মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৮ | স্যারের সাথে প্রেম: গত পর্বে আমরা শুধু মিষ্টির সাথে স্যারের ঝগড়া আর কথা কাটাকাটি দেখেছি, এর মাঝে যে লুকানো ভালবাসা উঁকি দিচ্ছে তা কি আমরা দেখতে পাচ্ছি? চলুন তবে দেখতে শুরু করি।
স্যারের প্রতি সহানুভূতি
রোদঃ আমি তোমার সাথে ঝগড়া করি?
মিষ্টিঃ তা নয়তো কি? সেই কখন থেকে ঝগড়া করেই যাচ্ছেন। দিন, আপনার পাঞ্জাবিটা আমাকে খুলে দিন।
রোদঃ কেনো? (অবাক হয়ে)
মিষ্টিঃ কেনো মানে, আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি। আপনার এতো রাগারাগির কি আছে। পাঞ্জাবিতেই দাগ লাগছে। আমার হাতটা যে আপনার মুখে পড়েনি সেটাই কতো। না হলে আপনার মুখটা লাল হয়ে যেতো। আর আপনাকে কতো সুন্দর লাগতো, উহু সেই মজা হতো তখন।
রোদঃ মিষ্টি..( রেগে জোরে চেঁচিয়ে)
মিষ্টিঃ আহ্! চেঁচাচ্ছেন কেনো? ভয় করেতো। খুলুন পাঞ্জাবিটা। আর তারপর আমাকে দিন।
রোদঃ তার কোন দরকার নেই। আমার পাঞ্জাবি আমি নিজেই পরিষ্কার করে নিতে পারবো। তোমার সাহায্যের আমার কোন দরকার নেই।
মিষ্টিঃ ভালোর জন্য সাহায্য করবো বলছিলাম। এখন সাহায্য না লাগলে আমি আর কি করবো।
রোদঃ তোমার কোনো সাহায্যের আমার দরকার নেই।
রোদ আর কিছু না বলে চলে যায়। আর আমি ওখানে দাঁড়িয়ে।
মিষ্টিঃ হাতটা যদি খাম্বাটার গালে লাগতো, কতো ভালই না হতো। দূর, হাতটা কেনো যে গালে লাগলোনা। এইরে! আমার হাতের মেহেদি ঘেটে গেছে। ইশরে, আমার মেহেদির ডিজাইন নষ্ট হয়ে গেছে। এক্ষুণি হাত ধুতে হবে।
বলে দৌড়ে বেসিনে গিয়ে হাত পরিষ্কার করে নেই। খাম্বারটার জন্য আমার হাতের মেহেদিটা নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য কেউ হলে এতোক্ষনে আমি রেগে ওর মাথাটাই ফাটিয়ে দিতাম। কিন্তু আশ্চর্য খাম্বাটার উপর আমার কোন রাগই হচ্ছেনা।
তারপর আমি শাড়ি চেঞ্জ করে একটা ড্রেস পরেনি। নিচে আর না গিয়ে ঘরেই ঘুমিয়ে পড়ি।
স্যারের সাথে যাত্রার আহ্বান
সকালে মামির জোরে জোরে ডাকে আমার ঘুম ভাঙে।
মামিঃ মিষ্টি তাড়াতাড়ি উঠ মা। খুব দরকারি।
মিষ্টিঃ (আমি লাফ দিয়ে উঠে) কেনো মামি কি হইছে?
মামিঃ ওদের নাকি ফুল লাগবে। দেখ কেউই ফুলের কথা মনে করে নাই। এখন সবার ফুলের কথা মনে পড়লো। কিন্তু এখন সবাই ব্যস্ত। কে যাবে ফুল আনতে। দরকারের সময় কাউকেই পাওয়া যায় না। তিয়াষকেই বলতাম কিন্তু ওকে আমি আরেকটা কাজে পাঠিয়েছি। তাই তুই যা না মা।
তখনই আমার আম্মু আসে।
আম্মুঃ মিষ্টি তুই এখনও বসে আছিস। যা তাড়াতাড়ি বের হ। নাহলেতো অনেক দেরি হয়ে যাবে।
মিষ্টিঃ আম্মু আমি কই যাবো একলা একলা। আর একা কিভাবে ফুল আনবো তুমিই বলো?
মামিঃ তুই তো একা যাচ্ছিস না। তোর সঙ্গে রোদ ও যাচ্ছে।
মিষ্টিঃ ওহ্ আচ্ছা। কিইইইইইইইই খাম্বা না মানে রোদ যাচ্ছে। (চোখ বড়বড় করে)
মামিঃ হুম। কেনো?
মিষ্টিঃ না এমনি।
মামিঃ তাহলে তাড়াতাড়ি কর। রোদ অপেক্ষা করছে তোর জন্য।
মিষ্টিঃ আচ্ছা। আমি রেডি হয়েনি।
আম্মুঃ রেডি হতে হবে না। এতো সকালবেলা কেউ তোরে দেখবো না বুঝছোস। তুই এইভাবেই যা।
মিষ্টিঃ কি, কেনো? অন্তত হাত মুখটাতো ধুইতে দিবা।
আম্মুঃ আচ্ছা যা তাড়াতাড়ি। ছেলেটা কখন থেকে অপেক্ষা করছে।
মিষ্টিঃ হ, তুমিতো জানো না। তোমার মেয়েকে কার সাথে পাঠাচ্ছো। আমাকে দেখলেই আবার চিল্লাপাল্লা করবো। আমার সাথে নতুন কি করবো আল্লাহই জানে।
আম্মুঃ তুই এখন আবার কি ভাবছিস?
মিষ্টিঃ উফফ যাচ্ছিতো নাকি! আর ভালো লাগে না।
স্যারের বাইক নিয়ে মজা
তারপর আমি কোনমতে হাত মুখ ধুয়ে বের হতেই আম্মু আমাকে ঠেলে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। চুলটাও ঠিক করতে দেয়নি। রাতের জামাকাপড় পড়েই আছি।
ইশশ, আমি নিশ্চিত আমাকে পাগল পাগল লাগছে। দূর এখনই খাম্বাটার সামনে যেতে হবে। আমাকে দেইখা খাম্বার সাথে সাথে সবাই হাসবে। (কান্নারভাব করতে করতে)
বাইরে যেতেই দেখি রোদ রেডি হয়ে সোফায় বসে ফোন টিপছে।
মিষ্টিঃ এহেম, এহেম
রোদ নিচের দিকে তাকিয়েই আছে।
মিষ্টিঃ স্যাররর…(চিল্লিয়ে)
এরপর রোদ উপরের দিকে তাকিয়ে আমার দিকে অনেক্ষণ চেয়ে থাকে। তারপর বলে-
রোদঃ ও..তুমি চলে আসছো।
মিষ্টিঃ হুম।
রোদঃ আচ্ছা, চলো তাহলে।
তারপর আমি আর রোদ একসাথে বের হই। দেখি উনি বাইকে বসলো।
মিষ্টিঃ একি! আপনি বাইকে উঠছেন কেনো? নামুন নামুন।
রোদঃ কেনো?
মিষ্টিঃ কেনো মানে? কার না কার বাইকে আপনি উঠছেন? পরে যদি আবার যার বাইক সে রেগে যায়।
রোদঃ মানে..যার বাইক মানে? এটা আমার বাইক। আমার বাইক আমি চালালেকে কি করবে, শুনি?
মিষ্টিঃ মিথ্যা কথা কেন বলেন? এটা আপনার বাইক..হ্যা?
রোদঃ অবশ্যই এটা আমার বাইক।
মিষ্টিঃ আবার মিথ্যা।
রোদঃ আশ্চর্য! আমার বাইক, আমার বলাটা মিথ্যা।
স্যারের বাইকে মিষ্টি
মিষ্টি একটু ঘুরে বাইকটা ভালভাবে দেখে বলে- এটা আপনার বাইক কেমনে হয়। আপনিতো গাড়ি চালান। বাইক পাইলেন কেমনে? বাই এনি চান্স আপনি কারো বাইক চুরি করেন নি তো? হুম। (চোখ গুলো ছোট করে)
রোদঃ কিহ্! আমি চুরি করছি। তাও আবার বাইক। হাউ ডেয়ার ইউ (রেগে)।
মিষ্টিঃ স্যার..সরি সরি। (চোখ বন্ধ করে)। রেগে কেনো যাচ্ছেন আপনি? আমিতো মজা করছিলাম। আসলে আপনাকেতো কখনো বাইক চালাতে দেখিনি তাই আরকি! স্যার সত্যিই কি এটা আপনার বাইক?
রোদঃ হুম। এটা আমারই।
মিষ্টিঃ ওহ! সুন্দর!
রোদঃ হোয়াট?
মিষ্টিঃ বাইক। বাইকটা খুবই সুন্দর।
রোদঃ উঠো।
মিষ্টিঃ কোথায়?
রোদঃ আমার মাথায়। বাইকে উঠতে বলছি। (রেগে)
মিষ্টিঃ ওহ আচ্ছা। বসছি। সেটা ভালো করে বললেই হয়।
তারপর আমি ও রোদের থেকে অনেকটা দূরত্ব বজায় রেখে বসেছি। রোদ তা দেখে কিছুটা রেগে বাইক চালানো শুরু করলো।
মাঝ রাস্তায় এসে হঠাৎ…চলবে…
পরের পর্ব: মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৯ | স্যারের সাথে প্রেম
সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প