কমিশনারের মেয়ের সাথে প্রেম – প্রেমের উপন্যাস: একশন আর থ্রিলিং প্রেম সিনেমায় ভালো মানায় তবে বাস্তবেও এরকম প্রেম অহরহ পাওয়া যায়। হয়তো শেষ পরিণতি ভালো হয় না, তবুও প্রেম মানে না কোন বাঁধা। ভালোবাসার টানে ভুলে যায় সব ভয়। চলুন এরকম একটি মজার প্রেমের গল্প পড়ি।
পর্ব ১
- ওই চোখে দেখিস না। নাকি চোখ বাসায় খুলে রেখেছিস!
- সরি আসলে আমি দেখনি।
- দেখিস নি নাকি। দেখও না দেখার ভান করছিস।
- সত্যি আপু। আমি দেখিনি।
- চুপ তোর মতো ছেলেকে আমার ভালো করে চেনা আছে ফাজিল কোথাকার।
- ওই চুপ থাপ্পরাইয়া সব দাত ফেলে দিবো। তোকে বলছি না আমি দেখে শুনে ধাক্কা দেয়নি।
- কি আবার মুখে মুখে তর্ক করিস। আজ তোর বারোটা বাজাবো।
- বারোটা পর্যন্ত দারিয়ে থাকার কোনো ইচ্ছা আমার নাই। দেখি সাইড হ আমাকে কলেজে যেতে হবে।
- তোরে আমি দেখে নিম হুম।
- পরে দেখবি কি রে। এখনি একটা ছবি তুলে নে।
বলে চলে আসলাম। দূর মুড টাই নষ্ট করে দিলো হারামজাদি গুন্ডি মেয়ে। এখন পরিচয়টা দেওয়া যাক। আমি আপনাদের কমেডিয়ান রাইটার হুমম আবির। বাবা মার বান্দরের থুক্কু আদরের বড়ো ছেলে। আজকে আমার কলেজের প্রথম দিন। শবে মাএ বাসা থেকে বের হয়ছি আর তখনি গুন্ডি মেয়েটার সাথে ধাক্কা খেলাম। তারপর কি হলো সেটা তো দেখলেন।
গুন্ডি হলে কি হবে চেহারাটা পরীর মতো সুন্দর। যাই হোক আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে কলেজে চলে এসেছি।
দেখতে দেখতে কয়েকটা ক্লাস করলাম। আর বেশ কয়েক জনের সাথে বন্ধুত্ব হলো। যাদের সাথে পরিচয় হলো তারা হচ্ছে আলি রাকিব, পলাশ আর রাফাত। তো আমরা কয়েক জন মিলে ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনে বসে আছি।
হঠাৎ একটা পিচ্চি এসে বললো।
পিচ্চিঃ ভাইয়া মাইশা আপু আপনাকে ডাকছে।
আমিঃ কোন মাইশা আপু।
পিচ্চিঃ আমার সাথে চলেন।
আমিঃ হুম চলো।
আরে এটাতো সকালের সেই গুন্ডি মেয়েটা। তার মানে এর নাম ই মাইশা।
মাইশাঃ ওই এদিকে আয়।
ব্যবহার দেখে মনে হলো এক থাপ্পর মাইশা ৩২ টা দাত ফালাইয়া দিই। কিন্তু কলেজে নতুন দেখে কিছু বললাম না।
মাইশাঃ ওই কথা কানে যাচ্ছে না।
আমিঃ আপু আপনি আমার সাথে এমন ব্যাবহার করছেন কেনো?
মাইশাঃ ওই তোর সাথে কি ভাবে কথা বলতে হবে হু।
আমিঃ কেনো ডেকেছেন বলুন।
মাইশাঃ তোর সাথে প্রেম করবো দেখে ডাকছি। কি প্রেম করবি!
বলেই মাইশা আর ওর বান্ধবিরা সবাই একসাথে হেসে উঠলো। মনটা কয় সব গুলারে লাটি মাইশা পিডাইয়া তক্তা বানাইয়া দিই। কিন্তু কিছু না বলে চলে আসলাম বন্ধুদের কাছে।
আমিঃ দোস্ত মালটা কেডা।
রাকিব হাসানঃ ও হচ্ছে পুলিশ কমিশনার রফিকুল সাহেবের মেয়ে। ওকে দেখলে সবাই ভয় করে। ওকে কেউ ডিস্টার্ব করলে ওর বাবাকে বলে দেয়। আর ওর বাবা এসে ছেলেটাকে তুলে নিয়ে যায়।
আমিঃ ও এই ব্যাপার কমিশনারের মেয়ে গুন্ডি কমিশনার।
রাফাতঃ হুম, কিন্তু কেনো।
আমিঃ কিছুনা চল বাসায় যাই।
পলাশঃ হুম চল।
তারপর বাসায় আসলাম খাওয়া দাওয়া করে একটা ঘুম দিলাম। রাতে ঘুম থেকে উঠে আবার খেয়ে আবার ঘমিয়ে পরলাম। কাজ নেই বেকার আপনাদের কমেডিয়ান রাইটার ভাই তাই খায় আর ঘুমায় আর বাপের কাছে মার খায়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে কলেজে গেলাম। যেই মাএ কলেজের গেটে পা দিছি তখনি।
মাইশাঃ ওই হারামির এদিকে আয়।
আপনারাই কন আমার নাম আবির আমারে ডাকতিছে হারামি করে। মনডা কি কয় মনে হচ্ছে সব গুলারে ধরে আছাড় দিই।
আমিঃ কি হয়ছে বলুন। আর আমার নাম হারামি না আমার নাম আবির।
মাইশাঃ তোর নাম দিয়ে আমি কি করমু। আর শোন এখন থেকে কলেজে ঢুকতে গেলে আমাদের সালাম দিয়ে কলেজে ঢুকবি। আর তোর টাকা দিয়ে আমাদের ফুসকা খাওয়াবি।
কথাটা বলার সাথে সাথে ঠাসসসস।
আপনারা আবার কি ভাবছেন আমাকে মারলো। না আমি ই মারলাম সকাল সকাল মেজাজটা গরম করে দিলো।
প্রিন্সিপাল স্যারঃ বাবা তুমি মনে হয় কলেজে নতুন। তুমি তারাতারি চলে যাও নাহলে তোমার সমস্যা হবে।
আমিঃ আমার কিছু হবেনা স্যার। আপনি কোনো চিন্তা কইরেন না।
স্যারের সাথে কথা বলতে বলতে আমি খেয়াল ই করিনি। এতক্ষনে কলেজের সব স্টুডেন্টররা এখানে চলে এসেছে আর আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে। নিজেকে এই মূহুর্তে মঙ্গল গ্রহের প্রাণী বলে মনে হচ্ছে আর এদিকে মাইশা তার বাবাকে ফোন দিয়ে আসতে বলছে।
কিছুক্ষন পর মাইশার বাবা আসলো তারপর আমাকে…
পার্ট- ২
স্যারের সাথে কথা বলতে বলতে আমি খেয়াল ই করিনি। এতক্ষনে কলেজের সব স্টুডেন্টররা এখানে চলে এসেছে। আর আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে। নিজেকে এই মূহুর্তে মঙ্গল গ্রহের প্রাণী বলে মনে হচ্ছে। আর এদিকে মালিহা তার বাবাকে ফোন দিয়ে আসতে বলছে।
কিছুক্ষন পর মাইশার বাবা আসলো তারপর আমাকে বললো….
মাইশার বাবাঃ ওই তোর সাহস কিভাবে হয় আমার মেয়ের গায়ে হাত তোলা।
বলেই আমাকে একটা থাপ্পর মারলো।
আমিঃ দেখুন স্যার আপনার ভুল হচ্ছে। দোষটা আমার না আপনার মেয়ের।
মাইশার বাবাঃ কি তুই আমার সাথে তর্ক করছিস। তোকে আজ আমি মেরেই ফেলবো।
বলেই লাঠি নিয়ে আমার দিকে এগোতে লাগলো হঠাৎ প্রিন্সিপাল স্যার বললো।
প্রিন্সিপাল স্যারঃ ছেলেটা খুব ভালো এবারের মতো ওকে মাফ করে দিন।
মাইশার বাবাঃ ঠিক আছে আপনার কথায় ওকে ছেড়ে দিলাম। এর পর ওকে যেনো আমার মেয়ের আশেপাশে না দেখি।
বলে মাইশাকে নিয়ে চলে গেলো। আমিও কলেজ থেকে বাহিরে একটা দোকানে এসে বসলাম। তারপর একটা বেনসন সিগারেট লাগলাম। সিগারেট টানছি আর ভাবছি কিভাবে এর প্রতিশোধ নেয়া যায়।
কলেজ থেকে বাসায় আসলাম। ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম। তারপর বাহিরে গেলাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। জেনে রাখেন ভালো কলেজের ওই ঘটনার সময় আমার বন্ধুরাও ওখানে ছিলো।
আমিঃ দোস্ত আমি প্রতিশোধ নিতে চাই।
রাকিব হাসানঃ কিন্তু কিভাবে?
মাইশাকে আমার প্রেমের ফাদে ফেলে।
পলাশঃ হুম আইডিয়া টা খারাপ না।
রাফাতঃ কিন্তু মাইশা কি তোর প্রেমে পরবে।
আমিঃ আরে বোকা মিষ্টির ঘ্রাণ পেলে মৌমাছির অভাব হবে না।
রাকিব হাসানঃ মানে। বুঝলাম না।
আমিঃ বুঝতে হবে না চল।
রাফাতঃ হুম চল।
তারপর বাসায় এসে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পরলাম। সকালে ঘুম ভাংলো।
আম্মুর ডাকে, ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে কলেজে গেলাম।
কলেজে গিয়ে দেখি মাইশা ও তার বান্ধবিরা মাঠের মধ্যে বসে আড্ডা দিচ্ছে। আমি যেতেই মাইশা বলে উঠলো।
- এই ছেলে এদিকে আসো।
কি ব্যাপার! আজকে তুমি করে বলছে কেনো এতদিন তো তুই করে বলতো।
আমিঃ জ্বী বলুন।
মাইশাঃ কালকের ঘটনার জন্য ছরি। আসলে ভুলটা আমারি ছিলো।
আমি মনে মনে ভাবলাম কি ব্যাপার একদিনের মধ্যে এতো পাল্টে গেলো কিভাবে? আবার কোনো ফাদে ফেলবে না তো। আবার ভাবলাম সে যখন নিজের ভুল বুঝতে পারছে তখন মাফ করে দিই তাছাড়া মাইশাকে আমার প্রেমে ফেলার এটা একটা বড়ো সুযোগ। না এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবেনা। আপনারা কি বলেন শুধু তামাশা দেখেন কাজ তো নেই।
মাইশাঃ ওই কি হলো। কি ভাবছো?
আমিঃ না কিছুনা।
মাইশাঃ তারমানে আমাকে মাফ করবেনা।
আমিঃ করবো কিন্তু একটা শর্তে।
মাইশাঃ কি শর্ত।
আমিঃ We are friends now…
মাইশাঃ Yeap sure..
আমিঃ হুম।
মাইশাঃ চলো আজকে ক্লাস করবো না।
আমিঃ কেনো।
মাইশাঃ আজকে আমরা পার্কে ঘুরতে যাবো।
আমিঃ কিন্তু………আমাকে থামিয়ে দিয়ে
মাইশাঃ কোন কিন্তু না চলো।
আমিঃ হুম চলো।
তারপর আমরা দুজন একসাথে পার্কে গেলাম। মেয়েটাকে যতই দেখছি ততই প্রেমে পরতে ইচ্ছা হচ্ছে। গুন্ডির আড়ালে ও একটা মায়াবি চেহারা আছে সেটা এখন দেখলাম। অপরূপ সৌন্দর্য Crushed থুক্কু ভুলে বলে ফেলেছি বলবেন না কেউ কে।
মাইশাঃ আমার না ফুসকা খুব fvrt
আমিঃ তো!
মাইশাঃ আমি খাবো।
আমিঃ ও no prblm চল {সালি আমার টাকা খাইতে এসেছিস। এমনি এতিম মানুষ… আপনারাই ভালো জানেন}
দুজনে খুব ইনজয় করলাম। একসাথে হাত ধরে হাটা। ফুসকা খাওয়া আরো অনেক কিছু। এক কিছুর মাঝে আমি ভুলেই গেছি আমার প্রতিশোধ নেওয়ার কথা। দেখতে দেখতে সন্ধা হয়ে গেলো।
হঠাৎ খেয়াল করলাম কয়েকটা ছেলে কিছক্ষন ধরে আমাদের কে ফলো করছে। কিন্তু তার চেয়েও বেশী অবাক হলাম যখন মাইশা আমাকে বললো…..
পার্ট- ৩
হঠাৎ খেয়াল করলাম কয়েকটা ছেলে কিছক্ষন ধরে আমাদের কে ফলো করছে। কিন্তু তার চেয়েও বেশী অবাক হলাম যখন মাইশা আমাকে বললো…..
মাইশাঃ তুই কি ভেবেছিস তোর মতো একটা ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করবো আমি, হা হা হা।
আমিঃ তারমানে এই ছেলেগুলো তোমার ভাড়া করা গুন্ডা।
মাইশাঃ হুম, যেদিন তুই আমাকে থাপ্পর মেরেছিলি। সেদিন ই আমি মনে মনে ঠিক করেছিলাম। এটার প্রতিশোধ আমি নিবোই। কিন্তু আমি ভাবতেও পারিনি আমার প্রতিশোধ টা। আমি এতো তারাতারি নিতে পারবো।
মাইশার সাথে কথা বলতে বলতে আমি যে মেসেজ এ আমার বন্ধুদেরকে আসতে বলছি। সেটা মাইশা লক্ষও করেনি। আমি শুধু কমেডি গল্প লেখি বলে আমায় জোকার ভাবে। আমিও কম না আপনারাও আবার ভাবেন না।
মাইশার গুন্ডারা যখন আমাকে মারতে আসলো ঠিক তখনি আমার বন্ধুরা এসে হাজির। তারপর আর কি আপনারা তো জানেনই জোকার থুক্কু নায়ক কখনো মার খায়না। আমার বেলায়ও তার উল্টাটা হয়নি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার বন্ধুরা গুন্ডাগুলাকে মেরে তক্তা বানিয়ে দিছে।
তারপর আমি মাইশাকে বললাম।
আমিঃ দেখো মাইশা তোমার বাবা আমাকে যখন থাপ্পর মেরেছিলো। আমি ইচ্ছা করলে তখনি তার প্রতিশোধ নিতে পারতাম। কিন্তু আমি নেইনি কেনো জানো।
মাইশাঃ কেনো।
আমিঃ কারণ প্রথম যেদিন তোমার সাথে আমার ধাক্কা লেগেছিলো। সেদিনি আমি তোমার প্রেমে পরে গেছি। (আসলেই মাইশাকে আমি প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলছি দেখতে কিন্তু দূর বাকি টা নিজেরা বুজে নেন)
মাইশাঃ হা হা হা তোর মতো ছেলের সাথে প্রেম করবো আমি এটা তুই ভাবলি কি করে।
আমিঃ কেনো আমার সাথে প্রেম করতে তোমার প্রবলেমটা কোথায়? {আমি কমেডি জোকস থুক্কু গল্প লেখি বলে আমার সাথে কেউ প্রেম করতে চায় আমি জোকার নাকি}
মাইশাঃ তোমার ভালোবাসা আমি বুঝি। যেই শুনছো আমাদের অনেক টাকা পয়সা আছে। আর তখনি আমার সাথে প্রেম করার তোমার ইচ্ছা জাগলো তাইনা।
আমিঃ দেখো আমি তোমার টাকা পয়সা কিছুই চাইনা। আমি শুধু তোমাকে চাই। (মাইশার হাত ধরে)
মাইশাঃ ওকে আমার প্রেমে পরার একটা কারণ বলো। যার জন্য তুমি আমার প্রেমে পরছো।
আমিঃ আচ্ছা তোমার প্রেমে না পরার একটা কারণ বলো….
মাইশাঃ আমি তোমাকে ভালোবাসিনা। আর কোনো দিন বাসতেও পারবোনা।
আমিঃ তুমি আমাকে আজ হোক কাল হোক ভালো বাসবেই।
মাইশাঃ তুই আমার সাথে চ্যালেঞ্জ করছি কমেডিয়ান জোকার কোথাকার।
আমিঃ (এই নে বোঝা যা ভেবেছিলাম) চ্যালেঞ্জ না। আমার ভালোবাসার কনফিডেন্স থেকে বলছি।
মাইশাঃ তুই থাক তোর ভালোবাসা নিয়ে আমি গেলাম।
আমিঃ প্লীজ আমার কথা শুনে যাও।
আমার কথা না শুনেই মাইশা চলে গেলো। রাগ করে বাসায় আসলাম এসে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে উঠে নাস্তা করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গেলাম।
আমিঃ দোস্ত একটা উপায় দে না। কি ভাবে মাইশাকে প্রেমে ফেলা যায়।
রাকিব হাসানঃ প্রেমে ফেলার কথা কি বলছিস রে। তুই তো নিজেই মাইশার প্রেমেপরে গেছিস।
আমিঃ হুম দোস্ত।
পলাশঃ একটা কাজ কর। তুই একটা মেয়ের সাথে কয়েকদিন প্রেমের অভিনয় কর। আর এমন ভাবে অভিনয়টা করবি যাতে মাইশা তোকে দেখতে পায়।
রাফাতঃ হুম আইডিয়া টা খারাপ না।
আমিঃ হুম বাট মেয়ে পাবো কোথায়।
রাকিব হাসানঃ কেনো প্রিয়াকে বল, তাহলেই তো হয়।
প্রিয়া হলো আমার বন্ধু রাফাতের প্রেমিকা।
আমিঃ হুম তাও ঠিক।
পলাশঃ অনেক কথা হলো এখন বাসায় চল।
আমিঃ হুম চল।
তারপর বাসায় আসলাম। আর বাসায় আসতেই দেখি মামা আর মামি আমাদের বাসায়। আমাকে দেখেয় মামা বললো।
মামাঃ কেমন আছো বাবা।
মামা আর মামি আমাকে অনেক ভালোবাসে সে জন্য আমার নাম ধরে না ডেকে বাবা বলে ডাকে।
আমিঃ জ্বী মামা ভালো। আপনি ভালো আছেন।
মামাঃ হ্যা বাবা ভালো।
তারপর সবাই একসাথে খেতে বসলাম। হঠাৎ মামা বললো।
মামাঃ আগামী শুক্রবার বাবুর (আমার মামাতো ভাই) বিয়ে। তোমারা কিন্তু দুই দিন আগে থেকেই যাবে। বিশেষ করে জোকার ওহ ক্ষমা চাই মানে আবির। কারণ এই বিয়ের সকল দায়িত্ব আমি তোমার হাতে দিলাম।
আমিঃ জ্বী মামা, আমি যাবো। (আর ভালো লাগে না জোকার কথা টা। আমি কি আসলেই জোকার)
এভাবে দেখতে দেখতে কয়েক দিন কেটে গেলো। আর এই কয়েকদিন আমি কলেজেও যাইনি আর দুইদিন পর আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ে। ভাবলাম আজ কলেজে যাবো কারণ মালিহার সাথেও দেখা করতে মন চাচ্ছে।
বাসায় কাউকে কিছু না বলে সোজা কলেজে গেলাম কিন্তু মাইশাকে দেখলাম না। দূর মনটায় খারাপ করে দিলো। হঠাৎ দেখলাম মাইশার বান্ধবি দারিয়ে আছে। ভাবলাম, তার কাজ থেকে খোজ খবর নিয়ে দেখি মাইশা কোথায়।
আমিঃ এই যে শুনছেন…..
মাইশার বান্ধবিঃ জ্বী ভাইয়া আমাকে বলছেন।
আমিঃ হুম তোমাকেই বলছি। আসলে আমি মাইশার সাথে একটু দেখা করতে চাই কিন্তু ও আজ কলেজে আসেনি।
বান্ধবি- আসলে ভাইয়া মাইশা তো ওর চাচাতো বোনের বিয়েতে গেছে।
আমিঃ ওহ, ধন্যবাদ।
বলে চলে আসলাম দূর কিছুই ভালো লাগছে না মনটা বার বার শুধু মাইশার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে। কলেজ থেকে বাসায় আসলাম।
মাঃ তারাতারি রেডি হয়ে নে। আজকে তোর মামার বাড়ি যাবো।
আমিঃ মা কাল গেলে হয়না(আসলে মাইশার সাথে দেখা না করে মনটা যেতে চাচ্ছে না)
মাঃ না হয় না। আজকেই যেতে হবে তারাতারি রেডি হয়ে নে।
আমিঃ আচ্ছা।
তারপর রেডি হয়ে মামার বাসায় উদ্যেশে রওয়ানা দিলাম। মামার বাসা বেশী দূর হওয়ায় যেতে যেতে রাত হয়ে গেলো। বাসায় গিয়ে পৌছে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। আর একটা কাজ করতে লাগলাম Fb তে আর কি আপনাদের জোকারের হাসির জোকসের গল্প।
সকালে ঘুম ভাংলো পানির ডাকে। আপনারা আবার ভাবতিছেন পানির ডাক! এটা আবার কি! তাহলে শুনুন খুব আরামে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ কোন হালায় যেনো গায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে।
আমিঃ ওই কোন হালারপুতরে গায়ে পানি দিলো।
ঠাসসসস।
ওমাগো মারে ক্যা। মামাদের বাসায় তো আমাকে মারার মতো কেউ নেই তার মানে ভুত নাকি আবার আল্লাগো বাচাও।
আমিঃ ভু ভু ভুত(ভয় পাওয়ার কারনে মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না)
হঠাৎ আমার মুখ চেপে ধরে। ওই এতো চিল্লাস ক্যান।
আরে এটা তো ভুত না পেত্নী থুক্কু পরী।
আমিঃ বাচাও বাচা……..
ওই আবার চিল্লাস আরেকবার চিল্লালে তোর নাড়ি ভুড়ি সব টেনে বের করবো।
আল্লাগো সকাল সকাল কোন বিপদে পরলাম। ভালো করে চোখ মুছতে মুছতে যা দেখলাম তাতে আমার ব্যাহুশ হওয়ার মতো অবস্থা। আরে এটাতো মাইশা। না না এটা হতে পারে না। এটা মাইশার আত্মা হতে পারে। শালী মরলি মরলি আমায় ও মারতে আইসস। আবার চিল্লানি দিবো তখনি মাইশা বললো।
মাইশাঃ ওই কুত্তা তুই এখানে ক্যান।
আরে এটাতো মাইশাই কারন আত্মা তো কোনোদিন কলার ধরে না।
আমিঃ ওই ছেমরী তুই এখানে ক্যা।
মাইশাঃ এটা আমার বান্ধবির বাসা এখানে আমি আসবো নাতো তুই আসবি।
আরে মাইশার বান্ধবি যে বললো মাইশার চাচাতো বোনের বিয়ে। তারমানে ও আমাকে বোকা বানালো। ওরে ওই শালী তোরে আমি পাইলে হইয়া যামু বাহুবালি পরে মজজা দেখামু।
তার মানে মিরা ওর বান্ধবি। ও আপনাদের তো বলতে ভুলেই গেছি আমার মামাতো বোনের নাম মিরা।
হঠাৎ মিরা এসে বললো….
পার্ট- ৪
তার মানে মিরা ওর বান্ধবি। ও আপনাদের তো বলতে ভুলেই গেছি আমার মামাতো বোনের নাম মিরা।
হঠাৎ মিরা এসে বললো……
মিরাঃ কি ব্যাপার ভাইয়া। কি হচ্ছে এখানে।
মিরাের মুখে ভাইয়া ডাক শুনে মাইশা মনে হয় আকাশ থেকে পরলো।
মাইশাঃ ভাইয়া মানে, এই হারামজাদাটা তোর ভাইয়া।
আমিঃ ওই গুন্ডি মাইয়া আমাকে হারামজাদা বলবি না।
মাইশাঃ একশো বার বলবো তুই হারামজাদা কুত্তা শয়তান।
আমিঃ তুই হারামজাদি। কুত্তি পেত্নী।
মাইশাঃ তুই তুই তুই তোকে আমি মাইরা হালামু।
আমিঃ হি হি হি আমি তোর ঘার মটকামু।
আমাদের ঝগড়া দেখে মিরা ইতিমধ্যে ব্যাহুশ হওয়ার মতো অবস্থা। মিরা নিজেও জানেনা আমি আর মাইশা দুজন দুজনকে চিনি।
মিরাঃ মাইশা তুই ভাইয়াকে চিনিস।
মাইশাঃ চিনি মানে অনেক ভালো করে চিনি। আগে যদি জানতাম ওই হারামজাদাটা তোর ফুফাতো ভাই তাহলে আসতাম ই না।
আমিঃ মিরা, এই কুত্তি টা তোর বান্ধবি আমাকে আগে বলিস নি কেনো। আগে যদি জানতাম এই কুত্তি এখানে আসবে তাহলে আমি ও এখানে আসতাম না।
মাইশাঃ তোরে আমি…….
আমিঃ কি ভালোবাসবি! (মাইশাকে থামিয়ে দিয়ে)
মিরাঃ ওই তোরা কি শুরু করছিস এখানে। নাস্তা করবি চল।
মাইশাঃ তোরে আমি পরে দেখে নিমু…
আমিঃ আমি ও….
মাইশাঃ আমি ও কি…?
আমিঃ আমি ও তোকে পরে দেখে নিমু।
আাহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। তারমানে বিয়ে বাড়িটা মাইশার সাথে কাটানো যাবে। ইসস ভাবতেই মনের মধ্যে মূলি ড্যান্স মানে লুঙ্গি ড্যান্স দিচ্ছে।
তারপর সবাই মিলে নাস্তা করলাম। নাস্তা করতে করতে হঠাৎ মামা বললো।
মামাঃ আমাদের এখানে একটা সুন্দর পাহাড় আছে। তোমরা সবাই গিয়ে দেখে আসতে পারো।
আমিঃ মামা আমরা সবাই যাবো চলো।
মামাঃ না বাবা, বিয়ে বাড়ি অনেক কাজ আছে। তুমি একটা কাজ করো মিরা আর মাইশাকে নিয়ে যাও।
মামার কথা শুনে খুশির ঠেলায় খাবার টেবিলে লাফ দিয়ে উঠলাম। আমার লাফ দেওয়া দেখে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে বিশেষ করে মাইশা। মাইশা মনে হয় বুঝতে পারছে আমি তার জন্যই খুশিতে লাফ দিছি।
মামাঃ কি হলো বাবা।
আমিঃ না মামা কিছুনা। আসলে পায়ের কাছে বিড়াল ছিলো তো সে জন্য।
আমার কথা শুনে সবাই একসাথে হেসে উঠলো। ব্যাপারটা বুঝলাম না সবাই কেনো হাসলো। আপনারা বলতে পারলে বইলেন।
মামাঃ তাহলে তুমি মিরা আর মাইশা দুপুরে পাহাড় দেখতে যেও।
আমিঃ না মামা আমি এখনি যাবো। (বলেই মুখে হাত দিলাম। হায় হায় আমি এটা কি বললাম। আমি মামার মুখের উপর কোনোদিন কোনো কথা বলিনি)
আমিঃ সরি মামা, আসলে মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে।
মামাঃ it’s ok, let’s enjoy…….
আমিঃ Thanks মামা।
তারপর আমি মাইশা আর মিরা পাহাড় দেখার উদ্দশ্যে বেরিয়ে পরলাম।
অনেকক্ষন ধরে পাহাড়ে ঘুরছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার আর মাইশার মধ্যে কোনো কথা হয়নি।
মিরাঃ ভাইয়া চলো ঐ ঝর্ণার ঐ দিকটাই যাই।
আমিঃ হুম চল।
ঝর্ণার ঐ দিকে যেতেই মাইশা একটা খাদে পরে গেলো। কিন্তু একটা গাছের ডাল ধরে আাটকে আছে। অল্পের জন্য খাদে পরেনি বাট এখনো ঝুলে আছে।
মিরাঃ ভাইয়া এখন কি হবে। প্লীজ মাইশাকে তারাতারি তুলো। তাছাড়া পরে যাবে।
ভাবলাম এটাই মাইশাকে প্রেমে ফেলার দারুন সুযোগ। কিন্তু যে বড়ো খাদ একবার পরে গেলে নিশ্চিত মূত্য। কিন্তু মাইশা মরে গেলে আমার কি হবে! কারণ আমি তো মাইশাকে ছাড়া বাচবো না।
মাইশাঃ প্লীজ আমাকে তুলো।
আমিঃ লেন্গ্রি কোথাকার চোখ কোথায় থাকে
মাইশাঃ বাচাও!
আমিঃ তুলবো কিন্তু একটা শর্ত আছে।
মাইশাঃ একটা কেনো একশোটা শর্তো পূরন করবো। আগে আমাকে তুলো।
আমিঃ আমার একশোটা শর্ত পূরন করা লাগবে না। আমার একটাই শর্ত আমাকে ভালোবাসতে হবে।
মাইশাঃ ওকে আমি ভেবে দেখবো প্লীজ তুলো। (কান্না করতে করতে)
ভাবলাম মেয়েটা কষ্ট পাচ্ছে অতএব তুলি তারপর কি হবে ওটা পরে দেখা যাবে।
অনেকক্ষন চেষ্টার পরে মাইশাকে উপরে তুললাম। এমনি গায়ে জোর নাই উপরে তোলার সাথে সাথে মাইশা আমাকে জরিয়ে ধরলো। আহা কি মিষ্টি ঘ্রান আসছে মাইশার শরীর থেকে একেবারে বগুড়ার দইয়ের মতো। তারপর মাইশা নিজেকে আমার কাছ থেকে ছারিয়ে নিলো।
মাইশাঃ আসলে আবির আমি একজনকে ভালোবাসি।
মাইশার কথা শুনতেই মনে হয় আমার মাথায় আকাশ ভেংগে পরলো। নিজের অজান্তেই বুকের বাম পাশে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলাম। দুই চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় বূষ্টি পরছে।
মাইশাঃ আরে বোকা কাদছো কেনো? আমি কাকে ভালোবাসি সেটা তো আগে শুনো।
আমিঃ কাকে? (কাদো কাদো সুরে)
মাইশাঃ তোমাকে, আই লাভ ইউ সামমমমমির। উইল ইউ মেরি মি মাই Dear।
কথা শেষ হতে না হতেই মাইশাকে জরিয়ে ধরে চুমু খেতে লাগলাম। এইটাও কি পড়ার দরকার ছিলো
মাইশাঃ আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরোনা প্লীজ।
তারপর আমি মাইশাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম। মাইশার গরম নিশ্বাস আমার বুকে পরছে এখন।
মাইশাঃ এভাবে সারাজিবন ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে পারবে।
আমিঃ পারবো গুন্ডি সোনা। যদি তুমি তোমার পাশে থাকার সুযোগ দাও।
মাইশাঃ ওই আমাকে গুন্ডি বললে মেরে তক্তা বানিয়ে ফেলবো। আর আমি ছাড়া অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকালে চোখ তুলে ফেলবো (আল্হাদি গলায়, কয়েকটা কিল ঘুসি দিয়ে)
হায় হায় কি মেয়েরে বাবায় প্রেম না করতেই এরকম না জানি প্রেম করলে আরো কতো কিছু বলে।
মিরাঃ ইহম ইহম, আমরা কি এখন যেতে পারি।
আরে আমি তো ভুলেই গেছি। এইখানে কেউ সিনেমা দেখছে। আর এক জন সিনেমা পড়ছে কি তাই না।
আমিঃ হুম চলো।
তারপর সবাই মিলে বাসায় আসলাম। রাত হয়ে গেলো অনেক ক্লান্ত থাকায় শুয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে উঠে বুকের উপর ভারি কিছু অনুভব করলাম। আরে এটাতো মাইশা পাগলিটা আমাকে জরিয়ে ধরে আছে। কিন্তু এতো সকালে ও আমার রুমে আসলো কিভাবে? হঠাৎ মনে পরলো কাল রাতে তো পাগলিটা আমার….
পার্ট- ৫
সকালে উঠে বুকের উপর ভারি কিছু অনুভব করলাম। আরে এটাতো মাইশা পাগলিটা আমাকে জরিয়ে ধরে আছে।
কিন্তু এতো সকালে ও আমার রুমে আসলো কিভাবে হঠাৎ মনে পরলো কাল রাতে তো পাগলিটা আমার কাছে এসেছিলো ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য।
কি মায়াবি লাগছে মেয়েটাকে মনে হয় সারাজিবন দেখলেও দেখার সাধ মিটবে না। তারপর হঠাৎ মনে পরলো কেউ যদি মাইশাকে আমার রুমে দেখে তাহলে মান সম্মান সব শেষ হয়ে যাবে।
আমিঃ মাইশা, এই মাইশা উঠো….
মাইশাঃ …….
আমিঃ মাইশা ওই দি…..
হঠাৎ মামা দরজায় নক করলো। মামা যদি আজকে আমাদের দুজনকে একসাথে দেখো তাহলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।
কি করবো ভাবতেছি হঠাৎ মনে হলো, মাইশাকে ওয়াশরুমে রেখে আসি যেই ভাবা সেই কাজ মাইশাকে কোলে তুলে ওয়াশরুমে কমেডির ওপর থুক্কু কমোডের উপর বসিয়ে রেখে দরজা খুলে দিলাম।
মামাঃ কি ব্যাপার দরজা খুলতে এতো সময় লাগে।
আমিঃ না মানে আসলে ঘুমিয়ে ছিলাম তো তাই।
মামাঃ ও তা তুমি কি বাবা আজকাল ওরনা পরে ঘুম আসো।
এই মেরেছে রে মাইশার ওরনা তো আমার খাটের উপর। এখন কি হবে আল্লাই যানে। এমন সময় মিরা আসলো রুমে।
আমিঃ মামা ওই ওরনাটা মিরাের।
মামাঃ মিরা ওটা তোর ওরনা।
আমি মিরাকে ইশারা দিয়ে হ্যা বলতে বললাম।
মিরাঃ হ্যা বাবা ওটা আমার ওরনা।
মামাঃ ওহ তাহলে এই ঘ……
বাচাও বাচাও আহহহহহহহহহ
হঠাৎ মাইশা ওয়াশরুমের ভিতর থেকে চিৎকার দিয়ে উঠলো। মাইশার চিৎকার শুনে মামা আর মিরা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
মাইশা ওয়াশরুম থেকে বাহিরে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো।
মামাঃ আবির, মাইশা তোমার রুমে এলো কিভাবে।
আমিঃ মামা মিরা জানে আমি কিছু জানিনা।
মিরাঃ ওরে হাদারাম আমি কি জানি(আমাকে ফিসফিস করে বললো)
আমিঃ প্লীজ একটু ম্যানেজ করে দে আমার লক্ষি বোন।
মিরাঃ আসলে বাবা মাইশাকে আমি এই রুমে পাঠায়ছি।
মামাঃ কেনো….?
মিরাঃ আসলে হঠাৎ করে আমার ওয়াশরুমের পানির লাইনটা বন্ধ হয়ে গেছে তো তাই।
মামাঃ ওহ।
বলে চলে গেলো। যাক বাবা বাচা গেলো।
মিরাঃ এখন বলতো তোদের মতলব কি। আর তোরা দুজন কি রাতে ও এক সাথে থেকেছিস।
আমিঃ না না আমি সকালে উঠে দেখি মাইশা আমার বুকের উপরে আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে।
আমার কথায় মাইশা একটু লজ্জা পেলো।
মিরাঃ ওহ, এই ব্যাপার।
বলে মিরা ও চলে গেলো।
আমিঃ ওই গুন্ডি তুমি আমার রুমে ঘুমিয়েছিলে কেনো।
মাইশাঃ ওই কুত্তা তুমি আমারে বাথরুমে রেখে এসেছো কেনো।
আমিঃ দেখলেই যখন, তুমি বাথরুমে তার মানে নিশ্চয় কোনো সমস্যা হয়েছিলো যার কারণে তোমাকে বাথরুমে রেখে এসেছিলাম। কিন্তু তুমি চিল্লালে কেনো।
মাইশাঃ বাথরুমে তেলাপোকা ছিলো। তাই ভয় পেয়ে গেছিলাম।
যে গুন্ডি মেয়ে আবার তেলাপোকা দেখে ভয় পায়। (ফিসফিস করে কথাটা বললাম)
মাইশাঃ ওই কি বললে।
আমিঃ ওইযে তোমার পেছনে তেলাপোকা(মজা করে বললাম)
বলার সাথে সাথে মাইশা ঠাসস করে মারে নেই আমাকে জরিয়ে ধরলো। আমি ও তাকে জরিয়ে ধরলাম। কেবল একটা কিছ দিতে যাবো তখনি মিরা বললো….
মিরাঃ ভাইয়া বিয়ে বাড়িতে এগুলা যায়েজ নেয়(হি হি হি)বলে চলে গেলো।
কি ফাজিল মেয়েরে বাবা তার মানে আমার আর মাইশার কথা সব মিরা শুনে ফেলছে। এই মাইশা আবার কোথায় গেলো যাক বাবা আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে মাইশা ও পালালো।
আজকে আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ে। বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ঘর থেকে বের হতেই মিরা মাইশা সহ একদল পরী মানে মেয়ে আমাকে ঘিরে ধরলো।
মিরাঃ এই তোরা শোন এটা আমাদের বরের ভাই। ওকে একটু শরবত খাওয়া(বান্ধবিদের উদ্দশ্যো করে বললো)
মাইশাঃ এই নিন শরবত। সবটুকু খেয়ে নিন।
যাক বাবা এমনিতেই খুব পানির পিপাসা পেয়েছিলো। মেয়েটা গুন্ডি হলে ও মনটা পাথরের মানে তুলার মতো নরম।
সবেমাত্র এক ঢোক শরবত খাইছি। মনে হচ্ছে কান দিয়ে বাতাস বের হচ্ছে এতটাই ঝাল যে চোখে পর্যন্ত ঝাপসা দেখছি। মিরা আমাকে পানি দিলো কিন্তু পানি খেয়েও কাজ হলো না হঠাৎ দেখলাম লাল টকটকে একটা কি যেনো। চোখে ঝাপসা দেখার কারনে ভালোভাবে বুঝতে পারলাম না ওটা কি তবে দেখে মনে হয় মিষ্টিই হবে আর কোনোকিছু না ভেবে দিলাম এক কামর আর তখনি।
মাইশাঃ আউউউউউউ ওমাগো।
আরে এটা তো মাইশার কন্ঠ চোখ মুছতে মুছতে তাকিয়ে দেখি হায় আল্লাহ আমি তো মিষ্টি ভেবে মাইশার ঠোটে কামর দিছি। ভাগ্য ভালো যে বাড়িতে তেমন লোক ছিলো না তা ছাড়া মাইশা যে জোড়ে চিৎকার দিছে তাতে এতক্ষনে আমার বারোটা বাজতো।
মাইশার দিকে তাকিয়ে দেখি মেয়েটার চোখ পানি দিয়ে ভরে গেছে আর ঠোট কেটে রক্ত বের হচ্ছে।
ভাবতেই খারাফ লাগছে ছি আমি মাইশার সাথে এটা কি করলাম। মাইশার চোখের পানি দেখে আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম মাইশাকে তারপর বললাম।
আমিঃ ছরি সোনা আসলে আমি দেখনি যে ওটা তোমার ঠোট আমি ভেবেছিলাম হয়তো মিষ্টি কিছু হবে। আসলে ঝালের কারণে চোখে ঝাপসা দেখছিলাম তো তাই।
মাইশাঃ কেনো আমার ঠোট তোমার মিষ্টি লাগেনি(দুষ্টমি একটা হাসি দিয়ে)
আমিঃ আবার জিগায় মিষ্টি লাগছে মানে টাংগাইলের চমচমের মতো মিষ্টি লাগছে…
মাইশাঃ তাহলে একবার মিষ্টি খেয়েই পেট ভরে গেলো।
মাইশার কথা শেষ হতে না হতেই আবার একটা লিপ কিছ দিলাম একটানা ৫ মিনিট কিছ দেওয়ার পর মাইশা ওর রুমে গেলো আর আমি…….
পার্ট- ৬
আগের পর্ব আমার টাইম লাইন এ আছে।
মাইশাঃ তাহলে একবার মিষ্টি খেয়েই পেট ভরে গেলো।
মাইশার কথা শেষ হতে না হতেই আবার একটা লিপ কিছ দিলাম একটানা ৫ মিনিট কিছ দেওয়ার পর মাইশা ওর রুমে গেলো আর আমি আমার রুমে আসলাম।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে রুম থেকে বের হলাম। আর বের হয়েই এক হাজার ভোল্টের একটা শকড খেলাম কারণটা হলো মাইশা আজকে নীল শাড়ি পরছে সাথে নীল চুড়ি কপালে টিপ আর ঠোটে লাল লিপিষ্টিক।
আমি যেনো চোখ ফিরাতে পারছিলাম না। মাইশাকে একদম নীল পরীর মতো লাগছে হঠাৎ আমার স্বপ্নের ঘোর কাটিয়ে মাইশা বললো।
মাইশাঃ এই যে মিষ্টার কি দেখো এমন করে হু।
আমিঃ …
মাইশাঃ ওই, কি হলো কথা বলো।
আমিঃ না মানে, তোমাকে দেখছি।
মাইশাঃ কেনো এর আগে কখনো দেখোনি।
আমিঃ দেখেছি কিন্তু তোমার মাঝে ও যে একটা পরী আছে সেটা কি তুমি জানো।
আমার কথায় মাইশা একটু লজ্জা পেলো”
মিরাঃ ভাইয়া হইছে এমন হা করে আর দেখা লাগবে না পরে আরো অনেক দেখার চান্স পাইবা (দুষ্টুমি একটা হাসি দিয়ে)
তারপর আমরা সবাই মেয়ের বাড়িতে(মানে বিয়ে করাতে) যাওয়ার জন্য রওয়ানা হলাম। সেখানে গিয়ে পৌছালাম মাগরিবের নামাজের সময় কিন্তু সেখানে গিয়ে আরেকটা মেয়ের উপর ক্রাশ খাইলাম। কিন্তু পরে মনে হলো আরে আমি তো ভদ্র ছেলে আর আমার জন্যে তো মাইশা আছেই। আমার এই ব্যাপারটা মনে হয় মাইশা লক্ষো করছে। মাইশা এসে আমাকে বললো…..
মাইশাঃ এই যে মিষ্টার ওই মেয়ের দিকে এমন হা করে তাকিয়ে আছো কেন হুম….
আমিঃ মেয়েটা খুব সুন্দর একদম পরীর মতো। (মাইশাকে রাগানোর জন্য)
মাইশাঃ আর আমি। (রেগে গিয়ে)
আমিঃ পেত্নীর মতো(মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেলো)
মাইশাঃ তবে রে দাড়া, তোরে আজ আমি খাইয়া হালামু। তোর হাড্ডি ভাইংগা পানের দোকান দিমু।
কিন্তু কে শুনে কার কথা দিলাম এক দৌড়। আপনারা কি ভাবছেন আমি সেখানেই দাড়িয়ে থাকবো। আমারে কি পাগলা কুত্তাই কামরাইছে। যে গুন্ডি মাইয়া তার উপর আবার বিয়ে বাড়ি বুঝতেই পারছেন আমাকে ধরতে পারলে কি হতো।
দৌড়াতে দৌড়াতে একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেলাম…
মেয়েটাঃ ওই চোখে দেখেন না। চোখ কি খুলে বাসায় রেখে আইছেন নাকি।
আমিঃ চোখ আছে দেখেই তো শুধু ধাক্কা খেলাম। তাছাড়া তো।
মেয়েটাঃ তাছাড়া কি! (রেগে এটোম বোম হয়ে)
আমিঃ তাছাড়া তো জড়িয়ে ধরতাম আরো কত কি।
বলেই দিলাম দৌড় মেয়েটার সামনে বেশীক্ষন থাকলে হয়তো ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিতো। দৌড়াতে দৌড়াতে ধপাস করে একটা গাছের সাথে ধাক্কা খেলাম। আপনারা আবার ভাইবেন না যে ধাক্কা খেয়ে আমি আমার অতিত ভুলে গেছি কারণ ওটা শুধু সিনেমাতেই হয়।
দূর দৌড়ানোর পর শরীর একেবারে ঘেমে গেছে ভাবলাম একটু ফ্রেশ হওয়া দরকার।
ফ্রেশ হয়ে মুখে কিছু আটা ময়দা থু্ক্কু ছুনু পাওডার লাগালাম। ভাবলাম মামার সাথে একটু দেখা করে আসি। মামার কাছে যেতেই…
মামাঃ ভুত ভুত ভুত।
আর মামি তো ব্যাহুশ।
আমিঃ What মামা Iam আবির your একমাত্র ভাগ্নে।
মামা আমার ইংরেজি শুনে ব্যাহুশ হওয়ার মতো অবস্থা। আমি ভাবলাম মামা মনে হয় ইংরেজি কম জানে সে জন্য আমার কথা বুঝতে পারেনি।
মামাঃ আবির তুমি যে আমার ভাগ্নে এটা যেনো কাওকে বলোনা কেমন।
আমার চেহারা দেখলে যে কেউ ভয় পাবে। সে জন্য মামা কথাটা বললো।
আমিঃ ok মামা you কোনো টেনসন করো না।
বলে চলে আসতে লাগলাম। তখনি মাইশা আমার সামনে পরে ভুত ভুত বলে চিল্লাতে চিল্লাতে ব্যাহুশ হয়ে গেলো।
কি ব্যাপার সবাই আমাকে দেখে ভুত ভুত করছে কেনো। যেই মাএ আয়নায় সামনে গেলাম এবার আমি নিজেই ব্যাহুশ হওয়ার মতো অবস্থা কারণ তখন ছুনু ভেবে কালি মুখে দিয়েছিলাম।
দেখতে দেখতে বিয়েটা হয়ে গেলো। তারপর সবাই বাসায় আসলাম বউ নিয়ে। ভাবলাম মাইশার সাথে একটু কথা বলা দরকার। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে মাইশা নিজেই আমাকে এসে বললো।
মাইশাঃ ওই মিষ্টার শয়তান। তোমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ে তো হলো তা তোমারটা কবে হবে শুনি”
আমিঃ যেদিন তোমাকে আপন করে পাবো তার আগের দিন(মাইশাকে জরিয়ে ধরে)
মাইশাঃ এই ছাড়ো বলছি লোকে দেখলে কি ভাববে।
আমিঃ লোকে কি ভাববে সেটা দেখার বিষয় আমার নাই।
মাইশাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলাম। ওর দুই হাতের ওপর আমার হাত রেখে মাইশার খুব কাছাকাছি গেলাম। মাইশার গরম নিশ্বাস আর আমার নিশ্বাস এখন এক হয়ে গেছে। লজ্জায় মাইশার চেহারা পাকা টমেটোর মত হয়ে গেছে। যেই মাএ আমাদের দুইজনের ঠোট এক করবো তখনি….
মিরাঃ কি ব্যাপার বাসর কি আজকে দুই জায়গায় হবে নাকি।
মিরার কথায় মাইশা একটু লজ্জা পেলো।
মাইশাঃ না মানে আসলে।
মিরাঃ আর বলতে হবেনা আমি বুঝে গেছি। তোমাদের ডিস্টার্ব করার জন্য সরি।
বলে বাহিরে চলে গেলো। আর আপনাদের তো বলতে ভুলেই গেছি মিরা ও আমাকে মনে মনে ভালোবাসে কিন্তু কোনোদিন মুখে কোনোদিন বলেনি। সে জন্য আমার আর মাইশার রোমাঞ্চ করার সময় এসে ডিস্টার্ব করে। যাইহোক এখন গল্পে আাসা যাক।
আমিঃ মিরা যা বললো তা কি আজ হবে।
মাইশাঃ মানে।
আমিঃ বিয়ের আগেই বাসর করার কথা।
মাইশাঃ আমি জানিনা। (লজ্জা মাখা মুখে)
মাইশা মুখে যতই বলুক আমি জানিনা কিন্তু আমি উত্তর পেয়ে গেছি।
তখন আমি মাইশাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শোয়ালাম তারপর আস্তে আস্তে তার পুরো শরীরে কিস করতে লাগলাম।
মাইশাঃ বাবু আজ এই পর্য়ন্তই থাক। বাকিটা না হয় আরেক দিন হবে।
আমিঃ সুযোগ একবারে আসে বারবার নই তারপর আমরা দুইজন ভালোবাসার গভীর সমুদ্রে ডুবে গেলাম।
মাঝরাতে হঠাৎ কারো কান্নার আওয়াজে আমার ঘুম ভেংগে গেলো। বিছানা থেকে উঠে দেখি…..
পার্ট – ৭
মাইশাঃ বাবু আজ এই পর্য়ন্তই থাক। বাকিটা না হয় আরেক দিন হবে।
আমিঃ সুযোগ একবারে আসে বারবার নই তারপর…
আমরা দুইজন ভালোবাসার গভীর সমুদ্রে ডুবে গেলাম।
মাঝরাতে হঠাৎ কারো কান্নার আওয়াজে আমার ঘুম ভেংগে গেলো। বিছানা থেকে উঠে দেখি মিরা কান্না করতেছে।
আমিঃ মিরা কি হয়ছে তোমার কাদছো কেনো।
মিরাঃ আমি কাদলে তোমার কি! (কাদতে কাদতে)
আমিঃ আমি আবার কি করলাম। কি হয়ছে খুলে বলো।
মিরাঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি আবির। তুমি কেনো বুঝোনা আমার মনের কথা।
আমিঃ দেখো মিরা তুমি ভালো করেই যানো আমি মাইশাকে ভালোবাসি আর মাইশা ও আমাকে ভালোবাসে।
মিরাঃ আমি এতো কিছু জানিনা আমি তোমাকে ভালোবাসি।
আমিঃ তুমি যেটা চাও সেটা কোনোদিন ও হবেনা। কারণ আমি মাইশাকে ছাড়া বাচবোনা।
মিরাঃ আরেকবার মাইশার কথা বললে তোকে আমি খুন করে ফেলবো। (আমাকে জড়িয়ে ধরে)
আমাদের কথা শুনে মাইশা যে ঘুম থেকে উঠে গেছে সেদিকে আমি লক্ষ ও করিনি।
আমিঃ প্লীজ তুমি শান্ত হও।
মাইশাঃ বাহ বাহ খুব ভালো লাগছে তোমাদের এই ভালোবাসা দেখে।
আমিঃ মাইশা তুমি কখন উট……..আমাকে থামিয়ে দিয়ে।
মাইশাঃ আমাকে যদি ভালো নাই বাসো তাহলে কেনো আমার জিবনটা নষ্ট করলে। (কাদতে কাদতে)
আমিঃ মাইশা তুমি আমাকে ভুল বুঝ………আবার আমাকে থামিয়ে দিয়ে।
মাইশাঃ আমি কিছু বুঝতে চাইনা। আমি শুধু জানতে চাই কেনো তুমি আমার জিবনটা নষ্ট করলে। (কাদতে কাদতে)
মিরাঃ মাইশা তুই আমাদের কে ভুল বুঝছিস।
মাইশাঃ আমি নিজের চোখে যা দেখলাম তা কি ভুল। আমি তো আমার নিজের চোখকে অবিশ্বাস করতে পারিনা। (কাদতে কাদতে)
আসলে মিরা যে আমাকে জরিয়ে ধরেছিলো সেটা মনে হয় মাইশা দেখছে আর সে কারণে আমাকে ভুল বুঝছে। আমাদের কথা বলতে বলতে যে সকাল হয়ে গেছে সেদিকে আমার কোনো খেয়ালই নেই।
আমিঃ মাইশা তুমি আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করো।
মাইশাঃ আমি কোনো কিছু ই বুঝতে চাইনা। আমি এক্ষনি আমদের বাসায় চলে গেলাম তোমরা ভালো থেকো(বলে কাদতে কাদতে চলে গেলো)
দূর মনটায় খারাপ হয়ে গেলো। মাইশা নেই আমি থেকে কি করবো। আমি ও আম্মু আর মামাকে বলে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে সোজা আমার বন্ধুদের কাছে গেলাম। তারপর সবকিছু খুলে বললাম তাদেরকে।
রাকিব হাসানঃ দোস্ত নে সিগারেটটা খেয়ে মাথা ঠান্ডা কর(একটা সিগারেট হাতে দিয়ে)
আমিঃ আমি এখন কি করবো দোস্ত। মাইশা তো আমাকে ভুল বুঝে চলে গেলো(সিগারেট টানতে টানতে)
রাফাতঃ তুই মাইশাকে পুরো ব্যাপারটা বুঝিয়ে বল।
আমিঃ বোঝানোর অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
পলাশঃ তুই কিছুদিন কলেজে যাস না আর মাইশার সাথে কথা ও বলিস না দেখবি ওই তোকে খুজবে।
আমিঃ হুম গুড আইডিয়া।
বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় আসলাম তারপর খাওয়া দাওয়া ঘুম আসলাম।
সকালে উঠে আগে মোবাইল চেক করলাম। মাইশার কোনো মেসেজ বা কল আছে নাকি। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাইশা মেসেজ বা কল কোনোটায় দেয়নি। দূর কিছু ভালো লাগছে না আর হঠাৎ করে ফোনটাও নষ্ট হয়ে গেছে।
এভাবে তিনদিন কেটে গেলো না আর ভালো লাগছে না। আজকে মাইশার সাথে দেখা করতেই হবে। সকাল সকাল কলেজে গেলাম। কলেজের গেটে পা রাখবো এমন সময় কে জেনো শার্টের কলার ধরে।
ঠাসসস।
আরে এটাতো মাইশা তিনদিনে কি রকম হয়ে গেছে মেয়েটা। চোখের নিচে কালোদাগ পরে গেছে আর অনেক শুকিয়ে গেছে।
মাইশাঃ আমাকে কাদিয়ে খুব সুখ পাস তাই না। এতোদিন কয়ছিলি বল(আমার শার্টের কলার ধরে কাদতে কাদতে)
আমিঃ তুমি হয়তো জানোনা, তোমার চেয়ে কষ্টো আমি বেশী পেয়েছি(আসলে আমিও আগের চেয়ে অনেক শুকিয়ে গেছি আর আমারো চোখের নিচে কালোদাগ হয়ে গেছে)
মাইশাঃ একদম ঢং করবি না। যদি ভালোবাসতে নাই পারবি তাহলে ক্যান ভালোবাসা শিখায়ছিলি।
আমি এবার নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে মাইশাকে জরিয়ে ধরলাম আর বললাম।
আমিঃ তোকে খুব ভালোবাসি পাগলি। তোকে ছাড়া আমি বাছমু না(কাদতে কাদতে)
মাইশাঃ আমি ও তোকে খুব ভালোবাসি। তোকে ছাড়া আমিও বাছমু না।
তারপর দুজন দুজনকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলাম। আর পুরো কলেজের শিক্ষাথিরা আমাদের হাত তালি দিয়ে সাগতম জানালো।
এভাবে চলতে থাকলো আমাদের ভালোবাসা। কিছুদিন পর হঠাৎ মাইশা ফোন করে বললো….
মালিহাঃ হ্যালো বাবু একটা সর্বনাশ হয়ছে।
আমিঃ কেনো কি হয়ছে বাবু।
মালিহাঃ আজকে আমাকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে।
আমিঃ আরে পাগলি দেখতে আসলেই তো আর বিয়ে হয়না।
মাইশাঃ আমি কিন্তু তোমাকে ছাড়া বাচবো না। যদি বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে তাহলে কিন্তু আমি আত্মহত্যা করবো(কাদতে কাদতে)
আমিঃ ওই পাগলি তুমি মরলে আমার কি হবে হুম।
মাইশাঃ তুমি প্লীজ কিছু একটা করো। তাছাড়া বাবা আমার বিয়ে দিয়ে দিবে।
আমিঃ বাবু একটু অপেক্ষা করো। আমি কিছুদিনের মধ্যে তোমার বাবার সাথে কথা বলবো।
মাইশাঃ সত্যি তুমি আমার বাবার সাথে কথা বলবা। (খুশিতে গদগদ হয়ে)
আমিঃ হুম বাবু সত্যি।
মাইশাঃ উমমমমা।
আমিঃ উমমমমমা ২।
এখন ভাবতেছি কিভাবে আমি মাইশার বাবার সাথে কথা বলবো। হঠাৎ মাথার মধ্যে একটা আইডিয়া আসলো। আমার বন্ধুর কাছ থেকে কিছু শিখিয়ে নেওয়া দরকার। বন্ধুর কাছে ফোন দিলাম…….
আমিঃ দোস্ত কেমন আছিস।
দোস্তঃ ভালো তুই।
আমিঃ ভালো নারে দোস্ত।
দোস্তঃ কেন আবার কি হয়ছে।
আমিঃ দোস্ত মাইশার বাবার সাথে কথা বলবো। কিভাবে বলবো কি বলবো একটু শিখিয়ে দেনা প্লীজ।
দোস্তঃ কি তুই মালিহার বাবা মানে কমিশনারর সাহেবের সাথে কথা বলবি।
আমিঃ হুম, প্লীজ দোস্ত কিছু শিখিয়ে দে।
দোস্তঃ আপনি যাকে কল করেছেন। তিনি এখন কাউকে কোনো কিছু শিখিয়ে দেওয়া থেকে বিরত আছে। অনুগ্রহ করে ফোনটা কেটে দিন। টুট টুট টুট
দূর শালা কমিশনারের নাম শুনে ভয় পাইছে মনে হয়।
পার্ট- ৮
আমিঃ হুম, প্লীজ দোস্ত কিছু শিখিয়ে দে।
দোস্তঃ আপনি যাকে কল করেছেন। তিনি এখন কাউকে কোনো কিছু শিখিয়ে দেওয়া থেকে বিরত আছে। অনুগ্রহ করে ফোনটা কেটে দিন। টুট টুট টুট
দূর শালা কমিশনারের নাম শুনে ভয় পাইছে মনে হয়। যা করা নিজেকেই করতে হবে।
আবার ভাবছি বাংলা সিনেমার মতো যদি টাকা অফার করে তাহলে টাকা ও নিমু আর মাইশাকে ও নিমু। হঠাৎ মাইশা ফোন করলো।
মাইশাঃ আমার বাবুটা এখন কি করে।
আমিঃ তোমার বাবুটা এখন তোমার কথা চিন্তা করে।
মাইশাঃ চিন্তা করতে হবে না বাবু। আমার বিয়ে ঠিক হয়নি। বাবাকে বলে দিয়েছি ছেলে আমার পছন্দ হয়নি।
মাইশার কথা শুনে মনে হলো খুশির ঠেলায় চোখে মুখে এল এ ডি বাল্ব জ্বলে উঠলো।
মাইশাঃ কিন্তু বাবু একটা সমস্যা আছে।
আমিঃ আরে কি সমস্যা আমাকে বলো আমি সব ঠিক করে দিবো(খুশির ঠেলায়)
মাইশাঃ বাবু আমি বাবাকে বলছি যে তুমি আজকেই বাবার সাথে দেখা করে কথা বলবা।
মাইশার কথা শুনে আমার সদ্য জ্বলে থাকা এল এ ডি বাল্বটা ফুটুস করে ফিউজ হয়ে গেলো।
আমিঃ আজকেই দেখা করতে হবে। (কাদো কাদো সুরে)
মাইশাঃ হুম, তুমি ভয় পাচ্ছো কেনো বাবু আমি আছি তো।
বলে ফোনটা কেটে গেলো। আর এদিকে ভয়ে আমার কলিজা শুকিয়ে গেছে। পুলিশ কমিশনারের সাথে আজকে কথা বলবো তাও আবার তার মেয়ের ব্যাপারে ভাবতেই মনটা কেপে উঠছে। পরে ভাবলাম যা হয় হবে আজকে কথা বলবই।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে মাইশার বাসার উদ্দশ্যে রওয়ানা দিলাম। দেখতে দেখতে মাইশার বাসায় চলে আসলাম। বাড়িটা দেখেই আমার মাথা ঘুরে গেলো এত সুন্দর বাড়ি আমি কখনো দেখিনি। অনেকক্ষন বসে থাকার পর মাইশার বাবা আসলো। আর সাথে মাইশাও আছে।
আমিঃ আস্সালামুআলাইকুম আন্কেল।
মাইশার বাবাঃ অয়ালাইকুম আস্সালাম।
আমিঃ কেমন আছেন।
মাইশার বাবাঃ হুম ভালো। তা বাবা তুমি নাকি আমার মেয়েকে পছন্দ করো।
আমিঃ জ্বী আন্কেল।
মাইশার বাবাঃ তোমার বাবা কি করে।
আমিঃ জ্বী সরকারি কর্মজীবি চালায়।
মাইশার বাবাঃ তারমানে তুমি গরীব। (ভিলেন মার্কা একটা হাসি দিয়ে)
মাইশার বাবার কথা শুনে বাংলা সিনেমার কথা মনে হয়ে গেলো। আমি ও নায়ক মার্কা একটা হাসি দিয়ে বললাম।
আমিঃ চৌধরি সাহেব থুক্কু কমিশনার সাহেব। আমি গরিব হতে পারি কিন্তু আমার মনটা অনেক বড়।
মাইশার বাবাঃ আরে মন বড় দিয়ে কি হবে বড় হতে হবে ধন।
মাইশার বাবার কথা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পরলাম। হালারপুত কয় কি। মাইশা তো লজ্জায় দৌড় দিছে। আর আমি হা করে ৫ মিনিট ধরে তাকিয়ে আছি। এই ৫ মিনিটে কতো লক্ষ লক্ষ মশা মাছি যে আমার পেটে আগমন করছে আমি নিজে ও জানিনা। মাইশার বাবা ব্যাপারটা মনে হয় লক্ষ করছে। তারপর বললো।
মাইশার বাবাঃ আরে বোকা আমি বলছি ধন সম্পদের কথা।
আমিঃ ওহহ। (একটা সস্থির নিশ্বাস ফেলে)
মাইশার বাবাঃ তুমি কি আমাদের ধন সম্পত্তি দেখে আমার মেয়েকে ভালোাসো।
আমিঃ কমিশনার সাহেব আমি গরীব হতে পারি কিন্তু লোভি না।
বলেই পেছনে হাটা শুরু করলাম। কিন্তু একটা ব্যাপার মাথার মধ্যে শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে। সিনেমার মধ্যে দেখছিলাম নায়িকার বাবা নায়ককে টাকা দিয়ে অফার করে কিন্তু এই হালারপুত করলো না কেনো। আর এতক্ষনে তো আমাকে ডাকার কথা। এসব ভাবছি হঠাৎ মাইশার বাবা ডাক দিলো।
যাক বাবা যেহেতু ডাক দিছে তাহলে নিশ্চয় এইবার টাকার অফার করবে। খুশি মনে মাইশার বাবার দিকে যাচ্ছি আর ভাবছি কতো টাকা দিতে পারে।
মাইশার বাবাঃ তোমার ভালোবাসার কাছে আমি হার মেনে গেলাম বাবা।
হায় হায় হালায় কয় কি তাহলে কি আমাকে টাকা দেওয়ার জন্য ডাকেনি। মনে মনে কমিশনারের চৌদ্দ গুষ্টিকে উদ্ধার করলাম।
আমিঃ হুম কমিশনার সাহেব, আমার ভালোবাসা পিওর সোয়াবিন তেলের মতো বিশুদ্ধ। আপনি আবার ভাইবেন না যে আমি পাম ওয়েলের কথা বলছি।
তারপর মাইশার বাবা মাইশাকে ডাক দিলো। আর মাইশা আসার পর আমার হাত আর মাইশার হাত এক করে দিলো। খুশির ঠেলায় মাইশার বাবার সামনেই মাইশাকে জড়িয়ে ধরলাম।
কিন্তু খুব আফসোস হচ্ছে কারণ আমি ভেবেছিলাম মাইশার বাবা আমাকে টাকা দিয়ে বলবে আমার মেয়েকে ভুলে যাও আর আমি টাকা ও নিবো আর তার মেয়েকে ও ভালোবাসবো কিন্তু এখন শুধু মেয়েকেই পেলাম টাকা আর পেলাম না।
মাইশার সাথে কথা বলে বাসায় আসলাম। আর বাসায় আসতেই শুনি মিরা নাকি আত্মহত্যার চেষ্টা করছে এখন হাসপাতালে আছে।
কোনকিছু না ভেবেই দিলাম দৌর হাসপাতালের উদ্দশ্যে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি মিরাকে অপারেশন ঠিয়েটরে রাখা হয়ছে। আমি কাছাকাছি যেতেই মামা বললো….
মামাঃ তুমি আসছো বাবা, মিরা ঙ্গান ফিরে শুধু তোমাকেই দেখতে চাচ্ছে।
আমিঃ মামা আমি এসে গেছি আর কোনো ভয় নেই। মিরাের কিছু হবেনা।
মামিঃ তাই যেনো হয় বাবা(কাদতে কাদতে)
অনেকক্ষন বসে থাকার পর ডাক্তার অপারেশন ঠিয়েটর থেকে বের হলো।
আমিঃ ডাক্তার সাহেব মিরাের কি অবস্থা এখন।
ডাক্তারঃ চিন্তার কোনো কারণ নাই। রোগির অবস্থা এখন সাভাবিক আছে।
ডাক্তারের কথা শুনে মনটা ভালো হয়ে গেলো। কিন্তু একটা বিষয় বুঝতে পারছি না মিরা আত্মহত্যা কেনো করতে চাইছিলো। তখন আমি মামাকে বললাম।
আমিঃ মামা মিরা আত্মহত্যা করতে চাইছিলো কেনো।
মামাঃ আজকে মিরাকে পাএপক্ষ দেখতে আসছিলো। কিন্তু মিরাের নাকি ওই ছেলেকে পছন্দ হয়নি। ও নাকি কাউকে ভালোবাসে। আমি শুধু বলেছিলাম, তোর মন যা চায় তুই তাই কর। আমি কিছু জানিনা।
হঠাৎ ডাক্তার এসে বললো মিরাের ঙ্গান ফিরছে। তারপর আমরা সবাই ভিতরে গেলাম। আমাকে দেখেই মিরা কাদতে লাগলো আর বলতে লাগলো…
পার্ট- ৯
হঠাৎ ডাক্তার এসে বললো মিরাের ঙ্গান ফিরছে। তারপর আমরা সবাই ভিতরে গেলাম। আমাকে দেখেই মিরা কাদতে লাগলো আর বলতে লাগলো…….
মিরাঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া আমি বাচবো না।
মিরার মুখে এমন কথা শুনে মামা আর মামি অবাক দূষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তারা হয়তো বুঝতে পারছে মিরাের সেই ভালোবাসার মানুষ আর কেউ না আমি। কিন্তু আমি তো মিরাকে ভালোবাসিনা। এটা আমি মিরাকে কিভাবে বুঝাবো।
মামাঃ মিরা তুমি এসব কি বলছো। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
মিরাঃ বাবা আমি আবিরকে ভালোবাসি তাকে ছাড়া আমি বাচবো না।
আমিঃ কিন্তু মিরা আমি তো তোমাকে ভা…..আমাকে থামিয়ে দিয়ে।
মামিঃ বাবা তুমি মিরাকে ভালোবাসো আমাকে বলতেই পারতে আমি তোমাদের বিয়ে দিয়ে দিতাম।
আমিঃ মামি আপনি আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করুন।
মাঃ কিছু বোঝার দরকার নাই। আজকেই তোদের বিয়ে দিবো।
আমিঃ কিন্তু মা আমি একজনকে ভা…….আমাকে থামিয়ে দিয়ে।
মাঃ আমি কিছু বুঝতে চাইনা। আমরা বিয়ের ব্যাবস্থা করতে গেলাম। তুই আর মিরা এখানে থাক।
বলে চলে গেলো এখন শুধু আমি আর মিরা। ভাবছি মাইশা যদি এই ব্যাপার জানে তাহলে আমাকে তো মারবেই সাথে মিরাকেও। হঠাৎ দেখি মাইশা আসছে। এই সেরেছে রে কোন হালারপুত মাইশাকে যেনো বলছে।
মাইশার চোখ মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে আজ আর আমার কোনো বাচার পথ নেই।
মাইশা এসেই মিরাের চুলের মুঠি ধরে মারতে লাগলো আর বলছে।
মাইশাঃ হারামজাদি কুত্তি তোর এতো বড় সাহস। তুই আমার আবিরকে বিয়ে করবি। (মিরাের চুলের মুঠি ধরে)
মিরাঃ ওই শাকচুন্নি তোর কতো বড় সাহস তুই আমার হবু বরের সাথে প্রেম করিস(মাইশার চুলের মুঠি ধরে)
আমি দর্শকের মতো তাদের মারামারি দেখছি।
হঠাৎ মাইশা একটা লাঠি নিয়ে মিরাকে মারতে যাচ্ছে। না আর মারামারি দেখা যাবেনা এখন যা করার আমাকেই করতে হবে।
মাইশা মিরাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করার আগেই আমি লাঠিটা ধরে ফেললাম। তারপর ঠাসসসস করে একটা চড় বসিয়ে দিলাম। এই প্রথমবার আমি মাইশার গায়ে হাত তুললাম।
আমিঃ সবকিছুর একটা লিমিট আছে মাইশা।
মাইশাঃ ওহহ আমার তো মনেই ছিলোনা। যে তুমি আর কেউ না তুমি তো এখন অন্য কারো। (কাদতে কাদতে)
আমিঃ তুমি আমার কথাটা একবার বুঝার চেষ্টা করো।
মাইশাঃ আমি কোনো কিছু বুঝতে চাইনা। যা বুঝার আমি বুঝে গেছি। (কাদতে কাদতে)
আমিঃ বুঝেই যখন গেছিস তাহলে এখানে দারিয়ে আছিস কেন যা ভাগ। (রাগের মাথায় কথাটা বলে ফেললাম)
আমার কথা শুনে মাইশা কাদতে কাদতে চলে গেলো।
মিরাঃ ঠিকি করছো, যেমন মেয়ে তেমন সাজা।
বলতেই মিরাকে ও ঠাসসস করে একটা থাপ্পর দিয়ে বাহিরে চলে গেলাম।
দূর কিছুই ভালো লাগছে না। বারবার শুধু মাইশার কথা মনে পরছে। কষ্ট কমাতে বারে(নাইট ক্লাবে) গেলাম। জীবনে প্রথম আজ ড্রিংকস করলাম। কখন যে সন্ধা হয়ে গেছে আমি নিজেও জানিনা। হঠাৎ মার ফোন,
মাঃ তুই কি মানুষ নাকি অন্য কিছু।
আমিঃ কেনো আমি আবার কি করলাম।
মাঃ আজ তোর বিয়ে আর তুই এখন পর্যন্ত বাহিরে আছিস। ৫ মিনিটের মধ্যে বাসায় আয়।
বলে ফোনটা কেটে দিলো।
বিয়ের কথা শুনে মাথায় আকাশ ভেংগে পরলো কি আর করার আজ আমি বলির পাঠা। বাসায় গিয়ে শান্ত ছেলের মতো বিয়েটা করলাম। হঠাৎ এক বন্ধু দৌড়ে এসে একটা চিঠি আমার হাতে ধরিয়ে দিলো। তাহলে চলুন দেখি চিঠিতে কি লেখা আছে।
প্রিয় আবির,
আমি জানি চিঠিটা তুমি যখন হাতে পাবে তখন হয়তো আমি আর বেচে থাকবো না। অনেক আশা করেছিলাম তোমাকে নিয়ে ঘর বাধবো। আমাদের দুইটা পিচ্চি হবে। একটা তোমার মতো আর একটা আমার মতো। অনেক আশা ছিলো সারাজিবন তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো।
কিন্তু নিয়তি হয়তো আমার ভাগ্যে সেই সুখটা রাখে নি। তুমি হয়তো জানোনা যে আমি মা হতে চলেছি আর তুমি বাবা। আজকেই আমি তোমাকে কথাটা বলতাম কিন্তু দেখো কি কপাল আমার সে সুযোগটা পর্যন্ত আমার হলোনা।
আর সবচেয়ে বেশী কষ্ট হলো আমার পেটের বাবুটার কারণ সে দুনিয়ার আলো দেখার আগেই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলো। কি করবো বলো তোমাকে ছাড়া আমার জিবন মূল্যহীন ছিলো। আর হ্যা আমাকে মাফ করে দিও কারণ আমি বলেছিলাম সারাজিবন তোমার পাশে থাকবো কিন্তু তোমাকে রেখেই আমি বেহায়ার মতো চলে গেলাম।
ভালো থেকো সুখে থেকো। আর একটা কথা যদি কোনদিন আমার কথা মনে পরে তাহলে ওই আকাশের দিকে তাকাবে সেখানে হয়তো তুমি আমাকে দেখতে পাবেনা কিন্তু আমাদের পিচ্চিটাকে দেখতে পারবে কারন পিচ্চিরা নাকি ফেরেশতার মতো পবিত্র আর পবিত্র জিনিস সসময় আকাশের তারা হয়ে থাকে।
ইতি তোমার গুন্ডি ভালোবাসার পাগলি।
চিঠিটা পড়তে পড়তে কাদতে লাগলাম। বিয়ে বাড়ির সবার আমার দিকে তাকিয়ে আছে সবাই ভাবছে বিয়েতে তো মেয়েরা কাদে তাহলে আমি কাদছি কেনো। হ্যা সেটা শুধু আমি জানি। কান্না যেনো থামতেই চাচ্ছে না আর চিল্লায়া বলতে ইচ্চা করছে আমি তোমাকে ভালোবাসি মাইশা প্লীজ তুমি আমাকে মাফ করে দাও।
পার্ট- ১০
হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
আমিঃ এই আমি কি দেখলাম। এতক্ষণ যা দেখছিলাম সব স্বপ্ন ছিল।
ইয়া আল্লাহ তোমায় হাজারো ধন্যবাদ। আমার মনে পড়েছে আমি মাইশার আব্বুর সাথে কথা বলে বাসায় এসে ছিলাম মামা ফোন করছিলো তারপর হসপিটাল থেকে বাসায় এসে শুয়ে পড়লাম আর এতক্ষণ এত ভয়ানক স্বপ্ন দেখছিলাম।
অজান্তেই দু ফটো পানি চলে আসলো আমার আমার জীবনে এর থেকে ভয়াবহ স্বপ্ন আমি কখনোই দেখি নি। পৃথিবীতে সব চেয়ে বড় কষ্টের জিনিস নিজের আপন কিছু হারানো যা আমি স্বপ্নে দেখলাম।
এরপর মাইশার ফোন আসলো।
আমিঃ হ্যালো।
মাইশাঃ জান আব্বু বলছে কয়েক দিনের ভিতর আমাদের বিয়ে যদি হয়ে যায়।
আমিঃ ……(আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে কারণ আমি এখনো আমার প্রিয় জিনিস টি হারায় নি)
মাইশাঃ কথা বলো কি হয়েছে আবির সামিইইইর।
আমিঃ কিছু না। আর হ্যা আমি আজই বলব তোমার কথা আব্বু আম্মু কে কেমন।
মাইশাঃ OK My love bye!
আমিঃ bye
আমি দিয়ে কে বুঝতে দেই নি আমার চোখের পানি আমার কষ্টটা।
রাত হয়ে গেলো সবাই হসপিটাল থেকে আসলো।
আমিঃ আব্বু একটা কথা বলব।
আব্বুঃ হ্যা বল
আমিঃ আমার পছন্দের একজন আছে যাকে আমি বিয়ে করব।
আব্বুঃ কি বলছিস এত ভাল খবর।
আম্মুঃ ওহ তো মেয়ে টা কে বাবা।
আমিঃ কমিশনারের মেয়ে!
আব্বুঃ কি বলছিস তার বাবা কি রাজি।
আমিঃ হ্যা রাজি।
আব্বুঃ তো দেরি কিসের তাদের সাথে কথা হয়ে যাক।
আমি তো দারুণ খুশি। মন চাচ্ছে মূলি ডান্স দেই থুক্কু লুঙ্গি ডান্স দেই।
এইভাবেই সব আয়োজন হল আব্বু আম্মু তাদের সাথে কথা বললো আর বিয়ের দিনটাও পাকা হয়ে গেলো। আসতে আস্তে বিয়ে টাও হয়ে গেলো সবাই এই জন্য বলেন Alhamdulillah। আরে আমার সাথে বলতে কে বলেছিলো। আজ আমার বাসর ঘর ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছি আর মনে মনে বলছি ভালো হলো ওই স্বপ্ন টা স্বপ্ন রয়ে গেলো সত্যি হলো না নাহলে আজ মাইশা থাকতো না নাকি থাকতাম আমি আর না থাকতো এই যে এখন যে পড়ছে। তখন আমি বললাম
আমিঃ ওই শোন।
হারামি গুলোঃ কি!
আমিঃ যাচ্ছি।
- কেনো দাড়া যাচ্ছিস কোথায়?
- আরে মাইশা অপেক্ষা করছে।
- দূর বাঁধ দে এত তাড়াহুড়া কিসের ভাবি তো আর চলে যাবে না। (সব গুলো হেসে)
- সালা ছাড় আমায়।
তখন আম্মুর আগমন।
আম্মুঃ কি রে এখনও বসে আছিস।
আমিঃ হ্যা আম্মু যাচ্ছি।
হারামি গুলোঃ আরে আন্টি তাকে কখন থেকে বলছি যা ঘোরে যা ভাবি অপেক্ষা করছে তবুও যায় না।
ইয়া আল্লাহ ঠাডা পড়া মিথ্যে কথা। তার পর রুম এ থাকলাম মানে ঢুকলাম।
দেখি মাইশা বসে আছে গুণ্ডি বউ আমার।
সামনে গেলাম পাও ধরে সালাম করলো।
আমিঃ হয়েছে আর সালাম করতে হবে না জানি টাকার জন্য সালাম করছো আমার জন্য না।
মাইশাঃ যদি আমি বলি আমায় টাকার জন্য বিয়ে করেছিস আমার ভালবাসার জন্য না।
খাইসে এইতো বাপেরো বাপ থুক্কু মানে মা।
আমিঃ সরি আমার গুণ্ডি বউ টা। (পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে)
মাইশাঃ হুমম হয়েছে। (অভিমান কন্ঠে)
আমিঃ সরি বেবি….
মাইশাঃ ……
আমিঃ এই তোমার নাক কান ধরে বলছি আর কখনো বলব না এইসব। (তার কান ধরে)
মাইশাঃ সত্যি।
আমিঃ হুমম। এখন চলো একটা কাজ আছে।
মাইশাঃ এখন কি কাজ…
আমিঃ চলো আগে অজু করে নাও।
তাকে নিয়ে অজু করলাম নামাজ পড়ার জন্য।
আমিঃ জানো আমার একটা স্বপ্ন সত্যি হলো আর একটা মিথ্যে এই দুইটার জন্য আমরা দুই রাকাত নামাজ পড়ব।
মাইশাঃ কোন দুটো! (অবাক হয়ে)
আমিঃ পরে বলবো।
তারপর দুজনে নামাজ পড়লাম।
আমিঃ এখন আর একটা কাজ বাকি আছে।
মাইশাঃ আবার কি কাজ।
আমিঃ ওই যে Intermission
মাইশাঃ মানে (লজ্জা পেয়ে… মনে হয় বুঝতে পেরেছে আপনারা আবার বুইঝেন না)
তারপর ওকে কোলে তুলে নিলাম।
মাইশাঃ দাঁড়াও আমারও একটা স্বপ্ন আছে।
আমিঃ কি।
মাইশাঃ ছাদে চলো।
তারপর দুজনে ছাদে গেলাম অনেক রোমান্টিক কথা বললাম। আপনাদের বলা যাবে না এত শুনার কি আছে! পার্সোনাল কথাও শুনতে হয়।
নামার সময়ে মাইশা পা পিছলে পরে গেলো।
মাইশাঃ আহহহহহহ
আমিঃ দেখে হাঁটতে পড়ো না।
মাইশাঃ সরি আমায় কোলে নেও।
আমিঃ হুমম।
তারপর ওকে কোলে নিলাম নিচে আসলাম। রুম এ ঢুকতেই ও আমার কুল থেকে নেমে দৌড় দিলো। আমি তো অবাক তার মানে সে অভিনয় করছিলো। আমি জোরে দৌড়ে ওকে ধরলাম।
আমিঃ হুমম মজা করা না।
মাইশাঃ ছারো আমায়।
আমিঃ নাহ কোনো ছাড়া ছাড়ি নেই আজ।
ওকে কোলে নিয়ে বিছানায় আসলাম পরে শুয়ে দিলাম। ওর উপরে আমি উঠলাম ওর এত কাছাকাছি চলে এসেছি যে ওর নিশ্বাস আমার মুখে পড়ছে। ওর চোখে চোখ রেখে ওর ঠোঁটে ঠোঁট মিলে দিলাম। পরে ওর ঘাড়ে একটা কিস করলাম সে কেঁপে উঠলো সাথে সাথে হারিয়ে গেলাম অজানা দেশে।
ধন্যবাদ গল্পটা পড়ার জন্য। আশা করি এই প্রেমের উপন্যাস আপনাদের ভালো লেগেছে।
কমিশনারের মেয়ের প্রেমে
লেখকঃ সামির হোসাইন
আরো পড়ুন – আবেগি ভালোবাসার গল্প