মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১০ | স্যারের সাথে প্রেম: গত পর্বে আমরা মিষ্টিকে ক্ষেপানো দেখিছি, রোদ নিজের বউয়ের মত আচরণ করছে মিষ্টির প্রতি। মিষ্টি বুঝেও না বোঝার ভান করে আছে আর মজা নিচ্ছে। আজ বিয়ের দিন দেখা যাক কি হয়?
রোদকে নিয়ে তর্ক
তিশাঃ কিন্তু তোমরা স্যার বলছো কেন?
মুনঃ তুমি জানো না। রোদ স্যারতো আমাদের ভার্সিটির নতুন ইংলিশ স্যার।
তিশাঃ ওহ্! আমি জানতাম ভাইয়া ভার্সিটিতে জব করে বাট তোমাদের ভার্সিটিতেই জব করে এটাতো জানতাম না। ভাইয়ার ক্লাস তোমরা করছো। তাহলে তো অনেক মজা করো তাই না। রোদ ভাইয়া অনেক ভালো।
মিষ্টিঃ হ, অনেক ভালো। একদিন ক্লাস করলে বুঝবা ভাইয়া কতো ভালো।
তিশাঃ কেনো? ভাইয়াকেতো আমি ছোট বেলা থেকেই চিনি। অনেক ভালো উনি। আমার আম্মু আব্বুতো ওনাকে অনেক ভালোবাসে।
মিষ্টিঃ কি দেইখা?
তিশাঃ মানে।
মুনঃ কিছুনা। কিছুনা।
আচ্ছা তোমরা চলো খেতে যাই। আর কিছুক্ষণ পর আবার তোমাকে (তিশাকে) পার্লারে যেতে হবে।
তিশাঃ হুম, চলো।
মুনঃ কিরে তুই দারায় আছিস কেন, চল।
মিষ্টিঃ তোরা যা। আমি ফ্রেশ হইয়া আসছি।
মুনঃ আচ্ছা।
তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে খাবার জায়গায় চলে যাই। সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমাদের রুমে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নেই।
মুনঃ মিষ্টি চল। তিশাকে নিয়ে পার্লারে যাবি না।
মিষ্টিঃ আমি যাবো না। তোরা যা প্লিজ।
মুনঃ মানে, কেনো?
মিষ্টিঃ আজকে আমার একটুও ভালো লাগছেনারে যেতে।
মুনঃ তাহলে তুই সাজবি কেমনে?
মিষ্টিঃ কেন? আমার হাত নাই। নাকি আমি সাজতে পারি না। হুম, আমি হাল্কা ভাবে সাজমু। তাই পার্লারে যাইতে হবে না।
মুনঃ চলনা, প্লিজ।
মিষ্টিঃ আমার মাথাটা ব্যথা করছে সত্যি। না হলে যাইতাম।
মুনঃ ঠিক আছে। তাহলে তুই থাক।
মিষ্টিঃ হুম। তোরা যা তাড়াতাড়ি। নাহলে আসতে আবার লেট হবে।
মুনঃ হুম, যাচ্ছি।
মিষ্টির অপরূপ সাজ
ওরা চলে গেলে আমি আবার একটু ঘুমিয়ে নেই। সকালের ঘুমটা পূরণ করলাম আরকি।
তারপর উঠে শুধু একটা লাল রঙের ড্রেস পরে কানে দুল, হালকা করে লিপস্টিক দিয়ে চুল ছেড়ে রেডি হয়ে নেই।
তারপর নিচে চলে যাই। গিয়ে দেখি মুনরাও চলে আসছে।
মুনঃ মিষ্টি তোরে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে।
তিশাঃ হ্যা, আপু। তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
মিষ্টিঃ মিথ্যা বলিস কেন? আমিতো তেমন মেকাপ ও করি নাই। আর তিশা তুমি নতুন বউ। তোমাকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে। (মুচকি হেসে)
মুনঃ নারে। সত্যি, মেকাপ না কইরাও তোরে অনেক কিউট লাগতাছে।
মিষ্টিঃ তাই নাকি!
তারপর তিশাকে বসিয়ে রেখে আমরা সবাই গেটের সামনে যাই বর আসছে তাই।
এতোক্ষণ খাম্বাটাকে একটুও দেখিনি। কি করছে কে জানে। দূর আমি এতো ভাবছি কেনো। যেখানে ইচ্ছা যাক। তাতে আমার কি?
গেইটের সামনে যেতে সকলে বর ও বরেরবাড়ির লোকদের আটকিয়ে রাখে। ওখানে অনেক ঝগড়া করে বরের কাছ থেকে নগদ দশ হাজার টাকা নিয়ে তবেই ভেতরে আসতে দিয়েছি। ওখানেই বরের বেষ্ট ফ্রেন্ড শায়নের সাথে আমার প্রচুর ঝগড়া হয়। ছেলেটা অনেক স্মার্ট আর হ্যান্ডসাম ও।
তারপর আমরা সবাই ভিতরে যাই। আমি ভিতরে যেতে নিলে শায়ন এসে আমার সাথে পরিচয় করে নেয়। আমরা হেসে হেসে কথা বলছি তা কেউ খেয়াল না করলেও একজন ঠিক খেয়াল করছে।
আমি শায়নের সাথে কথা বলা শেষ করে মুনকে খুঁজতে গিয়ে হঠাৎ কেউ আমার হাত জোরে চেপে ধরে টেনে একপাশে নিয়ে যায়।
রোদের মিষ্টি শাসন
আমি মুখ না দেখেই রেগে গিয়ে বলি,
মিষ্টিঃ ওই কেরে তুই। আমার হাত ধরিস কোন সাহসে। তোর সাহসতো কম না। কতো বড় অসভ্য তুই।
বলে তাকিয়ে দেখি রোদ।
মিষ্টিঃ আবার আপনি। এই আপনি আমার পিছন কি ছাড়বেন না? যেখানে যাই সেখানেই আপনি। উফঃ ভাল লাগেনা আমার। (বিরক্তি নিয়ে)
রোদঃ ছেলেদেরকে রুপ দেখাতে বেশি ভালো লাগে তোমার, তাই না। ছেলেদের সাথে হেসে হেসে কথা বলার কি আছে টা কি তোমার? আর এতো সেজেছোই বা কেনো? হ্যা। এতো সাজার দরকারটা কি তোমার। বিয়েটা কি তোমার। যে এতো সাজতে হবে। (রেগে)
মিষ্টিঃ আশ্চর্যতো। আমি কই এতো সাজলাম। আমিতো আজকে সাজলামই না। আর আমি সাজলে বা ছেলেদের সাথে কথা বলি তাতে আপনার কি?আপনার এতো জ্বলে কেনো?
রোদঃ আমি জানি না। কিন্তু তুমি আর ছেলেদের সাথে কথা বলবা না আর সাজবা ও না, ব্যস।
মিষ্টিঃ আমি সাজমু। একশো বার সাজমু। আপনিতো আমাকে পেত্নী বলছেন। এখন এই পেত্নী সাজুক বা ছেলেদের সাথে কথা বলুক তাতে আপনার কি বলুন?
রোদঃ আমি যা বলেছি তুমি তাই করবে। বুঝেছো?
মিষ্টিঃ আপনি ভার্সিটিতে আমার স্যার। এখানে না। তাই এখানে আমি আপনার কোন কথাই শুনবোনা। আর আমার যা ইচ্ছা আমি তাই করবো।
রোদঃ আমি যা বলেছি তাই যেন হয় (মুখ গম্ভীর করে)।
বলে হনহন করে চলে যায়।
মিষ্টিঃ এহ! আমি যা বলছি তাই যেনো হয় (ভেঙিয়ে)। কেনো হ্যা কেনো? আমার আপনার কথা শুনতে হবে কেনো? খাটাশ একটা। তোরে আমি তেলাপোকা আর টিকটিকির স্পেশাল স্যুপ খাওয়ামু। হনুমান, বান্দর কোথাকার (বিড়বিড় করে)।
তখনই তিয়াষ আর মুন একসাথে এসে বলে,
তিয়াষঃ মিষ্টি, তুমি এখানে কি করো? আসো আমরা সবাই ওখানে।
মুনঃ কিরে, মিষ্টি। চল।
মিষ্টিঃ তোমরা যাও, আমি যামুনা।
বলে রুমে এসে মুখ ফুলিয়ে বসে আছি। আমি কি এমন সাজছিলাম। যে আমাকে এতো কিছু বললো। আমার নাকি ছেলেদের রুপ দেখাতে ভালো লাগে ছেলেদের সাথে কথা বলতে ভালো লাগে। আশ্চর্য! আমি কখন এগুলা করলাম। আমাকে শুধু শুধু এতোগুলা কথা শুনাইলো খাম্বাডায়।
এরপর আমি…চলবে…
পরের পর্ব- মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১১ | স্যারের সাথে প্রেম
সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প