মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১১ | স্যারের সাথে প্রেম: গত পর্বে আমরা দেখেছি মিষ্টির বিয়ে বাড়িতে সাজানো নিয়ে রোদ একটু রেগে গেছে কারণ মিষ্টিকে অনেক সুন্দর লাগছিল। রোদ চায় না যে মিষ্টিকে অন্য কেউ নজর দিক। দেখা যাক আজ কি হয়?
রোদের প্রতি মিষ্টির অনুভূতি
এরপর আমি কিছুক্ষণ রেগে বসে আছি।
তখনই রোদেলা আসে।
রোদেলাঃ আপু তুমি এখানে একা একা বসে আছো, কেনো? নিচে চলনা, প্লিজ।
মিষ্টিঃ আমার এখন ভালো লাগছেনা, রোদেলা। আমি পরে আসছি কেমন? তুমি এখন যাও।
রোদেলাঃ না, না। এখনই চলো প্লিজ, আপু প্লিজ চলো না।
বলে টেনে নিচে নিয়ে গেলো। আমি নিচে গিয়ে দেখি কতোগুলা মেয়ের সাথে রোদ কথা বলছে। ওখানে মুন, তিয়াষ, শায়ন, আমার অনেক কাজিন ও আছে।
মিষ্টিঃ কুত্তা, বিলাই, বদমাইশ, সজারু, পচা টমেটো, আমারে বকা দিয়ে এখন নিজেই মেয়েদের সাথে কথা বলতাছে। আমিতো মাত্র একটা ছেলের সাথে কথা বলছি। তুই যে এতোগুলা মেয়ের সাথে কথা বলছিস তখন। লুচু পোলা। যদি তোর চুলগুলো সব ছিড়ে আমি তোরে খাওয়াইতে পারতাম। তাহলে আমি খুশি হইতাম। (চোখ মুখ লাল করে মনে মনে)
রোদেলাঃ কি হলো আপু? কি হইছে? চলো।
মিষ্টিঃ আচ্ছা, রোদেলা এই মেয়েগুলা কারা?
রোদেলাঃ ওহ্, ওরা। ওরাতো আমাদের কাজিন হয়। জানোতো ওরা সবাই ভাইয়াকে অনেক পচ্ছন্দ করে। ছেলেদের মধ্যে যেহেতু ভাইয়া সবার বড় আর মেয়েদের মধ্যে ও সিমা আপু বড়। তাই ভাইয়ার সাথে সিমা আপুর বিয়ের কথা চলছে। কিন্তু ভাইয়া বিয়েতে মত দিচ্ছেনা তাই বিয়েটা ও এগোচ্ছে না।
মিষ্টিঃ মত দিচ্ছে না কেনো?
রোদেলাঃ কি জানি? ভাইয়াই ভালো জানে।
মিষ্টিঃ ওহ্! বাট এখানে সিমাটা কে?
রোদেলাঃ ওইযে ভাইয়ার পাশে বসা মেয়েটা।
মিষ্টিঃ (আমি রাগি চোখে তাকিয়ে আছি রোদের দিকে)
সিমা একদম রোদের গা ঘেষে বসে আছে। আর রোদ ব্যাটাও কিছু বলছেনা। উনি গল্পে মজে আছে। আমার ইচ্ছা করছে রাজের মাথাটারে ফাটাইয়া ওই সিমার হাত পা ভাইঙ্গা বসাই রাখি। এমন ঢলাঢলি করার কি আছে। অসভ্য মাইয়া।
রোদেলাঃ আপু কিহইলো, তুমি চলো। আমরা সবাই ওখানে মজা করছি।
আড়চোখে ভালবাসা
বলে আমাকে ও টেনে ওদের মাঝে নিয়ে যায়। আমি কোথাও জায়গা না পেয়ে শায়নের পাশে বসি।
শায়নঃ হাই..
মিষ্টিঃ হ্যালো।
শায়নঃ কোথায় ছিলা এতোক্ষণ তুমি?
মিষ্টিঃ এইতো আমি উপরেই ছিলাম।
শায়নঃ তাহলে এখানে আসছিলে না কেনো?
মিষ্টিঃ আমার ভালো লাগছিলো না তাই উপরে গেছিলাম।
শায়নঃ তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে?
মিষ্টিঃ আমার (রোদের দিকে চোখ যেতেই দেখি রোদ আমার দিকে রাগ দেখিয়ে আড়চোখে তাকিয়ে আছে)। আমার শরীর একদম ঠিক আছে, শায়ন। এখানে ওরা গল্প করছে। চলো তুমি আর আমি বাগানে গিয়ে কথা বলি।
শায়নঃ হুম চলো।
তারপর রোদকে দেখিয়ে দেখিয়ে আমি আর শায়ন ওদের সবার থেকে বের হয়ে চলে যাই।
শায়নঃ আচ্ছা, তোমার কি বিএফ আছে?
মিষ্টিঃ হুম আছেতো কেনো?
শায়নঃ (মন খারাপ করে)..নাহ্ এমনি। তার নাম কি জানতে পারি?
মিষ্টিঃ হুম, অবশ্যই। ওর নাম তো মুন।
শায়নঃ মুন, তোমার বিএফ কেমনে হয়?
মিষ্টিঃ কেমনে হয় মানে?
শায়নঃ মুনতো একটা মেয়ের নাম।
মিষ্টিঃ হুম, মেয়ের নামই তো।
শায়নঃ তাহলে কিভাবে তোমার বিএফ হয়?
মিষ্টিঃ তুমি আমাকে আমার বিএফের কথা জিজ্ঞাসা করছো। তো বিএফ মানে হলো বেষ্ট ফ্রেন্ড। আর আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড হলো মুন।
শায়নঃ ওহ, আমি ভাবলাম সত্যি সত্যি তোমার লাভার আছে।
মিষ্টিঃ থাকতেও পারে। হিহিহি…
শায়নঃ থাকতে পারে মানে?
মিষ্টিঃ কি জানি?
লুকোচুরি প্রেম
বলে ওখান থেকে চলে যাই। এরপর আমি আস্তে আস্তে করে রোদের ওখানে গিয়ে দেখি রোদ বাদে বাকি সবাই আছে।
মিষ্টিঃ কি ব্যাপার। খাম্বাটা গেলো কই?
রোদঃ তুমি কি আমাকে খুজছো।
মিষ্টিঃ (পেছনের দিকে তাকিয়ে), আপনি এখানে।
রোদঃ হ্যাঁ আমি এখানে। আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে খুজছিলে নাকি?
মিষ্টিঃ মোটেই না। আমি আপনাকে খুঁজতে যাবো কেনো? আমার কি খেয়ে-দেয়ে আর কোন কাজ নাই নাকি যে আপনাকে খুঁজবো?
রোদঃ তাহলে ওখানে উকি দিয়ে কি করছিলে?
মিষ্টিঃ কি করছিলাম? দেখছিলাম মুন আছে নাকি!
রোদঃ আমি তোমাকে কি বলছিলাম?
মিষ্টিঃ কি বলছিলেন?
রোদঃ তোমাকে অন্য কোন ছেলের সাথে না মিশতে তাইতো।
মিষ্টিঃ ওহ্, ওইটা।
রোদঃ তুমি ওই ছেলেটার সাথে কি করছিলে?
মিষ্টিঃ আমি যাই করি, তাতে আপনার কি? আপনি ও যখন ওই মেয়েগুলার সাথে কথা বলছিলেন তখন কি আমি কিছু বলছি, হ্যা।
রোদঃ মানে?
মিষ্টিঃ এখনতো কিছুই বুঝবেন না। ওই সিমা নাকি ডিমা যখন আপনার হাত ধরছিলো কই তখনোতো আপনি কিছু বললেন না। তাহলে আমারে কেনো বলছেন?
রোদঃ আমি যা ইচ্ছা আমি তাই করবো। কিন্তু তুমি আমি যা বলবো তাই করবে।
মিষ্টিঃ ইশশ! মগেরমুলুক নাকি। আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো। আচ্ছা, আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?
রোদঃ কি কথা?
মিষ্টিঃ আপনি প্রেম করেন?
রোদঃ কিহ্! (রেগে)
মিষ্টিঃ না, না, রাগবেন না, রাগবেন না। প্লিজ। আমি জানতে চাইছিলাম আরকি! আপনি আমাকেই যেই হারে গাইড করছেন না জানি আপনার প্রেমিকা বেচারির কি অবস্থা করছেন।
রোদঃ তুমি কিন্তু বেশি বলছো।
মিষ্টিঃ হ, নিজের ব্যাপারে বললেই বেশি বলা।
রোদঃ মিষ্টিইইই!
মিষ্টিঃ আমি তিশার কাছে যাচ্ছি।
তারপর আমি দৌড়ে তিশার কাছে যেয়ে বসলাম।
তিশাঃ তুমি এতোক্ষণ আসো নাই কেনো?
মিষ্টিঃ সরি, সরি। রাগ কইরো না প্লিজ। আমি এখন চলে আসছি। আর যাবো না। ওকে।
তিশাঃ হুম।
মিষ্টিঃ এই মুনটা কই। ওরে এখন একদমই পাওয়া যায় না। আজকে একবার পাই তাহলে ওরে মজা বুঝাবো। (মনে মনে)
তারপর তিশার… চলবে…
পরের পর্ব- মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১২ | স্যারের সাথে প্রেম
সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প