মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১৯ | স্যারের সাথে প্রেম: গত পর্বে আমরা মিষ্টি ও রোদের রোমান্টিক বাসর রাত এর খুনসুটি দেখেছি। ভালবাসি বলতে না পারা দুজনে বিয়ের পর ভালবাসি বলা নিয়ে বেশ তোড়জোর শুরু করছে। রোদ খুব সুন্দরভাবে প্রপোজ আর ভালবাসি বললেও মিষ্টি বলতে গিয়েও না বলে মজা শুরু করে দেয়, তারপরে খাওয়ার বায়না ধরে। দেখি আজকে তারা কি করে?
রোমান্টিক বাসর রাত
রোদঃ আমি এসব জানি। আর এটাও জানি তোমার ক্ষুধা লেগেছে।
মিষ্টিঃ আপনি জানেন, কিভাবে?
রোদঃ তোমার প্রতিটি মুহূর্তের খবর আমার নজরে থাকতো।
মিষ্টিঃ কিভাবে?
রোদঃ সেটা না হয় অজানাই থাক।
তারপর রোদ আমার জন্য খাবার নিয়ে এসে নিজেই খাইয়ে দিলো।
মিষ্টিঃ বাহ! খুব ভালো হইছে রান্নাটা। আমার পেট পুরা ভরে গেছে। আর আপনাকে আবারো থ্যাংকস আমাকে এতো ভালো খাওয়ালেন, তাই।
রোদঃ থ্যাংকসের দরকার নাই আমার।
মিষ্টিঃ ঠিক আছে, তাহলে ফেরত দিয়ে দিন।
রোদঃ থ্যাংকস আবার কিভাবে ফেরত দেয়? (অবাক হয়ে)
মিষ্টিঃ সেটা আপনি জানেন। আপনার যখন থ্যাংকস এর দরকার নেই তাহলে ফেরত দেওয়াটাই উত্তম নয় কি?
রোদঃ হুম, ঠিক তাই। আমি থ্যাংকস ফেরত দিয়ে দিলাম।
মিষ্টিঃ সত্যি সত্যি ফেরত দিয়ে দিলেন।
রোদঃ হুম দিলাম।
মিষ্টিঃ এই যে শুনুন।
রোদঃ হুম।
মিষ্টিঃ আই লাভ ইউ।
রোদঃ কিহ! শুনতে পাই নি আমি (মজা করে)।
মিষ্টিঃ এখন আপনি মজা করছেন, তাই না।
রোদঃ কই নাতো।
মিষ্টিঃ আই লাভ ইউ।
রোদঃ (আমাকে জরিয়ে ধরে) আই লাভ ইউ টু।
রোদের মিষ্টি উপহার
তারপর রোদ আমার গলায় সুন্দর একটা লাভ শেপ লকেটের চেন পড়িয়ে দিলো।
মিষ্টিঃ এটা বুঝি সিমার জন্য কিনেছিলেন? (মজা করে)
রোদঃ এখানে আবার সিমা কোথা থেকে আসলো।
মিষ্টিঃ কেনো, যেভাবে আপনি ওকে বিয়ে করবেন বলেছিলেন।
রোদঃ হুম আসলেই সিমার জন্যই কিনেছিলাম। কিন্তু মিষ্টি বেচারি নাকের পানি চোখের পানি এক করে কান্না করছিলো। তাই আমার একটু মায়া হলো আর কি! তাই তোমাকেই বিয়ে করলাম আরকি।
মিষ্টিঃ কিহ্! আপনি সত্যি ওই সিমাকেই বিয়ে করতেন।
রোদঃ আবার কাঁদছো। শোন ওই সিমাকে আমি জাস্ট আমার কাজিন ভাবি বুঝছো। আর কিছু না। কিন্তু সারাক্ষণ তুমি এতো কাঁদো কেনো বলোতো? ইদানীং আমি দেখছি তুমি ঝগড়া বাদে বেশি কান্না করছো। আমি কিন্তু আমার সেই ঝগড়ুটে মিষ্টিকে চাই। এই কাঁদুনি কে না।
মিষ্টিঃ (চোখের পানি মুছতে মুছতে) আপনি খুব খারাপ।
রোদঃ তা আমি জানি।
মিষ্টিঃ কি শখ।
রোদঃ আচ্ছা আমরা কি এখন ঝগড়াই করবো।
মিষ্টিঃ তাহলে কি করবো?
রোদঃ তাহলে কি করবো মানে?
মিষ্টিঃ হুম, তাহলে কি করবো?
রোদঃ তাহলে কি করবো তা বলবো নাকি করে দেখাবো।
মিষ্টিঃ করে দেখাবেন মানেএএএ? কি ক.. করে দেখানোর কথা বলছেন আপনি, হ্যা।
এরপর রোদ মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে। তারপর কি, তার সব আপনারাই জানেন। তাই আমি আর বললাম না। আমার বলতে লজ্জা করে।
ছাত্রী বউয়ের সাথে রোমান্টিকতা
ভোরে মিষ্টির ঘুম ভাঙে সকালের মিষ্টি রোদে। তারপর রোদের দিকে মিষ্টি তাকাতেই ভীষণ লজ্জা পায়। আর মিষ্টির সেই প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে যায় রোদের সাথে সেই দুষ্টু-মিষ্টি ঝগড়াগুলোকে। কথাগুলো ভাবতেই মিষ্টি মনে মনে মুচকি হেসে দেয়। তখনই রোদ বলে,
রোদঃ তোমাকে মুচকি হাসলে ভীষণ ভালো লাগে। (চোখ বন্ধ করে)
মিষ্টিঃ আপনিইইই, আপনি ঘুমুননি এতোক্ষণ।
রোদঃ (তাকিয়ে) নাহ, সারারাত তোমায় দেখেছি।
মিষ্টিঃ আমাকে দেখার কি আছে! আমারতো সব কিছু আগের মতোই আছে। দুইটা চোখ, একটা নাক, ঠোট, হাত, পা নাহ এইগুলাইতো ছিলো। নতুন কিছুই গজায়নি তাহলে সারারাত কি দেখলেন?
রোদঃ হুম সবই আগের মতো আছে কিন্তু নতুন কি দেখলাম জানো!
মিষ্টিঃ কি?
রোদঃ তোমার ওই লজ্জা মিশ্রিত মুখটা।
মিষ্টিঃ তাই বুঝি। (আদর করে)
রোদঃ আগে এই লজ্জামাখা মুখটা দেখিনি। আগে খালি ঝগড়ুটে মুখটাই দেখেছি। কিন্তু আজকে এই লজ্জাবতীকে দেখলাম। আর একটা নতুন কি দেখলাম জানো?
মিষ্টিঃ কিই?
রোদঃ তোমার নাকের ওই ছোট সাদা পাথরটা। যার জন্য তোমাকে আরো অপরূপ সুন্দর লাগছে। তোমার প্রতি আমাকে আরো বেশি করে কাছে টানছে। আমার এখন ইচ্ছা হচ্ছে কি জানো?
মিষ্টিঃ কি?
রোদঃ তোমার মাঝে মিশে যেতে।
মিষ্টি রোদের দুষ্টামি বুঝতে পেরে মিষ্টি রোদকে আস্তে করে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে নিজে নিজেই হেসে দেয়। না চাইতেও রোদের মুখটা ভেসে উঠে মিষ্টির। তারপর তাড়াতাড়ি করে শাওয়ার নিয়ে বের হয়। মিষ্টি রোদকে টেনে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দেয়। এরপর আয়নার সামনে গিয়ে মিষ্টি নিজেকে দেখতে থাকে। সত্যিই কি অন্যরকম লাগছে নাকি এমনি এমনি বলছে।
মিষ্টিঃ নাহ্, আমিতো কিছুই নতুন দেখছি না। আগের মতোই লাগছে। হুম, খালি শাড়ি আর নাকেরফুলটার জন্য একটু একটু চেঞ্জ লাগছে। কিন্তু যাই হোক রোদ আমাকে বলেছে আমাকে সুন্দর লাগছে। হিহিহি!
রোদঃ (ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে) একদমই না। তোমাকে এখন একদম পেত্নীর মতো লাগছে।
মিষ্টিঃ (ড্রেসিং টেবিল থেকে উঠে) আপনি আবার আমাকে পেত্নী বললেন।
রোদঃ পেত্নী কেতো পেত্নীই বলবো।
মিষ্টিঃ আমি আপনার সাথে কথাই বলবো না।
বউয়ের রাগ ভাঙ্গানো
মিষ্টিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে- এতো রেগে গেলো আমার বউ।
মিষ্টিঃ ভীষণ রেগে গেছি।
রোদঃ কি করলে রাগ ভাঙবে।
মিষ্টিঃ কিছু না।
রোদঃ সত্যি তাই।
মিষ্টিঃ হুম।
রোদঃ ওকে তাহলে।
বলে মিষ্টির ঘাড়ে একটা কিস করে দেয়। মিষ্টি পিছন ফিরে রোদের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে রোদকে কাতুকুতু দিতে শুরু করে। আর রোদ বেচারা কাতুকুতু খেতে খেতে মিষ্টিকে নিয়ে খাটেই পড়ে যায়। আর ঠিক তখনই কেউ এসে দরজা ধাক্কা দেয়। রোদ মিষ্টিকে সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয় আর উঠে দরজা খুলে দিয়ে রোদেলাকে দেখে বাইরে চলে যায়। তারপর রোদেলা ভিতরে আসে।
মিষ্টিঃ রোদেলা, তুমি!
রোদেলাঃ হুম আমি। ঘুম কেমন হলো ভাবী? (মুচকি হেসে)
মিষ্টিঃ ভালো।
রোদেলাঃ তাই, নাকি ভাবী।
মিষ্টিঃ জানি নাহ। আমি..।
রোদেলাঃ তাই বুঝি।
মিষ্টিঃ হুম, তাই।
রোদেলাঃ বুঝি বুঝি, সবই বুঝি।
মিষ্টিঃ হুম, বেশি পেকে গেছো তুমি, তাই না!
রোদঃ বড় হয়েছিতো আমি নাকি ভাবি! ওহ তুমি রেডি হয়ে গেছো। তাহলে নিচে এসো।
মিষ্টিঃ হুম চলো।
বলে আমরা নিচে চলে যাই।
নিচে গিয়ে…চলবে….
পরের পর্ব- মিষ্টি প্রেমের গল্প – শেষ পর্ব | স্যারের সাথে প্রেম
সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প