মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৫ | স্যারের সাথে প্রেম: বিগত পর্বে মিষ্টি স্যারকে ফাঁদে ফেলতে গিয়ে উল্টো ইমপ্রেস করে ফেলেছিল। মিষ্টির পাগলামি যেন স্যারের সাথে একটা অজানা নতুন সম্পর্কের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এবার তবে দেখার পালা কতদূর গড়ায় এই সম্পর্ক?
মিষ্টি যাবে মামার বাড়ি
তারপর বাসায় গিয়ে শুনি…
আম্মুঃ মিষ্টি এখনি তোমার জামা-কাপড় আর যা যা লাগে তা সব ব্যাগে গুছিয়ে নাও।
মিষ্টিঃ কেনো আম্মু? ব্যাগ গুছাবো কেনো? আমরা কি কোথাও যাবো?
আম্মুঃ হুম, যাবো। কালকে সকালের মধ্যেই রওনা দিবো।
মিষ্টিঃ কোথায়?
আম্মুঃ তোমার মামা বাড়িতে।
মিষ্টিঃ ওখানে যাবো কেনো আম্মু। তুমিতো জানো আমার মামার বাড়িতে খুব একটা যাওয়া হয়নি। তাহলে আজকে কেনো যাইতে বলছো।
আম্মুঃ কারণ এই শুক্রবার এ তোমার মামাতো বোন তিশার বিয়ে। হঠাৎ করেই বিয়ে ঠিক হইছে। তাই আগে জানাতে পারেনি। আর তাই আমাদের কালকেই চলে যেতে হবে।
মিষ্টিঃ কিন্তু আম্মু আমার ক্লাস আছে। আর তাছাড়া আমি মুনকে ছাড়া যাবো না।
আম্মুঃ হ্যা আমি খুব ভালো করে জানি। তুই ওকে ও বলে দিস।
মিষ্টিঃ সত্যি আম্মু। মুনও আমার সাথে যাবে।
আম্মুঃ হুম, যাবে।
মিষ্টিঃ ঠিক আছে, তাহলে আমি এখনি মুনকে খবরটা বলছি।
বলে মুনকে ফোন করি। দুইবার ফোন বাজতেই মুন বলে-
মুনঃ হ্যালো।
মিষ্টিঃ ওই কুত্তী। কতোক্ষন ধইরা ফোন দিতাছি ধরিস না কেনো তুই?
মুনঃ আমি ওয়াশরুমে থাকলে ধরমু কেমনে?
মিষ্টিঃ আচ্ছা শোন, আমি মামা বাড়ি যাচ্ছি। তিশার বিয়ে উপলক্ষে।
(মুন তিশাকে অনেক ভালো করেই চিনে। এখানে আসলে মুন আমি আর তিশা একসাথে অনেক মজা করি)
মুনঃ ওহ! (মন খারাপ করে)
মিষ্টিঃ কিরে চুপ করে আছিস কেন?
মুনঃ তুই বাড়ি যাবি আর আমি একা থাকবো এখানে। আমাকে একা একা ক্লাস করতে হবে। স্যারের বকা খাইতে হবে। আর তিশার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।
মিষ্টিঃ আরে বলদি তুই ও আমার সাথে যাচ্ছিস। বুঝেছিস। আর তোকে ওই খাম্বার বকাও খাইতে হবে না। বুঝেছিস।
মুনঃ সত্যি।
মিষ্টিঃ হুম, সত্যি।
মুনঃ কিন্তু আন্টি কি ভাববে?
মিষ্টিঃ আরে আমি আম্মুকে বলছি আম্মু রাজি। এবার তুই খালি তোর বাড়ির সবাইকে রাজি করা।
মুনঃ ও নিয়ে তুই টেনশন করিস না। আমি ঠিক রাজি করামু।
মিষ্টিঃ আচ্ছা, কালকে সকালে বাসায় চলে আসিস।
মুনঃ হুম। আমিতো ভোরেই চইলা যামু। তুই একদম চিন্তা করিসনা। বাই।
মিষ্টিঃ হ..ঘুমা।
রোদ (স্যার ) যাবে ফুপির বাড়ি
ওদিকে রোদ বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং টেবিলে খেতে আসলে রোদের বাবা মা দুইজনই বসে। রোদ আর রোদেলা (রোদের ছোটবোন) কে বলে-
রোদের আব্বুঃ রোদ সব কিছু গুছিয়ে রেডি থেকো। আমরা সকলে তোমার ফুপ্পির বাসায় যাবো।
রোদঃ ফুপ্পির বাসায় কেনো বাবা?
রোদের আব্বুঃ তিশার বিয়ে তাই। (রোদের ফুপাতোবোন তিশা)
রোদেলাঃ সত্যি বাবা তিশা আপুর বিয়ে আমি এক্ষুনি গিয়ে সব গুছিয়ে নিচ্ছি। (খুশি হয়ে)
রোদঃ কিইই! এতো তাড়াতাড়ি তিশার বিয়ে কেনো, বাবা।
রোদের আব্বুঃ পাত্রপক্ষ বিয়েতে দেরি করতে চায়নি। তাই তাড়াতাড়ি বিয়েটা হচ্ছে।
রোদঃ ওহ! কিন্তু বাবা আমি যেতে পারবো না।
রোদের আব্বুঃ কেনো যেতে পারবে না তুমি?
রোদঃ বাবা তুমিতো জানো আমি নতুন চাকরিতে জয়েন করেছি। এখনই কিভাবে ছুটি নিবো বলো।
রোদের আব্বুঃ সেসব আমি জানি না। তবে তোমাকে আমাদের সাথে যেতে হবে এটাই ফাইনাল।
বলে উঠে চলে যায়। আর তারপর রোদ ও খেয়ে চলে যায়। রোদেলাতো খুব খুশি। কিছুদিন পড়া থেকে বিশ্রাম নেওয়া যাবে। আর রোদ খুশি অনন্ত কয়েকটা দিন সে মিষ্টি নামক ঝামেলা থেকে বাঁচবে।
একই বিয়ে বাড়িতে মিষ্টি ও রোদের যাত্রা
তারপর সকালে-
সকালে মুন মিষ্টির বাসায় এসে পড়ে। মিষ্টি তখন গভীর ঘুমে। মুন কলিংবেল বাজাতেই মিষ্টির আম্মু এসে দরজা খুলে দেয়।
মুনঃ আসসালামু আলাইকুম আন্টি। কেমন আছেন?
মিষ্টির আম্মুঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?
মুনঃ আন্টি আমিও অনেক ভালো আছি।
তারপর মুন আরো অনেক কিছু বলে মিষ্টির আব্বু-আম্মুর সাথে।
মুনঃ আংকেল মিষ্টি কই?
মিষ্টির আব্বুঃ সে তো ঘুমেই কাত। কতোক্ষন ধরে আমি আর তোমার আন্টি ডাকছি। কিন্তু ও তো উঠতেই চাইছেনা। আমরা রেডি হয়ে বসে আছি আর ও এখনো উঠছেই না। তুমি যাও তো মা দেখো উঠাতে পারো কিনা।
মুনঃ ওকে আংকেল। (মুচকি হেসে আমার রুমে আসে)
মুন এসে দেখে আমি উপুর হয়ে টেডিবিয়ার জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছি।
মুনঃ আহ্! কি শান্তির ঘুম। আর কিছুই খবর নাই তার। ওই হারামি উঠ। বেড়াইতে যাবি না। কিরে উঠ তাড়াতাড়ি।
মিষ্টিঃ কেরে? মুন মুন লাগছে গলাটা। কিন্তু মুন হবে কেমনে। আমিতো আমার রুমে। (ঘুমের ঘোরে বিড়বিড় করে)
মুনঃ হ..তুই তোর রুমেই আছিস। আর আমিও তোর রুমেই আছি। এবার একটু উঠ না তাড়াতাড়ি। রেডি হবি কবে। আর তোর মামা বাড়ি যাবি কবে, হ্যাঁ?
মিষ্টিঃ মামা বাড়ি কেনো যাবো? (ঘুম থেকে উঠে ঝিমোচ্ছি)
মুনঃ তোর বিয়া খাইতে (রেগে)। তিশার বিয়েতে যাবি না তুই।
মিষ্টিঃ ওহ্ হে। আমার মনেই নেই। তুই পাঁচ মিনিট অপেক্ষা কর আমি রেডি হয়ে আসছি বলে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আমি, মুন, আব্বু-আম্মু রওনা দিয়ে দেই। প্রায়ই তিন ঘন্টা পর পোঁছাই। গিয়ে দেখি পুরোবাড়ি সাজানো। অনেক সুন্দর করে ডেকোরেশন করা। গাড়ি থেকে নেমেই দেখি মামু আর মামি আগে থেকে দাঁড়িয়ে ছিলো। আমরা যাওয়ার পর আমাদের সাথে কথা বলে আমাদের থাকার রুম দেখিয়ে দেয়। আমি আর মুন একসাথে তিশার রুমেই থাকবো। তিশা আমাদেরকে দেখে খুশিতে পারছেনা নাচতে। আমরা তিনজনই ভীষণ খুশি।
এদিকে রোদেরাও…চলবে..
পরের পর্ব: মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৬ | স্যারের সাথে প্রেম
সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প