Ex গার্লফ্রেন্ড যখন বউ – এবার খেলা হবে

Ex গার্লফ্রেন্ড যখন বউ – এবার খেলা হবে: তোকে পাঁচদিন কষ্ট দেওয়ায় একটা চড় দিয়েছিস। তাহলে হিসাব কর আমাকে যে ভুল বুঝে চার বছর কষ্ট দিয়েছিস। তাহলে তুই কয়টা চড় পাওনা! হিসাব করে দিবো।নাকি সবগুলা!


পর্ব ১

আজকে আমার বাসার রাত তবে সেটা শুধু নামেই, কারণ আমি বিয়ে করেছি আমার জীবনে সবথেকে বড় শত্রু আমার এক্স গালফ্রেন্ডকে! তাই রাতের সব সপ্ন মাটি দিয়ে দিলাম!

নিজের এক্স গালফ্রেন্ডকে বিয়ে করতে হবে তা কখনোও আমি ভাবতে পারি নাই। কিন্তু সবার ইচ্ছা রাখতে গিয়ে করতে হচ্ছে!

রুমের ভিতরে ঢুকে দেখি সুমাইয়া (বউয়ের নাম)শুয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে! তাই আমিও কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে এসে সোফায় শুয়ে গেলাম!

দুজনেই চুপ করে শুয়ে রইলাম এসব নীরবতা ভেঙ্গে হঠ্যাৎ সুমাইয়া বলে উঠলো!

পরিচয় পর্বটা শেষ করে নেই! নাহলে কিছুই বুঝবেন না! তারপর শুরু থেকে সব খুলে বলবো!

আমি আনোয়ার হুসাইন! এবছর পড়ালেখা শেষ করে আব্বুর সাথে তার ব্যবসা দেখাশোনা করি এই আরকি! বাবা মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান!

ছোট বেলা থেকেই একটা জিদ থাকে মনে। মানে কাউকে ছেড়ে কথা বলি না! সে যে কেউই হোক না কেনো আম্মু-আব্বু ছাড়া!

আব্বু ব্যবসার কাজে সারাদিন বাহিরে থাকে আর আমি আগে ছিলাম ভার্সিটিতে আর এখন তার সাথে কাজ শিখা নিয়ে ব্যাস্ত! তাই সারাদিন আম্মু বাসায় একলা থাকতে হয়!

তাই যখনই আমি বা আব্বু বাসায় থাকি তখনই আম্মু নিজের সব কথা আমাদের সাথে বলতে থাকে! আমার কাছে আসলে আমি আব্বুকে দেখিয়ে দেই আর আব্বু আমাকে দেখিয়ে দেয়!

এভাবেই চলতে লাগলো আমার দিনগুলা চলুন গল্পের শুরুতে ফিরা যাক!

আম্মুর সাথে বিকালে ছাদে বসে গল্প করতেছিলাম তখনই আম্মু বলে উঠলো!

আম্মুঃ কিরে তোকে যে কাল নিচের তলার নতুন ভাড়াটিয়া আন্টির সাথে দেখা করে আসতে বললাম। তখন তুই আমার সাথে গেলি না কেনো!

আমিঃ তোমাদের মহিলাদের সাথে গিয়ে আমি কি করবো বলো তো! তুমি গিয়েই দেখা করো!
আম্মুঃ থাক তোর যাওয়া লাগবে না!

আমিঃ আচ্ছা যাও কাল বিকালে তোমার সাথে গিয়ে তাদের সাথে দেখা করে আসবো!
আম্মুঃ ওকে!

পরের দিন বিকেলে আম্মুকে নিয়ে গেলাম নিচ তলার আন্টির সাথে দেখা করতে! আমি কলিংবেল চেপে দাড়িয়ে রইলাম!

একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিলো! বয়স বেশি না তবে সুন্দর পুরো ফুলের মতো! ভিতরে গিয়ে বসার পর নতুন আন্টি আসলো তার সাথে পরিচয় শেষ করে চুপ করে বসে রইলাম!

এই মহিলাদের মাঝে আমি কি বলবো কিছুই বুঝতেছি না! আন্টি হয়তো আমার ব্যাপারটা বুঝেছে তাই বললো!
আন্টিঃ কি হলো বাবা বাসা সাজানোটা পছন্দ হয় নি!

আমিঃ জ্বী আন্টি খুব সুন্দর হয়েছে!

আন্টিঃ ওহহ তাহলে পুরো বাসাটা ঘুড়ে দেখো আর মুনতাহা তুইও ওর সাথে যা ঘুড়িয়ে দেখা!

আন্টির কথা শুনে বুঝলাম মেয়ের নাম মুনতাহা তবে সবথেকে বড় কথা হলো আমাদের বিল্ডিং আমাকে ঘুড়ে দেখানোর কথা বলতেছে!

কিছু না বলে চুপচাপ চারদিকের দেয়ালে লাগানো পেন্টিং গুলা দেখতে লাগলাম তখনই মুনতাহা বলে উঠলো!
মুনতাহাঃ পছন্দ হয়েছে এগুলা!

আমিঃ হুম কে আর্ট করেছে এগুলা!

মুনতাহাঃ আমার কাজিন!
আমিঃ ওহহ! তা আপনি কোন ক্লাসে পড়েন!

মুনতাহাঃ এবার inter 2st year এর ছাত্রী!

আমিঃ ওহহ!

মুনতাহাঃ আপনি কি করেন!

আমিঃ পড়ালেখা শেষ করে আব্বুর সাথে ব্যবসার কাজ শিখতেছি!

মুনতাহাঃ আপনার বয়সের আমার একজন কাজিন আছে যে এইগুলা আর্ট করেছে!

আমিঃ ওহহ!

মুনতাহাঃ আচ্ছা এইখানে আর্ট কলেজটা কোথায় চিনেন আপনি!

আমিঃ জ্বী এখান থেকে একটু সামনেই কিন্তু কেনো?

মুনতাহাঃ ওহহ আসলে আমার কাজিন ঐ আর্ট কলেজে টিচার হিসেবে চান্স পেয়েছে তাই জিঙ্গাস করলাম আরকি! সে কিছুদিন এর ভিতর এখানে চলে আসবে তারপর এখানে থেকেই জব করবে!

আমিঃ ওহহ তাহলে তো ভালোই!

মনে-মনে ভাবতে লাগলাম সেই কখন থেকে নিজের কাজিন নিয়েই পড়ে আছে সালার মেয়েটা কি নিজের ব্যাপারে বলতে চাইতেছে না নাকি ছেলেদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তা জানে না!

নাকি এটারও বয়ফ্রেন্ড আছে এখনকার মেয়ে দিয়ে বিশ্বাস নেই! যাক এভাবে আরো কিছুক্ষণ থেকে আম্মুকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম!

এভাবেই কেটে গেলো চার-পাচদিন! এই কয়েকদিন বেশ কয়েকবার মুনতাহার সাথে দেখা হয়েছে হয়তো রাস্তায় নয়তো সিড়িতে এভাবে কেটে গেলো দিনগুলা!

শুক্রবার ভার্সিটি নেই তাই দুপুরে খেয়ে দিলাম এক ঘুম! হঠ্যাৎ হাসির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো!

বুঝতে পারলাম আম্মু কারো সাথে কথা বলতেছে তাই আর বেশি না ভেবে চুপচাপ শুয়ে রইলাম! ঘুম আর আসতেছে না তাই উঠে গেলাম!

ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িংরুমে আসলাম! এসে দেখি দুটা মেয়ে বসে আছে আমার উল্টো দিকে মুখ করে!

আমি এত একটা না ভেবে সোজা চলে গেলাম কিচেনে কফি বানানোর জন্য!

কফি বানাতে আর ভাবতে লাগলাম যে মুনতাহার পাশের মেয়েটা আবার কে? মুনতাহার কি কোনো বড় বোন আছে! নাকি সে তার কাজিন এর কথা বলতো সে?

যাক এসব চিন্তা মাথায় নিয়ে কফি নিয়ে আবার ড্রয়িংরুমে আসলাম! আম্মু আমাকে দেখে বলে উঠলো!
আম্মুঃ ঐতো হুসাইন উঠে গেছে!

আম্মু কথাটা বলা মাত্রই মুনতাহা আর ঐমেয়েটা ঘুড়ে আমার দিকে তাকালো! আমিও ঐ মেয়েটার দিকে তাকালাম!

ব্যাস কফির মগটা!


পর্ব ২

কফি বানাতে আর ভাবতে লাগলাম যে মুনতাহার পাশের মেয়েটা আবার কে? মুনতাহার কি কোনো বড় বোন আছে! নাকি সে তার কাজিন এর কথা বলতো সে?

যাক এসব চিন্তা মাথায় নিয়ে কফি নিয়ে আবার ড্রয়িংরুমে আসলাম! আম্মু আমাকে দেখে বলে উঠলো!
আম্মুঃ ঐতো হুসাইন উঠে গেছে!

আম্মু কথাটা বলা মাত্রই মুনতাহা আর ঐমেয়েটা ঘুড়ে আমার দিকে তাকালো! আমিও ঐ মেয়েটার দিকে তাকালাম!

ব্যাস কফির মগটা…………

ব্যাস কফির মগটা হাত থেকে ছুটে পড়ে গেলো গিয়েও আটকে পাড়লাম! উল্টো হাতের চামরাটা জ্বলে গেলো! তাই ব্যাথায় কাকিয়ে উঠলাম!
আম্মু তাড়াতাড়ি এসে হাতটায় পানি দিলো! আমি এইদিকে খেয়াল নেই! আমি নিজের চোখগুলাকে বিশ্বাস করাতে পারছি না!

কারণ আমার চোখের সামনে আমি আর কাউকে না সুমাইয়াকে বসে থাকতে দেখতেছি যার সাথে কলেজ লাইফে ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিলো!

এখন সুমাইয়াকে এখানে দেখবো কখনো আশাও করি নাই আর ঐদিকে সুমাইয়ার একই অবস্থা হঠ্যাৎ হাতটা পুড়াতে শুরু করলো!

তারপর আম্মু আমাকে রুমে নিয়ে গিয়ে কিছু মেডিসিন লাগিয়ে দিলো! মুনতাহা আর সুমাইয়া আম্মুর পাশে দাড়িয়ে দেখতেছে!

আম্মু মেডিসিন লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো সুমাইয়া আর মুনতাহাও তার পিছন-পিছন চলে গেলো!
আমার মাথায় এখনো সুমাইয়ার কথায় ঘুড়তেছে তার মানে এই সুমাইয়া মুনতাহার কাজিন!

এসব ভাবতে-ভাবতে প্রায় ন্ধা হয়ে এসেছে তাই ছাদে গেলাম একটু হাটতে! হালকা বাতাসে ছাদে বসে থাকতে ভালোই লাগতেছে!

হঠ্যাৎ পিছন থেকে কারো কাশির আওয়াজ আসলো! তাকিয়ে দেখি সুমাইয়া দাড়িয়ে আছে! তাই উঠে দাড়ালাম!
সুমাইয়াঃ কিরে এটা কি তোদের বাসা!

আমিঃ না বাসাটা জ্বীনের আমরা বাসাবাড়া নিয়ে থাকি!

সুমাইয়াঃ তোর ত্যাড়া কথাগুলো এখনো যায় নাই তাই না!
আমিঃ সারাজীবনেও যাবে না!

সুমাইয়াঃ ভালো তা কেমন চলতাছে তোর দিনকাল। আর তোর সেই বাবুর কি খবর!
আমিঃ দেখ প্রথম কথা হলো আমার কোনো বেবি,বাবু বা জানু ছিলো না তুই ছাড়া আর এখনো নাই আর হ্যা ভালোই আছি!

সুমাইয়াঃ কেনো জান্নাতের কি হয়েছে!

আমিঃ জান্নাতের ঘরে বছরখানেক আগে একটা ছেলে হয়েছে শুনেছিলাম তারপর আর জানি না!
সুমাইয়াঃ জান্নাত তোকে বিয়ে করে নি!

আমিঃ জান্নাতকে আমি বিয়ে করতে যাবো কেনো জান্নাত আমার ফ্রেন্ড ছিলো ব্যাস!
সুমাইয়াঃ ওহহ! তার মানে সে তোকে ছেড়ে অন্য জনকে বিয়ে করে ফেলেছে তাই তোর এত কষ্ট!
আমিঃ ফাউল কথা বাদ দিয়ে কাজের কথা থাকলে বল!

সুমাইয়াঃ ওকে, তা তাহিয়ার পরে আবার কোনো মেয়েকে পটিয়েছিস নাকি এখনো সিঙ্গেল!
আমিঃ যার জীবনে তোর মতো একটা ডাইনি থাকবে।
মনে-মনে ভাবতে লাগলাম যে আমাকে জ্বালাতে এসেছো ছাদে রাখ তোকে একটু হিট দিয়ে দেই নাহলে তুই ঠিক হবি না!

আমিঃ পছন্দ হবে না কেনো! ইদানিং একটা মেয়েকে খুব লাগে আমার!
সুমাইয়াঃ ওহহ তাই নাকি তা কে সেই পুড়া কপালি শুনি একটু!

আমিঃ কে আবার তোর খালাতো বোন মুনতাহা! মুনতাহাকে আমার খুব ভালো লাগে যা বলার মতো না!
কথাটা বলার সাথে-সাথেই সুমাইয়ারর চোখগুলা লাল হয়ে গেলো আর কোনো কথা না বলতে দিয়ে এসেই আমার গলা চেপে ধরলো আর বললো!

সুমাইয়াঃ কি বললি তুই আমার খালাতো বোনের দিকে নজর দিয়েছিস আজ তোকে মেরেই ফেলবো!
আমিঃ কেনো মুতাহাকে পছন্দ করলে তোর সমস্যা কি.?

সুমাইয়াঃ তোর নজর খারাপ তাই তুই আমার খালাতো বোনের দিকে ভুলেও তাকাবি না বলে দিলাম!
আমিঃ তুই বললেই আমাকে শুনতে হবে নাকি আমার ভালো লাগে মুনতাহাকে!
সুমাইয়াঃ আমিও দেখবো তুই কিভাবে এটা করিস!

আমিঃ ওকে! কিন্তু তুই এইখানে কেনো এই সন্ধায়?

সুমাইয়াঃ ভালো লাগতেছিলো না তাই আসছিলাম কিন্তু এখানে এসে দেখি তুই এখানে বসে আছিস!
আমিঃ ওহহ! তা তোর স্বামী কোথায় তাকে নিয়ে আসলি না এখানে!

সুমাইয়াঃ ঐ তোকে কে বলেছে আমি বিয়ে করেছি হুম!
আমিঃ না ভেবেছিলাম আরকি আর তোকে বিয়ে করবেই বা কে.?
তোকে বিয়ে করে মরবে নাকি পাবলিক!

সুমাইয়াঃ দেখ মুখ সামলে কথা বল বলে দিলাম!
আমিঃ ওকে তুই থাক আমি গেলাম নিচে!

সুমাইয়া কিছু না বলে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো। সুমাইয়া কে বেশ রাগিয়েছি তাই আর কিছুই বললাম না!
তারপর মনে-মানে হাসতে-হাসতে রুমে চলে আসলাম! মেয়েটা এখনো বদলায় নি। তবে আগের থেকে অনেক সুন্দর হয়েছে!

সুমাইয়ার কথা ভাবতে-ভাবতে এভাবে রাতটা কেটে গেলো! পরের দিন রেডি হয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেড়ুতেই দেখি সুমাইয়া দাড়িয়ে আছে রাস্তার পাশে! তাই গাড়ি থামিয়ে জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ রিক্সার জন্য wait করতেছিস নাকি!

সুমাইয়াঃ না হেলিকাপ্টার এর জন্য ওয়েট করতেছি!

আমিঃ আয় তোকে নামিয়ে দিয়ে যাবো আমি আমার অফিসের রাস্তায় তোর আর্ট কলেজ!
সুমাইয়াঃ থাক লাগবে না তুই যা আমি একাই চলে যাবো!

আমিঃ আচ্ছা একটা কথা বলতো তুই কি আমার সাথে ঝগড়া করতে বসে থাকিস নাকি সারাদিন! আর আমি তোর মতো খারাপ না আর প্রথমদিন দেরি হয়ে গেলে কেমন দেখায় না! তাই বলছি এসব বাদ দিয়ে আয় গাড়িতে উঠে বস!

সুমাইয়া কিছুক্ষণ দাড়িয়ে কি যেনো ভাবলো তারপর গাড়িতে উঠে বসে গেলো! তারপর আমি গাড়ি চালাতে লাগলাম! হঠ্যাৎ সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ সুমাইয়া আমার একটা উপকার করবি!
সুমাইয়াঃ তোর উপকার তাও আমি অসম্ভব!

আমিঃ আরে আগে শুনে তো দেখ তারপর নাহয় না করে দিস!
সুমাইয়াঃ আচ্ছা বল শুনি আগে!

আমিঃ মুনতাহাকে পটাতে একটু হেল্প কর না প্লিজ!
সুমাইয়াঃ ঐ তোকে কালকেই না বললাম এই সম্পর্কটা আমি মানতে পারবো না!
আমিঃ কেনো কি সমস্যা!

সুমাইয়াঃ জানি না!
আমিঃ সমস্যা নেই তো মিলিয়ে দিলেই তো পারিস নাকি তুই এখনো আমাকে ভালোবাসিস কোনটা!
কথাটা বলার সাথে-সাথেই সুমাইয়া আমার দিকে অবাক হয়ে তাকালো! আমি নিজেও জানি না কি বলে দিয়েছি! এই দিকে সুমাইয়ার কলেজে চলে আসায় গাড়িটা থামিয়ে দিলাম!

সুমাইয়া কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে নেমে চলে গেলো! আমি ভাবতে লাগলাম সুমাইয়ার এভাবে তাকিয়ে থাকার কারণ!

আর পাঠক ভাই ও বোনেরা আপনারা জানলেও বলবেন কেমন?
তারপর আমি অফিসে যেতে লাগলাম আর মনে-মনে মুখ ফসকে বেড়িয়ে যাওয়া কথাটা ভাবতে লাগলাম!
সন্ধায় রুমে বসে-বসে মোবাইল টিপতেছি তখন কানে হাসাহাসির শব্দ আসলো! বুঝলাম সুমাইয়া হয়তো বাসায় এসেছে!

কোনো কথা না বলে আমার রুমের দরজায় দাড়িয়ে সুমাইয়া আর আম্মুকে দেখতে ছিলাম!
সুমাইয়া একবার আমাকে দেখে নজর নিচে নামিয়ে ফেলে! আমি কিছু না বলে সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম!
কিছুক্ষণ পর রুমে চলে আসলাম তবে সুমাইয়া তাকিয়ে আবার নজরটা নামিয়ে ফেলাটা আমাকে ভাবাতে লাগলো “!

একবেলায় এতো পরিবর্তন ভাবা যায় এগুলা! এসব ভাবতে-ভাবতে এই রাতটাও কেটে গেলো!
এভাবে দিনগুলো!


পর্ব ৩

সুমাইয়া একবার আমাকে দেখে নজর নিচে নামিয়ে ফেলে! আমি কিছু না বলে সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম!
কিছুক্ষণ পর রুমে চলে আসলাম তবে সুমাইয়া তাকিয়ে আবার নজরটা নামিয়ে ফেলাটা আমাকে ভাবাতে লাগলো “!
একবেলায় এতো পরিবর্তন ভাবা যায় এগুলা! এসব ভাবতে-ভাবতে এই রাতটাও কেটে গেলো!
এভাবে দিনগুলো!

এভাবে দিনগুলো কাটতে লাগলো আর সুমাইয়ার আচরণের পরিবর্তন হতে লাগলো আমি অবাক হতে লাগলাম দিন দিন!
সুমাইয়া আমাকে দেখলে এখন নজর নামিয়ে চলে যায়! তারপর আমার সাথে কথা বলতে গেলে মনে হয় আনইজি ফিল করে! সুমাইয়ার হঠ্যাৎ কি এমন হলো যে এসব করছে এসব নিয়ে চিন্তা হয় অনেক!

তবে সুমাইয়া এখন অবসর সময়টা পাড় করে তাই আম্মুও আর আগের মতো আমাদের তার সারাদিনের গল্প শুনাতে আসে না!

যাক এভাবে ভালোই কাটতে লাগলো দিনগুলা! হঠ্যাৎ আব্বু রাতে আমাকে ডেকে গেলো ড্রয়িংরুমে যেতে কিছুটা অবাক হলাম তাও গেলাম!

এসে দেখি আব্বু-আম্মু দুজনেই বসে আছে আমাকে দেখে আব্বু বলে উঠলো!
আব্বুঃ হুসাইন আজ আমরা এজটা ডিসিশান নিয়েছি!

আমিঃ কি ডিসিশান!
আব্বুঃ কাল থেকে তুই অফিস সামলাবি আর আমি রিটায়ার্ড নিবো!
আমিঃ আব্বু আমাকে কিছুদিন সময় লাগবে তারপর নাহয় এসব নিয়ে চিন্তা করা যাবে!
আব্বুঃ নাহহ তা বললে তো হবে না আমারও তো বয়স হয়েছে নাকি!

আমিঃ প্লিজজজ!
আব্বুঃ ওকে দিলাম কিন্তু একটা শর্ত আছে!

আমিঃ এখানে আবার কিসের শর্ত!
আব্বুঃ কাল থেকে যদি তুমি অফিস সামলাও তাহলে একমাস পর থেকে তোমার জন্য মেয়ে দেখা শুরু করবো আর যদি সময় নাও তাহলে কাল থেকেই মেয়ে দেখতে থাকবো! মেয়ে পছন্দ হলে বিয়ে!

আমিঃ আব্বু কোথাকার কথা জোড়া কোথায় নিয়ে লাগাচ্ছো!

আব্বুঃ এসব জানি না তনে আজ রাতটা ভাবার সময়!

বলেই দুজনে উঠে নিজেদের রুমে চলে গেলো আমাকে কিছু বলতে না দিয়েই! আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলাম!
সালার জীবনটা হিরো আলেমের মতো হয়ে গেছে কি করবো আমি এখন আব্বু-আম্মুকে বুঝানো আর মুরগির পিঠে বসে চাদে যাওয়ার সপ্ন দেখা একই কথা!

আব্বু-আম্মুর বলা কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে গুমিয়ে গেলাম তা নিজেও জানি না!
সপ্নে দেখলাম একটা অজগর আমাকে খেয়ে ফেলতেছে তারপর ঘুম ভেঙ্গে
ঠিক করলাম নিজেই অফিস সামলাবো তাহলে কমপক্ষে একমাস তো ঝামেলাটা থাকবে না!

একমাস কোথায় দিয়ে চলে গেলো তা নিজেও জানি না! রাতে খাওয়ার সময় আম্মু বললো!
আম্মুঃ কাল বিকেলে রেডি হয়ে থাকিস!

আমিঃ কেনো কোনো কাজ আছে নাকি!

আম্মুঃ হুম কাল বিকেলে একটা মেয়েকে দেখতে যাবো!
আমিঃ আম্মু আমি এখন বিয়ে করবো না শুধু শুধু এসব বলতেছো কেনো!

আম্মু-আব্বু কোনোকিছু না বলে মনযোগ দিয়ে খাচ্ছে আমি অবাক হয়ে গেলাম! আম্মুকে জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ আম্মু আমি কি বলেছি শুনেছো তোমরা!

আম্মুঃ নাহহ,তুই কিছু বলেছিস নাকি!
আম্মুর কথা শুনে বুঝলাম ওনারা শুনেও না শোনবার ভান ধরতেছে! তাই আর কিছু না বলে চুপ করে খাওয়া-দাওয়া করে রুমে চলে আসলাম!

রুমে এসে বেশি একটা চিন্তা না করে গুমিয়ে গেলাম! সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো!
পরের দিন বিকেলে অফিস থেকে এসে আম্মুর সাথে মেয়ে দেখতে গেলাম!

মেয়েটা মোটামোটি সুন্দর কিন্তু আব্বুর আর আমার পছন্দ হয় নি! তাই এই যাত্রায় বেচে গেলাম!
এভাবে কয়েকটা মেয়ে দেখলাম কিন্তু কাউকেই পছন্দ হয় নি! তাই আম্মুকে বললাম!
আমিঃ আম্মু আগে মেয়ের সম্পর্কে জেনে নিয়ে তারপর আমাকে বলবা!

আম্মুঃ আচ্ছা দেখি!
তারপর এভাবে দুদিন ভালোই চলে গেলো! বিকেলে অফিসের কাজ করছি তখন আম্মু ফোন দিয়ে বাসায় আসতে বললো!

জানি হয়তো আবার একটা মেয়ে দেখতে নিয়ে যাবে! তাই বাসায় চলে আসলাম!
বাসায় এসে রেডি হয়ে আম্মু-আব্বুর সাথে বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলাম!

নিচের তলায় যেতেই আম্মু মুনতাহাদের বাসার কলিং বেইল চাপলো! আমি
এসব ভাবতেছিলাম তখনই মুনতাহা এসে দরজা খুলে দিলো! আব্বু-আম্মু আমাকে নিয়ে ভিতরে গেলো! আমিও গেলাম মনে এসব ভাবনা চিন্তা নিয়ে!

বাসায় দুজন মধ্যবয়সী লোক আছে ওনারা হয়তো স্বামী-স্ত্রী! যাক ঐদিকে নজর না দিয়ে আমি বসে রইলাম!
কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আন্টি ঘুমটা দেওয়া মেয়েকে নিয়ে এসে আমাদের সামনে বসালো! আমি কি ভাববো এটা চিন্তা করতেছি!

আম্মু মেয়েটার ঘুমটা তুলতেই আমি চমকে গেলাম! কারণ সেটা সুমাইয়া ছাড়া আর কেউ না! সুমাইয়াও আমার দিকে তাকিয়ে মুখটা কেমন যেনো করে ফেললো!

সুমাইয়ার আম্মু-আব্বু তাহলে এরা এটা বুঝতে পারলাম! যাক এখানে কিছু না বলে চুপ করে রইলাম!
আম্মু একবার জিঙ্গাসা করলো সুমাইয়াকে পছন্দ হয়েছে কি না! সবার সামনে না করলে কেমন দেখাবে তাই হ্যা বলে দিলাম!

ব্যাস এরা বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করে ফেললো একেবারে! আমি অবাক হয়ে রইলাম ওনাদের কথা শুনে!
যাক সবকিছু শেষ করে বাসায় আসতে অনেক রাতই হলো! বাসায় এসে আম্মুকে বললাম!
আমিঃ আম্মু আমি সুমাইয়াকে বিয়ে করতে পারবো না!

আম্মুঃ কেনো কি সমস্যা!

আমিঃ কোনো সমস্যা নেই এমনি বিয়ে করবো না আমি সুমাইয়াকে!
আম্মুঃ কোনো সমস্যা না থাকলে তোমাকে সুমাইয়া কেই বিয়ে করতে হবে!
আমিঃ কেনো দেশে কি আর কোনো মেয়ে নেই!

আম্মুঃ আছে তবে আমাদের জানা শুনা এর চেয়ে ভালো মেয়ে আর নেই!
আমিঃ তাও পারবো না বিয়ে করতে!

আম্মুঃ তোকে বিয়ে করতেই হবে কারণ এর আগে অনেক মেয়েকে পছন্দ হয়নি বা আরো অনেক কারণ দেখিয়ে না করে দিয়েছিস তাই এবার না করার কোনো কারণই নেই! তাই তোকে এই বিয়েটাই করতে হবে!

ওনাদের বুঝানো অসম্ভব তাই আর কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম! গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে ভাবতে লাগলাম!
সুমাইয়া নিজেই বিয়েতে মত দিবে না তাহলে আর এতো কিছু ভেবে লাভ কি! আর আমার আর সুমাইয়ার ব্যাপারটা আম্মু-আব্বু ওনাদের বলা যাবে না তাহলে আমার কাজ শেষ! যতটা পারি চেপে যাই!

এসব ভাবতে-ভাবতে ঘুমের রাজ্যে কখন যে হারিয়ে যাই তা নিজেও জানি না! সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো!
আম্মু মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে মুখে হাসি নিয়ে! তাই জিঙ্গাস করলাম!

আমিঃ কি হলো আম্মু এতো হাসি-খুশি দেখা যাচ্ছে আজ!

আম্মুঃ সুমাইয়া বিয়ের জন্য হ্যা বলে দিয়েছে!
আমিঃ – কিহহহ
আম্মুঃ হুম বিয়ে চারদিন পর তা তো জানিসই তাহলে রেডি হয়ে নে অনেক কাজ আছে!

বলেই আম্মু চলে গেলো আর আমি বোকার মতো সেখানেই বসে রইলাম আর ভাবতে লাগলাম কি থেকে কি হয়ে গেলো!

সুমাইয়া কিভাবে রাজি হয়ে গেলো আমার মাথাতেই ডুকতেছে না! এখন আটকাবো কিভাবে! এসব নিয়ে ভাবতে লাগলাম!

তারপর ফ্রেশ হয়ে গিয়ে দেখি বাসা সাজানোর লোক চলে এসেছে! তারপর ওনাদের দিকে মন দিলাম! সন্ধ্যায় নাকি এঙ্গেজমেন্ট! তাই সময় হাতে খুব কম!

এভাবে চলতে লাগলো দিনগুলা সুমাইয়ার দিকটা খুব একটা বুঝতেছি না ওর এভাবে মতামত দেওয়ার কারণ নিয়ে অনেক চিন্তায় পরে গেলাম!

যাক অবশেষে বিয়ের দিন চলে আসলো বাসায় প্রচুর মেনমান কি করবো এখনো মাথায় আসছে না!
সন্ধায় বিয়ে শেষ করে সুমাইয়াকে নিয়ে বাসায় চলে আসা হলো! আমি ফ্রেশ হয়ে চলে ছাদে!

কাজিনদের সাথে বসে-বসে আড্ডা দিতে লাগলাম! অনেক্ষণ এভাবে কেটে গেলো! হঠ্যাৎ তৌফিক এসে পাশে বসে আমাকে বললো!

তৌফিকঃ কিরে সুমাইয়া রুমে একা আর তুই এখানে কেনো! ( তৌফিক আমার বেস্টফ্রেন্ড )
আমিঃ আকাশের তারা গুনতেছিলাম কেনো!

তৌফিকঃ তুই যদি এখানে তারা গুনিস। তাহলে বাসর ঘরে বিড়াল মারবে কে!
আমিঃ দেখ ফাজলামি করিস না!

তৌফিকঃ থাক আর তারা গুণা লাগবে না এবার রুমে যা!

ঐখানে বেশি কিছু না বলে নিচে নামতে লাগলাম আর ভাবতে লাগলাম!
সুমাইয়া যেই……………..


পর্ব ৪

তৌফিকঃ কিরে সুমাইয়া রুমে একা আর তুই এখানে কেনো! ( তৌফিক আমার বেস্টফ্রেন্ড )
আমিঃ আকাশের তারা গুনতেছিলাম কেনো!

তৌফিকঃ তুই যদি এখানে তারা গুনিস। তাহলে বসর ঘরে বিড়াল মারবে কে!
আমিঃ দেখ ফাজলামি করিস না!

তৌফিকঃ থাক আর তারা গুণা লাগবে না এবার রুমে যা!
ঐখানে বেশি কিছু না বলে নিচে নামতে লাগলাম আর ভাবতে লাগলাম!
সুমাইয়া যেই……………..

সুমাইয়া যেই কারণেই আমাকে বিয়ে করুক না কেনো তবে বাশ যে খেতে হবে তা জানি! কি যে আল্লাই জানে!
এসব ভাবতে-ভাবতে রুমের কাছে গেলাম দরজার চিপা দিয়ে দেখা যাচ্ছে খাটে লাল শাড়ী পড়ে সুমাইয়া বসে আছে!

মন খারাপ করে কি করবো ভাবতে ভাবতে রুমে চলে গেলাম! গিয়ে দরজা লাগিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম!
ফ্রেশ হয়ে রুমের ভিতরে ঢুকে দেখি সুমাইয়া শুয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে! তাই আমিও কিছু না বলে বালিশ নিয়ে এসে সোফায় শুয়ে গেলাম!

দুজনেই চুপ করে শুয়ে রইলাম এসব নীরবতা ভেঙ্গে হঠ্যাৎ সুমাইয়া বলে উঠলো!
সুমাইয়াঃ কিরে কি ভাবছিস যে আমি তোকে বিয়ে করতে গেলাম কেনো তাইতো!
আমিঃ হুম কিছুটা ঐরকমই!

সুমাইয়াঃ গালফ্রেন্ড থাকতেও যখন অন্য মেয়ের সাথে মজা লুটিয়েছিলি তখন আমার অনেক রাগ হয়েছিলো! তাই ভাবলাম সেই রাগের প্রতিশোধ নিতে তোকে বিয়ে করেছি!

আমিঃ ওহহ! তার মানো তুই প্রতিশোধ নিবি এখন!

সুমাইয়াঃ হুম!
আমিঃ ওকে তাহলে আমাকে তো সেই পুরানো হুসাইন হতে হবে!

সুমাইয়াঃ আমি কিন্তু সেই পুরানো সুমাইয়া নেই যে এবার পার হয়ে যাবি!
আমিঃ ওকে তাহলে একটু চেক করে দেখি যে কতোটুকু বদলেছে!
সুমাইয়াঃ মানে?

আমিঃ দেখ কি করি তারপর মানেটা বুঝে যাবি!
বলেই আমি উঠে খাটের দিকে যেতে লাগলাম তখনই সুমাইয়া বলে উঠলো!
সুমাইয়াঃ তুই এদিকে আসতেছিস কেনো!

আমিঃ বাসর রাতে স্বামী তার স্ত্রীর দিকে যে কারণে আসে আমিও সেই কারণেই আসতেছি তোর কাছে!
সুমাইয়া বিছানা থেকে উঠে অপর পাশে চলে গেলো! আমি বিছানা পেড়িয়ে সুমাইয়ার সামনে গিয়ে দাড়ালাম! তখনই সুমাইয়া বলে উঠলো!

সুমাইয়াঃ দেখ তোর মনে উল্টা-পাল্টা কোনোকিছু থাকলে তা সরিয়ে ফেল নাহলে দেখবি আমি কি করি!
আমিঃ কি করবি শুনি!

সুমাইয়াঃ চিৎকার করে সবাইকে জড়ো করে ফেল
বো!
আমিঃ সবাই আসলে কি বলবি!
সুমাইয়া কথাটা শুনে চুপ হয়ে গেলো আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো! আমি সুমাইয়ার হাতগুলো দেয়ালের সাথে চেপে ধরলাম আর বললাম!
আমিঃ কি হলো এবার কর চিৎকার!

সুমাইয়া কিছু না বলে চুপ করে দাড়িয়ে রইলো আর ভাবনার ছাপ মুখে ফুটে রইল!
আমি সুমাইয়ার আরো কাছে গেলাম সুমাইয়া চোখ বন্ধ করে ফেললো সুমাইয়া এই চেহারা দেখে আমার হাসি পাচ্ছে! তাই হেসে দিলাম!

সুমাইয়া অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো আমার হাসি দেখে সুমাইয়া বললো!
সুমাইয়াঃ এভাবে হাসছিস কেনো.?

আমিঃ তুই নাকি কি করে ফেলবি বলেছিলি তার পরিক্ষা নিলাম একটু আর দেখলাম যে তুই কতটা ভিতু!
সুমাইয়া কিছু না বলে চুপ করে দাড়িয়ে রইলো আমি সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ তুই আমার উপর প্রতিশোধ নিতে বিয়ে করেছিস তাই না!
সুমাইয়াঃ হুম!

আমিঃ এবার তুই দেখ আমি তোকে কতটা প্যারা দেই তোকে জ্বালায়ি মারবো!
সুমাইয়া কিছু না বলে শুয়ে গেলো তাই আমিও চুপ করে শুয়ে রইলাম!

সোফায় ঘুম আসতেছে না আর ঐদিকে সুমাইয়া ঘুমিয়ে গেছে তাই আমি গিয়ে খাটে এক পাশে শুয়ে গেলাম! কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে গেলাম!

সকালে সুমাইয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তাকিয়ে দেখি সুমাইয়া রাগি চোখ নিয়ে আমার পাশে বসে আছে! তাই জিঙ্গাস করলাম!

আমিঃ কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো!
সুমাইয়াঃ তোকে এখানে এসে ঘুমাতে কে বলেছে!

আমিঃ আমার বিছানায় আমার ঘুমাতে কার পার্মিশান নিতে হবে আবার!
সুমাইয়াঃ আমার পার্মিশান নিতে হবে!

আমিঃ কেনো?
সুমাইয়াঃ কে জানে তুই কখন ফায়দা উঠাতে চাস!
আমিঃ ফায়দা কিভাবে উঠায়? এভাবে নাকি!

বলেই টান দিয়ে সুমাইয়াকে নিজের বাহুতে নিয়ে নিলাম। সুমাইয়া চোখ বড়-বড় করে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে! তাই আমি বললাম!

আমিঃ আর কিভাবে ফায়দা উঠায় বল আমি একটু উঠাই!
সুমাইয়াঃ ছাড় তুই আমাকে!

আমিঃ না ছাড়লে কি করবি শুনি!
সুমাইয়া কিছু না বলে চুপ করে রইলো আমি সুমাইয়া চেহারা দেখে বুঝতে পারলাম। বেচারি ফেসে গেছে আমাকে বিয়ে করে। এসব ভাবছিলাম তখনই কেউ দরজায় নক করলো!

আমি সুমাইয়াাকে ছেড়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম সুমাইয়া গিয়ে দরজা খুলে দিলো।তারপর সুমাইয়াও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে গেলো তারপর দুজনে মিলে নিচে গেলাম।

নাস্তা শেষ করে রুমে এসে বসে-বসে টিভি দেখতে লাগলাম! এভাবে দুপুর পাড় হয়ে গেলো!
বিকেলে বাহিরে যাবো বলে ঠিক করলাম রেডি হচ্ছিলাম তখনই সুমাইয়া রুমে আসলো।আমাকে দেখে বললো।
সুমাইয়াঃ কিরে কোথাও যাচ্ছিস নাকি!

আমিঃ হুম জাহান্নামে যাচ্ছি যাবি!
সুমাইয়াঃ না থাক ঐখানে তোর মতো পাপিগুলাই থাকে আমি তো ভালো মানুষ আমি গিয়ে কি করবো!
মনে-মনে ভাবতে লাগলাম নিজের কথায় নিজেই মার খেয়ে গেলাম তারপর আর কিছু না বলে বাহিরে চলে গেলাম!

বাহিরে কিছুক্ষণ ঘুড়াঘুড়ি করে বাসায় চলে আসার সময় একটা আইসক্রিম এর দোকান নজরে পড়লো! সুমাইয়া আইসক্রিম খুব ভালোবাসে ওর জন্য নিয়ে যাবো কি না ভাবতেছি!

কিছুক্ষণ ভেবে কি মনে করে যে কয়েকটা আইসক্রিম কিনে নিলাম! রাত অনেক হয়েছে তাই ভাবলাম এখন বাসায় যাওয়া যাক! তাই বাসায় চলে আসলাম!

বাসায় এসে আইসক্রিমগুলা রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম! এসে দেখি সুমাইয়া আইসক্রিম খাওয়া শুরু করে দিয়েছে আমাকে দেখে বললো!

সুমাইয়াঃ এগুলা কি আমার জন্য এনেছিস!
আমিঃ না আমার রুমে একটা শয়তান থাকে তার জন্য!

সুমাইয়া রাগি চোখ নিয়ে তাকালো! কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবার খাওয়ায় মন দিলো।
তারপর রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রুমে এসে খাটে বসে-বসে টিভি দেখতে লাগলাম কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া এসে আমাকে বললো!

সুমাইয়াঃবঐ সোফায় যা আমি এখন ঘুমাবে!
আমিঃ তো ঘুমাতে না করেছি নাকি তুই ঘুমালে ঘুমা!

সুমাইয়াঃ তুই এখানে ঘুমাবি নাকি!
আমিঃ হুম।আমার সোফায় ঘুম আসে না!

সুমাইয়াঃ তাহলে আমি আজ থেকে সোফায় ঘুমাবো তাও তোর সাথে ঘুমাবো না!
আমিঃ আমার সাথে ঘুমাবি না কেনো!

সুমাইয়াঃ তুই মানুষ খারাপ তাই!
আমি কিছু আর না বলে টিভি দেখতে লাগলাম সুমাইয়া গিয়ে সোফায় শুয়ে গেলো।

আমি টিভি দেখা শেষ করে গিয়ে সুমাইয়াকে কোলে করে বিছানায় এনে শুয়িয়ে দিতে ছিলাম তখনই সুমাইয়া সজাক হয়ে গেলো!

তাড়াতাড়ি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বললো!
সুমাইয়াঃ আমাকে এখানে নিয়ে এলি কেনো।

আমিঃ বউ পাশে না থাকলে ঘুম আসে না তাই ভাবলাম তোকে এখানে এনে শুয়িয়ে দেই!
সুমাইয়াঃ আমি সোফায় ঘুমাবো!

আমিঃ চুপচাপ যা বলতেছি তা শুন!

সুমাইয়াঃ না আমি সোফায় ঘুমাবো!

আমিঃ কখনো রোমান্টিক টর্চার এর নাম শুনেছিস!

সুমাইয়াঃ মানে?

আমিঃ কথা না শুনলে তোকে রোমান্টিক টর্চার করবো বলে দিলাম!

সুমাইয়াঃ আর কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে রইলো আমি সুমাইয়ার কপালে একটা পরশ একে দিয়ে ওর পাশে গিয়ে শুয়ে গেলাম!

মনে-মনে সুমাইয়ার কথা ভেবে হাসতে লাগলাম! প্রতিশোধ নিতে এসে সে নিজেই ফেসে গেছে!

এসব ভাবতে-ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম তা নিজেও জানি না!

সকালে সুমাইয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তাকিয়ে দেখি সুমাইয়া তার শাড়ি ধরে টানতেছে!

সুমাইয়ার শাড়ির আচল আমার পিঠের নিচে এসে পড়ে আছে আর সুমাইয়া সেটা টানতেছে আর আমাকে ডাকতেছে! সুমাইয়া আচল ছেড়ে দিয়ে সুমাইয়ার দিকে তাকালাম!

সুমাইয়া রাগি………………..


পর্ব ৫

সকালে সুমাইয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তাকিয়ে দেখি সুমাইয়া তার শাড়ি ধরে টানতেছে

সুমাইয়ার শাড়ির আচল আমার পিঠের নিচে এসে পড়ে আছে আর সুমাইয়া সেটা টানতেছে আর আমাকে ডাকতেছে! সুমাইয়া আচল ছেড়ে দিয়ে সুমাইয়ার দিকে তাকালাম!

সুমাইয়া রাগি……………….

সুমাইয়া রাগি চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

সকালে রেডি হয়ে অফিসের জন্য বেড় হতে যাবো এমন সময় আম্মু ডাক দিলো!

আম্মুঃ হুসাইন শুন!

আমিঃ আম্মু কিছু বলবে!

আম্মুঃ হুম কোথায় যাচ্ছিস তুই!

আমিঃ কোথায় আবার অফিসে যাবো!

আম্মুঃ দুদিন হলো বিয়ে করিস নি এখন অফিসে যেতে কে বলেছে তোকে! আর তোর আব্বু কয়েকদিন অফিস সামলাবে তাই তুই কয়েকদিন বাসায় থাক!

আমিঃ আম্মু তুমি কি শুরু করলে বলো তো!

আম্মুঃ বেশি কথা না বলে রুমে যা! আর বিকেলে সুমাইয়ার বাসা থেকে লোক আসবে তোদের নিয়ে যেতে তাই কথা না বাড়িয়ে রুমে যা এখন!

আম্মুকে আর কি বলবো তাই আর কিছু না বলে রুমে চলে আসলাম! রুমে এসে দেখি সুমাইয়া রুমে বসে আছে আমাকে দেখে সুমাইয়া বলে উঠলো!

সুমাইয়াঃ কিরে অফিসে যাস নি!

আমিঃ নাহহ!
সুমাইয়াঃ কেনো?

আমিঃ তোকে রেখে যেতে মন চাইতেছে না তাই ফিরে চলে আসলাম!
সুমাইয়াঃ পাম না দিয়ে সত্যি বল!

আমিঃ আম্মু বললো তার ছেলের বউকে নাকি সময় দিতে হবে তাই যেতে নিষেধ করেছে!
সুমাইয়াঃ ওহহ!

আমিঃ তা বল তোর কতো সময় লাগবে আমি দিবো পরে চাইলেও পাবি না!

সুমাইয়াঃ বেশি বকবক না করে ঘুমা আমার নিচে কাজ আছে আমি গেলাম!

বলেই সুমাইয়া চলে গেলো আমি বসে বসে টিভি দেখতে লাগলাম এভাবে বিকাল হয়ে গেলো!

বিকেলে বসে বসে মোবাইল টিপতেছি তখন সুমাইয়া রুমে এসে ফ্রেশ হতে চলে গেলো আমি ব্যাস সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম!

সুমাইয়া ফ্রেশ হতে চলে গেলো আমি আবার মোবাইলে মনযোগ দিলাম! সুমাইয়া ফ্রেশ হয়ে এসে মোবাইল টিপতে দেখে রাগি ভাব নিয়ে বললো!

সুমাইয়াঃ কিরে তুই এখনো রেডি হসনি কেনো!

আমিঃ কেনো রেডি হয়ে কি করবো কোথাও যাবি নাকি তুই!

সুমাইয়াঃ আজকে যে আমাদের বাসা থেকে লোক আমাদের নিতে আসবে তা কি তুই জানিস না!

আমিঃ আমি কি আগে বিয়ে করেছি নাকি এতো সব নিয়ম কানুন জানা থাকবে!

সুমাইয়া রাগি চোখ এবার লাল হয়ে গেলো নিশ্চয় মনে-মনে আমাকে মারতে চাইতেছে যাক কথাটা ঘুড়িয়ে সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ তুই যা আমি আসতেছি!

সুমাইয়াঃহুম!

বলেই সুমাইয়া চলে যেতে লাগলো তখনই আবার সুমাইয়াকে ডাক দিলাম! সুমাইয়া রাগি চোখ নিয়ে আবার তাকালো!

সুমাইয়াঃ কি হলো ডাকলি কেনো!
আমিঃ নিজের বউকে ডাকতেও কি কারণ লাগে নাকি আবার!

সুমাইয়াঃ ডপ না মেরে কি বলবি বল!

আমিঃ আচ্ছা মুনতাহা কি এখনো তোদের ঐখানেই আছে নাকি চলে এসেছে!

সুমাইয়াঃ কেনো?

আমিঃ না এমনি!
সুমাইয়াঃ মার খাওয়ার আগে ভালো হয়ে যা বলছি নাহলে মেরে তোর হাত-পা ভেঙ্গে দিব।

আমিঃ বকবক না করে যা আমি আসতেছি!

সুমাইয়া কেমন যেনো মুখটা কালো করে চলে গেলো আমি চলে গেলাম রেডি হতে!

সন্ধার দিকে সুমাইয়াদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম! প্রায় গভীর রাত হয়ে যায় যেতে-যেতে! তাই গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে শুয়ে পড়তে রুমে চলে যাই!

এখন ঘুমাতে এসে দেখি খাটটা একটু ছোট! মনে-মনে হেসে আমি শুয়ে গেলাম এক পাশে আমি শুয়ে রইলাম!
সুমাইয়া কিছুক্ষণ পর এসে আমার পাশে শুয়ে পড়লো মাঝে একটা কোলবালিশ দিয়ে দিলো!

সুমাইয়া ঘুমের মাঝে নড়াচড়া করার অভ্যাস আছে এখন যদি ঘুমের মধ্যে মেরে বসে তখন কি হবে এসব ভাবছিলাম তখনই খেয়াল করলাম সুমাইয়া ঘুমিয়ে গেছে!

অনেক ক্লান্ত হয়তো হয়ে আছে তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেছে কিন্তু আমার ঘুম আসছে না কেনো?
ঘুম আসছে না তাই কোলবালিশটা নিয়ে আসলাম আমার পাশে!

তারপর সেটাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম!

কিছুক্ষণের মাঝে ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম! তবে ঘুমটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় নি কারণ হঠ্যাৎ ঘুমের মাঝে অনুভব করলাম কারো গরম নিশ্বাস আমার পিঠে পড়তেছে তাই ঘুম ভেঙ্গে গেলো!

পিছনে দিকে ঘুড়বো তখন দেখি সুমাইয়া আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে আর তার নিশ্বাসটাই আমার ঘাড়ে পড়তেছে!

আমি কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে রইলাম আগের মতো আর ঘুমানোর ট্রাই করতে লাগলাম!

কিন্তু সুমাইয়ার গরম নিশ্বাসটা কেমন যেনো লাগতেছে আজব একটা ফিলিংস উকি দিতে লাগলো!

তখনই মনে পড়লো সেই পুরোনো দিনগুলা! যখন আমি কলেজ লাইফে ছিলাম!

সুমাইয়াকে আমি তখন নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম হয়তো সুমাইয়াও আমাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসতো!

কিন্তু সুমাইয়া আমাকে সন্দেহ করতো বেশি আর সন্দেহের কারণটা ছিলো আমার বেষ্টফ্রেন্ড জান্নাতকে নিয়ে!
জান্নাত আমার সাথে সারাদিন চলেফেরা করতো আর সুমাইয়া ভাবতো তার সাথে আমার সম্পর্ক আছে! আর এটা নিয়েই যত ঝামেলা!

একদিন সুমাইয়া এই বিষয়টা নিয়ে আমাকে অনেক প্যারা দেয় তারপর ব্রেকাপ করে ফেলি!
অনেকদিন রাতে আমি কেদেছিলাম তারপর আস্তে-আস্তে সব ঠিক হয়ে যায় তারপর সুমাইয়া কলেজ ছেড়ে চলে যায়!

তারপর সুমাইয়ার সাথে দেখা হয় মুনতাহাদের বাসায়! আর তারপর থেকে তো আপনারা সব জানেনই!
এসব ভাবতে-ভাবতে সকাল হয়ে গেলো তাই আবার ঘুমানোর ট্রাই করতে লাগলাম তখনই সুমাইয়া নড়ে উঠলো! তাই আমি ঘুমের ভান ধরে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।

সুমাইয়া আমাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে পড়ে তারপর আমি চুপ করে শুয়ে রইলাম তখনই সুমাইয়া বললো!
সুমাইয়াঃ শয়তান কোলবাশিটা নিয়ে রেখেছে ভালো হবে না কোনোদিন!

বলেই সুমাইয়াা ফ্রেশ হতে চলে গেলে আমি উঠে বসি ভাবতে থাকি সারারাত আমার ঘুম হারাম করে দিয়ে এখন আবার বকবক করতেছে!

সকাল সাতটায় সুমাইয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তাকিয়ে দেখি সুমাইয়া কফি নিয়ে দাড়িয়ে আছে!
সুমাইয়াঃ উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আয়!
আমিঃ হুম!

তারপর রেডি হয়ে চলে গেলাম নাস্তা করতে! নাস্তা করে এসে রুমে বসে রইলাম তখনই রুমে মুনতাহা আসলো!

মুনতাহাঃ কি ভাইয়া কেমন আছেন!

আমিঃ এইতো ভালো তোমার কি অবস্থা!

মুনতাহাঃ ভালো।সুমাইয়া আপু কোথায়?

আমিঃ কি জানি ড্রয়িংরুমে হবে হয়তো কেনো কাজ আছে নাকি কোনো!

মুনতাহাঃ না এমনি আপুর সাথে আড্ডা দিতাম রুমে থাকলে!

আমিঃ ড্রয়িংরুমে গিয়ে দেখো আছে হয়তো আড্ডা দাও সমস্যা নাই!

মুনতাহাঃ সমস্যা নাই আপাতত আপনার সাথেই আড্ডা দেই আপুর সাথে পড়ে আড্ডা দিবো!
আমিঃ ওকে!

মুনতাহাঃ আচ্ছা ভাইয়া আন্টি মানে আপনার আম্মু কি জাদু জানেন নাকি!

আমিঃ মানে?

মুনতাহাঃ না মানে যে কাজটা কেউ পারে নি সেটা আপনার আম্মু পারলো কি করে!
আমিঃ বুঝলাম না বুঝিয়ে বলো!

মুনতাহাঃ মানে হলো সুমাইয়া আপুকে এই নিয়ে মনে হয় হাজারটা ছেলে দেখতে এসেছে কিন্তু না করে দিয়েছে কিন্তু আন্টি যখন আপনার বিয়ের কথা বলতে এসেছে তখন আপু সহজেই রাজি হয়ে যায়! আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম তখন!

আমিঃ তাই নাকি!

মুনতাহাঃ হুম! যাক আপুর বিয়েটা হয়েছে তাতে ভালোই হলো এক দিক দিয়ে!
আমিঃ কোন দিক দিয়ে!

মুনতাহাঃ এই যে আমি একটা দুলাভাই পেলাম আড্ডা দেওয়া জন্য!
আমিঃ হা হা হা হা!

হাসি দিয়ে দরজার দিকে চোখ পড়তেই দেখি সুমাইয়া দাড়িয়ে আছে! তাই চোখ দিয়ে ইশারা করলাম কি হয়েছে!
সুমাইয়া মাথা নেড়ে কিছু না বলে মুচকি হেসে চলে গেলো! হয়তো সুমাইয়া দেখতে এসেছিল আমরা কি কথা বলি! মেয়েটার সন্দেহ করা এখনো গেলো না!

এসব ভাবতে-ভাবতে ঠোটের কোণে মুচকি হাসি চলে আসলো! মুচকি হাসি দেখে মুনতাহা বললো! “
মুনতাহাঃ কি হলে একা-একা হাসতেছেন কেনো!
আমিঃ না এমনি!

তারপর মুনতাহা আরো কিছুক্ষন গল্প করে চলে গেলো আমিও দিলাম একটা ঘুম!
ঘুম ভাঙ্গলে সুমাইয়ার ডাকে! উঠে ফ্রেশ হয়ে গিয়ে খাবার খেয়ে আবার রুমে চলে আসলাম!
কিছুক্ষণ পর!


পর্ব ৬

সুমাইয়া মাথা নেড়ে কিছু না বলে মুচকি হেসে চলে গেলো! হয়তো সুমাইয়া দেখতে এসেছিল আমরা কি কথা বলি! মেয়েটার সন্দেহ করা এখনো গেলো না!

এসব ভাবতে-ভাবতে ঠোটের কোণে মুচকি হাসি চলে আসলো! মুচকি হাসি দেখে মুনতাহা বললো! “
মুনতাহাঃ কি হলে একা-একা হাসতেছেন কেনো!

তারপর মুনতাহা আরো কিছুক্ষন গল্প করে চলে গেলো আমিও দিলাম একটা ঘুম!
ঘুম ভাঙ্গলে সুমাইয়ার ডাকে! উঠে ফ্রেশ হয়ে গিয়ে খাবার খেয়ে আবার রুমে চলে আসলাম!
কিছুক্ষণ পর!

কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া রুমে এসে আমার পাশে শুয়ে গেলো! তাই জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ কিরে ক্লান্ত হয়ে গেছিস নাকি!

সুমাইয়াঃ না কেনো?

আমিঃ তাহলে ফ্রেশ না হয়ে শুয়ে গেলি যে!
সুমাইয়াঃ এমনি ভালো লাগছে না তাই!

আমিঃ ওহহ! তা বাসায় যাবো কবে?
সুমাইয়াঃ কালকেই তো আসলি এতো বাসায় যাওয়ার জলদি কেনো?
আমিঃ এমনি?

সুমাইয়াঃ আগামীকাল বিকালে ফিরবো আমরা এখন ঘুমায়?
আমিঃ আমার ঘুম আসতেছে না তুই ঘুমা!

সুমাইয়াঃ ওকে!

বলেই সুমাইয়া চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইলো আমিও মোবাইল টিপায় মন দিলাম! কিছুক্ষণ পর সুমাইয়ার দিকে নজর গেলো!

দেখে মনে হলো সুমাইয়া ঘুমিয়ে গেছে তাই সুমাইয়ার দিকে ভালো মনে একটু তাকালাম! মেয়েটা ঘুমের মাঝে একদম নিষ্পাপ লাগে তাই তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ!

কিছুক্ষণ পর উঠে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে রুমে আসলাম! হঠ্যাৎ চোখ গেলো টেবিলের উপর রাখা সুমাইয়ার ডায়রিটার উপর! কি মনে করে যেনো ডায়রিটা হাতে নিলাম!
হবে না!

পরে ভাবলাম আমার বউয়ের সবই তো আমার তাই পড়তে লাগলাম!

ডায়রিটা পড়তে লাগলাম আর বুঝতে লাগলাম যে সুমাইয়া এখনো আমাকে ভালোবাসে! কিন্তু সেই পুরোনো সন্দেহের কারণে মেনে নিতে পারছে না!

লেখাগুলোর সাথে আমার কিছু ছবিও একেছে মেয়েটা পারেও! এসব ভাবতে ভাবতে খাটে এসে বসলাম!
সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে কেনো জানি আলাদা মায়া হতে লাগলো মেয়েটার প্রতি! তবে যে করেই হোক সুমাইয়ার ভুলটা ভাঙ্গাতে হবে!

নাহলে এভাবে পাশে বউ থেকে নিজেকে কন্ট্রোল করাটা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে! কি করা যায় কি করা যায় এটা নিয়ে ভাবতে লাগলাম!

সুমাইয়াকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে গেলাম সুমাইয়া গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তাই সে নিজের মতো করে ঘুমাতে লাগলো!

বিকালে সুমাইয়াকে নিয়ে গ্রামের ভিতরে একটু হেটে আসলাম মনটা হালকা হয়ে গেলো!

রাতে খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে ছিলাম সুমাইয়াও এসে আমার পাশে শুয়ে গেলো!

কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া হঠ্যাৎ আমাকে জিঙ্গাসা করে বসলো!

সুমাইয়াঃ আচ্ছা তুই কি বিকেলে আমাকে ঘুমের মাঝে জড়িয়ে ধরেছিলি!

মুখের কথা আটকে গেলো কি বলবো বুঝতেছি না তাও পরিস্থিতি সামলাতে বললাম!

আমিঃ কই না তো!

সুমাইয়াঃ ওহহ ভালো আর ভুলেও ধরার চেষ্টা করবি না!

আমিঃ ওহহ হ্যালো পেত্নীকে জড়িয়ে ধরার কোনো শখই আমার নেই!

সুমাইয়াঃ থাকবে কিভাবে অফিসে গিয়ে তো হাজারো মেয়েকে জড়িয়ে ধরে থাকিস তাহলে বউকে জড়িয়ে ধরবি কোথায় থেকে!

কথাটা সোজা গিয়ে কলিজায় আঘাত করলো! তাই সুমাইয়াকে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে এনে চেপে ধরলাম! সুমাইয়া অবাক হয়ে গেলো হঠ্যাৎ এমন আচরণ দেখে!

আমি নিজের আজান্তেই সুমাইয়ার একদম কাছে চলে গেলাম আর সুমাইয়াকে বললাম!
আমিঃ তুই কি চাস আমি তোকে জড়িয়ে ধরে কিস করি!

সুমাইয়াঃনাহহ! (সুমাইয়া কাপা কাপা গলায় বললো)
আমিঃ তাহলে কেনো বললি যে বউকে জড়িয়ে ধরি নাহহ অন্য মেয়েকে জড়িয়ে ধরি সারাদিন!
সুমাইয়াঃ তাহলে এই পেন্তীকে বিয়ে করতে গেলি কেনো? ( ভয়ে ভয়ে)
আমিঃ যা সত্যিই তাই তো বললাম!

সুমাইয়াঃ কি সত্যি
ব্যাস আর কোনো কথা না বলে সুমাইয়ার ঠোটগুলো নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিলাম সুমাইয়ার চোখ বড়-বড় হয়ে গেলো!

মিনিট দুয়েক পরে ছেড়ে দেই সুমাইয়া ঠাসস ঠাসস করে চড় মেরে চোখ বন্ধ করে ফেলে! আমি সুমাইয়ার রাগি মুখটা দেখতে লাগলাম!

আমিঃ আর যদি এসব ফাউল কথা শুনি তাহলে বাকি সবকিছু কেড়ে নিবো মনে রাখিস!

বলেই আমি গিয়ে শুয়ে গেলাম! সুমাইয়া কিছুক্ষণ ঐভাবেই দাড়িয়ে ছিলো তারপর এসে আমার পাশে শুয়ে গেলো!
সকালে সুমাইয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তাকিয়ে দেখি রাগি মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে! তাই জিঙ্গাস করলাম!

আমিঃ কিরে এভাবে তাকিয়েছিস আছিস কেনো খেয়ে ফেলবি নাকি!

সুমাইয়াঃ উঠে ফ্রেশ হয়ে নে নাস্তা করবো!

আমিঃ হুম!
উঠে চলে গেলাম ফ্রেশ হতে আর বুঝতে পারলাম রাতের কাহিনীটা নিয়ে এখনো ম্যাডাম রেগে আছে!

এভাবে কেটে গেলো দিনটা বিকেলে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম সুমাইয়াকে নিয়ে রাতে এসে পৌছালাম বাসায়!

রাতে হালকা কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম দুজন! সকালে উঠে অফিসে চলে গেলাম নিজের মতো করে!

বিকেলে অফিস থেকে বাসায় আসতে খেয়াল করলাম সুমাইয়া রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে! গাড়ির বা রিক্সার জন্য অপেক্ষা করতেছে!
তাই গাড়ি নিয়ে সুমাইয়ার সামনে থামালাম! সুমাইয়া রাগি ভাব নিয়ে তাকিয়ে আবার মুখ ঘুড়িয়ে নিলো!

মেয়েটার ইগো দেখে অবাক হয়ে গেলাম এভাবে দাড়িয়ে থাকবে তাও আসবে না কেমন না লাগে! তাই বললাম!

আমিঃকিরে উঠিস না কেনো!

সুমাইয়াঃ আমি পরে যাবো তুই যা!

আমিঃ বেশি বকবক করলে কাল রাতের…

সুমাইয়া এবার রাগি চোখে তাকিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো! চুপ করে বসে রইলো আর বেশ কিছু স্টুডেন্ট আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো!

আমিঃ আচ্ছা সুমাইয়া তুই যে বিবাহিতা এটা তোর স্টুডেন্টরা জানে নাকি?
সুমাইয়াঃহুম কেনো?

আমিঃ না তোকে গাড়িতে উঠতে দেখে সবাইকে তাকিয়ে থাকতে দেখলাম তাই জিঙ্গাস করলাম আরকি!

সুমাইয়াঃ ওহহ! এর আগে কখনো এভাবে কেউ নিতে আসে নি তো তাই হয়তো অবাক হয়েছে!

আমিঃ তাই নাকি না তুই নিজেকে সিঙ্গেল বলে বেড়াস সবাইকে তাই এমন ভাবে তাকিয়ে ছিলো!
সুমাইয়াঃ সবাইকে নিজের মতো ভাবিস নাকি!

আমিঃ তুই বেশি বুঝলে আমি সবাইকে নিজের মতো ভাবতে পারবো না কেনো?
সুমাইয়া আর কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলো!

রাতে খাওয়া-দাওয়া করে ছাদে চলে গেলাম! গিয়ে জান্নাতকে কল দিলাম! কল ধরে জান্নাত বললো!
জান্নাতঃ সরি সরি সরি তোর বিয়েতে আসতে না পারার জন্য!

আমিঃ ওকে, কি অবস্থা তোর!

জান্নাতঃ ভালো তোর কি খবর!

আমিঃ আর খবর, আচ্ছা শুন তোর একটা হেল্প লাগবে আমার!

জান্নাতঃ কি হেল্প আর সুমাইয়ার কি খবর!

আমিঃ হুম ভালো?

জান্নাতঃ এবার বল তোর কি হেল্প লাগবে!

আমিঃ তোকে প্রথম থেকে সবকিছু খুলে বলি নাহলে তুই বুঝবি না!

জান্নাতঃ হুম বল!

আমিঃ তুই তো জানিস সুমাইয়া আমাকে কলেজ লাইফে ছেড়ে যাওয়ার কারণটা!

জান্নাতঃ হুম!
আমিঃ ঐই কথাটা ধরে ( তারপর জান্নাতকে সব খুলে বললাম আমি) এবার বুঝলি এসবের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমি!
জান্নাতঃ বুঝলাম কিন্তু এখানে আমি কি করতে পারি বলবি একটু!

আমিঃ আচ্ছা তুই দুই-তিনদের জন্য আমাদের বাসায় বেড়াতে চলে আয় দুলাভাই বিদেশে চলে গেলে!
জান্নাতঃ কেনো?

আমিঃ কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হবে নাহলে এই মেয়ে সারাজীবন সন্দেহ করে যাবে?

জান্নাতঃ ওকে প্লেনটা বল আমি শুনি?

আমিঃ শুন তাহলে( তাহিয়াকে প্লেলনটা বললাম) এটা করলে দেখবি পুরো সোজা হয়ে গেছে!

জান্নাতঃ ওকে তোর দুলাভাই হয়তো আগামী সপ্তাহে দেশের বাহিরে যাবে তখন আমি আসবো নাহয়!

আমিঃ ওকে ভালো থাকিস রুমে চলে যাবো এখন ছাদে প্রচুর ঠান্ডা!

জান্নাতঃ ওকে বাই!
তারপর ফোন কেটে দিয়ে রুমে চলে আসলাম! রুমে ডুকেই…………


পর্ব ৭

জান্নাতঃ ওকে তোর দুলাভাই হয়তো আগামী সপ্তাহে দেশের বাহিরে যাবে তখন আমি আসবো নাহয়!
আমিঃ ওকে ভালো থাকিস রুমে চলে যাবো এখন ছাদে প্রচুর ঠান্ডা!
জান্নাতঃ ওকে বাই!
তারপর ফোন কেটে দিয়ে রুমে চলে আসলাম! রুমে ডুকেই……………

তারপর ফোন কেটে দিয়ে রুমে চলে আসলাম! রুমে ডুকেই দেখি সুমাইয়া রাগি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে! তাই জিঙ্গাস করলাম!

আমিঃ এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?

সুমাইয়াঃ কোথায় ছিলি এতক্ষণ!

আমিঃ ছাদে কেনো?

সুমাইয়াঃ এতো রাতে ছাদে গিয়েছিলি কেনো?

আমিঃবিবাহিতা সিঙ্গেলদের জীবনের কষ্ট তুই কি করে বুঝবি!
সুমাইয়াঃ বিবাহিতা সিঙ্গেলটা মানেটা কি শুনি?

আমিঃ বিয়ের পরেও সিঙ্গেল থাকা টাকে বিবাহিতা সিঙ্গেল বলে।

সুমাইয়াঃ তাহলে আমি কার বউ!

আমিঃ আমার কেনো?
সুমাইয়াঃ যার বউ থাকে সে সিঙ্গেল হয় কি করে বলবি একটু?

আমিঃ থাক তোকে বুঝিয়ে আর কাজ নেই ঘুমা এখন কাল অনেক কাজ আছে আমার!
সুমাইয়াঃ হুম ঐ সব লুচ্চা…(সুমাইয়াঃ বলতে গিয়েও থেমে গেলো)

আমি মনে মনেঃ যাক কালকের ডোজটা কাজে দিয়েছে সুমাইয়ার ভিতরে। তাই সুমাইয়া কে বললাম!
আমিঃ কিছু বলার আগে একটু ভেবে নিস। নাহলে কি হবে সেটা তো জানিসই!

-সুমাইয়া আর কিছু না বলে রাগ দেখিয়ে শুয়ে গেলো আমিও ফ্রেশ হয়ে শুয়ে গেলাম! হঠ্যাৎ সুমাইয়া আমার পিঠে দুইটা ঘুষি মেরে আবার মুখ ঘুড়িয়ে শুয়ে পড়লো তাই আমি জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ কিরে মারলি কেনো?

সুমাইয়াঃ তুই অনেক খারাপ তাই?

আমিঃ মানে এখন আবার কি করলাম!

সুমাইয়া আর কিছু না বলে শুয়ে রইলো বুঝতে বাকি রইলো না যে মারগুলো দিয়েছে কথা শুনাতে পারে নি তাই!
মনে-মনে হাসতে-হাসতে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে সুমাইয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তাই উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিসে চলে গেলাম!

বিকেলে আসার সময় সুমাইয়া আর্ট কলেজ থেকে কে নিয়ে আসলাম!
এভাবে সপ্তাহ কেট
একদিন অফিসে কাজ করতেছিলাম তখনই জান্নাত কল দিলো তাই রিসিভ করলাম!

জান্নাতঃ কিরে শয়তান কি করিস!

আমিঃ মানুষের কয়টা হাড্ডি খেয়েছি তার হিসাব নিকাশ করতেছি আরকি?
জান্নাতঃ ভালো হবি না তুই!

আমিঃ নাহহহ সোনা!

জান্নাতঃ কিরে আমি তোর সোনা কবে থেকে হলাম!

আমিঃ যেদিন থেকে তোকে বউ করে নেওয়ার সপ্ন দেখেছি!

জান্নাতঃ ওহ আচ্ছা, সুমাইয়ার কি খবর!

আমিঃ আগের মত!
জান্নাতঃ আচ্ছা শুন কাল তোর দুলাভাই দেশের বাহিরে চলে যাবে পাচ-ছয়দিনের জন্য তাই কাল এসে আমাকে নিয়ে যাবি বিকেলে বুঝলি!

আমিঃ আচ্ছা!

রাতে বাসায় গিয়ে সুমাইয়া কে দেখে হালকা মুচকি হাসি দিলাম আর মনে-মনে ভাবলাম যে রাখ পেত্নী তোকে কয়েকদিনে ঠিক করে ছাড়বো!

সুমাইয়া কেমন যেনো সন্দেহের চোখে তাকায় তারপর আবার কি ভেবে চলে যায় হয়তো আমার হাসির কারনটা খুজতেছে!

পরের দিন বিকেলে অফিস শেষ করে আসার সময় জান্নাতদের বাসায় গিয়ে জান্নাত আর তার ছোট্ট ছেলেটাকে নিয়ে আসি!

বাসায় এসে কলিংবেল চাপতেই সুমাইয়া এসে দরজা খুলে দেয়! জান্নাত আর আমাকে এক সাথে দেখে সুমাইয়া হা করে তাকিয়ে থাকে! তাই সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ কিরে জান্নাতকে চিনতে পেরেছিস!

সুমাইয়াঃ হুম!
জান্নাতঃ কেমন আছো সুমাইয়া?
সুমাইয়াঃ এই তো ভালো!

তারপর জান্নাতকে নিয়ে ভিতরে চলে গেলাম! আম্মু – আব্বুর সাথে কথা শেষ করে জান্নাতকে উপরে নিয়ে তার রুম দেখিয়ে দিয়ে আমি নিজের রুমে গেলাম!

আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ফ্রেশ এসে বসার কিছুক্ষণ পরেই সুমাইয়া কোথায় থেকে যেনো এসে রুমে ঢুকলো! দরজা লাগিয়ে দিয়ে এসে আমাকে বললো!

সুমাইয়াঃ জান্নাত এখানে কি করতে এসেছে!

আমিঃ আমার সাথে প্রেম করতে এসেছে কেনো তুই জানিস না। যে একটা মেয়ে তার বন্ধুর বাড়িতে কি করতে আসে!

সুমাইয়াঃ দেখ তোর মতলব আমার কাছে ভালো মনে হচ্ছে না। যদি কেনো উল্টা-পাল্টা করিস তাহলে তোর খবর আছে বলে দিলাম!

আমিঃ ওকে আর শুন বাসায় যেনো আব্বু-আম্মু না জানে যে তুই জান্নাতকে আগে থেকে চিনিস! সবসময় না চিনার ভান ধরে থাকবি!

সুমাইয়াঃ জীবনে অভিনয় করাটা শেষ হবে না আর কোনোদিন!
আমিঃ হবে কিভাবে নিজের দোষেই অভিনয় করতে হয় তোর!
সুমাইয়াঃ মানে কি বললি তুই?

আমিঃ কিছু না! আর বকবক না করে যা তো এখান থেকে। আমি এখন গিয়ে জান্নাতের সাথে গল্প করবো!

কথাটা শুনে সুমাইয়া তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলো আমি সেদিকে খেয়াল না করে চলে গেলাম!

রাতে খাওয়া-দাওয়া করে জান্নাতকে নিয়ে ছাদে চলে গেলাম! তখন জান্নাত বললো!

জান্নাতঃ আচ্ছা রে যদি পরে হিটে বিপরীত হয়!
আমিঃ যেমন?
জান্নাতঃ যদি সুমাইয়া তোকে ছেড়ে চলে যায়!
আমিঃ এটা অসম্ভব!
জান্নাতঃ তুই এতোটা শিওর হয়ে বলিস কিভাবে!
আমিঃ দেখ যেই মেয়েকে হাজার বার বলার পরেও বিয়ে কথা বলার পরেও রাজি হয় নি।

আর আমার কথা বলার সাথে-সাথেই রাজি হয়ে গেছে।তার মানে সুমাইয়া এখনো আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে! আর যেহেতু একবার হারিয়ে পেয়েছে তাই এতো সহজে ছেড়ে যাবে বলে মনে হয় না!

জান্নাতঃ তার মানে তুই তার ভালোবাসার ফায়দা তুলতেছিস!

আমিঃ নাহহ শুধু সুমাইয়ার সন্দেহটা ভাঙ্গতেছি!

জান্নাতঃ হুম বুঝলাম!

আমিঃ আরেকটা কথা সুমাইয়ার সাথে যে আমার সম্পর্ক ছিলো এটা বাসায় জানে না। তুইও কিছু বলিস না! তুই শুধু আমাকে চিনিস আর সুমাইয়াকে কষ্ট করে ভাবি বলে ডাকিস প্লিজ!

জান্নাতঃ ওকে সমস্যা নাই!

জান্নাতের সাথে আরো কিছুক্ষণ গল্প করে নিচে চলে আসলাম! তারপর জান্নাতকে তার রুমে দিয়ে আমি আমার রুমে চলে আসলাম!

রুমে ডুকে অবাক হয়ে গেলাম লাইট অফ করা রুমের! লাইট অন করতেই দেখি সুমাইয়া শুয়ে আছে একপাশে! তাই সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ কিরে ঘুমিয়ে গেছিস!

ঐপাশ থেকে কোনো উত্তর আসলো না তাই আমিও ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে গেলাম!

সকালে জান্নাতের কল দেওয়াতে ঘুম ভাঙ্গলো! উঠে দেখি সুমাইয়া এখনো ঘুমাচ্ছে!

তাই আর না ডেকে ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে দেখি জান্নাত বসে আছে! আম্মুকে কফি দিতে বলে দুজনে বসে গল্প করতে লাগলাম!
কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া আসলো ঘুম থেকে উঠে আমাদের একসাথে দেখে। মুখটা কালো করে চলে গেলো
রান্নাঘরে!
আমি আর জান্নাত তার এই মুখ দেখে হাসতে-হাসতে শেষ! তারপর নাস্তা শেষ করে অফিসে চলে গেলাম!
বিকেলে অফিস শেষ করে এসে দেখি সুমাইয়া রুমে বসে আছে! আমি কোনো কথা না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম!
ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হতে লাগলাম আয়নার সামনে দাড়িয়ে তখন সুমাইয়া পিছনে এসে দাড়ালো।তাই সুমাইয়া দিকে ঘুড়ে জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃকিরে কি হয়েছে!

সুমাইয়া কোনো কথা না বলে পিছন থেকে ছুড়ি বেড় করে আমার গলায় ঠেকায় আমি অনেকটা অবাক হয়ে গেলাম তখনই সুমাইয়া বললো!

সুমাইয়াঃ অন্য মেয়েকে নিয়ে এতো লুটুর পুটুর কিসের হ্যা!

আমিঃ কোথায় কি করলাম আর তুই এটা নামা নাহলে লেগে যাবে গলায়!

সুমাইয়াঃ না আগে তুই বল ঐ মেয়ের সাথে এতো কিসের বকবক তোর?

আমিঃ কেনো তুই না ভাবিস নাযে। জান্নাত আমার পুরানো প্রেমিকা তাহলে পুরোনো প্রেমিকার সাথে কতো কথাই থাকতে পারে!

সুমাইয়া কিছু না বলে ভাবতে লাগলো কি যেনো তখনই আমি বললাম!

আমিঃ সর জান্নাত বসে আছে আমার জন্য তোর সাথে পরে কথা বলবো!
সুমাইয়াঃ তুই আবার যাবি ঐ মেয়েটার কাছে?

আমিঃ তো তোর কাছে বসে থেকে কি করবো? সর জান্নাতের সাথে প্রেম করি গিয়ে।

বলেই সুমাইয়াকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম সুমাইয়া হা করে তাকিয়ে রইলো!বুঝলাম কথাটা ভালোই কাজে দিয়েছে!

রাতে খাওয়া-দাওয়া করে জান্নাতের সাথে অনেক্ষণ গল্প করে রুমে এসে দেখি সুমাইয়া জেগে বসে আছে! তাই বললাম!
আমিঃ কিরে ঘুমাস নি এখনো!

সুমাইয়াঃ না কেনো তোর কোনো সমস্যা!

আমিঃ নাহহ তাতে আমার কি সমস্যা থাকবে!

বলেই ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম আর ভাবতে লাগলাম!

সুমাইয়াকে আমি জেনে বুঝে অবহেলা করতেছি যেনো সে বুঝতে পারে যে ওর সন্দেহটা মিথ্যা ছিলো!
ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে এসে দেখি সুমাইয়া কি নিয়ে জেনো চিন্তা করতেছে তাই বললাম!

আমিঃ কিরে কি!


পর্ব ৮

সুমাইয়াকে আমি জেনে বুঝে অবহেলা করতেছি যেনো সে বুঝতে পারে যে ওর সন্দেহটা মিথ্যা ছিলো!

ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে এসে দেখি সুমাইয়া কি নিয়ে জেনো চিন্তা করতেছে তাই বললাম!

আমিঃ কিরে কি!

আমিঃ কিরে কি নিয়ে এতো চিন্তা করতেছিস!

সুমাইয়া চিন্তার জগৎ থেকে বেড়িয়ে আসলো আমার কথা শুনে তারপর বললো!

সুমাইয়াঃ ভাবতেছি চাদে যাবো!

আমিঃ ভাব না নিয়ে ঘুমা!

বলেই আমি শুয়ে গেলাম সুমাইয়াও শুয়ে গেলো! সকালে আবার সেই জান্নাতের ফোনে ঘুম ভাঙ্গলো!

উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে দেখি জান্নাত বসে আছে! আমাকে দেখেই জান্নাত বললো!

জান্নাতঃ হুসাইন রাতে তোর দুলাভাই ফোন দিয়ে বলেছে সে নাকি পরশু ফিরে আসবে!
আমিঃ তো তুই কি কালকে ফিরে যাবি নাকি?

জান্নাতঃ হুম কাল বিকেলে চলে যাবো!

আমিঃ ওকে তাহলে রাতেই ডোজটা দিয়ে দিবো সুমাইয়াকে!
জান্নাতঃ ওকে!

সুমাইয়া কিছুক্ষণ পর ঘুম থেকে নিচে আসলো! আমাদের আবার একসাথে দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রান্নাঘরে চলে গেলো!

কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া একটা কফির মগ এনে জান্নাতকে দিয়ে আমাকে বললো!

সুমাইয়াঃ হুসাইন একটু উপরে আয় আমাকে একটু হেল্প করে দিয়ে যা প্লিজ!
আমিঃ কি হেল্প?

জান্নাতঃ আসলেই দেখতে পারবি আয়!
আমিঃ ওকে!

তারপর সুমাইয়াকে নিয়ে রুমে আসলাম রুমে ডুকতেই সুমাইয়া দরজা লাগিয়ে দিয়ে আমার কাছে আসলো! তাই আমি জিঙ্গাস করলাম!

আমিঃ দরজা লাগালি কেনো?

সুমাইয়াঃ দরজা লাগানো তে পাপ হয়ে গেছে নাকি আমার!

আমিঃ নাহহ আচ্ছা বল তোর কি হেল্প লাগবে যে নিচ থেকে ডেকে উপরে নিয়ে আসলি!

সুমাইয়াঃ মনটা ভালো না তাই তোর সাথে গল্প করবো বলে নিয়ে এসেছি!

আমিঃ তুই কি পাগল যে সবার সামনে থেকে ডেকে নিয়ে এসেছিস!

সুমাইয়াঃ কেনো ডেকে আনাটা কি দোষ হয়েছে!

আমিঃ আচ্ছা বাদ দে এদিকে আয়!

সুমাইয়াঃ নাহহ যা বলার দূর থেকেই বল!

আমিঃ আচ্ছা বল কিসের জন্য তোর মন খারাপ!

সুমাইয়াঃ বললে কি তুই সেটা ঠিক করে দিতে পারবি!

আমিঃ যদি পারি তাহলে তো ঠিক করেই দিবো!

সুমাইয়াঃ কলিজাতে ঘা হচ্ছে পারবি ঠিক করে দিতে!

আমিঃ এটা তো ডাক্তারের কাজ এভাবে মন খারাপ করে বসে না থেকে ডাক্তারের কাছে যা তাহলেই তো হয়!
সুমাইয়াঃ এখানেই তো সমস্যা!

আমিঃ কিসের সমস্যা!

সুমাইয়াঃ এই যে এই রোগের ডাক্তারই বলে ডাক্তারের কাছে যেতে!

বুঝলাম সুমাইয়ার কলিজায় এতোদিনে হারানোর ভয়টা ডুকেছে! তবে সন্দেহের ভূতটা না তাড়ালেই নয়! মনে-মনে ভাবা দেখে সুমাইয়া বললো!

সুমাইয়াঃ কিরে কি এতো ভাবছিস!

আমিঃ তোর কথার কোনো আগা-মাথা বুঝলাম না! আচ্ছা বাদ দে নিচে আয় নাস্তা করে অফিসে যাবো!
সুমাইয়া মাথা নেড়ে হ্যা বললো! আমি আর কিছু না বলে নিচে চলে আসলাম!

বসে-বসে ভাবতে লাগলাম যে সন্ধায় কিভাবে আগুনটা লাগানো যায়! তারপর কিছুদিন ম্যাডাম পুরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে আপনা-আপনি!

নাস্তা করে চলে গেলাম অফিসে বিকালে আসার সময় সুমাইয়াকে কলেজ থেকে নিয়ে আসলাম!

এসে ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ মোবাইল টিপলাম! রাত ৮:০০ টায় জান্নাতকে ফোন দিয়ে বললাম ছাদে যেতে!

জান্নাত ছাদে চলে গেলে আমি রান্নাঘরে গিয়ে দেখি আম্মু আর সুমাইয়া রান্না করায় ব্যাস্ত! তাই সুমাইয়াকে বললাম!
আমিঃ সুমাইয়া আমার আর জান্নাতের জন্য দুই কাপ কফি বানিয়ে দিতে পারবে প্লিজ!

সুমাইয়াঃ হুম! কোথায় দিয়ে আসতে হবে!
আমিঃ ছাদে আছি আমরা!

সুমাইয়াঃ ওকে আমি নিয়ে আসছি!

আমি চলে গেলাম ছাদে গিয়ে দেখি জান্নাত দাড়িয়ে আছে আমাকে দেখেই বললো!
জান্নাতঃ কিরে বলে এসেছিস!

আমিঃ হুম আমি নজর রাখছি সে আসে কি না আসলেই শুরু হবে আর তুই গিয়ে ঐখানে বসে থাক!
কিছুক্ষণ পর সুমাইয়াকে উপরে আসতে দেখে আমি গিয়ে জান্নাতেত পাশে গিয়ে দাড়ালাম! তারপর জান্নাতকে বলতে লাগলাম!

আমিঃ তুই বিয়েটা করতে গেলি কেনো। পেত্নী বিয়ের আগেই তো আমরা কতো ভালো ছিলাম!
জান্নাতঃ বিয়ে তো একদিন করতেই হতো তাই আগেই করে ফেললাম!

আমিঃ তোকে আজকে একটা কথা বলতে চাই এটা অবশ্যা অনেক আগেই বলতাম। কিন্তু বলতে পারি নাই! তাই অবেলায় বলতে হচ্ছে!

জান্নাতঃ কি কথা বল!
আমিঃ জানিস আমি তোকে পছন্দ করতাম এক রকম ভালোই বাসতাম কলেজ লাইফে!
জান্নাতঃ কেনো এখন বাসিস না!

আমিঃ প্রথম ভালোবাসা কে ভুলতে পারে বল!

জান্নাতঃ ওলে পিচ্চি বাদ দে। এখন সুমাইয়া যে কোনো সময় আসতে পারে! তাই বাদ দে এসব কথাটা!
আমিঃ হুম তাই ভালো!

জান্নাতঃ সুমাইয়াকে কি তুই ভালোবাসিস!
আমিঃ হুম!

জান্নাতঃ তাহলে আমাকেও যে ভালোবাসসি বললি এটার মানে কি?
আমিঃ বাদ দে এটার হিসাব তুই বুঝবি না! তার চেয়ে ভালো তুই চাঁদ দেখ!
জান্নাতঃ হুম দেখ চাঁদটা কি সুন্দর করে উঠেছে!

আমিঃহুম!
তারপর দুজনে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম! কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া গলা কাশি দিলো!
দুজনে একদম নরমাল ভাবে কফির মগটা নিয়ে আমি সুমাইয়াকে বললাম!
আমিঃ tnxx

সুমাইয়া কিছু না বলে চলে গেলো! তবে চাদের হালকা আলোয় বুঝতে পারলাম সুমাইয়ার চোখে পানি জমে আছে!

অনেক কষ্ট পেয়েছি এই চারটা বছরে আমি তার শুধ নিয়েই ছাড়বো আমি এবার দেখো কেমন লাগে! এসব ভাবছিলাম তখন জান্নাত বলে উঠলো!

জান্নাতঃ হুসাইন কোথাও বেশি করে ফেললাম না তো!
আমিঃ নাহহ সব ঠিক আছে!

জান্নাতঃ ওকে আয় নিচে যাই কফি শেষ করে!

আমিঃ হুম!

কফি শেষ করে নিচে চলে আসলাম! কিচেনে মগটা রেখে জান্নাতের সাথে বসে গল্প করতে লাগলাম!
রাতে খাওয়া-দাওয়া করে রুমে গিয়ে শুয়ে মোবাইল টিপতে লাগলাম তখনই সুমাইয়া রুমে এসেই লাইট অফ করে আমার পাশে এসে শুয়ে গেলো!

কথাগুলোর রিয়েক্শানটা কেমন হবে চেক করার জন্য কিছু না বলে সুমাইয়াকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম!

সুমাইয়ার কোনো রিসপোন্স নাই! শুধু চুপ করে শুয়েই রইলো! বুঝলাম এবার ম্যাডাম পাহাড়ের নিচে আসছে! কিছুদিন যাক তারপর সবকিছু বুঝিয়ে বলবো!

সকালে আবার জান্নাতের ফোনে ঘুম ভাঙ্গলো! উঠে দেখি সুমাইয়া ঘুমাচ্ছে উল্টো দিকে মুখ করে!
তাই আর না ডেকে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম! কিছুক্ষণ পর সুমাইয়াও নিচে গেলো কিন্তু সব থেকে অবাক হলাম যে!

সুমাইয়া আমার দিকে একবারও না তাকিয়ে সোজা কিচেনে চলে গেলো! আমি হা করে সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম! তখনই জান্নাত বলে উঠলো!

জান্নাতঃ মামা এটার ফল তোমাকেও কম পুরাবে না!
আমিঃ আরে ধুর!

নাস্তা করে অফিসে চলে গেলাম! বিকালে জান্নাতকে নিয়ে ওদের বাসায় দিয়ে আসলাম! বাসায় এসে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম!

ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি সুমাইয়া কফি রেখে গেছে আমার জন্য! তাই কফিটা খেয়ে বসে বসে মোবাইল টিপতে লাগলাম!

রাতে খাওয়া-দাওয়া করে রুমে এসে শুয়ে গেলাম! কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া এসে গতকাল এর মতো লাইট নিভিয়ে দিলো! তারপর এসে আমার পাশে শুয়ে গেলো!
সকালে উঠে দেখি সুমাইয়া পাশে নেই তাকিয়ে দেখি ৮:০০ টা বাজে! সুমাইয়া ডাক দেয় নাই আজকে আমাকে কিছুটা অবাক হলাম!

উঠে ফ্রেশ হয়ে গিয়ে নাস্তা করে অফিসে চলে গেলাম!

সুমাইয়াকে নাস্তা করার সময় একবারও দেখলাম না!
অফিস থেকে ফিরার সময় ভাবলাম সুমাইয়ার কলেজ থেকে সুমাইয়াকে নিয়ে যাবো! কিন্তু গিয়ে দেখি সুমাইয়া নেই! হয়তো চলে গেছে তাই চলে আসলাম বাসায়!

ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসতেই দেখি কফি রাখা আমার জন্য! বুঝলাম আমি ওয়াশরুমে চলে গেলে এই টাইমটাতে কফি রেখে যায়!

রাতে খাওয়ার টেবিলে গিয়ে দেখি সুমাইয়া নেই তাই আম্মুকে জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ আম্মু সুমাইয়া কোথায়!
আম্মুঃ সুমাইয়া তো.!


পর্ব ৯

ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসতেই দেখি কফি রাখা আমার জন্য! বুঝলাম আমি ওয়াশরুমে চলে গেলে এই টাইমটাতে কফি রেখে যায়!

রাতে খাওয়ার টেবিলে গিয়ে দেখি সুমাইয়া নেই তাই আম্মুকে জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ আম্মু সুমাইয়া কোথায়!

আম্মুঃ সুমাইয়া তো.!

আম্মুঃ সুমাইয়া তো রান্নাঘরে কি যেনো বানাবে বললো! আর ঐখানেই খেয়ে নিবে বললো
আমিঃ ওহহ ওকে!

খাওয়া-দাওয়া করে রুমে এসে শুয়ে গেলাম! কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া এসে আগের মতোই লাইট অফ করে আমার পাশে শুয়ে গেলো!

সুমাইয়া আজকে সারাদিনে একবারও দেখলাম না!

তাই ভাবলাম সুমাইয়া গুমিয়ে গেলে একবার দেখে নিবো!
যেই ভাবা সেই কাজ ২:০০ টার দিকে মোবাইলের ফ্লাস লাইট অন করে দেখলাম সুমাইয়া ঘুমিয়ে আছে তাই সুমাইয়াকে আমার দিকে ঘুড়ালাম!

সুমাইয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম কারণ মুখটা আজকে অনেক শুকিয়ে গেছে! আর কাদতে-কাদতে হয়তো গুমিয়েছে চোখের কোণে পানি লেগে আছে এখনো!

আচ্ছা সুমাইয়া ঠিক ভাবে খাওয়া-দাওয়া করে তো নাকি! দুদিন ধরে একবারও ভালো ভাবে খেতে দেখলাম না! নাকি আমার উপর রাগ করে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে!

যাক এখন আর জাগিয়ে লাভ নেই কালকে দেখবো কি করা যায়! এমনিতেই হাড্ডির মতো চিকন তার উপর আমার না খেয়ে হয়তো আছে! এভাবে আর কিছু দিন গেলে এই মেয়েকে তো বাতাসেই উড়িয়ে নিয়ে যাবে!
এসব ভাবতে-ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম তা নিজেও জানি না!

সকালে ঘড়ির এলার্মে ঘুম ভাঙ্গলো! তাকিয়ে দেখি ৭:০০ বাজে! তাই উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম!
তবে এটা বুঝতে পারলাম সুমাইয়া ডাকার বদলে ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে চলে গেছে!

মেয়েটা আসলেই পাগল! তবে আমাকে যে সন্দেহ করে চার বছর ভুগিয়েছে তার সাজা আরো কিছুদিন ভোগ করুক ম্যাডাম নাহলে ঠিক হবে না। বুঝছেন পাঠকগণ!

এভাবে দুদিন কেটে গেলো বিকেলে অফিস করতে ছিলাম তখনই আব্বুর কল আসলো রিসিভ করতেই আব্বু বললো!

আব্বুঃ হুসাইন তুই এখনই বাসায় আয় একটু!

আমিঃ কেনো কি হয়েছে!

আব্বুঃ আয় তুই তারপর বলতেছি!

আমিঃ ওকে আমি আসতেছি!

তারপর অফিস থেকে বেড়িয়ে সোজা বাসায় চললাম আর ভাবতে লাগলাম যে হঠ্যাৎ করে আব্বুর এতো জরুরী তলব কেনো!

সুমাইয়া আব্বুকে কিছু বলেছে নাকি! নাকি অন্য কোনো কারণ! এসব ভাবতে-ভাবতে বাসায় চলে আসলাম!
ভিতরে আসতেই দেখি আব্বু-আম্মু বসে আছে! কিন্তু সুমাইয়াকে কোথাও দেখলাম না! কিন্তু আব্বু রেগে আছে প্রচুর মনে হলো! তাই আব্বুকে জিঙ্গাস করলাম!

আমিঃ কি হয়েছে আব্বু এতো জরুরি আসতে বললে!

আব্বু কিছু না বলে আমার কাছে আসলো তারপর কোনো কথা না বলে ঠাসসস করে গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো!
আমি অবাকের শেষ সীমানায় পৌছে গেলাম।! কারণ বৃদ্ধি হওয়ার পর থেকে আব্বু এই প্রথম আমার গায়ে হাত তুলেছে!

আমি গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি আর ভাবছি আব্বু কেনো মারলো! তখনই আব্বু বলে উঠলো!
আব্বুঃ তুই কি করলি এটা আরেকটু হলে জানিস মেয়েটার কতো বড় ক্ষতি হয়ে যেতো!
আমিঃ আব্বু তুমি কিসের কথা বলছো!

আব্বুঃ আবার কথা বলিস তুই কি এখনো বাচ্চাই আছিস নাকি যে যা ভালো লাগে তাই করবি!
আমিঃ আমি কি করেছি সেটা বলবে তো নাকি!

আব্বু কিছু না বলে শুধু রাগি ভাব নিয়ে তাকিয়ে আছে তখনই আম্মু বলে উঠলো!

আম্মুঃ আবার জিঙ্গাস করিস কি করেছিস! আচ্ছা তুই সুমাইয়াকে কি বলেছিস বলতো!
আমিঃ সুমাইয়াকে কি বলবো আবার? আমি তো সুমাইয়াকে কিছুই বলি নাই!

আম্মুঃ ওহহ তুই কিছু বলাস নাই তাহলে মেয়েটা এমনি-এমনি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো।আর আজকে দুপুরে মাথা ঘুড়ে পড়ে যায়!

আমিঃ মানে?
আম্মুঃ আজকে দুপুরে মাথা ঘুড়ে পড়ে যায় তারপর আমরা তাকে হসপিটালে নিয়ে যাই! তখন ডাক্তার বলে না খেয়ে থাকার জন্য নাকি মাথা ঘুড়ে পড়ে গিয়েছে! এখন বল তুই কি এমন বলেছিস মেয়েটাকে যে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো!

আমিঃ আম্মু সুমাইয়া এখন কোথায়!

আম্মুঃ মেহেরপুর সদর হসপিটালে!

আমিঃ আচ্ছা তোমরা থাকো আমি সুমাইয়াকে নিয়ে একবারে আসবো!

আম্মুঃ সাবধান এবার যদি কিছু বলেছিস মেয়েটাকে তাহলে তোর খবর আছে বলে দিলাম!

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি গেলাম তোমরা থাকো!
বলেই বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলাম! হসপিটালে গিয়ে রিসিপশানে সুমাইয়ার খবর নিয়ে সুমাইয়ার রুমে গেলাম!
গিয়ে দেখি হাতে সেলাইন লাগিয়ে রেখেছে আর সুমাইয়া ঘুমিয়ে আছে!

আমি সুমাইয়ার পাশে বসে ওর মুখটা দেখতে লাগলাম!

অনেক শুকিয়ে গেছে সুমাইয়া এই কয়েক দিন না খেয়ে চেহারা নষ্ট করে ফেলেছে! তাই কেমন যেনো মায়া হতে লাগলো সুমাইয়ার উপর!
আমি বসে রইলাম সুমাইয়ার পাশে কিছুক্ষণ পর একজন ডাক্তার আসলো সুমাইয়াকে দেখতে! তাই জিঙ্গাস করলাম!

আমিঃ সুমাইয়াকে কবে নিয়ে যেতে পারবো!

ডাক্তারঃ চাইলে এখনই নিয়ে যতে পারেন। কিন্তু ওর খাবারের উপর নজরদারী রাখতে হবে কড়া ভাবে!

এক বেলার খাবারও যেনো মিস না করে! আর ফলমূল এর জুস খাওয়াতে হবে বেশি করে!

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে সুমাইয়ার ঘুম ভাঙ্গলেই সুমাইয়াকে নিয়ে যাবো!

ডাক্তারঃ ওকে! বাই বি কেয়ারফুল!

আমিঃ হুম এন্ড থেংক্স!

ডাক্তারঃ ওয়েলকাম!

বলেই ডাক্তার চলে গেলো আর আমি আবার সুমাইয়ার পাশে বসে রইলাম!

রাত ৮:০০ টায় সুমাইয়সর ঘুম ভাঙ্গলো! সুমাইয়া নড়ে উঠায় আমি উঠে ওর কাছে গেলাম!

সুমাইয়া আমাকে দেখে মুখ অন্য পাশে ঘুড়িয়ে নিলো! এবার রাগ উঠে গেলো তাই সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ ঐ এদিকে মুখ ফিরিয়ে তাকা বলছি!

কিন্তু না ম্যাডাম ইগো বেশি তাই ঐদিকেই ফিরে আছে! তাই জুড় করে সুমাইয়াকে আমার দিকে ফিরালাম! আর ধকম দিয়ে বললাম!

আমিঃ চুপ করে তাকিয়ে থাক নাহলে মেরে এখানেই গালগুলো লাল করে দিবো!

সুমাইয়া কিছু না বলে চুপ করে তাকিয়ে রইলো! কি বলবো রাগই শেষ হইতাছে না!

নিজেকেই ভুল বুঝে চলে গেছে চার বছর আগে আবার এখন নিজেই নাক ফুলিয়ে বসে আছে? তাই বললাম!
আমিঃ চলো বাসায় যাবো?

সুমাইয়াঃ আমি যাবো না ঐ বাসায়!
আমিঃ কেনো?
সুমাইয়াঃ ঐ বাসাতে দম বন্ধ হয়ে আসে আপনি গিয়ে আম্মু-আব্বুকে পাঠিয়ে দিন আমি নতুন বাসা বাড়া নিয়ে তাদের সাথে ঐখানে থাকবো!

রাগে এবার মাথাটা ছিড়ে যেতে লাগলো তাই কিছু না বলে রুম থেকে বেড়িয়ে নিচে রিসিভশানে চলে আসলাম!
এসে সুমাইয়াকে রিলিজ করার সব ফর্মালিটি পূরণ করে আমি আবার উপরে গেলাম! গিয়ে সুমাইয়াকে বললাম!
আমিঃ চলো বাসায় যাবো!

সুমাইয়াঃ বললাম তো যাবো না আমি আপনি গিয়ে আব্বু-আম্মুকে পাঠিয়ে দিন!
আমিঃ বুঝচ্ছি সোজা কথায় কাজ হবে না!

বলেই সুমাইয়সকে সোজা কোলে তুলে নিলাম! সুমাইয়া অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো! আমি সুমাইয়াকে নিয়ে গাড়িতে উঠালাম।!

তারপর গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম সোজা একটা নদীর নির্জন পাড়ে! সুমাইয়াকে কোলে করে নিয়ে একটা বেন্চে বসালাম! তারপর সুমাইয়ার সামনে দাড়িয়ে বললাম!

আমিঃ তোমার কি আমাকে মানুষ মনে হয় না!
সুমাইয়া কিছু না বলে চুপ করে রইলো! তাই বললাম!

আমিঃ কথার উত্তর না দিলে মেরে এই নদীতে ফেলে দিয়ে যাবো বলে দিলাম! বল আমাকে কি তোর মানুষ মনে হয় না!

আমিঃ তাহলে তুই নিজের ইচ্ছা মতো আমাকে নিয়ে খেলবি আর আমি কিছু করলেই ভাব নিবি এটা কোন ধরণের কথা!

সুমাইয়াঃ আমি কি তোকে না করেছি নাকি জান্নাত নিয়ে তুই যা ইচ্ছা কর আমি তোকে কিছুই বলবো না!
আমিঃ থাপ্পড় দিয়া তোর দাত ফালাইয়া দিমু বেশি বুঝলে। ঐ আমি তোরে বলছি আমি জান্নাতকে পছন্দ করি বা ভালোবাসি!

সুমাইয়াঃ নাহহ তবে ঐদিন ছাদে আমি সব শুনেছি তোদের কথা!

আমিঃ এহহ সব শুনেছি তোদের কথা? আমি আর জান্নাত ইচ্ছে করে তোকে এসব কথা শুনিয়েছি! কারো মনে আঘাত করলে কেমন লাগে কেমন লাগে এবার বুঝলি তো!

সুমাইয়াঃ মানে!
আমিঃ রাখ তোকে বুঝাচ্ছি!
বলেই ফোনটা বেড় করে জান্নাতকে ফোন দিলাম আর লাউডস্পিকার দিয়ে দিলাম! জান্নাত ফোন রিসিভ করে বললো!

জান্নাতঃ হুসাইন সুমাইয়ার কি অবস্থা এখন!

আমিঃ ভালো!

জান্নাতঃ আসলে ঐদিন সুমাইয়াকে শায়েস্তা করতে গিয়ে তুই বেশিই বলে ফেলেছিলি! তাই দেখলি আজকে কি একটা অবস্থা হয়ে গেলো!
আমিঃ হুম!

জান্নাতঃ আচ্ছা এখন……


পর্ব ১০

জান্নাতঃ আসলে ঐদিন সুমাইয়াকে শায়েস্তা করতে গিয়ে তুই বেশিই বলে ফেলেছিলি! তাই দেখলি আজকে কি একটা অবস্থা হয়ে গেলো!

আমিঃ হুম!
জান্নাতঃ আচ্ছা এখন…….

জান্নাতঃ আচ্ছা এখন সুমাইয়াকে সব সত্য বলে দে নাহলে বেচারি না খেয়ে মারা যেতে পারে এমন আছে।!
আমিঃ ওকে রাখি আল্লাহ হাফেজ!

জান্নাতঃ আল্লাহ হাফেজ!

ফোন রেখে দিয়ে সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সুমাইয়া রাগি চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে! সুমাইয়া তখন বললো!

সুমাইয়াঃ তার মানে তোরা দুজন মিলে ঐদিন আমার সাথে নাটক করেছিলি!
আমিঃ তা নয়তো কি তোর কি মনে হয় জান্নাতকে যদি আমি ভালোবাসতাম। তাহলে জান্নাতকে অন্য কোথাও বিয়ে হতে দিতাম।!

সুমাইয়াঃ তাহলে আমাকে এতোদিন কষ্ট দিলি কেনো?

আমিঃ এমনি মন চেয়েছে তাই!
সুমাইয়াঃ কিহহহ মন চেয়েছে তাই এতটা কষ্ট দিবি আমাকে!

সুমাইয়া বলেই রাগে চোখ লাল নীল হলুদ সবুজ রং ধারণ করল। তারপর আমার কাছে এসে ঠাসসস করে একটা চড় বসিয়ে দিলো গালে! তখন আমিও দেরি না করে সুমাইয়ার গালে ঠাসসস করে চড় বসিয়ে দিলাম! সুমাইয়া গালে হাত দিয়ে বললো!

সুমাইয়াঃ আমাকে মারলি কেনো তুই!

আমিঃ আগে বল তুই মারলি কেনো আমাকে!

সুমাইয়াঃ তুই আমাকে এতোদিন কষ্ট দিয়েছিস তাই!

আমিঃ তোকে পাঁচদিন কষ্ট দেওয়ায় একটা চড় দিয়েছিস। তাহলে হিসাব কর আমাকে যে ভুল বুঝে চার বছর কষ্ট দিয়েছিস। তাহলে তুই কয়টা চড় পাওনা! হিসাব করে দিবো।নাকি সবগুলা!

সুমাইয়া কান্না মুখে দাড়িয়ে রইলো আমার সামনে।কখন যে কান্নার বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় আল্লাই জানে তাই বললাম!
আমিঃ চুপ একদম কাদবি না!

সুমাইয়াঃ আচ্ছ সরি যা আর জীবনেও তোকে সন্দেহ করবো না! এবারের মতো মাফ করে দে আমাকে!
আমিঃ কানে ধর আগে?

সুমাইয়াঃ আচ্ছা এই নে ধরলাম। এবার তো মাফ করে দে!
আমিঃ জীবনে যদি আর কোনোদিন সন্দেহ করিস। তাহলে এরপর আর কিছু না বলে হাতে ডিভোর্স পেপার দিয়ে। তোকে তোর বাসায় পাঠিয়ে দিবো!

সুমাইয়াঃ সরি সেই দিনটা আর আসবে না! এখন বল মাফ করেছিস কি না!

আমিঃ হুম এবার এদিকে!
ব্যাস সুমাইয়া গিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো! এভাবে কিছুক্ষণ থাকার পর আমি বললো!
আমিঃ তোর মনে কি এখনো আমাকে নিয়ে কোনো সন্দেহ আছে!

সুমাইয়াঃ না কেনো?
আমিঃ তাহলে এতো আস্তে জড়িয়ে ধরেছিস কেনো শরীলে কি আর জুড় নেই!
সুমাইয়াঃ এখনো সুস্থ হই নি! সুস্থ হওয়ার পর শক্ত করে জড়িয়ে ধরবো!

আমিঃ তাহলে থাপ্পড় মারার সময় এতো শক্তি আসলো কোথায় থেকে তোর হাতে!
সুমাইয়াঃ থাপ্পড় তো আস্তেই মেরেছিলাম শক্তি নেই বলে!

আমিঃ মিথ্যা কথা! ইসস কি জুড়ে মেরেছিস এখনো ব্যাথা করতেছে!

সুমাইয়াঃ চুপ! মিথ্যা কথা না বলে আয়। বাসায় যাই আম্মু-আব্বু বসে আছে!
আমিঃ হুম চল!

তারপর সুমাইয়াকে নিয়ে চলে আসলাম। আসার পথে সারাটা রাস্তা সুমাইয়া আমার হাতটা জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা রেখে শুয়ে ছিলো!

বাসায় ডুকতেই দেখি আব্বু-আম্মু সুমাইয়াকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলো আর আমার দিকে দুজনেই রাগি চোখ নিয়ে তাকালো!
আমি কিছু না বলে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম! ওয়াশরুম থেকে বাহিরে আসতেই দেখি সুমাইয়া দাড়িয়ে আছে! তাই বললাম!
আমিঃ ফ্রেশ হয়ে আয় খেতে যেতে হবে!

সুমাইয়াঃ হুম!
বলেই সুমাইয়া ফ্রেশ হতে চলে গেলো! তারপর নিচে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে উপরে চলে আসলাম!
রাতে এসে আমি শুয়ে রইলাম কিছুক্ষণ পর সুমাইয়া এসে দরজা লাগিয়ে আমার পাশে শুয়ে গেলো! আমি সুমাইয়া কে জ্বালানোর জন্য কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে শুয়ে গেলাম!

সুমাইয়া কেমন রাগি ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো! তারপর হঠ্যাৎ সুমাইয়া কোলবালিশটা টেনে নিয়ে গেলো! আমি তাকাতেই দেখি সুমাইয়া কোল বালিশটা জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দিলো!

তারপর বিছানায় এসে লাল নীল হলুদ রাগি চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে তাই জিঙ্গাস করলাম!
আমিঃ কিরে কোলবালিস নিলি কেনো আর এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো!

সুমাইয়াঃ বউ থাকতে কোলবালিস জড়িয়ে ধরেছিস কেনো?

আমিঃ তুই এসে চুপচাপ শুয়ে গেলি তাহলে আমি কি করবো তাই কোলবালিশটা জড়িয়ে ধরে শুয়ে ছিলাম!

সুমাইয়া কিছু না বলে চুপচাপ আমার বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে গেলো! আমিও কিছু না বলে চুপচাপ জড়িয়ে ধরলাম!

সুমাইয়ার রাগটা এখনো কমেনি বুঝতে পারতেছি কি জানি করে আল্লাই জানে! হঠ্যাৎ সুমাইয়া আমার বুকে কামড়ে ধরলো! তাই সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ ঐ কি করছিস ছাড় ব্যাথা পাচ্ছি তো? ঐ ছাড় ব্যাথা পাচ্ছি তো প্লিজ ছাড় আর হবে না!

মনে হয় কথাটা কাজে দিয়েছে তাই সুমাইয়া কামড় ছেড়ে দিয়েছে! কামড় ছেড়ে দিয়ে বললো!
সুমাইয়াঃ মনে থাকে যেনো!

আমিঃ তুই কি ভালো হবি না কোনোদিন। এভাবে কেউ কামড় দেয়।ওহহ ব্যাথায় ছিড়ে যাচ্ছে জায়গাটা!
সুমাইয়া কোনো উত্তর না দিয়ে চুপচাপ জড়িয়ে ধরে শুয়ে রইলো! তাই আমিও আর কোনোকিছু না বলে ঘুমিয়ে গেলাম!

এভাবে কেটে গেলো সপ্তাহ খানেক সুমাইয়া পুরো সুস্থ! আর আজকে সুমাইয়ার বার্থডে তাই বাড়িতে হালকা সাজালাম! বন্ধু-বান্ধব সবাইকে দাওয়াত দিলাম!

রুমে এসে দেখি রেডি হয়ে বসে আছে সুমাইাকে নিয়ে নিচে গেলাম! তারপর সব কিছু হলো!

অনুষ্ঠান শেষ করে সবকিছু শেষ করে সবকিছু গুছাতে প্রায় ৩:০০ টা বেজে গেছে তাই ফ্রেশ হয়ে গুমানোর জন্য রেডি হতে লাগলাম! কালকে শুক্রবার তাই কোনো চাপ নেই সময় নিয়ে সবকিছু করলাম!
সুমাইয়া আজ অনেক খুশি সুমাইয়া ফ্রেশ হয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো! আমার দিকে তাকিয়ে বললো!
সুমাইয়াঃ আজকে না আমি অনেক খুশি!

আমিঃ হুম বুঝলাম আর কিছু বলবি নাকি ঘুমাতে যাবো!

সুমাইয়াঃ আরে শুন না তোর সাথে একটা কথা আছে!
আমিঃ কি কথা!

সুমাইয়াঃ তুই তো আজকে আমাকে এতো সুন্দর একটা জিনিস গিফট দিলি!
আমিঃ তো?

সুমাইয়াঃ তো আমি তোকে একটা রিটার্ন গিফট দিবো!
আমিঃ কি গিফট!

সুমাইয়াঃ যেটা বাসর রাতে পাওনা ছিলি সেটা!
আমিঃ মানে!

সুমাইয়াঃ হুম!
বলেই সুমাইয়া আমাকে দেয়ালের সাথে ধাক্কা দিয়ে আমাকে লাগিয়ে ফেললো! তারপর আমার ঠোটগুলো সুমাইয়া নিজের আওতা ভুক্ত করে ফেললো!

সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখি সুমাইয়া এখনো ঘুমাচ্ছে! তাই আমি কিছুক্ষণ সুমাইয়া দিকে তাকিয়ে রইলাম!

তার মুখে পড়ে থাকা এলোমেলো চুলগুলা
তার কানে গুজে দিলাম! সুমাইয়া হালকা নড়ে আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো!

আমি তাকিয়ে রইলাম এক নজরে তার সেই মায়াবী মুখের দিকে, কিছুক্ষণ এভাবে তাকিয়ে থেকে নিজেকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনলাম! ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৮:০০ টা বাজে তাই ভাবলাম এতো তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে গেলো!
সুমাইয়া কে হালকা করে ডাক দিতেই সুমাইয়া বললো!

সুমাইয়াঃ এহুমম, গুমাতে দে!

বলেই আমার উপরে ওঠে শুয়ে গেলো আমি আর কি বলবো তাকিয়ে রইলাম সুমাইয়ার দিকে! আর ভাবতে লাগলাম!

যাক মেয়েটাকে বুঝাতে পেরেছি পাগলিটা আসলে আমাকে অনেক ভালোবাসে! এসব ভাবতেছিলাম তখনই সুমাইয়া চোখ খুললো! তাই সুমাইয়াকে বললাম!

আমিঃ আচ্ছা সুমাইয়া তোকে একটা কথা জিঙ্গেস করি!
সুমাইয়াঃ হুম বল!

আমিঃ তুই আমাকে এতো সন্দেহ করিস কোনো!

সুমাইয়াঃ দেখ তোকে অন্য মেয়ের সাথে দেখলে আমার অনেক খারাপ লাগে তার উপর ভয় লাগে। যদি ঐ মেয়েটা তোকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাই তোকে আগলে রাখতে চাই! তাই সন্দেহ হয় এতো!

আমিঃ শুন আমাকে তোর কাছ থেকে কেউ ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না! তাই ভয় পাস না আর ওকে!
সুমাইয়াঃ হুম!

বলেই সুমাইয়া আবার বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে গেলো! আমি সুমাইয়াকে জড়িয়ে ধরে ভাবতে লাগলাম!

পাগলিটা আমাকে নিয়ে এতো চিন্তা করে! আমাকে হারানোর ভয়ও নিয়ে থাকে দেখি! পাগলি কোথাকার!

মনে-মনে হালকা হেসে দিলাম! এসব ভাবতে-ভাবতে কখন যে আবার ঘুমিয়ে গেলাম তা বলতে পারবো না!

এমন পাগলি সবার লাইফে থাকলে প্যারা দিবে এটা ঠিক। তবে আপনার লাইফে ভালোবাসার কোনো কমতি হবে না!

লেখা – মোঃ আনোয়ার হুসাইন (পিচ্চি লেখক)

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “Ex গার্লফ্রেন্ড যখন বউ – এবার খেলা হবে” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – ঊর্ণাজাল – Notun romantic love story in Bengali

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *