ভাবির জমজ বোন – হারানো ভালোবাসার গল্প

ভাবির জমজ বোন – হারানো ভালোবাসার গল্প: তারপর বিয়েটা শেষ হয়ে গেল। কিন্তু হিয়াকে আর এক বারো দেখলাম না। জানি না কেন দেখতে ইচ্ছে করছে। এদিক ওদিক খুজতে লাগলাম পেলাম না। চলে আসবো এমন সময় ঘটলো একটা মজার কান্ড।


পর্ব ১

আজকে আমার বড় ভাই এর বিয়ে। বিয়েটা খুব ধুমধাম করেই হচ্ছে। ভাইয়া আর ভাবি কলেজ জীবন থেকে প্রেম করে। আর এই প্রেম টা ২ পরিবারইই মেনে নেয়।
আমি তামজিদ বাবার দ্বিতীয় ছেলে এখন অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ি।
আব্বুঃ তামজিদ ওই হারামজাদা কোথাই তুই।
আমিঃ আসছি বাবা।

আব্বুঃ দুপুর ২ টা বেজে গেছে এখনো গাড়ী আসতেছে না কেন?
আমিঃ এখনি চলে আসবে সমস্যা নাই।
আব্বুঃ কখন বলেই যাচ্ছে এখনি চলে আসবে।

আমিঃ ঠিক আছে আমি দেখছি বেপার টা। ওইতো গাড়ী এসে গেছে।
আব্বুঃ ঠিক আছে তুমি তাহলে সবাই কে তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠতে বল ওই বাসা থেকে তো ফোন দিয়েই যাচ্ছে দিয়েই যাচ্ছে।
আমিঃ ওকে

তারপর সবাই কে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে। আমি ভাইয়া, ভাইয়ার কিছু বন্ধু এক সাথে আসলাম।
মামুন ভাইয়াঃ আচ্ছা একটা জিনিশ কিছুতেই আমি বুঝবার পারতেছি না।
আমিঃ কি ভাই?

আচ্ছা বিয়েটা কি সোহেল এর নাকি তুমার?

রাকিবঃ আরে তোর কি মাথা খারাপ হলো নাকি বিয়ে ওর কেন হতে যাবে? বিয়ে তো সোহেলের।
মামুন ভাইয়াঃ আরে বেডা রাখ ২ জন রে ভালো করে দেখ তো কারে জামাই জামাই মনে হয়।
রাকিবঃ ওও এই কথা এটা একেবারে ঠিক বলছো মামা। তা কি বেপার তামজিদ তুমার জামাই জামাই ভাব কেন?
আমিঃ জামাই জামাই ভাব মানে?

রাকিবঃ আমি কিন্তু বেপার টা ঠিক বুঝতে পারছি?
আমিঃ তুমি কি বুঝতে পারছো।
রাকিবঃ আমাদের সোহেল ভাই এর নাকি একটা সুন্দরি শালী আছে।
আমিঃ ভাই এর শালী আছে তাতে আমাদের কি?

রাকিবঃ দেখ ছোট ভাই আমাদের মনে হয় কিছু বুঝে না
আমিঃ আর কিছু বুঝতে হবে না চলে এসেছি নামো এবার।
গাড়িতে নেমে গেটের কাছে যাওয়ার সাথে একটা শর্ক খেলাম। কারণ জীবনে প্রথম দেখছি নিজের বিয়ের গেট নিজে ধরে।
আমিঃ ভাইয়া আমি স্বপ্ন দেখছি নাকি ভাবি এখানে কেন? (ফিসফিস করে বললাম)
ভাইয়াঃ আরে এটা মীম না?
আমিঃ ওই আমারে কি পাগল মনে হয় নাকি? এটা মিম ভাবি নাতো কে?

ভাইয়াঃ এটা মীম এর জমজ বোন হিয়া।
আমিঃ ওও। কিন্তু এতো একদম হুবুহু কপি একটু ও ব্যাতিক্রম নাই।
ভাইয়াঃ হুম বাদ দেখ ওরা কি বলছে?
আমিঃ আচ্ছা আমাদের কি ভেতর না নিয়ে এই খানে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে?

হিয়াঃ আমাদের পাওয়া না দিয়ে দিন তারপর যেখানে খুশী যান কোন সমস্যা নাই।
আমিঃ আপনাদের পাওনা মানে কি দিতে হবে তাই বলেন?
হিয়াঃ ১০ হাজার টাকা।
আমিঃ কিহহ ১০ হাজার টাকা।
হিয়াঃ হ্যা ১০ হাজার টাকা এক টাকাও কম দেওয়া যাবে না।

আমিঃ কিছু কম নেনে ৫০০ টাকা দিলে হবে না?
হিয়াঃ ওই এখানে ভিক্ষা করতে আসি নাই।
আমিঃ মনে তো হচ্ছে না ভিক্ষুক রাও তো টাকা চাই আপনি ও চাইলেন।

হিয়াঃ কিহহ আমি ভিক্ষুক ১০ হাজার ১ টাকা কম দিলে ভিতরে যেতে দেবো না।
আমিঃ ঠিক আছে আমরা চলে আমরা এতো টাকা দেবো না।
হিয়াঃ এখন তো দেখছি আসল ভিক্ষুক আপনারা বিয়ে করতে আসছে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিতে পারেন না যান চলে আপনাদের মতো ভিক্ষুক দের কাছে আমার বোন কে বিয়ে দেবো না।
আল্লাহ মানসম্মন এর দিছে ১২ টা বাজিয়ে।

তাড়াতাড়ি পকেট থেকে ১২ হাজার টাকা বের করে দিলাম
আর হিয়ার কানে কানে বললাম ২ হাজার তুমার জন্য।

বলার সাথে ২ হাজার টাকা আমার দিকে ছুড়ে দিলো বললো,
হিয়াঃ আমি ভিক্ষুক না যে আপনার কাছ থেকে টাকা নেবো।
সবাই খুল খুল করে হেসে দিলো।
এই দিকে তো আমার মানসস্মান শেষ। আমি ও মনে মনে জীত ধরলাম এটার শোধ আমিও নেবো।
তারপর ভিতরে ডুকলাম।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে কেমেরা দিয়ে ছবি তুলতে লাগলাম হঠাৎ করে হিয়া কেমেরার সামনে এসে গেলো।
ছবিটা দেখো আমি পুরা ক্রাশ ছবি টা এতো সুন্দর হয়েছে বলার বাহিরে।

তাই আরো ছবি তুলার জন্য নিলার পিছু নিলাম। কয়েক টা তুলে ফেলছি এমন সময় দেখলাম হিয়া সিঁড়ি দিয়ে ছাদে যাচ্ছে আমিও পেছন পেছন গেলাম।
ছাদে যাওয়ার পর হিয়া আমাকে ডাক দিলো
হিয়াঃ ওই হ্যালো মিস্টার এখানে আসেন?
আমিঃ হ্যা বলেন

হিয়াঃ এতো ধরে দেখছি আমার পিছন পিছন ঘুরতেছেন কারণ টা কি।
আমিঃ কি বলেন এই সব আমি কেন আপনার পেছন পেছন ঘুরতে যাবো আমি তো সবার ছবি তুলতেছি।
হিয়াঃ ওও তাই তা দেখি কেমেরা টা সবার ছবি কেমন হয়েছে।
আমিঃ কেন আপনাকে কেন দেখাবো।

হিয়াঃ দেখেন বেশি চালাকি করবেন না আমি যানি আপনি আমার ছবি তুলতেছেন ওকে।
আমিঃ মোটেও না আমি কেন আপনার ছবি তুলতে যাবো। আপনি নিজেকে কিভাবেন পৃথিবীর সব থেকে সুন্দরি।
হিয়াঃ ঠিক আছে আপনার কেমেরা টা আমার হাতে দেন তাহলে বলেই হার কেড়ে নিলো।

এইবার আমি শেষ যে হারে রেগে আছে ছবি গুকা দেখলে কি করবে আল্লাহ ভালো যানে।
হিয়াঃ ওই খুব তো বড় বড় কথা বলিতেছিলেন আমার কোন ছবি তুলেন নাই। এখানে তো আমার ছবি ছাড়া আর কারো ছবি দেখি না।
আমিঃ না মা মানে।
হিয়াঃ কি মানে মানে করছেন সরাসরি বলেন কি বলবেন?

আমিঃ না আসলে আপনি ভুল করে আমার কেমেরার সামনে এসে পড়েন। আর একটা ছবি তুলে ফেলি ছবিটা খুব সুন্দর হয় তাই আরো কিছু ছবি তুলেছি।
হিয়াঃ হুম এটাই তো ছেলে দের সমস্যা সুন্দরি মেয়ে দেখলেই ছবি তুলতে ইচ্ছে হয়, তাই না।
আমিঃ সরি আমার ভুল হয়েছে।
হিয়াঃ ওকে এর পর যদি আশেপাশে এই কেমেরা নিয়ে ঘুরাঘুরি করতে দেখি না কেমেরা আর পাবেন না ওকে।
আমিঃ ওকে।

হিয়াঃ আর ছবি গুলা ভালো হয়েছে ডিলিট করবেন না আমি পরে নিয়ে নেবো। আর হ্যা ছবি গুলা যদি কারো কাছে যায় তাহলে কিন্তু খবর আছে।
আমিঃঠিক তাহলে আরো কইটা তুলি।
হিয়াঃ …
আমিঃ না না থাক তাহলে আমি যাই।


পর্ব ২

হিয়াঃ ওই কই যাবে এখানে দাঁড়ান।
আমিঃ আবার কিহ হলো।
হিয়াঃ যাওয়ার আগে ১০ বার কান ধরে উঠবেন বসবেন আর বলবেন আর কোন দিন কোন মেয়ের ছবি অনুমিত ছাড়া তুলবো না।
আমিঃ কিহহ আমি পারবো না।

হিয়াঃ পারতে তো হবেই না হলে খবর আছে আপনার।
আমিঃ কি করবেন কি আপনি কি করবেন।
হিয়াঃ বেশি কিছু করবো না সুধু এখন একটা চিৎকার দিবো তারপর যা করার বাসার সবাই করবে।
আমিঃ মানে?

হিয়াঃ কান ধরেন বলছি না হলে কিন্তু আমি দিলাম চিৎকার।
আমিঃ না না প্লিজ এই কাজ করবেন না। তাহলে যে আমার মান সম্মান আর থাকবে না।
হিয়াঃ তাহলে যা বলছি তাই করেন।
আমিঃ ওকে।

হিয়াঃ এইতো ভালো ছেলে।
কোন উপায় না পেয়ে কান ধরে উঠবস করতে লাগলাম আর বলতে লাগলাম _ আর কখনো ভুল করেও কোন মেয়ের ছবি অনুমিত ছাড়া তুলবো না।
হিয়াঃ বাহহ খুব সুন্দর হয়েছে আরেক বার বলেন তো।
আমিঃ কাজ টা খুব খারাপ হলো।

হিয়াঃ কচু হয়েছে যান এখান থেকে না হলে অবস্থা খারাপ করে দিবো।
আমিঃ ওকে এই দিন দিন না আরো দিন আছে আমারো একদিন আসবে শোধ নেওয়ার।
হিয়াঃ পারলে প্রতিশোধ নিয়েন যান তো।
তারপর ওই খান থেকে চলে আসলাম।

মামুন ভাইয়াঃ আরে তুমি কথায় ছিলে কখন থেকে খুজতেছি ছবি তুলবো বলে।
আমিঃ ওকে সবাই ভাইয়ার সামনে যান আমি ছবি তুলতেছি।
তারপর সবার ছবি তুলে দিলাম এবং আমার আর ভাইয়ার ও অনেক গুলা ছবি তুললাম।
তারপর বিয়েটা শেষ হয়ে গেল। কিন্তু হিয়াকে আর এক বারো দেখলাম না। জানি না কেন দেখতে ইচ্ছে করছে। এদিক ওদিক খুজতে লাগলাম পেলাম না।
চলে আসবো এমন সময় ঘটলো একটা মজার কান্ড।

বউ ২ টা হবু হবু কপি।
আমরা দেখে তো ভেবাচেকা খেয়ে গেলাম।
কন্যা পক্ষের একজন বললো,

আপনারা আসল বউকে নিয়ে বেছে নেন নয়তো ১০ হাজার টাকা দিয়ে বউ নিয়ে যান।
আমিঃ আরে এটা কোন কথা হলো নাকি এটা কেমন কথা।

  • আরে আমরা কিছু বলছি নাকি আপনার বউ নিয়ে যান।
    আমিঃ তাহলে ২ টা কেন কোনটা নেবো।
  • আমরা কি জানি আপনারা আপনাদের ভাই এর বউ কে নিয়ে যান।
    মাথায় কিছু আসছে না কি করি। কিন্তু টাকা ও দেবো না।
    অনেক ভাবার পর মাথায় শয়তানি একটা বুদ্ধি চলে আসলো।
    তারপর আমি গিয়ে ২ টা থেকে একটার হাত ধরাল।

আমিঃ ভাইয়া এটাই আমার ভাবি চল এবার।
হাত ধরার সাথে সাথে দেখছি সারা শরীর কাপতেছে আমার বুঝার বাকি রইলো না এটা নকল বউ আসল ওই টা।
আমি চুপ করে কানে কানে বললাম তাড়াতাড়ি পালাও তা না হলে ভাইয়ার সাথে বাসর হয়ে যাবে।
হিয়াঃ হাত ছাড়েন।

আমিঃ না ছাড়বো না কি কিরবেন আপনি কিছুই করতে পারবেন না। সবাই জানে আমি আমার ভার হাত ধরে আছি।
আমিঃ কিহ হলো সবাই চলো আমাদের ভাবি পেয়ে গেছি তো।

হিয়াঃ আমাকে ছাড়েন আপনার ভাই এর বউ ওইটা। আমি না।
আমিঃ না আপনি আমার ভাই এর বউ আমি জানি।
হিয়াঃ না সত্যি আমি না ওই টা আমি হিয়া।
আমিঃ না না আমার চোখ কখনো ভুল হতে পারে না।

ওই পাশ থেকে একজন বললো হ্যা ও সত্যি বলছে ও হিয়া।
আমিঃ ঠিক আছে এখন আমাকে ১০ হাজার টাকা দেন তা না হলে এই হিয়া বেয়াইন কেই ভাবি বানিয়ে নিয়ে যাবো।
হিয়াঃ এটা কেমন কথা।

আমিঃ ঠিক আছে তাহলে সবার সামনে কান ধরে বলেন আর কোন দিন এমন ভুল করবো না।
হিয়াঃ না ধরবো না।
আমিঃ তাহলে ছাড়বো না।

ভাইয়াঃ ওই তামজিদ কি হচ্ছে ছেড়ে দে।
আমিঃ ওই তুমি চুপ থাকো তুমি যদি জানতে আসল কাহিনী জানতে তাহলে আর কথা বলতে না।
ভাইয়াঃ আসল কাহিনী মানে।
আমিঃ না, কিছুনা।

আব্বুঃ ওই কি হচ্ছে এখানে?
আমিঃ না আব্বু কিছু না।
যাহহ সব গেলো আমার প্রতিশোধ টা নেওয়া হলো না।
আমি হাত টা ছেড়ে দিলাম।

তারপর বাসায় চলে আসলাম সারা রাস্তায় সুধু হিয়ার কথাই মনে হয়েছে।
তারপর রাতে যার যার মতো ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে উঠে দেখি ভাবি উঠে গেছে।
আমিঃ কি ভাবি বাসর রাত কেমন কাটলো।
ভাবি দেখি লজ্জাই লাল হয়ে গেছে।

আমিঃ ঠিক আর লজ্জা পেতে হবে না। আচ্ছা তুমার বোন হিয়া কোথাই থাকে?
ভাবিঃ কেন.আমার বোন কোথায় থাকে তুমাকে বলবো কেন?
আমিঃ আহহ বলো না ভাবি।
ভাবিঃ তুমার মতলব কিন্তু ভালো না বুঝতে পারছি।
আমিঃ বুঝতেই যখন পারছো তাহলে বলো না কেন?

ভাবিঃ ওকে বলছি হিয়া এতো দিন নানুর বাসায় থাকতো এখন থেকে আমাদের বাসায় থাকবে।
আমিঃ ও আচ্ছা কোন ক্লাস এ পড়ে?
ভাবিঃ তুমার সেম ক্লাস।
আমিঃ ওও তাহলে এখানে কোন ভার্সিটি তে ভর্তি হবে?
ভাবিঃ এখনো ঠিক হয়নি।

আমিঃ তাহলে প্লিজ আমাদের ভার্সিটি তে ভর্তি করে দাও না প্লিজ প্লিজ না করবে না।
ভাবিঃ দেবো তোবে একটা শর্ত আছে।
আমিঃ কি শর্ত?


পর্ব ৩

আমিঃ কি শর্ত?
ভাবিঃ হিয়া উপরে যায় হক ওর মনটা খুবি ভালো। আমি খুবি ভালোবাসি আমার বোন কে আর আমি সব সময় চাই আমার বোন খুব সুখে শান্তিতে থাকুক। প্লিজ এমন কোন কাজ করবে না যাতে ও কোন কষ্ট পাই।
আমিঃ ওও এই কথা তাহলে।
ভাবিঃ হুম তুমি তো খুব পাজি কখন কি করে ফেলবে।

আমিঃ যাও তুমার সাথে কথা নাই নিজের বোন খুব ভালো ধুয়া তুলসী পাতা।
ভাবিঃ আরে আরে আমার দেবর টা দেখি আবার রাগ ও করে। আমি কি বলছি নাকি আমার বোন ভালো তুমি খারাপ?
আমিঃ মুখে বলো নাই কিন্ত আমি বুঝে গেছি।
ভাবিঃ আমার মাথা বুঝছো।

আমিঃ ওকে আমার খুব খিদে লাগছে। আর হ্যা এই কথা যেন কেউ না যানে ভাবি।
ভাবিঃ ওকে।
তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম আজকে তো আবার ফিরিয়ানি নিবে তাই ঠিক করলাম আমি ও যাবো।
ওই বাসা থেকে অনেকে এসেছে হিয়াও এসেছে।

এতো সুন্দর করে সেজেছে আর শাড়ী পড়েছে এতে ওসম্ভব সুন্দর লাগছে। একদম চোখ ফেরানো যাচ্ছে না।
এক দূস্টিতে তাকিয়ে আছি কে যেন পিছন থেকে ঠেলা দিলো আবার বাস্তবে ফিরে আসলাম।
আমার চোখে হিয়ার চোখ পড়তেই একবার চোখ মারলাম।

এতে হিয়া চোখ গরম করে আমার দিকে তাকালো।
খাওয়া শেষ করে এক যায়গায় বসলো আমি ও গেলাম সেখানে।
আমিঃ কি অবস্তা বিয়ান সাব কেমন আছেন।

হিয়াঃ এতক্ষণ ভালো ছিলাম এখন মনে হয় আর থাকবো না।
আমিঃ হিয়া এখন কি ঝড় তুফান সুরু হবে নাকি?
হিয়াঃ নাহহ এই মাএ একটা লেজ ছাড়া বান্দর আমার সামনে আসলো তো তাই।
আমিঃ কই আমি তো কোন বান্দর দেখতে পারছি না।

হিয়াঃ বান্দর এ যদি বান্দর না চিনে তাহলে আর কি বলবো।
আমিঃ কিহহহ আমি বান্দর।
হিয়াঃ তাহলে নিজেরে কি মনে হয় আপনার?

আমিঃ আপনি কি কানা চোখে দেখেন না একটা জলজ্যান্ত মানুষ।
হিয়াঃ আপনার মুখে লেজ ছাড়া বান্দর এর ভাব আছে তো তাই বললাম।
আমিঃ আপনি আসল বান্দর তাই আমাকে চিনতে পারছেন না বান্দর এ বান্দর চিনে।
হিয়াঃ এই একদম রাগ উঠাইবেন না।

আমিঃ ওই আস্তে কথা বলেন এটা কিন্তু আমার বাড়ি ওকে।
হিয়াঃ তাই ভয় পাই নাকি একদম বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাবো?
আমিঃ ও খোদা এই ছেমরি কি কই। এতো বড় সাহস আপনার আপনি আমাকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেন?
হিয়াঃ এখন তো শুদু বলছি যখন নিয়ে যাবো তখন বুঝবেন।

আমিঃ নিয়ে কি করবেন বিয়ে করবেন বুঝি?
হিয়াঃ কিহহ আপনার মতো লেজ ছাড়া বান্দর সাথে আমার বিয়ে অসম্ভব।
আমিঃ আপনি চাইলেই সম্ভব।
হিয়াঃ আমি চাই না আপনার মতো কেউ আমার বর হক।
আমিঃ কেন আমি কি করেছি।

হিয়াঃ আপনি একটা হার কিপটে।
আমিঃ আমি হার কিপটে আপনি জানেন নাকি?
হিয়াঃ তাই ভাইকে বিয়ে করতে নিয়ে যান আর কইটা টাকার জন্য কত কথা বলেছিলেন।
আমিঃ ওহহ টাকা ও গাছে ধরে চাইবেন আর দিয়ে দেবো তাই না।

হিয়াঃ যে আপনার বউ হয়ে আসবে না তার কপাল টা একবারে খারাপ।
আমিঃ যে আমার বউ হবে তার কপাল টা একদম ভালো একদম সুখে থাকবে।
হিয়াঃ কত সুখে রাখিবেন তা দেখতেই পারছি আপনার ব্যবহার এ।

আমিঃ ঠিক আছে আপনি আমার বউ হয়ে দেখেন না সুখে রাখি নাকি।
হিয়াঃ সখ টা কত আপনাকে বিয়ে করতে আমার বয়েই গেছে। আপনার কপালে আমার মত সুন্দরি মেয়ে নাই আছে কালো পেত্নী।
আমিঃ তবুও ভালো কথাই আছে না জাতের মেয়ে কালো ভালো নদীর পানি গুলা ভালো। কালো হক আপনার মত ডায়নি যেন না হয়।
আমিঃ হুম.

হিয়াঃ আমি ডায়নি আমি ডায়নি বলতে বলতে আমার চুল গুলা ধরে টানা শুরু করলো।
আমিঃ ও মাগো এটা কেমন ডায়নি আমারে বাঁচাও।

হিয়াঃ আজকে কেউ বাঁচাতে পারবে না আমার হাত থেকে।
হিয়ার সাথে আরো কয়েক টা মেয়ে ছিলো তাড়া ছাড়িয়ে দিলো।
ওই হিয়া ছাড় তুই পাগল হলি নাকি।

আমিঃ আপনার এই ডায়নি বান্ধুবিকে ঠিক করেন না হলে কিন্তু শেষ মেশ কপালে জামায় জুটবে না।
হিয়াঃ এখনো পিছে ১০-১২ ছেলে পরে আছে বুঝলেন।
আমিঃ পচা কলাই মাছি একটু বেশিই থাকে।
হিয়াঃ কিহহহ আমি পচা কলা বলেই হাতে একটা চিয়ার নিয়ে আমাকে মারতে আসলো।
আমি সময় থাকতে পালাই।

এক দৌড়ে একদম রুমে।
আমি রুমে এসে আমার কাপড় গুছিয়ে নিলাম। তারপর খাওয়াও দাওয়া শেষ করে আমরা হিয়াদের বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম।
আমি ভাইয়া ভাবি ভাইয়ার কয়েকটা বন্ধু আর হিয়া এক গাড়িতে আসলাম।
হিয়া আমাকে দেখে বললো,
হিয়াঃ আমি এই গাড়িতে যাবো না।

ভাবিঃ কেন এই গাড়িতে যাবি না কেন। একটু আগেই তো বললি আমার সাথে যাবি।
হিয়াঃ তাহলে আগে এই শয়তান ছেলে কে ওই গাড়িতে যেতে বল।
আমিঃ এই বিয়ান মুখ সামলে কথা বলবেন আমি শয়তান না, ওকে।

হিয়াঃ দেখছস আপু তোর এই শয়তান দেবর এই কথা মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তাই জানে না।
আমিঃ তাহলে কি আপনার কাছে শিখতে হবে নাকি।
ভাবিঃ উফফফ তুমরা চুপ থাকো তো। আর হিয়া কি সমস্যা কি তোর হ্যা।
হিয়াঃ আমি ওর সাথে একসাথে যাবো না ব্যাস।
ভাবিঃ কেন যাবি না ও কি করছে তোর।

আমিঃ হ্যা আপনিই বলেন আমি কি করেছি এমন ভাব কিরতেছে মনে হচ্ছে তার সাথে প্রেম করতে চাচ্ছি।
হিয়াঃ আমার সাথে প্রেম করতে আসলে তোর মতো শয়তান ছেলে কে কিভাবে টাইট করতে হয় আমার জানা আছে।
ভাবিঃ সবাই চুপ সবাই এই গাড়িতেই থাকবে আর সব ঝগড়া এখানেই শেষ যা হয়েছে সব কিছু ভুলে যাও ২ জনে।
আমিঃ হ্যা ভাবি আমি সব কিছু ভুলে গেছে এখন থেকে এটা আমার কিউট বিয়ান।
হিয়াঃ খবরদার আমাকে বিয়ান বলবেন না।

আমিঃ তাহলে কি বলবো কাকী নাকি খালা।
হিয়াঃ আপু তোর দেবর কে চুপ করতে বল নাহলে কিন্তু মেরে একদম তক্তা করে দেবো।
ভাবিঃ হিয়া খুব বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
আমিঃ কিহহহ এতো বড় কথা আমাকে মেরে তক্তা বানাবে আর আমি। কি বসে বসে ললিপপ খাবো নাকি।
ভাবিঃ চুপ আচ্ছা হিয়া তামজিদ তোকে নিয়ে কোন কথা না বললেই তো কোন সমস্যা নাই।

হিয়াঃ হ্যা আছে এই বাঁদর এর মতো চেহারা টা দেখলেই আমার রাগ হবে। আর মারতে মন চাইবে।
আমিঃ কিহহহ আমি বাঁদর এর মতো দেখতে ঠিক আছে আমি যাবো না ভাবি আপনাদের বাসায়।
ভাবিঃ প্লিজ ভাই তুমি রাগ করো না ওর মাথায় একটু ইয়ে আছে।
আমিঃ ওও এই কথা আগে বললেই তো হতো তাহলে তো আমি কিছুই করতাম না হি হি হি।
হিয়াঃ ওই আমার মাথায় ইয়ে আছে মানে কি।

আপুঃ ইয়ে মানে ইয়ে তুই বুঝবি না এখন চুপ করে এই সাইটে বস আর তামজিদ ওই সাইটে যাও।
তারপর চলে আসলাম হিয়াদের বাসায় মানে ভাইয়ার শশুর বাড়ি। ভাইয়া আর ভাবি কে একটা রুম দিলো আর আমাদের সবাই কে একটা রুম দিলো। ফ্রেশ হয়ে একটু বাহিরে আসলাম হিয়া সামনে এসে দাঁড়ালো।
আমিঃ কি বেপার সামনে এসে দাঁড়ালেন কেন।

হিয়াঃ সরি বলার জন্য।
আসলে আপনার সাথে এমন ব্যবহার এর জন্য আমি খুবি দুঃখীতো।
আমিঃ আরে না আমি কিছু মনে করি নাই আর আপনি আমার বিয়ান কিছু বলতেই পারেন আমি কিছু মনে করি নাই।
হিয়াঃ ওহহ ধন্যবাদ আপনাকে। আচ্ছা আপনি কি সত্যি কিছু মনে করেন নাই নাকি মিথ্যা কথা বলছেন।

আমিঃ আরে না সত্যি বলছি।
হিয়াঃ তাহলে এই শরবত টা খান যদি খান তাহলে বুঝবো কিছু মনে করেন নাই।
আমিঃ কি যে বলেন আপনি আমারে শরবত খাওবেন আর আমি খাবো না এটা কোন কথা হলো নাকি।

বলেই শরবত এর গ্লাস টা হাতে নিয়ে খেতে লাগলাম কিন্তু একটু গিলতেই মনে হলো আমার গলা পেট সব কিছু পুরে যাচ্ছে এতো জ্বাল ধরছে।
আমিঃ পানি খাবো পানি। বলে দৌড়াতে লাগলাম তারপর কিছুর সাথে ধাক্কা খেলাম তারপর পর আর কিছু মনে নাই সকালে উঠে দেখি আমি বিছানায় সুয়ে আছি।
তারপর আমি উঠতে যাবো এমন সময় মাথায় প্রচুর ব্যাথা অনুভব করলাম হাত দিয়ে দেখি মাথায় ব্যান্ডেজ করা।
আমি উঠার চেষ্টা করছি এটা দেখে ভাবি বললো আরে আরে কি করছো তুমি উঠছো কেন।

আমিঃ আমার কি হয়েছে আমার মাথায় ব্যান্ডেজ করা কেন?
ভাবিঃ কি বলছো কাল রাতে তুমার মাথা ফেটে ফেছে তুমার মনে নাই?
আমিঃ কালকে রাতের কথা বলতে যাবো এমন সময় চোখ গেল দরজার দিকে দেখি হিয়া আমার দিকে করুণ দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি বুঝতে পারলাম হয়তো সে তার ভুলটা বুঝতে পারছে।

তাই আর আমি কিছু বললাম না। চুপ হয়ে গেলাম।
ভাবিঃ কি হলো কিছু বলছো না কেন কি হয়েছিলো কাল রাতে।
আমিঃ আমার কিছু মনে নাই আর এই কথা বাদ দেন তো ভাবি।

এমন সময় ভাবি হিয়াকে দেখে ফেললো ভাবি।
ভাবিঃ আচ্ছা তামজিদ সত্যি একটা কথা বলো তো?
আমিঃ জি ভাবি বলো?
ভাবিঃ হিয়া তো কিছু করে নাই?

আমিঃ। আরে না হিয়া কি করবে আমি এমনি ঘুমের ঘোরে দেয়াল এর সাথে বাড়ি খেয়ে ফেটে গেছে।
ভাবিঃ সত্যি করে বলো কি হয়েছিলো।
আমিঃ আরে ভাবি আমি তো সত্যি কথাই বললাম,


পর্ব ৫

ভাবিঃ ওকে ঠিক আছে আমি মেনে নিলাম তুমি সত্যি কথা বলছো যাও এবার ফ্রেশ হয়ে আসো খাবার খাবে।
আমিঃ ওকে

তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেলাম।
আমিঃ ভাবি আমি একটু বাহিরে যাবো।
ভাবিঃ না একদমি না তুমার এই অবস্থায় বাহিরে যাওয়া যাবে না যাও রেস্ট নাও।

আমিঃ না ভাবি বাহিরে না গেলে আমার একটু ও ভালো লাগবে না আমি গেলাম।
ভাবিঃ দাঁড়াও যাবেই যখন একা যাবে না হিয়াকে সাথে নিয়ে যাও।
আমিঃ না দরকার নাই আমি একাই পারবো।
ভাবিঃ আমি বলছি না হিয়াকে সাথে নিয়ে যেতে।

আমিঃ ঠিক আছে যাবে কিন্তু যদি রাস্তায় ঝগড়া বাধিয়ে দেই তখন কি হবে।
ভাবিঃ ওই তুমি কি বলতে চাও আমার বোন ঝগড়াটে।
আমিঃ ১০০ বার বলবো আপনার বোন একটা ঝগড়াটে নাম্বার ওয়ান মাইয়া।
এমন সময় হিয়া এসে এই কথা গুলা শুনে নিলো।

হিয়াঃ আমার নামে এখানে কি বলা হচ্ছে?
ভাবিঃ না কিছুনা তুই তামজিদ এর সাথে যা বাহির থেকে ওকে ঘুরিয়ে নিয়ে আয়।
হিয়াঃ আপু তুমার আল্লাদ দেখলে আমার গা জ্বলে যায়।
ভাবিঃ কেন আমি গা জ্বলার মত কি বললাম?

হিয়াঃ মনে হচ্ছে তুমার দেবর ৩-৪ বছর এর একটা শিশু রাস্তা ঘাট কিচ্ছু চিনে না তাই না।
ভাবিঃ আরে ও ওর শরীর এর অবস্থা ভালো না তাই তোকে সাথে যেতে বলছি।
আমিঃ আরে ভাবি বাদ দেন তো আমি একাই যেতে পারবো।
ভাবিঃ না থাক তুমাকে যেতে হবে না ঘরেই বসে থাকো।

হিয়াঃ চলেন আমি যাবো।
আমিঃ সরি আপনাকে যেতে হবে না।
হিয়াঃ ওই একদম ভাব দেখাবেন না। ওকে চলেন।

ভাবিঃ ঠিক আছে যাও তাহলে।
আমিঃ ঠিক আছে যাচ্ছি।
তারপর বাহিরে চলে আসলাম গ্রাম টা বেশ ভালোই।

আমিঃ বাহহ আপনাদের এই গ্রাম টা বেশ ভালোই তো।
হিয়াঃ আমি জানি আমাদের গ্রাম অনেক সুন্দর সেটা আপনাকে বলতে হবে না, ওকে।
আমি, – ওরে বাবা প্রশংসা করলাম ধন্যবাদ না দিয়ে অপমান করছেন।

হিয়াঃ আপনাকে কেউ বলছে আমাদের গ্রামের প্রশংসা করতে?
আমিঃ না কেউ তো বলে নাই।
হিয়াঃ এই এই দাঁড়ান দাঁড়ান।
আমিঃ কি হয়েছে?

হিয়াঃ ওই যে ছেলে টা আসছে ও খুব খারাপ একটা ছেলে আমাকে খালি ডিস্টার্ব করে এখন যদি দেখে আবার অনেক কথা বলবে।
আমিঃ ও আমি কি করবো।

হিয়াঃ আপনি একটা সাহায্য করতে পারেন।
আমিঃ কি।
হিয়াঃ ওই ছেলে যদি কিছু বলে আমি বলবো তুমার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আর তুমি পুলিশ। তখন তুমি একটু ভয় দেখিয়ে দিবে তাহলেই হবে।
আমিঃ আমি পারবো না।

হিয়াঃ প্লিজ না করবেন না।
আমিঃ কেন আমি কেন আপনার সাহায্য করতে যাবো সরি আমি পারবো না।
হিয়াঃ বুঝেছি সোজা আংগুলে ঘি উঠবে না আংগুল টা একটু বাকা করতে হবে। ঠিক আছে মাইর খাবার জন্য নিজেকে তৈরি রাখো।
আমিঃ মানে।

হিয়াঃ আমি এখন রকি কে বলবো তুমি আমাকে ডিস্টার্ব করবো তারপর দেখো কি মাইর ঘোলা পিঠে পরে।
আমিঃ মানে কি আমি আপনাকে কবে ডিস্টার্ব করলাম।

হিয়াঃ আমি আগে যা বলছি সেটা করো তা না হলে কিন্তু বুঝতেই পারছো কি হবে?
আমিঃ কিন্তু পরে যদি ধরা পরে যায় তখন কি হবে।
হিয়াঃ পরের টা পরে এখন কি করবে তাই বলো।
আমিঃ চল বাড়িতে চলে যায়।

হিয়াঃ বাড়ির দিকে গেলে কিন্তু আরো বেশি ফেঁসে যাবে।
ভেবে দেখলাম হিয়ার কথা না শুনলে কপালে খারাপ কিছুই হবে কারণ এই মেয়ে যে ডেঞ্জারাস এরে একটুও ভরসা রাখা যায় না।
ছেলেটা হিয়ার সাথে আমাকে দেখে বললো।
রকি – কি জানু এই পোলা কেডা।

হিয়াঃ চুপ বেয়াদব এটা আমার হবু বর আর ও পুলিশ।
রকি – বর মানে তুমার বিয়ে আমার সাথে আর কারো সাথে না, ওকে।
আমিঃ এই সব কি তুমি হিয়াকে বিয়ে করবো তাহলে আমি করবো।
রকি – আমাদের বিয়ের দায়িত্ব পালন করবে।

আমিঃ সত্যি তো ভাইয়া।
রকি – ১০০% সত্যি।
হিয়াঃ তামজিদ কি হচ্ছে।

আমিঃ উফফ কথার মাজে ডিস্টার্ব করো নাতো। আচ্ছা আমি আর তুমি বেষ্ট ফ্রেন্ড।
রকি – ওকে বেষ্ট ফ্রেন্ড।
আমিঃ আচ্ছা দোস্ত তুই আমার জন্য কি করতে পারবি?
রকি সব কিছু করতে পারি।

আমিঃ সত্যি তো।
রকি – হ্যা।
আমিঃ না আমি বিশ্বাস করি না।
রকি – কেন?

আমিঃ তুই তো একটু পর হিয়ার জন্য আমাদের বন্ধুতব শেষ করে দিবি।
রকি – কেন আমি তো হিয়াকে ভালোবাসি।
আমিঃ ঠিক আছে আমি আর তোর সাথে কথা বলবো না।

রকি – কেন।
আমিঃ তুই কি চাস একটা মেয়ের জন্য আমাদের বন্ধুত্ব টা নষ্ট হয়ে যাক।
রকি – না কখনো না।

আমিঃ ঠিক আছে তাহলে হিয়াকে ভুলে যা দোস্ত ও ভালো মেয়ে না
রকি – কেন ভালো না কেন।
আমিঃ দেক দোস্ত আমার ও যদি ভালো হত তাহলে কি তোকে রেখে আমাকে বিয়ে করতে চাইতো আমি একটা ডিসিশন নিয়ে ফেলেছি।
রকি – কি ডিসিশন।

আমিঃ আমি ও হিয়াকে বিয়ে করবো না আর তুই ও আর ওর সাথে কথা বলবি না ও একটা পচা মেয়ে।
রকি – দোস্ত তুই আমার জানের দোস্ত তুই আমাদের বন্ধুত্বের জন্য এই মেয়েকে বিয়ে করবি না ঠিক আছে দোস্ত তোকে কথা দিলাম আর কখনো এই মেয়ের মুখও দেখবো না।
আমিঃ দোস্ত তুই আমার সব থেকে বেষ্ট বন্ধু আয় আমার বুকে আয়।
রকি – আমার না খুব আন্দদ হচ্ছে.

আমিঃ কেন?
রকি – তোর মতো একজন বন্ধু পাইছি এজন্য।
আমিঃ আমারো। ঠিক আছে দোস্ত আবার পরে কথা হবে এখন যায় বাসায় ফিরতে হবে।
রকি – ওকে। তাহলে আমি ও যায়।
তারপর রকি চলে গেল।

হিয়াঃ তুমি তো পুরা ফাটাই দিছো এতো বুদ্ধি তুমার মাথায় আসলো কেমনে।
আমিঃ এই সব বুদ্ধি তুমার গোবর মাথায় আসবে না।
হিয়াঃ কিহহহ আমার মাথায় গোবর।

আমিঃ রকিকে ডাক দিয়ে সব কিছু বলে দেবো নাকি।
হিয়াঃ এই না না।
আমিঃ হুম মনে থাকে যেন।

আমিঃ কিছু খাবেন।
হিয়াঃ আপনার কাছ থেকে খাবো প্রশ্নই আসে না।
আমিঃ কেন আমার টাকাই খেলে বুঝি আমার প্রেমে পিড়ে যাবেন।
হিয়াঃ কখনো স্বপ্নও দেখবো না আমি আপনার প্রেমে পড়ছি।

আমিঃ বাহহ একটু আগে ও না রকি কে বললেন এটা আমার হবু বর।
হিয়াঃ ওই টা তো ওর হাত থেকে বাঁচার জন্য বলছি।

আমিঃ সব কিছু বাদ দেন এখন আমার কাছ থেকে কিছু খাবেন। আর না হলে আপনার টাকাই কিছু খাওয়াবেন।
হিয়াঃ হিয়া আমি আপনার টাকাই খাবো না আর খাওয়াতেও পারবো না।

আমিঃ খাওয়াবেন কেমনে আপনি তো একটা ফকিন্নি একটা টাকা নাই।
হিয়াঃ কিহহ এতো বড় কথা আমি ফকিন্নি বলেই আমার চুল ধরে পিঠে ঠাসসস কিল ঘুসি।
এমন সময় এক হুজুর এসে আমাকে এই রাক্ষস এর হাত থেকে বাঁচালো তারপর বলতে লাগলো।

হুজুর – দেখ মা তুমাদের মাজে কি হয়েছে আমি জানি না কিন্তু স্বামী যাই করুক না কেন স্বামীর গায়ে হাত দেওয়া কিন্ত অনেক বড় পাপ।
হজুর এর কথা শুনে ২ জনের চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
হিয়াঃ না মানে আসলে আপনি আসলে ভুল বুঝতেছেন।

আমিঃ হুজুর সাহেব আপনি একটু বুঝান। আমি যদি কিছু বলি তাহলেই আমাকে এই ভাবে যেখানে সেখানে মারে। আমি মারি না কারণ আমি জানি বউ কে মারতে হয় না এজন্য।
হিয়াঃ কিহহহহ আজকে তোর খবর আছে।

আমিঃ দেখলেন তো হুজুর স্বামিকে কিভাবে তুই তুই করে হুমকি দিতেছে।
হুজুর – মা তুমি কিন্তু খুব বড় ধরনের পাপ করতেছো যার ক্ষমা নাই। তুমার সাথে তুমার স্বামির সম্পর্ক থাকবে মধুর মতো।
হিয়াঃ আরে আমার তো কোন স্বামীই নাই।

আমিঃ দেখছেন এই মেয়ে কেমন মেয়ে আপনার সামনে বলতেছে নিজের স্বামিকে মানে না
হুজুর – তুমাকে দেখে মনে হয়েছিলো তুমি খুবী ভালো একটা মেয়ে কিন্তু এখন তো দেখছি খুব খারাপ মেয়ে তুমার সাথে তো আমার কথা বলাই উচিত হয়নি।
হিয়াঃ আরে আগে সত্যি টা তো শুনুন।
হুজুর – কোন সত্যি জানার দরকার নাই আমার।

বলেই চলে গেল।

আমি হিয়ার দিকে তাকিয়ে উপলব্ধি করতে পারলাম। এখন কয়েকশ কিলোমিটার বেগে তুফান উঠবে।
তাই আমি জান নিয়ে পালানোর জন্য দিলাম। একটা দৌড় এক দৌড়ে একদম বাসায় এসে পড়ছি। হিয়া আমার পিছন পিছন চলে আসলো।
হিয়ার চোখ মুখ একদম লাল হয়ে গেছে রাগে।

ভাবি এটা বুঝতে পেরে হিয়াকে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে কিন্ত হিয়া একদম চুপ।
ভাবিঃ কিরে হিয়া তোর চোখ মুখ এমন লাল কেন হয়েছে কি হয়েছে।
হিয়াঃ না কিছু হয়নি।
ভাবিঃ আরে আমাকে বল কি হয়েছে।

হিয়াঃ বলছি না কিছু হয়নি বলেই কাঁদতে কাঁদতে রুমে চলে গেল।
আমি মনে মনে ভাবলাম মনে হয় একটু বেশি করে ফেলেছি। তাই আমি হিয়ার রুমে গেলাম।
রুমে গিয়ে দেখে সুয়ে সুয়ে কাঁদতেছে।
আমি কি করবো বুঝতেছি না।
চুপচাপ কতক্ষণ থেকে বললাম সরি
হিয়াঃ….

আমিঃ আসলে আমি একটু মজা করতে ছাইছিলাম কিন্ত তুমি সিরিয়াসলি নিবে আমি বুঝতে পারি নাই।
হিয়াঃ আপনার কিছু বুঝতে হবে না এখান থেকে জান আর আমার রুমে ডুকার অনুমতি কে দিছে আপনাকে।
আমিঃ সরি ভুল হয়ে গেছে।

হিয়াঃ কিসের সরি জানেন না কারো রুমে প্রবেশ করার আগে অনুমিত নিতে হয়।
আমিঃ সরি ভুল হয়েছে আর কখনো হবে না।
হিয়াঃ ওকে ঠিক আছে এখাব থেকে যান। আর যাওয়ার আগে একটা কথা শুনে যান আপনার ওই মুখ যেন আর কোনদিন আমার সামনে যেন না দেখি কথাটা মনে থাকে যেন।
আমিঃ হুম মনে থাকবে।
কথা গুলা বলে রুম থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে দরজা লক করে দিলো।

এতোদিন এ যত অপমান মাইর দিছে কোনদিন কষ্ট পাইনি কিন্ত আজকে কেন জানি অপমান টা সহ্য হচ্ছে না খুব কষ্ট হচ্ছে।
তাই সিদান্ত নিলাম আর কোনদিন হিয়ার সামনে যাবো না। তারপর তখনি আমি ভাইয়া আর ভাবিকে বললাম আমার চলে যেতে হবে এখনি আমার জরুরি একটা কাজ আছে মিথ্যা কথা বলে অনেক কষ্টে সেখান থেকে ছূটে এলাম। তারপর বাসায় চলে আসলাম। ভাইয়া ভাবিও বাসায় চলে আসলো কয়েক দিন এভাবেই চলে গেল কিন্ত একটা পর পরি হিয়ার কথা মনে হয় কিছুতেই ভুলতে পারি না।

রুমে বসে বসে মোবাইল এ গেম খেলতেছিলাম এমন সময় ভাবি রুমে এসে বললো তামজিদ তুমার জন্য তো দারুণ একটা খবর আছে।
আমিঃ কি ভাবি?
ভাবিঃ আগে বল খবর টা দেওয়ার পর আমাকে কিছু একটা দিবে।
আমিঃ কি দেবো।

ভাবিঃ কিছু একটা দিলেই হবে।
আমিঃ আচ্ছা খবর টা যদি সত্যি ভালো হয় তাহলে দিবো এখন বলো কি?
ভাবিঃ হিয়া তুমার ভার্সিটিতে ভর্তি হবে।
আমিঃ এতে আমার লাভ কি?

ভাবিঃ কেন তুমি না বললে হিয়াকে তুমার ওই খানে ভর্তি করিয়ে দিতে
আমিঃ হ্যা বলেছিলাম এমনিতে বলেছিলাম।
ভাবিঃ না আমি জানি এখন আমাকে কিছু দিতে হবে এজন্য তুমি অন্য কথা বলতেছো।

আমিঃ আচ্ছা আমি তুমাকে কি দেবো বল।
ভাবিঃ থাক কিছু লাগবে না।
আমিঃ আরে বলতো।
ভাবিঃ আচ্ছা ফুসকা খাওয়ালেই চলবে।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি ফুসকা নিয়ে আসবো।
তারপর রাতে একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসলো। প্রথম বার রিসিভ করলাম না দ্বিতীয় বার রিসিভ করিলাম।
আমি ফোন রিসিভ করে সালাম দিলাম।
সালাম এর জবাব দিয়ে বললো কেমন আছেন।

আমিঃ হ্যা ভালো আছি আপনি কে?

  • আমি কে জানার আগে জানবেন না আমি কেমন আছি।
    আমিঃ হুম আপনি কেমন আছেন আর বলেন আপনি কে?
  • ভালোই আছি আর আমি কে কালকে ভার্সিটি আসবেন তাহলেই বুঝবেন।
    আমিঃ কেন এখন বললে কি সমস্যা?
  • না কোন সমস্যা না।
    আমিঃ তাহলে বলেন।
  • রাতের খাবার খাইছেন।
    আমিঃ হ্যা আপনি খাইছেন।
  • হ্যা।
    আমিঃ ভালো ফোন টা এখন রাখি আমি ঘুমাবো।
  • কি এখনি ঘুমাবেন এখন মাএ রাত ৮ টা বাজে।
    আমিঃ ৮ টা বাজে তো কি হয়েছে আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো বাই।
    বলেই ফোন কেটে দিলাম।

আবার ফোন দিলো। রিসিভ করলাম না।
তারপর এসএমএস দিলো।
আপনি তো দেখছি খুব পার্ট নেন।
তারপর কিছুক্ষণ পড়ালেখা করে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে রওনা হলাম ভার্সিটির দিকে।


পর্ব ৭

ভার্সিটিতে পৌঁছানোর পর কালকের সেই নাম্বার এ ফোন দিলাম।
আমি ফোন দিয়ে বললাম আমি এসে গেছি।

সে বললো আমি ২ মিনিটে আসতেছি। পরে ফোন কেটে দিলাম
হঠাং করে দেখি হিয়া আমার দিকে আসতেছে। হিয়াকে দেখে হিয়ার শেষ কথাটা মনে পড়ে গেল। আমি যেন আর কখনো তার সামনে মুখ না দেখাই। এজন্য সেখান থেকে সরে গেলাম। একটা গাছের নিছে গিয়ে বসলাম। অন্যমনস্ক হয়ে কিছু একটা ভাবতেছিলাম।
হিয়াঃ কেমন আছেন?
হিয়ার কন্ঠ পেয়ে চমকে উঠে দাঁডায়।

সামনে তাকিয়ে দেখি হিয়া এজন্য তাড়াতাড়ি অন্যদিকে ঘুরে চলে আসতে লাগলাম।
হিয়া হাত টা ধরে ফেললো।
হিয়াঃ আপনি এখনো আমার উপর রাগ করে আছেন।

আমিঃ হাত টা ছাড়েন সবাই দেখতেছে।
হিয়াঃ কেন এখানে কি কারো হাত ধরা নিষেধ নাকি।
আমিঃ আমি এতো কিছু জানি না আমার হাত টা ছাড়েন আমি যাবো আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
হিয়াঃ ছাড়বো আগে বলেন এখনো রাগ করে আছেন নাকি।
আমিঃ রাগ করেছি কি না জানি না তোবে একজন এর কথা রাখতেছি।

হিয়াঃ কি কথা?
আমিঃ আপনি একজন মেয়ে আমি একজন ছেলে এজন্য আপনি আমার হাত এভাবে ধরে রাখতে পারেন so হাত ছাড়েন। আর আমার gf দেখলে সমস্যা হবে।
আমার gf আছে কথাটা শুনে মনে হয় আকাশ থেকে তার মাথায় বাজ পড়লো। হাতটা ছেড়ে দিলো মনে হচ্ছে এখনি তার চোখ থেকে বৃষ্টি নামবে।

হাত ছেড়ে দেওয়াই আমি সেখান থেকে চলে আসলাম। হিয়া সেখানেই বসে রইলো। আমি একটু দূর থেকে সবটা দেখতে লাগলাম। বসে বসে কাঁদতেছে দেখে হিয়ার একটা ফ্রেন্ড আছে নাম জুই মেয়ে টা হিয়ার কাছে আসলো এসে বলতে লাগলো।

  • কি হয়েছে হিয়া তুই এখানে বসে বসে কাঁদতেছিস কেন?
    হিয়াঃ?
  • ওই চুপ করে আছিস কেন বল?

হিয়াঃ দোস্ত তুই না বলেছিলে তামজিদ এর কোন gf নাই?

  • হ্যা নাই তো?
    হিয়াঃ আজকে ও নিজে মুখে শিকার করেছে ওর gf আছে।
  • মানে?
    তারপর হিয়া সব কিছু খুলে বললো।
    জুই কথা গুলা শুনে হাসতে লাগলো।

হিয়াঃ তুই হাসতেছিস আমি এখানে হাসার মতো কি বলছি?

  • তুই আসলে একটা মাথা মোটা তুই ওর অভিমান টাই বুঝতে পারলি না।
    হিয়াঃ মানে।
  • মানে হচ্ছে তামজিদ তোর প্রতি অভিমান করে আছে। যার জন্য তোর সাথে কথা বলতে চাই না। আর তোকে মিথ্যা কথা বলেছে যে ওর gf আছে। যাতে তুই তামজিদ এর সাথে কথা না বলস
    হিয়াঃ কিন্ত ও কেন এমন করবে?
  • আল্লাহ এখন দেখছি সত্যি তোর মাথায় গোবর ছাড়া একটু ও বুদ্ধি নাই। তুই তামজিদ কে বলেছিলি না যে তোর সামনে যেন ও আর কোন দিন মুখ না দেখাই। এজন্য তোর প্রতি অভিমান করে আছে।

হিয়াঃ হ্যা এখন বুঝতে পারছি কিন্তু এখন কি করবো? দোস্ত প্লিজ বল আমার মাথায় কিছুই ডুকতেছে না।

  • হুম তোকে তামজিদ এর এই অভিমান টা ভাঙতে হবে।

হিয়াঃ কিভাবে?

  • তুই তামজিদ সাথে বেশি কথা বলবি বেশি করে সময় দেওয়ার চেষ্টা করবি। আর যদি তামজিদ কথা বলতে না চাই জোর করেই কথা বলবি।
    হিয়াঃ ওকে দোস্ত তোকে অনেক গুলা ধন্যবাদ।
  • যা আর ধন্যবাদ দিতে হবে না।

হিয়াঃ দোস্ত তুই থাক আমি একটু যায়।

  • ওকে।
    আমি আমার মতো চলিতেছিলাম কিছুই ভালো লাগছিলো না তাই চিন্তা করলাম বাসায় চলে যায়।
    এমন সময় হিয়া এসে হাজির।
    আমি অন্য দিকে মুখ করে চলে যেতে লাগলাম।

হিয়াঃ এই যে মিস্টার দাঁড়ান।
আমি শুনেও না শুনার ভান করে চলে আসতে লাগলাম।
হিয়া আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।
হিয়াঃ আচ্ছা আপনি নিজেকে কি মনে করেন।

আমিঃ আমি নিজেকে অনেক কিছুই মনে করে। এখন আমার সামনে থেকে সরে দাঁড়ান আমি বাসায় যাবো?
হিয়াঃ হ্যা যাবেন তোর আগে আপনার gf কে আমাকে দেখান।
আমিঃ আমার gf আপনাকে দেখাবো প্রশ্নেই আসে না।
হিয়াঃ এখানে পরীক্ষা দিতে আসি নাই তাই প্রশ্নে আসতে হবে। যা বলছি তাই করেন না হলে আপনার কপালে খারাপ কিছুই আছে।
আমিঃ দেখাবো না কি করবেন?

হিয়াঃ কখনো গন পিটান খাইছেন বা দেখছেন।
আমিঃ কেন?
হিয়াঃ যদি না দেখান তাহলে আপনার কপালে গন পিটানি আছে।
আমিঃ গন পিটানি দেওয়া তো এতোই সহজ মুখে বললেই হল।

হিয়াঃ আমার কিন্তু প্রচন্ড রাগ উঠতেছে। আর আমার রাগ এর ধামামুন। কিন্তু আপনার ভালো করেই আছে।
আমিঃ তো আমি কি করবো আমি কি আপনার রাগের কামাই খাই নাকি ভয় পাই।
হিয়াঃ তারমানে আপনি আপনার gf কে দেখাবেন না তাই তো।
আমিঃ হ্যা দেখাবো না।

হিয়াঃ ঠিক আছে তাহলে নিজেক প্রস্তুত করেন গন পিটানি খাওয়ার জন্য।
আমিঃ দেখেন আপনার ফালতু বকবক শুনার টাইম আমার নাই আমি বাসায় যাচ্ছি।
তারপর আমি বাসায় চলে আসলাম। এই মেয়ে আমার সাথে এমন করতেছে কেন কি চাই আমার কাছে।
এইসব ভাবতে ভাবতে চলে আসলাম বাসায়।

এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে গেলাম সবাই এক সাথে খাবার খেতে লাগলাম। এমন সময় ভাইয়া বললো তামজিদ তোর কি আজকে বিকেলবেলা কোন কাজ আছে নাকি?
আমিঃ না ভাইয়া তেমন কোন কাজ নাই।
ভাইয়াঃ তাহলে তুই তোর ভাবির বাসায় গিয়ে হিয়াকে আমাদের বাসায় নিয়ে আয়।

আমিঃ সরি ভাইয়া যেতে পারবো না আসলে আমার একটা কাজ আছে আমি যেতে পারবো না।
ভাইয়াঃ একটু আগেই তো বললি কান নাই এখন আবার কাজ আসলো কথা থেকে। কাজ পরে করবি আগে হিয়াকে নিয়ে আসবি।
আমিঃ কিন্ত ভাইয়া।
ভাইয়াঃ কোন কিন্তু না গিয়ে নিয়ে আসতে আর কত সময় লাগবে।

দূর মেজাজ টাই খারাপ হয়ে গেল অর্ধেক খাবার খেয়ে উঠে পড়লাম।
তারপর আমি যাবো না এটা অনেক বার বলার পরও কোন কাজ হলো না। জোর করেই পাঠালো।
কি করার বাধ্য ছেলের মতো রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম।

ভাইয়াঃ এই নে বাইক এর চাবি।
আমিঃ আমি বাইক এর চাবি দিয়ে কি করবো?
ভাইয়াঃ কেন বাইক নিয়ে যাবি?

আমিঃ না আমি গাড়িতে যাবো বাইক নেবো না।
ভাইয়াঃ রাস্তায় অনেক জ্যাম গাড়িতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। তখন আবার রাত হয়ে যাবে।
তারপর আর কি বাইক নিয়েই গেলাম।

আল্লাহ বাসায় গিয়ে দেখি মেম সাহেব আগে থেকেই রেডি হয়ে বসে আছে। বাসায় ডুকার সাথে সাথেই বলে চল।
মনে হয় এই বাসা থেকে গেলে কি জেন পেয়ে যাবে। আর দেরী করেই বা লাভ কি?
তাই তাড়াতাড়ি চলে আসলাম।

হিয়াঃ বাইক নিয়ে আসছো তাহলে তো খুব মজা হবে।
আমিঃ তাড়াতাড়ি করেন আমার কাজ আছে ওকে।
হিয়াঃ হুম যাবো যাওয়ার আগে কিছু কথা বলে নেই তারপর।
আমিঃ দেখেন আমি এখানে আপনার বক বক শুনতে আসি।
হিয়াঃ কিহহ আমি বকবক করে।

আমিঃ দেখেন আমি মাফ চাই আমি আপনার সাথে কোন ঝগড়া করতে চাই না। প্লিজ ঝগড়া করতে আসবেন না ওকে।
হিয়াঃ এই এই তুমি এই কথা দারা কি বুঝালে আমি ঝগড়াটে তুমার সাথে ঝগড়া করি।

আমিঃ আপনি আপনার কাছে হাত জোর করে ক্ষমা চাই। প্লিজ আমি আর কোন কথা বলতে চাই না ওকে।
হিয়াঃ ওকে ভালো তোবে বাইক চালানোর সময় জোরে চালানো যাবে না। আর আচমকা ব্রেক মারা একদম নিষেধ ওকে।

আমিঃ আমি জোরে চালাবো আর ব্রেক ও মারবো। এতে যদি আপনার কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি গাড়ি করে আসেন আমি যায় ওকে।
হিয়াঃ এতো দিন তো জানতাম আপনি একটা পাজী ঝগড়াটে এখন দেখছি সুবিধা বাধি মানুষ।
আমিঃ আপনি যাবেন নাকি আমি চলে যাবো।
হিয়াঃ ওকে যাবো।

তারপর বাইক এ উঠলো। পেছন থেকে আমাকে জরিয়ে ধরলো।
আমিঃ এই কি করছেন ছাড়েন আমার কমড়।
হিয়াঃ কেন?

আমিঃ আমি চাইনা আমার বউ ছাড়া আর কোন মেয়ে আমার শরীর এ টাস করুন।
হিয়াঃ নেকামো টা তো ভালোই পারেন। যখন কলেজ এর মেয়েদের নিয়ে ঘুরেন তখন মনে হয় তাড়া টাস করে না।
আমিঃ আমার জীবনে প্রথম কোন মেয়েকে নিয়ে বাইক চালাইতেছি।
হিয়াঃ বাহহ ডায়লগ টা ভালোই লাগলো।

আমি আর কিছু বললাম না কারণ আমি জানি এর মেয়ের সাথে আমি কথায় কখনো পারবো না। তাই আগে থেকেই নিজেকে চুপ করে ফেললাম।
একটু পর কি হলো চুপ হয়ে গেলে কেন।
আমিঃ তো কি করবো।
হিয়াঃ তুমার gfকেমন আছে।

আমিঃ আমার কোন gf নাই। (এই যা পেট থেকে সত্যি টা বের করে দিলাম)
হিয়াঃ কিহহহ এতো বড় মিথ্যা কিথা কালকে বললে gf আছে আজকে বলছো gf নাই।
আমিঃ হ্যা আছে তো।
হিয়াঃ নাম কি।

আমিঃ আপনার জানা লাগবো না ওকে।
হিয়াঃ কেন আমি না আপনার একটি মাত্র বিয়ান তাহলে বলবেন না কেন?
আমিঃ সবার কাছে সব কথা বলা যায় না।

হিয়াঃ কচুডা বলা যায় না আপনার gf থাকলে তো বলবেন। আর আপনার সাথে প্রেম করবে এমন পাগল মেয়ে আছে নাকি। নিজের চেহারা টা একবার ভালো করে আয়নায় দেখবেন ওকে।

আমিঃ; ওহহহ তাই মানলাম আমার চেহারা খারাপ তাই আমার সাথে প্রেম করবে না। আপনার চেহারা তো পচা না খুব সুন্দর একদম পরীর মতো তাহলে আপনার সাথে কেউ প্রেম করে না কেন?
হিয়াঃ আমার পেছনে কত ছেলে ঘুড়ে যানো।

আমিঃ জানবো না কেন এটা তো সবাই জানে পচা জিনিস এ অনেক মাছি পড়ে। আপনি হচ্ছেন ওই রকম। তাই এতো পোলাপান ঘুড়ে।
হিয়াঃ কিহহহ আমি পচা এর পরিণাম টা ভালো হবে না দেখে নিয়ো।
আমিঃ অহহ নিজের বেলায় ১৬ আনা আমার বেলায় ৪ আনা তাই না। যখন আমাকে বলেন তখন খুব ভালো লাগে আর আমি কিছু উত্তর দিলে গায়ে লাগে
হিয়াঃ আমি সত্যি কথাই বলছি তুমার সাথে কেউ প্রেম করবে না।

আমিঃ ওকে ভালো কেউ আমার সাথে প্রেম না করুন এটাই আমি চাই। ওকে।
বাসায় এসে গেছি নামেন এবার।
বাসায় ডুকেই শয়তান হারামি টা আমার নামে উল্টাপাল্টা কথা বলতে লাগলো ভাইয়ার কাছে।

হিয়াঃ জানেন ভাইয়া আপনার ভাই সিগারেট খাই।
আমিঃ কিহহহ আমি সিগারেট খাই?
হিয়াঃ হ্যা কেন আসার পথেও না খেলে।
ভাইয়াঃ কিহহ তুই সিগারেট খাস ছি ছি।

আমিঃ বিশ্বাস করো ভাইয়া আমি সত্যি বলছি। আর তুমার এই শালি আমার নামে সব বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কথা বলতেছি।
হিয়াঃ কিহহ আমি মিথ্যা বাদী। জানো ভাইয়া, আমি তো বলেছি যে আমি তুমার ভাইয়ার কাছে বলে দিবো। তখন কি বলে যানো বলে বললে তকে মাইর দেব।

ভাইয়াঃ ছি ছি তোকে নিয়ে এতো আশা ভরসা ছিলো সব কিছু শেষ করে দিট দিতেছোস।
আমিঃ প্লিজ ভাইয়া আমার কথা বিশ্বাস করো আমি কোন দিন ও সিগারেট খাই না।
ভাইয়াঃ আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না তুই যা এখান থেকে।
আমিঃ ভাইয়া।

ভাইয়াঃ আমি এখান থেকে যেতে বলছি কথা কানে শুনা যায় না।
জানি এখন আর আমার কথা বিশ্বাস করবে না। তাই কিছু বলেও লাভ নাই তাই চুপচাপ রুমে চলে আসলাম।
রুমে এসে কতক্ষণ বসে থেকে ফ্রেশ হয়ে ছাদে গেলাম।

কিচ্ছুক্ষণ পর হিয়া ছাদে আসলো আমাকে দেখে দাঁত বের করে খিলখিল করে হাসতে লাগলো। হাসিটা আমার অসহ্য লাগলো আমি অন্য দিকে মন দিলাম।
হিয়াঃ কি আমাকে পচা বলার শাস্তি টা কেমন দিলাম! এই কথা মনে থাকলে আর কখনো আমার সাথে লাগতে আসবে না, ওকে।
আমিঃ আচ্ছা আসলে কি চান বলেন তো আমাই কি করেছি? আপনার যার জন্য আমার পিছনে এমন আঠার মতো লেগে আছেন?
হিয়াঃ যা চাই দিবে?

আমিঃ হ্যা আপনি বলেন কি দিলে আপনি আমার পিছন ছাড়বেন।
হিয়াঃ আমি ভালোবাসা চাই।
আমিঃ মানে?

হিয়াঃ আমি তুমাকে ভালোবাসি। আমি তুমাকে চাই।
আমিঃ সরি আপনি যেটা চাইছেন সেটা আমি আপনাকে কখনো দিবো না।
হিয়াঃ তাহলে মনে করেন আপনার কপাল থেকে শান্তি জিনিসটা আজকে থেকে হা।
রিয়ে যাবে (রেগে)
আমিঃ কেন আপনি কি পাগল নাকি?

হিয়াঃ কেন আমি পাগল হতে যাবো কেন?
আমিঃ কেন আপনি আসার পথে কি বলেছিলেন আমাকে যে ভালোবাসবে সে একটা পাগল।
হিয়াঃ হ্যা আমি তো পাগল হয়ে গেছি তুমাকে ভালোবেসে।


পর্ব ৯

আমিঃ ভালো তো পাগল হয়ছেন এখন পাবনা যান আমার কাছে এসে এমন ভাবে বিরক্ত করার মানে কি?
হিয়াঃ এই পাগলী টাকে তুমি ছাড়া আর কোন ডাক্তার ভালো করতে পারবে না।
আমিঃ আমি তো আর ডাক্তার না যে পাগল কে ভালো করবো তার থেকে ভালো তাড়াতাড়ি পাবনা চলে যান।
হিয়াঃ পাবনা গিয়ে ভালো হলে তো আর তুমার কাছে আসতাম না।
.
আমিঃ দেখেন এমনিতে মন ভালো না প্লিজ আমাকে একটু একা থাকতে দেন। এখান থেকে জান আর আপনি না গেলে বলেন আমি চলে যাচ্ছি।
হিয়াঃ মন খারাপ চল বাহির যায় ঘুরতে মন ভালো হয়ে যাবে।
আমিঃ দেখেন আমি কিন্তু ভালো ভাবে বলতেছি আমি আপনার সাথে কোন কথা বলতে চাচ্ছি না। আর আমার পক্ষে কখনো সম্ভব না। আপনার মতো নিচু মনের মানুষ কে ভালোবাসা।

হিয়াঃ দেখ আমি যা করেছি সবটা তোমাকে ভালোবেসেই করেছি। আর সব কিছু ছিলো সুধু মাএ একটু মজা করার জন্য।
আমিঃ হুম মজা করেন আমি না করেছি নাকি! আমাকে নিয়ে কেন মজা করছেন আর কেউ নাই মজা করার মতো?
হিয়াঃ না নাই দেখেই তোমাকে নিয়ে মজা করি। ঠিক আছে এতে যদি তোমার মন খারাপ হয় ঠিক আছে আর কখনো এমন করবো না। আর যা করেছি তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। প্লিজ।

আমিঃ আপনি যা করেছেন তা ক্ষমা করার যোগ্য না। কিন্তু অপরাধী তার অপরাধ শিকার করলে তাকে ক্ষমা করতে হয় তাই ক্ষমা করে দিলাম। কিন্তু এর পর থেকে যদি আপনি আমার পেছনে লেগে না থাকেন তাহলে খুব খুশী হবো।
হিয়াঃ তা কখনো হবে না হয় সময় তোমার পেছনে আঠার মতো লেগে থাকবো। এটাই ফাইনাল।

আমিঃ থাকেন আমার কোন সমস্যা নাই কিন্তু একটা কথা শুনে রাখেন আপনাকে কখনো আমি ভালোবাসবো না।
হিয়াঃ ভালোতো তোমাকে বাসতেই হবে আর না বাসলে জোর করেই ভালোবাসা আদায় করে নিবো।
আমিঃ হুম দেখা যাবে।
হিয়াঃ হুম আরেক টা কথা তোমাকে যদি কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখি না তো খবর আছে বলে দিলাম।
আমিঃ ১০০ বার বলবো আপনি কে না করার।

হিয়াঃ ভালো ভাবে না করলাম না শুনবে কি শুনবে না সেটা তোমার বেপার। আমি কি করতে পারি তোমার ভালো করেই জানা হয়ে গেছে আশা করি বুঝতে পারছো.
আমিঃ কথা বলবো আপনি পারলে কিছু করে দেখাইন।
বলেই চলে আসলাম।

সন্ধ্যা হয়ে গেছে কখন বুঝতেই পারি নাই রুমে এসে একটু সুয়ে থেকে একটূ পড়তে বসলাম।
তারপর ভাবি খেতে ডাকলো।
আমিঃ আমি খাবো না ভাবি তোমরা খেয়ে নাও।

ভাবিঃ রাতের বেলা না খেয়ে থাকতে হয় না চল খাবে।
আমিঃ না ভাবি আমার খিদে নাই আমি খাবো না।
ভাবিঃ না খেলেও যায়তে হবে তোমার ভাইয়া কি যেন বলবে।
আমিঃ ওকে চল।
এসে দেখি সবাই এসে গেছে।

আমিঃ ভাইয়া কি বলবে বল? (মাথাটা নিচু করে বললাম। মাথা উচু করে কথা বলার সাহস টা শেষ হয়ে গেছে। )
ভাইয়াঃ কাল থেকে হিয়াকে সাথে নিয়ে ভার্সিটি যাবি। আর আজকে যা শুনছি আর কখনো যেন না তাহলে খুব খুশি হব। যা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পর.
আমিঃ ঠিক আছে। আর আমি খাবার খাবো না এখন।

ভাইয়াঃ আমি বলছি না খেতে।
আমিঃ আমার তো খিদে নাই।

ভাইয়াঃ খিদে আছে কি নাই, তা আমি জানতে চাইনি আমি বলছি খাবার খেতে।
আমি আর কিছু না বলে খাবার টেবিলে বসে পড়লাম।
খাবার খাইতেছি কিছুক্ষন পর অনুভব করলাম কেউ একজন আমার পা এর মধ্যে সুড়সুড়ি দিতেছে। আমার অপর পাশে হিয়া বসেছে আমার বুঝার বাকি রইলো না। এটা কার কাজ।

আমি হিয়ার দিকে চোখ গরম করে তাকালাম। এতে হিয়া আমকে চোখ মেরে মিস্টি একটি হাসি দিলো। এতে আমার ওর প্রতি রাগটা আরো বাড়লো মন চাইলো যে চোখ দিয়ে আমাকে চোখ মেরেছে ওই চোখ টা তুলে ফেলি।

আবারো এক কাজ করলো।

এবার আর ওর দিকে তাকালাম না জানি যতবার তাকাবো ততবার দিবে।
আমি আমার মত চুপচাপ খাওয়া শেষ কিরে রুমে চলে আসলাম।
এসে পড়তে বসলাম আবার।

একটুপর ওই আপদ টা আমার রুমে এসে হাজির আর সাথে ভাবি।
ভাবিঃ তামজিদ হিয়াকে এই অধ্যায় টা একটু ভালো করে বুঝিয়ে দাও তো। হিয়া নাকি বুঝতে পারছে না।
আমিঃ কেন তুমি দাও তুমি তো পারো।
ভাবিঃ না আসলে আমার।
মনে পড়ছে না তো তাই।

আমিঃ আর যে অধ্যায় এর কথা বলছেন আমি এই অধ্যাই পারি না।
হিয়াঃ মিথ্যা কথা বলতেছে আপু আজকেই এই অধ্যায় পড়িয়েছে।
আমি, – আজকে যদি পড়িয়ে থাকে তাহলে তুমি পারো না কেন?
হিয়াঃ ক্লাসে মনযোগী ছিলাম না তাই।
আমিঃ আমি ও বুঝতে পারি নাই।

ভাবিঃ প্লিজ তামজিদ একটু বুঝিয়ে দাও আর আমি যাই আমার একটু কাজ আছে।
আমিঃ আমি পারবো না।
ভাবিঃ দাও ভাই প্লিজ।
বলেই চলে গেলো

আমি, – আমার রুমে এমন বাহানা করে আসার মানে কি?
হিয়াঃ জানি না তবে তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই আসছি।
আমিঃ ভালো দেখছেন এখন এখান থেকে যান।

হিয়াঃ না যাবো না আজকে সারা রাত থাকবো।
আমিঃ আপনার যা ইচ্ছে করেন আমি ঘুমাবো ডিস্টার্ব করবেন না।
হিয়াঃ আমার গালে একটা পাপ্পি দিলে চলে যাবো।
আমিঃ কে পাপ্পি দিবে আপনাকে?
হিয়াঃ তুমি দিবা।

আমিঃ কখনো না।
হিয়াঃ ওই ভালো ভাবে বলছি কাজ হচ্ছে না তাই এখন কিন্তু সবাই কে ডেকে বলবো তুমি আমাকে জোর করে কিস করছো।
আমিঃ মানে কি আমি কখন আপনাকে জোর করে কিস করলাম?

হিয়াঃ করো নাই তো আমি সবাই কে মিথ্যা বলে তোমাকে বকা খাওয়াবো।
আমিঃ মানে আপনার কি একটু ও লজ্জা সরম নাই নাকি।
হিয়াঃ না নাই তোমার তো খুব লজ্জা শরম আছে তাহলে ভালো ভাবে একটা পাপ্পি দাও চলে যাবো
আমিঃ না আমি কাউকে পাপ্পি দিতে পারবো না।

হিয়াঃ না দিলে এখন কিন্তু সবাই কে ডেকে মিথ্যা কথা বলবো। তারপর বলবো এখন আমাকে কেউ বিয়ে করবে না আমি তোমাকেই বিয়ে করতে চাই। তখন বুঝবে মজা।
আমিঃ দেখেন প্লিজ এমন করবেন না তাহলে আমার মানসস্মান কিছু থাকবে না।
হিয়াঃ এতোই যখন মান সস্মান এর ভয় তাহলে একটা পাপ্পি দাও চলে যাবো। আর যতো দেরি করবে ডিমান্ড বাড়বে। আরেকটু দেরি করলে কিসটা ঠোটে করতে হবে।
আমিঃ সরি আমার বউ কে ছাড়া আর কাউকে কিস করবো না।

হিয়াঃ অনেক ভালোভাবে বলেছি বুঝছি ভালো কথাই কাজ হবে না। বলেই আপু বলে জোরে ডাক দিলো।
আমি আর কিছু না ভেবে হিয়ার ঠোট বন্ধ করে দিলাম আমার ঠোট দিয়ে। সাথে সাথেই ছেড়ে দিয়ে আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।


পর্ব ১০

হিয়া হিয়া সাথে সাথে দৌড়ে চলে গেল।

আমি এটা কি করলাম নিজেই বুঝতে পারছি। ঝড়ের মতো এক নিমিষের মাঝে হয়ে গেল।
মনডাই খারাপ হয়ে গেল। এমন আমি কেমন করে করলাম। এই ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়েছি।
সকাল বেলা ওই আপদ টা আবার এসে আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিলো।
হিয়াঃ ওই উঠেন অনেক সকাল হয়ে গেছে।

আমিঃ ওই কি সমস্যা আপনার এই সকাল সকাল এই চিল্লাচিল্লি কিসের।
হিয়াঃ ওই আমি চিল্লা করছি কখন আমি তো সুধু আপনাকে ঘুম থেকে উঠানোর চেস্টা করছি ভার্সিটি যেতে হবে, তাই।
আমিঃ আমি আপনারে বলছি নাকি যে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে দিবেন।

হিয়াঃ বলেন নাই তবে বিয়ের পর তো আমাকেই ডেকে দিতে হবে তাই না। তাই আগে থেকেই অভ্যাস করছি।
আমিঃ বিয়ে মানে কার হুম?
হিয়াঃ আমার আর তোমার।
আমিঃ আমারে পাগলা কুত্তাই কামড়াইছে তাই আপনার মতো মেয়ে কে বিয়ে করবো। আমি তো বিয়ে করবো একদম পরীর মতো বউ।
হিয়াঃ কেন আমি দেখতে খারাপ নাকি?

আমিঃ কেন আপনি মনে করেন আপনি বিশ্ব সুন্দরী। একবার ভালো করে আয়নাই দেখেন নিজেকে কেমন দেখাই একদমি বাজে চেহারা এই টা কোন চেহারা হল নাকি।
হিয়ার মুখটা একদম কালো হয়ে গেল চোখে পানি টলমল করছে যখন তখন বৃস্টি হতে পারে।
আমার মনে মনে খুশি লাগতেছে আমারে যেমনে অপমান করেছে তার একটু প্রতিশোধ নিতে পেরে।

আমি আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি হিয়া সেখানেই দাঁড়িয়ে কাদঁতেছে।
আমিঃ কি হল আপনি এখনো এখানে দাঁড়িয়ে কাদঁতেছেন। যান গিয়ে রেডি হন।
হিয়াঃ একটা কথা বলবো?
আমিঃ আবার কি কথা।
হিয়াঃ শেষবার এর মতো বলবো। তারপর আর কিছু বলবো না।
আমিঃ কি বলেন?

হিয়াঃ সত্যি কি আমি দেখতে অনেক খারাপ।
আমিঃ খালি খারাপ অনেক খারাপ
হিয়াঃ ওও ভালো ঠিক আছে। আপনাকে অনেক জ্বলাইছি এর জন্য ক্ষমা করে দিবেন। আর কখনো আপনাকে এইভাবে জ্বলাবো না।
আমিঃ কেন করবেন?

হিয়াঃ আপনার না জানলেও চলবে।
বলেই চলে।
এইমেয়ের আবার কি হলো। হঠাং করে এমন আচারণ করলো।
আবার উল্টা পাল্টা কিছু করবে নাতো।

আমি আর কিছু না ভেবে তাড়াতাড়ি হিয়ার পিছন পিছন গেলাম। গিয়ে দেখি রুমে বসে বসে কাদতেছে।
আমার মনে অনেক খুশি লাগতেছে মন তাইতেছে লুঙ্গী ড্যান্স দিতে। যাক, আমাকে যে অপমান আর জ্বালাইছে তার প্রতিশোধ টা ভালোই নিছি।
খুশি মনে তাড়াতাড়ি কলেজের জন্য রেডি হলাম।

রেডি হয়ে এসে হিয়ার জন্য দাঁড়ালাম। অনেক ক্ষন হয়ে গেল আসতেছে না।
আমিঃ ভাবি তুমার বোন যাবে না নাকি দেরি হয়ে যাচ্ছে তো?
ভাবিঃ আমি দেখতেছি।
হিয়া, এই হিয়া।
ভার্সিটি যাবি না নাকি?

হিয়াঃ না আমি যাবো না।
ভাবিঃ যাবি না মানে সকালেই তো পাগল করে ফেলছিলি যাওয়ার জন্য। বলছিলি তামজিদ কে ডেকে দেওয়ার জন্য এখন আবার কি হল?
হিয়াঃ আমার ভালো লাগছে না তাই যাবো না।

আমিঃ দূর যাবে না আগে বললেই তো হত এতো সময় আমাকে দেরি করানোর কোন মানে হয় নাকি।
একটু রাগ করে চলে আসলাম। খুশি মনেই গেলাম। কিন্ত আসতে আসতে কেন জানি মন খারাপ হতে থাকলো। কেন জানি নিলার জন্য মন খারাপ হচ্ছে।
ওই ভাবে বলাটা উচিত হয়নি। সে নাহয় না বুঝে একটা ভুল করছে কিন্তু আমি কি করলাম সব কিছু বুঝে শুনেই এমন কেন করলাম। কিছুতেই আর মন ভালো করতে পারলাম না অবশেষ এ বাসায় ফিরে আসলাম।
বাসায় আসার পর ভাবি আমাকে জিজ্ঞাসা করলো।

ভাবিঃ আচ্ছা তুমি আর হিয়াকি ঝগরা করছো নাকি?
আমিঃ কেন?
ভাবিঃ না সেই সকাল থেকে হিয়া আর রুম থেকে বের হয়নি কিছু খাইনি। কি হয়েছে কিছু বলছেও না।
আমিঃ কি বল এখনো কিছু খাইনি।
ভাবিঃ হ্যা।

আমিঃ ওকে আমি দেখতেছি।
তারপর আমি হিয়ার রুমে গেলাম।
গিয়ে দেখি শুয়ে আছে চোখ ২ টা লাল হয়ে ফুলে আছে।
মনে হয় অনেক কান্না করছে।
আমি কি বলবো বুঝতেছি না

তারপর আস্তে করে সরি বললাম।
কিন্তু হিয়া কোন কথা বললো না।
আমিঃ কি হয়েছে একনো খান নাই কেন?
হিয়া ……
আমিঃ কি হল আমি আপনাকে বলছি কথা বলছেন না কেন?
হিয়াঃ আপনি জেনে কি করবেন।

আমিঃ জানার দরকার আছে তাই জানতে চাইছি?
হিয়াঃ কি দরকার আছে জানার?
আমিঃ যে আমাকে এতো ভালোবাসে সে রাগ করে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে থাকবে। আমি তো সেটা দেখে চুপ করে থাকতে পারি না
হিয়াঃ কে আপনাকে ভালোবাসে?

আমিঃ হিয়া নামের এক সুন্দরী মেয়ে।
হিয়াঃ ভালো তো তার কাছে যান আমার এখানে কেন আসছেন?
আমিঃ সেই মেয়ে টা যে তুমি।

হিয়াঃ আমি সুন্দরী না ওকে আমি পৃথিবীর সব থেকে পচা চেহারার মানুষ
আমিঃ না এই কথা মিথ্যা তুমি অনেক সুন্দরী বুঝলে।

হিয়াঃ ভালো এখন এখান থেকে যান। আপনি আপনার সাথে কথা বলার কোন ইচ্ছে আমার নাই ওকে।
আমিঃ ওকে যাবো তুমি ও যাবে।

হিয়াঃ কেন আমি যাবো কেন?
আমিঃ গিয়ে খাবার খাবে।
হিয়াঃ না আমি খাবো না তাতে আপনার কি আপনি তো চান আমি কস্ট পাই।
আমিঃ আমি কি কখনো বলছি আমি চাই তুমি কস্ট পাও?

হিয়াঃ মুখে সব কথা বলতে হয় না কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।
আর যদি আপনি আমাকে কস্ট দিতে না চাইতেন তাহলে সকাল বেলা ওই রকম ভাবে অপমান করতেন না।
আমিঃ আসলে তুমি আমাকে ভাইয়ার সামনে যেভাবে ছোট করেছিলে তার জন্য আমার খুব কস্ট হয়েছিলো। আর ভাইয়া আমাকে বিনা কারণে ভুল বুঝলো এটা আমি মেনে নিতে পারি নাই। এজন্য এমন ব্যববার করেছি।

হিয়াঃ হুম ভালো করেছেন আপনি তো এটাই চাইতেন আমি কস্ট পাই এখন পাইছি আপনি এখন শান্তি পাইছেন।
আমিঃ সরি সরি
হিয়াঃ সরি বলে কাজ হবে না।
আমিঃ তাহলে কি বলতে হবে।

হিয়াঃ I love You বলতে হবে যদি পারেন তাহলে রাগ ভাংবে তাছাড়া না।
আমিঃ না বলবো না।
হিয়াঃ না বললে কিন্তু আরো অনেক রাগ করবো। আর তখন রাগ ভাংঙানোর ডিমান্ড ও বেড়ে যাবে কিন্ত।
আমিঃ মানে?

হিয়াঃ এখন তুমি I love you না বললে আমি সুইসাইড করবো। আর সুইসাইড নোট এ তোমাকে দায়ী করে যাবো। আমার আত্মহত্যার জন্য।
আমিঃ কি বলেন এই সব আমাকে দায়ী করবেন মানে আমি কি করছি।
হিয়াঃ অনেক কিছু করেছো বাঁচতে চাইলে আমি যা বলবো তাই শুনতে হবে।
আমিঃ সুইসাইড নোট এ কি লিখে যাবেন আমার নামে?

হিয়াঃ লিখবো আপনি আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের আশা দিয়ে আমার শরীর কে আপনি ব্যবহার করেছেন। তারপর যখন আমি আপনাকে বিয়ের কথা বলতে বলি তখন আপনি আমাকে ইগনোর করতে থাকেন। এবং বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করতে থাকেন।
তাই আমি অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম?
কথা গুলা শুনে রিতি মতো আমার হাত পা কাপা শুরু হয়ে গেছে। আমি কাপা গলাই বললাম তুমি এতো মিথ্যা কথা বলো কেমনে? তোমার উপড় তো আল্লাই ঠাডা ফালাইবো।

হিয়াঃ পরুক ঠাডা তবুও তোমাকে আমার চাই।
আমিঃ না আমি তোমার হমু না যদি বিয়ের পর তোমার উপড় ঠাডা পরে তুমি মরে যাও তখন আমার কি হবে?
হিয়াঃ তাহলে আরেক টা বিয়ে করে নিও।
আমিঃ ভালো এখন চলেন খাবার খাইবেন।
হিয়াঃ না আগে আমাকে প্রপোজ করো, তারপর…

আমিঃ কেন ভালোবাসা কি প্রপোজ ছাড়া প্রকাশ হয় না।
হিয়াঃ জানি না আমি তোমার মুখে শুনতে চাই তুমি আমাকে ভালোবাসো।
আমিঃ ভালোবাসি।
হিয়াঃ এইভাবে না ভালো করে বল।


পর্ব ১১

আমিঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি আমার বউ হবে নাকি।
হিয়াঃ না হব না।
আমিঃ কেন হবে না কেন?

হিয়াঃ নিজের চেহারা আয়নাতে দেখছো দেখতে বন বিড়াল এর মতো দেখতে। আর বিয়ে করতে চাই আমার মতো সুন্দরী কে। হি হি হি।
আমিঃ ঠিক আছে আমি যখন বন বিড়াল এর মতো দেখতে আমার সাথে তোমার কথা বলতে হবে না যাও।
ভাইয়াঃ ঠিক কথা বলছো হিয়া তুমি ও দেখতে একদমী বন বিড়াল এর মতো দেখতে।

হাই আল্লাহ ভাইয়া ভাবি এখানে কি করে। খাইছে সব কথা তো শুনে ফেলে নাই?
আমিঃ তোমরা এখানে।
ভাইয়াঃ কেন ভাই ডিসর্টাব করলাক নাকি?
আমিঃ ডিসর্টাব করলে মানে?

ভাইয়াঃ না আমার ছোট ভাই আমার একটি মাএ শালীর সাথে প্রেম করতেছে। আর আমি তার মাজ খানে ডুকে পড়লাম।
আমিঃ কি বল কে প্রেম করতেছে।
ভাইয়াঃ হাই হাই হিয়া তুমি এইডা কার সাথে প্রেম কর যে তার পরিবার সামনে সরাসরি না করে তোমাদের সম্পর্কের কথা।
হিয়াঃ হুম ভাইয়া আপনার ভাই একটা ভিতুম ডিম।

ভাবিঃ তা এই রকম চুপি চুপি আর কত দিন চলবে হ্যা?
ভাইয়াঃ চুপি চুপি চলার দিন শেষ সবার সামনে প্রেম করবি।
ভাবিঃ দূর বোকা রাম এদের বিয়ে দিয়ে দাও তারপর যা ইচ্ছে করুক।
বিয়ের কথা শুনে বুকের মাজে কেমন জানি করে ঊঠলো।

ভাইয়াঃ ভালোই বলছো তাড়াতাড়ি এদের বিয়েটা দিয়ে দিতে হবে। আমি আজকেই আব্বুকে সব বলবো।
আমিঃ ভাইয়া প্লিজ আব্বুকে বলিস না তাহলে আমাকে মনে হয় আস্তো রাখবে না।
ভাইয়াঃ তুই চুপ একটু ও সাহস নাই বুকে তুই কিসের পুরুষ মানুষ।
আমিঃ ওকে তোমাদের যা ইচ্ছে কর।
ভাবিঃ আহারে বেচারা একদম অসহায় হয়ে গেছে।

আমিঃ দূর ভাবি তুমি যে হয়ছো না মহাপাজি।
বলেই ওইখান থেকে চলে আসলাম জানি এখান থেকে না গেলে অনেক কথা বলবে শয়তান ভাবি।
বিয়ের কিথা শুনে কেমন জানি আনন্দ লাগতেছে।

আনন্দ হচ্ছে আবার একটু ভয় হচ্ছে ঐ কি জানি কি করবে বিয়ের পর ওই শয়াতান ডাই।
রাতে সুয়ে গেম খেলতেছিলাম এমন সময় আব্বুর জরুরি ডাক এলো। তাই তাড়তাড়ি চলে গেলাম।
আমিঃ কি আব্বু ডাকছিলে?

আব্বুঃ হ্যা এই সব আমি কি শুনছি। (কথা একটা রাগি ভাবে বললো)
আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম আমি আবার কি করলাম আর কি বা শুনলো। সবার মুখের দিখে তাকিয়ে আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম কারণ কারো মুখে কোন হাসি নাই। সবার মুখ গূমড়া করে বসে আছে।

আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কি শুনছো?
আব্বুঃ তুমি নাকি হিয়াকে ভালোবাসো আর বিয়ে করতে চাও।
আমিঃ না আব্বা আমি সত্যি বলছি ভালোবাসি কিন্ত আমি বিয়ের কথা কখনো বলি নাই আপনের কসম।
সবাই আমার কথা শুনে মনে হয় অবাক হল।

আব্বুঃ তার মানে তুমি হিয়াকে বিয়ে করবে না, তাই না।
আমিঃ হ্যা আব্বু বিয়ে করবো না।
আব্বুঃ ছি ছি তুই কি আমার ছেলে নাকি অন্য কারো বুঝতেছি না।

আমিঃ আব্বা আপনে এই গুলা কি বলেন আমি আপনার ছেলে না তো কার ছেলে।
আব্বুঃ হ্যা আমার ছেলে হলে তো এই কথা বলতি না যে তুই যাকে ভালোবাসিস তাকে বিয়ে করার ইচ্ছে নাই।
কথা টা শুনে লজ্জাই আমি আর কথা বলতে পারছিলাম না।
হিয়ার দিকে একটু আড় চোখে তাকালাম দেখি সে অজগর সাপের মতো রাগে ফুঁসতেছে।
আম্মু – ঠিক তাই আমারো তাই মনে হচ্ছে।

মনে মনে নিজেকে ইচ্চে মতো গালি দিতে লাগলাম এতো ভয় কিসের আমার।
আমিঃ না মানে আসলে।
আব্বুঃ চুপ কিসের মানে মানে।
আমিঃ আব্বু আমি হিয়াকে বিয়ে করতে চাই।

আব্বুঃ না হবে জোর করে বিয়ে দিয়ে আমি এই মেয়ের জীবন টা নস্ট করতে চাই না।
আমিঃ না আব্বু আমি হিয়াকে অনেক ভালোবাসি আর বিয়ে করে সুখে রাখতে চাই।
আব্বুঃ আমি কিছু জানি না যদি হিয়া রাজি থাকে। তাহলে বিয়ে হবে না হলে নাই। আমি গেলাম।
বলেই সবাই চলে গেল আমকে অসহায় এর মত রেখে চলে গেল।

হিয়া আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে। মনে হয় আজকে আমাকে একদম খেয়ে ফেলবে।
হিয়াঃ রুমে আসো কথা আছে।
আমিঃ রুমে কেন এখানে বল।

আমি জানি রুমে গেলে কি হবে আমার বারোটা বাজবে।
হিয়াঃ রুমে আসতে বলছি ভালোই ভালোই আসো না হলে পরে পরে ফল টা ভালো হবে না।
বলেই হিয়া রুমের চলে গেল
আমি ও ভয়ে ভয়ে রুমের দিকে গেলাম।


পর্ব ১২

আমি ভয়ে ভয়ে রুমে গেলাম।
দেখি হিয়ার হাতে একটা বড় লাঠি। আর হিয়ার এতো রেগে আছে যে ওর দিকে তাকাতেই ভয়ে আমার হাত পা কাপতেছে।
হিয়াঃ কি বাবু আমারে বিয়া করবানা, তাই না।
আমিঃ।
হিয়াঃ ওই তোরে কিছু জিজ্ঞাসা করেছি না উত্তর কই।

আমিঃ হ্যা করবো কে বলছে বিয়া করমু না তোমারে তো আমার আদরের বউ বানামু।
হিয়াঃ ওই একদমি নেকামি করবি না আর তোর এই মিস্টি মিস্টি কথাই আমার মন গলাইতে পারবি না।
আমিঃ ওই আমার সাথে ভালোভাবে কথা বল আমি কিন্তু তোমার হবু স্বামী তুই তুই করে কথা বলছো কেন?
হিয়াঃ এতোক্ষন তো তুই তুই করে কথা বলছি এখন তো তোরে পিডামু।
আমিঃ পিডাইবা মানে কি আমি কি বইসা বইসা ললিপপ খামু নাকি।

হিয়াঃ কিহহ তুই ও আমারে মারবি?
আমিঃ তুমি মারলে আমি মারতে পারবো না কেন?
হিয়াঃ তুই ভুল করেছিস তার শাস্থি আমি কি কোন ভুল করেছি নাকি হুম।
আমিঃ কেন তুমি জানো না স্বামীকে মারতে হয় না?

হিয়াঃ ওই স্বামী করবি না এখনো বিয়ে হয়নি কিন্তু….
আমিঃ ওও তাই তো বিয়ে তো হয়নি তুমি তো এখন আমার কেউ না। এখন আমি ও তোমার কোন কথা শুনবো না হা হা হা।
হিয়াঃ কিহহহহ।
বলেই লাঠি দিয়ে আমার মাথায় দিলো বাড়ি। আর দ্বিতীয় বারের মতো ডায়নি টা আমার মাথা ফাটিয়ে দিলো।
বাড়ি দেয়ার সাথে মাথা ফেটে রক্ত বের হতে লাগলো।

আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম। রক্তে আমার হাত ভরে গেল।
হিয়া এই অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেল মনে হয় ভাবতেও পারে এই রখম হবে।
হিয়াঃ রক্ত দেখে চিংকার দিলো হিয়ার চিংকার শুনে সবাই এই রুমে এসে তো সবাই পুরাই অবাক আমার এই অবস্থা দেখে।
তারপর আমাকে ধরে হসপিটালে নিয়ে গেল।
তারপর আমাকে ব্যান্ডেজ করা হলো।

সবাই ঘঠনা শুনে হিয়া কে অনেক বকাঝকা করেছে যার জন্য হিয়ার মন টা একদমি খারাপ।
তারপর বাসায় চলে আসলাম আমাকে রুমে রেখে সবাই চলে গেল।
একটুপর হিয়া রুমে আসলো।
হিয়াঃ সরি আমিনা আসলে বুঝতে পারি নাই এমন হবে আমি তো হালকা ভাবে বাড়ি দিতেচাইছিলাম কিন্তু জানি না কেমনে কি হয়ে গেল। আসলে জানো আমি না আমার রাগ কন্ট্রোল করতে পারি না যার কারণে আমার রাগ উঠলে আমার মাথা কাজ করে না।

এক নিঃশ্বাস এ কথা গুলা বললো,

আমি আর কিছু বলললাম না।

হিয়াঃ কি হলো কোন কথা বলছো না যে।
আমিঃ কি বলবো?
হিয়াঃ কিছুই বলার নাই।
আমিঃ তেমন কিছু বলার নাই তো।

হিয়াঃ ওও তারমানে সবার মতো তুমি আমার উপর রাগ করে আছো।
আমিঃ আমি বলছি নাকি আমি রাগ করে আছি, ?
হিয়াঃ সব কথা তো আর মুখে বলতে হয় কিছু কিছু কথা আছে যা মুখ দেখেই বুঝে নিতে হয়।
আমিঃ তা আমার মুখ দেখে কি বুঝলে?
হিয়াঃ বুঝেছি অনেক কিছু।

আমি, – কি কি একটু শুনি।
হিয়াঃ শুনা লাগবো না।
আমিঃ কেন?
হিয়াঃ আমি বলছি তাই।
আমি- না শুনতে চাই আমি।
হিয়াঃ না আমি বলবো না।

আমিঃ না বলতে হবে?
হিয়াঃ কচু মনে হয়তেছে। তুমি থাকো তোমার সাথে আজাইরা বকবক করার টাইম নাই আমার।
বলেই চলে যায়তেছিলো।
আমি ওর হাত টা ধরে একটা টান মারলাম একদম আমার উপর এসে পরলো।

আমিঃ হিয়া কে জরাই ধরে বললাম কই যাবো হুম। একদমিত যায়তে দিমু না।
হিয়াঃ ওই ছাড়ো প্লিজ কেউ দেখে ফেলবে কিন্তু।
আমিঃ দেখুক।

হিয়াঃ ছাড়ো বলছি বিয়ের পর সব সময় এইভাবে ধরে রাইখো।
আমিঃ কেন ধরে রাখলে সমস্যা কি?
হিয়াঃ এখন আমি তোমার বউ না তাই?
আমিঃ বউ না তাতে কি হবু বউ তো তাই না

হিয়াঃ কচু এখন হবু বলছে বাপের সামনে গিয়ে তো বোবা হয়ে যাও।
তখন তো বলতে পারো না আমাকে বিয়ে করার কথা।

আমিঃ কি করবো আমি বল? সেই ছোট বেলা থেকেই বাবাকে খুব বেশি ভয় পাই আমি।
হিয়াঃ ঠিক আছে ভীতুর ডিম তোমার বিয়া করা লাগবো না। সারা জীবন একাই থাকবে বউ লাগবে না।
এখন আমাকে ছাড়ো কেউ দেখলে কিন্তু খারাপ ভাব্বে।
আমিঃ যা ইচ্ছে ভাবুক আমার কিছু যায় আসে না।

হিয়াঃ আব্বু আসতেছে ছাড়ো।
আমি ভয় পেয়ে ছেড়ে দিলাম কিন্তু কেউ নাই।
হিয়া আমাকে এই ভাবে বোকা বানিয়ে খিল খিল করে হাসতে লাগলো ঠিক যেনো একটা পরি হাসতেছে।
হিয়ার হাসি দেখে আমার মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি এসে গেলো। আমি হিয়াকে বললাম,
আমিঃ হিয়া তোমার পিছনে আরশোলা।
হিয়াঃ কই?

আমিঃ ওই তো তোমার কাপড়ে।
ভয় পেয়ে চিংকার। আমার কাছে এসে আমাকে জরিয়ে ধরে আমার বুকে মুখ লুকিয়ে ফেললো।
আমিঃ হা হা হা আমাকে বোকা বানাইছো। আমি তোমাকে আমার থেকে বড় বোকা বনালাম।
হিয়াঃ কিহহহ আমাকে ছাড়ো আমার তোমার আর কোন কথা নাই।

আমিঃ এখন আর ছাড়বো না।
বলেই হিয়ার কপালে একটা চুমু দিলাম।
হিয়াঃ এটা কি হলো।
আমিঃ কিহ হল।
হিয়াঃ তুমি কিস করলে কেন?

আমিঃ ইচ্ছে হয়ছে, তাই।
হিয়াঃ আমার ইচ্ছে করছে নাক ফাটাইতে। হি হি হি।
আমিঃ কেন?
হিয়াঃ আমাকে কেন এইভাবে ভয় দেখালে।

আমিঃ কেন তখন আমাকে বোকা বানিয়ে তো খুব হাসতেছিলে তাই আমি ও তোমাকে একটু বোকা বানালাম।
হিয়াঃ ওই ছাড়ো আব্বু আসতেছে ছাড়ো।
আমিঃ এবার আর কাজ হবে না এবার ছাড়বো না।

হিয়াঃ আরে সত্যি সত্যি আসতেছে।
আমিঃ আসলে আসুক।
বলতে বলতে আব্বু রুমে এসে হাজির।

আমি তো আব্বুকে দেখেই কি বলবো বুঝতাছি না হিয়া আমার হাত থেকে ছুটেই দিলো একটা দৌড়।
আমি লজ্জাই আর কোন কথাই বলতে পারছি না।
আব্বুঃ কাল তোমার বিয়ে প্রস্তুত থেকো।

আমিঃ কালকে বিয়ে এতো আগে কেন বিয়ে করবো?
আব্বুঃ বেশি ডং দেখাবি লাঠি দিয়া পিটাইয়া সব ডং ছাড়ামু।
আমি ভয় পেয়ে গেলাম আব্বুর এমন কথা শুনে।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক তুমি যা ভালো বুঝো তাই কর।
তারপর আব্বু চলে গেল।
কালকে আমার বিয়ে ভাবতেই কি মজা।

জানি কেমনে জানি বিয়ের টাইম চলে আসলো আর বিয়ে টা সম্পন্ন হয়ে গেল।
১১ টার দিকে বন্ধুরা আর ভাবি মিলে বাসর ঘরে ডুকিয়ে দিলো।
আমার বুকটক ধকবক করতে লাগলো।
আজকে কেন এমন লাগতেছে বুঝতেছি না।

ভিতরে ডুকে দেখি বজ্জাত টা ঘুমাইতেছে।
আমি কিছু না বলে ফ্রেশ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি এখনো ঘুমাইতেছে চুল গুলা সব মুখের উপর এসে পড়ছে।
আর মুখ টা অনেক মায়াবি লাগতেছে। আমি গিয়ে হিয়ার পাশে বসলাম তারপর হিয়ার মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম চুল সরিয়ে দিলাম।
খুব ইচ্ছে করছিলো একটা চুমু খাওয়ার তাই চুমু খাওয়ার জন্য মুখটা যখনি হিয়ার কপাল এর দিকে নিলাম ওমনি হিয়া জেগে ঊঠলো।
আমিঃ সরে গেলাম।

হিয়াঃ এই তুমি এই রাতে আমার রুমে কি করো।
আমিঃ এ্যা কি মাথা ঠিক আছে।
হিয়াঃ কেন কি হয়েছে?
আমিঃ আমি এখন তুমার বর আর তুমি আমার বউ ওকে তাই এখন থেকে এক রুমেই থাকবে।
হিয়া আমার কথা শুনে উঠে বসলো।

হিয়াঃ ওও সরি আসলে ঘুমিয়ে গেছিলাম তো তাই সব ভুলে গেছিলাম। তুমি রুমে আসলে কখন। আর আমি বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নাই সরি।
আমিঃ জীবনের প্রথম কোন এমন বউ দেখলাম যে নাকি বাসর রাতে স্বামী আসার আগেই ঘুমিয়ে গেছে।
হিয়াঃ সরি বললাম তো ভুল হয়ে গেছে।
আমিঃ ওকে যাও অজু করে আসো নামাজ পড়বে।
হিয়াঃ শীত করে জামু না।
আমিঃ চুপ যা বলছি তাই কর।

হিয়া অজু করে আসলো ২ জনে একসাথে নামাজ পড়লাম নামাজ শেষ ঘুমাতে বিছানায় যাবো এমন সময় হিয়া বললো ওই তোমার সাথে ঘুমাবো নাকি।
আমিঃ তাহলে কোথায় ঘুমাবা?

হিয়াঃ এ্যা আমার শরীর এর সাথে কারো স্পর্শ হলে আমি ঘুমাতে পারি না কি হবে তাহলে।
আমিঃ কি জানি আমি কি জানি আর আমি তো সারা রাত তোমাকে জরিয়ে ধরে থাকবো।
বলেই শুয়ে পড়লাম।

হিয়াঃ ঘুমাও সমস্যা নাই কিন্তু মাজ খানে এই যে কোল বালিশ দিলাম এটা সরাবে না তাহলে কিন্তু আমার ঘুম হবে নাই।
আমি সাথে সাথে কোল বালিশ টা সরিয়ে হিয়াকে জরিয়ে ধরে আমার বুকে নিয়ে নিলাম।
আমিঃ এইভাবে সারা রাত ঘুমাবো।

হিয়াঃ আমি পারবো না প্লিজ আমাকে ছাড়ো।
আমিঃ কিহহ ছাড়ার জন্য বুঝি বিয়ে করেছি।
হিয়াঃ জানি না। ওকে তুমি জরাই ধরে থাকো আমি দেখি ঘুম আসে নাকি।
আমিঃ ঘুমাইলে আমার বাকি পাওনা কে মিটাবে হুম।
হিয়াঃ কি পাওনা।

আমিঃ হিয়ার ঠোটে ঠোট মিলে বললাম এই টা।
হিয়াঃ যা দুষ্টু আর কিছু আছে পাওনা।
আমিঃ হুম আছে কিন্তু আগে পাঠক/ পাঠিকাদের তাড়াই তারপর বলি।
এই আপনারা অনেক গল্প পড়ছেন এখন যান আমাদের শান্তিতে বাসর টা করতে দেন।

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “ভাবির জমজ বোন – হারানো ভালোবাসার গল্প” টি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ুন – দৃষ্টির অগোচরে – বউয়ের পরকীয়া প্রেম

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *