মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৭ | স্যারের সাথে প্রেম: গত পর্বে মিষ্টির সাথে স্যারের সিনেমাটিক ভাবে দেখা হয়ে যায়। ধাক্কা লাগা নিয়ে দুজনে বেশ ঝগড়াও করে। রোদের বেশ রাগ হয়। এবার দেখা যাক এই রাগ কোথায় গিয়ে ঠেকে?
রোদের কেয়ার মিষ্টির প্রতি
তারপর সকলে আমরা স্টেজের সামনে চলে যাই। স্টেজের উপর তিশাকে বসানো হয়েছে। প্রথমে বাড়ির বড়রা ওকে হলুদ দিয়ে যায়। তারপর আস্তে আস্তে ছোটরা ওকে হলুদ লাগিয়ে দেয়। এবার আমি আর মুন একসাথে ওকে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে আমি স্টেজের নিচে নেমে আসতেই রোদ আমাকে টেনে আমার মানে তিশার রুমে নিয়ে যায়।
রোদঃ যা পরতে জানো না। তা পরতে যাও কেনো তুমি?
মিষ্টিঃ (অবাক হয়ে) মানে কি বলতে চাইছেন আপনি?
রোদঃ শাড়ি পরতে না জানলে শাড়ি পরবে না। শুধু শুধু মানুষকে শরীর দেখানোর মানে কি? (রেগে)
মিষ্টিঃ কিইইইই! আপনার সাহসতো কম না। আমি মানুষকে শরীর দেখাচ্ছি (রেগে)। মিথ্যা কথা বলতে লজ্জা করেনা আপনার?
রোদঃ আমি মিথ্যা বলছি না। তাহলে লজ্জা করবে কেনো?
মিষ্টিঃ আবার আমার নামে বাজে কথা? প্রমাণ দেখান।
রোদঃ তোমার বিশ্বাস না হলে তুমি নিজেকে আয়নায় দেখে নাও। প্রমাণ পেয়ে যাবে।
তারপর আমি আয়নার সামনে যেতেই দেখি সত্যি সত্যি আমার পেটের অনেকটা অংশ দেখা যাচ্ছে। তিশাকে হলুদ লাগাতে গিয়ে হয়তো কাপড়টা সরে গেছে।
মিষ্টিঃ আমি ইচ্ছে করে করিনি। এটা কোনভাবে সরে গে।
মিষ্টির প্রতি ঝগড়াটে ভালবাসা
তাকিয়ে দেখি খাম্বা নেই। আমি একলা একলা কথা বলছি। অসভ্য লোক একটা। কথা শেষ না করেই চলে গেছে। (মুখ বাঁকিয়ে)
এরপর আমি শাড়ি ঠিক করে আবার নিচে চলে যাই। সবাই নাচ গান করে মজা করছে। আমি একপাশে দাঁড়িয়ে আছি।
তিয়াষঃ মিষ্টি চলো তুমি আর আমি একসাথে নাচি।
মিষ্টিঃ না, ঠিক আছে। তুমি এনজয় করো। আমি পরে আসছি।
তিয়াষঃ প্লিজ চলো না তুমি। (মিষ্টির হাত ধরে)
রোদঃ ও যখন চাইছে না নাচতে তখন ওকে ছেড়ে দে। শুধু শুধু জোড় করছিস কেনো তুই?
মিষ্টিঃ তিয়াষ আমি পরে নাঁচবো।
তিয়াষঃ না না, তুমি এখন চলো আমার সাথে।
বলে আমাকে টেনে ওদের সাথে নাচতে নিয়ে যায়। রোদ শুধু চোখ লাল করে তাকিয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে আছে।
আমার কেনো জানিনা মনে হলো রোদ আমাকে আর তিয়াষকে একসাথে দেখে রেগে গেছে। তাই আমি রোদকে আরো রাগানোর জন্য ইচ্ছা করে তিয়াষের সাথে আরো বেশি করে নাচাচ্ছি।
রোদ না পারছে কিছু বলতে আর না পারছে কিছু করতে। আমিতো সেই মজা করছি রোদকে দেখে। তারপর সকলে একসাথে মেহেদী পরছি। এখানে ও তিয়াষের বাড়াবাড়ি।
তিয়াষঃ মিষ্টি আমি তোমাকে মেহেদী পড়িয়ে দেই দাও।
মিষ্টিঃ নায়ায়ায়ায়ায়ায়া! ভুলেও না। তুমি মেহেদী পড়াবা মানে হলো হাতের ভিতর পুরো বিশ্বকে আঁকবা। তার থেকে ভালো আমি পার্লারের মেয়েদের দিয়েই মেহেদী পড়বো ।
স্যারের পাঞ্জাবি নষ্ট করা
তারপর আমরা পার্লারের মেয়েদের দিয়ে দুই হাত ভর্তি করে মেহেদী পড়ে বসে আছি। সেই কখন মেহেদী দিয়েছি হাতে এখনো শুকানোর নাম নেই। আবার আমার সামনের কাটা চুল গুলো আমাকে খুব জ্বালাচ্ছে। উফঃ কি অসহ্যকর একটা পরিস্থিতি। ইচ্ছা করছে চুলগুলো কেটে ফেলি।
মিষ্টিঃ এই মুন তুই বস। আমি যাই হাত ধুয়ে আসি। আমার আর ভালো লাগছে না এইভাবে বসে থাকতে।
মুনঃ মেহেদি শুকিয়ে যাক তারপর যা।
মিষ্টিঃ না, আমি এখনি হাত ধোবো। তুই বস এখানে।
তারপর আমি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছি। কোথা থেকে যেন হুট করেই খাম্বা চলে আসছে। হঠাৎ আসায় আমি বুঝে উঠার আগেই আমার হাত খাম্বার পাঞ্জাবির উপর চলে যায়। ব্যাস। খাম্বার দুই পাশে আমার দুটি মেহেদি রাঙা হাতের স্পেশাল ছাপ পড়ে যায়।
আমি আর রোদ তা দেখে দুইজনই হা হয়ে যাই। আমি ভয়ে হা আর রোদ রাগে।
মিষ্টিঃ সরি, সরি আমি ইচ্ছা করে করিনি। লেগে গেছে।
রোদঃ তুমি আমার পাঞ্জাবীটা নষ্ট করে দিলে। ইচ্ছা করে করছো তুমি এইটা (রেগে)।
মিষ্টিঃ বললাম তো আমি ইচ্ছা করে করিনি। লেগে গেছে। আপনাকে, কে? কে আমার সামনে আসতে বলছিলো, হ্যা।
রোদঃ তো তোমাকে কে বলছিলো মেহেদি পরে সারা বাড়ি ঘুরতে।
মিষ্টিঃ আমি মেহেদি পড়ে সারাবাড়ি কই ঘুরলাম। আমিতো উপরে যাচ্ছিলাম হাত ধুতে। আপনিইতো সারাবাড়ি ঘুরছেন। আপনার কি আর কোন কাজ নেই আমার সাথে ঝগড়া করা ছাড়া।
রোদঃ আমি তোমার সাথে.. চলবে…
পরের পর্ব- মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৮ | স্যারের সাথে প্রেম
সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প