অভিমানী – ভালোবাসার মান অভিমান

অভিমানী – ভালোবাসার মান অভিমান: আর কিছুক্ষণ থাকি না? ইরা কিছু না বলে আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। প্রায় কিছুক্ষণ পরে আমরা রুম থেকে বের হয়েছি, নিচে আসলাম। কি বউ মা তোমাদের মান অভিমান শেষ হলো?


পর্ব ১

বাসায় খুব আরাম করে ঘুমাচ্ছি। আমি যেনো কোনো সুখের দেশে হামাগুড়ি দিচ্ছি! আহহ কি যে ভালো লাগতেছে। হঠাৎ আমার আরামের ঘুমটা হারাম করে দিয়েছে বড় আপু।

ওই রাশেল আর কত ঘুমাবি। তোকে ফোন দিয়ে একটা মেয়ে যেতে বলেছে? (আপু)

ধ্যত আপু ডিস্টার্ব করো না তো। দেখছো না কি আরামে ঘুম দিয়েছি, তুমি এসে ঘুমটা নষ্ট করে দিয়েছো!
তোকে ইরা নাকি কেউ একজন কলেজে যেতে বলেছে। (আপু)
এত ঢং করা কি আছে, বললে তো হতো তোমার বন্ধুবী ডাকছে, ওই খানে ইরা নামটা দেওয়া কি আছে?

আমি এখন কোথাও যাচ্ছি না! আমি ঘুমাবো, ঘুমতে থেকে উঠে একটা কাজ আছে, কাজে যাবো।
আপু আর কিছু না বলে চলে গেছে!
আমি ও আরামের ঘুম দিলাম।
ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে হাল্কা নাস্তা করে
বের হয়ে পড়লাম, বন্ধুদের আড্ডা খানায়।

কিরে মামা তোর আস্তে এতক্ষণ লাগে? (রানা)
শালা রাস্তার মধ্যে কি তোর আব্বু আমার আনার জন্য হাই স্টুক গাড়ি পাঠিয়েছে, যে আমি ওটা করে চলে আসবো। শালা।
আরে মামা থাম, আমার বাবা টাকা নাই তো কি হয়েছে। ভাবি তো আছে। ভাবি কে বলে দেয় তোর জন্য একটা গাড়ি পাঠাতে। (রানা)

ওই তাঁর কথা বা নাম আমার সামনে উচ্চারণ করবি না। যদি করিস তাহলে, তোদের কি হাল করবো তা আমি নিজে ও জানি না। (কথা গুলো একটু চিৎকার দিয়ে বললাম)
কি হয়েছে, বলতো, কয়েক দিন ধরে দেখছি, তুই কলেজে ও যাচ্ছি না, আবার ওই দিকে ইরা ও তোকে খোঁজতেছে। আসলে তোদের সাথে হয়েছে টা কি। (মুরাদ)

ধ্যত আমার সাথে তাঁর কি হবে, সেই তো আমার কেউ না, কোথায় আমি একটা ছোট লোকে বাচ্চা, আর কোথায় ও বড় লোকে বাচ্চা। যাই হোক এখন কি করবো তাই বল? (কথা কাটানো জন্য বললাম)

তোকে কথা কাটাতে হবে না। বলতো কি হয়েছে? (মুরাদ)
তেমনি কিছু না, তাঁর সাথে ব্রেকআপ করেছি? (কিছুটা হেঁসে বললাম যাতে তাঁরা সন্দেহ করতে না পারে।
ব্রেকআপ করা কারণ কি? (মুরাদ)
বেটা তুই না একটু প্রশ্ন বেশি করিস, তোকে পুলিশের জব নিতে হবে।

আমার কথা শুনে সবাই হেঁসে দিলো।
তাঁর পরে সবাই রাত দশটাই আড্ডা দিলাম।
আড্ডা দিয়ে বসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে সবার সাথে ডিনার করলাম!
রুমে এসে শুয়ে পড়লাম,

কিছুক্ষণ পরে আমার রুমে কারো আসার উপলব্ধি করতে পারলাম।
আমি ফিরে থাকিয়ে দেখলাম, আপু আস্তেছে।
কিরে ঘুম আস্তেছে না? (আপু)
ঘুম আসবে না কেন?
আচ্ছা যাই হোক যেই জন্য আসলাম। তোর মোবাইল কোথায়। (আপু)
মোবাইল নষ্ট হয়ে গেছে। (মিছা কথা বলছি)

ও,
তারপরে আপু চলে গেছে,
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো, উঠে ফ্রেশ হলে, ব্রেকফাস্ট করে, ব্যাগটা কাঁদে নিয়ে কলেজে চলে আসলাম।
কলেজে এসে দেখতে পেলাম ইরা মুখ কালো করে।
মাঠের আম গাছের কাছে বসে আছে।

হঠাৎ দেখতে পেলাম তাঁর কাছে রিদয় আসলো।
একদম তাঁর গাঁ ঘেঁসে বসলো।
তাঁর কোনো খবর নেই, সেই তাঁর মতো বসে আছে।
আমি তাঁদের সামনে দিয়ে আসতে রিদয় আমাকে দেখতে পেলো।
সেই আমাকে দেখার সাথে সাথে ইরাকে তাঁর দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।

হঠাৎ ইরা মাথা উঠিয়ে দেখলো। এক বার রিদয়ের দিকে থাকিয়ে। আরেক বার রাস্তার দিকে থাকিয়ে দেখলো আমাকে।
সাথে সাথে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
এই আপু কি করছো? ( আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করতেছি!)

কিন্তু আমি ব্যর্থ, আমি থাকে ছাড়াতে পারলাম না!
তবো ও অনেক কষ্টেই থাকে ছাড়িয়ে দিলাম।
ওই আপু আপনি কি করছে?
ইরা আমার দিকে একটা আহত দৃষ্টিতে থাকিয়ে থাকলো!
রাশেল এই গুলো তুমি কি বলছো? (ইরা)
আমি আবার কি বললাম আপু। আমি তো শুধু এইটা বলেছি, আপনি কেন আমাকে জড়িয়ে ধরলেন?

তা ছাড়া, কোথায় আমি একটা ছোট লোকে বাচ্চা, যদি আমার জামা থেকে আপনার জামায় বালি লাগে।
তাহলে তো আপনার জামা নষ্ট হয়ে যাবে? (কথা গুলো অনেক কষ্টেই বলেছি, এক সময় আমি ও থাকে ভালোবাসে ছিলাম, অবশ্য এখন ও ভালোবাসি। কিন্তু প্রকাশ করার মতো শক্তি আমার কাছে নেই।

এক বার প্রকাশ করে, অনেক কষ্ট পেয়েছি
এখন আর নতুন ভাবে কষ্ট পেতে চাই না।


পর্ব ২

কি হলো তুমি এত কি ভাবছো? আর তোমার মোবাইল বন্ধ কেন? (ইরা) আমার মোবাইল নষ্ট হয়ে গেছে। চলো তোমাকে মোবাইল কিনে দেয়? (ইরা আমার হাত ধরে বললো) সরি আমি ততটা ছোট লোক না, তবে হ্যাঁ ছোট লোক বটে, কিন্তু কারো কাছ থেকে মোবাইল নেবার মতো ছোট লোক না। আপনার আর কিছু বলার আছে? আমি দেখতে পেলাম ইরা চোখ দিয়ে টপটপ চোখ বেয়ে মাটিতে পানি পড়তেছে।

আমি চলে আসলাম ক্লাসে, কিন্তু ক্লাসে মন বসতেছে না, কি করে বসবে, আমি যে ইরাকে অনেক ভালোবাসি। কি ভাবে আমি থাকে এই কথা গুলো বলতে পারছি! (চোখ বেয়ে পানি পড়তে লাগছে)
তারপরে চোখের পানি মুছে, এক এক করে সব ক্লাস শেষ করলাম, কলেজে ছুটি দিলো, আমি ব্যাগটা কাঁধে দিয়ে, কানের মধ্যে ইয়ারফুন ঢুকিয়ে, হিন্দি সিনেমা শট গান শুনতে শুনে বের হচ্ছি। এমন সময় আমার সামনে নীলিমা আসলো।

কি রাশেল এতদিন পরে আমাদের কথা মনে পড়লো? (নীলিমা)
কি যে বলিস না, তুই আসলে একটা কাজে কারণে আস্তে পারি নাই?
তো মাই ডিয়ার চকলেট বয়। আমার না এই দশদিন তোকে না দেখে পাগল হয়ে গিয়ে ছিলাম? (নীলিমা একেবারে আমার মুখে সামনে চলে আসলো!)
ফলে আমি নীলিমা নিঃশ্বাস প্রশ্বাস অনুভব করতে পারছি।

নীলিমা কপালে গিয়ে আমার নিঃশ্বাস পড়তেছে।
নীলিমা সাথে সাথে তাঁর চোখ বন্ধ করে পেললো। আর হাল্কা কেঁপে উঠলো।
তাঁর চোখ দুইটাতে হাল্কা কাজর দিয়েছে।
ঠোঁট জোড়া দুইটা কাঁপতেছে। আর হাল্কা গোলাপি রঙের লিপস্টিক।

আহহহ আজকে মেয়েটাকে দেখতে বেশ সুন্দর লাগতেছে। আমি তাঁর আরো কাছে চলে আসলাম। (যাতে ইরা আমাকে ভুল বুঝে দূরে চলে যায়)
আমি আড়চোখে দেখলাম। ইরা আম গাছে পাশে দাঁড়িয়ে।
আমার কাণ্ড গুলো দেখতেছে! মনে হয় মেয়েটা কাঁদতেছে।
হঠাৎ ইরা ওই খান থেকে চলে গেছে।

আমি তারাতাড়ি নীলিমার কাছ থেকে দূরে চলে আসলাম।
না হলে মেয়েটা আমার মায়ার বাঁধনে বেঁধে যাবে।
এ রকম কোনো বড় লোকে মেয়েকে চাই না আমি, আমি চাই শান্ত শিষ্ট নিরহংকারী মেয়েকে আমার জীবনে পার্টনার হিসাবে চাই।

যেই আমার মনে ভাব বোঝতে পারবে। আমি এমন কোনো বড় লোকে মেয়েকে চাই না, যে অহংকারী বরাদ্দ।
কি হলো তুমি হঠাৎ ছড়ে গেলে কেন? (আমি এই কথা গুলো ভাবতেছি, এমন সময় নীলিমা এই কথা গুলো বললো)
না আসলে বাসায় যাবো তো সেই জন্য, সকালে কিছু খায় নাই!
তাহলে আজকে দুইজনে রেস্টুরেন্ট গিয়ে ভালো মতো খাবার খাবো? (নীলিমা)

না আসলে আম্মু ফোন দিয়ে বললো, খাবার নাকি রেডি করা আছে। সেই জন্য বাসায় চলে যাচ্ছি।
না, না, আজকে আমার সাথে তোমাকে খাবার খেতে হবে। তুমি আজকে আমাকে না করতে পারবে না? (নীলিমা বাচ্চা মতো কথা গুলো বললো, আসলে মেয়েটা বলতেছে, তাঁর সাথে খাবার খেতে যেতে)
তাঁর পরে নীলিমা আর আমি রেস্টুরেন্ট উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

চলেন তোমাদেরকে পরিচয়টা দিয়ে পেলে। আমার নাম রাশেল মাহাম্মুদ নীলয়, বাবা মেয়ে ছোট ছেলে, মানি হলো আমার একটা বড় বোন আছে।
আমি অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি! আর আপু এবং ইরা অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ে। আর এতক্ষণ যার সাথে কথা হলো, সেই হলো আমার ক্লাসমেইট নীলিমা, আমি তাঁর মনে ভাব বুঝতে পারছি, একটু একটু, মনে হয় সেই আমাকে ভালোবেসে পেলেছে।

কিন্তু কখনো আমাকে সেই তাঁর মনে কথা গুলো বলে নাই। আর কিছুক্ষণ আগে যেই আম গাছে নিচ থেকে কান্না করে চলে গেলো সেই হলো আমার বড় আপু বান্ধবী, তাঁর আরো একটা পরিচয় আছে,
সেই আমার গার্লফ্রেন্ড ও বটে,

কিন্তু কিছুদিন আগে একটা করনে তার কাছ থেকে আমার মুর্তি পেতে মন চাচ্ছে।
কিন্তু মেয়েটাকে ভীষণ ভালোবেসে পেলেছি।
হয় তো বা ভুলতে পারবো না, কিন্তু আমাকে যে তাঁর কাছ থেকে দূরে চলে আসতে হবে।
তাঁর কাছ থেকে মুর্তি চাওয়ার ও একটা কারণ আছে বটে।

কিছুদিন আগে ক্লাস থেকে বের হয়ে আস্তে দেখতে পেলাম,
ইরা রিদয়ের পাশে বসে বসে গল্প করতেছে।
আমি তাঁর জন্য কোনো কিছু মনে হলো না!

কিন্তু যখন দেখলাম, রিদয় তাঁর গাঁ ঘেঁসে বসতেছে। তার চেয়ে বড় কথা হলো রিদয় নাকি ইরাকে পছন্দ করে,
তখন আমার মাথায় রক্ত উঠে গেছে।
আমি গিয়ে ইরাকে ডাকলাম।
ইরা একটু এই দিকে আসবে? (খুব নরম শুরে বললাম)
এখন আড্ডা দিচ্ছি, পরে কথা বলবো।

না এখন শুনতে হবে, বলে আমি তাঁর হাত ধরে টেনে উঠালাম।
ইরা তাঁর হাতটা ছুলান মেরে
ঠাসসসসসস।


পর্ব ৩

আমি ইরাকে টেনে উঠাতে! ঠাসসসস ঠাসসসস (আমি তো ইরা কাণ্ড দেখে অবাকক)
এই ছোট লোকের বাচ্চা তুই কোন সাহসে আমার হাত ধরলি। তোর কোনো যোগ্যতা আছে, আমাকে ধরা মতো। (আমি ইরা কথা শুনে অবাককক) আজ থেকে যেনো তোকে আমার সামনে না দেখি, যদি দেখি তাহলে বুঝতে পারবি আমি কি জিনিস!

শালা ফকিন্নির বাচ্চা (আমি মাথা নিচু করে ওই জায়গায় মূর্তি মতো দাঁড়িয়ে থাকলাম, আমার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না) ওই কি হলো এখন ও দাঁড়িয়ে আছিস কেন? (রিদয়) এই ফকিন্নির বাচ্চা এই খান থেকে চলে যাচ্ছি না কেন, এই বার ইরা থাপ্পড় দিয়েছে, এখন হলে স্যান্ডেল পিঠা করবো! (নূর ইরা ফ্রেন্ড) মাই ডিয়ার বড় আপু। মিস ইরাবতী আপনাকে বলছি?

ইরা আমার কন্ঠ শুনে চমকে উঠলো, আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে থাকালো। সরি আপনাকে ইরাবতী ডাকার জন্য, কিইই অবাকক হচ্ছ তাই না, অবাকক হওয়ার ও কথা, যাকে এখন থাপ্পড় দিলেন, সেই হঠাৎ এই ভাবে কথা কি ভাবে বলতেছে?

যাষ্ট একটা কথা বলার জন্য আপনাকে ডাকলাম, যাই হোক আপনি একদিন খুব পস্তাবেন। যাই হোক এটা বলার জন্য আপনাকে ডাকলাম, ওই খান থেকে চলে আসলাম বাসা, বাসায় এসে রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে শুয়ে পড়লাম, খুব কান্না আসতেছে।

কান্না করতে করতে বালিশ ভিজে পেলেছি, ওই দিকে ইরা বাসায় গিয়ে, ভাবতেছে, এই আমি কি করলাম, রাশেল কে আমি এই কথা গুলো বলতে পারলাম, কিন্তু সেই আমাকে কেন ওই সময় ডেকেছে? ইরা ফোনটা নিয়ে স্ক্রিনে থাকতে একটা মেসেজ দেখতে পেলো। ইরা মেসেজটা দেখে ওপন করলো। ওই খানে লেখা আছে।
ডিয়ার ইরাবতী।

প্রথমে সরি ইরাবতী ডাকার জন্য, অতিথিকে আমার এতটা আপন করা ভুল ছিলো, কিন্তু কি করবো এই অবুঝ মনটা তো কিছু বুঝে না, তাই হয়তো বা অচেনা অতিথির মনটাকে আপন করে নিয়েছে, কিন্তু আমার মন কি জানতো অচিন অতিথি টা মনটা নিয়ে চলে যাবে। যাই হোক আপনাকে আর ডিস্টার্ব করবো না।

তবে হ্যাঁ একটা কথা, আমি তো ছোট লোক আমাকে আবার কে ভালোবাসবে। ছোট লোক কে ভালোবাসতে হয় না, তাঁরা সারা জীবন, থাপ্পড় আর স্যান্ডেলের পিঠা খেলে হবে! সফিক দেওয়ানের এক মাত্র ছেলে রিদয় খাঁন, রিদয় আপনার জন্য একদম পারফেক্ট।

বড় লোকে এক মাত্র ছেলে তাঁর কোনো কমতি নেই, যাই হোক আরেকটা কথা, সকালে আপনাকে ডাকার কারণ হলো, আপনাকে আমি রিদয়ের সাথে না মিশার জন্য বলতে গিয়েছিলাম, ফলে আপনার কাছ থেকে অনেক বড় কিছু উপহার পেয়েছি, যা কখনো ও ভুলার মতো না! যাই হোক রিদয় আপনাকে লাইক করে। তাঁর সাথে সারা জীবন কাঠিয়ে দিলো।

    ইতি
   ছোট লোকের বাচ্চা 

সাথে সাথে ইরা রাশেলকে কল দিলো, কিন্তু ব্যাস্ত বলতেছে, ইরার আর বুঝতে বাকী ছিলো না, রাশেল থাকে ব্লাক লিস্টে ঢুকিয়ে দিয়েছে। তারাতাড়ি ফেসবুকে ঢুকে দেখলো ওই খানে ও ব্লাক।

তাঁর পরে নানা রকম ভাবে ইরা রাশেলের সাথে যোগাযোগ করতে চাচ্ছে কিন্তু পারতেছে, এমন করে তিন দিন কেটে গেলো। এই দিকে আমি দাদু বাসায় চলে আসলাম কয়েক দিনের জন্য, তিন দিন পরে ইরা আমার বাসায় আসলো। কি রে ইরা এতদিন পরে আমাদের বাসায়?

(আপু) ওই সব পরে বলিস তোর ভাই কোথায়, আর তোর ভাইয়ের ফোন বন্ধ কেন? (ইরা)

তাঁর ফোন নাকি নষ্ট হয়ে গেছে! সেই তো দাদু বাসায় গিয়েছে। (আপু)

ও তাঁর পরে ইরা বাতায় চলে আসলো। এমন করে পনেরো দিন কেটে গেছে।
সত্তর দিন পরে কলেজে এসে, এই সব কান্ড হলো।

আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে আমরা রেস্টুরেন্ট চলে আসলাম। রিকশা থেকে নেমে, রেস্টুরেন্ট ভিতরে ঢুকে দুই জনে লাঞ্চ করলাম। তাঁর পরে নীলিমা চলে গেছে আমি একটা রিকশা নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম। কিছু দূর এসে আমি অবাককক হয়ে গেছি এরা এ।


পর্ব ৪ (শেষ পর্ব)

আমি কিছু দূর আসতেছে দেখতে পেলাম, ইরা রাস্তার পাশে মাথা নিচু করে, বসে আছে, একটা ছোট দোকানে, আমি আস্তে আস্তে তাঁকে অতিক্রম করে চলে যাচ্ছি, হঠাৎ ইরা আমার সামনে এসে আমার কলার ধরলো, আরে আপু কি করছে, লোকে দেখলে খারাপ ভাববে?

(হঠাৎ দেখতে পেলাম ইরা মুখটা কালো হয়ে গেছে) রাশেল প্লিজ আমাকে এই বারের মতো ক্ষমা করে দাও, তুমি তো জানো আমার রাগ উঠলে, আমার মুখ দিয়ে যা যা আছে, সব গুলো বলে দেয়! (ইরা) আরে আপু আপনি কেন ক্ষমা চাচ্ছেন, আপনি তো কিছু করেন নাই, তাহলে ক্ষমা চাওয়ার কি আছে? আমি আসি আমার বাসায় কাজ আছে। বলে হাঁটা দিলাম,

ইরা পিছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি তাঁকে ছাড়াতে পারছি না, খুব শক্ত করেছে ধরেছে।
কোনো রকম থাকে ছাড়িয়ে বাসায় দিকে হাঁটা দিলাম,ইরা রাস্তার মাঝে হাঁটু গিরে বসে পড়লো, আমি পিছনে না তাকিয়ে বাসায় চলে আসলাম।

এমন করে আরো কিছু দিন চলে গেছে, ইরা প্রতিদিন আমার সাথে কলেজে কথা বলতে চাই, আমি থাকে এড়িয়ে যায়, একদিন রিদয় তাঁর গা ঘেঁষে বসতে চাইলো, ইরা তখন যেই পরিমানে রাগ উঠছে, বসা থেকে উঠে ঠাসসসস ঠাসসসস করে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে দিলো। আমি তো ইরা কাণ্ড দেখে অবাকক, আমি কেন কলেজে সবাই অবাকক হয়ে গেছে, রিদয়ের ঠোঁট দিয়ে রক্ত পড়তেছে। ওই ছোট লোকের বাচ্চা আজ থেকে যেনো তোকে আমার আসে পাশে না দেখি?

এখন আমার চোখের সামনে থেকো সড়। রিদয় ও কিছু না বলে চলে গেছে, আমি ও বাসায় চলে আসলাম। রাতে টেবিলে বসে বসে পড়তেছি।
এমন সময় আপু মোবাইলে কল আসলো।

ওই ছেমড়ি তোর ভাই কোথায়? (ইরা) সেই তো পড়তেছে, কিন্তু কেন? (আপু) তোর ভাইকে নিয়ে এখন আমাদের বাসায় চলে আয়! (ইরা) তুই কি পাগল হয়ে গেছিস নাকি? এখন বাসায় আব্বু আম্মু নেই, যদি আমরা ও তোদের বাসায় চলে যায় তাহলে বাসাটা পুরা খালি হয়ে যাবে? (আপু) তোরা আসবি কি না বল? (ইরা রেগে বললো)

আমরা বাসা খালি রেখে আসতে পারবো না! (আপু) দাঁড়া তোকে কিছু জিনিস দেখা তার পরে না হয় দেখা যাবে? (ইরা ফোনটা কেটে দিয়ে তিন মিনিট পরে একটা প্রভু দিলো আপু মোবাইলে।

আপু প্রভু টা দেখে অবাকক হয়ে গেছে। সাথে সাথে ইরা ফোন দিলো এই ইরা বেল্ট দিয়ে কি করবি? (আপু) হাত কাটবো! (ইরা) এই ইরা মুটে ও এমন কাজ করিস না? (আপু) তাহলে এখন তুই রাশেলকে নিয়ে আমাদের বাসায় চলে আয়! (ইরা) কিন্তু কোনো কিন্তু নই তুই এখন আমাদের বাসায় চলে আয়? (ইরা)

আচ্ছা দেখতেছি! (আপু ফোনটা কেটে দিয়ে আমার রুমে আস্তেছে। আমি আবার আমার পড়ায় মন দিলাম। আপু এসে বললো, রাশেল চল আমার সাথে। (আপু)

কোথায় যাবো আপু? এত কথা না বলে, বাইকটা বের করে চল। (আপু)

আমি ও আর কথা না বাড়িয়ে বাইক না রেব করলাম। আপু বাইকে উঠে বসলো।

আমি ও বাইকটা স্টার্ট দিলাম,আপু কথা মতো বাইক নিয়ে যাচ্ছি। প্রায় ২০ মিনিট পরে। আমরা ইরা বাসায় আসলাম। আমি তো অবাকক হয়ে গেছি।
আপু আমরা ইরা আপু বাসায় কেন আসলাম? এখন ইরা আপু হচ্ছে তাই না? (আপু আমার কান ধরে বললো) আউউউউ আপু লাগতেছে তো? লাগলে লাগুক। এখন এত কথা না বলে বাসার ভিতরে চল।

আমি না গিলে হয় না আপু? তুই ভিতরে যাবি নাকি অন্য ব্যবস্হা করতে হবে? না থাক চলো! তাঁর পরে চলে আসলা বাসার ভিতরে, বাসার ভিতরে এসে তো আমি আর আপু অবাকক, কারণ আব্বু আম্মু কেন ইরা বাসায়। আমি আপু পিছনে চলে আসলাম।

ইরা আমাকে নিয়ে একটা রুমে নিয়ে আসলো। রুমটা দরজা লাগিয়ে দিলো। আরে আপু আপনি দরজা লাগিয়েছেন কেন? ওই আমি তোর কোন কালে আপু? (ইরা রেগে বললো) এখন এই কালে আপু আপনি আমার, এক বছরে সিনিয়ার। রাশেল৷ প্লিজ আমাকে এই বারে মতো ক্ষমা করে দাও।

আমি তোমার সব কথা মেনে চলবো। (ইরা)

আমি চুপ করে থাকলাম। ইরা আমার চুপ করে থাকা দেখে চোখের পানি ছেড়ে দিলো। মেয়েরা একটা জিনিস পারুক আর না পারুক চোখের পানি কিন্তু ঠিকই ছাড়তে পারে।
ইরা আমার পায়ের নিচে বসে পড়লো। আমি সাথে সাথে থাকে উঠিয়ে।

আমার বুকে জড়িয়ে ধরলাম! (আমি আর তাঁর উপর অভিমান করে থাকতে পারলাম না।
তোমার জায়গার পায়ে না, তোমার জায়গায় আমার এই বুকে, এই বুকটা শুধু তোমার জন্য, আমি তাঁর কান্না দেখে, আমি কান্না করে দিলাম? এই তুমি কান্না করছো কেন?

(ইরা হাত দিয়ে আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো) চলো এখন বাইরে যায়? (ইরা)

আর কিছুক্ষণ থাকি না? ইরা কিছু না বলে আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। প্রায় কিছুক্ষণ পরে আমরা রুম থেকে বের হয়েছি, নিচে আসলাম।

কি বউ মা তোমাদের মান অভিমান শেষ হলো? (আম্মু বললো)

ইরা তো লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকালো।
আমি ও লজ্জা পেলাম আম্মু কথা শুনে। বড় আপু আগে আমি বিয়ে করে পেলতেছি হা হা হা।

এত লজ্জা পেতে হবে না, আগামী বিশ তারিখ তোমাদের বিয়ে। (কথাটা বলে সবাই উপরে চলে গেছে। আমি আর আপু ইরা নিচে আছি। এই ইরা আব্বু আম্মু কে কখন আসতে বলেছি? (আপু)

আজকে বিকালে আব্বু ফোন করে আসতে বলেছে? (ইরা) হুম ভালো তো আমার আগে তোদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।

আমি না হয় আরো তিন চার বছর সিংগেল থাকবো! (আপু) হা হা হা ততদিনে আমরা মজা নিই? (ইরা)

কিইই আমি থাকতে তোদেরকে মজা নিতে কখনো দিবো না মনে রাখিস? (আপু) দেখা যাবে।

লেখা – রাসেল মাহমুদ নিলয় (রাইসার আব্বু)

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “অভিমানী – ভালোবাসার মান অভিমান” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – অব্যক্ত কিছু কথা – valobasar gopon kotha

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *