রাগী মেয়ের ভালোবাসা – অফিসের বসের সাথে প্রেম পর্ব ২: অফিসের বস যেকিনা রাগ ও দৌড়ের উপর রাখে সবাইকে সবসময়। আর সবচেয়ে নির্যাতিত, অপমানিত আর অবহেলিত মানুষ ছিলাম একমাত্র আমি। এমন কোন দিন কাটে নি যেদিন ম্যাম আমার সাথে খারাপ বিহেভ করে নি। প্রচণ্ড মন খারাপ হতো ঠিকি কিন্তু তার প্রতি এক ধরনের দূর্বলতা ও ভালো লাগা ছিল আমার একমাত্র প্রশান্তি। কথায় আছে না, যারে ভালো লাগে তার হাজার রাগ, গালি হজম করা যায়। যাইহোক অবহেলা আর অপমানের মধ্যে দিয়ে আমার প্রতি তার ভালোলাগা শুরু হয়, বলতে গেলে প্রেমে পড়ে। তবুও শিওর নই, চলুন দেখি কি হয়?
ভালোবাসার কান্না
আমিঃ ম্যাম আমি চলে যাই।
এ কথা বলতেই ম্যাম আমার গলা চেপে ধরলো।
ম্যামঃ কই যাবি, হ্যা। কই যাবি? এখানে চুপচাপ বসে থাক। না হলে গলা চেপে মেরে ফেলবো কুত্তা। ওই ডাইনিটার কাছে যাইতি তাইনা। তাতো আমি হতে দিব না। এখানে চুপ করে বসে থাক।
ওনি গলা চেপে ধরাতে আমি কেশে উঠলাম। আর ওনি আমাকে পানি খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে পরলেন।
ও খোদা তুমি কোথায় আর কতক্ষণ বসিয়ে রাখবে এভাবে। কিছুক্ষণ পরপর শুধু কফি খাওয়াচ্ছেন। আর বসে বসে কান্না করছেন।
আমার এখন কাজ হচ্ছে কফি খাওয়া। আর ওনার কান্না দেখা। আল্লা তুমি রক্ষা করো। এই মেয়েতো আমাকে মেরে ফেলবে। আর কতক্ষণ বসিয়ে রাখবেন?
ওই দিকে ইরা নিজ হাতে রান্না করে এনেছে। ভাবতেই, জিভে জল এসে গেছে। এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে একা থাকি। বাবা-মা গ্রামে থাকে। বুয়ার হাতের রান্না খেতে খেতে জীবন শেষ।
নাহ ইরার হাতের রান্না মিস করা যাবেনা। এই দিকে ম্যামও আমাকে ছাড়ছে না।
এবার ম্যাম কে বললাম,
আমিঃ ম্যাম আর কতক্ষণ বসিয়ে রাখবেন। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতে চললো। কিছুতো খেতে হবে। ওই দিকে ইরা নিজ হাতে আমার জন্য রান্না করে এনেছে। এখনো হয়তো
খাবার নিয়ে বসে আছে। প্লিজ, যেতে দিন।
এই কথা বলে মনে হয় বড় রকমের ভুল করে ফেলেছি।
ম্যাম তার রক্ত বর্ণ চোখগুলো বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। কিছুক্ষণ চুপ চাপ। এরপর আমার দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ ম্যাম চিৎকার করে বলে উঠলো,
ম্যামঃ কি বললি তুই?
এই বলে ডয়ার থেকে একটা চাকু বের করে আমার গলার দিকে ধরলো।
আমিঃ কি করছেন ম্যাম, পোচ লেগে যাবে তো, নামান।
ম্যামঃ কি বলেছিলি আবার বল?
আমিঃ আমাকে কিন্তু ভয় দেখাবেন না।
ম্যাম অগ্নী মূর্তি ধারণ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি যাই বলি না কেন ম্যামের সামনে গেলে ওনার গম্ভীর চেহারা দেখলে ভয়ে একেবারে চুপসে যাই।
সংরক্ষিত ভালোবাসা
ম্যামকে দেখলাম, কাকে যেন ফোন করে খাবারের অর্ডার দিল।
কিছুক্ষণ পর খাবার চলে আসলো।
আহা খাবার দেখে জিভে পানি চলে আসছে। ইচ্ছা করছে খাবারের উপর লাফ দিয়ে পরি। ফরমালিটির জন্য চুপচাপ বসে আছি।
ম্যামঃ কি হলো, বসে আছ কেন? হাত ধোও।
আমি হাত ধুতেই ম্যাম নিজ হাতে খাবার তুলে দিলেন।
আমি আমার মতো খেয়ে শেষ করলাম। ম্যাম ও আমার সাথে খেলেন, তবে অল্প।
ম্যামঃ এবার যাও। তবে ইরা, নাহার আর রুমার আশেপাশে যেন না দেখি।
আমি সুযোগ পেয়ে একপ্রকার দৌড়েই চলে আসলাম।
আপনারা কি মনে করেছেন, নিলা ম্যামের মিষ্টি কথায় আমি আগের সব কিছু ভুলে গেছি, মোটেও না। ওনার মায়া জালে আমি আর জরাচ্ছি
না।
ম্যামের কেবিন থেকে বের হতেই কতগুলো উৎশুক মুখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
তারা হয়তো জানতে চাচ্ছে ভিতরে এতক্ষণ কি হলো।
আমি আমার ডেক্সে এসে বসতেই ইরা আর ফয়সাল আমার ডেক্সে আসলো।
আমিঃ ইরা আমি সরি। তোমার সাথে খেতে পারলাম না।
ইরাঃ আমি কিন্তু এখনো না খেয়ে আছি আপনার জন্য। চলুন ভাইয়া।
আমিঃ পাগলি বোন আমার, আমি ম্যামের কেবিনে খেয়েছি। ম্যাম জোর করে খাইয়েছে। তুমি ফয়সাল ভাইকে নিয়ে খে…
রাগ ও অভিমানের পালা
ইরা ফয়সালের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
ইরাঃ ওনার কি আমার সাথে খাওয়ার সময় আছে নাকি! ওনার তো নাহার আর রুমা আছে।
ফয়সালঃ আমিও কিন্তু এখনো খাইনি, চলো?
ইরাঃ আমি খাবো না আপনার সাথে। যান, রুমা আর নাহারের কাছে।
ফয়সালঃ আমার কিন্তু খুব খিধা লেগেছে। চলনা, প্লিজ।
আমিঃ ইরা যাও। তোমাদের দুজনেরই এখন আনেক খিধা। আগে গিয়ে খাও ওসব বিষয় পরে কথা বলা যাবে।
ইরা ফয়সালে দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল, চলুন। বলে হাটা ধরলো। আর ফয়সাল পিছে পিছে চ…
আমি আনমনে হাসছি আর ভাবছি, এদের ভিতর কিছু একটা ঘটতে চলছে। কৌতুহল বসত ইরার ডেক্সে গেলাম।
আহা কি সুন্দর খাবার সামনে রেখে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমিঃ আমি হালকাভাবে কাশি দিয়ে বললাম, “খাবার সামনে রেখে বসে থাকতে নেই।”
আমার কথায় দুজনের শুভ দৃষ্টির বাধা ঘটলো। দুজনই বেস লজ্জা পেয়ে গেল।
ফয়সালঃ তুমি মিয়া আসার আর সময় পেলে না। নিজে তো পেট পুজারি করে এসেছো এখন আমাদের খেতে দাও।
আমিঃ ও সিওর সিওর খাও।
আমি কি সাহায্য করবো? ফয়সাল ভাই আমার দিকে রাগী চোখে তাকালো।
আমিঃ আচ্ছা খাও খাও। আমি পরে আসি।
এরপর আমি আমার ডেক্সে এসে কাজে মন দিলাম।
ম্যামের সাথে যাতে দেখা না হয় তাই তাড়াতাড়ি বের হয়ে গেলাম।
ভালোবাসার শাসন
রাতে আর বাসায় খেলাম না।
ম্যাম যা খাওয়ালো তাতে দু’দিন অনায়াসে থাকা যাবে।
এরপর রাতে সুন্দর একটা ঘুম দিলাম।
সকালে যথা সময় অফিসে চলে এসেছি। ম্যাম এখনো আসেনি। তাই ফয়সাল আর ইরাসহ বাকিদের সাথে কুশল বিনিময় করে কাজে মন দিলাম।
কিছুক্ষণ পর ম্যাম আসলো।
আমরা সবাই দাড়িয়ে গেলাম।
ম্যামকে দেখলাম, আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে তার কেবিনে চলে গেল। আমি আবার কি করলাম? কে জানে?
ওই দিকে আমার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
আমি আমার মতো কাজে মনোনিবেশ করলাম।
একটা ফাইল জমা দিব। তাই ম্যামের সাইন লাগবে।
ওনার কেবিনে আমার যেতেই মন চায় না। অন্যকে দিয়েও পাঠাতে পারবো না।
অগ্যতা আমাকেই যেতে হলো।
আমিঃ ম্যাম আসবো।
ম্যামঃ হ্যা আসুন। আপনার জন্যই তো ওয়েট করছি।
আমি কাছে যেতেই ম্যাম চেয়ার থেকে উঠে আমার কলার ধরলো।
একটানে ওনার মুখের কাছে নিয়ে আসলো। ওনার প্রতিটা নিঃশ্বাস আমি অনুভব করতে পারছি। আমার হার্টবিট যেন ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে।
ম্যামঃ ওই তুই কালকে আমাকে না বলে গেলি না কেন?
খুব বিরক্ত লাগছে আমার। আমি কলার থেকে হাত নামাতে নামাতে বললাম,
আমিঃ দেখুন, আমার এসব ভালো লাগছে না। সরুন, ম্যাম। (আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে)
ম্যামঃ এসব ভালো লাগবে কেন? তোকে তো থাপ্পর দেওয়া উচিৎ।
আমিঃ তা-ই দেন। এর থেকে বেশি কিছু আপনার থেকে আশা করা যায় না।
আমার কথায় কিছুটা আঘাত পেয়েছে। দেখলাম, ম্যামের চোখের কোন থেকে কিছুটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
আমি ফাইল রেখে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।
আমার ডেক্সে এসে বসলাম। নাহ, ফাইল তো জমা দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। ফাইলগুলো আমার উপরের কর্মকর্তা আলামিন ভাইর কাছে জমা দিতে হয়। ওনি এসব হ্যান্ডেল করেন।
মায়া ও স্নেহ
কিছুক্ষণ পর পিওনকে পাঠালাম ম্যামের কেবিনে ফাইল আনতে।
পিওন ফাইল নিয়ে আসলো।
আমি ফাইলগুলো আবার চেক করার জন্য খুলতেই অবাক! ফাইলের পেপারগুলো বিজে জট লেগে গেছে। ভালো করে দেখে বুঝলাম ম্যামের চোখের পানি।
কি মছিবত? ওনি কি আমাকে শান্তিতে থাকতে দিবেন না।
আমি দিলাম সাইন করতে আর ওনি কান্না করে ফাইলের ভিতর সাগর তৈরি করেছেন।
কি আর করার এগুলো এখন আবার শুকাতে হবে।
পেপার গুলো খুলে একটা একটা করে ফ্যানের সামনে ধরলাম।
পাসের ডেক্সের জহিরুল ভাই দেখে বলল, কি ব্যাপার জনি ভাই? এগুলো ভিজলো কিভাবে?
আমিঃ কি আর বলবো দুঃখের কথা ভাই, হাতের সাথে পানির গ্লাস লেগে ফাইলে পরলো তারপর যা হওয়ার তা তো দেখতেই পাচ্ছেন। (সত্যি কথা তো আর বলা যায় না)
অন্য দিকে দু’জোড়া চোখ আমার আর ম্যামের সব কাহিনী দেখেছে। তারা হলো ইরা আর ফয়সাল। ওরা দুজন মুচকি মুচকি হাসছে। একেই বলে “কারো পোষ মাস কারো
সর্বনাশ।”
অনেকক্ষণ ফ্যানের সামনে পেপারগুলো ধরে শুকালাম।
দুপুরে আবার ডাক পরলো ম্যামের কেবিনে।
আমিঃ আসবো ম্যাম?
ম্যামঃ হ্যা আসো।
ম্যামের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ম্যামের চোখগুলো লাল হয়ে আছে। হয়তো কেদেছে।
আমিঃ আমাকে ডেকেছিলেন?
ম্যাম আমার পানে চেয়ে শান্তভাবে বলল,
ম্যামঃ এখানে বসো।
আমি বসলাম,
আমিঃ এখানে কি কোনো কাজ আছে আমার?
ম্যামঃ চুপ করে বসে থাকতে পারো না।
আমিঃ শুধু শুধু কেন বসে থাকবো?
এমন সময় দেখলাম পিওন খাবার নিয়ে আসলো।
ম্যাম আমার দিকে প্লেট এগিয়ে দিয়ে বলল
ম্যামঃ হাত ধোও।
আমিঃ কেন?
ম্যামঃ খাবে না।
আমিঃ হ্যা, বাইরে থেকে খেয়ে নেব।
ম্যামঃ না, এখানে খাবে।
আমিঃ দেখুন, আমি না আপনার কাজিন না আপনার বন্ধু। আপনার আর আমার মাঝে সম্পর্ক হলো মালিক-কর্মচারী। তাই আমি খেতে পারবো না।
এই বলে চেয়ার থেকে উঠে চলে আসতে যাব তখন ম্যাম আমার হাত ধরে ফেলল।
পাগলামি ভালোবাসা
ম্যামঃ তুমি ভালো করেই জান, কেন আমি এমন করি? তোমার কথাবার্তা আমাকে খুব হার্ট করে। সকালের জন্য এমনেই রেগে আছি। তাই এখন আর নতুন করে রাগীও না আমাকে।
এই বলে ম্যাম একটান দিয়ে আমাকে বসিয়ে দিল। নিজ হাত দিয়ে আমার হাত ধুইয়ে খাবার বেরে দিল।
আমি চুপচাপ বসে আছি। কেননা, ওনি যেই বদ রাগী মেয়ে কখন কি করে বসে তার ঠিক নেই।
ম্যামঃ কি হলো বসে আছ কেন? ও বুঝেছি।
আমি ম্যামের দিকে তাকালাম। ওনি আবার কি বুঝলেন? আমি ভাবনা থেকে বের হতেই দেখি ম্যাম আমার মুখের সামনে ভাত ধরে আছে।
ম্যামঃ কি হলো হা করো?
আমিঃ না ম্যাম, আমি নিজেই খাচ্ছি।
ম্যামম কিছুটা রাগী স্বরে বললো,
ম্যামঃ আমি হা করতে বলছি।
আমি ও হা করলাম। এরপর তিনি গফাগফ খাবার মুখে তুলে দিতে লাগলো।
আমাকে খাইয়ে দেওয়ার পর অবাক করে দিয়ে ওনি ওনার ওরনা দিয়ে মুখটা মুছে দিল।
যেন আমার বৌ তার আচল দিয়ে মুছে দিল। এখন দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না ওনি এতটা বদ রাগী।
আমি চলে আসতে যাব তখন আবার আমার হাতটান দিয়ে ওনার খুব কাছে নিয়ে আসলো।
আমার কপালের সাথে ওনার কপাল ঠেকালো। তারপর শান্ত ভাবে বলল,
ম্যামঃ খুব ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়। তোমাকে খুব করে পেতে ইচ্ছে করে। খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করে। একটু ভালোবাসো আমাকে।
এই বলে জড়িয়ে ধরলো। ম্যামের চোখে আমি পানি দেখতে পেলাম।
নাহ ওনার এতটা কাছে থাকলে নিজেকে কন্টোল করতে পারবো না।
তাই ওনার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে চলে আসলাম।
ভালোবাসার জ্বালা
ম্যাম আমার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে বলতে লাগলো “তোমাকে তো আমার করেই ছাড়বো। দেখবো, আমার ভালোবাসা উপেক্ষা করে কিভাবে দুরে যাও?
এই বলে ম্যাম একটা দুষ্টু হাসি দিল।
এভাবেই দিনগুলো যেতে লাগলো।
আর ম্যামের পাগলামিও দিনদিন বারতে লাগলো
এরকমই একদিন ম্যামের কেবিন থেকে দুপুরে খেয়ে বের হয়ে আমার ডেক্সে যাচ্ছিলাম।
আমার ডেক্সে যেতে হলে ইরার ডেক্স পেরিয়ে যেতে হয়।
তো ইরার ডেক্সের কাছে যেতেই দেখি ইরা কান্না করছে। ইরা কান্না করে একাকার করে ফেলেছে। চোখ ফুলে লাল হয়ে গেছে।
আমি কাছে গেলাম।
আমিঃ ইরা কি হয়েছে? এভাবে কান্না করছো কেন?
ইরাঃ ভাইয়া, ফয়সাল নাহারের সাথে লান্স করতে গেছে।
এই কথা বলে ইরা আরো কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।
মেয়েটা একেবারে সহজ সরল।
আমিঃ হ্যা, যেতেই পারে। কলিগ যেহেতু যেতেই পারে। সমস্যা কি?
ইরা রাগান্নিত স্বরে বললো,
ইরাঃ কলিগ হলেই যেতে হবে নাকি! ও কেন যাবে? ও নাহারের সাথে যেতে পারবে না, ব্যাস।
এই কথা বলে ইরা আবার মাথা নিচু করে ফেললো।
আমি ওর মাথাটা উচু করে ধরে বললাম,
আমিঃ আমার দিকে তাকাও তো। এই তো ঠিক ধরেছি। তুমি ফয়সালকে ভালোবাস, তাই না।
ত্রিভুজ প্রেমের যাতনা
ইরা মাথা নারিয়ে হ্যা সম্মতি জানালো।
আমিঃ তা ওকে বলো না কেন?
ইরাঃ কেন উনি বোঝে না?
আমিঃ শোনো, যত তাড়াতাড়ি পার ওকে বলে দাও।
ইরাঃ হ্যা বলবো। তার আগে ওনার সাথে হিসাব নিকাশ চুকাব? কেন ও নাহারের সাথে গেল?
আমিঃ আচ্ছা, আমি চলি। তবে দেরি না করে বলে দিও।
এরপর আমি আমার ডেক্সে চলে আসলাম।
আমি জানি, ফয়সালও ওকে ভালোবাসে। একদিন কথায় কথায় বলেছিল আমাকে।
আমি ফয়সালকে কল দিলাম।
ফয়সালঃ হ্যা ভাই, বলো।
আমিঃ রাখো তোমার ভাই। তুমি নাহারকে নিয়া টাংকি মারতে গেছ। আর এই দিকে ইরা কান্না করে শেষ।
ফয়সালঃ বলো কি? আমি আসছি।
কিছুক্ষণ পর ফয়সাল চলে আসলো।
সোজা ইরার ডেক্সে চলে গেল।
ইরা এখনো কাদছে।
ফয়সালঃ কি হয়েছে? তুমি কাদছো কেন?
ইরার রাগ অভিমান আরো বেরে গেল।
ইরা উঠেই ফয়সালের গলা চেপে ধরলো। তারপর শুরু করলো
ইরাঃ “কুত্তা, সুওর, শয়তান, বিড়াল তুই আমাকে রেখে ওই পেত্নিটার সাথে গেছোস কেন? তোকে আজ আমি মেরে ফেলবো।
এই বলে ইরা ফয়সালকে মারতে লাগলো। একপর্যায় ফয়সাল ইরাকে বুকের মাঝে চেপে ধরলো।
আর ইরা একেবারে শান্ত হয়ে গেল।
কান্না করে ফয়সালের বুক ভাসাচ্ছে।
ইরাঃ আপনি বোঝেন না কেন, আমি আপনাকে ভালোবাসি?
ফয়সাল ইরার কপালে চুমো দিয়ে বলল,
ফয়সালঃ পাগলি, আমি জানি তো। আমিও তো তোমাকে ভালোবাসি। তাইতো নাহারের সাথে গিয়েও ওর সাথে খাইনি। তোমার সাথে খাব বলে। আর আমি এটাও জানি, তুমিও এখনো খাওনি। চলো খুদা লেগেছে।
ইরাঃ আর যদি দেখি না ওর সাথে একে বারে খুন করে ফেলবো। খালি কষ্ট দেয় আমাকে। এখন চলেন আমারো খুব খুদা লেগেছে আপনার উপর জিদ করে। আমি এখনো খাইনি এখন আমাকে খাইয়ে দিবেন।
আমি দুর থেকে ওদের এসব কান্ড দেখে তৃপ্তিময় একটা হাসি দিল…চলবে…
পরের পর্ব- অফিসের বসের সাথে প্রেম পর্ব ৩