িয়ে আছে বুঝতে আর অসুবিধা নেই কে করেছে।

~ এটা কী করলেন আপনি।
~ যা করেছি বেশ করেছি।
~ আপনি একদম কাজটা ঠিক করেন নি। দাড়াধ দেখাচ্ছি মজা।

বলেই রেগে উঠে শিশিরের দিকে তেরি আসতে যায় নিচে পানি থাকায় ঠাস করে শিশিরের উপরে পরে যায় তাল সামলাতে না পেরে শিশির খাটে পরে যায় আর ফিন্দু শিশিরের উপরে। বিন্দু ভয়ের চটে শিশিরকে জরিয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে।

আর শিশির মুগ্ধ হয়ে বিন্দুকে দেখছে। হঠাৎ ধাক্কা মেরে বিন্দুকে নিজের থেকে সরিয়ে উঠৈ দাড়িলো।
শিশির ভার্সিটিতে চলে গেছে বিন্দু আর শাস্তি দিতে পারে নি কিন্তু আসলেই দেবে ভেবে রেখেছে। শিশিরের মা বোনর সাথে অনেক ফ্রি হয়ে গেছে।

বিকেলে শিশির বাড়ি এসে গোছল করতে যাবে। তার আগে বিন্দু বাথরুমে গিয়ে সাবান ঘষে আসে শিশির খ।গোছলে গিয়ে ঠাস করে পরে যায় আর জোর চিৎকার করে উঠে। এদিকে বিন্দু তো হাসতে হাসতে শেষ।

পর্ব ৬

শিশির তো পরেই জোরে চেচিয়ে উঠে। নিচে থেকে শিশিরের মা আর বোন ছোট আসে রুমে। তাদের দেখেই বিন্দু দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে যায়।
~ কি হয়েছেস তোমার দেখি দেখি।

বলে শিশির যেখানে পরে আছে সেখানে বসে পরে। শিশির তো বিন্দুর তুমি বলাতে হা হয়ে আছে। বিন্দু শিশিরের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলতে লাগে।
~ কেমন লাগছে খুব ব্যাথা পেয়েছেন তাই না।

(মুখটা মলিন করে )
শিশির তো ব্যাথা ভুলে বিন্দুর দিকে দেখছে এই মেয়ে প্রবলেম কি একবার আপনি বলছে আবার তুমি বলছে।
শিশিরের মা এসে শিশিরকে বলে।
~ কি হয়েছে শিশির তুই এভাবে নিচে বসে আছিস কেন আর চিৎকার করলি কেন।

~ ভাইয়া কি হয়েছে পরলি কি করে।
~ জানিনা আম্মু কি করে যে পরলাম।

শিশির আমার দিকে সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে হয়তো কিছু বুঝেছে আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব দাড়িয়ে আছি।
রাতে শিশির আমাকে জিগ্গেস করলো আমি ও বলে দিলাম যে আমি সব করেছি। সে তো রেগে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু কিছু করার উপায় নাই। উঠতে পারলে তো ব্যাথা মনে হচ্ছে ভালো পেয়েছে।

দুইদিন আর উঠতে পারলো না পরে অবশ্য আমার খারাপ লেগেছে আমি শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু এতোটা না। কিন্তু আবার লেগে গেল শিশির সুস্থ হয়ে আমাকে ট্রাপে ফেলে রান্না করতে বলল,
আমি তো রান্না কিছুই পারি নি। কিন্তু সবাই বলে বউ মানুষ একটু রেধে খাওয়াও দেখি কি করবো বউ বলে পরিচয় যেহেতু দিয়েছি রান্না তো করতেই হবে ইউটিউব দেখে দেখে রান্না করলাম।

কিন্তু সবাই যাও ভালো বলল শিশির তো নাক সিটকে বলতে লাগল খাবার অনেক খারাপ হয়েছে। আমি আগুন চোখে তাকালাম শিশিরের দিকে। এভাবে সব সময় আমাদের ঝগড়া লেগেই থাকে।

দেখতে দেখতে একমাস চলে গেল। আমি রুমে বসে আছি কাল চলে যাব।
খারাপ লাগছে প্রচুর শিশিরকে ছেড়ে চলে যেতে হবে ভাবলেই কান্না পায়। এই একমাসে সবার সাথে অনেক ভাল সম্পর্কে হয়ে উঠেছে। সবাই কতো ভালো সবাই যখন জানবে আমি মিথ্যে বলেছি নিশ্চয়ই আর দেখতে পারবে না আমাকে।

এই একমাসে আমি এটাও বুঝেছি আমি শিশিরকে ভালোবেসে ফেলেছি। ঝগড়া করতে করতে কখনো ওই ঝগড়াটিকেই ভালোবেসে ফেলেছি। এখন আমি কি করে থাকবো। সতি যদি শিশিরের বউ হতে পারতাম এই মিথ্যে টা যদি সত্যি হতো।
কথা গুলো ভাবছি আর জামা কাপড় গুছিয়ে নিচ্ছি। চোখ দিয়ে পানি পরে যাচ্ছে। হঠাৎ রুমে শিশির এলো আমাকে জামা কাপড় গুছাতে দেখে হয়তো ও মনে হয় অবাক হচ্ছে।

~ কি ব্যাপার জামা কাপড় গুচাচ্ছো কেন।(শিশির এখন আমাকে তুমি করে বলে আমি ও)
~ কাল তো চলে যেতে হবে তাই সব গুছিয়ে রাখছি।
~ মানে।

~ মানে আমি আমাদের বাড়ি চলে যাব তোমাদের অনেক জালিয়েছি। বিশেষ করে তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমার জন্য তুমি সবার সামনে খারাপ হয়েছিলে কাল সবাই কে সত্যি টা বলে আমি চলে যাব আর কখনো আসবো না তোমাকে জালাতে।
কথা গুলো বলছে আর চোখ দিয়ে পানি পরছে। শিশির এমন কিছু শুনবে ভাবে নি। ওর তো পুরো পৃথিবীর অন্ধকার হয়ে গেল। কারণে শিশির ও তো বিন্দুকে ভালোবাসে খুব তারাতারি সব জানিয়ে ও দিতৃ চাইছিল কিন্তু বিন্দু যে চলে যাবে তা মাথায় ই ছিলো না।

শিশির বিন্দুর কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে বলতে লাগল,
~ তুমি যেও না প্লিজ।

~আমাকে যেতেই হবে। আর কোন উপায় নাই আর আমি কেন থাকবে যে পরিচয়ে ছিলাম সেটা তো মিথ্যে।
~ আমি সেই মিথ্যে টাকে সত্যি করতে চাই।
বিন্দু অবাক চোখে দেখছে শিশিরকে।

~ আই লাভ ইউ বিন্দু। তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবু না প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না।
~ তা হয় না।
~ কেন হয় না।
~ আমাকে কেউ মানবে না আমি জানি সবাই আমাকে একজন মিথ্যে বাদী ভাববে। তোমার বউ বলে কেউ মেনে নেবে না।

~ আমি সবাই কে রাজি করাব
~ না শিশির তুমি বললে হয়তো মেনে নেবে কিন্তু মন থেকে নয়। আর আমি চাইনা এমন কিছু।
বলেই কান্না করে দিল। শিশির বিন্দুকে জরিয়ে ধরে নিজে ও কান্না করছে। সারারাত দুজন ঘুমাতে পারলো না চোখের জলে রাত পার হলো।
পরদিন বিন্দু ব্যাগ পএ নিয়ে নিচে এলো সবাই জিগ্গেস করছে ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাবে।

~ আপনারা সবাই হয়তো ভাবছেন আমি ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছি। আমি আমাদের বাড়ি চলে যাচ্ছি। আর কখনো এখানে আসবো না। (বিন্দু)
সবাই অবাক চোখে দেখছে আর শুনছে বিন্দু সব খুলে বলল সবার দিকে তাকিয়ে দেখলো রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। বিন্দু বলেই সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নীতে গেলে সবাই যার যার রুমে চলে যায় বিন্দু অসহায় চোখে তাদের চলে যাওয়া দেখে। শিশির পেছনে থেকে গারে হাত দেয়। বিন্দু শিশিরের দিকে পা তাকিয়ে হাত ছারিয়ে বেরিয়ে আসে।
এমন কিছু হবে জানতো একজন মিথ্যে বাদী কেউ ভালোবাসে না। সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয়।

তিনমাস পর
আমি রুমে শুয়ে আছি হঠাৎ কেউ ভাবি ভাবি বলে ডাকতে ডাকতে রুমে এলো তাকিয়ে দেখি অলি আমি তো অবাক হয়ে দেখছি এটা সপ্ন নয়তো না সপ্ন না। কিন্তু এখানে কি করে এলো। আমার কোন কথা না শুনেই আমাকে উঠিয়ে বাথরুমে পাঠিয়ে দিল তারপর টেনে বাইরে নিয়ে এলো বাইরে এসে তো আরেকদফা শক হলাম শিশির শিশির আববু আম্মু সবাই আমার আববু আম্মুর সাথে কি যেন কথা বলছে।

ওইখানে গিয়ে জানতে পারলাম তারা আমার আর শিশিরের বিয়ের কথা বলছে। একবার শিশিরের দিকে তাকালাম কতো রোগা হয়ে গেছে আমি তাকিয়ে দেখে ও আমার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। আমাকে আংটি পরিয়ে দিয়ে গেল।
একমাস পর বিয়ে। আমি তো অবাক হয়ে সব দেখেছি এতো খুশি লাগছিল বলে বুঝা পারবো না।

একমাস পর
বাসর ঘরে বসে আছি ইয়া বড় একটা ঘোমটা দিয়ে।
শিশির এসে আমার পাশে বসলো।
~ এতো বড় ঘোমটা দিয়ে আছো কেন?

আমি কিছু বললাম না শিশির আমার ঘোমটা সরিয়ে মাথা উচু করে দেখে কপালে একটা কিস করলো সঙ্গে সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম। আচমকা এমন করায় শিশির অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
~ একদম আমাকে টাচ করবেন না।

~ মানে
~ মানে ছুবেন না বুঝছেন। আর আমার প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে গুড নাইট।
বলেই শুয়ে পরলাম। শিশির এসে আমাকে ডাকছে এমন করছি কেন কি হয়েছে আমি কিছু না বলে চোখ বন্ধ করে আছি। শিশির ও আমার পাশে শুতে এলে আমি।

~ একদম না এখানে আপনি শুতে পারবেন না।
~ কি হয়েছে তোমার প্লিজ বলো এমন করছো কেন।
~ কিছু হয়নি।

~ তাহলে আমার সাথে এমন বিহেভ করছো কেন তুকি আমার সাথে রেগে আছ। আর আমি এখানে শুবো না তো কোথায় শুব।
~ ওই যে সোফায় ওই খানে।
শিশির এমন কিছু র জন্য প্রস্তুত ছিলো না আমি কথা বলার সুযোগ না দিয়ে শুয়ে পরলাম। শিশির ও কষ্ট চাপা রেখে শুয়ে পরলো।

মাঝরাতে শিশির শুয়ে আছে সোফায় হঠাৎ মনে হচ্ছে কেউ আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে রেখেছে মনে হচ্ছে কেউ ওর উপরে আছে ভয়ে চোখ মেলে তাকিয়ে বিন্দুর মুখটা দেখে। শিশিরের উপরে শুয়ে আছে একদম লেগে ধাক্কা লাগলেই পরে যাব শিশির ভালো করে ধরে। বিন্দুকে ডাকতে লাগল তখন ওমন করশো এখন আবার কিছু ভাথায় আসছে না।

~ বিন্দু তুমি এখানে।
~ কেন থাকতে পারি না নাকি।
~ নাহ কিন্তু
~ তুমি কষ্ট এখানে থাকবে আর আমি কি শান্তি করে খাটে ঘুমাতে পারি।

~ তাহলে তখন ওমন করলে যে।
~ আমি তো মজা করেছি আর তুমি কি বোকা চলে এলে এখানে জোর করতে পারলে না হাদারাম।
বলেই বিন্দু শিশিরের গালে চুমু দিলো।

লেখা – শিলা আক্তার

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “শিশিরের বিন্দু – Best love story bd” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – এক্স ফাইভ (১ম খণ্ড) – Bangla Super Human Story

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *