মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১৩ | স্যারের সাথে প্রেম: গত পর্বে তিশার বিয়েতে যাওয়ার সময় গাড়ি হাউজফুল হওয়ায় রোদের দায়িত্ব পড়ে মিষ্টিকে নিয়ে যাবার। রোদ মনে মনে ভীষণ খুশি হয় কিন্তু প্রকাশ করে না উল্টো রাগের ভান ধরে। তারা দুজনে একসাথে তিশার শশুড় বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। দেখা যাক তাদের যাত্রার গল্প।
রিক্সায় রোদ ও মিষ্টির প্রথম যাত্রা
রোদ আমাকে বলে…
রোদঃ ওখানে যেয়ে যেন না দেখি কারো সাথে কোন রকম বাড়াবাড়ি করতে।
মিষ্টিঃ বাড়াবাড়ি বলতে।
রোদঃ বাড়াবাড়ি বলতে বেশি হাসাহাসি, লাফালাফি যেন না হয়।
মিষ্টিঃ কেনো? আমারটা আমি করলে সমস্যা কি?
রোদঃ একটু রেগে।
মিষ্টিঃ না বাবা থাক, আর কিছু বলমু না। পরে যদি আমারে একলা ফালাইয়া দিয়ে চলে যায়। (মনে মনে)
রোদঃ আচ্ছা তুমি দাঁড়াও। আমার গাড়িটা নিয়ে আসছি।
মিষ্টিঃ নাহ, আমি গাড়িতে যামু না।
রোদঃ তাহলে কিভাবে যাবে?
মিষ্টিঃ কেনো রিকশায়?
রোদঃ রিকশায় মানে, তুমি তিশার শ্বশুর বাড়ি যাবে রিকশায় করে।
মিষ্টিঃ হুম, তাতে ক্ষতি কি?
রোদঃ ক্ষতি কি মানে! রিকশা দিয়ে গেলে কেমন দেখাবে?
মিষ্টিঃ কেমন দেখাবে মানে? আমরা রিকশা দিয়ে যাবো। এতে আবার দেখাদেখির কি আছে। আমরা রিকশায় যাবো ব্যস। না হলে আমি যাবো না।
রোদঃ আমি রিকশা করে কখনো যাই নি। আমার অভ্যেস নেই।
মিষ্টিঃ অভ্যাস করে নিতে কতোক্ষণ। চলুন, রিকশা ডাকেন।
রোদঃ আমি ডাকবো।
মিষ্টিঃ তো কে ডাকবে, আমিই।
রোদঃ আচ্ছা ঠিক আছে। ডাকছি।
অতঃপর মিষ্টি আর রোদ রিকশায় উঠে পড়ে। রোদ প্রথমে অস্বস্তি ফিল করছিলো। বাট মিষ্টির সাথে কথা বলে ভুলেই গেছে ও এখন রিকশায় বসা।
মিষ্টিঃ কি হলো? কেমন লাগছে রিকশায়, হুম।
রোদঃ হুম ভালোই।
মিষ্টিঃ শুনুন রিকশায় বসলে না কারো মান -সম্মান যায় না। আপনি মাঝে মাঝে রিকশায় করে যাবেন দেখবেন কতো ভালো লাগে। চারপাশের পরিবেশ দেখতে দেখতে যাওয়ার মজাই আলাদা।
রোদঃ হুম।
(আসলে রোদের ও খুব ভালো লাগছে প্রথম রিকশা করে যাওয়া। তার উপর মিষ্টির সাথে রিকশায় প্রথম)
রোদের মনের খবর জানার চেষ্টা
মিষ্টি একটু চুপ থেকে বলে- আচ্ছা আপনি আমাকে নিতে চাইলেন কেনো, হ্যা। না করতে ওতো পারতেন। ওই গাড়িতেই যেতে পারতেন। আপনার ওই সিমার সাথে। (মজা করে)
রোদঃ (ভ্রু কুঁচকে) আমার সিমা মানে।
মিষ্টিঃ আপনার সিমা মানে আপনার সিমা। কি ভাবছেন, আমি কিছু জানি না।
রোদঃ কি জানো তুমি, হ্যা?
মিষ্টিঃ সিমার সাথে আপনার বিয়ে ঠিক হয়েছে, তাই না?
রোদঃ তুমি কি করে জানলে?
মিষ্টিঃ আমি সব জানি (ভাব নিয়ে)।
রোদঃ কচু জানো তুমি। বিয়ে ঠিক হয়নি কারণ আমি রাজি হয়নি।
মিষ্টিঃ তো! আপনি রাজি হলেন না কেনো?
রোদঃ কারণ..
মিষ্টিঃ কি হলো বলুন, কারণ কি?
রোদঃ তা তোমাকে বলবো কেনো?
মিষ্টিঃ বলতেই পারেন। আমাকে বললে কি এমন ক্ষতি হবে আপনার?
রোদঃ সরি, তোমাকে বলতে পারছি না।
মিষ্টিঃ বলেন, নইলে খবর আছে।
রোদের নজরদারী ভালবাসা
তারপর আমরা তিশার শ্বশুরবাড়ি পৌছে যাই। ওখানে আমি যেতেই শায়ন এসে আবার সেই ন্যাকামি শুরু করে দিলো। হাই, হ্যালো, কেমন আছো? ব্লা..ব্লা..ব্লা।
আমি যতই শায়নকে পাশ কাটাতে যাই। শায়ন ততোই আমার পাশে এসে কথা বলতে থাকে। আমি জানি রোদ ঠিক আমাকে নজরে রাখছে। কিন্তু কেনো রাখছে সেটাই বুজতে পারছি না।
শায়ন আমাকে জোর করে কথা বলাচ্ছে দেখে রোদ এসে আমার আর শায়নের মাঝে কথা বলা শুরু করে দেয়। আমার মনে মনে খুব খুশি লাগছে। এবার রোদ ওই শায়ন ফায়নকে সামলাবে। আমি বরং তিশার কাছে যাই। আমি আস্তে করে ওদের পাশ কাটিয়ে তিশার সাথে গিয়ে কথা বলা শুরু করে দেই। কিছুক্ষণ পর রোদ, তিয়াষ, আমি, সিমা, রোদেলা, মুন আমরা সকলেই এক হয়ে তিশা আর ওর বরের সাথে অনেক গল্প করে ওদের নিয়ে বাসায় চলে আসি।
আসার সময় আমি রোদ, মুন, তিয়াষ, রোদেলা আমরা সবাই এক গাড়িতে আগে চলে আসি। সিমা আর বাকি কাজিনরা আলাদা গাড়িতে পরে আসে।
আমরা তাড়াতাড়ি এসে তিশার ঘরটা খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে দেই। এই সাজানো নিয়েও আমার আর রোদের অনেক ঝামেলা হইছে। ও বলে এইভাবে তো আমি অন্যভাবে। এরকম করতে করতে সবাই মিলে সাজানো হইছে।
কিছুক্ষণ পরই তিশারা এসে পড়ে। তারপর সব নিয়ম কানুন শেষ করে ওদের রুমে ঢুকিয়ে আমরা সবাই বাইরে চলে আসি। কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে তিশার রুমে তিশার বাসর, আমরা থাকবো কোথায়? বিয়ে বাড়ি তাই রুম খালি নেই। এখন আমি কিভাবে ঘুমামু? এমনেই আমি না ঘুমাইয়া থাকতে পারি না। এখন আমার কি হবে?
মুনঃ কিরে বান্ধরনি! মন খারাপ কইরা আছিস কেনো?
মিষ্টিঃ শখে! আমি ঘুমামো কই?
মুনঃ কেনো? চলবে…
পরের পর্ব- মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১৪ | স্যারের সাথে প্রেম
সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প