স্কুল লাইফের ক্রাশ যখন অফিসের বস – Protilipi bangla premer golpo

স্কুল লাইফের ক্রাশ যখন অফিসের বস – Protilipi bangla premer golpo: রুমে এসে আমি পুরো অবাক সাদিয়াকে নীল শাড়িতে নীল পরী মতো লাগছে। আমি এক দৃষ্টিতেই সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। সাদিয়া আমার সামনে এসে ঠোঁটে ছোট্ট করে কিস করে বললো, কি জনাব এমন ড্যাব ড্যাব করে কি দেখছেন।


পর্ব ১

সাবার প্রথমে আপনাদের সবাইকে আমার পরিচয়ই দিয়ে নি। আমি হলাম ফিরোজ হাসান, বাবা-মায়ের আদরের ছোট সন্তান। চলেন গল্পে ফিরা যাক বাকি পরিচয় গল্পে পেয়ে যাবেন।
তো আজ আমার অফিসের প্রথম দিন আর আজকেই আমি লেট। আজকে রাস্তায় অনেক জেম ছিল যার কারণে অফিসে আসতে প্রায় ৩০ মিনিট লেট হয়। জানিনা আজকে আমার কপালে কি আছে।
অফিসে আসলাম কিছু কালিগের সাথে পরিচয় হলাম। পরে নিজের ডেস্ক এ বসলাম। বসতে না বসতেই পিওন আসলো। আর বললো,
পিওনঃ স্যার আপনাকে ম্যাডাম তার কেবিনে ডেকেছেন।

আমিঃ ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।
পিওন চলে গেল আর আমি ভয়ে ভয়ে ম্যাডামের কেবিনের সামনে গেলাম।
কেবিনের দরজায় নক করলাম।
আমিঃ ম্যাম আসতে পারি?
ম্যাডামঃ হুম। আসুন।

আমি নিচের দিকে তাকিয়ে কেবিনে প্রবেশ করলাম। জানিনা আজকে আমার কি অবস্থা হবে।
ম্যাডামঃ তো আপনার নাম কি?
আমিঃ ফিরোজ হাসান।

ম্যাডামঃ তো আজকে আপনার অফিসে প্রথম দিন আর আজকেই আপনি লেট এর কারণ কি?
আমিঃ সরি। ম্যাডাম। আজকে রাস্তায় অনেক জেম ছিল যার কারণে অফিসে আসতে একটু লেট হয়ে যায়।
ম্যাডামঃ ঠিক আছে। আজকে আপনার প্রথম দিন তাই কিছু বললাম না নেক্সট টাইম যেন এমন না হয়।
আমিঃ ঠিক আছে ম্যাডাম।

ম্যাডামঃ যান ম্যানেজার সাহেব থেকে আপনার কাজটা যেনে নিন।
আমিঃ ঠিক আছে ম্যাডাম। বলে যেই আসতে নিব তেমনি চেয়ারের সাথে আমার পায়ের ধাক্কা লাগে। আমি ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠলাম।
তখন ম্যাডাম বললো,
ম্যাডামঃ কি ব্যাপার আপনি দেখে চলা ফেরা করতে পারেন না।

আমিঃ স। সরি ম্যাডাম বলে (যেই ম্যাডামের দিকে তাকালাম আমি পুরোপুরি আবাক কারন আমার সামনে আমার স্কুল লাইফের ভালোবাসা ধারিয়ে আছে। সাদিয়াকে আমি স্কুল লাইফে থেকে ভালোবাসি কিন্তু কোনো দিন বলতে পারি নেই। কারন সাদিয়া অনেক রাগি ছিল। তাই ওকে বলার কখনো সাহস পাইনি। তারপর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে চলে আসলাম। আর কখনো ওর খোঁজ খবর রাখি নি। কিন্তু শুনছিলাম সাদিয়ারা নাকি ঢাকা চলে গেছে। আজকে অনেক বছর পর আমি সাদিয়াকে দেখছি। ওকে দেখে মনে হচ্ছে যেন আকাশ থেকে কোনো পরি এসেছে। এতো সুন্দর কোনো মেয়ে হয় না কি। আমি ওর মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি। )

হঠাৎ কে যেন আমার চোখের সামনে চুটকি বাজালো আর আমি বাস্তবে ফিরে আসলাম। তখন ম্যাডাম বললো,
ম্যাডামঃ কি ব্যাপার কোথায় হারিয়ে গেলেন আপনি।
আমিঃ সাদিয়া তুমি এখানে।
ঠাসসসসসসসসসসস।


পর্ব ২

আমিঃ সাদিয়া তুমি এখানে।
ঠাসসসসসসসসস।
কি হলো বুঝেন নাই তাই তো।
সাদিয়া তার নরম হাত দিয়ে প্রচন্ড গতিতে আমার গালে একটা থাপ্পড় মারলো। আজকে নিয়ে দুই-বার সাদিয়া আমার গালে থাপ্পড় মারলো।
আপনার আবার ভাইবেন না আমি কোনো লুচ্চামি করছিলাম।

স্কুলে থাকতে আমি আমাদের ক্লাসের একটা মেয়ের সাথে কথা বলতাছিলাম মানে মেয়েটি আমার সাথে কথা বলতে ছিল। হঠাৎ কোথা থেকে যেন সাদিয়া আসলো আর আমার গালে প্রচন্ড গতিতে থাপ্পড় মারে। আর বলে,
সাদিয়াঃ তোকে বলে ছিলাম না কোনো মেয়ের সাথে লুচ্চামি করবি না।
তখন আমার সাথে যে মেয়েটি আছিলো সে বললো,
সায়মাঃ সাদিয়া তুমি ভুল বুঝছিস আমি শুধু ওর সাথে পড়ার বিষয় নিয়ে কথা বলতে ছিলাম। (আমি যার সাথে কথা বলতে ছিলাম তার নাম সায়মা)

সায়মা কথাটি বলতে না বলতে। ঠাসসসসসসসসসস
এবারের টা সায়মার গালে পরছে।
ও থাপ্পর টা মেরে চলে যায়। তার পর থেকে কোনো মেয়ে আমার সাথে কথা বলে নি। এক মাএ সাদিয়ার ভয়ে।
সাদিয়া আমাকে এত জোরে থাপ্পর মারবে আমি ভাবতে পারি নি। আমি সাদিয়ার দিকে করুন দিষ্টি তে তাকিয়ে আছি। তখন সাদিয়া বললো,

সাদিয়াঃ আপনার সাহস কি করে হয় আমার নাম নেওয়ার। আপনি কি ভুলে গেছেন এটা অফিস আর আমি এ অফিসের এমডি। সেজন্য রেসপেক্ট নিয়ে কথা বলুন। (ম্যাডাম)
আমিঃ সরি ম্যাডাম। ভুল হয়ে গেছে। (কুত্তি মুখে বললেই তো হতো)
সাদিয়া(ম্যাডাম)– It’s okay। যান আর ম্যানেজার সাহেব থেকে আপনার কাজটা যেনে নিন।
আমিঃ ঠিক আছে ম্যাডাম। বলে চলে আসলাম ওয়াশরুমে কারন গালটা প্রচন্ড ব্যাথা করতা ছিল।

ওয়াশরুমে আসলাম আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গালটার দিকে তাকালাম। তাকিয়ে আমি আবাক কারন গালে পাঁচ আঙুলের দাক হয়ে আছে। এতো জোরে কেউ কাউকে থাপ্পর মারে।
১০ মিনিট লাগিয়ে গালে পানি দিলাম কারন কেউ যদি দেখে তা হলে বলবে আমি নিশ্চই কোনো মেয়ের সাথে লুচ্চামি করছিলাম তাই আমাকে মেরেছে।
কিন্তু সত্যি কথাটা তো আপনারা আর আমি জানি।
প্লিজ কাউকে বলবেন না তাহলে আমার ইজ্জত প্লাস্টিক হয়ে যাবে।

ওয়াশরুম থেকে এসে নিজের ডেস্ক এ গেলাম। তার পর ম্যানেজার আমাকে আমার কাজ বুঝিয়ে দিলেন। আমি আমার মাথাটা ঘুরিয়ে দেখলাম সাদিয়ার কেবিনে আমার ডেস্ক বরাবর। আমার ডেস্ক থেকে ওকে দেখা যাচ্ছে। কত অপরূপ সুন্দরী লাগছে ওকে। এক দৃষ্টিতে আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি হঠাৎ সাদিয়া আমার দিকে তাকালো আর আমি ওকে দেখে বেভাচেকা খেয়ে গেলাম। মাথা ঘুরিয়ে নিজের কাজে মনোযোগ দিলাম।

কাজ করতে করতে দুপুর হয়ে গেছে। সবাই লাঞ্চ করতে যাচ্ছে। তাই আমিও উঠলাম যে আসতে নিব তেমনি চার জন কালিগ আমার সামনে আসলো।
তাদেরকে দেখা আমি পুরো আবাক।
আমার সামনে আমার স্কুল লাইফের বন্ধু আসলো(মিজান, সায়মা,হাসিব,সোহান) আমি তাদেরকে দেখে অবাক।
তখন তাদের কে বললাম,

আমিঃ কিরে কেমন আছিস তোরা? (তাদের চার জনকে উদ্দেশ্য করে বললাম)
তারা চার জন একসাথে উওর দিল আলহামদুলিল্লাহ। ভালো আছি। তুই কেমন আছিস।
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
তার পর ওদের সাথে আর অনেক কথা বললাম,
আমিঃ চল লাঞ্চ করে আসি।

হাসিবঃ হুম। চল।
আমরা সবাই এক সাথে ক্যান্টিনে আসলাম। তার পর খাবার অডার করলাম। আজকে অনেক দিন পর আমরা চার বন্ধু একসাথে বসলাম।
খাবার খেয়ে আবার যার যার কাজে মনোযোগ দিলাম।
হঠাৎ সাদিয়ার কথা মনে হলো। সাদিয়ার কেবিনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও ওর কাজ করছে। জানি না ও লাঞ্চ করেছে কিনা। যাই হোক নিজের কাজে মনোযোগ দিলাম।
বিকেল পাঁচটায় অফিস ছুটি হলো। আমরা চার বন্ধু একসাথে অফিস থেকে বের হলাম।
তখন আমি বললাম,

আমিঃ সায়মা শোন।
সায়মাঃ হুম। বল।
আমিঃ সাদিয়ার সাথে কি তোর কোনো কথা হয় না।
সায়মাঃ না। ওর সাথে প্রয়োজন অথবা অফিসের কোনো কাজ ছাড়া কথা হয় না।
আমিঃ ওওও।
সায়মাঃ হঠাৎ ওর কথা জিজ্ঞেস করলি।
আমিঃ না এমনি।

ওদের সাথে কথা বলতে ছিলাম তখন দেখলাম সাদিয়া অফিস থেকে বের হয়ে একটা গাড়িতে ওঠে চলে গেল। আমি ও ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে কলিং বেল বাজলাম।
কিছু সময় পর ভাবি এসে দরজা খুলে দিল।
আমি ভাবির কপালে একটা চুমু দিয়ে ভিতরে আসলাম। তখন ভাবি জিজ্ঞেস করল।
ভাবিঃ আমার কিউট ভাই আজকে তো অফিসের প্রথম দিন কেমন কাটলো।

আমিঃ হুম। ভালো কেটেছে। (কারন আমার ভালোবাসাকে অনেক দিন পর আমার কাছে পেয়েছি)
ভাবিঃ কি ব্যাপার তোমাকে এতো খুশি লাগছে কেন।
আমিঃ না এমনি।
ভাবিঃ নেহি ডাল মে তো কুছ কালা হে। বলো কি হয়েছে।
আমিঃ পরে বলবো। আগে বলো আম্মু কোথায়।
ভাবিঃ আম্মু তার রুমে আছে যাও।

আমিঃ ঠিক।
আম্মুর রুমে আসলাম দেখলাম আম্মু ঘুমিয়ে আছে তাই আর ডাক না দিয়ে আমি আমার রুমে চলে আসলাম।
রুমে এসে ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম কারন আজকে অনেক কাজ করেছি।
রাতে ভাবি এসে ডেকে গেল। আর বললো,
নিচে খাবার টেবিলে আমার জন্য।
অপেক্ষা করছে।

তাই আমি ফ্রেস হয়ে নিচে আসলাম।
তারপর গিয়ে খাবার টেবিলে বসলাম।
বসতে না বসতেই ভাষণ শুরু।
ভাষনটি কিছুটা এরকম ছিল।
আব্বুঃ তো নবাবজাদা আপনার তো আজকে অফিসের প্রথম দিন ছিল কেমন কাটলো।
আব্বুর মুখে এমন মধুর কথা শুনে।

আমার কলিজা কেঁপে উঠলো।
এক প্লেট সাহস নিয়ে আব্বুকে বললাম,
আমিঃ হুম। আব্বু। আজকের দিনটা ভালো গেছে।
আব্বুঃ তোকে দিয়ে আমার এমন আশা ছিল না।
আমিঃ আমি আবার কি করলাম আব্বু।

আব্বুঃ তুই নিজেদের কোম্পানি রেখে অন্যের কোম্পানিতে কেন জয়েন করলি।
(আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে ইশারায় বললাম,
যে আব্বুকে একটু ম্যানেজ করো)
তখন আম্মু বললো,
আম্মুঃ……………………


পর্ব ৩

(আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে ইশারায় বললাম,
যে আব্বুকে একটু ম্যানেজ করো)
তখন আম্মু বললো,
আম্মুঃ কি শুরু করলে তুমি। ওর যা খুশি ও তা করুক। ওতো এখনো ছোট মানুষ।
আব্বুঃ ঠিক আছে। তোমারা মা-ছেলে যা মনে কর তাই করো। আমি কিছু যানি না।
তারপর খাবার খাওয়া শুরু করলাম।

খাওয়া শেষ করে যেই রুমে আসতে যাব তখন।
ভাইয়া ডাক দিল।
আমি ভাইয়ার কাছে গিয়ে বললাম,
আমিঃ হুম। বলো।

ভাইঃ আজকে তো তোর অফিসে প্রথম দিন আছিলো কোনো সমস্যা হয়েছিল?
আমিঃ না। তেমন কিছুই হয়নি।
ভাইঃ আচ্ছা যা। আর কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলবি ঠিক আছে।
আমিঃ হুম।

বলে নিজের রুমে চলে আসলাম।
খাটের উপর শুয়ে ফেসবুকে একটা গল্প পোষ্ট করলাম।
আজকে সারাদিনের কথা ভাবতেই অবাক লাগে কারন এতো বছর পর আমার ভালোবাসার মানুষটাকে কাছে পেলাম।
আবার তার হাতে থাপ্পর ও খেলাম।

হঠাৎ মনে একটা প্রশ্ন জাগলো।
যদি ওর লাইফে কোনো বয়ফ্রেন্ড থাকে।
তাহলে আমি কি করবো।

আমি তো সাদিয়াকে আমার জীবন থেকে বেশি ভালোবাসি।
ওফ্ আর নিতে পারতে ছিনা।
পরেরটা পরে দেখা যাবে।
এখন ঘুমাতে হবে কারণ আজকে আমি লেট করে অফিসে গেছি। আমি চাইনা কালকেও আমার লেট হোক অফিসে যেতে।
তাই ঘুমিয়ে গেলাম সাদিয়াকে নিয়ে কল্পনা করতে করতে।

সকালে ভাবি এসে আমাকে ডাকছে।
ভাবিঃ ওই আমার কিউট ভাই ওঠে পর সকাল হয়ে গেছে।
আমিঃ (নিশ্চুপ)
ভাবিঃ কি হলো অফিসে যাবানা নাকি।
আমিঃ সাদিয়া আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। প্লিজ আমাকে ছেড়ে আর যেওনা। (ঘুমের মধ্যে বিরবির করে কথা গুলো বলছিলাম)
ভাবিঃ ঠিক আছে তুমি এই ভাবে ওঠবে না। প্রতিদিন তোমাকে যে ভাবে তুলতে হয়। সে ভাবে তুলতে হবে। 😈😈
হঠাৎ আমি চিৎকার দিয়ে উঠলাম।

কারন কে জানি আমাকে পানি দিয়ে ভিজিয়ে।
আমার আরামের ঘুমটা হারাম করে দিয়েছে।
সামনে তাকিয়ে দেখি ভাবি হাত একটা মগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
তখন আমি ভাবিকে বললাম,

আমিঃ ভাবি আজকেও কি তুমি আমাকে ভিজিয়েছ।
ভাবিঃ আমাকে ছাড়া এখানে কি অন্য কাউকে দেখতে পাড়ছো।
আমিঃ আচ্ছা। প্রতিদিন আমাকে কি এই ভাবেই ঘুম থেকে তুলতে হবে।
ভাবিঃ যে দিন তোমার বউ আসবে। সে দিন সে তোমাকে ভালো ভাবে ঘুম থেকে ডেকে তুলবে।
আমি যে কয়দিন আছি আমি একই ভাবে তোমাকে ঘুম থেকে উঠাবো।

আমিঃ দুররররর্। ভালো লাগে না।
ওঠে ওয়াশরুমে গেলাম। যেই ওয়াশরুমে পা রাখলাম তখন পিছন থেকে ভাবি বললো,
ভাবিঃ আচ্ছা এ সাদিয়া কে তুমি চিন নাকি।
ভাবির মুখে সাদিয়ার নাম শুনে আমি যেন আকাশ থেকে মাটিতে পড়লাম।
ওয়াশরুমে না গিয়ে ভাবির কাছে আসলাম।

আমিঃ কি ভাবি। তুমি কি কিছু বলছো। (শুনেও না শোনার ভান করলাম)
ভাবিঃ সাদিয়া কে? আর তুমি চিন নাকি।
আমিঃ ন। না। স। সা। সাদিয়া নাম তো আমি আমার জীবনেও শুনি নাই।
ভাবিঃ তাই নাকি।

আমিঃ হুম।
ভাবিঃ সত্যি কথা না বললে তোমার ভাইয়ের কাছে বলে দিব।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। সত্যি কথা বলবো আগে অফিস থেকে এসে নেই তার পর।
ভাবিঃ ঠিক আছে মনে থাকে যেন। আর তারা তারি নিচে এসো সবাই তোমার অপেক্ষা করছে।
বলে ভাবি চলে গেল। আমিও দাড়িয়ে না থেকে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম ফ্রেস হতে।

অফিসের ড্রেস পরে নিচে আসলাম সাবার সাথে নাস্তা করে অফিসের জন্য বের হতে যাব তখন বললো,
আব্বুঃ কি ব্যাপার ফিরোজ তুই তোর গাড়ি করে অফিসে যাছনা কেন।
আমিঃ আব্বু আমি আর কিছু দিন পর থেকে গাড়ি ব্যাবহার করব। এখন একটু স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে ভাল লাগে।
তার পর সবার থেকে বিদায় নিয়ে অফিসে চলে আসলাম।

আজকে বাঁচা গেল কারন আজকে একটু তাড়াতাড়ি অফিসে আসলাম।
একটু পর দেখলাম আমার (কলিগ+বন্ধু) সোহান আসতাছে।
তখন আমি বললাম,
আমিঃ কিরে দোস্ত কি অবস্থা তোর।
সোহানঃ হুম ভালো। তোর।

আমিঃ হুম। ভালো। ওদের তিন জনকে কল করে দেখ ওরা কোথায়।
তারপর সোহান ওদের কল করলো।
কিছু সময়ের মধ্যে ওরা সবাই এসে পরলো।
আমিঃ চল কফি খেয়ে আসি। এখানো সময় আছে।
সায়মাঃ হুম চল।

তার পর আমরা সবাই কফি খেয়ে অফিসে আসলাম এবং যার যার ডেস্কে যে বসলাম।
আজকে আমার পাখিটা এখন পর্যন্ত আসে নি।
আমি আমার কাজে মনোযোগ দিলাম।
কিছু সময় পর দেখলাম সাদিয়া অফিসে আসলো।
আর এসে সোজা তার কেবিনে ঢুকে গেল।

আজকে ওকে দেখে মনে হচ্ছে রাতে মনে হয় অনেক কান্না করছে।
আমিও আর কোনো কথা না বলে নিজের কাজ করতে লাগলাম।
এইভাবে কাজ করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। আমরা আমরা পাঁচ জন মিলে একসাথে ক্যান্টিন থেকে খাবার খেয়ে আসলাম।
অফিসে এসে নিজের ডেস্ক এ বসলাম।
সাদিয়ার কেবিনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও নেই।
ভাবলাম হয়তো লাঞ্চ করতে গেছে।

বিকেল পাঁচটায় অফিস ছুটি হলো।
আজকে দুপুরে পর আর সাদিয়ার সাথে দেখা হয়নি।
তারপর বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দিতে দরজা খুলে দিল।


পর্ব ৪

তারপর বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দিতে দরজা খুলে দিল।
তাকিয়ে দেখি ভাবি এসে দরজা খুলে দিল।
ভাবি আর আম্মুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে রুমে এসে ফ্রেস হয়ে ক্লান্ত লাগতেছিল তাই ঘুমিয়ে গেলাম।
রাতে ভাবি এসে খাবার খেতে ঢেকে গেল।

ফ্রেস হয়ে নিচে আসলাম।
দেখলাম সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
তাই তারাতাড়ি খাবার টেবিলে বসে পড়লাম।
খাবার খেয়ে রুমে চলে যাচ্ছিলাম।
তখন ভাবি ডাকলো।

আমি ভাবির কাছে এসে বললাম,
আমিঃ হুম বল। কি হইছে।
ভাবিঃ মানে।
আমিঃ মানে তুমি আমাকে কিসের জন্য ডাক দিছ সেটা বলো।
ভাবিঃ হুম সেটা তো বলবো। কিন্তু তোমার কাছে না। তোমার ভাইয়ের কাছে।
এই বলে ভাবি চলে গেল। আর বললো,

ভাবিঃ তোমার ভাই ছাদে আছে তারাতাড়ি আসো।
কি আর করার ছাদে আসলাম।
গিয়ে দেখি ভাবি ভাইকে বলতাছে।
ভাবিঃ এই শুনো। তোমার ভাই প্রেমে পড়েছে। (ভাইয়াকে বললো)
ভাইঃ কি (আবাক হয়ে)

ভাবিঃ হুম। ঠিক শুনছো। আমাদের নবাবজাদা প্রেমে পরেছে।
ভাইঃ ঠিক আছে কার সাথে প্রেম করছে। মেয়েটার নাম কি। (কিছুটা রাগি শুরে)
ভাবিঃ মেয়েটার নাম হচ্ছে সাদিয়া।
ভাইঃ ওহহহ। তাতো আমি আরো অনেক বছর আগে থেকে জানি। , কিন্তু ও সাদিয়াকে পেল কোথায় ওরা তো এখান থেকে চলে গিয়েছিল অনেক বছর আগে। (ভাইয়া অনেকটা অবাক হয়ে)

এখন আপনাদের বলি যে ভাইয়া সাদিয়াকে চিনে কিভাবে।
আমি যে দিন সাদিয়াকে প্রথম দেখেছিলাম ক্লাস ৬ এ। সেদিন থেকে আমি সাদিয়াকে ভালোবেসে ফেলি। স্কুল থেকে বাসায় এসে ভাইয়াকে বলি সাদিয়ার কথা। (কারন আমি আমার ভাইয়ের কাছে সব কথা সেয়ার করি, ভাইয়ার আর আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুর মতো)
আমাদের পরিবারের সাবাই চিনে সাদিয়াকে। কারন সাদিয়া আমাদের বাসায় অনেক বার এসেছিল তাই।
আমি ছাদে আসলাম। ভাইয়া আমাকে দেখে আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো আমি সাদিয়াকে কোথায় দেখেছি।
আমি বললাম,

আমিঃ আচ্ছা বলতো আমি যে কোম্পানিতে চাকরি করি করি সে কোম্পানির নাম কি।
ভাইঃ তুই সাদিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ এ চাকরি করছ তাতে কি হয়েছে।
আমিঃ এই কোম্পানি সাদিয়ার আব্বুর। এখন সাদিয়া ওই কোম্পানির এমডি।
ভাইঃ ওহহহহ্। তাহলে তুই ওর সাথে কথা বলেছিলি? ‌

আমিঃ হুম বলেছিলাম। কথা না বলে,গুন্ডি টা আমাকে থাপ্পর মারছে।
ভাইঃ হাহাহাহা। ও আগের মতো এখনো তেমন রাগি। (হাসতে হাসতে কথা গুলো বললো)
আমিঃ হুম।
এতোক্ষণ যাবাত ভাবি আমার আর ভাইয়ার কথা শুনতে ছিল।
ভাবি বললো,

ভাবিঃ তার মানে তুই সাদিয়াকে ছোট থাকতে ভালোবাসিস। (ভাবি আমাকে কখনো তুই বলে আবার কখনো তুমি)🙂
আমিঃ হুম।
আর অনেক কথা বলে নিজের রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ভাবি এসে আমাকে ঘুম থেকে তুলে গেল।
ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে অফিসের জন্য বের হয়ে গেলাম।

এই ভাবে চলে গেল তিন মাস। এই তিন মাসে অফিসে ভালো নাম অর্জন করেছি।
সাদিয়ার ব্যাপারে অনেক কথা জেনেছি।
সাদিয়া এখন পর্যন্ত সিঙ্গেল।
আর সাদিয়া আমার প্রতি একটু দুর্বল হয়েছে। সেটা ওর আচার আচরণ দেখলে বুঝা যায়।
তো এক দিন নিজের ডেস্কে বসে কাজ করতে ছিলাম।

তখন পিওন এসে বললো,
পিওনঃ স্যার আপনাকে ম্যাডাম মিটিং রুমে ডেকেছে।
আমিঃ ঠিক আছে আপনি যান। আমি যাচ্ছি।
পিওন চলে গেল। আমি ভাবতে ছি আমাকে আবার মিটিং রুমে কেন থাকলো।
তারপর আমি মিটিং রুমে আসলাম।

আমি দরজায় নক করলাম ম্যাডাম আসবো।
সাদিয়া (ম্যাডাম) — হুম। আসুন।
আমি ভিতরে ঢুকে পুরো আবাক।
কারন ভিতরে আমার বন্ধুরা বসে আছে। (সোহান,হাসিব,সায়মা, মিজান)
ম্যাডামঃ বসুন আপনাদের সবার সাথে কিছু জরুরী কথা ছিল। যার জন্য আপনাদের ডাকা হয়েছে।

আমাদের কোম্পানিতে একটা নতুন প্রজেক্টে এসেছে। সেটার জন্য আপনাদের পাঁচ জনকে সিলেক্ট করা হয়েছে।
কাজটি করতে আপনাদের সবাইকে এক সপ্তাহের জন্য চট্রগ্রামে আমাদের যে কোম্পানি আছে। সে কোম্পানিতে যেতে। আর আমাদের কালকের মধ্যে সেখানে যেতে হবে। কারো কোনো প্রশ্ন আছে।
আমরা সবাই একসাথে বললাম না ম্যাডাম।

সবার থেকে বেশি খুশি আমি কারন আমাদের সাথে সাদিয়া ও যাবে।
সাদিয়াঃ আজকে আপনাদের ছুটি। আর কাল সকাল দশটায় আমরা রওনা দিব। তো টাইম মতো আসবেন সবাই।
এই বলে সাদিয়া চলে গেল।
আমরা বন্ধুরা কিছু সময় কথা বলে, বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে সবাইকে জানালাম যে।

আমি কালকে অফিসের কাজে চট্টগ্রাম যাচ্ছি।
বিকেলে ভাবি আমার জামা কাপড় ব্যাগে গুছিয়ে চলে গেল।
রাতে ভাইয়া আর ভাবি এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমরা কে কে সেখানে যাচ্ছি।
আমি ভাইয়াকে বললাম আমি। আমার চার বন্ধু। আর সাদিয়া।

সাদিয়ার নাম শুনে ভাইয়া ভাবি দুজন দুজনকে অনেক খুশি লাগছে।
তখন ভাইয়া বললো দেখ ওর রাগটা ভাঙ্গতে পারছ নাকি।
আমিঃ সাদিয়া আমাকে অনেক জ্বালিয়েছে এখন আমি জ্বালাব।
ভাইঃ ঠিক আছে যা ইচ্ছে করিছ। কিন্তু মাএার বাইরে কিছু করিস না। কারন ও অনেক রাগী।
আমিঃ হুম।

তখন ভাবি বললো,
ভাবিঃ এখন নিচে চলো অনেক রাত হয়ে গেছে। খাবার খেতে চলো। আব্বু আম্মু অপেক্ষা করছে।
নিচে গিয়ে খাবার খেয়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে গেলাম।
কালকে সকালে তারাতাড়ি উঠতে হবে।
সকালে ভাবি এসে ডেকে গেল।

উঠে ফ্রেস হয়ে। রেডি হলাম।
নিচে গিয়ে খাবার খেয়ে। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে।
চলে আসলাম অফিসের সামনে।
করান এখানে সবাইকে আসতে বলা হয়েছে।
আমি অফিসের সামনে এসে পুরো আবাক।


পর্ব ৫

সকালে ভাবি এসে ডেকে গেল।
উঠে ফ্রেস হয়ে। রেডি হলাম। নিচে গিয়ে খাবার খেয়ে। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে।
চলে আসলাম অফিসের সামনে।
করান এখানে সবাইকে আসতে বলা হয়েছে।
আমি অফিসের সামনে এসে পুরো আবাক সাদিয়াকে দেখে।

সাদিয়াকে অপরুপ সুন্দর দেখাচ্ছে।
সাদিয়া নীল জামা পড়েছে সাথে একহাতে কয়েকটা নীল চুড়ি এক হাতে ঘরি,কানে ম্যাচিং ঝুমকা ঘন চুল গুলি খোলে দিয়েছে,চোখে গাঢ় কাজল টেনে ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক পড়েছে। সাদিয়াকে দেখতে নীলপড়ি নীলাঞ্জনার মত লাগছে যার মাঝে অনায়াসে ডুব দেওয়া যায়।
আমি এক পলকেই সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
হঠাৎ মনে হলো কে যেন আমাকে ধাক্কা দিচ্ছে।

তাকিয়ে দেখি আমার বন্ধুরা। তখন সায়মা বললো,
সায়মাঃ ভাই তুই আজকে কি যাবি। নাকি এখানেই হা কর দাঁড়িয়ে থাকবি।
সয়মার কথা শুনে আমার সব বন্ধুরা হেসে উঠলো। আর সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।
সাদিয়াকে এই অবস্থায় আর সুন্দর দেখাচ্ছে।
তারপর আমরা সবাই একটা প্রাইভেট গাড়িতে উঠলাম।

সালারা সাদিয়াকে আমার পাশে বসিয়েছে।
আমার আরেক পাশে বসেছে মিজান।
পিছনের দিকে বসেছে হাসিব আর সায়মা।
আর সোহান বসেছে ড্রাইভার এর সাথে।
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে।

সাদিয়া তার কানে হেডফোন লাগিয়ে আনমনে গান শুনছে। আর আমি এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।
ওর টানা টানা চোখের দিকে তাকালে ওর প্রতি আরও দুর্বল হয়ে পড়ি।
কিছু সময়ের পরে সাদিয়া ঘুমিয়ে পড়েছে আমার কাঁধে মাথা রেখে।
মন চাচ্ছে এই সময়টাকে এই জাগাতে আটকিয়ে রাখি।
আমি ওর কান থেকে হেডফোন গুলো খুলে দিলাম।

তারপর সাদিয়ার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে।
মোবাইল ওপেন করে দেখি wallpaper এ আমার ছোট বেলার ছবি দেওয়া।
আমার মনে অনেক আনন্দ লাগছে।
কারন সাদিয়া এখনো আমাকে ভালোবাসে।

সাদিয়ার মোবাইলটা ওর ব্যাগে রেখে দিলাম। তারপর আমিও সাদিয়াকে দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
কিছু সময় পর গাড়ি একটা রেস্টুরেন্টে এর সামনে থামলো। লাঞ্চ করার পর আবার আমাদের জার্নি শুরু।
অবশেষে
কয়েক ঘন্টা পর আমরা চট্রগ্রাম পৌঁছে গেলাম।
আমরা সবাই একটা বাড়ির সামনে নামলাম।

সামনে থেকে একটা মেয়ে এসে কিছুক্ষণ কথা বললো। মেয়েটাকে দেখতে অনেক সুন্দর। যে কেউ দেখলে ক্রাশ খাবে নিশ্চিত।
তারপর একে একে ম্যাডাম আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন।
আর বললেন আমরা এখানে যে কোম্পানিতে কাজের জন্য এসেছি সেই কোম্পানির ম্যানেজার এই মেয়ে। মেয়েটির নাম হচ্ছে রোজা।
রোজা বললো আমরা সবাই এই কয়দিন এই বাসায় থাকবো। রোজা আমাদের একে একে আমাদের সবার রুম দেখিয়ে দিল। বাসাটা অনেক বড় তাই সবার রুম আলাদা।
আমার রুমের পাশের রুমটা রোজার।

আমি রুমে ঢুকলাম। রুমটা অনেক গুছানো। দেখে ভালো লাগলো।
তারপর চলে গেলাম ওয়াশরুমে। ঝর্নার নিচে পানি ছেড়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকলাম অনেক ক্লান্ত লাগতেছিল।
ফ্রেস হয়ে এসে রুমে ভালো লাগছিল না তাই ছাদে গেলাম।
ছাদটা অনেক বড়। একপাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।

হঠাৎ পিছনে মনে হলো কেউ দাঁড়িয়ে আছে। পিছে তাকিয়ে দেখি রোজা দাঁড়িয়ে আছে।
রোজাঃ আপনি এখানে কি করছেন।
আমিঃ কিছু না রুমে ভালো লাগছিল না তাই ছাদে চলে আসলাম।
রোজাঃ ওহহহহ্।

কিছু সময় পর সাদিয়া ছাদে আসলো এসে বলো।
সাদিয়াঃ এখানে কি করছেন আপনারা।
পিছনে তাকিয়ে দেখি সাদিয়া চোখ লাল করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি বললাম, কিছু না ম্যাডাম। রুমে ভালো লাগছিল না তাই ছাদে আসছিলাম।
রোজাঃ আমি তাহলে নিচে গেলাম ম্যাডাম আমার কাজ আছে।

এই বলে রোজা নিচে চলে গেল।
ম্যাডাম আমার পাশে দাঁড়ালো।
আমি আর কোনো কথা না বলে নিজের রুমে আসলাম। এসে ঘুমিয়ে গেলাম।
রাতে ফ্রেস হয়ে নিচে এসে দেখি সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে। আমি গিয়ে তাদের সাথে আড্ডায় জয়েন করলাম। কিছু সময় পর সাদিয়া বললো কাল থেকে অফিসে যেতে হবে। সকাল নয়টায়। (যে কাজের জন্য এখানে আসা)
আমরা বললাম ঠিক আছে ম্যাডাম।

তারপর ডিনার শেষ করলাম। তখন সবাই মিলে বসলাম আড্ডা দিতে। কিন্তু ম্যাডাম আমার পাশে বসেছে। অনেক ভালো লাগছিল কিন্তু সাদিয়াকে জ্বালাতে হবে তাই আমি সেখান থেকে ওঠে এসে রোজার পাশে বসলাম।
সাদিয়া আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। তা আমার বন্ধুরা খেয়াল করেছে।
তখন সাদিয়া ওঠে তার রুমে চলে গেল।

আমার সেখানে খেয়াল না করে আড্ডা দিতে থাকলাম।
রাত এগারোটা বাজে আমরা সবাই যার যার রুমে চলে এলাম। ঘুমাতে হবে কালকে আবার অফিস আছে।
শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম কাল থেকে সাদিয়াকে কিভাবে জ্বালাব।
কিছু সময় পর ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে রোজা এসে ঘুম থেকে ডেকে তুলে গেল।

ফ্রেস হয়ে। নিচে চলে আসলাম। নাস্তা করে নির্দিষ্ট সময়ে সবাই অফিসে চলে আসলাম আমাদের যেই কাজের জন্য এখানে আসা সেই কাজ করা শুরু করে দিলাম।
এইভাবে আর ও পাঁচটা দিন চলে গেল আজকে আমরা যেই প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করছিলাম তা শেষ হলো। সবাই আজকে অনেক খুশি। তারপর সবাই বাসায় আসলাম।
এই কয়দিনে রোজা অনেকটা চেন্জ হয়ে গেছে কারণ সে আপনি থেকে এখন তুমি বলা শুরু করেছে। আর আমাকেও তুমি করে বলতে বলেছে। এই কয়দিন সাদিয়াকে অনেক ইগনোর করেছে ও অনেক বার কথা বলতে এসেছিল কিন্তু আমি কোনো কথা বলিনি।

ছাদে এসে দাঁড়িয়ে আছি। পেছন থেকে রোজা বললো, কি করছো এখানে।
আমিঃ তেমন কিছু না।
রোজাঃ ওহহহহ্। আচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।
আমিঃ হুম বলো।
রোজাঃ কি ভাবে যে বলি।
আমিঃ সমস্যা নেই তা বলার বলে ফেলো।

রোজাঃ না কিছু না। এমনি আরকি।
আমি আর কিছু বললাম না। কিছু সময় পর সায়মা এসে ডেকে গেল ডিনার করার জন্য।
আমি আর রোজা একসাথে নিচে আসলাম।
খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম।
সাদিয়া বললো তোমাদের সবাইকে একটা Good News দিতে চাই।
আমরা সবাই আগ্ৰহ নিয়ে সাদিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম কি।

সাদিয়া বললো আমাদের প্রজেক্ট টা ভালো ভাবে শেষ হওয়ার কারনে আমরা আরো পাঁচ দিনে এখানে থেকে ইন্জয় করবো। আর কালকে আমরা যাচ্ছি কক্সবাজার। আগামি পাঁচ দিন সেখানেই থাকবো।

সবাই অনেক খুশি হলো। তারপর খাবার খেয়ে। সবাই আড্ডা দিতে বসছে।
আমি ওদেরকে বললাম আমার ভালো লাগছে না তাই আমি রুমে চলে আসলাম
আজকে অনেক ক্লান্ত লাগতেছিল তাই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে আসলাম নাস্তা করে কিছু সময় পর সবাই রওনা দিলাম কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে।

Protilipi bangla premer golpo


পর্ব ৬

সবাই অনেক খুশি হলো। তারপর খাবার খেয়ে। সবাই আড্ডা দিতে বসছে।
আমি ওদেরকে বললাম আমার ভালো লাগছে না তাই আমি রুমে চলে আসলাম।
আজকে অনেক ক্লান্ত লাগতেছিল তাই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে আসলাম নাস্তা করে কিছু সময় পর সবাই রওনা দিলাম কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে।
কিছু সময়ের মধ্যে আমরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে গেলাম। সেখানকার একটা হোটেলে আমাদের রুম বুক করা হলো। রুমে আসলাম ফ্রেস হয়ে সবাই চলে আসলাম লাঞ্চ করতে।

রুমে এসে বসলাম। তখন সায়মা রুমে আসলো।
সায়মাঃ কিরে দোস্ত তুই এমন করছিস কেন।
আমিঃ আমি এখন আবার কি করলাম।
সায়মাঃ মানে। তুই না সাদিয়াকে ভালোবাসি স তাহলে। তাহলে তুই ওকে এমন ভাবে ইগ্নোর করছিস কেন।
আমিঃ হুম ভালোবাসি কিন্তু কিভাবে বলবো তুই বল। তুই তো জানিস সাদিয়া কেমন।

সায়মাঃ হুম। বুঝলাম। তুই এক কাজ করে দেখতে পারিস তবে সাদিয়া তোকে ভালোবাসে নাকি।
আমিঃ কি।
সায়মাঃ……………….
সায়মা আমাকে যা বললো তা আপনাদের কিছু সময়ের পর জানানো হবে।
সায়মা চলে গেল। আমিও আর কিছু না ভেবে বাইরে চলে আসলাম।

বিকেলে সবাই একসাথে বের হালাম ঘুরাতে যাওয়ার কথা ছিল তাই।
সাবাই সাগরের পার আসলাম। সবাই একসাথে হাঁটছি। আমি সাদিয়া কে বললাম, সাদিয়া তোমার সাথে একটু কথা ছিল।
সাদিয়াঃ হুম বলো কি কথা।

এমন সময় সাদিয়ার মোবাইলে কল আসলো।
আর সাদিয়া কল ধরে জা বললো তা শুনে আমরা সবাই অবাক।
সাদিয়াঃ হুম জান বলো। কেমন আছো তুমি। (মোবাইল এ কল করা লোক টাকে বললো) সাদিয়া মোবাইলে কথা বলতে বলতে সাইডে চলে গেল।
আমার চোখটা পানিতে ভরে গেল।
হঠাৎ রোজা বললো,
রোজাঃ ফিরোজ চলো আমার এই পাশে যাই।

রোজা কথাটা বলতে না বলতে সাদিয়া আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেন আমি কোনো বড় অপরাধ করে ফেলেছি।
আমিঃ আমি বললাম ঠিক আছে চলো।
এখন সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমি আর কোনো কথা না বলে রোজাকে নিয়ে আপর দিকে চলে আসলাম।
কিন্তু ভালো লাগছিল না। তাহলে কি সাদিয়ার জীবনে কি অন্য কেউ আছে।
হঠাৎ রোজা বললো, চলো ওই জায়গাটায় গিয়ে বসি।
আমিঃ ঠিক আছে চলো।
রোজাঃ আমি আইসক্রিম খাবো। তুমি খাবে।

আমিঃ না। তুমার জন্য আমি আইসক্রিম নিয়ে আসি।
আইসক্রিম এনে রোজার হতে দিলাম।

আমিঃ রোজা আমাকে একটা হেল্প করতে পারবে।
রোজাঃ হুম বলো কি হেল্প। বলো তোমার জন্য সব করতে পারব।
আমিঃ রোজা আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করতে পারবে। প্লিজ।

রোজাঃ মানে। কি বলতে চাচ্ছ তুমি।
আমিঃ আমি সাদিয়াকে ভালোবাসি। আমি জানি না ও আমাকে ভালোবাসে নাকি। তাই সবার সামনে আমার একটু অভিনয় করবো যেন আমার প্রেমিক-প্রেমিকা।
(হঠাৎ খেয়াল করলাম রোজার হাঁসি মুখটা ফ্যাকাস হয় গেল। বুঝলাম না কেন)
রোজাঃ ঠিক আছে আমি রাজি।
তখন আমার বন্ধুরা আসল

তারপর সবাই বসে বসে সূর্য অস্ত যাচ্ছে তা দেখলাম।
সবাই খুশি ছিল কিন্তু এক জন খুশি ছিল না সে হলো আমি।
কিছু সময় পর সবাই মিলে একটা রেস্টুরেন্টে এ ঢুকলাম। সেখানে সবাই অনেক ইন্জয় করলাম। ডিনার করে রুমে চলে আসলাম। ওয়াশরুমে এসে পানি ছেড়ে ঝর্নার নিচে বসে পরলাম। অনেক কান্না আসতাছে। ফ্রেস হয়ে খাটে বসে মোবাইলে সাদিয়ার ছবি দেখতে লাগলাম। কতো মায়াবি লাগছে সাদিয়াকে।
সারাটা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম।

এইভাবে আরও একটি দিন চলে গেল। এখন সবাই ভাবছে রোজার সাথে আমার কিছু চলছে। কিন্তু সত্যটা কি তা শুধু আমি আর রোজা জানি।
সারা দিন সবাই অনেক মজা করলাম কিন্তু বিকেল বেলা এমন কিছু ঘটবে তা কেউ আশা করতে পারি নি। কারন।
বিকেল বেলা আমরা সবাই সমুদ্র পাড়ে হাঁটছি। হঠাৎ রোজা আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো আর বলতে লাগলো
রাজাঃ ফিরোজ আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। যেদিন থেকে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম সেইদিন থেকে তোমার প্রতি আমার একটা ভালো লাগা কাজ করছে। প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।

রোজা কথা গুলো বলতে না বলতে।
ঠাসসসসসসস। ঠাসসসসসস্। এমন ভাবে চার থাপ্পর এসে আমার গালে পরে। থাপ্পর গুলো অনেক জোরে পড়ায় মাথাটা ভন ভন করে ঘুরাচ্ছে।
সামনে তাকিয়ে দেখি থাপ্পর গুলো আর কেউ না সাদিয়া এসে মেরেছে।
সবাই অবাক হয়ে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

সাদিয়া কান্না করতে করতে বলতে লাগলো, তোকে অনেক ভালোবেসে ছিলাম আর তুই ছি। ছোট বলে তোকে যেদিন ছেরে চলে গিয়েছিলাম সেই দিন অনেক কান্না করেছিলাম। ভেবেছি তোকে আমি হারিয়ে ফেলেছি। তোকে যেদিন অফিসে দেখেছিলাম তখন তোকে দেখে অনেক খুশি হয়ে ছিলাম মনে হচ্ছিল আমি আমার হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসাকে আবার খুঁজে পেয়েছি। সেইদিন তোকে থাপ্পর মেরে ছিলাম কারন তোর প্রতি আমার অনেক অভিমান হয়েছিল। সেই দিন রাত্রে বাসায় গিয়ে অনেক কেঁদে ছিলাম তোকে থাপ্পর মেরে ছিলাম তাই। আবার খুশিতে ও কারন আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে আমার ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

আমি ভেবেছিলাম তোকে প্রপোজ করবো কিন্তু তুই তো আমার সাথে কথা ও বলতি নাই। হঠাৎ নতুন প্রজেক্টে আসে তাই আমি ভাবি তোকে সেখানে ঘুরতে গিয়ে প্রপোজ করবো কিন্তু তুই এখানে এসে আমাকে এক বারে ইগ্নোর করছিস। ভেবেছিলাম হয়তো অভিমান করেছিস তাই কক্সবাজার আসার প্লেন করি। ভেবেছিলাম এখানে তোকে প্রপোজ করবো কিন্তু তুই এখানে এই মেয়ের সাথে লুচ্চামি করছিস। আর কখনো আমার সামনে আসবি না। আমি তোকে ঘৃণা করি। I Hate You। বলে সাদিয়া কান্না করতে করতে চলে গেল।
সাদিয়ার পিছে আমার বন্ধুরা ও চলে যদিও কোনো সমস্যা হয় তাই। আর আমি সেই জায়গায় মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।

এ আমি কি করলাম। যে মেয়ে আমাকে এতো ভালোবাসে আমি তার ভালোবাসার পরিক্ষা নিচ্ছিলাম।
ও আপনাদের তো বলা হয় নি সে দিন সায়মা আমাকে কি বলেছিল। তাহলে শুনুন মানে পড়ুন।
। ফ্লাশব্যাক।
সায়মাঃ হুম। বুঝলাম। তুই এক কাজ করে দেখতে পারিস তবে সাদিয়া তোকে ভালোবাসে নাকি।
আমিঃ কি করতে হবে।

সায়মাঃ শোন মেয়েরা ঝাঁকে ভালোবাসে। তাকে অন্য মেয়েদের সাথে দেখতে পারে না। তাই তুই এক কাজ কর সাদিয়ার সামনে অন্য মেয়েদের সাথে থাকবি কথা বলবি। তাহলে দেখতে পারবি সাদিয়া তোকে ভালোবাসে নাকি।
আমিঃ যদি একটু বেশি হয়ে যায়। কারন তুই তো জানিস সাদিয়া কেমন রাগী মেয়ে।
সায়মাঃ বেশি কিছু হবে আমি আছি তো।

আমি আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে যাই। বাইরে এসে সায়মার কথা গুলো বলছিলাম হঠাৎ কাঁধে কারে স্পর্শ করে। পিছনে তাকিয়ে দেখি রোজা।
রোজা বললো, কি হয়েছে তোমার কোনো সমস্যা। এখানে কি করছো।
আমিঃ না কোনো সমস্যা নেই।
তারপর রোজা সেখান থেকে চলে যায়। আর আমি ও রুমে চলে আসলাম। আর এসে শুয়ে পড়লাম।
বাকি গুলো আপনার তো জানেনই।

সেখানে বসে বসে ভাবছিলাম আমি এটা কি করে ফেললাম। কেন ওর ভালোবাসার পরিক্ষা নিতে গেলাম। মেয়েটা কত ভালোবাসে আমাকে আর আমি তা বুঝতে পারলাম না। অনেক কান্না করলাম। আমার ভুলের কারণে আজকে এমন হলো। অনেকতে অনেক লেট করে হোটেলে আসলাম। নিজের রুমে এসে দেখলাম সব বন্ধুরা বসে আছে সাদিয়া আর রোজা ছাড়া।
হঠাৎ ঠাসসসসসসস্
সোহান আমাকে থাপ্পর মারলো আর বলতে লাগলো কেন এমন করেছিস ওর সাথে। ওতো স্কুল লাইফ থেকে তোকে ভালোবাসতো। তাইতো ও কোনো মেয়ের সাথে তোকে মিশতে দিতো না। তারপরও তুই বুঝলি না।(সোহান এক সাথে কথা গুলো বললো)

আমি সোহানা কে জরিয়ে ধরে বললাম, ভাই বিশ্বাস কর আমি শুধু ওর মুখ থেকে বের করতে চেয়েছিলাম যে ও আমাকে ভালোবাসে।
সোহানঃ তুই কি জানিস না মেয়েদের বুক ফাটে কিন্তু মুখ থেকে কথা বের হয় না।
আমিঃ সরি দোস্ত। আমি আর এমন করবো না সাদিয়াকে বলনা এক বার আমার সাথে কথা বলতে।

সোহানঃ সাদিয়া তো বিকেল থেকে এসে রুমে ঢুকেছে। আর বের হয়নি। ওকে অনেক ঢেকেছি তবুও কোনো কাজ হয় নি।
কথাটা শুনা মাত্র আমি দৌড়ে সাদিয়ার রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে অনেক ঢাকলাম কিন্তু ও দরজা খুললো না। আমার বন্ধুরা আমাকে ধরে রুমে নিয়ে আসল। সারাটা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম আমরা।
সকাল বেলা এমন কিছু হবে তা আমি ভাবতেই পারিনি।


পর্ব ৭

কথাটা শুনা মাত্র আমি দৌড়ে সাদিয়ার রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে অনেক ঢাকলাম কিন্তু ও দরজা খুললো না। আমার বন্ধুরা আমাকে ধরে রুমে নিয়ে আসল। সারাটা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম আমরা।
সকাল বেলা এমন কিছু হবে তা আমি ভাবতেই পারিনি।
ভোর রাতে (সায়মা, সোহান,হাছিব, মিজান) ওরা সবাই ঘুমিয়ে যায়।

সকালে সবার ঘুম থেকে উঠার আগে আমি সাদিয়াকে রুমে সামনে আসলাম আধা ঘন্টা লাগিয়ে দরজায় নক করলাম। তার পর সাদিয়া এসে দরজা খুলে দিল।
সাদিয়াকে দেখে আমার চোখে কান্না এসে পরলো।
ও মনে হয় সারা রাত না ঘুমিয়ে কান্না করতে করতে কাটিয়ে দিয়েছে। চেহারাটা একদম বাজে দেখাচ্ছে। চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে। হঠাৎ আমি ওর হাতের দিকে খেয়াল করলাম। ওর হাতে ওর জামা কাপড়ের ব্যাগ। মনে হচ্ছে ও এখান থেকে চলে যাবে। আমার ভাবনা কাটিয়ে সাদিয়া বললো,
সাদিয়াঃ একটু সাইড হয় দাঁড়ান। আমি বের হবো।

আমার ওর চলে যাওয়ার কথা শুনে আমার রাগ উঠে গেলে। রাগে ওর হাত ধরে রুমের ভিতর নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলাম।
সাদিয়া ভয়ে চুপসে গেছে এটা ওর চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছে।
আমিঃ কোথায় যেতে চাচ্ছিলে। (কিছুটা ধমকের সুরে)
সাদিয়াঃ (নিশ্চুপ শুধু কান্না করছে)
আমিঃ কি হলো এমন মরা কান্না করছ কেন। কেউ কি মারা গেছে।

সাদিয়াঃ আমি কাউকে জবাব দিতে বাধ্য নেই।
আমিঃ সাদিয়া তুমি কালকে যা দেখেছ তা সব ভুল। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। প্লিজ আমাকে বুঝানোর একটু সময় দেও।
সাদিয়াঃ প্লিজ আপনি এখান থেকে চলে যান। (কান্না করতে করতে বললো)
আমিঃ সাদিয়া প্লিজ একটু সময় দেও আমাকে বুঝানোর প্লিজ একটু সময়।
সাদিয়াঃ আপনি যদি এই মূহুর্তে এখান থেকে চলে না যান তাহলে আমার মরা মুখ দেখবেন (চিৎকার দিয়ে বললো)

আমিঃ ঠিক আছে চলে যাচ্ছি। কিন্তু একটা কথা বলতে চাই তুমি অনেক বড় ভুল করছো। কান্না করতে করতে চলে আসলাম রুমের দরজা খুলে দেখি বন্ধুরা দাঁড়িয়ে আছে।
আমি ওদেরকে কিছু না বলে নিজের রুমে চলে এলাম। সব জামাকাপড় গুছিয়ে বাইরে চলে আসলাম।
সায়মাঃ কি হয়েছে। তুই তোর জিনিসপত্র গুছিয়ে নিলি কেন। সব দোষ আমার জন্য হয়েছে চল সব এখন আমি ঠিক করে দিব।
মিজানঃ দেখ দোস্ত তুই চলে যাসনা। সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।

আমিঃ নারে দোস্ত বাসায় একটু সমস্যা হয়েছে তাই চলে যাচ্ছি।
সোহানঃ ভুলে যাস না আমরা তোর বন্ধু। আমাদের কাছে তুই মিথ্যা কথা বলছিস।
সব হারামি গুলি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমিঃ দোস্ত এখন আমার যেতে হবে। প্লিজ আমাকে যেতে দে।

অনেক বুঝানোর পর ওরা আমাকে ছাড়লো।
দেখলাম সাইডে রোজা দাঁড়িয়ে আছে।
আমিঃ রোজা তুমি আমার জন্য যা করেছ তার জন্য অনেক ধন্যবাদ তোমাকে। আল্লাহ হাফেজ আর দেখা নাও হতে পারে।
চলে আসলাম সেখান থেকে। বুকটা অনেক বথ্যা করছে। অনেক কষ্টে বাসে উঠলাম। অজরে চোখের পানি পড়ছে। যেন কান্নার বাঁধ ভেঙে গেছে।
অপরদিকে সাদিয়া ও কারো কোনো কথা না শুনে বের হয়ে গেল।

অনেক কষ্টে বাসায় আসলাম। বসার কলিং বেল চাপতেই ভাবি এসে দরজা খুলে দিল। আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরলো। বাসার ভিতরে ঢুকলাম।
আমিঃ কেমন আছো ভাবি।
ভাবিঃ তোকে ছাড়া কিভাবে ভালো থাকি। তোকে ছাড়া পুরো বাসা খালি লাগছিল। এখন তুই এসে পড়েছিস। এখন সবাই ভালো থাকবে।
হঠাৎ ভাবি আমার চেহারার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।

ভাবিঃ কি হয়েছে ফিরোজ তোর অবস্থা এমন কেন। মনে হয় রাতে ঘুমাছ না কান্না করিস।
আমিঃ আরে না কি বলো। তোমাদের থেকে অনেক দিন দূরে ছিলাম। আবার জার্নি করে এসেছি তাই এমন দেখাচ্ছে।
ভাবিঃ ফিরোজ আমি তোকে সত্যি কথা বলতে বলেছি।

আমিঃ আরে কিছু না। তুমি বলো আম্মু কোথায়।
ভাবিঃ আম্মু তার রুমে হয়তো ঘুমোচ্ছে।
আমিঃ ঠিক আছে ভাবি। আমি আমার রুমে গেলাম।
রুমে চলে এলাম। ভিতরটা কেমন জানি লাগছে।

ওয়াশরুমে চলে আসলাম ঝর্নায় পানি ছেড়ে ইচ্ছে মতে কাঁদতে লাগলাম। মন চাচ্ছে চিৎকার করে বলতে কেন হলো আমার সাথে এমন। ঘন্টা খানেক পর রুমে এলাম অনেক ক্লান্ত লাগছে তাই ঘুমিয়ে গেলাম।
রাতে ভাবি খেতে ডেকেছিল। কিন্তু ভালো লাগছিল না তাই যাই নি। আবার ঘুমিয়ে গেলাম। হঠাৎ অনেক খুদা লাগছে কারন গত কাল থেকে কিছুই খাইনি। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভোর চারটা বাজে। ভাবির রুমের সামনে গিয়ে দু-এক বার বাক দিতেই ভাবি দরজা খুলে দিয়ে বললো,
ভাবিঃ আমি জানতাম তুমার খিদে লাগবে। তাই তোমার খাবার ফ্রিজে রেখে আসছিলাম। চলো এখন।

আমিঃ Thank You ভাবি।
তারপর ভাবি আমাকে খাবার গরম করে দিল।
আমিঃ ভাবি আমার ভালো লাগছে না। প্লিজ আমাকে খাইয়ে দিবে।
ভাবিঃ ঠিক আছে।
ভাবি আমাকে খাইয়ে দিতে লাগল। হঠাৎ ভাবি আমাকে জিজ্ঞেস করল।
ভাবিঃ তুই কি আমাকে একটা কথা বলতে পারবি।

আমিঃ কি কথা।
ভাবিঃ সেখানে কি হয়েছিল আমি সব জানতে চাই।
আমিঃ ভাবি আমি এসব নিয়ে এখন তোমার সাথে কথা বলতে পারবো না প্লিজ জোর করনো প্লিজ।
বলে সেখান থেকে চলে আসলাম রুমে।

এভাবে আরও দু দিন চলে গেল। কারো সাথে কোনো প্রকার কথা বলিনি। ভাবি খাবারের জন্য ডাকলে খেতাম না। রাতে ছাদে বসেছিলাম।
হঠাৎ ভাইয়া আর ভাবি আসলো। ভাইয়া আমাকে জিজ্ঞেস করলো সেখানে কি হয়েছিল। ভাইয়া কে সব খুলে বললাম,ঠাসসসসসসস। ভাইয়া আমাকে একটা থাপ্পড় মারলো।
ভাইঃ বলেছিলাম না বেশি কিছু না করতে। তারপরও কেন করলি।
আমিঃ (নিশ্চুপ)

ভাইয়াঃ যা হবার তা হয়ে গেছে। এখন সামনে কি করবি সেটার চিন্তা কর। কাল থেকে প্রতিদিন অফিসে যাবি। আমি আব্বুকে বলে দিব। ঠিক আছে।
আমিঃ হুম। ঠিক আছে।
ভাইয়াঃ তা এখন অনেক রাত হয়ে গেছে রুমে যা।
আমিঃ ঠিক আছে। বলে রুমে চলে আসলাম।

এভাবে চলে গেল একটা বছর।
নিজের কেবিনে বসে কাজ করছি এমন সময় ভাইয়া আসলো আর বললো,
ভাইঃ ফিরোজ আমাকে একটা হেল্প করে দিতে পারবি প্লিজ।
আমিঃ হুম বলো কি হেল্প।

ভাইঃ তোর রুহিকে (ভাবির নাম) একটু শপিং করতে নিয়ে যাবি প্লিজ ভাই না করিস না। আমার জরুরী একটা মিটিং আছে প্লিজ জানা।
আমিঃ না আমি পারবো না।
ভাইঃ প্লিজ মানা করিস না।
আমিঃ হুম ঠিক আছে যাব কিন্তু টাকা তুমি দিবে।

ভাইঃ ঠিক আছে বলে ভাইয়া তার মানিব্যাগ থেকে একটা কার্ড দিল।
আমি সোজা বাসায় চলে আসলাম। বাসায় কয়েক বার কলিং বেল বাজাতে ভাবি এসে দরজা খুলে দিল।
ভাবিঃ তোমার ভাই আমাকে কল করে বলে দিয়েছে। তার তারি ফ্রেস হয়ে এসো।
আমিঃ ঠিক আছে। বলে নিজের রুমে চলে এলাম। ফ্রেস হয়ে বাইরে আসলাম।

আমিঃ ভাবি আমার কলিজা টা কোথায়। (আমার ভাগ্নি)
ভাবিঃ নিচে ওর দাদুর কাছে।

আমরা গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।
কিছু সময়ের মধ্যে ভাবির কেনাকাটা হয়ে গেল।
ভাবি মিহি কে কোলে নিয়ে হাঁটছে। আর আমি শপিং ব্যাগ নিয়ে।
হঠাৎ সামনে একটা মেয়ে সামনে আসলো। আর এসেই।
ঠাসসসসসসসসসসসস্


পর্ব ৮

আমরা গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।
কিছু সময়ের মধ্যে ভাবির কেনাকাটা হয়ে গেল।
ভাবি মিহি কে কোলে নিয়ে হাঁটছে। আর আমি শপিং ব্যাগ নিয়ে।
হঠাৎ সামনে একটা মেয়ে সামনে আসলো। আর এসেই।
ঠাসসসসসসসসসসসস্

মেয়েটা কে দেখে আমি পুরো আবাক কারন মেয়েটা ছিল সায়মা।
সায়মাঃ ওই কু্ত্তা কোথায় ছিলি এই কয়দিন। আর তুই আমার কল, মেসেজ এর রিপ্লাই দেছ না কেনো।
আমি কোনো কথা না বলে ওকে জরিয়ে ধরলাম,আর বললাম,
আমিঃ রাগীস কেন। আগে বল তুই কেমন আছিস।

সায়মাঃ আগে তুই আমার কথার জবাব দে। আমাকে ছাড়িয়ে।
আমিঃ এমনি আরকি।
সায়মাঃ তুই আমার উপর রেগে আছিস তাই না।
আমিঃ আরে না। তোর উপর রেগে থাকবো কেন। তুই আমার কিউট একটা কু্ওি। এখন বল তুই কেমন আছিস আর বাকি গুলোর কি অবস্থা।
সায়মাঃ হুম ভালো আছি। আর বাকি গুলো ও ভালো আছে। সাদিয়ার সাথে কি তোর কোনো কথা হয় নাই।
আমিঃ হুম হয়েছিল। কথা বলতে গেল থাপ্পর ফ্রি পাইতাম।

সায়মাঃ সরি দোস্ত আমার জন্য তোদের এমন হয়েছে।
আমিঃ বাদ দে তো।
সায়মাঃ তোর সাথে মেয়েটা কে।
আমিঃ আমার আপুর মতো ভাবি। ভাবির সাথে সায়মার পরিচয় করিয়ে দিলাম।
সায়মাঃ চল কফি খেয়ে আসি। তোকে একটা গুড নিউজ দিব।
আমরা সবাই কফি খেতে আসলাম হঠাৎ সায়মা বললো,

সায়মাঃ ফিরোজ আগামী সপ্তাহে আমার বিয়ে।
আমিঃ কি আগামী সপ্তাহে তোর বিয়ে আর তুই আজকে আমাকে বলছিস।
সায়মা আমার কথা শুনে রেগে গিয়ে বলল, আরেক বার বললে তোর সব দাঁত ফেলে দিব। তোকে কত কল করেছি একটা কল ও ধরেছিস। এখন আবার বলে আমাকে আগে বলিস নি কেন।

আমিঃ আচ্ছা সরি। এখন বল তোর মতো পেত্নী কার গারে গিয়ে চাপলো।
সায়মাঃ দেখ আমাকে রাগস না ছেলে তোর থেকে বেশি হ্যান্ডসাম।
আমিঃ তাই নাকি তা হলে তো ভালোই।
সায়মাঃ শোন তুই কিন্তু বিয়ের কিছুদিন আগে চলে আসবি। না হলে তোর অবস্থা খারাপ করে ফেলবো।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আসবো।

সায়মার সাথে আরো কিছু সময় কথা বলে বাসায় চলে আসলাম। ফ্রেস হয়ে লাঞ্চ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। এই ভাবে যেতে লাগলো দিন।
এর মধ্যে সায়মা আমাকে অনেক কল করেছে কাল কে ওর বিয়ে আর আমি এখন পর্যন্ত আসিনি।
সারাদিন পরে বিকালে রেডি হয়ে বেরিয়ে পরলাম সায়মার বাসার উদ্দেশ্যে।
কিছু সময়ের মধ্যে এসে পরলাম।

আমার বন্ধুরা আমাকে এসে জরিয়ে ধরলো। কারন আজকে অনেক দিন পর আবার আমাদের দেখা হয়েছে। সায়মার বাবা মায়ের সাথে কৌশল বিনিময় করলাম।
আমিঃ আঙ্কেল এর কাছ থেকে জিজ্ঞাস করলাম সায়মা কোথায়।
আঙ্কেল বললো, সায়মা ওর রুমে।
আমি আর আমার বন্দুরা মিলে সায়মার কাছে গেলাম। সায়মা অনেক সময় লাগিয়ে জারি দিল। অনেক কষ্টে ওকে শান্ত করলাম। তার আমরা সবাই মিলে অনেক সময় মজা করলাম।

কিছু মেয়ে এসে সায়মাকে স্টেজে নিয়ে গেলে হলুদ দিতে।
আর আমরা চার বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছি।
হঠাৎ আমার চোখ এক জায়গায় আটকে গেল।
সাদিয়া একটা ছেলের হাত ধরে কথা বলছে।
এটা দেখে আমার অনেক রাগ উঠে গেলে।

হঠাৎ হাসিব বললো, দোস্ত রাগিস না ওটা সায়মার কাজিন।
আমি আর কিছু বললাম না।এভাবে আজকের দিনটা চলে গেল।
রাত দশটা ছাদে গেলাম গিয়ে দেখি একটা মেয়ে ছাদের এক কোনায় বসে কান্না করছে। মেয়েটার সামনে গিয়ে দেখি এটা সাদিয়া।
আমিঃ কি হয়েছে তোমার কান্না করছো কেন।
আমার কথা শুনে সাদিয়া কেঁপে উঠলো।

সাদিয়া কিছু না বলে আমার পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো। আমি সাদিয়ার হাত ধরে ফেললাম।
আমিঃ তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
সাদিয়াঃ আপনার কথা শুনার মতো আমার কাছে সময় নেই।
সাদিয়া কে একটা হেঁচকা টান দিয়ে আমার সামনে আনলাম।
আমিঃ আমি বললাম না আমার তোমার সাথে জরুরী কথা আছে। (কিছুটা ধমকের সুরে)

সাদিয়াঃ আপনার মতো বাজে ছেলের কথা শোনার মতো আমার কাছে সময় নেই।
ঠাসসসসসসসসস্। (আজকে অনেক দিন পর তৃপ্তি পেলাম সাদিয়াকে থাপ্পর মেরে)
আমিঃ এখন চুপ চাপ আমার কথা শুনবি। তার আগে যেন তোর মুখ থেকে কোনো শব্দ যেন না আসে। (রেগে গিয়ে)
সাদিয়াঃ (নিশ্চুপ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে)

আমি বলতে লাগলাম, আমি যেই দিন থেকে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম সেইদিন থেকে তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে অনেক বার বলতে চেয়েছি কিন্তু তোমার এই রাগের ভয়ে আর বলতে পারি নি। আমি আমাদের অফিসে না গিয়ে তোমার অফিসে কেন জয়েন করেছি যানো। শুধু তোমার জন্য। অফিসের প্রথম দিন তুমি আমাকে থাপ্পর মেরেছো সেটা নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তুমি আমাকে আপনি করে কথা বলেছ সেই দিন অনেক কষ্ট হয়েছিল।
অনেক দিন তোমাকে আমি আমার মনের কথা বলতে চেয়েছি কিন্তু কোনো দিন সে সাহস হয়নি।

যেই দিন ভেবেছি আজকে তোমাকে আমার মনের কথা বলবো সেইদিন তুমি ফোনে কার সাথে যেন কথা বললে আর আমার কথাটা পর্যন্ত শুনো নি। তাই আমি রোজা সায়মা একটা প্লান করি যে তুমি আমাকে ভালোবাসো নাকি। না।
তুমি সেইদিন আমার কোন কথা শুনলে না। তুমি তোমার কথাতেই আটকে ছিল। আর আমাকে তোমার সামনে থেকে চলে যেতে বললে। এই একটা বছর অনেক কষ্টে কাটিয়েছি। অনেক বার তোমার সাথে কথা বলতে এসেছিলাম কিন্তু প্রতিবারই তুমি আমাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছ। আর না আমি এতো বেহায়া হয়ে যাই নে এখনো তোমার অপমান সহ্য করবো। ভালো থেকে আর কোনো দিন তোমার সামনে আসবো না। বলে চলে আসলাম।

সাদিয়া বসে কান্না করতে লাগলো।
আমি রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে ছাদে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এমন সময় সায়মার সাথে চার জন মেয়ে আসলো।
সায়মা আমাদের তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
সায়মা চলে গেল।
আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম।

হঠাৎ ছাদের বিপরীত পাশে তাকিয়ে দেখলাম সাদিয়া আমাদের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি ওকে দেখেও না দেখার ভান করে আড্ডা দিতে লাগলাম।
অনেক সময় আড্ডা দেওয়ার পরে রুমে এ চলে আসলাম।
রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে দেখি হয়ে বাইরে বের হয়ে আসলাম।
এর মধ্যে শুনি বর চলে এসেছে।

আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে একটা প্লান করলাম বরকে একটু ভয় দেখানোর।
আমরা চারজন মিলে বরের সামনে গেলাম।
বরের সামনে আমি বন্ধুদের উদ্দেশ্যে করে বললাম, ওই তোরা ওকে সাইডে নিয়ে আস। আজকে উকে মেরে
ওর লাশ নদীতে ফেলে দিব। ও আমার ভালোবাসাকে বিয়ে করতে এসেছে।
বরঃ ভাই আপনারা কারা আর আমার সাথে এমন করছেন কেন।

সোহানঃ তোর সাহস তো কম না তুই আমাদের উপর কথা বলিস।
বরঃ সরি ভাই মাফ করে দেন ভুল হয়ে গেছে।
হঠাৎ আমাদের পিছন থেকে সায়মা বলে উঠলো।
সায়মাঃ কিরে তোরা এখানে কি করছিস।

আমরা সবাই একসাথে উওর দিলাম, কিছু না। তোর বরের সাথে কথা বলছিলাম।
সায়মাঃ তোদেরকে আমার চিনা আছে তোরা কেমন।
আমিঃ আরে তোর বরকেই জিজ্ঞেস করে দেখ আমার কেউ কিছু বলেছি কি। ভাই তুমি বলোতো আমরা তোমাকে কিছু বলেছি কি। (ঠাডা পরা মিথ্যা কথা)
সায়মাঃ ঠিক আছে বাদ দে। এখন তোদের ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দেও। ও হচ্ছে শুভ আমার হবু স্বামী। মানে কিছু সময়ের মধ্যে হবে আরকি।

আমাদের ওর বরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। সায়মা ওর স্বামিকে উদ্দেশ্যে করে বললো,ওরা যদি তোমাকে কিছু বলে থাকে তাহলে আমি ওদের হয়ে তোমার কাছ থেকে মাফ চাচ্ছি।
আমরা সায়মা আর ওর বরের সাথে ওর কিছু সময় ফাজলামি করলাম।
কিছু সময়ের মধ্যেই সায়মার বিয়ে হয়ে গেল। আজকে অনেক বার সাদিয়া কথা বলতে এসেছিল কিন্তু ওর ওপর একটু বেশি রাগ হয়ে গেছে তাই কোনো কথা বলি নি।
সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।

বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে সবার সাথে কিছু সময় কথা বলে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে।


পর্ব ৯

সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে সবার সাথে কিছু সময় কথা বলে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে গিয়ে দেখি সবাই কি নিয়ে যেন কথা বলছে। আমাকে দেখে সবাই চুপ হয়ে গেল।
আমি আর কিছু না বলে খাবার খেতে লাগলাম।
হঠাৎ ভাইয়া বললো,

ভাইঃ ফিরোজ আজকে বিকালে তুই মালয়শিয়া যাচ্ছিস।
আমি ভাইয়ার কথা শুনে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম। ভাইয়া আবার বলতে শুরু করল।
ভাইঃ মালয়শিয়ায় আমাদের মে অফিস আছে সেখানে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমাদের মধ্যে কাউকে সেখানে যেতে হবে।
আমিঃ কিন্তু আমিই কেন।

ভাইঃ কারন আমার একটা জরুরী মিটিং আছে। আর আব্বুর বয়স হয়েছে তাই আব্বুও যেতে পারবে না। তাই তোকে যেতে হবে।
আমিঃ ঠিক আছে। আমি যাবো। কিন্তু কয়েকদিনের জন্য যেতে হবে।
ভাইঃ চার দিন ও লাগতে পারে আবার পাঁচ দিনও। আর আজকের বিকেল পাঁচটায় তোর ফ্লাইট।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

খাবার শেষ করে রুমে চলে এলাম। ভাবি আমার জামাকাপড় ব্যাগে গুছিয়ে দিচ্ছে। আর আমি বসে পাবজি খেলছি।
এভাবে কিছসময় চলে গেল দুপুরে লাঞ্চ করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে আমি আর ভাইয়া এয়ারপর্ট এর উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। অবশেষে ফ্লাইটে উঠলাম ফ্লাইট টেক অফ করলো মালয়শিয়া উদ্দেশ্যে।

অবশেষে চলে আসলাম মালয়শিয়ায়।
অফিসের ম্যানেজার আমাকে নিতে আসলো।

এভাবে চলে গেল তিনটা দিন। কালকে বাংলাদেশে আবার চলে যাবো।রাতে ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে উঠে ফ্রেস হয়ে লাঞ্চ করে এয়ারপর্ট এর উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।

কিছু সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশে পৌঁছে গেলাম। এয়ারপর্ট থেকে বের হয়ে দেখি আমার পরিবারের কেউ নেই।
হঠাৎ ড্রাইভার আমার সামনে এসে বললো,
ড্রাইভারঃ চলেন স্যার। আপনাকে নিয়ে মেতে বড় স্যার (আব্বু) আদেশ করেছে।

আমি কিছু না বলে গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে। এর মধ্যে আমি বাসায় অনেক বার কল করেছি কিন্তু কেউ ফোন রিসিভ করে নি।
মনের ভিতর কেমন জানি একটা সন্দেহ সৃষ্টি হলো। আর কিছু না ভেবে। কিছু সময়ের মধ্যে বাসায় পৌছে গেলাম।
কিন্তু বাসায় পৌছে আমি পুরো আবাক।

পুরো বাসা ডেকরেশন করা হয়েছে। আমি ভাবতে লাগলাম আজকে কি এমন যে এত আয়োজন করা হলো।
বাসার কলিং বেল বাজাতে ভাবি এসে দরজা খুলে দিল।
আমিঃ কেমন আছো ভাবি।
ভাবিঃ হুম ভালো আছি। তুই কেমন আছিস।

আমিঃ হুম ভালো। আচ্ছা ভাবি আজকে কি বাসায় কোন অনুষ্ঠান আছে।
ভাবিঃ আব্বু আম্মুর কাছে জিজ্ঞেস করো জানতে পারবে।
আমিঃ আব্বু আম্মু কোথায়।

ভাবিঃ তারা তাদের রুমে আছে।
আমি আর কোনো কথা না বলে আব্বু আম্মুর রুমে চলে এলাম।
আমার মনে একটা খটকা লেগে আছে। রুমে গিয়ে দেখি আব্বু আম্মু ভাইয়া বসে আছে।
কি নিয়ে যেন কথা বলছিল আমাকে দেখে সবাই চুপ হয়ে গেল।
রুমে ঢুকা মাত্র ভাইয়া জিজ্ঞেস করলো,

ভাইয়াঃ আসতে কি কোনো সমস্যা হয়েছে।
আমিঃ না।
হঠাৎ আব্বু বললো ফিরোজ বসো তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
আমিঃ আব্বু ফ্রেস হয়ে আসি। তার পরে কথা বলি।
আব্বুঃ আমি বলছি না এখন তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
আম্মুর পাশে গিয়ে বসলাম।

হঠাৎ আব্বু এমন কথা বলবে। সেটা আমি ভাবতেই পারি নি।
আব্বুঃ আজকে রাতে তোমার বিয়ে। সবাই কে ইনভাইট করা হয়ে গেছে।
আমিঃ কিহহহহহ্।
আব্বুঃ হুম ঠিক শুনেছ। আজকে তোমার বিয়ে।

আমি আম্মুর দিকে তাকালাম। আম্মু কিছু বলছে না।
আমি ভাইয়ার দিকে তাকালাম দেখি ভাইয়া ও কিছু বলছে না। ভাইয়া তো জানতো যে আমি এক জনকে ভালোবাসি এখন আবার আরেক জনকে কিভাবে বিয়ে করবো।
আব্বু আবার বললো, পালিয়ে যাবার চেষ্টা করো না।
আমিঃ কি বলবো কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা আবুলের মতো সবার দিকে তাকিয়ে আছি।
কিছু না বলে রুম চলে আসলাম। আমার পিছনে ভাইয়া আর ভাবি ও আসলো।

আমিঃ ভাইয়া আব্বু তা বলেছে। তা কি সত্যি।
ভাইঃ হুম।
আমিঃ কার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করা হয়েছে।
ভাইঃ আব্বু বাসার কাউকে বলে নি যে কার সাথে তোর বিয়ে ঠিক করেছে।

আমিঃ কি। পাগল নাকি। একটা মেয়েকে না দেখে কিভাবে বিয়ে করবো।
ভাইঃ চিন্তা করিস আব্বু যদি তোর জন্য মেয়ে পছন্দ করেছেন তাহলে ভালো মেয়েই পছন্দ করেছে তুই টেনশন নিছ না।
আমি ভাবির দিকে তাকালাম উনি কিছু বলছে না।
এই বলে ভাইয়া ভাবি চলে গেল।

আমি মাথায় হাত দিয়ে ফ্লোরে বসে পড়লাম।
কি করবো কিছুই মাথায় আসছে না।
চোখ দিয়ে নিজের অজান্তেই পানি বের হচ্ছে।
প্যান্টের পকেট থেকে তারাতাড়ি মোবাইল করে সাদিয়াকে ফোন করলাম কিন্তু ফোন বন্ধ।
বন্ধুদের ও ফোন দিলাম ওদের ফোন ও বন্ধ।

শালারা আজকে মনে হয় মরে গেছে।
ওয়াশরুমে চলে আসলাম। ঝর্নায় পানি ছেড়ে ঝর্নার নিচে বসে পরলাম। ঘন্টা খানেক পরে রুমে আসলাম। মনে একটা খটকা লেগে আছে আর সেটা হলো সবাই আমার থেকে কিছু একটা লুকানোর চেষ্টা করছে।
নিচে চলে আসলাম। আম্মু খাবার দিল খাবার খেয়ে রুমে চলে এলাম। আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম।

হঠাৎ কারে চিল্লাচিল্লির আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। তাকিয়ে দেখি আমার হারামি বন্ধুরা আমার রুমে আড্ডা দিচ্ছে।
আমি হালকা পাতলা টাসকি খেয়ে গেলাম কারন সব হারামি গুলা আমার রুমে বসে আছে আর আমাকেই ডাক দেয়নি।
আমি কিছু না বলে ওয়াশরুমে আসলাম। একটু ফ্রেস হয়ে রুমে আসলাম। সাদিয়া বললো।
সাদিয়াঃ দোস্ত তুই বিয়ে করছিস ট্রিট দে।

আমিঃ ট্রিট লাগবো।
মিজানঃ হুম।
আমিঃ যা আমার বাপের কাছ থেকে ট্রিট নে। (কিছু টা রেগে বললাম)
হাসিবঃ কেন। বিয়ে করছিস তুই আর ট্রিট দিবো আন্কেল। এ কেমন বিচার।

আমিঃ হুম। কারন এ বিয়েতে আমার কোনো মত নেই। আমাকে জোর করে করানো হচ্ছে।
সোহানঃ কি।
আমিঃ হুম। ঠিক শুনেছিস।
সায়মাঃ তাহলে তুই আন্কেল কে বল তাহলেই তো হয়ে যায়।
আমিঃ কোনো লাভ নেই।

কিছু সময়ের মধ্যেই বাসায় অতিথি আসা শুরু করলো। সায়মা ওর স্বামির সাথে নিচে চলে গেল।
আর আমার বাকি তিন হারামি আমাকে হালাল হতে সাহায্য করছে মানে রেডি হতে।

অবশেষে ইসলামিক নিয়ম মেনে আমার বিয়ে হয়ে গেল। ভিতর কেমন যেন একটা খালি খালি লাগছে। কারো সাথে কোনো কথা না বলে ছাদে চলে আসলাম।
ছাদে দাঁড়িয়ে আছি পেছনে আমার বন্ধুরা ও আসলো। আর শালারা কি নিয়ে যেন হাসাহাসি করছে। আমার রাগ উঠে গেল।
আমি ওদের কাছে গিয়ে বললাম,
আমিঃ তোরা কি আমাকে একটু একা থাকতেদি পারবি।
ওরা আমার চেহারার দিকে তাকিয়ে আর কিছু না বলে নিচে চলে গেল।

আমি ছাদের এক কর্নারে গিয়ে বসে এক মনে চাদের দিকে তাকিয়ে আছি।
রাত একটা বাজে ভাইয়া ছাদে আসলো আমাকে দেখে বললো,
আব্বুঃ কিরে তুই এখন পর্যন্ত রুমে যাস নাই।
আমি কিছু বলছি না। চুপ চাপ দাঁড়িয়ে আছি।

আব্বুঃ মেয়েটা সেই কখন থেকে একা বসে আছে। যা তারাতাড়ি রুমে যা।
আব্বুঃ কি হলো আমার কথা কানে যাই নি। রুমে যা বলছি।
এখন আমি রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এক বালতি বেদনা নিয়ে রুমে প্রবেশ করলাম।
রুমে ঢুকতেই দেখি একটা মেয়ে খাটের মাঝ বরাবর লাল শাড়ি পরে ইয়া বড়ো একটা ঘুমটা দিয়ে বসে আছে।

আমাকে দেখেই খাট থেকে নেমে গুটিসুটি পায়ে আমার সামনে আসলো। আর এসেই আমাকে সালাম করতে নিল। আমি দু হাত পিছনে চলে গিয়ে বলতে লাগলাম।
আমিঃ এই আপনে এগুলো কি করছেন।
মেয়েটাঃ কেন কি করলাম। স্বামীর পা ধরে সালাম করছি।
(আওয়াজ টা কেমন যেন চিনা চিনা লাগছে)

আমিঃ খবর দার ভুলেও আমাকে টাচ করবেন না। আমি আপনাকে স্ত্রী হিসেবে মানি না। আর আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। (আমি জানি তুমি কে)
মেয়েটা তোর ঘুমটা উঠিয়ে বললো, কি বললি আবার বলতো।

Protilipi bangla premer golpo


পর্ব ১০

মেয়েটাঃ কেন কি করলাম। স্বামীর পা ধরে সালাম করছি।
(আওয়াজ টা কেমন যেন চিনা চিনা লাগছে)
আমিঃ খবর দার ভুলেও আমাকে টাচ করবেন না। আমি আপনাকে স্ত্রী হিসেবে মানি না। আর আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। (আমি জানি তুমি কে)
মেয়েটা তোর ঘুমটা উঠিয়ে বললো, কি বললি আবার বলতো।
(আমি সন্দেহ সঠিক হয়েছে আমার সাথে সাদিয়ারই বিয়ে হয়েছে। এখন দেখো মজা কাকে বলে,)

আমিঃ হুম। আপনি ঠিক শুনেছেন। আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।
সাদিয়া : খবর দার অন্য কোনো মেয়ের নাম যেন তোমার মুখে না শুনি।
আমিঃ আমার মুখ আমি নিবোই।
সাদিয়া : আমি জানি তুমি আমাকে এখনো ভালোবাসো। প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও।
আমিঃ দেখুন আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।

সাদিয়া : কি আজকে আমাদের বাসর রাত আর আজকে তুমি বলছো তোমার ঘুম পেয়ে ছে।
আমি কোনো কথা না বলে খাটে এক পাশে শুয়ে পড়লাম।
সাদিয়া আমার সামনে এসে বললো,
সাদিয়া : আচ্ছা। আমার একটা কথার উত্তর দিবা।
আমিঃ কি।

সাদিয়া : তুমি আমাকে দেখে কি অবাক হও নাই কেন।
আমিঃ নিশ্চুপ।
সাদিয়া : কি হলো বলো।
আমিঃ জানতো কানের সামনে ঘেন ঘেন কইরেন না।
সাদিয়া আর কিছু না বলে ব্যালকনিতে চলে গেল।
আমি আর কিছু না‌ বলে ঘুমিয়ে পড়লাম।

হঠাৎ বুকে ভারি কিছুর একটা অনুভব করলাম।
চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি সাদিয়া আমার বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে। ওর চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছে। ও কান্না করেছে।

ও আপনাদের তো বলা হয়নি আমি জানলাম কেমনে যে সাদিয়াই আমার বউ। তাহলে শুনুন মানে পড়ুন।
সন্দেহ – ১ – আমি যেই দিন মালয়শিয়া থেকে বাড়িতে এসে ছিলাম। আব্বু আম্মুর রুমে ঢুকতেই শুনি। তারা সাদিয়া কে নিয়ে কথা বলছে। আর আমাকে দেখেই চুপ হয়ে যায়।
সন্দেহ -২ – ভাইয়া ভাবি সাদিয়াকে নিয়ে কোনো কথাই বলেননি। যেন তারা চিনেনই না সাদিয়াকে।

সন্দেহ – ৩ – আমি সাদিয়া কে কল করলাম কিন্তু ও ফোন ধরে নি। পরে সব বন্ধুদের কল করলাম ওদের ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তখন আরেক সন্দেহ হয়েছে। যে কিছু তো একটা প্লেনিং করেছে সবাই মিলে।
আর তখন বিয়ে হয় সাদিয়ার বাবা – মাকে দেখে কনফার্ম মে আমার বিয়ে সাদিয়ার সাথে হয়েছে।
আমি এখনো সাদিয়াকে আমার জীবন থেকে বেশি ভালোবাসি। আর দুই দিন পর সাদিয়ার বার্থডে তাই ভাবলাম এই দুই দিন সাদিয়ার সাথে ও বাকি সবার সাথে একটু মজা নেই।
সাদিয়ার জন্য অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ আছে যেটা ওর বার্থডের দিন দিব।

সাদিয়াকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে সাদিয়াকে আগে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।
দেখলাম সাদিয়া এখনো আমার বুকে বাচ্চা মেয়ের মতো ঘুমাচ্ছে।
ওর চেহারায় কিছু চুল এসে পরেছে। তাই ওর চুল গুলো ঠিক করে দেই।

হঠাৎ সাদিয়া জেগে গেল। আর আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম। মনে হয় আমাকে দেখে ফেলেছে। পরে দেখি হঠাৎ সাদিয়া আমার ঠোঁটে কিস করল। (এই মাইয়ার কি কোনো লজ্জা সরম নাই) সাদিয়া বলতে লাগলো, আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো। আর আমি ও তোমাকে অনেক ভালোবাসি। এই বলে সাদিয়া আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।

আর আমি ওর কান্ড দেখে হাসছি। আবার ঘুমিয়ে পড়লাম কারন আমি এত সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে না।
হঠাৎ আমার মুখে পানির ফোটা আসছে।
চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি সাদিয়া আমার মাফা বরাবর ওর ভেজা চুল গুলো দিয়ে আমার চেহারায় পানি দিচ্ছে। অনেক রোমান্টিক একটা ফিলিংস কাজ করছে।
আমি সাদিয়াকে দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আর সাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ দরজায় নক পড়তেই আমাদের দুজনের গোড় কেটে গেল। আমি কিছু না বলে সাদিয়াকে সরিয়ে ওয়াশ রূমে চলে গেলাম।

আর সাদিয়া গিয়ে দরজা খুলে দিল।
আমি ফ্রেস হয়ে ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে দেখি সাদিয়া খাটে বসে আছে।
আমি কিছু না বলে নিচে চলে আসলাম। সাদিয়া কিছু বলতে চেয়েছিল কিন্তু আমি না শুনে বের হয়ে গেলাম। নিচে এসে দেখি সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে। আমি গিয়ে খাবার টেবিলে বসে পড়লাম। বসতেই আব্বু বললো,

আব্বুঃ বউমা কই। ওকে সাথে করি নিয়ে আসলি না কেনো।
আমি কিছু বললাম না। চুপ চাপ খেতে লাগলাম।
সাদিয়া এসে আমার পাশে বসে পড়লো।
হঠাৎ ভাবি জিজ্ঞেস করলো।

ভাবিঃ সাদিয়া রাত কেমন গেল।
সাদিয়া কিছু না বলে একটা শুকনা হাসি দিল।
আমি খাবার খেয়ে যেই উঠতে যাবো তখন আব্বু বললো,
আব্বুঃ আজকে রুমাকে আর বউমাকে তাদের বাসা থেকে নিতে আসবে তাই রেডি থেকো।
আমি কোনো কথা না বলে রুমে চলে গেলাম। খাটে শুয়ে মোবাইল চালাচ্ছি। কিছু সময় পর সাদিয়া আসলো। ও আমার সামনে এসে কোনো কথা না বলে আমার বুকের উপর শুয়ে পড়লো।

আমিঃ কি ব্যাপার আপনি আমার বুকের উপর শুয়ে পড়লেন কোনো।
সাদিয়াঃ এটা আমার স্বামীর বুক আমার মা মন চায় আমি তাই করবো আপনার কি।
আমিঃ এ্যা।
সাদিয়াঃ এ্যা নয় হ্যা।

আমিঃ এটা আমার বু।
আর কিছু বলতে পাড়লাম না তার আগেই সাদিয়া আমার আর ওর ঠোট জোড়া এক করে দিল।
কিছু সময় কিস করার পর সাদিয়া আমার ঠোঁটে একটা কামড় দিল। আর আমি হালকা একটা চিৎকার দিয়ে উঠলাম।
সাদিয়াকে সরিয়ে ঠোঁটে হাত দিয়ে দেখি রক্ত বের হচ্ছে। সাদিয়া রক্ত দেখে আমার সামনে চলে এসে। কান্না করে বলতে লাগলো।
সাদিয়াঃ সরি। সরি। প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও আমি বেশি জোরে কামড় দিতে চাই নি। (কান্না করতে করতে বললো)

আমি কিছু না বলে ওয়াশ রূমে চলে গেলাম। আয়নায় তাকিয়ে দেখি বেশি কাটে নেই অল্প একটু কেটেছে।
ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে দেখি সাদিয়া রুমে নাই। তাই আমি ব্যালকনিতে গিয়ে বসে মোবাইল চালাতে লাগলাম।
সাদিয়া রুমে আসলো আমাকে দেখতে না পেয়ে ব্যালকনিতে আসলো। আমি বুঝলাম সাদিয়া এসেছে। তাই মোবাইলটা কানে দিয়ে আবোল তাবোল বলতে লাগলাম।
আমিঃ হুম জান কি করতাছো।
আরে না কাল রাতে আমাদের মধ্যে কিছুই হয়নি।

আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি আর কাউকে না।
আচ্ছা রাখি সোনা পরে কথা হবে।
মোবাইলটা পকেটে রেখে পিছনে তাকিয়ে দেখি সাদিয়া চোখ লাল করে আমার দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যেন আমাকে আস্ত খেয়ে ফেলবে।
সাদিয়া কোনো কথা না বলে আমার পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে।

খুব যত্নে মোবাইলটাকে ফ্লোরে ঢিল মেরে টুকরো টুকরো করে ফেলে।
আর কিছু না বলে কান্না করতে করতে চলে গেল।
আমি মাথায় হাত দিয়ে ফ্লোরে বসে বলতে লাগলাম, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। আমার এতো সাধের মোবাইলটা একটু মজার কারনে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। কিছু সময় নিরাপত্তা পালন করে ব্যালকনিতেই বসে রইলাম।

হঠাৎ নিচে থেকে অনেক ওয়াজ আসছে। তাই নিচে চলে এলাম। নিচে এসে দেখি শ্বশুর বাড়ির লোকজন এসেছে।
সবার সাথে কৌশল বিনিময় করে আমার রুমে চলে এলাম। রুমে এসে বসে আছি এমন সময় সাদিয়ার কাজিনরা আসলো।
মারিয়াঃ আসতে পারি দুলাভাই। (সাদিয়ার কাজিন)
আমিঃ হুম আসো।

রুপাঃ ভাইয়া আপনি কি কোনো কাজ করছিলেন নাকি। মানে আমার কি আপনাকে ডিস্টার্ব করলাম নাকি।
আমিঃ না আমি জাস্ট ফেসবুক চালাচ্ছিলাম।
তখন দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি সাদিয়া দরজার কাছে পালিয়ে আমাদের কথা শুনছে।
তাই আমি সাদিয়াকে লাগানোর জন্য বললাম,

আমিঃ বিয়ের সময় তোমরা কোথায় ছিলে। আগে জানলে তো সাদিয়াকে বিয়ে না করে তোমাদের দুইজন থেকে যেই কোনো একজন কে বিয়ে করতাম।
বেশ কাম হয়েগেছে সাদিয়া তো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। কিছু না বলে চলে গেল।
আর এই দিকে ওরা দুজন সরমে একে বারি লাল হয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ হয়েছে আর তোমাদের শরম পেতে হবে না।

ওদের সাথে কথা বলতে লাগলাম হঠাৎ সাদিয়া একটা ট্রেতে কফি নিয়ে আসলো।
ওদের দুজনকে কফি দিয়ে আমাকে কফি দিল।
আমি কফি যেই মুখে দিলাম তেমনি।
ওমাগোওওওওওওওওওও।


পর্ব ১১

আমিঃ হয়েছে আর তোমাদের শরম পেতে হবে না।
ওদের সাথে কথা বলতে লাগলাম হঠাৎ সাদিয়া একটা ট্রেতে কফি নিয়ে আসলো।
ওদের দুজনকে কফি দিয়ে আমাকে কফি দিল।
আমি কফি যেই মুখে দিলাম তেমনি।
ওমাগোওওওওওওওওওও।

আমার চিৎকার দেওয়ার কারন হচ্ছে সাদিয়া আমাকে যেই কফিটা দিয়েছে সেটা লবণ দিয়ে বানানো হয়েছে। আর অনেক গরম। যার কারণে মুখে দিতেই কাটা জায়গায় লেগেছে। আর আমার অবস্থা টাইট।
আমার চিৎকার শুনে ওরা তিনজন কেঁপে উঠলো।
সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ও মুচকি হাসছে। আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা সাদিয়া ইচ্ছে করে করেছে।
আমি হাত দিয়ে ইশারায় মারিয়া আর রুপা কে বাইরে যেতে বললাম,ওরা বাইরে চলে গেল।

আমি দরজা আটকিয়ে। সাদিয়ার দিকে এগোতে লাগলাম। আর ও ভয়ে পিছন দিকে যেতে লাগলো।
একসময় সাদিয়া পিছনের দিকে যেতে যেতে দেয়ালের সাথে লেগে যায়।
আমি সাদিয়ার একবারে কাছে চলে গেলাম। সাদিয়ার গরম নিঃশ্বাস আমার মুখের উপর পরছে। আমি কিছু না বলে সাদিয়া্য কপালে একটা চুমু এঁকে দিলাম।
ও চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।

আমি সাথে সাথে আমাদের ঠোঁট জোড়া এক করে দিলাম। সাদিয়া ছোটাছুটি করছে কিন্তু পারছেনা। এক সময় সাদিয়া সারা দিতে লাগলো।
প্রায় পাঁচ মিনিট পরে সাদিয়াকে ছাড়লাম।
আমরা দুজনেই হাপাচ্ছি।
সাদিয়া কিছু বলছে না ও লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।
আমি ওকে রাগানোর জন্য বললাম,

আমিঃ ভাব্বেন না আমি আপনাকে ভালোবাসি আমি জাস্ট আপনাকে শাস্তি দিলাম আমাকে খারাপ কফি দেওয়ার জন্য।
বাস কাজ হয়ে গেসে। সাদিয়া তো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।
ওর চোখ মুখ রাগে লাল হয়ে গেল।
আমি সোজা ওয়াশ রুমে চলে গেলাম।
কিছু সময়ের মধ্যে গোসল করে রুমে আসলাম।

দেখলাম সাদিয়া রুমে নেই।
আমি মোবাইলটা হতে নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে বসে গল্প লিখছি।
ঘন্টা খানেক পরে আমি রুমে আসলাম।
রুমে এসে আমি পুরো আবাক।
কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
আমার পা যেন স্থির হয়ে গেছে। নড়তে পারছি না। কারণ সাদিয়া তার জামা চেন্জ করছে।

হঠাৎ আমাকে ও দেখেই যেই চিৎকার দিতে যাব‌। আমি কোনো ভাবে দৌড় দিয়ে। সাদিয়ার মুখে হাত দিয়ে রাখলাম।
সাদিয়াঃ হুম্মাম। উমমম। হুমমমমম্।
আমিঃ এটা আবার কোন ভাষা বুঝি না। বাংলায় বল।
আমি সাদিয়ার মুখ থেকে হাত সরাতেই শুরু হলো এক অন্য রকম ভাষণ।
সাদিয়াঃ কুত্তা। সুওর। রাম ছাগল। লুচ্চা। ইত্যাদি। (খুব ট্যাস)
আমিঃ ওই চুপ। এতো গালি দেছ কেন।

সাদিয়াঃ তুই এখানে আসলি কেন। তুই দেখোছ নাই আমি জামা কাপড় চেঞ্জ করছি। (রেগে আগুন হয়ে গেছে)
আমিঃ আমি কি জানতাম নাকি তুই জামা কাপড় চেঞ্জ করছিস।
সাদিয়াঃ তুই রুমে আসলি কেন।
আমিঃ আমি তো রুমেই ছিলাম। মানে ব্যালক। নি।

আমি সাদিয়ার দিকে তাকাতেই এক অন্য রকম ফিলিংস কাজ করছে।
সাদিয়া ওর দিকে তাকিয়ে বললো, আজকে তোকে আমি মেরে ফেলবো।
আমি কোনো কথা না বলে এক দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।
আর সাদিয়া আমাকে রুম থেকেই অনেক সুন্দর ভাবে আমার বংশ উদ্ধার করেছে।
আমি নিচে এসে সবার সাথে কথা বলছি।

কিছু সময় পর সাদিয়া নিচে আসলো। ও আমার দিকে পুরো রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে।
আর আমি ওকে দেখে আবার ক্রাশ খেলাম। কারন সাদিয়া একটা নীল রঙের শাড়ি পরেছে। আর শাড়ির সাথে সব কিছু ম্যাচিং করে পরেছে। ওকে পুরো নীল পরীর মতো লাগছে।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে। বেড়িয়ে পড়লাম শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে।
আমি সাদিয়া রুপা আর মারিয়া আমার গাড়ি দিয়ে যাচ্ছি।

আমি ড্রাইভ করছি। আর সাদিয়া আমার পাশের সিটে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
আর রুপা মারিয়া পিছনের সিটে বসে আছে।
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে। হঠাৎ একটা ফুসকার দোকান দেখলাম। সাদিয়ার ফুচকা অনেক পছন্দ। তাই ওর রাগটা কমানোর জন্য একটা প্লান করলাম। তাই সবাইকে বললাম তোমরা ফুসকা খাবে নাকি।
রুপা আর মারিয়া রাজি হয়ে গেল।

(আমার টাইমলাইন এ গল্পঃ দেওয়া হয়েছে আপনারা চাইলে পড়তে পারেন। )
কিন্তু যার জন্য বললাম সে কিছুই বললো না।
আমি বললাম, ওখানে অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে বসে আছে। আসো আমরা যাই।
আমার কথা শুনে সাদিয়া রাগী চোখে আমার দিকে তাকালো। আমি মনে মনে বললাম ডোজ কাম করছে।

গাড়ি থেকে নেমে পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখি সাদিয়া ও গাড়ি থেকে নামছে। আমি একটা মুচকি হাসি দিলাম।
আমার চারজন মিলে ফুচকার দোকানে ঢুকলাম। ঢুকে আমি অবাক কারণ এখানে অনেক কাপল বসে বসে প্রেম করছে।
আমরা একটা টেবিল বসলাম।
তারপর আমি তিন প্লেট ফুসকা অর্ডার করলাম।
কিছু সময়ের মধ্যে ফুচকা নিয়ে আসলো।

ওরা তিনজন ফুচকা খাচ্ছে আর আমি এক দৃষ্টিতে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
এটা দেখে রুপা আর মারিয়া হাসছে।
রুপাঃ ভাইয়া আপনি খাবেন না।
আমিঃ যার আশায় বসে আছি সে তো কিছু বলে না।
সাদিয়া কিছু না বলে একমনে খাচ্ছে।

আমি বললাম, আজকে আমি অনেক সুন্দর একটা দৃশ্য দেখেছি। (সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম)
সাদিয়া চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ মারিয়া বললো, কি দেখেছেন ভাইয়া আমাদের ও বলেন।
আমিঃ আজকে আমি রুমে সা।

আর কিছু বলতে পারলাম না তার আগেই সাদিয়া আমার মুখে একটা ফুচকা ঢুকিয়ে দিয়ে ওদের বললো,
সাদিয়াঃ তোরা এতো কথা বলছ কেন। চুপচাপ খাঁ। (পুরো রেগে গিয়ে)
আর আমি অন্য দিকে তাকিয়ে হাসছি। (আমার মন চাচ্ছিল সাদিয়ার হাতে খেতে তাই এই প্লান করি। )
সাদিয়াঃ অনেক হাসি পাচ্ছে তাই না।

আমি আর কিছু বললাম না কারণ সাদিয়া রেগে যাচ্ছে।
সবার খাওয়া শেষ হলে বিল দিয়ে। আবার জার্নি শুরু করলাম।
পুরো রাস্তায় আর কেউ কোনো কথা বলে নি।
অবশেষে সাদিয়া দের বাসায় চলে আসলাম।

বাসায় এসে সবার সাথে কৌশল বিনিময় করলাম।
সাদিয়ার বাবা বললো, যা মা ওকে নিয়ে তোর রুমে যা।
সাদিয়া আগে হাঁটতে লাগলো আর আমি ওর পিছনে।
সাদিয়া আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল। রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। আর দেয়ালে ওর অনেক ছবি আটকানো। তা দেখে বুঝা যাচ্ছে এটা সাদিয়ার রুম।
যেই খাটে বসতে যাবো সাদিয়া আমার শার্টের কলার।

ধরে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো,
সাদিয়াঃ ওই সময়তো দৌড় দিয়ে বেঁচে গেছি লি। এখন কি হবে তোর।
(এই মাইয়া এতো তুই তাই করে কথা বলে কেন বুঝি না)
সাদিয়াঃ কি হলো কথা বল।

আমি কোনো কথা না বলে সাদিয়ার কোমরে হাত দিয়ে টান দিয়ে আমার একবারে কাছে নিয়ে আসলাম। আরেক হাত দিয়ে ওর মাথার পেছনে হাত দিয়ে চুল গুলো ধরে আমাদের ঠোঁট জোড়া এক করে দিলাম। সাদিয়া আর কিছু বললো না শুধু তাল মিলিয়ে গেল।

কিছু সময়ের পর মারিয়া এসে আমাদের ঢেকে নিচে নিয়ে গেল।
তারপর আর কি শুরু হলো জামাই আদর নামের টর্চার।
আমি আর খেতে পারছিনা তাই সাদিয়ার দিকে তাকালাম। কিন্তু একি এই মাইয়ার তো কোনো খেয়ালি নেই। এক মনে খেয়ে যাচ্ছে।
আমি সাদিয়া কে অনেক ভাবে ইশারা করলাম কিন্তু সে আমার দিকে তাকায়ই না। তাই বাধ্য হয়ে মারিয়াকে বললাম, জানো মারিয়া আজকে আমি আর সাদিয়া অনেক সুন্দর একটা দৃশ্য দেখেছি তাই না সাদিয়া।

আমার কথা শুনে সাদিয়ার খাবার আটকে গেল গলায়। পানি খেয়ে বললো,
সাদিয়াঃ আম্মু ও আর খেতে পারবে না ওকে অনেক টর্চার করেছ।
আমি সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলাম কারন ডোজ কাজ করেছে। অতঃপর আমাকে টর্চার করা শেষ হলো।
হঠাৎ মারিয়া বললো, ভাই তুমি কি যেন দেখেছ। বললে না যে।
সাবাই আগ্ৰহ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমিঃ আজকে আমি।
সাদিয়াঃ আরে কিছু না ওনি এমনি বলছেন।
আমি সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে রুমে চলে এলাম। এভাবেই সারা দিন চলে গেল।
রাতে….


পর্ব ১২

আমিঃ আজকে আমি।
সাদিয়াঃ আরে কিছু না ওনি এমনি বলছেন।
আমি সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে রুমে চলে এলাম। এভাবেই সারা দিন চলে গেল।
রাতে।

আমি রুমে বসেছিলাম এমন সময় সাদিয়া আসলো।
এসে আমার সামনে এসে দাড়িয়ে আছে।
আমি কিছু না বলে ওয়াশ রুমে চলে গেলাম।
ওয়াশ রুমে গিয়ে ভাবতে লাগলাম হঠাৎ ওর আবার কি হলো।আরও বিকেল কোথায় গিয়ে ছিল।
কিছু সময় পর রুমে আসলাম।

রুমে এসে দেখি সাদিয়া খাটে বসে আছে আর ওর হাতে একটা নতুন মোবাইল।
আমাকে দেখেই সাদিয়া আমার সামনে এসে বললো,
সাদিয়াঃ এই নেও এটা তোমার জন্য। (আমার সামনে মোবাইলটা দিয়ে)।
আমিঃ কেনো।

সাদিয়াঃ তোমার মোবাইলটা তো আমি ভেঙ্গে দিয়েছিলাম তাই এটা তোমার জন্য কিনে নিয়ে এসেছি।
আমিঃ আপনার মোবাইল আমার লাগবো না।
সাদিয়াঃ ওই কি কইলি তুই। দেখ ভালো মতো বলতেছি মোবাইলটা নে। নাহলে মাইর একটা নিচে পারবো না। (কতো সুন্দর থ্রেট)
কি আর করার মোবাইলটা নিতে হলো। মোবাইলটা অনেক সুন্দর। হঠাৎ সাদিয়া আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো,
সাদিয়াঃ আর কোনো দিন যেন তোমাকে অন্য কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে না দেখি। যদি দেখি তুমি অন্য মেয়ের সাথে কথা বলছো সে দিন আমি কি করবো আমি নিজেও জানি না।

আমিঃ আমি কথা ব।
আর কিছু বলতে পারলাম না তার আগেই সাদিয়া আমার আর ওর ঠোট এক করে দিল।
রাতে ডিনার করে সাবার সাথে কিছু সময় কথা বলে রুমে চলে এলাম। রুমে একা ভালো লাগছে না তাই ব্যালকনিতে চলে গেলাম।
কিছু সময়ের পর সাদিয়া রুমে আসলো। আমাকে রুমে না দেখে ব্যালকনিতে আসলো।
এসে আমাকে দেখে আমার কোলে বসে পরলো।

সাদিয়াঃ কি করছো এখানে।
আমিঃ কিছুই না।
সাদিয়াঃ তুমি কি জানো কালকের পরের দিন কি।
আমিঃ কি। (যেনও না জানার ভান করে)
সাদিয়াঃ তুমি কি সত্যিই ভুলে গেছ।

আমিঃ কেন। কি এমন যে মনে রাখতে হবে।
সাদিয়াঃ না তেমন কিছু না। আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাতে গেলাম। (ওর হাসি মুখটা মুহূর্তেই ফেকাস হয়ে গেল)
সাদিয়া ওঠে চলে গেল। আর আমি ওখানেই বসে রইলাম। বুঝলাম যে সাদিয়া কষ্ট পেয়েছে।
কিছু সময় পর সাদিয়া যখন ঘুমিয়ে গেল। তখন ভাইয়াকে কল করলাম। কল রিসিভ করলো।
আমিঃ হ্যালো। ভাইয়া।

ভাইঃ হুম। কেমন আছিস তোরা।
আমিঃ হুম ভালো আছি।
ভাইঃ তো কিসের জন্য কল করা।
আমিঃ বেশি কিছু না একটা ছোট খাটো হেল্প লাগবে।
ভাইঃ কি হেল্প।

আমিঃ কালকের পরের দিন সাদিয়ার বার্থডে।
ভাইঃ আচ্ছা ঠিক আছে। আর কিছু বলতে হবে না। সব আয়োজন আমি করছি। তুই নিশ্চিন্তে থাক।
আমিঃ ভাই আরেকটা কথা আছে।
ভাইঃ হুম বল।

আমিঃ সাদিয়া যেন এই ব্যাপারে কিছু না যানে।
ভাইঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
আমিঃ ভাইয়া আরেক টা কথা।
ভাইঃ আবার কি।
আমিঃ I Love Tou।

ভাইঃ হয়েছে আর পাম মারতে হবে না।
আমিঃ আচ্ছা রাখি।
এই বলে ফোনটা কেটে যেই পিছনে তাকালাম আমি পুরোপুরি শক। কারন সাদিয়া চোখ মুখ লাল করে আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হয় সব কথা শুনে ফেলেছে। আজকে আমি শেষ।

হঠাৎ সাদিয়া বললো,
সাদিয়াঃ ওই তুই কাকে I Love You বললি। (কান্না করতে করতে বললো)
আমার ভিতর দিয়ে একটা শান্তির হাওয়া বয়ে গেল। হাসিটা কোনো ভাবে চেপে রেখে বললাম,
আমিঃ আমি আমার পার্সোনাল ব্যাপার আপনাকে বলবো কেনো।
সাদিয়াঃ দেখ বলতে বলেছি তুই কাকে বললি।

আমিঃ আমি কাউকে জবাব দিতে বাধ্য নই।
সাদিয়াঃ ঠিক আছে। আমি তোর জীবন থেকে সরে যাবো। কালকের পরের দিনই তুই ডিভোর্স পেপার পেয়ে জাবি।
সাদিয়া রুমের বাইরে চলে গেলো।

আর আমি বলদের মত ওই জায়গায়ই দাড়িয়ে আছি।সারারাত চলে গেল। কিন্তু সাদিয়া রুমে আসলো না। আমিও সারারাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম।
সকাল নয়টা সাদিয়া ও তার আম্মু নাস্তা বানাচ্ছে। আমি রুম থেকে বের হয়ে সোজা ডাইনিং রুমে চলে এলাম। আমি সাদিয়ার বাবাকে বললাম,
আমিঃ আঙ্কেল আমার একটু জরুরী কাজ আছে আমার এখন যেতে হবে।

আঙ্কেলঃ এটা কেমন কথা কালকে আসলে আর আজকেই চলে যাবে। আবার এখন পর্যন্ত তো নাস্তা ও করোনি।
আমিঃ আঙ্কেল একটা জরুরী কাজ আছে তাই যেতে হচ্ছে। আমি বিকেল এসে সাদিয়াকে নিয়ে যাবো।
আঙ্কেল আর কিছু বললেন না। আমি বের হওয়ার আগে দেখি সাদিয়া আমার দিকে কান্না জড়িত চোখে
তাকিয়ে ছিলো। আমি কিছু না বলে চলে আসলাম।

যে কাজের জন্য বের হয়েছি। তা করতে করতে বিকেল হয়ে গেল।
বিকেলে সাদিয়া দের বাসায় গেলাম। গিয়ে দেখি আঙ্কেল আর আন্টি হল রুমে বসে আছে।
আমাকে দেখেই আঙ্কেল বললো,
আঙ্কেলঃ বাবা তোমার আর সাদিয়ার কি কোনো জগরা হয়েছে।
আমিঃ না আঙ্কেল কেন কি হয়েছে।

আঙ্কেলঃ সকালে তুমি যাওয়ার পর থেকে সাদিয়া কিছু না খেয়ে তার রুমে গেল এখন পর্যন্ত রুম থেকে বের হয়ে নি।
আমিঃ ঠিক আছে আপনারা টেনশন নিবেন না আমি দেখছি।
এই বলে সাদিয়ার রুমে চলে আসলাম। রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। অনেক ক্ষণ যাবত সাদিয়াকে ঢাকলাম কিন্তু ওর কোনো রেসপন্সই নেই। ভাবতে লাগলাম সাদিয়া যেই রেগে আছে এভাবে দরজা খুলবে না। তাই একটা প্লান করলাম।

সাদিয়ার মোবাইলে একটা মেসেজ পাঠালাম। মেসেজ পাঠানোর দুই মিনিট পরে সাদিয়া দরজা খুলে দিল। ডোজ কাজ করেছে।
মেসেজটিতে লিখা ছিল তুমি যদি দরজা না খুলো তাহলে আমি এখান থেকে চলে আর কখনো আসবো না।
সাদিয়া দরজা খুলে দিয়ে আবার খাটে বসে মরা কান্না শুরু করে দিয়েছে। ওকে দেখে বুঝা যাচ্ছে ও এতো সময় কান্না করছিল। সাদিয়া নিরবে কান্না করেই যাচ্ছে।
আমি গিয়ে খাটে বসলাম।

আমিঃ কেউ কি মারা গেছে।
বেস কাজ শেষ। শুরু হয়ে গেছে জোরে জোরে কান্না করা।
আমিঃ কি হলো এই ভাবে কান্না করছো কেনো।
সাদিয়াঃ কুত্তা। লাল বান্দর। শুয়োর। তুই আমার সাথে কথা বলবি না। তুই তোর প্রেমিকার কাছে যা।
আমিঃ আমি তো আমার প্রেমিকার সাথেই আছি। (বিরবির করে বললাম)
সাদিয়াঃ কি বললি।

আমিঃ বললাম আমি তো এতক্ষণ আমার প্রেমিকার সাথেই ছিলাম। তাই তোকে একটু সময় দিতে এলাম।
আমার কথা শুনে সাদিয়া আরো রেগে গিয়ে। আমাকে টান দিয়ে বিছানায় সুইয়ে দিয়ে আমার উপর বসে শুরু করলো এলোপাথাড়ি।
আমিঃ আরে কি করছিস লাগছে তো।

সাদিয়াঃ আজকে তোকে আমি মেরে ফেলবো। তুই কোন ডাইনির সাথে ছিলি বল। (মারতে মারতে বললো)
আমিঃ ঠিক আছে বলবো। এখন বাইরে যাবো চল।
সাদিয়াঃ আমি তোর সাথে কোথাও যাবো না। (মাইর থামিয়ে বললো)
আমিঃ ঠিক আছে তোর যাওয়া লাগবে কিন্তু।

সাদিয়াঃ কিন্তু কি।
আমিঃ তোর মতো আটার বস্তা আমার উপরে বসে আছে। আমি মরে গেলাম। নাম তারাতাড়ি।
সাদিয়া রাগে অভিমানে আমার উপর থেকে নেমে ব্যালকনিতে চলে গেল।
আমিও ওর পিছনে ব্যালকনিতে গেলাম।
গিয়ে দেখি ও কান্না করছে।

আমিঃ চলো বাসায় যেতে হবে আব্বু কল করেছিলো।
সাদিয়া আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে কারন আমি এই প্রথম ওকে তুমি বললাম,
আমিঃ কি হলো কথা কানে যায় নি। তারাতাড়ি রেডি হও বাসায় যেতে হবে।
সাদিয়াঃ আমি যাবো না।

আমিঃ দেখো আমাকে রাগীও না।
সাদিয়াঃ আমি বলেছি না আমি যাবো না। (ধমক দিয়ে)
ঠাসসসসসসসসসসসসস্।
খুব ট্যাস।

আমিঃ এখন যাও আর ভদ্র মেয়ের মতো রেডি হও।
সাদিয়া আর কিছু না বলে গালে হাত দিয়ে আমার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে রুমে রেডি হতে চলে গেল।
থাপ্পর মারতে অনেক ভালো লাগে। ছোট বেলায় আম্মু বলেছিল মাইরের উপর কোনো ওষুধ নেই। (খুব ট্যাস)
কিছু সময়ের পর সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে চলে আসলাম।
গাড়ি স্টার্ট দিয়েই।


পর্ব ১৩ (অন্তিম)

থাপ্পর মারতে অনেক ভালো লাগে। ছোট বেলায় আম্মু বলেছিল মাইরের উপর কোনো ওষুধ নেই। (খুব ট্যাস)
কিছু সময়ের পর সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে চলে আসলাম।
গাড়ি স্টার্ট দিয়েই।
শুরু হলো ভাষণ।

সাদিয়াঃ আমি তোর সাথে কোথাও যাবো না।
আমিঃ নিশ্চুপ।
সাদিয়াঃ গাড়ি থামা আমি তোর সাথে কোথাও যাবো না। (চিৎকার করে)
আমিঃ দয়া করে এখন চিল্লাচিল্লি করিস না। সারাদিন না খেয়ে আছি অনেক খুদা পেয়েছে। এখন রেস্টুরেন্টে যাবো। তুই চুপ হয়ে বসে থাক একটা কথাও বলবি না।
সাদিয়া আর কিছু না বলে চুপচাপ মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। আমি আর কিছু না বলে ড্রাইভ করতে লাগলাম।একটা রেস্টুরেন্টের সামানে গাড়ি থামালাম। গাড়ি থেকে নেমে রেস্টুরেন্টে গিয়ে দুজনে খাবার খেয়ে আবার জার্নি শুরু।

সাদিয়া চুপচাপ বসে আছে। তাই আমি বললাম,
আমিঃ কি ব্যাপার তুমি চুপচাপ বসে আছো কেন।
সাদিয়াঃ তুমি আসলেই জানো না কালকে কি।
আমিঃ হুম। জানি তো কালকে কি।

সাদিয়াঃ তারমানে তুমি জানতে। আমি জানতাম তুমি এই দিন কোনো সময় ভুলতে পারো না। (খুশি হয়ে)
আমিঃ হুম কালকের দিনটা কিভাবে ভুলতে পারি। কালকের দিনে আমার সুন্নতে খাতনা হয়েছিল। (অনেক হাসি পাচ্ছে সাদিয়ার চেহারা দেখে। )
সাদিয়া তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। সুন্দর চেহারা মূহুর্তেই রাগী হয়ে গেল।
সাদিয়াকে নিয়ে একটা নদীর পাড়ে আসলাম। অনেকেই বসে আছে এখানে জোড়ায় জোড়ায়।

আমি আর সাদিয়া একটু নিরিবিলি জায়গায় বসলাম। বসতেই আমার গাড়ির ঘটনার কথা মনে পরে গলে। এখন আর হাসি থামিয়ে রাখতে পারলাম না। সাদিয়ার সামনেই পাগলের মতো হাসা শুরু করলাম।
আমি যতোই হাসছি সাদিয়া ততোই রাগে সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করছে।
তাই আমি আর না হেসে চুপচাপ বসে রইলাম। সন্ধা পেরিয়ে রাত হয়ে গেল।
রাতে এখানকার দৃশ্য আর ফুটে উঠলো।

হঠাৎ সাদিয়া বললো,
সাদিয়াঃ আমরা বাসায় যাবো কখন। (কিছুটা ভয়ে ভয়ে বললো)
আমিঃ আর কিছু সময় থাকি।
সাদিয়া আর কিছু বললো না। কিছু সময়ের পর
আমাদের দুজনের নিরাপত্তা ভেঙ্গে আমার মোবাইলে কল আসলো। আমি সাদিয়ার থেকে একটু দূরে গিয়ে কলটা রিসিভ করলাম।
আমিঃ হ্যা বল।

সায়মাঃ কোথায় তোরা।
আমিঃ নদীর পাড়ে আছি। সব কিছু ঠিক টাক আছে।
সায়মাঃ হুম সব ঠিকঠাক প্লেন মতো হয়েছে। সময় মতো চলে আসিস।
আমিঃ ঠিক আছে।

বলে কলটা কেটে দিলাম। পিছনে তাকিয়ে দেখি সাদিয়াকে যেখানে বসে রেখেছিলাম সেখানেই চুপচাপ বসে আছে।
সাদিয়ার কাছে যেতেই। সাদিয়া বললো,
সাদিয়াঃ কে কল করেছিলো।
আমিঃ বন্ধু।

সাদিয়াঃ কি বললো,
আমিঃ কিছু না এমনি। চলো এখন।
সাদিয়াঃ বাসায় যাবো এখন।
আমিঃ না। একটু কাজ আছে সেখানে যাবো।
সাদিয়া আর কিছু বললো না। দুজনে গাড়ি তে বসে আবার রওনা দিলাম।
কিছু সময়ের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম।

সাদিয়াঃ আমরা শপিং মলে কেন এসেছি।
আমিঃ ভাবি আমাকে কিছু আনতে বলেছিল তাই এখানে আসলাম।
সাদিয়াকে নিয়ে শপিং মলের ভিতরে ঢুকলাম।
অনেক সময় লাগিয়ে শপিং করার পর সাদিয়া বললো,
সাদিয়াঃ ভাবি তোমাকে এতো কিছু নিতে বলেছে।

আমিঃ হুম।
আর কিছু না বলে দুজনে গাড়ি তে বসলাম।
সাদিয়া কোনো কথা বলছে না।
সাদিয়াকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে আসলাম।
সাদিয়াঃ আমরা এখানে কেনো আসলাম।
আমিঃ খাবার খেতে।

সাদিয়াঃ অনেক রাত হয়ে গেছে বাসায় গিয়ে খাবো নে।
আমিঃ না এখানেই খাবো।
সাদিয়া আর কিছু বললো না। দুজনে রেস্টুরেন্টে থেকে ডিনার করলাম। ডিনার করতে করতে ১১:৩০ বেজে গেল। সাদিয়া কে নিয়ে বাসার জন্য রওনা দিলাম। সাদিয়া বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে।

১১:৫৫ বাসায় পৌঁছালাম। গাড়ি পার্ক করে দরজার সামনে এসে সাদিয়া কলিং বেল বাজাবে তখন আমি বললাম,
আমিঃ এই কি করছো। (কিছুটা চিৎকার দিয়ে)
সাদিয়াঃ কিছুটা ভয় পেয়ে বললো আমি আবার কি করলাম।
আমিঃ সবাই ঘুমিয়ে আছে। কলিং বেল বাজানোর প্রয়োজন নেই।
সাদিয়াঃ তাহলে ভিতরে যাবো কিভাবে।

আমিঃ আমার কাছে চাবি আছে। আমার পেন্টর পকেটে হাত দিয়ে চাবি বের করে দরজা খুলো।
সাদিয়াঃ তোমার পকেটে আমি হাত দিতে যাবো কেন।
আমিঃ আরে আমার হতে এতো গুলো ব্যাগ। আমি আবার পকেটে হাত দিবো কেমনে।
সাদিয়া আর কিছু নাবলে,পকেটে হাত দিয়ে চাবি বের করে। দরজা খুলে দিলো। পুরো বাসা অন্ধকার হয়ে আছে।
সাদিয়া আর আমি ভিতরে গেলাম।

হঠাৎ পুরো বাসার লাইট জ্বালে উঠলো।
আর সবাই একসাথে বলে উঠলো। হ্যাপি বার্থডে সাদিয়া।
সাদিয়া সবাইকে দেখি পুরা অবাক হয়ে আছে।
সবাই সাদিয়াকে উইশ করছে।

আমি কিছু না বলে সেখান থেকে আমার রুমে চলে এলাম।
সাদিয়াঃ তোমাদের সবার মনে আছে আমার বার্থডে কথা।
সবাই একসাথে বললো, হুম।
ঘন্টা খানেক পরে সাদিয়া রুমে আসলো।
রুমে এসে দেখে রুম অন্ধকার হয়ে আছে।

রুমের লাইট জ্বালিয়ে সাদিয়া সক। কারণ পুরো রুম পুতুল দিয়ে ভর্তি।
হঠাৎ রুম থেকে কান্না করার শব্দ আসছে।
আমি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কান্নার শব্দ পেয়ে রুমে গিয়ে দেখি।
সাদিয়া চোখের পানি আর নাকের পানি এক করে দিছে।

সাদিয়ার সামনে গিয়ে বললাম, কি হলো কান্না করছো কেন।
সাদিয়া কোনো কথা না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে আরো জোরে কান্না শুরু করে দিলো।
আমিঃ কি হলো কান্না করতেছো কেনো।
সাদিয়াঃ তুমি এই কয়দিন আমাকে এতো কষ্ট দিলে কেনো। (কাঁদতে কাঁদতে বলল)
আমিঃ কি। আমি তোমাকে কখন আবার কষ্ট দিলাম।(সাদিয়া কে ছাড়িয়ে বললাম)
সাদিয়াঃ তুমি বললাম কে।

সাদিয়া কে আর কিছু বলতে না দিয়ে আমাদের ঠোঁট জোড়া এক করে দিলাম।
কিছু সময়ের পর সাদিয়াকে ছেড়ে দিলাম। দু জনেই জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। আমি কিছু বলতে যাবো হঠাৎ সাদিয়া আবার পাগলের মতো কিস করতে লাগলো।
কিছু সময়ের পর ছাড়লো।
সাদিয়া কিছু বলতে যাবে তখন আমি দুটো শপিং ব্যাগ সাদিয়ার হাতে দিয়ে বললাম, এগুলো পড়ো। আমি নিচে গেলাম।
আমি নিচে চলে আসলাম। কিছু সময় সবার সাথে কথা বলে রুমে চলে আসলাম।

রুমে এসে আমি পুরো অবাক সাদিয়াকে নীল শাড়িতে নীল পরী মতো লাগছে। আমি এক দৃষ্টিতেই সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। সাদিয়া আমার সামনে এসে ঠোঁটে ছোট্ট করে কিস করে বললো, কি জনাব এমন ড্যাব ড্যাব করে কি দেখছেন।
আমিঃ আমার নীল পরীকে।
সাদিয়াঃ তাই।

আমিঃ হুম।
সাদিয়াঃ চলেন ছাদে যাবো।
আমিঃ কি এতো রাতে।
সাদিয়াঃ হুম। এখন আমাকে কোলে তুলেন।
আমিঃ এ্যা।

সাদিয়াঃ এ্যা নয় হ্যা। এখন তুমি আমাকে কোলে নিয়ে ছাদে যাবে।
কি আর করার সাদিয়াকে কোলে নিয়ে ছাদে আসলাম।
সাদিয়াকে বুকের সাথে জড়িয়ে দোলনায় বসে আছি।
নিরাপত্তা ভেঙ্গে সাদিয়া বললো,

সাদিয়াঃ জানো আমার অনেক স্বপ্ন ছিল কোনো এক রাতে তোমার বুকে মাথা রেখে চাঁদ দেখবো।
আমিঃ তাই।
সাদিয়াঃ হুম। আচ্ছা স্কুলে তোমার ক্রাশ কে কে ছিল।
আমিঃ আমার স্কুল লাইফে একটাই ক্রাশ ছিল। আর সে হলো তুমি।
সাদিয়াঃ আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না তো।

আমিঃ আমি ও তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। আর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শুধু তোমাকেই ভালবাসে যাবো।
সাদিয়াঃ আচ্ছা শোনো। কাল থেকে আমি আব্বুকে (আমার আব্বু) বলে রেখেছি। কাল থেকে তুমি আর আমি আমার যেই অফিস আছে সেটা দেখাশোনা করবো।

আমিঃ সাদিয়ার মুখটা আমার মুখের সামনে এনে এক গভীর কিস দিয়ে বললাম,”আমার স্কুল লাইফের ক্রাশ এখন আবার অফিসের বস”

লেখা – ফিরোজ হাসান

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “স্কুল লাইফের ক্রাশ যখন অফিসের বস – Protilipi bangla premer golpo” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – প্রেমের টানে️ – Dustu misti premer golpo

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *