কষ্টের ছোট কবিতা – লকডাউন সম্পর্কের আড়ালে থাকা প্রেম

কষ্টের ছোট কবিতা – লকডাউন সম্পর্কের আড়ালে থাকা প্রেম: প্রিয় মানুষটিকে না দেখতে পাওয়ার কষ্ট আর স্মৃতি নিয়ে এই কবিতা। এটি একটি স্মৃতিচারণ কবিতা।
লকডাউন সম্পর্কের আড়ালে থাকা প্রেম
– ফারহানা পুতুল
লকডাউন এ নগরী আবার কোন দিন হয়তো
পুরনো সেই নিজস্বতায় ফিরে আসবে,
আবার সেই ব্যস্ততম সকাল-সন্ধ্যায়
ধূলো উড়বে ট্রাফিকের চেনা রাস্তায়।
বুড়িঙ্গায় সারি বাঁধা ডিঙি নৌকায়,
মাঝি বৈঠার উপর দিয়ে উড়ে যাবে সন্ধ্যের পাখিরা।
শীতলক্ষার লঞ্চগুলো ছেড়ে যাবে গন্তব্যে
পৌছে দেয়ার প্রচন্ড তাড়াহুড়োতে।
টি,এস,সির আড্ডায়, মিলে মিশে একাকার হবে
পাঁচমিশালি সেসব গল্পগুলি,
মামাদের দোকানে ডাক পরে যাবে
মালটা,তেতুল,আর অপরিজিতা চায়ের।
ক্যাফেটেরিয়ায় গানমঞ্চের আড়ালে
সময় ভুলে হবে আড্ডা,
মাইকের করা শোরগোলে বাঁধা পরবে
আবৃত্তির ক্লাসের টিউটোরিয়ালে।
নিউমার্কেটের ট্রাফিক সিগনালে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে যাবে সময়,
কবিতা ক্যাফেতে কবি সভা হবে
সকাল দশটা থেকে বারোটা,
থিয়েটারের ক্লাসের জন্য
প্রবেশ নিষেদের নিষেধাজ্ঞায় দড়জার বাইরে
ঠাঁয় দাড়াবে অপেক্ষমান কোন প্রেম।
ঝিকাতলার, ট্র্যাম্প আর মিউজিক ক্যাফেতে,
পিচ ঢালা কালো সোফায় বসেই কফি আর প্ল্যাটারের অর্ডারটা দিয়েই ঝগড়ায় ফেটে পরবে
যুগল কোন প্রেমিক প্রেমিকা,
যেন চোখের পানিতে শুরু হলো কয়েকমাস পর
দেখতে পাওয়া একরোখা কোন প্রেমের গল্প,
এরপর বাকিটা সন্ধ্যা চা ওয়ালার চায়ের টেবিলে কিছুটা ক্ষান্ত দিলো তাঁরা- আবহমান চলতে থাকা ঝগড়াটার,
জানে এবার দুজনেরি বিদায় বলার পালা,
আবার কবে না কবে দেখা হবে কে জানে!
সেল্ফিতে বন্দী করে নেওয়া শেষ সে মুহূর্তটুকু!
এভাবেই প্রতিটা গল্পে, প্রতিটা সময়ে,
প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত শহরে –
হুড তোলা রিকশার চাকায়,
শহর ফিরে পাবে হারিয়ে যাওয়া অস্তিত্ব।
অথচ কে জানে!
এই আমি আর তুমির মতো কিছু মন হয়তো
খুঁজে বেড়াবে লকডাউন হয়ে যাওয়া সম্পর্কের
হারিয়ে যাওয়া সময় গুলোকে,
এ শহরের প্রতিটা রাস্তা কিংবা গলির মোড়ে,
টংদোকানে একলা হাতে চায়ের কাপে!
তারা জানে, তাদের আর কোনদিন দেখা হবে না
হয়তো হবে, শহরের কোন চেনা রাস্তায়
রাতের ল্যাম্পপোস্টের জমে থাকা নিস্তব্ধতায়!
নিষেধাজ্ঞার দূরত্বে যেন মুখমুখী হবে,
খুব বেপোরোয়া কোন প্রেম গল্পের চরিত্ররা।
লকডাউন সম্পর্কের আড়াল থেকে দেখে নিবে
হারিয়ে ফেলা সেই প্রিয় মুখ, মায়া কিংবা প্রেম।
আরো পড়ুন- সবুজ শাড়ির কবিতা – তুমি আসবে বলে