মিষ্টি প্রেমের গল্প ৪

মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৪ | স্যারের সাথে প্রেম | Love Story Bangla

মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৪ | স্যারের সাথে প্রেম: গত পর্বে আমরা দেখেছি মিষ্টি ও স্যারের মধ্যে মিষ্টি ঝগড়া। স্যারকে সহ্য করতে না পারা মিষ্টি কতটুকু সহ্য করার মানসিকতা তৈরী হয় তা দেখার পালা।

স্যারের হাতে ধরা খাওয়া

মিষ্টিঃ স্যার আমারে কচু করবো।

মুনঃ মিষ্টি পিছে তাকা। (চোখ বড় বড় করে)

মিষ্টিঃ কেনো রে। আমি পিছে তাকামু কেন।

মুনঃ তাকায়ায়ায়ায়া…

মিষ্টিঃ দূর..ওকে তাকাচ্ছি।

বলে পিছে তাকিয়ে দেখি খাম্বায় চোখ পাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওরে বাবারে খাম্বায় আমারে দেইখা ফেলছে রে। আজকে আমি শেষ।

খাম্বাটা আসতে আসতে আমার সামনে আসছে আর আমি পিছাচ্ছি।

মিষ্টিঃ স্যার। আ..প..নি? (তোতলিয়ে)

রোদঃ কি করছো তুমি?

মিষ্টিঃ কি কঅঅরছি কি আআয়ামিই!

রোদঃ আমার গাড়ির কাচ ভাঙছে কে?

মিষ্টিঃ আমি..না মানে আমি আপনার গাড়ির কাচ ভাঙিনি স্যার।

রোদঃ তাই নাকি?

মিষ্টিঃ হ্যাঁ স্যার। সত্যি আমি কেনো আপনার গাড়ির কাচ ভাঙতে যাবো।

রোদঃ তাহলে তোমরা এখানে কি করছিল?

মিষ্টিঃ হ্যা তাই তো কি করছিলাম আমরা? এই মুন কি করছিলাম জেনো আমরা? ও হ্যাঁ! মনে পড়েছে আসলে আমি আর মুন এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম আর তখনই দেখলাম আপনার গাড়ির কাচ ভাঙা। আমরা ভাঙতে যাবো কেন? কি একটা গাড়ি তা নাকি আবার আমি ভাঙবো। হু..

রোদঃ (চোখ মুখ লাল করে রেগে আছে) আর আমার দিকে এগোচ্ছে।

মিষ্টিঃ কি ব্যাপার বুঝে গেলো নাকি!

রোদঃ আজকে তোমাকে আমি..(আমার একদম কাছে এসে)

মিষ্টিঃ স্যার ওইখানে কে যেনো?

রোদ পিছনে তাকাতেই আমি মুনকে নিয়ে দৌড়। পিছনে না তাকিয়ে এক দৌড়ে ওখান থেকে চলে আসলাম।

রোদঃ মিষ্টি তোমাকে আমি দেখে নিবো। আমাকে মিথ্যা বলা.. (রেগে)

এভাবে কয়েকদিন কেটে যায়। এই কয়েকদিনে স্যার আর আমি প্রচুর ঝগড়া করেছি।

একদিন দুপুরে

মুনঃ হ্যালো মিষ্টি..কই তুই?

মিষ্টিঃ তোর শ্বশুরবাড়ি।

মুনঃ কিইই!

মিষ্টিঃ বলদি, তুই জানিস না। আমি এখন কই। তাহলে আবার জিজ্ঞাসা করিস কেন?

মুনঃ জানি বাসায়। তবুও শিওর হওয়ার জন্য জিজ্ঞাস করলাম।

মিষ্টিঃ হুম! এবার বল কি বলবি?

মুনঃ আজকে বিকালে তুই আর আমি বের হবো। সামনের পার্কটাতে।

মিষ্টিঃ কেন? তোর জামাইরে দেখতে।

মুনঃ আরেএ নাহ! আমার খুব ফুচকা খেতে ইচ্ছা করছে আর ঘুরতে ও।

মিষ্টিঃ আচ্ছা। ঠিক আছে। বিকালে দেখা হচ্ছে।

মুনঃ ওকে।

তারপর আমি রেডি হতে শুরু করে দেই। রেডি হতে হতে বিকাল হয়ে যায়। বিকালে আমি আর মুন সামনের পার্কে দেখা করি।

মিষ্টিঃ কিরে বলদি! তুইতো আজকে সেই সাজ দিছিস। ব্যাপার কি হুম। মনে হচ্ছে আমার জিজু পেয়ে গেছি তাই নারে।

মুনঃ আরে নাহ! এখনো পাইনি। কিন্তু যদি এইখানে পেয়ে যাই। (লজ্জা নিয়ে)

মিষ্টিঃ ওরে আমার লজ্জাবতী লতারে। কি লজ্জা পাচ্ছে। একেবারে তোকে নতুন বউ বউ লাগছে।

মুনঃ চুপ কর ফাজিল মাইয়া। আচ্ছা চল না ফুচকা খাই।

মিষ্টিঃ হুম। চল।

মিষ্টির দুষ্ট বুদ্ধি

তারপর দুইজন মিলে ফুচকা খাচ্ছি তখন দেখি খাম্বায় পার্কের একপাশে একটা গাছের নিচে ঘাসের উপর বসে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে। অন্যদিকের কোন খবর নেই। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ল্যাপটপের স্কিনের দিকে। তখন আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করি। তারপর পার্কেরই কিছু ছোট ছোট গরিব ছেলেমেয়ে যারা ফুল বা অন্যকিছু বিক্রি করে ওদের এক সাথে করে রোদকে দেখিয়ে বললাম।

ওই ভাইয়াটাকে দেখছিস তোরা। ওই ভাইয়াটা আমাকে বলছে তোদের সবাইকে আইসক্রিম খাওয়াবে। তাই তোরা সবাই ওই ভাইয়াটার কাছে গিয়ে বলবি আইসক্রিম খাওয়াতে। এখন হয়তো ভুলে গেছে। তোরা সবাই একটু জোরাজুরি করলেই ভাইয়াটা মনে পড়ে যাবে। আর তখন খাওয়াবে কেমন।

বাচ্চারাঃ সবাই একসাথে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।

মুনঃ কি করছিসটা কি তুই। স্যার যদি পরে রেগে যায়। ওদের না খাওয়ায় তখনতো ওরা কষ্ট পাবে।

মিষ্টিঃ আমিতো তাই চাই। স্যার রেগে যাক। আর তারপর না খাওয়ালে আমি খাওয়াবো।

মুনঃ কিন্তু..

মিষ্টিঃ আর কোন কিন্তু না। তুই খালি দেখ ওকে।

সবাই খুশিতে লাফাচ্ছে। তারপর সবাই রোদের কাছে দৌড়ে গিয়ে চিল্লিয়ে বলল ভাইয়া আইসক্রিম খাবো। রোদ সবার চিল্লানো শুনে কিছুটা হচকিয়ে যায়। তারপর বলে তোমরা?

বাচ্চারাঃ ভাইয়া আপনি নাকি আমাদের আইসক্রিম খাওয়াবেন। আমরা আইসক্রিম খাবো। আমাদের আইসক্রিম খাওয়াবেন ভাইয়া। (মিষ্টি হেসে)

রোদঃ আচ্ছা ঠিক আছে। আমি তোমাদের আইসক্রিম খাওয়াবো। কিন্তু এই কথাটা তোমাদের কে বললো? হুম..(হেসে)

বাচ্চারাঃ ওই আপুটা..(আমার দিকে ইশারা করে)

মিষ্টিঃ কি হইলো ওরা আমার দিকে ইশারা করলো কেনো? আমার নাম বলে দিলো নাকি আবার..(ভয়ে)

তারপর রোদ বাচ্চাদের নিয়ে আমার কাছে আসছে।

মিষ্টিঃ এইরে..নিশ্চয় এখন বাচ্চাদের সামনে আমাকে স্যার বকবে।

মুনঃ মিষ্টি চল পালাই।

মিষ্টিঃ হুম চল..বলে পালাতে গেলে খাম্বা ডাক দেয় আমাকে।

স্যারকে ইমপ্রেস

আমি ভয়ে ঢোক গিলছি। না জানি এবার সবার সামনে অপমান করে দেয়। কিন্তু রোদ আমাকে ডাক দিয়ে বলে ওদের আইসক্রিম খাওয়াচ্ছি তখন তোমরাও চলো।

আমি আর মুন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।

রোদ আমাদের সবাইকে আইসক্রিম কিনে দিয়ে আমাকে থ্যাংকস বলল। আমি আর মুন আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি। খাম্বাটা একটুও রাগলো না। উলটা আমাকে থ্যাংকস দিয়ে আইসক্রিম খাওয়ালো। আমিতো ভাবছিলাম এতোগুলা বাচ্চা দেখে স্যার রেগে যাবে।

মিষ্টিঃ আচ্ছা স্যার আমাকে থ্যাংকস দিলেন কেনো?

রোদঃ কারণ তুমি আমাকে এতো সুন্দর একটা মুহূর্ত উপহার দিলে তাই।

মিষ্টিঃ মানে?

রোদঃ মানে হলো আমি কখনো জানতামই না যে এই বাচ্চাদের মাঝে সময় কাটাতে কতোটা ভালো লাগে। ওদের হাসিগুলা সত্যি ভালোলাগে। ওদের আনন্দ দেখে সত্যি নিজের মধ্যে ও এক অদ্ভুত আনন্দ হচ্ছে। তোমাকে সত্যি অনেক অনেক থ্যাংকস।

মিষ্টিঃ ওহ..দূর কই ভাবলাম স্যারকে রাগাবো। তা না উলটা খুশি হইলো। (মন খারাপ করে)

তারপর বাসায় গিয়ে শুনি.. চলবে….

পরের পর্ব: মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ৫ | স্যারের সাথে প্রেম

সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *