বাসর রাত গল্প

বাসর রাত গল্প – দুষ্টু হিটলার বউ ইজ্জত শেষ করে দিল | Basor Raat

বাসর রাত গল্প – দুষ্টু হিটলার বউ ইজ্জত শেষ করে দিল: বাসর রাত প্রতিটি পুরুষ কত রোমান্টিক ভাবে সাজায়! কিন্তু আমার বাসর রাত হয়েছে একদম উল্টো। দুষ্টু বউটা আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিল আর শেষে ইজ্জতও মেরে দিল! এ কেমন বউ রে বাবা? মনে হয়ে হিসাব বিজ্ঞানের মেয়ে বিয়ে করেছি তা না হলে এত জেরা আর শাস্তি কেউ দেয়? উফফ পুরো গল্পটা এবার বলি, তাহলে শুনুন।

বাসর রাতে বিড়াল মারা

বিয়ের কাজ কর্ম শেষ করে সবাইকে বিদায় দিয়ে বাসর ঘরের দিকে রওনা হলাম। বাসর ঘরে ঢুকেই রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিলাম। দেখি, আমার বিয়ে করা বউটা বিছানায় বসে আছে। জানেনেই তো, সে আমার জন্যই অপেক্ষা করছে। তিন মাসে আগে আমাদের বিয়ে ঠিক হয়েছে। একটা পিক এ আমার বউটাকে দেখেছিলাম। সেই থেকে আমার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কিন্তু আমারতো এখন লজ্জা লজ্জা লাগছে। থাক, বাসর রাত আমার লজ্জা পেলে চলবে না। বিড়াল মারার এটাই উপযুক্ত সময়।

তাই আবল তাবল না ভেবে বিছানায় উঠতে যাব তখনি,

আমার বউঃ এই কি করছেন টাকি?

আমিঃ কেন বিছানায় উঠছি? (আমি হালকা ভয় পেয়ে)

আমার বউঃ কেন বিছানায় উঠছেন কেন?

আমিঃ কেন, তাহলে কি করবো?

আমার বউঃ কি করবেন মানে?

আমিঃ না মানে বিছানায় উঠবো না কেন?

আমার বউঃ না, উঠতে পারবেন না।

আমিঃ তাহলে কি করবো?

আমার বউঃ আমি কি জানি? জান সোফায় গিয়ে বসে থাকেন।

হিটলার বউ

আমি আশিক। বিদেশ থেকে লেখাপড়া শেষ করে মাত্র তিন দিন হলো দেশে এসেছি। আর এরই মধ্যে আমার জীবনের ১২ টা বাজিয়ে দিল। কি আর করা বিয়েটা করতে হলো। মেয়েটার নাম অনামিকা। কিন্তু আমি ভেবেছি ঢং কইরা অনু ডাকবো। কিন্তু মা ভাবি মিলে কেমন বউ এনে দিল আমাকে! বিছানায়ই উঠতে দিচ্ছে না। আমি আবার তাহসান স্টাইল তো। তাই মেযেদের সাথে তেমন ইজি ফিল করতে পারি না। কিন্তু বাসর রাতেই আমার সাথে অত্যাচার করা হচ্ছে। না, এটা হবে না।

আশিকঃ শুনোওও। (এটা বলতেই আমার দিকে গরম চোখে তাকালো)

তাই ভয় পেয়ে বললাম,

আশিকঃ না, মানে শুনুন।

অনামিকাঃ কি?

আশিকঃ দেখো, তুমি না মানে আপনি আমার বিয়ে করা বউ।

অনামিকাঃ সো হোয়াট?

আশিকঃ না মানে একটু বিছানায় উঠি? এটাতো আমারও বিছানা …..ভাগ আছে।

অনামিকাঃ ওয়েট ওয়েট। আপনারও ভাগ আছে রাইট। বাট আপনাকে বিছানায় উঠতে হলে কিছু কাজ করতে হবে।

আশিকঃ কাজ করতে হবে কেন? আচ্ছা কি কাজ?

অনামিকাঃ আপনাকে কিছু শাস্তি আর জরিমানা দিতে হবে?

আশিকঃ অ্যাঁ …?

অনামিকাঃ হুমমমম। আপনি যদি এই গুলো সঠিকভাবে পালন করেন তাহলেই বিছানায় উঠতে পারবেন।

বউয়ের পাইকারি হিসাব

মেয়েটার কথা শুনে মাথা ঘোরাচ্ছে। কি বলে এই মেয়ে?

বাসর রাতের মত একটা রাত। স্বামীকে সালাম করে আদর করবে কিনা স্বামীর কাছ থেকে জরিমানা নিচ্ছে।

অনামিকাঃ এই যে বির বির করে কি বলছেন?

আশিকঃ না, কিছু না। আচ্ছা, আমার সাথে তো তোমার কোনদিন কথাই হয় নি। তাহলে শাস্তি আর জরিমানা কিসের? আমি কি করেছি?

অনামিকাঃ কি করেছেন শুনবেন?

আশিকঃ হুমম বলো …. সরি বলুন।

অনামিকাঃ শুনুন, আমি জীবনে কোনদিন প্রেম করিনি। কারণ আমি আমার স্বামীর সাথে প্রেম করবো বলে।

আশিকঃ কি যে বলেন না!

অনামিকাঃ ওই এত ঢং করতে হবে না। আপনার জন্য সেই স্বপ্ন আমার পূরণ হয় নি।

আশিকঃ কিভাবে?

অনামিকাঃ ভেবেছিলাম, হবু স্বামীর সাথে বিয়ের তিন মাস আগে থেকে প্রেম করবো। তিন মাস আগে বিয়ে ঠিক হইছে ঠিকই আমি প্রেম করতে পারলাম না।

আশিকঃ সো স্যাড ..!

অনামিকাঃ এখন আমি প্রতিশোধ তুলবো।

আশিকঃ কি করবেন?

অনামিকাঃ তিন মাস প্রেম করতে পারি নি সে হিসাব পরে হবে। তিন মাসের প্রতি সপ্তাহে ২ দিন ঘুরতাম। সেখানে দুজনের খরচ হতো ৪ হাজার এর মতো তাহলে আমার ২ হাজার। মাসে চার সপ্তাহ। তিন মাসে ১২ সপ্তাহ। তাহলে আমার ২৪ হাজার টাকা হচ্ছে। টাকাটা নিয়ে আসুন।

আশিকঃ কিহ? এখন তোমাকে এত টাকা দিতে হবে?

অনামিকাঃ রুম থেকেই বের করে দিব কিন্তু …

আশিকঃ আচ্ছা, দিচ্ছি।

বউয়ের শাস্তি

কি আর করা টাকাটা দিতে হচ্ছে এখন। না জানি, এই আমার জীবনে কত টাকা এভাবে মেরে দিবে।

আশিকঃ এই নিন টাকা।

অনামিকাঃ পুরোটাই আছে তো?

আশিকঃ আপনি গুনে নিন।

অনামিকাঃ থাক, কম হলে পরে নিয়ে নিব। এখন নেক্সট…

আশিকঃ আবার কি!

অনামিকাঃ শুনুন, প্রতি সপ্তাহে ২ দিন যে ঘুরতে যেতাম আপনার তো গিফট দেওয়া লাগতো। সেই বাবদ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আসুন।

আশিকঃ আমার কাছে তো আর নেই।

অনামিকাঃ নেই মানে। জান, বাইরে জান।

আশিকঃ আচ্ছা, তুমি এখন না মানে আপনি এখন টাকা নিয়ে কি করবেন?

অনামিকাঃ জরিমানা নিচ্ছি। বেশি কথা না বলে জান টাকা নিয়ে আসুন। নয়তো দুর হন।

হে আল্লাহ, আমি কার হাতে পরলাম। আমার বাসর রাত কি জরিমানা দিতে দিতেই যাবে!

কি আর করা। আবার ১৫ হাজার টাকা এনে দিলাম।

অনামিকাঃ হুম, ঠিক আছে। এখন আমি যে তিন মাস প্রেম করতে পারি নি তার হিসাব হবে।

আশিকঃ আবার কত টাকা দিতে হবে? আমার কাছে কিন্তু আর টাকা নেই।

অনামিকাঃ এবার টাকা দিতে হবে না। তিন মাস প্রেম করতে না পারার জন্য মাসে তো ৩০ দিন। তিন মাসে ৯০ দিন। ৯০ বার কানধরে উঠবস করতে হবে।

আশিকঃ হোয়াট? আমি উঠবস করবো?

অনামিকাঃ জি, হ্যাঁ।

আশিকঃ ইম্পসিবল।

অনামিকাঃ গেট আউট।

আশিকঃ এতো রাতে, আমি কোথায় যাব?

অনামিকাঃ জানি না। তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হন।

বউয়ের দুষ্টামি

উপায় না পেয়ে ভাবলাম শাস্তি একটু কমিয়ে নেই। তাও আজকের মতো ঘুম টা অন্তত ভালো হোক।

আশিকঃ বলছিলাম কি, আমার তো এখানে কোন দোষ নেই। আমি তো দেশে ছিলাম না, তাই না। তা না হলে তো প্রেম করতাম। তাই বলছি কি, শাস্তিটা একটু কম করা যায়
না?

অনামিকাঃ আচ্ছা, ৮০ বার?

আশিকঃ না না, একটা কথা বলি .. ১০ বার করি।

অনামিকাঃ কিহ এত কম?

আশিকঃ দেখো, আজ অনেক টায়ারড। এত বার উঠবস করলে আমাকে আর খুজে পাওয়া যাবে না। তাই বলছি, একটু শাস্তিটা কম করুন না।

অনামিকাঃ ওকে ২০ বার করুন, ফাস্ট।

ভাবলাম এবার অনেক কম হইছে। ভাগ্যের কি করুন পরিনতি। বাসর রাতে উঠবস করতে হচ্ছে। জানি না কি পাপ করেছিলাম!

এইভেবে কান ধরতে যাবো তখনি,

অনামিকাঃ শুনুন, বেলকুনিতে গিয়ে দেখে আসুন তো চাঁদ উঠেছে কিনা।

শাস্তির ভয়ে তাড়াতাড়ি দেখতে গেলাম। দেখি অনেক বড় চাঁদ উঠছে। বাইরে চাদের আলোতে ঝিকমিক করছে। আজকের চাঁদটা আমার ঘরের চাদের মত এত সুন্দর নয়।

রোমান্টিক বউ

যাই হোক, রুমে এসে বললাম,

আশিকঃ আপনার মত একটা চাঁদ উঠেছে এত বড়।

বউ খুশি হয়ে বললো,

অনামিকাঃ ওকে, চলো।

আশিকঃ কোথায়?

অনামিকাঃ বেলকুনিতে।

যাক শাস্তিটা মাফ হয়ে গেল। আমিও খুশি মনে বেলকুনিতে গেলাম।

তার ১০ হাত দুরে দাড়িয়ে আছি। বেলকুনির সোফায় বসে,

অনামিকাঃ এখানে বসুন।

তার থেকে দুরে সরে বসলাম।

অনামিকাঃ একি! এত দুর কেন?

আশিকঃ না, আপনি যদি কিছু মনে করেন?

অনামিকাঃ কিছু মনে করবো মানে। আমি তোমার বউ না বুদ্ধু।

আশিকঃ হুমম।

অনামিকাঃ কাছে আসো।

কাছে গিয়ে বসলাম। অনামিকা আমার হাত ধরে বসে রইলো। আমি কোন কথা বলছিনা।

অনামিকা বললো- কিছু বলছো না কেন?

আমি বললাম- কি বলবো?

অনামিকা মনটা খারাপ করে আমার হাত জরিয়ে কাধে মাথা রেখে বসে রইলো।

কিছুক্ষন পর….

অনামিকাঃ আশিক।

আশিকঃ হুমম বলো।

অনামিকাঃ আই লাভ ইউ।

আশিকঃ কবে থেকে?

অনামিকাঃ তিন মাস আগে থেকে?

আশিকঃ আই লাভ ইউ ঠু।

বউয়ের ভালবাসা

হঠাৎ আমার ঠোটে মিষ্টি একটা নরম ঠোটের স্পর্শ। নিজেকে মনে হয় হারিয়ে ফেলেছি। প্রকৃতির সব কিছু যেন থমকে গেছে। কিন্তু আমার মনের ভেতর ঢেউ খেলছে….

মধুর সময়টা পার করার পর, অনামিকার দিকে তাকালাম।

লজ্জায় আমাকে জরিয়ে ধরে আমার বুকে মুখ লুকালো। চাঁদের জোছোনায় ওর মুখের একপাশটা ঝলমল করছিল।

কিছু চুল ওর চোয়ালটা ঢেকে দিতে চাচ্ছে।

আমি চুলে হাত দিতেই ও আরো শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমিও ওকে পরম যত্নে আগলে রেখেছি।

অনামিকাঃ আমাকে এভাবেই সব সময় আগলে রাখবে তো?

আশিকঃ হুমম, রাখবো।

অনামিকাঃ কখনো কষ্ট দিবা না তো?

আশিকঃ তোমায় কখনোই কষ্ট দিব না। খুব ভালোবাসবো।

অনামিকাঃ মাঝে মাঝে জরিমানা চাইলে দিবা তো?

তখন ওর মুখটা তুলে কপালে একটা আলতো চুমু একে দিয়ে বললাম,

আশিকঃ আচ্ছা, দিব।

অনামিকাঃ আর কখনো দুরে চলে যাবে না তো?

আশিকঃ কখনও না।

আর এভাবে রাত্রি ভোর হয়ে এলো। পরবর্তীতে আমাদের দিনগুলো অনেক সুখের কাটতে লাগল। শুরুতে বউকে যা ভাবছিলাম বউ আমার ঠিক তার উল্টোটা। আমাকে খুব আদর করে। ঠিক আমি যেমনটি চেয়েছিলাম।

আরো পড়ুন- বাসর রাতের প্রেম – ভিলেন বউয়ের কাণ্ড

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *