মিষ্টি প্রেমের গল্প

মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৩ | স্যারের সাথে প্রেম | Love Story Bangla

মিষ্টি প্রেমের গল্প পর্ব ৩: গত পর্বে আমরা দেখেছি কিভাবে মিষ্টি এবং রোদ (স্যার) এর মাঝে ঝগড়া ও প্রতিশোধ হয়। মিষ্টি যে একটু একটু করে ভালবাসার জালে জড়িয়ে পড়েছে তার আভাস এবং মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছিলাম। আজ দেখি কতদূর যায় তাদের এই মিষ্টি প্রেমের শুরু।

গত পর্বের পর, তারপর রোদের মা খাবার আনতে চলে যায়। আর রোদ ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ওরও প্রচুর রাগ হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর বের হয়ে চুপচাপ খাবার খেয়ে ল্যাপটপে কাজ করা শুরু করে। কিন্তু কাজে মন বসছে না। তাই চোখ বুঝে ঘুমিয়ে পড়ে।

মিষ্টি প্রেমের টক প্রতিক্রিয়া

পরেরদিন সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি ভার্সিটিতে চলে যাই। গেটের কাছে আসতেই রাকিবের সাথে দেখা হয়।


রাকিবঃ হাই মিষ্টি। কেমন আছো?

মিষ্টিঃ ভালো।

রাকিবঃ আমাকে জিজ্ঞাসা করলে না যে আমি কেমন আছি?

মিষ্টিঃ প্রয়োজন নেই। তাই করিনি।

রাকিবঃ দেখো মিষ্টি আমি জানি তোমার মন খারাপ।

মিষ্টিঃ আমার মন খারাপ! তোমায় বললো কে?

রাকিবঃ কালকে স্যার তোমাকে ক্লাস থেকে বের করে দিসে তাই তোমার মন খারাপ। তাই তো!

মিষ্টিঃ তোর মাথা। আমার কোন মন খারাপ টারাপ নাই। তুই যা তো এখান থেকে। (তারপর, পাশ কাটিয়ে চলে যায়)


মাঠে আসতেই মুনের সাথে দেখা হয়। সে তো দেখি আজকেও মুডে আছে আমাকে নিয়ে পচানোর। আজকে আর তোকে ছাড়ছি না।


মুনঃ এই মিষ্টি। এইদিকে আয়।

মিষ্টিঃ কিরে তুই এইখানে কেনো? (মুনের কাছে গিয়ে)

মুনঃ দেখ এইটারে। (ফাস্ট ইয়ারের একটা ছেলেকে দেখিয়ে)

মিষ্টিঃ এইটা ফাস্ট ইয়ারে পড়ে না।

মুনঃ হুম।

মিষ্টিঃ কিন্তু ধরছিস কেনো ওরে? কি করছে ও?

মুনঃ দেখ! ও তোরে চিঠি লিখছে।

মিষ্টিঃ কিসের চিঠি?

মুনঃ ভালোবাসার!

মিষ্টিঃ কিহহ! ওই ছেমড়া আমি তোর সিনিয়র তুই জানোস না। তবুও তুই আমারে চিঠি দেস কোন সাহসে হ্যা। (রেগে)

ছেলেটাঃ সরি। আমার আপনাকে অনেক ভালো লাগে। তাই আপনাকে চিঠি লিখছিলাম। আসলে আমি বুঝতে পারিনি। আপনি রেগে যাবেন।

মিষ্টিঃ বুঝতে পারিসনি মানে! এবার সবার সামনে কানে ধইরা উঠবস করবি তুই। আর আমি তোর আপু হই। তাই আমারে আপু বলবি।

ছেলেটাঃ সরি আপু। আমার ভুল হয়ে গেছে। কানে ধরতে বইলোনা। প্লিজ।

মিষ্টিঃ তুই কানে ধরবি। আর একশোবার উঠবস ও করবি। যদি না করিস তাহলে আরো বড় শাস্তি দিমু তোরে। এখন বল তুই কানে ধরবি কি না। (রেগে)

ছেলেটাঃ আচ্ছা আপু। আমি এখনি ধরছি।


মিষ্টি বনাম রোদ

বলে ছেলেটা উঠবস করতে শুরু করলো। পঞ্চাশ বার করার পর ওর অবস্থা নাজেহাল। তখনই কোথা থেকে খাম্বাটা এসে ধমক দিয়ে বলল-


রোদঃ কি হচ্ছেটা কি এখানে? (জোরে)

সবাই পিছনে তাকিয়ে দেখি খাম্বাটা।

মিষ্টিঃ (যেখানেই যাই পিছন পিছন ঠিক চইলা আসবে খাম্বাটা। মনে মনে ) কেন? এখানে যাই হোক, তাতে আপনার প্রবলেম কি হ্যাঁ? এখানে যা ইচ্ছা তাই হবে। আপনি আসছেন কেন এখানে? (রেগে)

রোদঃ তোমরা ওকে এভাবে কানে ধরিয়ে উঠবস করাচ্ছো কেনো?

মিষ্টিঃ ও আমাকে (মুখের কথা কেড়ে নিয়ে)

মুনঃ আসলে স্যার এই ছেলেটা মিষ্টিকে চিঠি দিছে। তাই মিষ্টি ওরে শাস্তি দিচ্ছে।

রোদঃ কিসের চিঠি?

মুনঃ লাভ লেটার স্যার।

ছেলেটাঃ সরি স্যার। আমি আর এমন করবোনা। আপু সত্যি সরি।

মিষ্টিঃ কোন সরি টরি না। উঠবস কর তুই।

রোদঃ তোমরা সবার সামনে এই ছেলেটাকে এভাবে অপমান করছো কেন? ছেলেটাতো সরি বলছে নাকি?

মিষ্টিঃ তাতে কি হইছে। ওরে একশোবার উঠবস করতেই হবে।

রোদঃ এটা বেশি হয়ে যাচ্ছে।

মিষ্টিঃ আপনি এতো কথা কেনো বলছেন বলেন তো।

রোদঃ চুপ। আর একটা কথা ও না। যাও ক্লাসে যাও।

মিষ্টিঃ আমি যাবো না।

রোদঃ আমি যেতে বলেছি। (রেগে)

মুনঃ মিষ্টি বেশি কথা বলিস না। চল স্যার রেগে গেছে। পরে আরো বকবে।


অল্প অল্প ভালবাসার গল্প

এই বলে আমাকে টেনে ক্লাসে নিয়ে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর স্যার ক্লাসে এসে পড়ানো শুরু করলো। সবাইকে পড়া জিজ্ঞাসা করছে। সবাইকে কতো সহজ সহজ প্রশ্ন ধরছে। আর আমাকে এতো কঠিন একটা প্রশ্ন করছে যে আমি বলতেই পারছি না। অথচ সবাইকে যা জিজ্ঞাসা করছে তা আমি খুব ভালো করেই পারি। খালি আমাকেই ইচ্ছা করে আনকমন একটা প্রশ্ন ধরছে যাতে আমি না পারি। খাটাশ! বজ্জাত একটা।

আমাকে প্রশ্ন করে তাকিয়ে আছে। আর আমিতো পারছি না রাগে দুঃখে কান্না করে দিতে। আমি পারিনি দেখে খাম্বাটা আমাকে পুরো ক্লাস দাঁড় করিয়ে রাখলো। ইচ্ছা করে এইগুলা করলো। আমাকে অপমান করতে করলো। আবার খাম্বাটা মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। আমার তা দেখে গা জ্বলে যাচ্ছে। ইচ্ছা করছে পচা পানিতে খাম্বাডারে চুবাইতে। আমি যদি এর শোধ না তুলছি তাহলে আমার নামও মিষ্টি না। (নাক ফুলিয়ে চোখ মুখ লাল করে দাঁড়িয়ে আছি। )

ক্লাস শেষ করে আমি আর মুন বাড়ি যাওয়ার সময় পার্কিং জোনে খাম্বার গাড়ি দেখে আমার রাগটা আরো বেড়ে গেলো। ব্যাস রাস্তার পাশে ইটের টুকরা দিয়ে দিলাম গাড়ির কাচ ভেঙে।


মুনঃ এইটা তুই কি করলিটা কি মিষ্টি।

মিষ্টিঃ একদম ঠিক করছি। খাম্বায় আজকেও আমারে অপমান করছে। পুরা ক্লাস দাঁড়ায় ছিলাম। তুই কি ভাবছোস? খাম্বারে কি আমি এমনি এমনি ছাইড়া দিমু।

মুনঃ কিন্তু এইটা স্যারের গাড়ি ছিলো। স্যার যদি জানতে পারে তোরে কি করবো আল্লাহ্‌ই জানে।

মিষ্টিঃ স্যার আমারে..


চলবে….

পরের পর্ব: মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৪ | স্যারের সাথে প্রেম

সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *