হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প ১

হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ১ | Love Story

হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ১: জীবন যেখানে যেমন, প্রতিটি মানুষ খুঁজে সুন্দর একটা মন। এই সুন্দর মনের মানুষটিকে পেতে কত কিছুই না করি আমরা! অথচ কজনে পায় মনের মত মন। এজন্য হয়তো বলা হয়- আমি চাইলাম যারে ভবে পাইলাম না তারে… যাইহোক আমি আর বাজে গলায় গান না বলি, আপনারা বরং একটি ভালবাসার গল্প শুনুন, বেলা শেষের গল্প। লেখিকা তামান্না ইসলাম আপনাদের এই হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প শোনাবে। চলুন তবে শুরু করা যাক।

গল্পের প্রথম দৃশ্যপট

গল্পের মূল চরিত্রের কথা বলতে গেলে প্রথমেই যে আসে সে হচ্ছে প্রিয়ন্তী। বাবা মায়ের একমাত্র আদরের দুলালী, বিশেষ করে বাবার চোখের মনি সে।
লাইফে এমন কিছু নেই যা তাকে দ্বিতীয় বার চাইতে হয়েছে। বাবা সবসময়ই খেয়াল রাখেন তার মেয়ের যেন কোন কিছুতে কমতি না হয়। প্রিয়ন্তী যখন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে!

সবে মাত্র এইচ এস সি পাশ করে প্রিয়ন্তী চারুকলায় ভর্তি হয়েছে। তার বন্ধু বান্ধবের তালিকা বেশ দীর্ঘ! তাই সময় পেলেই টি এস সি কিংবা উদ্যানের মঞ্চে তাকে দেখা যায় চা হাতে আড্ডার মাঝে।

প্রিয়ন্তী বরাবরই আড্ডা দিতে ভালোবাসে। কিন্তু বাবার কড়া শাসন ড্রাইভার ছাড়া চলাফেরা করা যাবেনা। তাই প্রায়ই আড্ডাটা মিস করে সে। যদিও ড্রাইভার জাফর মামা তাকে প্রায়ই সুযোগ করে দেয় আড্ডায় শামিল হতে। তবে সে ভেবেছে অতি শীঘ্রই বাবাকে বলে হলে উঠবে। এই ভার্সিটি লাইফে এসেও বাচ্চাদের মতো চলতে তার ভাল লাগেনা।

বাবা দেশের বাইরে যাওয়ায় একদিন প্রিয়ন্তী ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেল। তাই ক্লাস না থাকা সত্যেও নিহা, রাকা আর অর্ন কে বলল বের হবে। বলাই হয়নি এরা তিনজন হচ্ছে প্রিয়ন্তীর জীবনের বেস্ট পার্ট/বেস্ট কিছু মানুষ, যারা সেই স্কুল জীবন থেকেই প্রিয়ন্তীর সাথে আছে। এদের ছাড়া প্রিয়ন্তী কিছুই ভাবতে পারেনা।

প্রিয়ন্তীর ক্যাম্পাস লাইফ

প্ল্যান মাফিক প্রিয়ন্তী বের হয়ে একে একে তিনজন কেই পিক করলো। আজ তারা চারজনই সেইম কালার শাড়ী পড়েছে। প্রিয়ন্তীরা প্রথমে ক্যাম্পাসে গিয়ে তারপর গেল টি এস সি মোড়ে চা খেতে। চায়ের সাথে আড্ডা বেশ জমে উঠল। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা নেমে আসলো আর বাসা থেকে মা প্রিয়ন্তী কে বারবার ফোন দিচ্ছে। তাই সে বাধ্য হয়েই আড্ডা ছেড়ে উঠলো।

রাজু ভাস্কর্য পাড় হতেই প্রিয়ন্তীর চোখ গেল তার গাড়ীর সামনে একটা ছেলে বেশ কিছু প্যাকেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। কাছে আসতেই দেখলো ছেলেটি বেশ কিছু ছোট বাচ্চাকে বিরিয়ানীর প্যাকেট দিচ্ছে। আর বাচ্চারা ছেলেটাকে ঘিরে রেখেছে। সে আনমনেই হেসে ঘটনাটি উপভোগ করছিল। এর মাঝেই জাফর মামার ডাকে হুশ ফেরে তার। “মামা তাড়াতাড়ি চলেন,আফায় বারবার ফোন দিতাছে” এই বলেই মামা গাড়ির দিকে এগোতে লাগলো।

প্রিয়ন্তীর এখনই বাসায় ফিরতে হবে ভেবে মন খারাপ হচ্ছিলো। সবাই কি সুন্দর সন্ধ্যার পরে আড্ডা দেয়, সন্ধ্যার ঢাকায় ঘুরে বেড়ায় ফ্রেন্ডসদের সাথে!
“ধ্যাত ভাল লাগেনা” বলেই গাড়িতে উঠতে নিল প্রিয়ন্তী!
আর সেই মুহুর্তে নীল তাকে নোটিশ করে।
নীলের মনে হলো এই মেয়েটা এমন কেন! হুদাই চিল্লাচিল্লি নীলের মোটেই পছন্দ না।

বাসায় ফিরেই শাড়ী বদলে বিছানায় গা দিল প্রিয়ন্তী। সাথে মিউজিক সিস্টেমে গান ছাড়ল,
“আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে
দেখতে আমি পাইনি তোমায়
দেখতে আমি পাইনি”।
গান শুনতে শুনতে হঠাৎই প্রিয়ন্তীর বিকেলে দেখা ছেলেটার কথা মনে হলো! ছেলেটা কি সুন্দর ভাবে বাচ্চাগুলোর সাথে কথা বলছিল! প্রিয়ন্তী বারবার সেই দৃশ্যপট ভেবে ভেবে একসময় ঘুমের রাজ্যে ডুব দিল। (চলবে)

পরের পর্ব- হৃদয়স্পর্শী ভালোবাসার গল্প – বেলা শেষে পর্ব ২

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *