হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প ১৮

হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ১৮ | Love Story

হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ১৮: গত পর্বে আমরা দেখেছি প্রিয়ন্তীর মুখে একটুকরো স্বস্তির হাসি। কারণ নীল নিজে থেকে মেসেজ দেয়া শুরু করেছে আবার প্রিয়ন্তীকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথাও বলেছে। তবে কি নীল প্রিয়ন্তির প্রেমে পড়ে গেল? পিকচার আভি বাকি হে মেরে দোস্ত। ভাবনার বুকে কখন রোদ-বৃষ্টি হবে তা বলা মুশকিল। তো চলুন দেখি তাহলে কি হয়?

প্রিয়ন্তির অপেক্ষার আকাশে এক পশলা বৃষ্টি

তিন দিন পেরিয়ে গেল। নীলের সাথে দেখা হয়নি। প্রিয়ন্তীর ভাল লাগছেনা আর! একা ক্যাম্পাসের এক কোনায় বসে বসে গান শুনছিল ও।

হঠাৎই রাকা এসে বলল,
: চল না আজ দূরে কোথাও ঘুরে আসি।
তুই আর নীল ভাইয়া আমি আর সাব্বির। বাইক রাইডে দূরে কোথাও যাওয়া যাক?
প্রিয়ন্তীর শুনেই ইচ্ছে হলেও ভাবছে নীল রাজী হবে কিনা! কিংবা যদি সময়ই না পায়!

প্রিয়ন্তী: নীলের সময় হলে তো?
রাকা: আরেহ এত ভাবার দরকার নেই। আমি সাব্বিরকে বলছি। ও ভাইয়াকে ম্যানেজ করবে।

রাকার কথা শুনে প্রিয়ন্তী খুশি হয়ে গেল! যাক এটাই ভাল হবে! রোজ রোজ ও ডাকবে ব্যাপারটা ভাল দেখায়না।

রাকা সাব্বিরকে ফোন দিয়ে বলল। আধ ঘন্টা পরই সাব্বির জানালো সে আর নীল বট তলার ওখানে আসছে। তারা দুজনও যেন থাকে।
রাকার মুখে এ কথা শুনেই প্রিয়ন্তীর নাচতে ইচ্ছে হলো, রাকাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
: রাকা রাকা মাই ডার্লিং ইউ আর দ্যা বেস্ট।
: হয়েছে আর ঢং করতে হবেনা। চলো চা খেয়ে আসি।
: হ্যা আমিই খাওয়াব তোকে চল চল।
রাকা মিটমিটিয়ে হাসছে। প্রিয়ন্তীর ভেতর এমন কোন পাগলামি সে আগে কখনোই দেখেনি। মেয়েটা সত্যিই খুব করে প্রেমে পড়েছে। এই প্রেম থেকে আর উঠানো সম্ভব না,
তাও রাকার ভালই লাগল। ওরা তিন বান্ধুবীরই কিছু না কিছু হয়েই গেল। এবার শুধু অর্নর পালা।

চায়ের দোকানে দুজন চা খাচ্ছে। হঠাৎ প্রিয়ন্তী বলল,
: হুহ যার সাথে যাব সেই কিছু বলল না। কি করে যাই আমি?
: ঢং কইরোনা আর। ভাইয়াই জানাবে তোমাকে দেইখো।
: উনি না বললে আমি যাবই না।
: এ কেমন কথা! তোর জন্য এতো কিছু করলাম। এখন এটা কি বললি?
: জানায় কিনা দেখি আগে।

দুজন একসাথে বসে কথা বলছে। হঠাৎ নীলের ম্যাসেজ এলো,
: আমি বের হচ্ছি মিস প্রিয়ন্তী। আপনি রেডী থাইকেন।
: জ্বী আচ্ছা।
প্রিয়ন্তী রাকাকে আবার জড়িয়ে ধরল। ইয়েস ইয়েস সে নিজেই ম্যাসেজ দিয়ে বলেছে। ফাইনালি তিন তিনটা দিন পরে সেই মায়া ভরা চোখ জোড়া আবার দেখবে প্রিয়ন্তী। সেই হাসি মাখা মুখ,

নীল আর সাব্বির এসে অপেক্ষা করছে। প্রিয়ন্তী আর রাকাও দশ মিনিটেই চলে এলো।
সাব্বির: ভাই বুঝলা মেয়েদের যত আগেই বলা হোক না কেন? তারা দশ মিনিট হলেও লেট করবেই করবে। লেট করাটা যেন এদের রক্তে মিশে আছে।
নীল শুধু হাসছে। প্রিয়ন্তীও হেসে দিল।
এদিকে রাকা বেশ রাগ করে সাব্বিরকে মারতে লাগল।
তারপর আজ কোথায় যাওয়া যায় তাই ভাবছে।
প্রিয়ন্তী বলল,
: মধুর সিটি যাই?
সবাই একে একে রাজী হওয়ায় এটাই ফাইনাল হলো।

গানের সুরে দুজনের ভেসে চলা

বাইকে উঠার সময়ে রাকা সাব্বিরের উপর রাগ করে বলল,
: নীল ভাইয়া আমি আপনার বাইকে যাব। নিবেন?
নীল: অবশ্যই চলো না ঘুরে আসি অজানাতে।
সাব্বির: ভাই তুমি আমার ঘরের শত্রু। এটা কোন কথা?
এদিকে প্রিয়ন্তীর জ্বলে যাচ্ছে। ইশশ এই রাকাটাও না রাগ করার আর সময় পায়না। ও তো ডিরেক্ট বলতেও পারছেনা যে ও নীলের সাথেই যাবে। তাই বুদ্ধি করে বলল,
: আরেহ ডাক্তারবাবু! ওদের একটু আলাদা সময় কাটাতে দেন না, মাঝখানে আপনি আবার কাবাবে হাড্ডি হচ্ছেন কেন?
এমন হলে তো সাব্বির ভাইয়া আমার বান্ধুবীর অভিমান ভাঙ্গানোর সুযোগই পাবেনা।
নীল: তাও কথা। তবে একজন যদি আমায় যেতে যেতে গান শুনায় আমি তার সাথেই যাব।
প্রিয়ন্তী: আমি আপনারে সারা পথই গান শুনাব তাও চলেন।
রাকা : আহাহা মানুষের কত জ্বলে! অনুরোধ করে একসাথে যেতে হচ্ছে।
প্রিয়ন্তী কিছু গায়েই লাগালো না।
নীল: আচ্ছা আমি ফোনে রেকর্ডার অন করলাম। যদি গান না শুনানো হয় তাহলে জরিমানা হবে।
এরপর দুই জুটি তাদের মত করেই রওনা হলো মধুর সিটির পথে।

যেতে যেতে পথে নীল বলল,
: কই মিস প্রিয়ন্তী গান কই?
প্রিয়ন্তী প্রথমে না করলেও পরে বাধ্য হয়েই গান শুরু করল,
তুমি সাত সাগরের ওপার হতে আমায় ডেকেছো,
আর মন ভ্রমরের কাজল পাখায় ছবি একেছো!
আমি ময়ূর পঙ্খী নাও ভিড়িয়ে তোমায় দেখেছি,
আর প্রবাল দ্বীপের পান্না ভেবে চেয়ে থেকেছি, (চলবে)

পরের পর্ব- হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ১৯

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *