নাটকীয় প্রেম – কিছু কথা প্রজাপতি (Dramatic Love)

এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছি তাই পাত্রপক্ষ আমার বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েছে। ছেলের মামা এসে এনগেজমেন্টের আংটি খুলে নিয়ে গেল। সারারাত আমি কান্না করেছি, নিজেকে এতটা অসহায় আর কোনদিন অনুভব করিনি। বছর তিনেক আগে যখন মা মারা গেলেন তখনও কেঁদেছিলাম ঠিকই কিন্তু এভাবে ভেঙ্গে পড়িনি৷
রাতে খাবার সময় বাবা বললো,

“ মন খারাপ করিস না মা, এরচেয়ে ভালো ছেলের সঙ্গে তোকে বিয়ে দেবো। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে জানিস না? শুধু শুধু মন খারাপ করে নিজেকে কষ্ট দিস না। ”
বাবার কথা আমি রাখতে পারিনি, রাতে নিজের রুমে শুয়ে শুয়ে একা অনেক কেঁদেছি। মানুষটার চেহারা বারবার চোখের সামনে ভাসতে লাগলো। একটা পরীক্ষায় পাশ করতে পারিনি বলে এভাবে কেউ বিয়ে ভেঙ্গে দেয়? নিজেকে বাবার মতো বলে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করলাম। নিজেই নিজের মনকে বললাম ‘ হয়তো বিয়েটা ভাগ্যে নেই, পরীক্ষায় পাশ না করা তো শুধু অছিলা মাত্র। ’

সেদিন ছিল মঙ্গলবার!
আগেরদিন রাতেই বাবা বলেছিলেন পাত্রপক্ষ আমাকে দেখতে আসবে। ভাবির মোবাইলে পাত্রর ছবি দেখেছি। সিলেটের চা বাগানের মধ্যে সবুজ চা-পাতার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছবিটি তোলা।
প্রথম দেখাতেই মনের কোণে একটা ভালো লাগার সৃষ্টি হয়েছিল। ছেলের মামা ভাবির কেমন যেন দুঃসম্পর্কের আত্মীয়। বিকাল চারটায় পাত্রপক্ষ আমাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়।

আমি সেদিন আমার পছন্দের কালো রঙের শাড়ি পরেছিলাম। হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি নিয়ে সেদিন পাত্রপক্ষের সামনে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ কথা বলার পরে আমাকে ছেলের সঙ্গে আলাদা কথা বলার জন্য পাঠানো হয়।
আমাদের গ্রামের মধ্যে যে কয়টা হাতেগোনা পাকা বিল্ডিংয়ের বাড়ি আছে তাদের মধ্যে আমাদের বাড়িটাও অন্যতম। আমি তাকে নিয়ে আমার রুমের বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। আগেই তার নাম জানতাম ‘ সাইফ হাসান ’। নীরবতা ভেঙ্গে সাইফ সরাসরি বলেছিল,

“ আমার কোনো প্রশ্ন নেই! আপনাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে , এবার আমাকে যদি আপনার পছন্দ হয় তাহলে সবাইকে জানিয়ে দিন। ”
আমি চোখ তুলে তার দিকে তাকালাম! আমার দিকে সেও তাকিয়ে রইল চোখে চোখ রেখে। সে খানিকটা হাসি দিয়ে বললো ,
“ ভেবেছিলাম কোনো প্রশ্নই করবো না। কিন্তু এখন তো দেখছি একটা প্রশ্ন অন্তত করা দরকার। পছন্দ হয়েছে তো আমাকে? ”
আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ ইঙ্গিত করলাম।
সাইফ বললো ,

“ তোমার মা নেই কিন্তু বাবা আছে। আর আমার বাবা নেই কিন্তু মা আছে। বিয়ের পরে আমরা কিন্তু সিলেটে থাকবো, মা আমার সঙ্গেই থাকে। সিলেট কিন্তু আমাদের এই বাগেরহাট থেকে অনেক দুর৷ সহজে বাবার বাড়ি আসতে পারবে না। ভেবেচিন্তে রাজি হবে কিন্তু ঠিক আছে? ”
এই প্রথম আমি মুখ ফুটে বললাম,

“ যদি রাজি না হই তাহলে কি করবেন? ”
“ আপনার চোখ দেখে মনে হচ্ছে আপনি আমাকে পছন্দ করেছেন। সুতরাং আর কথা বলতে চাই না। যত কথা সব জমিয়ে রাখবো। যেদিন আমাদের বিয়ে হবে, সেদিন রাতে সব কথা বলবো। তারপর সিলেটে গিয়ে প্রতি রাতে চা বাগানে দুজন মিলে হাঁটবো আর গল্প করবো। ”

আমাদের দুজনের সম্মতি নিয়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হলো। সাইফের মা আমার হাতে একটা আংটি পরিয়ে দিয়ে গেল। বিয়ে ঠিক হলো যেদিন দেখতে এসেছিল তার সতেরো দিন পরে। কল্পনার একটা নীল আকাশ মনের জানালায় ঠকঠক করে শব্দ করছে।
রাতে ভাবি বললো,
“ সবকিছু তো ঠিকঠাক হয়ে গেল। তোমাকে তো আর ধরে রাখা যাবে না। অবশ্য এরকম চমৎকার একটা স্বামী তোমার হবে আগেই জানতাম। ”
আমি বললাম,

“ ভাবি তোমার কি ওকে পছন্দ হয়েছে? ”
“ উমমম সবকিছু তো ঠিক আছে তবে সবসময় বসে বসে চা বাগানের ম্যানেজারি করে তো তাই পেটের ভুঁড়ি একটু বেড়েছে। সমস্যা নেই, বিয়ের পরে তুমি তার রাতের খাবার কমিয়ে দিও আর সকালে ফজরের নামাজের পড়ে কমপক্ষে এক ঘন্টা দৌড় করাবে। ”

“ ধুর ভাবি, কি যে বলো না তুমি। এখনো বিয়েই হলো না আর তুমি এসব কি কথা বলছো? ”
“ বিয়ে হয়নি তো কি হয়েছে? বিয়ে হবে! এখন তো শুধু দিনগুলো শেষ হবার অপেক্ষা। তারপরই তুমি হয়ে যাবে বৃষ্টি আক্তার থেকে বৃষ্টি হাসান। সাইফ হাসানের বউ বৃষ্টি হাসান। ”
“ ভাবি শোনো, মনে করো কোনো কারণে আমার বিয়েটা ভেঙ্গে গেল। তখন কি হবে? ”
“ তাই কখনো হয় নাকি? সবসময় নেগেটিভ চিন্তা না করে পজিটিভ চিন্তা করতে হয়। তুমিও এখন থেকে বিয়ের পরে কি কি করবা, কীভাবে নতুন জীবন শুরু করবা সেগুলো ভাবো। দেখবে নতুন একটা জীবন কল্পনায় ভেসে আসবে। ”

বিয়ে ঠিক হবার আটদিন পরে আমার এইচএসসি রেজাল্ট বের হলো। যে সাবজেক্ট নিয়ে ভয়ে ভয়ে ছিলাম সেই সাবজেক্টেই অকৃতকার্য হলাম। আমি রেজাল্ট পাবার পর থেকে খানিকটা মনমরা হয়ে গেলেও কল্পনা করিনি যে বিয়ে ভেঙ্গে যাবে।

রেজাল্ট বের হবার পরদিন সাইফের মামা বাবার কাছে কল দিয়ে বিয়ে ভাঙ্গার কথা কনফার্ম করেন। বাবা বাকরূদ্ধ হয়ে গেল, বাবা যখন খুব অসহায় হয়ে সাইফের মামাকে বোঝাতে লাগলো তখন আমি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছি। মেয়ের ব্যর্থতার জন্য বাবার এমন বারবার অনুরোধ করা একদমই সহ্য হচ্ছিল না।
অবশেষে চূড়ান্তভাবে বিয়েটা ভেঙ্গে গেল। আমার হাতের আংটি খুলে নিয়ে গেল। ভাবি আমার কাছে এসে বললো,

“ ছেলেটাকে কতো ভালো ভেবেছিলাম। অথচ সে এভাবে সামান্য কারণে বিয়েটা ভেঙ্গে দিল। তার কি একবারও মনে হলো না যে একটা মেয়ের এভাবে বিয়ে ভেঙ্গে গেলে কতটা কষ্ট হবে। ”

রাতে আমার ঘুম হয় না ঠিকমতো। নিজের চেয়ে বেশি কষ্ট লাগে বাবার জন্য। ভালো ছেলের সঙ্গে বিয়ে হবে বলে বাবা আমাদের গ্রামের অনেক মানুষকে দাওয়াত দিয়েছিলেন। আত্মীয় স্বজন যে যেখানে আছে সবার কাছে মেয়ের বিয়ের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছিলেন। অথচ এখন আবার সবাইকে নিষেধ করা হচ্ছে, যখনই তারা প্রশ্ন করে তখন বাবা ঘুরিয়ে পেচিয়ে উত্তর দেয়। কিন্তু সবকিছু শুনেই তাদের একটাই কথা,
“ মেয়ে ফেল করেছে বলে বিয়ে ভেঙ্গে গেল। ”

সাইফের কোনো মোবাইল নাম্বার আমার কাছে ছিল না। সে নিজেই বলেছিল আমাদের পরবর্তী কথা হবে বাসর ঘরে। সেজন্য তার কোনো নাম্বার আমি চাইনি। চেষ্টা করলে হয়তো নাম্বার যোগাড় করে কল দিয়ে কথা বলতে পারতাম। জিজ্ঞেস করতে পারতাম ‘ একটা গ্রাম্য সহজসরল মেয়ের মনে আশার প্রদীপ জ্বেলে সেটা এক নিমিষেই কীভাবে নিভিয়ে দিল। ’
নাম্বার আর নেওয়া হয়নি, তাই কথাও হয়নি।

ভাইয়া আমাদের পাশের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত তাই ভাবি আর ভাইয়া বাড়িতেই থাকে। গ্রামের স্থানীয় বাজারে দোকান ছিল বলে বাবাও বাড়িতে থাকে। কিন্তু বিয়ে ভেঙ্গে যাবার মাস খানিক পরে আমি ঢাকায় ফুফুর বাসায় চলে গেলাম। গ্রামে ভালো লাগে না, মাস শেষে বাবা টাকা পাঠিয়ে দিতেন। মন চাইলে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে আসতাম। বেশ ভালোই কাটছিল দিনগুলো।
পাঁচ মাস পার হয়েছে।

ঢাকা থেকে “ ইমাদ পরিবহনে ” বাগেরহাট রওনা দিলাম। ইমাদ বাস কোম্পানির সবগুলো বাস একটা নির্দিষ্ট ফিলিং স্টেশনে যাত্রা বিরতি দিয়ে থাকে। বেশ কয়েকবার আসা-যাওয়া করার কারণে যাত্রা বিরতির কথা জানতাম।
যথারীতি আজও গাড়ি ফিলিং স্টেশনে থামলো। ওয়াশরুমে যাবার জন্য আমিও বাস থেকে নিচে নামলাম। সবার সঙ্গে আমিও ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম। কাছেই একটা দোকান থেকে দুই প্যাকেট চিপস কিনে হাঁটতে হাঁটতে বাসের দিকে এগিয়ে গেলাম। বাসে ওঠার আগেই কেউ একজন পিছন থেকে বললো,
“ বৃষ্টি শুনুন! ”

পিছনে ফিরে তাকালাম, বহুদিন পর আবারও অবাক হয়ে রইলাম। আমার নাম ধরে সম্বোধন করা মানুষটার নাম সাইফ হাসান। সেই একইরকম দেখতে, চেহারায় কোনো পরিবর্তন নেই। আমি কিছু বলার আগেই সাইফ বললো,
“ কেমন আছেন? একটু কথা বলতে পারি? ”

কিছু কঠিন কথা কি বলা উচিত? হ্যাঁ অবশ্যই বলা দরকার , সে যে কাজটা করেছে তাতে আমার কিছু কথা বলা ঠিক হবে। কিন্তু আমার মুখ দিয়ে তেমন কোনো কথা বের হলো না।
“ জ্বি বলেন। একটু তাড়াতাড়ি বলবেন কারণ বাস এখনই ছেড়ে দিবে। ”
“ শুধু একটা প্রশ্ন করতে চাই। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাক হবার পরও আপনি কেন বিয়েটা ভেঙ্গে দিলেন? ”
সাইফের প্রশ্ন শুনে আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলাম। লোকটা বলে কি? আমি নাকি বিয়ে ভেঙ্গেছি।
বললাম,
“ হাস্যকর প্রশ্ন করছেন কেন? বিয়ে তো আমি ভাঙ্গিনি, বিয়ে ভেঙ্গেছেন আপনি। এইচএসসিতে একটা পরীক্ষায় পাশ করতে পারিনি বলে আমাকে বিয়ে করতে আপনার হয়তো লজ্জা করছিল। তাই তো নিজে না এসে সেদিন নিজের মামাকে দিয়ে আমার হাত থেকে আংটি খুলে নিলেন। ”

সাইফও আমার দিকে তাকিয়ে রইল। মনে হচ্ছে সে এমন অদ্ভুত কথা কোনদিন শোনেনি। সাইফ বললো,
“ আমি তো মামাকে বলিনি বিয়ে ভেঙ্গে দিতে। বরং মামা নিজেই বললো যে আপনার বাবা নাকি আমার সঙ্গে সম্বন্ধ করতে রাজি না। কেন রাজি নয় সেরকম কিছু বলে নাই তবে মামার কাছে আপনার বাবা লোক দিয়ে এনগেজমেন্টের আংটি পাঠিয়ে দিয়েছেন। ”

বাস ছাড়ার সময় হয়ে গেল, সাইফও ইমাদ পরিবহনের যাত্রী। তবে সাইফ যাচ্ছে ঢাকা আর আমি যাচ্ছি বাগেরহাট। কাকতালীয় ভাবে দুজনের বাস একই সময়ে যাত্রা বিরতি দিয়েছে। আমি তখন বিয়ে ভেঙ্গে যাবার ইতিহাস সংক্ষিপ্ত করে সাইফকে বললাম। সবকিছু শুনে সাইফ বললো,
“ বুঝতে পেরেছি, সবকিছু তাহলে মামার নাটক। আর আমি কিনা বোকার মতো তার সবকথা বিশ্বাস করে আপনাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করিনি। বিশ্বাস করুন আমি ভাবিনি মামা এরকম কিছু করবে। যেহেতু মামা নিজেই আপনার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক করেছিল তাই ভেবেছিলাম সে তো আর মিথ্যা বলবে না। ”

আমি চুপ করে রইলাম। তবে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা সুর বাজতে লাগলো। অদ্ভুত কোনো ফুলের গন্ধ নাকের ডগায় ভর করলো। দুজনের দুই ইমাদ পরিবহনে বাস আমাদের অনবরত ডাকতে লাগলো। সাইফ আমার হাতটা ধরলো। আমি খানিকটা কেঁপে উঠলাম। সাইফ বললো,
“ মা বাগেরহাটে আছে, আমাকে একটা জরুরি কাজে ঢাকা যেতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে সিলেটে না গিয়ে আবার বাগেরহাটে ফিরবো। আপনি বাড়ি গিয়ে আমার কথা বলবেন। আমি আমার মা’কে নিয়ে আবার আপনাদের বাড়িতে যাবো। আপনি কি বিয়ে করবেন আমাকে? ”

আবেগী মেয়ে আমি, এতটুকু কথাতেই আমার চোখ ভর্তি পানি এলো। বাসের ড্রাইভার অনবরত হর্ন দিতে লাগলো। সুপারভাইজার কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে আমাকে টেনে নেবার জন্য। আমি মাথা নেড়ে সাইফের চোখে চোখ রেখে বিয়ে করবো বলে আবারও প্রতিশ্রুতি দিলাম। সাইফ তার একটা ভিজিটিং কার্ড আমার হাতে দিয়ে বললো ,

“ ঢাকার কাজ শেষ করেই আমি ফিরে আসবো। এখানে আমার নাম্বার আছে, কল দিয়েন। ”
আমরা দুজন দুজনের বাসে উঠে গেলাম। সাইফ চলে গেল ঢাকার দিকে, আমি চললাম বাগেরহাট।
তবে আগের মতো মন খারাপ আর নেই। নাম্বারটা মোবাইলে সেভ করে কল না দিয়ে একটা মেসেজ দিলাম,
❝ এভাবেই মানুষ স্বপ্নের মানুষটাকে আবারও ফিরে পায়। নিজের সঙ্গে না ঘটলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। ❞
সাইফ লিখলো,
❝ যদি ভাগ্যে থাকে লেখা ,
জীবনের শেষ মুহূর্তেও হতে পারে দেখা। ❞

গোপালগঞ্জ পার হয়ে মোল্লারহাট উপজেলার এরিয়ায় পৌঁছে গেলাম। গাড়ির সুপারভাইজার আমার কাছে এসে বললো ,
“ যাত্রা বিরতির সময় ফিলিং স্টেশনে আপনি যে ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলছিলেন তার নাম্বারে একটু কল দিয়ে দেখুন তো তিনি ঠিক আছে কিনা। ”
অবাক হয়ে বললাম,“ ঠিক আছে কিনা মানে? ”
সুপারভাইজার বললো , “ সেই ভাইয়াটা যে বাসে ঢাকা যাচ্ছিল আমাদের সেই বাসটা পদ্মা সেতুর খানিকটা আগে এক্সিডেন্ট করেছে। কোম্পানি থেকে এইমাত্র আমাদের জানানো হয়েছে। আর তখনই মনে হলো আপনার সঙ্গে তো একটা ভাইয়া কথা বলছিল৷ ”
আমি যেন কাঁপতে লাগলাম। সুপারভাইজার বললো,

“ আমাদের ড্রাইভারসহ ঘটনাস্থলেই বাসের সামনের দিকের বেশ কিছু যাত্রী নিহত হয়েছে। আনুমানিক ১০/১২ জন হবে। পিছনে আমাদের আরেকটা বাস ছিল সেই বাসের সুপারভাইজার খবর জানালো। ”
আমি তাড়াতাড়ি সাইফের নাম্বারে কল দিলাম , কিন্তু সাইফের নাম্বার বন্ধ।
সাইফের নাম্বার বন্ধ পেয়ে আমার কান্না আসতে লাগলো। আমি আরো দুবার কল দিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে সুপারভাইজারের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
বললাম,

“ ওনার নাম্বার তো বন্ধ পাচ্ছি ভাইয়া। এখন কি করবো? ”
“ আমাদের তো কিছু করার নেই। ঘটনাস্থল থেকে আহতদের সবাই উদ্ধার করতেছে। যদি সুস্থ থাকে বা আহত হয়ে থাকে তাহলে তো খবর পাবেন। ”
“ সেখানে আপনাদের কেউ নাই? ওনার বিষয় কোনো সন্ধান দিতে পারবে না? ”

“ না আপু, যে গাড়িটা পিছনে ছিল সেটা কিছুক্ষণ সেখানে থেকে আবার চলে গেছে। যেই ফিলিং স্টেশনে আমরা যাত্রা বিরতি করেছিলাম সেখান থেকে আমাদের লোক যাবে। তারা গেলে তারপর বলতে পারবো। ”
“ কি করি এখন? ”
“ ওনার নাম কি আপু? আর ওনার ফোন নাম্বারটা আমার কাছে দিন। আমি আমাদের বাগেরহাট কাউন্টারে কল দিয়ে সিট নাম্বারটা জিজ্ঞেস করি। যদি পিছনের দিকে সিট হয় তাহলে চিন্তা নেই, কারণ পিছনে যারা ছিল তারা ঠিক আছে। ”

নাম্বার নিয়ে সুপারভাইজার সামনে চলে গেল। আমি মোবাইলে ভাইয়ার নাম্বার বের করে তাকে কল দিলাম। ভাইয়ার কাছে সবকিছু বললাম, ভাইয়া বললো,
“ এতে কান্নার কি আছে, তুই সাবধানে আয়। বাগেরহাট আসার পর দেখি কি করা যায়। একটা না একটা খবর পাবি। ”
বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডে ভাইয়া আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। বাস থেকে নেমে ভাইয়ার সঙ্গে দেখা হলো। আমার চেহারার দিকে তাকিয়ে ভাইয়া বললো,
“ এ কি অবস্থা হয়েছে তোর? এতক্ষণ ধরে কি কান্না করছিলি নাকি? ”
আমি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললাম,
“ ভাইয়া উনি বেঁচে আছে কিনা সেটাই তো জানি না। খুব খারাপ লাগছে আমার। ”

রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। হঠাৎ দেখি সেই সুপারভাইজার আমার কাছে আসলেন। বললেন,
“ আপু খবর পাওয়া গেছে, ওই ভাইয়া বেঁচে আছে। তবে হাতে আর মাথায় আঘাত লেগেছে। ”
আমি বেশ উত্তেজিত হয়ে বললাম, “ আপনি কি নিশ্চিত যে তিনি বেঁচে আছেন? আপনি তো তাকে চেনেন না তাহলে কীভাবে বুঝলেন? ”

“ আমাদের যে-সব লোক সেখানে আছে তাদের কাছে বলেছিলাম যে সাইফ হাসান নামের একজন যাত্রী আছে। কালো টিশার্ট পরা লোকটার কি অবস্থা সেটা যেন জানায়। এইমাত্র ওরা জানালো যে ওই ভাইয়া বেঁচে আছে। ”
“ তাহলে ওনার নাম্বার বন্ধ কেন? ”
“ তা তো জানি না। ”

“ আমি কি একটু তার সঙ্গে কথা বলতে পারি? মানে আপনাদের সেই লোকদের মাধ্যমে একটু ব্যবস্থা করা যাবে? ”
“ আচ্ছা দেখি চেষ্টা করে। ”
মিনিট পাঁচেক পরে সাইফের সঙ্গে কথা বলতে পারলাম। ভাইয়ার সামনে দাঁড়িয়ে ততক্ষণে আমি বেশ স্বাভাবিক হয়েছি।
“ হ্যালো বৃষ্টি। ”
“ আপনি কেমন আছেন? ”

“ আমি ঠিক আছি, শুধু মাথা আর হাত কেটে গেছে। তবে সামনের দিকে যারা ছিল তাদের মধ্যে অনেকেই মা’রা গেছে। টিকিট পেয়েছিলাম সবার পিছনে তাই হয়তো রক্ষা পেলাম। ”
“ আপনার মোবাইল কোই? আমি কল দিয়ে নাম্বার বন্ধ পেলাম বারবার। অনেক চিন্তা হচ্ছিল। ”
“ আসলে আমি জানালা খুলে মোবাইল দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের ভিডিও করতেছিলাম। হঠাৎ বাস ধাক্কা লেগে নিয়ন্ত্রণ হারানোর সময় মোবাইল হাত দিয়ে ছিটকে পড়ে গেছে বাহিরে। ”
“ আমি এখন আসতেছি ওখানে, আপনি থাকবেন নাকি চলে যাবেন? ”

“ আপনি যদি আসেন তাহলে থাকবো। মাথায় তো ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। সমস্যা নেই আর। ”
“ ঠিক আছে আমি আর ভাইয়া আসছি। আপনি সাবধানে থাকবেন। ”
“ বৃষ্টি শুনুন! ”
“ হ্যাঁ বলেন শুনছি। ”

“ নাহ কিছু না, কথা জমুক সব একদিনে বলবো। ”
কল কেটে দেবার সঙ্গে সঙ্গে ভাইয়া বললো,
“ কোথায় যাবি তুই? ”
“ ভাইয়া চলো না আমরা যাই। ”

“ যাবার কি দরকার বৃষ্টি? বাবা বারবার কল দিচ্ছে আমাদের তাড়াতাড়ি যেতে হবে। তাছাড়া সে তো বেঁচে আছে, সুস্থ হয়ে ঠিকই নিজের বাসায় ফিরে যাবে। আমাদের গিয়ে কাজ কি? ”
“ কিন্তু আমার তো পাশে থাকা দরকার। এতবড় একটা এক্সিডেন্ট থেকে রক্ষা পেল তাই না। ”
“ বৃষ্টি , তুই কি ভুলে গেছিস বাবা অন্য যায়গায় তোর বিয়ের সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে। যার সঙ্গে তোর বিয়ে হবার কথা ছিল কিন্তু হয়নি, এখন যদি সেই ছেলের সঙ্গে দেখা করতে যাস তাহলে বাবা কি পরিমাণে রাগ করবে ভেবে দেখেছিস? ”

নীরব দৃষ্টিতে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে রইলাম। একটা আঙ্গুলে আমার দ্বিতীয়বার আংটি প্রবেশ করেছে পনের দিন আগেই। সাইফকে দেখে হয়তো কয়েক মুহূর্তের জন্য সবকিছু ভুলেছিলাম। আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম ফুফুর বাসা থেকে গ্রামে যাবার প্রধান উদ্দেশ্য আমার বিয়ে।

কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। ভাইয়া বাইক নিয়ে এসেছে, একটু পরে বাইকে উঠে গ্রামের দিকে রওনা দিলাম। চোখ দিয়ে খানিকটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। মনে মনে ভাবলাম, মানুষটা হয়তো আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে। আসার সময় সুপারভাইজারকে খুঁজেছিলাম যেন তিনি তার সেই লোকটার কাছে বলে সাইফকে অপেক্ষা না করতে। কিন্তু সুপারভাইজারকে কোথাও খুঁজে পেলাম না।

সবকিছু শুনে বাবাও অনেক রাগ করলো। যারা এমনভাবে সেদিন বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে তাদের সঙ্গে কেন কথা বলতে গেলাম। তাছাড়া যেহেতু আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে আবারও তাই এরূপ অবুঝের মতো কাজ কেন করলাম। বারবার শুধু এইসব অভিযোগ করতে লাগলো বাবা।
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পিছন থেকে ভাবি এসে আমার কাঁধে হাত রাখলো। বললেন,
“ এভাবে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন? ”
“ ভাবি আমি না একটা ভুল করেছি! ”
“ কি ভুল? ”
“ সাইফ আমার হাতটা ধরেছিল। আমার হাত ধরে চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করেছিল আমি তাকে বিয়ে করবো কিনা। ”
“ তুমি তাকে বলো নাই তোমার বিয়ে অন্য কোথাও ঠিক হয়ে গেছে। ”

“ না ভাবি বলিনি। আমি আসলে তখন কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। ভাবি তুমি একটা অনুরোধ রাখবা? বাবা আর ভাইয়াকে একটু বুঝিয়ে বলো না ওরা যেন এই বিয়েটা ভেঙ্গে দেয়। আমি ওই সাইফকে বিয়ে করতে চাই ভাবি। তুমি তো জানো আমি আজও তাকে ভুলতে পারিনি। ”

“ সেটা হয়না বৃষ্টি, তাছাড়া সাইফ তোমাকে বিয়ে করবে তার কি গ্যারান্টি আছে? যে একবার সব নষ্ট করেছে তাকে আবার পুনরায় তোমার বাবা ভাই কেউ বিশ্বাস করবে না। ”
“ ভাবি ওনার তো দোষ নেই। ওনার মামা সবকিছু করেছে, তিনি আমাদের বিয়ে ভেঙ্গেছে। সাইফ এসব কিছুই জানে না ভাবি। ”
“ বৃষ্টি শোনো, তোমার এবারের বিয়ের ব্যবস্থা কিন্তু আগের চেয়ে বেশি ধুমধামে হবে। তাই চাইলেই আমরা বিয়ে ভাঙ্গতে পারবো না। আর তাছাড়া তুমি একা এক জীবনে কেন বারবার এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। ”

তিনদিন পার হয়ে গেল।
নিজের রুমেই ঘুমিয়ে ছিলাম, ভাবির ডাকে ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসলাম। জানালা দিয়ে শেষ বিকেলের সূর্যের আলো রুমে প্রবেশ করছে।
ভাবি বললেন,
“ সাইফ এসেছে? ”
চমকে উঠে ভাবির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলাম।
“ হ্যাঁ সত্যি বলছি, সামনের রুমে তোর ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলছে। তোর সঙ্গে দেখা করতে চায়। তোর ভাইয়া সাইফকে সবকিছু বলেছে। ”
“ কি বলেছে? ”

“ তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আগামী সোমবার তোমার বিয়ে এইসব। সাইফ বললো যে তোমার সঙ্গে একটু কথা বলে তারপর নাকি চলে যাবে। ”
মাথায় ব্যান্ডেজ সাইফ বসে আছে। আমি ভাবির সঙ্গে সেখানে গিয়ে দাঁড়ালাম। সাইফ বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। বললো,
“ আপনার ভাইয়া বললেন আপনার নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আমি তো জানতাম না এটা। জানলে সেদিন বাসে ওঠার সময় আপনাকে দেখে ওভাবে ছুটে যেতাম। আমার জন্য আপনাকে বিভ্রান্ত হতে হতো না। আমাকে ক্ষমা করবেন। ”
আমি কিছু বললাম না। সাইফ বললো,

“ বাড়িতে ফিরে মামার কাছে জিজ্ঞেস করেছি। গ্রামের মেম্বর হিসেবে নিজের একটু সম্মান আছে তার। তাই তো একমাত্র ভাগ্নের জন্য এইচএসসি ফেল করা মেয়ে বিয়ে করাতে চান নাই। তবে মামা বুঝতে পেরেছিলেন আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করেছিলাম। তাই আমাকে না জানিয়ে তিনি একা একাই বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছেন। এমনভাবে কাজটা করেছেন যে আমি আপনাদের ভুল বুঝি আবার আপনারা আমাকে ভুল বোঝেন। ”
ভাইয়া বললো,

“ দেখো ভাই, এসব ইতিহাস আমাদের শুনিয়ে কোনো লাভ নেই। আমরা তোমাকে এবং তোমার মামাকে ভুলে গেছি। আমার বোনের আরো ভালো যায়গা বিয়ে দিচ্ছি। তুমি এখন যাও। ”
সাইফ আরো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। তারপর দুপা সামনে এসে আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো,
“ যদি ভাগ্যে থাকে লেখা ,
হয়তো আবার হবে দেখা।

কিছু মুহূর্ত শুধু কল্পনায় সুন্দর। আপনার কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা রইল। ”
সাইফ বের হয়ে গেল। আমি তার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইলাম। বুকের ভেতর থেকে কিছু একটা হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হলো। জীবন তো এরকম না হলেও পারতো।
আমি দৌড়ে নিজের রুমে চলে আসলাম।

রাত দশটার দিকে বেলকনিতে বসে বসে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকি। একহাতে মোবাইল আর অন্য হাতে সাইফের সেই ভিজিটিং কার্ড। বারবার নাম্বার উঠিয়ে কল দিতে ইচ্ছে করছে। কল দিলে হয়তো নাম্বার বন্ধ পাবো। আর যদি সে সিম নতুন করে রিপ্লেস করে তাহলে চালু থাকবে।

নাম্বারটা মোবাইলে তুললাম। কল দেবার ঠিক আগ মুহূর্তে বাবা রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,
“ বৃষ্টি আসবো? ”
আমি বেলকনি থেকে রুমে গিয়ে বাবাকে ভিতরে আসতে বললাম। বাবার মুখটা অন্ধকার।
বললাম,

“ কি হয়েছে বাবা? তোমার মন খারাপ কেন? ”
“ একটা সত্যি কথা বলবি? ”
“ আমি তো তোমাকে কখনো মিথ্যা বলি না বাবা। আজও যেটা বলবো সেটা সত্যিই বলবো। ”
“ তোর ভাবি বলছিল সাইফ ছেলেটার সঙ্গে আবারও দেখা হবার পর থেকে তুই অন্যরকম হয়ে আছিস। এখন যেখানে বিয়ে ঠিক হয়েছে সেখানে বিয়ে হলে তোর নাকি কষ্ট হবে। এটা কি সত্যি? ”
বাবার প্রশ্ন শুনে চুপ করে রইলাম। বাবা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,

“ জীবন তো একটাই মা তাই না? সাইফের মা আমাকে কল দিয়েছিল। সন্ধ্যা বেলা ওর মামা এসেছিল আমাদের বাজারে। তাদের একটাই অনুরোধ যে তারা সাইফের সঙ্গে তোর বিয়ে দিতে চায়। এদিকে তুইও হয়তো সাইফের প্রতি দুর্বল। এখন আমি কি করি বল তো মা? আমি তো চাই না তোর কষ্ট হোক। ”

“ বাবা তোমার মতো আমিও তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। আমার জন্য তোমার কোনো সমস্যা হোক সম্মান নষ্ট হোক সেটাও চাই না। তুমি আমার জন্য যা সিদ্ধান্ত নেবে আমি সেটাই করবো। ”
“ আমি তো ভাবছি সাইফের সঙ্গেই তোর বিয়ে দিয়ে দেবো। একটু আগে মেহেদীর বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে, তাকে অনেক কিছু বুঝিয়ে বললাম। একটু রাগারাগি করছে তবে আমার মনে বিয়েটা বন্ধ করা যাবে। ”
বাবার দিকে তাকালাম, বাবা খানিকটা খুশির হাসি দিয়ে বললো,

“ আমার তো পাঁচটা সাতটা মেয়ে নয় যে যেমন তেমন বিয়ে দেবো। বিয়ের পরে তুই যদি ভালো থাকতে না পারিস তাহলে আমি শান্তি পাবো কীভাবে বল তো? তুই চিন্তা করিস না মা, আমার যা করা লাগে আমি করবো। কিন্তু তোকে আমি ওই সাইফের হাতেই তুলে দেবো। ”

আমাদের বিয়েটা হলো সোমবারে।
যেহেতু এই তারিখেই আমার অন্য বিয়ের তারিখ ঠিক করা ছিল তাই সেই তারিখ আর পরিবর্তন হয়নি। বহু নাটকীয় ঘটনার সমাপ্তি শেষে আমার আর সাইফের বিয়েটা হয়ে গেল।
লাল শাড়ি পরে বাসর রাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমি যখন সাইফকে প্রথম জড়িয়ে ধরলাম। তখন সাইফ আমাকে তার বুকের সঙ্গে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
“ কিছু কথা প্রজাপতি,
সারাজীবন সঙ্গের সাথী।
যদি ভাগ্যে থাকে লেখা ,
থাকবো কেন একা?
খুঁজে নেব পৃথিবী জুড়ে৷
মনের কোণে গহীন নীড়ে। ”

…সমাপ্ত…

গল্প: কিছু কথা প্রজাপতি (Dramatic Love Story)
লেখা:মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)


আরো পড়ুন – কবির প্রেম

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *