ভুল – ekti prem kahini: মাইশা কষে একটা থাপ্পর মারলো তানিয়ার গালে। থাপ্পর টা মেরে তানিয়ার হাত থেকে এক টানে আমার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো-
আমার স্বামির হাত ধরার সাহস হয় কি করে তোর?
পর্ব ১
আমি বসে বসে ল্যাপটবে অফিসের কাজ করছি।
আর আমার স্ত্রী মাইশা আয়নার সামনে বসে সাজুগুজু করছে।
মেয়েরা পারেও ভাই।
একটু পরে দুজনে শুইতে যার আর ও সাজুগুজু করছে।
আপনারাই বলুন তো, এখন ওকে কে দেখতে আসবে?
যাই হোক এখন মাইশাকে দেখে একটু বেশিই সুন্দর লাগছে।
তাই নিজের ভিতর একটু দুষ্টুমি জেগে গেলে।
ল্যাপটব ছেড়ে ওঠে মাইশাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধুরে ওর খোলা পিঠে নিজের ঠোট দুইটা বসিয়ে দিলাম।
আমার ঠোটের স্পর্শে মাইশা একটু কেঁপে উঠে বললো, এসব কি হচ্ছে?
বউকে আদর করা হচ্ছে।
এএএএএ ঢং কতো, ছারো, আমি ঘুমাবো, কাল অফিস যেতে হবে।
ওওও হ্যালো ম্যাডাম, আগে বর তারপর অফিস ওকে?
বলেই একটা ঝটকায় মাইশাকে নিজের দিকে ঘড়িয়ে মহুর্তেই ওর ঠোঁট দখল করে নিলাম।
মাইশা ওম ওম করছে আর হাত পা ছোরাছুরি করছে।
এভাবে ৫ মিনিট চলার পর ওকে ছেড়ে দিলাম।
মাইশা হাঁপাত হাঁপাতে বললো সয়তান একটা।
তারপর আমি আর কোন কথা না বলে ওকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।
সকালে ফজরের আযান শুনে উঠে গোসল করে ফজরের নামাজ পরে একটু হাটাহাটি করে
বাসায় এসে দেখি মাইশা বিছানায় নেই। তাই বসে রেস্ট নিচ্ছি
এমন সময় আমার স্ত্রী মাইশার মোবাইলের ম্যাসেস টোন টা বেজে উঠলো।
ইচ্ছা না থাকা সত্তেও কেন জানি ওর মোবাইলটা হাতে নিয়ে ম্যাসেস টা দেখতে ইচ্ছা করছিলো।
তাই মোবাইলটা হাতে নিয়ে ম্যাসেসটা দেখে বড় সর একটা ধক্কা সক খেলাম।
ম্যাসেস টা ছিলো –
“আমার সোনাটা কি ঘুম থেকে উঠেছে।”
ম্যাসেস টা দেখে মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো।
মাইশার মোবাইলে তার কোম্পানি থেকে অনেক ম্যাসেস আসে। আমি সেগুলো অনেক বার দেখেছি।
কিন্তু এরকম ম্যাসেস তো দেখি নি।
আমি ও আমার স্ত্রী দুজনেই চাকরী করি।
আমি একটা প্রইভেট কম্পানিতে জব করি।
আর মাইশাও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে।
আসলে আমি ওকে জব করতে দিতে চাই নি।
কিন্তু ভালো স্টুডেন্ট কে বিয়ে করলে যা হয়।
ওর কথা হলো-
যদি জব ই করতে না পারি। যদি নিজের ট্যালেন্ট ই দেখাতে না পারি তাহলে এতো ভালো স্টুডেন্ট হয়ে কি লাভ।
তাই আমিও আর বেশি না না করি নি।
ওয়াশ রুমের দরজা খোলার শব্দ পেলাম।
বুঝতে পারলাম মাইশা আসডেছে।
তাই ওর মোবাইলটা রেখে আমি নিজের মতো করে নিজের মোবাইল টিপছি।
মাইশা ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ওর মোবাইলটা হাতে নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো।
আমি এখনো বসেই আছি, মাথায় একটা কথায় ঘুরছে।
কার ম্যাসেস ছিলো ওইটা?
সকাল ৮৷৩০ মিনিট।
আমি এবং মাইশা দুজনেই যে যার মতো রেডি হচ্ছি অফিসে যাওয়ার জন্য।
হালিমা (কাজের মেয়ে) খাবার রেডি হয়েছে বলে চলে গেলো।
তারপর আমরা দুজনে যে যার মতো করে খাবার খেয়ে অফিসে চলে গেলাম। যেহেতু দুজনেই জব করি তাই দুজনের মধ্যে খুব একটা কথা হয় না।
প্রয়জন ছাড়া।
আমি অফিসে আসলাম ঠিক। কিন্তু অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে পারছিলাম নাহ।
সব সময় সেই ম্যাসেস টা নিয়েই চিন্তা।
কে সেই ব্যাক্তি?
যে আমার স্ত্রীর মোবাইলে ম্যাসেস করে?
দেখতে দেখতে লান্স আওয়ার হয়ে গেলো।
আমি প্রতি দিনের মতো অফিসের ক্যান্টিনে গেলাম লান্স করতে।
এমন সময় শালি ইরার ফোন।
হ্যালো ইরা, কেমন আছিস?
জ্বী ভাইয়া আমি ভালো, আপনি ভালো আছেন? (ইরা আমাকে ভাইয়াই ডাকে। ওর নাকি দুলাভাই ডাকতে কেমন লাগে)
হুম,
আচ্ছা ভাইয়া তোমার বিবাহ বার্ষীকী কি এই মাসেই?
মানে?
মানে মাইশা আপুকে দেখলাম, দামী ব্রান্ডের একটা ঘড়ি কিনলো।
খুম দামী একটা ঘড়ি। তা তো ১০ হাজার এর উপরে দাম হবে।
(মাইশা ঘড়ি কিনলো?
তাও আবার এতো দামি?
কার জন্য?
আমাদের বিবাহ বার্ষীকী তো কিছুদিন আগে হয়ে গেলো।
সেই উপলক্ষে দুজনে সিলেট ঘুরে আসলাম।
পরে ভাবলাম হবে হয়তো ইচ্ছা হয়েছে তাই আমার জন্য কিনেছে)
আরে নাহ রে, তোর আপুর হয়তো ইচ্ছা হয়েছে তাই কিনেছে আমার জন্য।
বাহ ভাইয়া আপনি তো খুব লাকি ম্যান।
দেখতে হবে না। বউটা কার?
হয়েছে হয়েছে, আপনি তো ফস্ট টাইম আপুকে জব করতে দিতে চাইতেন না। আর এখন গর্ব করছেন?
আচ্ছা দাড়া দাড়া, তুই মার্কেটে কেন?
কোন ছেলেকে আবার মুরগী বানাচ্ছিস?
তারপর আর ওদিক থেকে কোন আওয়াজ পেলাম না শুধু টু টু টু ছারা।
লান্স সেরে আবার অফিসের কাজ।
বিকাল ৪ টা
অফিস শেষ করে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলাম।
বাসায় ফিরে হালিমাকে চা দিতে বলে ওয়াশ রুমে চলে গেলাম।
ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে চা এর কাপে চুমক দিতেই মাইশা হাজির।
আমিও আগ্রহ নিয়ে ওর হাতের দিকে চাইলাম।
কারণ ও আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার আগেই আমি ওকে সারপ্রাইজ দিবো এই ভেবে।
কিন্তু একি! প্রতিদিনের মতো আজো দেখি ওর হাত ফাকা।
শুধু নিজের ব্যাগটা ছাড়া আর কোন ব্যাগ নাই।
তারপর মনে মনে ভাবলাম হয়তো নিজের ভ্যানিটি ব্যাগে রেখেছে ঘড়িটা।
মাইশা নরমালি তার ব্যাগটা রেখে আমার সাথে কোন কথা না বলে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
আমারও ভিতরে ভিতরে একটু অভিমান হলো।
সারপ্রাইজ টা আগে দিলে কি হতো?
ধুর!
রাতের ডিনার করে আমি বসে বসে ল্যাবটপ এ কাজ করছি।
মাইশা কিছুক্ষন বেলকনিতে দাড়িয়ে থেকে এসে গুড নাইট বলে শুয়ে পড়লো।
কিন্তু আমি লক্ষ করলাম ও ঘড়িটা বিষয়ে কিছুই বলছে না।
মনে মনে একটু সন্দেহ হলো।
তাই কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম মাইশার ঘুমিয়ে পড়ার জন্য।
তারপর যখন বুঝতে পারলাম মাইশা ঘুমিয়ে পড়েছে।
তখন উঠে মাইশার ব্যাগটা দেখার জন্য ব্যাগটা হাতে নিলাম।
নিয়ে হাত দিয়ে পুরো ব্যাগ খুজেও ঘড়ি টা পেলাম না।
কিন্তু ও যে ঘরিটা কিনেছে তার প্রমান সরুপ একটা ম্যামো পেলাম ব্যাগে।
এখানে ক্রেতার জায়গায় পরিষ্কার মাইশার নাম ই লেখা।
তাহলে ও কার জন্য ঘড়ি কিনেছে?
মাইশার দিকে তাকিয়ে দেখি ও ঘুমাচ্ছে।
কৌতুহল বশত ওর মোবাইলটা হতে নিয়ে তারাতারি করে ইনবক্সে ঢুকলাম।
ঢুকে দেখি ইননক্স পুরো ফাকা।
এমনকি সকালে যে ম্যাসেসটা দেখেছিলাম সেটাও নেই।
এবার মাইশার উপর পুরো সন্দেহ হতে লাগলো।
কে এই তৃতীয় ব্যাক্তি?
যে মাইশার খোজ খরব নেয়?
মাইশাও তার জন্য দামী ঘড়ি কিনে?
এরকম আরো অনেক প্রশ্ন নিয়ে সেদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ফজরের নামাজ পরতে আর মসজিদে গেলাম না।
বাসাতেই পড়ে নিলাম।
নামাজ পড়ে ওঠে দেখি মাইশা বিছানায় নাই।
তাই আমিও বেলকনিতে গিয়ে দেখি মাইশা কারো সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
আমি আর সহ্য করতে না পেরে বললাম, কার সাথে কথা বলছো মাইশা?
পর্ব ২
আমার স্ত্রী মাইশা বেলকনিতে দাড়িয়ে কারো সাথে হাসতে হাসতে কথা বলতেছিলো।
যা আমার একদম সহ্য হয় নি।
তাই মাইশাকে গিয়ে বললাম কার সাথে কথা বলছো
তাও আবার এতো সকালে।
আমার কথা শুনে মাইশা একটু চমকে গেলো।
আর বললো,
আরে তুমি এখানে? নামাজ পড়া হয়েছে?
আমি তোমাকে প্রশ্ন করলাম আর তুমি উত্তর না দিয়ে কিনা উল্টো আমাকেই প্রশ্ন করছো।
বাহহ
আরে ওওওও, আমার কলিগ নিলয়। একটা প্রবলেম এ পরেছিলো তাই কল করেছে।
বলেই বেলকনি থেকে চলে গেলো মইশা।
আমি ওকে বাধা দিতে গিয়েও পারলাম না।
আমি আর কি বা প্রশ্ন করতে পারি?
কোন প্রশ্ন করলে হয়তো উত্তরটা এমনি হবে।
কলিগ,কিছুনা, এমনি
এই টাইপের।
তবে বুঝতে পারলাম আমাদের দুজনের মধ্যে তৃতীয় ব্যাক্তিটি নিলয়। ছেলেটাকে একটু একটু চিনি আমি।
মাইশা একদিন পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। দেখতে সুদর্শন, বড়লোক বাপের কোন আদরের দুলাল হবে হয়তো।
মাইশা চলে যাওয়ার পর জানালার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে আছি।
কিছুক্ষন পর মাইশা নিজে এলো দুই কাপ চা নিয়ে।
একটা কাপ আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো
কি ব্যাপার হুমমম।
তোমাকে কে তো আগে এভাবে জানালার গ্রীল ধরে দারিয়ে থাকতে দেখি নি।
আমি কোন উত্তর না দিয়ে
নিজের মতো করে চায়ের কাপ টা নিয়ে চুমক দিচ্ছি।
মাইশা আবার বললো।
কিছু বলছো না যে।
এমনি, সব সময় তো আর মন এক রকম থাকে না।
হুমমম, ঠিক বলেছো তুমি।
তো অফিস কেমন চলছে?
আসলে নানা ঝামেলায় তোমার সাথে তেমন কথা বলা হয় না।
জ্বী ভালই।
এভাবে আরো কিছু প্রশ্ন করলো মাইশা।
আমি শুধু উত্তরটাই দিলাম।
উল্টো কোন প্রশ্ন করলাম না।
তারপর সময় মতো দুজনে দুজনের অফিসে চলে যাই।
আর এভাবেই কেটে যায় বেশ কিছু দিন।
এর মাঝে, দিনদিন মাইশার মাঝে পরিবর্তন লক্ষ করছি আমি।
আর ভিতরে ভিতরে যেন শেষ হয়ে যাচ্ছি। কতো ভালোবাসা ছিলো আমাদের। আর এখন?
কিন্তু আমি একটা জিনিস বুঝলাম না মাইশা এরকম টা কেন করছে।
ভালোবেসেই তো বিয়ে করেছি আমরা।
হঠাৎ করে আমার মাঝে কি এমন কম পড়লো যে ওকে অন্যের কাছে যেতে হচ্ছে। অন্য কারো ভালোবাসা কেয়ার প্রয়জন হচ্ছে?
যত দিন যাচ্ছে আমার অফিস, বাসা সব কিছুর উপর যেন কেমন একটা বিরক্তি চলে আসতেছে।
এমনি এক দিন আমি অফিসের কাজে লান্স আওয়ারের পরে বসুন্ধরায় যাই।
ক্লাইন্ডের সাথে মিটিং করতে।
মিটিং শেষে
আবার অফিসে ফিরবো
এমন সময় বসুন্ধরা সপিং কমপ্লেক্স এর গেটে মাইশা ও নিলয়কে দেখলাম খুব হাস্যউজ্জল ভাবে বের হচ্ছে।
দুজনকে দেখে অনেক খুশি মনে হচ্ছে৷
আমি নিজেকে আড়াল করে সেখান থেকে চলে আসি। কারণ সেখানে দাড়ানোর না ছিলো সময় না ছিলো ইচ্ছা।
ড্রাইভার কে গাড়ী র্স্টট করতে বলে চলে আসি।
বিকালে অফিস শেষ করে বাসা এসে দেখে
মাইশা আগেই চলে এসেছে।
রুমে বসে টিভি দেখছে।
আমি রুমে ঢুকে অফিসের ব্যাগটা টেবিলে রেখে
ওয়াশরুমে চলে যাই।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়তেই মাইশা আমার গলা জরিয়ে ধরে বললো
আমার হিরোটার মুড অফ কেন হুমমম।
আগে মাইশা যখন আমাকে এভাবে জরিয়ে ধরতো তখন ওর মাঝে নিজেকে খুজে পতাম।
ভালবাসায় মোরানো ছিলো সেই মহুর্ত গুলো।
কিন্তু আজ ওর হাত গুলো আমার কাছে কেমন যেন ভারি ভারি লাগছিলো। অসহ্য লাগছিলো আমার। তাই, আমার এখন এসব ভালো লাগছেনা বলে মাইশার হাত ছাড়িয়ে হালিমাকে ডেকে নাস্তা করে
বাইরে বের হই।
বুঝতে পারছিলাম মাইশা মন খারাপ করেছে কিন্তু তাতে আমার কি?
ওর তো এখন মন ভালো করার মতো অন্য কেউ আছে।
বাইরে বের তানিয়াকে (আমার ভার্সিটির ফ্রেন্ড) কল দিয়ে দেখা করতে বললাম।
ও রাজি হয়ে গেলো আর একটা কফি শপ এর নাম বললো সেখানে ওয়েট করতে বললো।
আমিও চলে গেলাম ওর বলে দেওয়া কফি শপ এ।
তানিয়ার জন্য বসে ওয়েট করছি।
ওর সাথে দেখার করার উদ্যেশ্য হলো –
ওর কাছে সব খুলে বলবো আর এই অবস্থায় কি করা উচিৎ?
একটু সাজেশন নিবো।
প্রায় ৩০ মিনিট ওয়েট করার পর তানিয়া আসলো।
ওকে সব খুলে বললাম
আর আমি কি করবো সেটা জানতে চাইলাম।
ও উত্তর দিলো ওর মতো করে।
ও বললো
দেখ দোস্ত আমিও একটা মেয়ে তাই আমি ভালো করে জানি মেয়েদের মন কখন কোন দিকে ঘুরে যায় সে নিজেও জানে না।
দেখ এখন হয়তো মাইশার নিলয় কে মনে ধরেছে।
তাই তোর থেকে স্পেস নেওয়ার জন্য এসব করছে।
তুই শিক্ষিত ছেলে এটা নিশ্চয় বুঝতে পারছিস যে, মাইশার মনে এখন তুই নাই।
আমি মাথা নিচু করে বসে আছি।
তানিয়া আবার বলতে শুরু করলো।
তুই একটা কাজ করতে পারিস।
তুই বরং ২-৩ দিন মাইশাকে একটু স্পেস দে।
দিয়ে দেখ ও কি করে।
স্পেস? কিরকম!
তুই ২-৩ দিনের জন্য, ওকে একা রেখে কোথাও ঘুরে আয়।
কিন্তু এতে কি কাজ হবে?
হবে কি না জানি নাহ। ট্রাই করে দেখ।
এর মধ্যে কিন্তু মাইশা তোকো চায় কি না সেটা বোঝা যাবে।
আজ আমার কাজ আছে আমি উঠলাম।
বলেই চলে গেলো তানিয়া।
আমি কিছক্ষন কফি শপ এ বসে থেকে বাসা চলে আসলাম।
বাসায় আসতে আসতে রাত প্রায় ৯ টা বেজে গেছে।
রুমে এসে দেখি মাইশা খাবার রেডি করে টোবিলে বসে বসে ঝিমাচ্ছে।
আমি রুমে ঢুকতেই বললো
কই ছিলা তুমি?
কাজ ছিলো
কি কাজ তোমার হ্যা? এতো রাতে কেউ বাসায় আসে?
জানো না তোমায় ছাড়া আমি খাই না?
মাইশার এই কথা গুলো আগে ভালো লাগলেও আজ স্রেফ নেকামো লাগছে।
তাই কিছু না বলে টেবিলে বসে পড়লাম।
মাইশা ভাত বেরে দিলো।
কিন্তু আমার সেটা মুখে নিতেও কেমন যেন লাগছে।
মাইশাকে বুঝতে না দিয়ে।
বাইরে খেয়ে এসেছি বলে হাত ধুয়ে উঠে পড়লাম।
তারপর মাইশা ও আমি দুজনেই শুয়ে পড়লাম।
মাথার পিছনে হাত দিয়ে শুয়ে শুয়ে সেই দিন গুলোর কথা ভাবছি।
কতো সুন্দর ছিলো সেই দিন গুলো।
কত সুখ ছিলো আমাদের এই ছোট্ট সংসারে।
কিন্তু আজ সব অতীত।
এসব ভাবতেই বুঝতে পারলাম চোখের কোন এক ফোটা জল চলে আসছে।
মাইশা আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাছে।
রুমের ড্রিম লাইটে ওকে সুন্দর লাগছে।
ঘুমের সময় মাইশাকে দারুন লাগে।
কতো রাত যে ওর ঘুমানো চেহারা দেখে পার করেছি তা আপনাদের হিসাব দিতে পারবো না।
কিন্তু আজ ১ মিনিট ও ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে না।
এপাশ ওপাশ করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানি নাহ।
পরের দিন সকালে আমি অফিসে যাবো তাই নিজে নিজে রেডি হচ্ছি। আগে প্রতিদিন মাইশাই আমাকে রেডি হতে হেল্প করতো।
টাই বেধে দিতো।
কিন্তু আজ আমি নিজে নিজে রেডি হওয়ার ট্রই করছি। কিন্তু টাই টা বাধতে পারছিলাম না।
যা দেখে মাইশা অবাক হয়ে বললো যেটা পারো না সেটা করতে যাও কেন?
আর হুমমম টাই টা নিজে নিজে বাধা শিখে নিও। উপকার হবে।
টাই বেধে দিয়ে মাইশা কোন কারনে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
আমি আয়নার সামনে দাড়িয়ে মাইশার বলে যাওয়া কথাটার মানে খোজার চেস্টা করছি।
টাই বাধা শিখে নেব?
তাহলে মাইশা সত্যি আমাকে ছেরে চলে যাবে?
এসব ভাবছি আর ওমনি মাইশার মোবসইলের ম্যাসেস টোন টা বেজে উঠলো।
আমার ইচ্চা না থাকা সত্তেও মোবাইলটা হতে নিয়ে,
অবাক!
মোবাইলের পর্দায় পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি নিলয় এর ম্যাসেস।
তারাতারি করে ম্যাসেসটা সিন করে দেখে মথা চক্কর দিয়ে উঠলো।
ম্যাসেস টা ছিলো।
” আর প্রেম নয়, এবার সোজা বিয়ে, আমি অলরেডি কার্ড ছাপানোর অর্ডার দিয়ে দিয়েছি।
পর্ব ৩
“আর প্রেম নয়, এবার সোজা বিয়ে,
কার্ড ছাপাতে দিয়ে দিয়েছি অলরেডি”
মাইশার ফোন ম্যাসেসটা দেখে মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো। গলা শুকিয়ে গেছো।
তলে তলে তাহলে এতো দুর!
মাইশা কি তাহলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে? বা যাওয়ায় প্লান করছে?
ম্যাসেস টা দোখার পর ওর মোবাইলটা আগের জায়গায় রেখে আমি আবার আয়নার সামনে দাড়াইলাম।
নিজেকে প্রশ্ন করছি
কি আছে নিলয় এর মাঝে যে, ওর জন্য আজ আমি আমার ভালোবাসাকে হারাতে চলছি?
ওদিকে মাইশা ওয়াশ রুম থেকে বেড়িয়ে এসে আমাকে দেখে বললো, সেকি তুমি এখনো দাড়িয়ে আছো কেন?
গলাটা শুকিয়ে গেছে, এক গ্লাস পানি দিবা?
টেবিলে আছে নিয়ে খাও। আর সরো আমাকে আজ তারাতারি অফিসে যেতে হবে।
নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে।
যে মেয়েটা অফিসে যাওয়ার আগে প্রতিদিন আমাকে ৩-৪ বার দেখে নিতো কিছু মিসিং কি না। আর আজ সে?
মানুষ কতো তারাতারি পরিবর্তন হতে পারে মাইশাকে না দেখলে হয়তো জানতাম ই না।
টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে পানি পান করে বেরিয়ে পড়লাম অফিসে যাওয়ার জন্য।
অফিসে নিজের রুমে বসে আছি এমন সময় বসের কল আসলো।
হ্যালো স্যার বলুন।
আপনি আমার রুমে আসুন তো কথা আছে।
স্যারের রুমে চলে গেলাম।
আমাকে দেখে স্যার বললো।
কি সমস্যা আপনার?
ক কই কিছু না তো স্যার
কিছু না তাহলে অফিসে এসে এরকম করে থাকেন কেন? কাজে মন নাই। সব সময় টেন্স দেখায় কেন আপনাকে?
আমি চুপ।
কি সমস্যা কি খুলে বলুন। ভাবির সাথে ঝামেলা?
নাকি অন্য কিছু?
আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ই আছি,কিছু বলছি না। আর বলবই বা কি?
যে আমার স্ত্রী অন্য কারো সাথে পরকীয়া করছে সেই জন্য?
দেখুন আপনার যে সমস্যাই হোক না কেন। সেটা কালকের মধ্যেই মিটিয়ে নিবেন।
এভাবে অফিস চলে না।
অফিসে কাজ থাকে সেগুলো তো করতে হবে তাই না?
জ্বী স্যার!
আপনাকে কাল ছুটি দেওয়া হলো। আপনি আপনার সমস্যা সমাধান করে তারপর অফিসে আসবেন।
এখন আসুন আপনি।
আমি স্যারকে সালাম দিয়ো চলে আসলাম নিজের রুমে।
চেয়ারে বসে বসে ভাবছি।
কি কপাল আমার,
আমি কিছুদিন ধরে চিন্তিত সেটা স্যার বুঝলেও যে বোঝার সে বুঝে না।
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে চেষ্টা করলাম।
অফিস শেষ করে বাসায় ফিরতে একটু দেরি হয়ে গেলো।
বাসায় এসে দেখি মাইশা বসে আছে।
আমাকে দেখে বললো
তারাতারি ফ্রেস হয়ে আসো
খাবে।
আমার আজ শরীর টা ভালো নাহ। তাই তারাতারি ঘুমাতে হবে।
আমিও হুমম বলে ওয়াশ রুম গেলাম।
ফ্রেস হয়ে এসে ডিনার করে শুয়ে পরলাম দুজনে।
আমি মাইশার বিপরিত মুখে শুয়ে আছি।
তা দেখে মাইশা আমাকে টেনে চিৎ করে নিয়ে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করছে।
আমিও আর বাধা দিলাম না। যদিও এখন ওর এসব ন্যাকামো ভালোবাসা আমার আর ভালো লাগে নাহ।
মেয়ে মানুষ যে এতোটা পারফেক্ট অভিনয় করতে পারে সেটা মাইশাকে না দেখলে হয়তো জানতাম না।
মাইশা ঘুমাচ্ছে আর আমি ঘুমানোর চেষ্টা করছি।
কিন্তু কি জানেন তো কষ্টের রাত গুলো খুব লম্বা হয় আর খুব পেইনফুল হয়।
নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “গল্পের সমাহার”
অনেক ক্ষন এপাশ ওপাশ করছি কিন্তু ঘুম আসছে না। মাথায় একটাই চিন্তা কেন করছে সে এমন?
আমার বুকের উপর মাইশার রাখা মাথা টা সরিয়ে দিয়ে বিছানা থেকে উঠে রুমের ভিতর পায়চারি করছি। আর কিছু প্রশ্নের উত্তর খুজছি।
এমন সময় মনে হলো মাইশার মোবাইলটা একটু দেখবো?
নাকি দেখবো না?
হ্যা ও না এর মাঝে মাইশার মোবাইলটা হাতে নিলাম।
নিয়ে ইনবক্সে গেলাম।
ইনবক্সে ঢুকেই দেখি নিলয়ের সাথে সারা দিন ভালই ভালই কথা হয়েছে মাইশার।
কৌতুহল নিয়ে ওপেন করলাম ওদের ম্যাসেস গুলো দেখার জন্য।
কিন্তু ম্যাসেস গুলো দেখে আমি অবাক।
মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো আমার ম্যাসেস গুলো দেখে। মাইশা প্রেগনেন্ট?
মাইশা আজ অফিস না করে হসপিটালে গেছে!
(আপনাদের বোঝানোর জন্য ম্যাসেস গুলো তুলে ধরা হলো)
ম্যাসেস গুলো হলো্
প্রথম থেকে,
হসপিটাল পৌছাইছো? (নিলয়)
হুম, মাত্র আসলাম
ডক্টরের সাথে কথা বলেছো?
নাহ সিরিয়ালে আছি।
আচ্চা, আচ্ছা, ডক্টর কি বলে আর টেস্ট করাতে বললে সব করবে। আর রিপোর্ট এ কি আসে জানাবে ওকে?
আচ্চা৷
১ ঘন্টা পর আবার কথা বলে ওরা।
সব কিছু পজেটিভ আছে নিলয়।মাত্রই টেস্ট করে রিপোর্ট নিয়ে বের হলাম।
সত্যি!
হুমম,ডক্টর বলেছে, বাবুটা ঠিক পজিশন এই আছে।
Wow৷আচ্ছা এখন বাসায় যাও।তোমার বর কে এসব জানাবে কখন? ওর তো এখন জানা প্রয়জন।
আজ না, কাল ওকে জানাবো।
আমি এখন বাসা যাবো।
বাই।
মাইশার পেট এ নিলয় এর সন্তান?
আমি দাড়িয়ে আছি না বসে আছি ভুলে গেছি। মাথা যেন আর কাজ করছে না। চার দিক কাঁপছে বলে মনে হচ্চে।
হাত পা কাঁপছে।
মাইশার মোবাইলটা আমার হাত থেকে পরে গেলো বিছানার ওপর।
দিক বেদিক না পেয়ে হাত পা ছেড়ে দিয়ে বসে পড়লাম ফ্লোরে।
কি করবো না করবো বুঝতে পারছি না।
মাইশার দিকে তাকিয়ে দেকি ঘুমাচ্ছে।
যদিও আগে থেকে জানতাম মাইশা নিলয় প্রনয় করছে।
তবুও মনের মাঝে একটু বিশ্বাস বা আশা ছিলো
মাইশা হয়তো ওর ভুল বুঝবে।
ফিরে আসবে আমার কাছে।
কিন্তু নাহ, ভুল আমার।
আমিই বেহায়ার মতো এখনো ওদের মাঝে পরে আছি।
কিন্তু নাহ।
আর নাহ।
থাকবো না ওদের মাঝে।
আজ এখন চলে যাবো।
দুরে কোথাও।
অজানা কোন শহরে।
ফ্লোর থেকে উঠে দাড়ালাম।
ড্রিম লাইটের আলোয় নিজের জামা কাপর সব ব্যাগে গুছিয়ে নিলাম।
মাইশা এখনো ঘুমাচ্ছে।
চলে যাওয়ার আগে টেবিলে বসে একটা চিঠি লিখে রাখলাম।
রেখে ব্যাগটা নিয়ে মাইশাকে শেষ বারের মতো দেখে নিয়ে বেরিয়ে পরলাম রুম থেকে।
কিন্তু এখন আমি যাবো কোথায়?
এতো রাতে থাকবো কোথায়?
এসব ভাবতেই তানিয়ার কথা মনে পরলো।
আর কোন কিছু না ভেবে তানিয়াকে কল দিলাম।
তিন বার রিং হওয়ার পর কল ধরলো তানিয়া।
হ্যলো? এতো রাতে কল করলি কেন?
খুব বিপদে পরছি দোস্ত। একটু হেল্প কর না।
কি! কি বিপদ?
আমাকে আজ রাতটা তোদের বাসায় একটি থাকতে দিবি?
হোয়াট! তুই৷৷৷!
প্লিজ এখন কোন প্রশ্ন করিস না।
পরে সব বলবো তোকে।
আচ্ছা তুই কোথায় আছি বল। আমি আমাদের ড্রইভারকে পাঠাচ্ছি।
একটু পর একটা ব্লাক কী কালারের গাড়ি এসে দাড়ালো আমার সামনে। আমিও উঠে পরলাম।
তানিয়ার বাসায় পৌচ্ছে দেকি তানিয়া আমার জন্য বসে আছে।
আমাকে দেখে বললো কি হয়েছে তো?
সব কিছু খুলে বললাম তানিয়া কে।
তারপর তানিয়া আমাকে নিয়ে একটা রুম গিয়ে বললো, এখানে আজ রাত টা ঘুমাও। কাল দেখছি কি কার যায়।
ধন্যবাদ৷ টেনশন করিস না। আমি কালকেই দিনাজপুর চলে যাবো(দিনাজপুর এ আমার বাসা)
চুপ৷ কোন কথা বলবি না। যা গুমিয়ে পর। আর হ্যা মাইশাকে নিয়ে আর ১ মিনিট ও ভাববি না।
তানিয়া চলে যাওয়ার পর আমি শুয়ে পড়লাম।
কিন্তু ঘুম আসছে না।
বার বার সেই ম্যাসেস গুলো ভাসছে চোখের সামনে।
আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে মাইশা এসব করছে।
কতো স্বপ্ন ছিলো দুজনের।
আমাদের প্রথমে কি বেবি হবে এবং কি নাম রাখবো সেটা নিয়ে ঝগরা করতে কতরে যে দুজনে কতো রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছি
সে সিসাব নেই।
কিন্তু সেই মাইশাই কিনা আজ অন্য কারো বেবি পেটে নিয়ে মহা খুশি।
সকাল বেলা দরজায় কারো ঠকঠক শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো আমার।
দরজা খুলে দেখি মাইশা। হাতে একটা কাগজ নিয়ে দারিয়ে আছে।
শেষ পর্ব
মাইশাকে দরজার সামনে দারিয়ে থাকতে দেখে একটু অবাক হলাম।
মনে মধ্যে কিছু প্রশ্ন উদয় হলো।
প্রথম যে প্রশ্নটা মাথায় এলো সেটা হলো
ওর হাতে কাগজটা কিসের? তাহলে কি আমার থেকে ডিভোর্স পেপারে সাইন নিতে এসেছে?
আরো কিছু প্রশ্ন নিয়ে আমি দাড়িয়ে আছি
আর আমার সামনে মাইশা।
দুজনেই নিরব, কেউ কিছু বলছি না।
মনে মনে ভাবছি মাইশা এখানেই বা এলো কেন?
এভাবে দাড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছিলো না তাই ঘুরে আবার রুমের ভিতরে যাব
তখনি কেউ জরিয়ে ধরলো বলে মনে হলো। খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
মহুর্তের মধ্যে সব কিছু এলো মেলো হয়ে গেলো আমার।
হাজারো হলেও ভালো বাসি যে পাগলীটাকে।
তাই ওর প্রতিটা স্পর্শই আমার কাছে ছিলো বিশেষ কিছু।
কিন্তু এখন কেন যানি আর সেই অনুভূতি টা আসে না।
কেমন যানি হাশ ফাশ লাগছিলো
তাই ঝটকা দিয়ে ছারিয়ে নিলাম।
নিয়ে বিছানায় গিয়ে বসে পড়লাম।
এমন সাময় তানিয়া আসলো রুমে, এসে মাইশাকে দেখে
তানিয়া রেগে আগুন হয়ে বললো।
এই মেয়ে কি চাও এখানে?
কেন এসছো?
মাইশা চুপ!
কথা বলছো না কেন?
মাইশা এখনো চুপ৷?আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
এতোদিন ছেলেটাকে জ্বালিয়েছো তাতেও সখ মিটে নি?
এখন আমার আাসাতেও আসছো?
এবার মাইশা মাথা নিচু ফেললো।
ওকে দেখে বুঝতে পারছিলাম যে, মাইশার মন ভিশন খারাপ।
কিন্তু কেন কারাপ সেটা বুঝতে পারছিলাম না বা বুখতে চাইছিলাম ও না।
আমি ওকে (আমাকে) নিয়ে কোর্টে যাচ্ছি,উকিলের সাথে দেখা করবো। এসে যেন না দেখি তুই আমার বাড়িতে আছিস।
বলেই তানিয়া আমার হাতটা ধরে রুম থেকে বেরিয়ে পরবে
এমন সময় আমাকে এবং তানিয়াকে অবাক করে দিয়ে
মাইশা কষে একটা থাপ্পর মারলো তানিয়ার গালে। থাপ্পর টা মেরে তানিয়ার হাত থেকে এক টানে আমার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো।
আমার স্বামির হাত ধরার সাহস হয় কি করে তোর?
তানিয়া পুরা থ বনে গেলো
আমি পাথর প্রায়।
মাইশা তানিয়াকে থাপ্পর মারলো কেন?
তারপর আমাদের আরো অবাক করে দিয়ে মাইশা তানিয়ার উপর আংঙ্গুল তুলে বললো।
ও আমার স্বামী, ওকে ছোয়ার অধীকার শুধু,আর শুধু আমার।
বুঝেছিস তুই?
তানিয়া গালে হাত দিয়ে,হা করে তাকিয়ে আছে মাইশার দিয়ে।
কি হচ্ছে, কি চলছে৷ আমি তানিয়া কিছু বুঝতে পারছিলাম না।
মাইশার এমন রিয়েট দেখে আমরা রিতিমতো শক্ট।
কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছু মাথায় ঢুকার আগেই মাইশা আমার হাত ধরে বললো,
চলো আমার সাথে।
কোথায়?
কোথায় মানে? বাসায়?
আমি যাবো না।
তুই যাবি তোর চৌদ্দ গুষ্ট যাবে। (হাত ছেরে টিশার্ট এর কলার ধরে)
বলেই টানতে শুরু করলো।
কিন্তু আমি সায় দিলাম না।
কেন যাব আমি?
কেন যাবা না?
আমি চুপ৷
আমি চুপ থাকতে দেখে মাইশা আবার টানতে শুরু করলো।
আর টানতে টানতে আমাকে তানিয়ার বাসার সামনে নিয়ে এলো।
নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”
এসে একটা সিনজি ধরে দুজনে বসে পড়লাম।
আমি এখনো বুঝতে পারছি না যে মাইশা এমন কেন করছে?
আমি তো ওর ইচ্ছা মতো ওকে ছেড়ে দিয়েছি।
এখন তো ও ইচ্ছা মতো নিলয়ের সাথে মিশতে পারবে।
তাহলে আমাকে এভাবে আবার বাসায় নিয়ে যাচ্ছে কেন?
এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসলাম।
আমাকে রুমে ঢুকিয়ে মাইশা কষে একটা থাপ্পর মারলো আমাকেও।
মেরে আমার মুখের উপর আমার লিখে রাখা চিঠিটা ছুরে মেরে বললো, এটা কি লিখেছো?
কেন? মিথ্যা কিছু লিখেছি কি?
কি সত্যি লিখেছো সেটা বলো।
কি লিখেছি সেটা আবার পড়। পড়লেই বুঝবা।
আমি তোমায় বলেছি তোমার থেকে স্পেস চাই?
আমি মাথা নিচু করে আছি৷
আমি নিলয়ের সাথে কথা বলি, ওর সাথে মিশি কিসের জন্য একবারো জানার প্রয়জন মনে করো নি?
একবারো প্রশ্ন করার প্রয়জন মনে করো নি?
আমি এখনো চুপ, মাথা নিচু করে পায়ের কাছে পরে থাকা চিঠিটার দিকে তাকিয়ে আছি।
মাইশা আবার বলতে শুরু করলো৷
আমার পেটে নিলয়ের সন্তান?
এটাই ভাবছো?
এটা ভাবতে পারলে?
এটাই তোমার ভালোবাস?
তুমি না কথায় কথায় বলতে যে, আমি অন্য কারো হওয়ার আগে আমায় খুন করবে,করে নিজেও আত্নহত্যা করবে?
আমি কি বলবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না।
মাথা তোলার শক্তি পাচ্ছিলাম না।
আমি তোমাকে কখনো ইগনোর করিনি।
আমরা একটা ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্ট পেয়োছি।
সেটা হ্যান্ডেল করছি আমি আর নিলয়।
তাই ওর সাথে একটু বেশি কথা বলতে হয়। টাইমের আগে অফিস যেতে হয়।
আর এসবকে তুমি ইগনোর হিসেবে ধরে নিলে? বাহ রে স্বামী। কি ভালোবাসা,?
কোন বলা নেই কিছু নেই ছেড়ে চলে যাচ্চে।
এবার আর চুপ থাকতে পারলাম না,
তাহলে ঐ ম্যাসেস গুলোর মানে কি? আর ঘড়ি কিনেছো কার জন্য?
হাহাহা, তুমি আমার কয়টা কলিগকে চেনো?
আলিয়াকে চেনো?
কেন?
আগে বলো চেনো কিনা?
না চিনি নাহ।
নিলয় আলিয়ার মধ্যে ৩ বছরের সম্পর্ক। কিন্তু মাঝে কোন কারনে ভুল বুঝাবুঝি হয় ওদের মাঝে। তোমার যেমন তানিয়া বেস্ট ফ্রেন্ড। তেমন নিলয় ও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আর ওদের আবার মিলিয়ে দিতেই আমি ঘড়িটা কিনি। আলিয়ার টাকায়।
আর তুমি না জানো আমার স্যালারি কতো? এতো দামি ঘড়ি কেনার টাকা থাকে আমার কাছে?
আর যেহেতু এতো কিছু দেখেছো তাহলে তো নিশ্চয় সেই ম্যাসেস টাও দেখেছো যেটাতে নিলয় বলছে, আর প্রেম নয়। এবার সোজা বিয়ে?
দেখনি?
হুমম দেখেছি।
হুমমম, কাল সেই কার্ড পাবে। মানে নিলয় আলিয়ার বিয়ের কার্ড।
আর সেই ম্যাসেস? তুমি পৌছাইছো কিনা? যেটা পরে ডিলিট করে দিয়েছো?
আমি জানতাম না সেটা কে ছিলো। আর কেন সেই ম্যাসেস করেছে। তাই তুমি দেখলে মন খারাপ করবে বলে ডিলিট করেছি।
তুমি যে প্রেগনেন্ট সেটা আমাকে না বলে আগে নিলয়কে বলেছো কেন?
আমি তোমাকে আমার প্রেগন্যান্সির কথা আগে বলি নি কারণ তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছি।
আর দেখো তুমি আমাকেই উল্টো সারপ্রাইজ দিয়ে দিলে।
বুকের উপর থেকে মনে হচ্ছে বিশাল কিছু একটা সরে গেলো।
যেটা এতো দিন থেকে দিন দিন বুকের উপর একটু একটু বড় হচ্ছিলো।
আমি আর কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছি নাহ।
কি বলবো পাগলিটাকে?
মাইশা ধপ করে বিছানায় বসে পরলো।
আমি কিছুক্ষণ দারিয়ে থেকে মাইশার কাছে গিয়ে বসলাম।
দুজনেই নিরব৷
ঐ!
মাইশা চুপ
ঐ!
মাইশা চুপ
খুদা লাগছে
মাইশা চুপ৷……?
তাহলে আমি তা…৷
খুন করে ফেলবো শালা, আর একবার তানিয়া তানিয়া করলে।
সরি৷ (মাইশাকে জরিয়ে ধরে)
হুম হয়েছে৷
সরিইইইইইইইইইইই
শালা ভাগ এখান থেকে,
তাহলে৷
কি তানিয়ার কাছে যাইতে চাইবি আবার?
বল বল
যা দেখি তোর কতো সাহস, পা বাড়া দেখি (বসা থেকে উঠে)
আমি একটা মুসকি হাসি দিয়ে বললাম, আটকাতে পারবা?
তারপর ওদিক থেকে কোন শব্দ পেলাম না।
শুধু কারো বুকের স্পর্শে শিহরিত হয়ে উঠলাম।
পাগলিটা বুকের মধ্যে মুখ গুজে দিয়ে কাঁদছে।
ঐ৷ চুপ
কেন চুপ করবো?
থাকতে পারতে তুমি আমায় ছেড়ে?
১০০ বার পারবো না৷
সয়তান,পাগল৷ আমাকে বললে কি আমি তোমায় মিথ্যা বলতাম?
আমি চুপ৷
আর কখনো এমন করবে না। যদি আমার উপর কোন সন্দেহ হয় তাহলে সরাসরি বলবে আমায়।
জানো সকালে চিঠিটা নিয়ে কোতক্ষন কেঁদেছি?
সরি,
যাও ফ্রেস হয়ে এসো, আমি খাবার রেডি করি।
কেন তুমি কেন, হালিমা কোথায়?
ওকে ছুটি দিয়েছি। আর আমিও জব টা ছেড়ে দিয়েছি।
কি! কেন?
চাইনা আমার সেই জব যে জব। যার জন্য তুমি আমায় ভুল বুঝো।
চুপপ, কাল থেকে অফিসে যাবে।
উহহহহ যাবো না।
যাবে।
হয়েছে, এবার ছারো, নাস্তা রেডি করবো।
নাহ
তোমার না খুদা লাগছে।
হুমম, বাট সব খুদা তো খাবারে মেটে না।
মানে?
মানে এখন মিষ্টি খাবো।
যাহহহ, দুষ্টু (আমাকে ধাকা দিয়ে সরিয়ে দিলো মাইশা)
ঐ কই যাও?
ওয়াশ রুমে ফ্রেস হয়ে। নাস্তা বানাবো।
ধুর!
এএএএএএআআআআআআআআ
আচ্ছা, রাতে দেখবো
কচু৷ আমি বাবার বাড়ি যাবো।
পা ভেঙ্গে দেবো।
নো প্রবলেম। আমি হুইল চেয়ারে বসে বসে খাবো।
মাইয়া না কি রে বাবা।
মাইয়া না, মেয়ে? okkkkkkkk৷
বলেই মাইশা ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
আর আমি হাত পা ছেড়ে দিয়ে শুয়ে পরলাম।
আর মনে মনে ভাবছি।
এতো সুন্দর একটা মেয়েকে কি না কি ভাবচিলাম আমি?
আমি পাগল? হুমমম, হয়তো মাইশার পাগল।
কারণ মাইশা শুধু আমার।
রাইটার – আদিল খান
সমাপ্ত
(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “ভুল – ekti prem kahini” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)
আরো পড়ূন – ভালো তুমি বাসবেই – অবশেষে তোমায় পাওয়া