ইংলিশ স্যার যখন রোমান্টিক বর – এবার খেলা হবে: তুই আমাকে রিজেক্ট করছিস না তোর হাসবেন্ড একটা ডেভিল পড়বে। সারাক্ষণ তোকে ধমক দিবে। তোর সারাজীবন ধমক শুনেই কাটাতে হবে।
পর্ব ১
অধরা এই অধরা ওঠ না অনেক বেলা হয়ে গেছে কলেজ জাবি তো?
উফ মা দাড়াও না আর একটু ঘুমিয়ে নেই। (অদূরে গলায়)
হ্যাঁ ঘুমা দেরি হয়ে গেলে যেনো আমাকে কিছু বলতে আসিস না। এই বলে মিসেস সাবনী স্থান ত্যাগ করেন।
হটাৎ কিছু একটা পড়ার শব্দে উঠে বসি! এ মা একি কে পানি দিয়ে ভেজালো আমাকে? রাগে সারা শরীর জ্বলছে তারপর দেখি মেসেস মাদার বাংলাদেশ তার ছত্রিশ পাটি দাঁত বার করে হাসছে।
কি করবো বল অনেক ক্ষণ থেকে তোকে ডেকেই চলেছি কিন্তু তোর কোনো সারা নেই!
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে যেন আমি আকাশ থেকে পড়লাম!
এমা দশটা বেজে গেছে।
আজ আমার কলেজে বর্ষ বরণ অনুষ্ঠান সেখানে আমার গান গাওয়ার কথা আছে।
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ি কলেজের উদ্দেশ্য।
পুরো রাস্তা ফাঁকা একটাও রিকশা নেই।
কি করবো সময় মত পৌঁছাতে না পারলে তো আজ আমার সম্মান এর ফেলুদা।
হটাৎ দেখি একটা টোটো কোম্পানির বাইক আসছে। নড়বড়ে যায় হোক অতো ভাবার সময় নেই।
রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
এই যে মিস্টার দাঁড়ান দাঁড়ান।
বাইক থামিয়ে একটা সুদর্শন ছেলে আমার সামনে এসে দাড়ালো।
বাহ কি অসম্ভব সুন্দর দেখতে।
কেমন যেন ঘোর লেগে যাচ্ছে।
এই stupid girl পাগলী নাকি।
এভাবে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
মরার ইচ্ছে থাকলে অন্য কোথাও যান আমার বাইকের সামনে কেন?
কি।
কি বললেন আমি পাগলী?
আপনি পাগল আপনার চৌদ্দ গুষ্টি পাগল।
হ্যাঁ তাতো দেখায় যাচ্ছে কে পাগলী।
শুধু পাগলী না একজন ঝগরুতে পাগলী।
কি আবার আমাকে ঝগরুতেও বলা হচ্ছে।
নিজেকে দেখেছেন কখনো আয়নায়।
একটা ভাঙাচুড়া বাইক নিয়ে চলা ফেরা করছেন দেখে যেন মনে হচ্ছে একটা টোকাই।
Mind your language stupid girl।
যায় হোক আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে!
আর তা ছাড়া একটা পাগলির সাথে কথা বাড়ানোর কোনো মানেই হয় না।
লোকটার কোথায় আমার খেয়াল হলো যার জন্য দাঁড় করিয়ে ছিলাম সেটাই তো ভুলে গেছি।
যেভাবেই হোক আমাকে কলেজে পৌঁছাতেই হবে।
এই যে শুনছেন……..
সরি?
জি আপনাকেই বলছি।
আসলে রাস্তায় কোনো রিকশা না পেয়ে আপনাকে থামিয়ে ছিলাম।
১১:৩০ এর মধ্যে আমাকে কলেজে পৌঁছাতেই হবে! না হলে অনেক বড় বিপদ হয়ে যাবে।
এতোক্ষণ তো ভেড়া গলায় খুব চেঁচাচ্ছিলেন দরকার এর কথা মনে ছিলো না।
পারবোনা আমি কোনো সাহায্য করতে।
প্লিজ প্লিজ এমন করবেন না।
একটা অসহায় মিষ্টি মেয়েকে এভাবে রাস্তার মাঝখানে ফেলে যাবেন না।
ঘোর পাপ হবে আপনার।
মিষ্টি মেয়ে মাই ফুট, পাগলী একটা!
যায় হোক গাড়িতে বসুন।
রাগে এখন আমার মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে।
তবুও কিছু বললাম না! এর প্রতিশোধ একদিন আমি ঠিকই নিয়ে নিবো। just wait end wach মিস্টার টাকাই।
পর্ব ২
যথা সময়ে কলেজে পৌঁছে গেলাম। আমি সোজা সামনের দিকে হাঁটা দিলাম।
এই মেয়ে কারো সাহায্য নিলে যে মিনিমাম Thanks বলতে হয় এটাও কি আপনার জানা নেই।
রাগটা চরম পর্যায়ে উঠে গেল! কি মনে করেন কি আপনি নিজেকে? ধন্যবাদ নেওয়ার এতো শখ আপনার। দিবোনা না যান কি করবেন করেন হা হা হা।
You……..
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে সামনের দিকে হাঁটা দিলাম। অলরেডি ১১:০০ টা বেজে গেছে। কপাল ভালো কারণ আমার শাকচুন্নি বাঁধবী বললো অনুষ্ঠান নাকি এখনো শুরু হয়নি।
যাক বাবা, আমার আমার জন্য তো ভালোই হয়েছে। খুশিতে লুঙ্গি ডান্স দিতে ইচ্ছে করছে। হল রুমে পৌঁছে দেখি স্যার আনাউচমেন্ট করছে আর কিছু সময়ের মধ্যে আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে।
আমি আর প্রিয়া গিয়ে সামনের সারির চেয়ারে বসে পড়লাম। একের পর এক পারফরম্যান্স এর পর এবার আমার ডাক পড়লো।
এবার মঞ্চে গান গাইতে আসছে অধরা ইসলাম।
মঞ্চে উঠে আমি আমার পছন্দের গানটি গাইলাম।
চলতি সময় থমকে দাঁড়ায়।
জেগে জেগে স্বপ্ন দেখি হায়।
তোমারি হাত ধরতে চাই।
ফাগুন হওয়ায়……..
অনুষ্ঠান শেষে আমি আর প্রিয়া অপেক্ষা করছি রিকশার জন্য।
এমন সময় দেখি ফুসকাওয়ালা।
আর এক মুহূর্ত দেরি না করে প্রিয়া কে নিয়ে ফুসকা খেতে গেলাম।
মামা দুই প্লেট ফুসকা দেন তো বেশি করে ঝাল দিবেন।
এই অধরা তোর না গেস্টিক এর সমস্যা আছে?
বেশি বকবক করিস না তো খাওয়ার সময় বকবক করতে নেই বেবি।
ওকে যা তোর যা ইচ্ছে তাই কর, কিন্ত মামা আমাকে ঝাল কম দিবেন।
হ্যাঁ ঐ শাকচুন্নি ডারে ঝাল কম দিয়েন নইলে গলা আটকে মরবো গা হা হা হা।
কি বললি দারা তোরে মজা দেখাইতেছি।
উফ মা কি শুরু করলে সকাল সকাল তোমার এই বাচ্চা মেয়েটার আরামের ঘুম কেন হারাম করছো বলো তো?
সকাল সকাল তাইনা?
এখন কয়টা বাজে জানিস?
হুম জানি তো এই সাতটা অথবা সাড়ে সাতটা বাজে!
স্বপ্ন দেখলি নাকি এখন সাতটা সাড়ে সাতটা বাজে?
এখন সাড়ে নয়টা বাজে।
আজকে কলেজ জাবি না নাকি?
কি!
মা সাড়ে নয়টা বেজে গেছে আর তুমি আমাকে এখন বলছো?
আজ্ঞে না মহারানী আপনাকে এই পর্যন্ত আমি চার চারবার ডেকে গেছি,
আপনার তো উঠার নামি নেই।
আচ্ছা আচ্ছা মা যাও তুমি আমি এখনই রেডি হয়ে আসছি।
তাড়াতাড়ি নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লাম!
একি আজকেও তো রাস্তা ফাঁকা আমি এখন কিভাবে কলেজ পৌছাবো,
আজকে তো আবার কলেজে নতুন ইংলিশ টিচার এর আসার কথা আছে।
আমি এখন কি যে করি সময় মতো কলেজ পৌঁছাতে না পারলে কি যে হবে।
যাক বাবা একটা রিকশা পেয়ে গেছিলাম যার জন্য সময় মতো এসে পৌঁছাতে পেরেছি।
কি রে অধরা তোকে না বলেছিলাম আধা ঘন্টা আগে আসতে আর তুই এখন আসছিস?
আর বলিস না একটাও রিকশা পাচ্ছিলাম না,
যার জন্য আসতে দেরি হলো।
আচ্ছা শোন তোকে বলেছিলাম না আজকে কলেজে নতুন ইংলিশ স্যার আসবে!
হুম তো?
আরে শোন না স্যার নাকি আজকে আসবে না আগামীকাল আসবে।
বাহ বাহ আগামীকাল কেন – আগামী কোনো কালেই যেন না আসে,
তাহলে আর স্যার এর বকবক শুনতে হবে না।
চুপ করবি তুই চল ক্লাসে যাই………
সন্ধ্যা বেলা একটু মনোযোগ সহকারে পড়ছিলাম এমন সময় আমার মাদার বাংলাদেশ এর ডাক
অধরা এই অধরা………………
হ্যাঁ মা।
পাশের বাসার যুথি এসেছে নীচে আই
থাক না আন্টি ওকে আস্তে হবে না আমিই যাচ্ছি উপরে।
আচ্ছা মা যাও
রুমের দরজা খুলতেই দেখি যুথি এসে দাঁড়িয়ে আছে।
কি রে এতদিন কই মরে ছিলি? তোর তো দেখায় নেই,
এসব কথা বাদ দে।
অধরা জানিস?
পাশের বাসায় নাকি নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে।
শুনলাম তার আশপাশ দিয়ে ঘুরঘুর করলেও নাকি সে মেয়েদের দিকে তাকায় না।
হুম আসছে তাতে আমার কি?
আমার কোনো শখ নেই অন্যের ঘরে উকি মারার।
তোর ইচ্ছে হয় তুই উকি মার!
এই বলে যুথীকে বার করে রুমের দরজা বন্ধ করে দেই।
পর্ব ৩
সকাল ১০:৫০ ক্লাসে বসে আছি এমন সময় রিদয় এসে বললো…..
I love you অধরা।
কথা টা শুনে মেজাজ বিগড়ে গেলো।
এক থাপ্পড়ে তোর সব দাঁত ফেলে দিবো ফাজিল ছেলে,
যতো দিনে তোর বিয়ে হবে আমার ছেলে মেয়ে তোকে আঙ্কেল বলে ডাকবে, তোর বিয়ের দাওয়াতে যাবো।
আর তুই আসলি আমাকে প্রেমের প্রপোজ করতে।
আমি যথেষ্ট Adult…..
Oh Sorry,
আমি তো নাবালিকা এই জন্য বুঝতে পারিনি আঙ্কেল” আপনি কবে সাবালক হয়েছেন। (অধরার কথা শুনে সব বন্ধুরা হেসে দিলো)
প্রেম করবিনা ঠিক আছে কিন্তু আঙ্কেল ডাকলি কেন? (রেগে)
আচ্ছা ভাই বাদ দে আমরা ভালো বন্ধু আছি বন্ধু থাকি। কি দরকার ফ্রেন্ডশিপ নষ্ট করার, তোরা তো জানিস আমার কেমন ছেলে ভালো লাগে,
এমন সময় শাম্মি বলে উঠলো হুম জানি তো loving, carring, sweet, cute, নম্র, ভদ্র, নরম মনের মানুষ আর জানি কি?
অধরা – যে কখনো আমাকে একটা ধমকও দিবে না। (মুখে হাসি ফুটিয়ে)
আনিসা – আমার মনে হয় তোর হাসবেন্ড তার উল্টো হবে দেখেনিস।
অধরা – কখনো না আমার বিশ্বাস আছে। (ভাব নিয়ে)
তুই আমাকে রিজেক্ট করছিস না তোর হাসবেন্ড একটা ডেভিল পড়বে। সারাক্ষণ তোকে ধমক দিবে। তোর সারাজীবন ধমক শুনেই কাটাতে হবে।
এই তুই আমার দোস্ত নাকি দুশমন?
এতো গুলো অভিশাপ একসাথে দিলি (রেগে গিয়ে)
এই তোরা কি ঝগড়ায় করবি ক্লাসে যাবি না?
অধরা চল আজকে আবার নতুন ইংলিস টিচার আসবে ক্লাসে যেতে হবে।
আজ কলেজে নতুন ইংরেজি টিচার এসেছে,
প্রিন্সিপাল স্যার নতুন টিচার কে ক্লাসে নিয়ে যায় পিরিচয় করানোর জন্য,
প্রিন্সিপাল – Hello everyone…..
Students – Hello Sir……
প্রিন্সিপাল – তোমানের New ইংলিশ টিচার মিস্টার আদিত্য চৌধুরী।
মিস্টার আদিত্য আপনি স্টুডেন্ট দের সাথে পরিচয় হোন আমি আসি।
OK Sir….
Students আমি ক্লাস শুরু করার আগে তোমাদের সাথে পরিচিত হয়ে নেই,
আমার নাম তো আপনারা জেনেছেন, এবার আপনাদের নাম জেনে নেওয়া যাক।
এতক্ষণ অধরা নিরব দর্শকের মতো সবটা দেখে যাচ্ছিলো। নিজের চোখকেই বিশ্বাস হচ্ছে না যেনো ভূত দেখছে।
অধরা এই অধরা কি ভাবছিস এতো মনোযোগ দিয়ে?
প্রিয়ার কথায় অধরা একটু নড়ে চড়ে বসলো!
পি, পি প্রিয়া তোকে বলেছিলাম না কলেজের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের দিন রাস্তায় একটা টুকাই এর সাথে দেখা হয়েছিল?
হ্যাঁ বলেছিলি তো কি হয়েছে?
সে আর কেউ না রে এই সেই টোকাই।
মনে?
কি বলিস?
সেই টোকাই মানে আমাদের আদিত্য স্যার?
হ্যাঁ রে।
কি যে হবে জানি না আমাকে দেখলেই তো উনি গিলে খাবে।
আরে না এমন কিছুই হবে না তুই অযথাই এতো চিন্তা কিরছিস!
এর মাঝেই হটাৎ অধরা senseless হয়ে যায়।
ক্লাসের সবাই কিছুটা অবাক হয় প্রিয়া, ঋতু অধরা কে চেয়ারে বসিয়ে মুখে হালকা পানি ছিটিয়ে দিলো, অধরা চোখ খুলতেই আদিত্য বললো,
Are You Ok?
অধরা: হুম (মাথা নিচু করে)
আদিত্য – আমেজ আমি তো জানতাম তুমি অনেক সাহসী
কিন্তু…… (মুচকি হাসি দিয়ে ক্লাস করানো শুরু করলো)
অধরা ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরে চিন্তায় বিভোর হয়ে আছে, আদিত্য স্যার কি আমাকে চিনতে পারলো?
পরের দিন ক্লাস শেষে আদিত্য বললো….
মিস অধরা যাওয়ার সময় আমার সাথে দেখা করবা
অধরা – জী স্যার।
অধরা ভয়ে ভয়ে আদিত্যর সাথে দেখা করতে যাই,
অধরা – may I coming sir
আদিত্য – yes
হুম তোমাকে কিছু জানানোর ছিলো।
অধরা ভাবছে স্যার কি আমাকে চিনতে পেরেছে? এবার নিশ্চয় আমাকে কলেজ থেকে বার করে দিবে (মনে মনে)
প্লিজ স্যার আমাকে মাফ করে দিন।
আমি আর কখনো এমন করবো না।
স্যার ভুল হয়ে গেছে,
আমি অনেক গরিব ঘরের মেয়ে বাবা মা অনেক কষ্ট করে আমার পড়াশোনা করাচ্ছেন (কাঁদো কাঁদো গলায়)
wait wait কে তোমাকে বার করে দিচ্ছে?
না মানে তাহলে কি জানানোর জন্য আমাকে ডাকছেন?
এই চ্যাপ্টার টা কাল কমপ্লিট করে আসবা আর তা না হলে কঠিন শাস্তি আছে।
ওকে স্যার কমপ্লিট করে আসবো।
Ok এবার যেতে পারো।
ধন্যবাদ স্যার।
টুকাই টার রুম থেকে বেরিয়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
পর্ব ৪
সকাল ১০:৫০ ক্লাসে বসে আছি এমন সময় রিদয় এসে বললো…..
I love you অধরা।
কথা টা শুনে মেজাজ বিগড়ে গেলো।
এক থাপ্পড়ে তোর সব দাঁত ফেলে দিবো ফাজিল ছেলে,
যতো দিনে তোর বিয়ে হবে আমার ছেলে মেয়ে তোকে আঙ্কেল বলে ডাকবে, তোর বিয়ের দাওয়াতে যাবো।
আর তুই আসলি আমাকে প্রেমের প্রপোজ করতে।
আমি যথেষ্ট Adult…..
Oh Sorry,
আমি তো নাবালিকা এই জন্য বুঝতে পারিনি আঙ্কেল” আপনি কবে সাবালক হয়েছেন। (অধরার কথা শুনে সব বন্ধুরা হেসে দিলো)
প্রেম করবিনা ঠিক আছে কিন্তু আঙ্কেল ডাকলি কেন? (রেগে)
আচ্ছা ভাই বাদ দে আমরা ভালো বন্ধু আছি বন্ধু থাকি। কি দরকার ফ্রেন্ডশিপ নষ্ট করার, তোরা তো জানিস আমার কেমন ছেলে ভালো লাগে,
এমন সময় শাম্মি বলে উঠলো হুম জানি তো loving, carring, sweet, cute, নম্র, ভদ্র, নরম মনের মানুষ আর জানি কি?
অধরা – যে কখনো আমাকে একটা ধমকও দিবে না। (মুখে হাসি ফুটিয়ে)
আনিসা – আমার মনে হয় তোর হাসবেন্ড তার উল্টো হবে দেখেনিস।
অধরা – কখনো না আমার বিশ্বাস আছে (ভাব নিয়ে)
তুই আমাকে রিজেক্ট করছিস না তোর হাসবেন্ড একটা ডেভিল পড়বে। সারাক্ষণ তোকে ধমক দিবে। তোর সারাজীবন ধমক শুনেই কাটাতে হবে।
এই তুই আমার দোস্ত নাকি দুশমন?
এতো গুলো অভিশাপ একসাথে দিলি (রেগে গিয়ে)
এই তোরা কি ঝগড়ায় করবি ক্লাসে যাবি না?
অধরা চল আজকে আবার নতুন ইংলিস টিচার আসবে ক্লাসে যেতে হবে।
আজ কলেজে নতুন ইংরেজি টিচার এসেছে,
প্রিন্সিপাল স্যার নতুন টিচার কে ক্লাসে নিয়ে যায় পিরিচয় করানোর জন্য,
প্রিন্সিপাল – Hello everyone…..
Students – Hello Sir……
প্রিন্সিপাল – তোমানের New ইংলিশ টিচার মিস্টার আদিত্য চৌধুরী।
মিস্টার আদিত্য আপনি স্টুডেন্ট দের সাথে পরিচয় হোন আমি আসি।
OK Sir….
Students আমি ক্লাস শুরু করার আগে তোমাদের সাথে পরিচিত হয়ে নেই,
আমার নাম তো আপনারা জেনেছেন, এবার আপনাদের নাম জেনে নেওয়া যাক।
এতক্ষণ অধরা নিরব দর্শকের মতো সবটা দেখে যাচ্ছিলো। নিজের চোখকেই বিশ্বাস হচ্ছে না যেনো ভূত দেখছে।
অধরা এই অধরা কি ভাবছিস এতো মনোযোগ দিয়ে?
প্রিয়ার কথায় অধরা একটু নড়ে চড়ে বসলো!
পি, পি প্রিয়া তোকে বলেছিলাম না কলেজের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের দিন রাস্তায় একটা টুকাই এর সাথে দেখা হয়েছিল?
হ্যাঁ বলেছিলি তো কি হয়েছে?
সে আর কেউ না রে এই সেই টোকাই।
মনে?
কি বলিস?
সেই টোকাই মানে আমাদের আদিত্য স্যার?
হ্যাঁ রে।
কি যে হবে জানি না আমাকে দেখলেই তো উনি গিলে খাবে।
আরে না এমন কিছুই হবে না তুই অযথাই এতো চিন্তা কিরছিস!
এর মাঝেই হটাৎ অধরা senseless হয়ে যায়।
ক্লাসের সবাই কিছুটা অবাক হয় প্রিয়া, ঋতু অধরা কে চেয়ারে বসিয়ে মুখে হালকা পানি ছিটিয়ে দিলো, অধরা চোখ খুলতেই আদিত্য বললো,
Are You Ok?
অধরা: হুম (মাথা নিচু করে)
আদিত্য – আমেজ আমি তো জানতাম তুমি অনেক সাহসী
কিন্তু…… (মুচকি হাসি দিয়ে ক্লাস করানো শুরু করলো)
অধরা ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরে চিন্তায় বিভোর হয়ে আছে, আদিত্য স্যার কি আমাকে চিনতে পারলো?
পরের দিন ক্লাস শেষে আদিত্য বললো….
মিস অধরা যাওয়ার সময় আমার সাথে দেখা করবা
অধরা – জী স্যার।
অধরা ভয়ে ভয়ে আদিত্যর সাথে দেখা করতে যাই,
অধরা – may I coming sir
আদিত্য – yes
হুম তোমাকে কিছু জানানোর ছিলো।
অধরা ভাবছে স্যার কি আমাকে চিনতে পেরেছে? এবার নিশ্চয় আমাকে কলেজ থেকে বার করে দিবে (মনে মনে)
প্লিজ স্যার আমাকে মাফ করে দিন।
আমি আর কখনো এমন করবো না।
স্যার ভুল হয়ে গেছে,
আমি অনেক গরিব ঘরের মেয়ে বাবা মা অনেক কষ্ট করে আমার পড়াশোনা করাচ্ছেন (কাঁদো কাঁদো গলায়)
wait wait কে তোমাকে বার করে দিচ্ছে?
না মানে তাহলে কি জানানোর জন্য আমাকে ডাকছেন?
এই চ্যাপ্টার টা কাল কমপ্লিট করে আসবা আর তা না হলে কঠিন শাস্তি আছে।
ওকে স্যার কমপ্লিট করে আসবো।
Ok এবার যেতে পারো।
ধন্যবাদ স্যার।
টুকাই টার রুম থেকে বেরিয়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
পর্ব ৫
সাবনী কোথায় গেলে তোমার জামাই চলে এসেছে।
হ্যাঁ আসছি
প্রিয়া মা তুমি অধরার কাছে থাকো আমি নিচে যায়।
“আসসালামু আলাইকুম”
ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আসো বাবা ভিতরে আসো
হুম বুঝি বুঝি জামাই কে পেয়ে বাল্য কালের এক মাত্র দোস্ত কেই ভুলে গেলি।
আরে কিযে বলিস তুই কি আমার পর নাকি যে তোকে আতিথিওতা করতে হবে? তুই তো শুধু আমার বন্ধু নাইরে তুই আমার ভাই।
দেখেছো আপা ওদের ড্রামা তো এখন চলতেই থাকবে চলো আমরা ভিতরে যায়,
এসো বাবা
জি আন্টি।
হ্যাঁ রে আমার মেয়েকে বাবা জীবনের পছন্দ হয়েছে তো?
বিয়ে তে রাজি তো?
আর বলিস কেন ছেলের তো সেই এক কথা আমি এখন বিয়ে করবো না আর কোনো উপায় না দেখে হার্ট এট্যাক এর অভিনয় করলাম ব্যাস রাজি না হয়ে আর যাবে কোথায়? হাহাহা
আচ্ছা অধরা মা রাজি হয়েছে তো?
হ্যাঁ মেয়ে আমার ভীষণ লক্ষি আমার কথা রাখবে না তা কি হয়?
সারা বাড়ি এক আনন্দের আমেজে মেতে উঠেছে।
কি যে আনন্দ হচ্ছে আমাদের দুই বন্ধুর সম্পর্ক তা আজকে দুই বেয়াই এ রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।
আমার আজো সেদিনের কথা মনে পড়ে দুটোতে মিলে সারা বাড়ি কেমন মাতিয়ে রাখতো,
একদিন তো মেয়ে টা আমার এসে বলেছিল বাবা বাবা আমি আর সন্দেশ ভাইয়ার সাথে খেলবো না।
কেন মা কি হয়েছে? সন্দেশ ভাইয়া বলেছে আর তোকে বউ বলে ডাকবো না।
মিঠাই তুই দেখতে পঁচা, আবার তোর একটা দাঁত ও পড়ে গেছে বুড়ি বুড়ি লাগে তোকে দেখতে।
চোখের সামনে যেন সেই দিনটা ভেসে উঠেছে।
পুরানো কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখের কোনে পানি জমা হয়েছে বুঝতেই পারিনি।
না আর দেরি করলে হবে না সাবনী যাও অধরা মাকে নিয়ে এসো,
কিছুক্ষণ বাদে অধরাকে নীচে নিয়ে আসা হলো।
সবাই তো অধরার হবু বরের রূপে মুগ্ধ কিন্তু সে এখনো দেখেনি তার হবু বর কে!
এদিকে প্রিয়া মিটি মিটি হাসছে।
কি রে অধরা এবার তো মুখ তুলে দেখ
জিজু আপনিও দেখেন আপনার হবু বউ কে (মুখে একগাল হাসি নিয়ে)
কি রে মা দেখ
কি আর করার অবশেষে দেখতে বাধ্য হলাম।
আপনি? ।
তুমি।
কারো মুখে কোনো কথা নেই।
পরিবেশ থমথমে হয়ে আছে,
নীরবতার প্রাচীর ভেঙে বললো তোরা এতো অবাক কেন হচ্ছিস?
তোরা কি একে ওপর কে চিনিস?
জি আন্টি, চিনবে না আবার উনিই তো আমাদের কলেজের নতুন ইংলিশ টিচার।
বাহ তাহলে তো নতুন করে পরিচয় করানোর কোনো দরকার নেই।
বিবাহের কাজ টা এবার সম্পূর্ণ হয়ে যাক।
দাঁড়াও বাবা এই বিয়ে হতে পারে না।
কেন পারে না?
কারণ অধরা আমার student এ বিয়ে কোনো ভাবেই হতে পারে না।
মুহূর্তের মধ্যে সারা বাড়ির আনন্দ যেন কোথায় ভ্যানিশ হয়ে গেল!
এটা তুই কি বলছিস?
এরকম বিয়ে কি আগে হয়নি নাকি আজ প্রথম হতে দেখছিস?
অধরা কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না সব কিছু যেন স্বপ্নের মত লাগছে ঘুম ভাংলেই সবকিছু স্বাভাবিক।
এটা কি সত্য?
স্যার কি সত্যি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে?
নাকি আমার ভুল ধারণা হটাৎ চিৎকার চেঁচামেচির শব্দে অধরার ঘোর কাটে।
এদিকে আদিত্যর কথা সহ্য না করতে পেরে মিস্টার ফরহাদ হার্ট এট্যাক করেন।
বাবা কি হলো তোমার চোখ খোলো বাবা।
না আর দেরি করলে হবে না এক্ষুনি বাবা কে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ, আদিত্য তার গাড়িটি বার করে মি. ফরহাদ কে গাড়িতে তুলে দ্রুত ড্রাইভ করেন হসপিটালের উদ্দেশ্য।
এদিকে মিসেস শিরিন কেঁদেই চলেছে,
চলুন ভাবি আর দেরি না করে আমাদের এখুনি হসপিটালে যেতে হবে।
এদিকে অধরা ভেবে পাচ্ছে না তার কি করা উচিত সে কি করবে আদিত্য স্যার কি তাকে এলাও করবে?
সব ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে অধরা বললো!
দাড়াও বাবা আমিও যাবো নিয়ে চলো আমাকে!
আচ্ছা চল মা।
কিছুক্ষনের মধ্যেই তারা হসপিটালে পৌঁছায়।
কেবিনের বাইরে আদিত্য দাঁড়িয়ে আছে ডাক্তার না বেরোনো পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।
এর মাঝেই ডাক্তার কেবিন থেকে বেরিয়ে বললো
মি. আদিত্য?
জি ডাক্তার।
বাবা কেমন আছেন?
মি. ফরহাদ এর অবস্থা ক্রিটিকেল তিনি আপনাকে কিছু বলতে চান।
পাঁচ বছর পরে…………
অধরা এই অধরা পাখিটা বার হও না প্লিজ,
আর কত সময় নিবা?
তাড়াতাড়ি এসো না প্লিজ তোমার মেয়ে আমাকে পাগল করে দিলো। (ওয়াশরুমের দরজায় নক করে)
এতো কাঁদিস কেন বাবা?
একটু তো সহানুভূতি দেখা নিজের বাপের উপর….
একদম মায়ের মতো হয়েছে,
এতো জেদি……..
উফফ পাঁচ মিনিট শুধু পাঁচটা মিনিট হয়েছে আমি ওয়াশ রুমে গেছি।
এই পাঁচ মিনিটেই তুমি হাপাই গেছো কেমন বাবা তুমি,
মেয়ে সামলাতে পারো না।
তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ালো।
আর এই মেয়েকেও বলিহারি যায়,
এতো চেচাতে পারে উফফ,
মেয়ের মা কেই সামলাইতে পারি না মেয়েকে কিভাবে সামলাবো হুম।
একদম মায়ের মতো একরোখা হয়েছে।
কি?
কি বললে তুমি (রাগি চোখে)
বলছিলাম যে,
হ্যাঁ কি বলছিলে তাই শুনতে চাচ্ছি?
বলছিলাম যে তোমার মতোই কিউট হয়েছে মেয়েটা,
একদম স্ট্রবেরি আইসক্রিম।
আর হাসিটাও ঠিক তোমার মতো।
আদিত্যর কথা আর বলার ভঙ্গিতে অধরা রাগ ধরে রাখতে পারলো না হো হো করে হেসে দিলো!
তুমি হাসো?
হাসবাই তো পড়ছে তো আমার গালে। (মুখটা দুঃখী দুঃখী করে)
এই পাঁচ বছরে জীবনের কতো কিছু পাল্টে গেছে।
যে আদিত্য বিয়ে করতে চাইতো না সে আজকে বউ বাচ্চা নিয়ে সংসারিক হয়ে গেছে।
ভাবতে ভাবতেই আদিত্য অতীতে হারিয়ে গেল,
সেদিন ডাক্তার বলায় বাবার কেবিনে যায়!
বাবা কেমন লাগছে এখন?
আমার হাতে সময় কম বাবা মরার আগে তোর কাছে একটা আবদার আছে রাখবি বাবা?
আবদার কে বলছো বাবা তুমি আমাকে আদেশ করো।
আগে তুই আমাকে কথা দে আমি যা বলবো তাই করবি?
হ্যাঁ বাবা তুমি যা বলবা তাই আমি করবো।
আমার শেষ ইচ্ছে তুই অধরা কে বিয়ে করে আমার বাড়িটা কে আলোকিত করবি।
আদিত্য চুপ আছে দেখে ফরহাদ সাহেব বলে তুই কিন্তু আমাকে কথা দিয়েছিস।
আচ্ছা বাবা আমি তোমার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করবো।
সেদিনই কাজী ডেকে ফরহাদ সাহেবের কেবিনেই আদিত্য ও অধরার বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হয়। yaa hu আমার প্লান সফল হয়েছে।
একি বাবা তুমি না অসুস্থ্য?
এটা আমার একটা প্লান ছিলো তোর আর অধরার বিয়ে দেওয়ার জন্য।
এই যে স্যার কি এতো ভাবছেন?
খাওয়ার সময় হয়ে গেছে তাড়াতাড়ি খেতে আসুন।
জি মহারানী আপনি যান আমি এক্ষনি আসছি।
লেখা – সোহানা
সমাপ্ত
(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “ইংলিশ স্যার যখন রোমান্টিক বর – এবার খেলা হবে” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)