রোমান্টিক লাভ স্টোরি – সিনিয়র আপু যখন বউ – পর্ব ২: গত পর্বে আপনারা আমার প্রতি সিনিয়র আপু রিমঝিমের রাগ, অভিমান, শাসন এবং কেয়ারিং দেখেছেন। কেনই বা রিমঝিম আপু আমার জন্য এত কিছু করছে? কি উদ্দেশ্যে করছে? চলুন রহস্য জানার চেষ্টা করি।
রাগ ও অভিমান
তারপর রিমঝিম আপু আমার কাছে এসে আমার মুখের সামনে খাবার ধরলো।
রিমঝিম আপুঃ নে খেয়ে নে।
আমিঃ করুণা করছেন?
রিমঝিম আপুঃ করুণার কি দেখলি। (একটু রেগে রিমঝিম আপু)
আমিঃ যা করছেন সবি তো করুণা। না হলে একদিনের চেনা জানায় আপনি আমাকে এখানে খাওয়াইতে নিয়ে আসতেন না। এটা করুণা ছাড়া কি?
এরপর আপু রাগ করে সব খাবারে পানি ঢেলে দিলো।
রিমঝিম আপুঃ চল খেতে হবে না তোকে।
বিল দিয়ে আমার হাত ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসলো।
রিমঝিম আপুঃ বাসায় চলে যা।
আমি কিছু না বলে ওখান থেকে হাটতে ধরলাম।
কি মেয়েরে বাবা নিজেই ডাকলো আবার নিজেই তাড়িয়ে দিলো।
বড়লোক তো তাই মনে হয় অন্যের জীবন নিয়ে চিন্তা করে না। শুধু নিজের মর্জিতে সবাই কে চালাতে চায়। কি জন্য যে কলেজে আসলাম। (মনে মনে ভাবলাম আমি)
ভালো লাগছিলো না তাই আর বাসায় গেলাম না। দুইটা সিগারেট কিনে নদীর পারে গিয়ে বসলাম।
সিগারেট ধরিয়ে গাছের নিচে বসে নদির পানি চলা চল দেখতে লাগলাম।
অভিমানী শাসন
একটু পর ফোনটা বেজে উঠলো। আননোন নাম্বার। ফোনটা রিসিভ করলাম।
ফোনটা রিসভ করার পর ওপাশ থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠ শুনতে পেলাম। কথা শুনে বুঝতে পারলাম রিমঝিম আপু।
রিমঝিম আপুঃ কই আছিস?
আমিঃ কে আপনি? (না চেনার ভান করে)
রিমঝিম আপুঃ কই আছিস সেটা বল, এসে দেখাচ্ছি আমি কে?
আমিঃ নদীর ধারের গাছের নিচে বসে আছি।
রিমঝিম আপুঃ দাঁড়া, আমি আসছি। কোথাও যাবি না।
প্রায় ১০ মিনিট পর রিমঝিম আপু আসল।
রিমঝিম আপুঃ এখানে কি করিস?
আমিঃ বসে আছি। কেন বলুন তো?
রিমঝিম আপুঃ তোর হাতে ওটা কি?
আমিঃ কই কিছুই তো নয়।
রিমঝিম আপুঃ সত্যি বল হাতে কী?
আমিঃ সিগারেট।
আপু সিগারেটটা নিয়ে ফেলে দিলো আমার হাত থেকে।
রিমঝিম আপুঃ আজকের পর থেকে কোনোদিনও জেনো আমার সামনে সিগারেট খাওয়া না দেখি।
কিছু না বলে চুপ করে রইলাম বসে রইলাম।
রিমঝিম আপুঃ বাসায় যাবি না?
আমিঃ বাসায় গিয়ে কি করবো?
রিমঝিম আপুঃ বাসায় গিয়ে নাচবি আর কী করবি!
আমিঃ আমার বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না।
বিরক্তি ও ধমক
আপু আমার পাশে বসে পরলো। তারপর বললো,
রিমঝিম আপুঃ সরি, তখন তোকে রাগ দেখানোর জন্য।
আমিঃ এসব কথা বাদ দেন তো। অভ্যাস আছে, আমি কিছু মনে করি নি।
রিমঝিম আপুঃ হুম আসলে তুই তখন ওই কথাটা বলার পর মেজাজটা খুব খারাপ হয়ে গেছিলো।
আমিঃ ভূল তো কিছু বলেছিলাম না।
রিমঝিম আপু আমার দিকে তাকালো।
রিমঝিম আপুঃ কি বলবি আবার বল! কিন্তু এই কথাটা জেনো তোর মুখে আর কোনোদিন না শুনি, বুঝলি।
আমিঃ হুম বুঝলাম। আপনি বাসায় যাবেন না?
রিমঝিম আপুঃ যাব। কিন্তু এটা বল তুই আমাকে আপনি করে বলিস কেনো?
আমিঃ তাহলে কি বলবো?
রিমঝিম আপুঃ তুমি করে বলবি।
আমিঃ আপনি আমার সিনিয়র আপনাকে আপনি বলেই ডাকা আমার মনে হয় উচিত হবে।
রিমঝিম আপুঃ বলছিনা, আপনি বলবি না। কানে কথা যায় না তোর। (জোরে চিল্লানি দিয়ে আপু)
রিমঝিম আপুর চিল্লানি শুনে বুকটা কেপে উঠলো। খুব ভয় পেয়ে গেয়েছিলাম।
আমিঃ আচ্ছা ডাকবো না। আজ থেকে তুমি বলেই ডাকবো।
রিমঝিম আপুঃ হুম, মনে থাকে জেনো।
অনেক্ষন ধরে দুজনে চুপচাপ বসে রইলাম।
একটু একটু প্রেম
নদীর ধারে হালকা বাতাস বইছে খুব সুন্দর লাগছে।
আমিঃ জানো রিমঝিম, আমার বাবা আমাকে ছোট থাকতে বিকেলে করে প্রতিদিন এখানে ঘুরতে নিয়ে আসতেন আমাকে।
রিমঝিম আপুঃ মন খারাপ করিস না। দেখবি তোর সাথে এখন থেকে যা হবে সব ভালো হবে।
হটাৎ করে রিমঝিম আপু আমার কাধে মাথা রাখলো। ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত লাগলো। আমি চুপ করে রইলাম।
রিমঝিম আপুঃ আজ থেকে কখনো নিজেকে একা মনে করবি না। এখন থেকে সব সময় আমাকে তোর পাশে পাবি, কথা দিলাম।
আমি কিছু না বলে একটা মুচকি হাসলাম। আমার মুখের দিকে রিমঝিম আপু বললো,
রিমঝিম আপুঃ কি হলো হাসছিস কেনো?
আমিঃ না, এমনি।
রিমঝিম আপুঃ চল, এখন বাসায় যাবো।
আমিঃ হুম, চলো।
রিমঝিম আপু আমাকে রাস্তার মোড়ে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো। দোকান থেকে কিছু খাবার কিনে রাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলাম।
তারপর ল্যাপটপটা নিয়ে কাজ করতে লাগলাম।
খবরদারি ও পাগলামি
একটু পর ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনটা ধরলাম।
রিমঝিম আপুঃ কি করিস এখন?
আমিঃ এই তো ল্যাপটপে বসে কাজ করি।
রিমঝিম আপুঃ খেয়েছিস কিছু?
আমিঃ হুম, খেয়েছি।
রিমঝিম আপুঃ ওহ ভালো। আচ্ছা রাখছি, কাল কলেজে আসবি কিন্তু?
আমিঃ ওকে আসবো।
আমিঃ ফোনটা রেখে দিলাম আমি আবার কালকে কলেজে যাব। যে প্যারা নিলাম হুদাই সেই প্যারা আবার নিতে যাবো। (মনে মনে)
কাজ শেষ করে আর বাইরে বের হলাম না বাসায় কাটিয়ে দিলাম।
রাতে রান্না করে খেয়ে নিজের কাজ করতে লাগলাম। সকালে ফোনটা বেজে উঠলো।
ফোনের নাম্বার না দেখেই কানের কাছে নিলাম।
আমিঃ হ্যালো, কে বলছেন?
রিমঝিম আপুঃ কই রে তুই?
আমিঃ বাসায় শুয়ে আছি।
রিমঝিম আপুঃ এখনো ঘুমাচ্ছিস কয়টা বাজে খেয়াল আছে।
আমিঃ কয়টা? (ঘুমের ঘোরে আমি)
রিমঝিম আপুঃ ৯ টা বাজে তাড়াতাড়ি কলেজে আয়।
আমিঃ না, কলেজে যাব না। ভালো লাগছে না। (বলেই ফোনটা কেটে দিয়ে আবার ঘুমিয়ে পরলাম)
প্রায় ২০ পর কলিং বেলের শব্দ পেলাম।
আমার বাসায় তো কেউ তেমন আসে না।
হটাৎ বিয়ের পাগলামি
ঘুম ঘুম চোখে গিয়ে দরজাটা খুলে দিয়েই চমকে গেলাম। কারণ রিমঝিম আপু দাঁড়িয়ে।
আমিঃ আরে তুমি এখানে?
রিমঝিম আপুঃ তোকে না বলেছিলাম কলেজে আসতে।
আমিঃ ভালো লাগছিলো না। তাই যেতে চাচ্ছিলাম না। তুমি আমার বাসা চিনলে কীভাবে?
রিমঝিম আপুঃ কাল তোকে নামিয়ে দিছিলাম যেখানে, ওই রাস্তা দিয়ে আসলাম। তারপর একটা লোককে জিজ্ঞেস করায় বলে দিলো।
আমিঃ তোমার এখানে আসাটা ঠিক হয় নি। লোকে কি ভাববে? আর আমি এখানে একা থাকি, বুঝতেও তো পারছো।
রিমঝিম আপুঃ ওতো বুঝে লাভ নেই সর ভিতরে যেতে দে।
আমি কিছু বলার আগেই রিমঝিম আপু ভিতরে ঢুকে পরলো।
রিমঝিম আপুঃ তোর বাসাটা তো বেশ সুন্দর।
আমিঃ আমার আব্বু এটা আমার জন্য রেখে গেছেন।
রিমঝিম আপুঃ ওহ ভালো, তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। একসাথে খাওয়া করবো খাবার নিয়ে এসেছি।
আমি কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
কারণ যত তাড়াতাড়ি সম্ভভ তাকে এই বাসা থেকে বিদায় করতে হবে। আমার তো কিছু না। কিন্তু মানুষ তার নামে খারাপ কথা বলতে পারে। রেডি হয়ে এসে দেখি রিমঝিম আপু খাবার নিয়ে বসে আছে। দুজনে বসে খেয়ে নিলাম।
আপু শুধু বক বক করেই যাচ্ছে। আর আমি ভাবতেছি, কখন সে এখান থেকে যাবে? তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করলাম।
রিমঝিম আপুঃ এখন চল তো আমার সাথে।
আমিঃ কোথায় যাবো?
রিমঝিম আপুঃ কাজী অফিস। আজ তোকে বিয়ে করবো। চলবে…
পরের পর্ব- রোমান্টিক লাভ স্টোরি – সিনিয়র আপু যখন বউ – পর্ব ৩