অতপর অপ্রাপ্তি – লেখা ভালোবাসার গল্প | Love Story

আজকাল আলো নামক জিনিসটা একদমই সহ্য হয়না আমার। চোখে এসে সুঁচের ন্যায় বিঁধে। তাকাতে ইচ্ছা হয়না। অথচ এই আমারই এক সময় মেঘলা আকাশের চেয়ে রৌদ্রজ্জল ঝলমলে আকাশ প্রিয় ছিল।

কপালে বিরক্তির ভাজ ফেলে একটানে জানালার পর্দাটা টেনে দেই আমি। আবারো ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে যায় গোটা রুমটা। অনেকদিন এ ঘরে হাসির শব্দ শোনা যায় না।

গুমোট পরিবেশ ঘরটায়। আমার এটাই ভালো লাগে। উষকোখুশকো চুলগুলো হাতখোপা করে বেঁধে বিছানায় যেয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরলাম।

মা মনে হয় ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে দিয়েছে। সেই গন্ধেই দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ধোঁয়ায় চোখগুলোও বেশ জ্বালা করছে।

তপ্ত অশ্রু গড়িয়ে পরছে গাল বেয়ে। কয়েলটা নিভানোর উদ্দেশ্য বিছানা থেকে নামতেই জলন্ত কয়েলের শিখাটার উপর পা পরে আমার। আহ্ বলে মৃদু আর্তনাদ করে উঠি।

একহাত দিয়ে পা টা চেপে ধরে আরেকহাতে কয়েলটা নিভিয়ে দেই। বালিশের পাশে একটা পানির বোতল রাখা আছে। সেটা থেকে একটু পানি নিয়ে পোড়া জায়গাটায় লাগাই। জ্বলন যেন আরো বেড়ে যায়। বিরক্তি নিয়ে শুয়ে পরি।

ইচ্ছা করছেনা বরফ এনে লাগাই। কি হবে নিজের এতো যত্ন করে? আগে অবশ্য অসাবধানতাবসত হাল্কা একটু ছিঁলে গেলেও মলম টলম লাগিয়ে একাকার কান্ড করতাম আমি।

পাছে দাগ পরে যায়। আর আহসান শুনলেই বলবেন, কি সমস্যা তোমার? নিজের একটু যত্ন নিতে পারোনা? একবার তোমাকে কাছে পাই, এই অযত্ন করার রোগ আমি নিজ হাতে ছাড়াব দেখে নিও।

আমি অভিমানি কন্ঠে বলতাম, আপনি আসেন আগে। আমাকে নিয়ে যান আপনার কাছে। তারপর দেখা যাবেনে…উনিও আর আসলেন না আর আমার অযত্নের রোগও পিছু ছাড়লোনা।

আমার ভাবনায় বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দরজা ঠেলে মা ঘরে ঢুকলো। ঘরের অবস্থা দেখেই চেঁচিয়ে উঠলো,

~ একটু আগেই না ঘরটা আলো করে গেলাম। আবারো সব লাগিয়েছিস কেনো? এমন করে মানুষ থাকে?

বলে পর্দাটা সরাতে গেলেই আমি কাঠ কাঠ কন্ঠে বললাম,
~ ওটা ওমনই থাক মা।

আমার কন্ঠ শুনে মা আর কথা বাড়ালো না। একটা দীর্ঘ:শ্বাস ফেলে বললো,

~ উঠে বস, আমি তোর খাবারটা নিয়ে আসি।

মা বেরিয়ে যেতে নিলেই আমি একটু গলা বাড়িয়ে বললাম,
~ একটা বরফ এনোতো। পা পুড়ে গেছে।

মা তড়িঘড়ি করে ফিরে এলো। পায়ের কাছে বসে কাঁথাটা সরিয়ে পা টেনে নিয়ে বললো,

~ কিভাবে পুড়লো?
আমি নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে শান্ত কন্ঠে বললাম,

~ কয়েলে লেগে। তোমাকে বলেছিলাম এসব আমার ঘরে দিতে না।
মা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। দু’মিনিটের মাথায়

একহাতে মলম আর একহাতে খাবারের প্লেট নিয়ে এলো। আমি খাটে হেলান দিয়ে বসলাম। মলম টা লাগাতেই কঁকিয়ে উঠলাম। মা এবার নরম কন্ঠে

বললো,
~ ব্যাথা টাতো তোরই সহ্য করতে হচ্ছে। আর কতদিন এভাবে থাকবি? দেড়টা মাস পেরিয়ে গেলো। এবার একটু নিজেকে গুছিয়ে নে মা।

আমি জোড়পূর্বক হাসার চেষ্টা করে বললাম,

~ আমিতো গোছানোই ছিলাম মা। মানুষটাকে তো আর আমি সেঁধে গিয়ে জীবনে আনিনি। তোমরাই তাকে বেঁছে দিয়েছিলে। আবার এখন নিয়ে গিয়ে তোমরাই বলছো গুছিয়ে নিতে? এটা কি আদৌ সম্ভব?

~ ভাগ্যের উপর তো আমাদের হাত নেই রে। পারলে পুরো পৃথিবীর বিনিময়ে ওকে তোর কাছে এনে দিতাম। কিন্তু যে এই পৃথিবীতেই নেই তাকে কি আর ফিরিয়ে আনা যায়? মা কেঁদে উঠলেন।

আমি কিছু বললাম না। কান্নাও আসলো না। তবে খুব ভারি কিছু একটা চেঁপে ধরলো আমাকে। খাওয়া শেষ হতেই মা দরজা লাগিয়ে বেরিয়ে গেলেন। অন্ধকারকে সঙ্গি করে আমিও ডুব দিলাম অতীতে…

নার্ভাসনেসটা আমার বরাবরই খুব বেশি। বাসন্তী রংয়ের শাড়ি গায়ে জড়িয়ে যখন আমি প্রথম উনার সামনে গিয়েছিলাম পা দুটো তখন থড়থড় করে কাঁপছিলো। আমাকে দেখেই উনার বলা প্রথম কথা
ছিলো,

~ ও তো একেবারেই বাচ্চা মানুষ। বিয়ের বয়স হয়েছে নাকি আঙ্কেল?

উনার কথায় উপস্থিত সবাই অপ্রস্তুত হয়ে পরেছিলো। এমনকি আমার গুরুগম্ভীর বাবাও। শুধু উনিই মুখে বাঁকা হাসির রেখা টেনে খানিকটা ভ্রু কুচকে আমাকে আপাদমস্তক তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষন

করছিলেন। অসস্তি আর লজ্জায় তখন আর মাথা উঠাতে পারিনি আমি।

এরপর যখন একা কথা বলার জন্য ঘরে পাঠানো হলো তখন দরজা ভিরিয়েই আচমকা উনি আমার গলার সাইডে হাত ছুঁইয়ে দেন।

আমি ছিঁটকে সরে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম লোকটার হয়তো চরিত্রে দোষ আছে। উনি চোখেমুখে সন্দেহ নিয়ে আমার হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে বলেছিলেন,

~ গলার এটা কি আসল তিল? নাকি এঁকে রেখেছো?
আমি চোখ বন্ধ করে তিরতির করে কাঁপা কন্ঠে বলেছিলাম,
~ আ..আসল।

উনার হয়তো আমার কথাটা বি:শ্বাস হয়নি। তথাপি মধ্যেকার দূরত্বটা আরো একটু কমিয়ে এনে উনার আঙ্গুল দিয়ে গলার তিলটার উপর মৃদু একটু ঘষে দিয়ে বিস্মিত কন্ঠে বলেছিলেন,

~ এমন পারফেক্ট জায়গায় কারো এতোটা আকৃষ্ট তিল থাকে প্রথমবার দেখলাম। ইমপ্রেসিভ!

উনার কথায় শরীরে রীতিমত কাঁটা দিয়ে উঠেছিলো আমার। দ্রুত নিজেকে ছাড়িয়ে একলাফে সরে দাড়িয়েছিলাম।

আমার এহেন আচরণে উনি হাসতে হাসতে বলেছিলেন,

~ এতো লাফালাফি করো কেন? দেখতে যেমন পুতুলের মতো সেরকম পুতুলের মতো স্হির থাকতে পারোনা?

লোকটার এই অদ্ভুত কথাবার্তার প্রেমে পরে গিয়েছিলাম আমি। উনি এতটাই অদ্ভুত ছিলেন যে মাঝরাতে ফোন দিয়ে আমার ঘুম ভাঙিয়ে বলতেন,

~ কি কথা বলা যায় বলতো? ..রাত বাজে ৩টা, এখন উচিত ভালোবাসার কথা বলা। একান্ত ব্যক্তিগত অশ্লীল টাইপ কথাবার্তা।

কিন্তু তোমার সাথে প্রেমের আলাপ করতে আমার কেমন যেনো লজ্জা লাগে। তুমি বাচ্চা মানুষ, কি না কি ভেবে বসবা তারপর

সারারাত এসব ভেবে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে অসুস্থ হয়ে পরলে তোমার বাবা-মা আমাকে দোষ দিবে। তারপর দেখা যাবে আমাদের বিয়েটাই নক আউট!!ভয় লাগে, বুঝলা?

ঘুমের ধাক্কায় উনার কথা আমার কানে ঢুকলেও মাথায় ঢুকতোনা। কোনোরকম ঘুম জড়ানো কন্ঠে উওর দিতাম,
~ হু, বুঝলাম।

উনি বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে গম্ভীর কন্ঠে বলতেন,
~ আচ্ছা রাখছি। তোমার ঘুমঘুম কন্ঠই যথেষ্ট আমার সারারাত নির্ঘুম করার জন্য।

খুব বেশি সময় বাকি ছিলোনা। আর মাত্র তিন দিন পরই ছিল আমাদের বিয়ে। যেদিন বিয়ের শাড়ি কিনতে যাই, সেদিন সকালবেলা উনি ফোন দিয়েছিলেন।

আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। উনি সবসময় রাতেই ফোন দিতেন কারণ সারাদিন ব্যস্ত থাকতেন। ফোন দেয়ার সময় পেতেন না। বলা বাহুল্য আহসান ছিলেন আর্মি অফিসার। লেফটেন্যান্ট

জেনারেল ছিলেন বলে উনার দায়িত্ত্ব আর ব্যস্ততা টাও ছিলো একটু বেশি। যদিও এই ব্যস্ততা নিয়ে আমি ভুলেও কোনোদিন অভিযোগ করতাম না।

মার্কেটে যাবার কথা ছিলো দুপুরে। আমি ফোন রিসিভ করতেই উনি বললেন,

~ শোনো চৈতি..শাড়ি কিনতে যেয়ে আবার লজ্জায় বুঁদ হয়ে থেকোনা। যেটা পছন্দ হবে আম্মাকে বলবা। আম্মা কিনে দিবে। ঠিকাছে

~ জি।
~ রাখছি তাহলে? আল্লাহ হাফেজ।

আমি উওর দিলাম না। আমার নিরবতা দেখে উনিই বললেন,
~ কিছু বলবা?

আমি ফট করে বলে দিলাম,
~ আপনি কবে আসবেন?

উনি হয়তো একটু হাসলেন। স্নেহময় কন্ঠে বললেন,

~ কালরাতে রওনা দিবো। বিয়ের দিন সকালেই পৌছে যাব। তারপর কন্ঠে কিছুটা দুষ্টমিমেখেবললেন, আমার বউ হওয়ার জন্য এতোটা উদগ্রীব?

ফোনের এপাশেই আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। দ্রুত বললাম,
~ আল্লাহ হাফেজ।

লাল রংয়ের বেনারসি শাড়ি কিনে উচ্ছ্বসিত মনে বাড়ি ফিরেছিলাম আমি। রাতের বেলা ক্লান্ত শরীরে বিছানায় গা এলিয়ে উনার ফোনের অপেক্ষা করছিলাম। রাত্রি গভীর হতে চললো কিন্তু উনি ফোন দিলেন না। আমিভাবলাম, এরকম তো কখনো হয়না।

উনি রোজ আমাকে ফোন দেন। যত রাতই হোক না কেনো, অন্তত পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও কথা বলেন। মাঝেমধ্য অপেক্ষা করতে করতে আমিই ঘুমিয়ে যেতাম। তবুও উনি ভুলতেন না। ফোন দিয়ে ক্লান্ত কন্ঠে বলতেন, আসলে আজকে একটু বেশিই ব্যস্ত ছিলাম। তুমি ঘুমিয়ে গিয়েছিলে তাইনা?

…উনাকে কখনো আমি নিজে থেকে ফোন দেইনি। উনার নাম্বারটা কখনো আমার ডায়াল লিস্টেছিলোনা।

ছিলো শুধু রিসিভ লিস্টে।
সে রাতে কেমন যেন লাগছিলো আমার।

রোজ রাতে উনার কন্ঠ শুনে ঘুমাতে যাওয়া যে আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে সেটা হারে হারে টের পাচ্ছিলাম। ফোনটা সেদিন হাতের মুঠোয় নিয়েই ঘুমিয়েছিলাম।

মনে হচ্ছিল এই বুঝি রিং বেজে উঠবে আর উনি বলবেন,
~ একটু দেরি হয়ে গেলো। ঘুমিয়ে ছিলে?

ফোন এলোনা। একসময় আমি সত্যিই ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে ঘুম ভাঙলো কান্নার আওয়াজে। আমি উঠে বসলাম। হাতের মুঠোয় রাখা ফোনটায় দেখলাম ৮টা বাজে। এত সকালে কান্নাকাটি কেনো হচ্ছে? ভাবলাম কাল বিয়ে দেখে হয়তো মা কাঁদছেন!

বিছানা ছেড়ে ঘর থেকে বের হলাম। মা সোফায় বসে শব্দ করে কাঁদছেন। তার পাশে বসে আমার বড় বোনও কাঁদছে তবে নি:শব্দে। বাবা ছিলো নির্বাক। থম ধরে উল্টোদিকের সোফায় বসে ছিলো সে। আমি ধীরপায়ে এগিয়ে যাই।

মৃদু কন্ঠে বলি,
~ এমন করে কাঁদছো কেন মা? কালকে না আমার বিয়ে।
মা এবার হাউমাউ করে কেঁদে বললেন,

~ আহসান আর নেই রে মা।
আমি থমকে গেছিলাম। কানটা ঝাঁ ঝাঁ করছিলো। মায়ের বলা বাক্যটা বার বার মস্তিষ্কে তীব্রভাবে আঘাত করছিলো।

মা আমার একহাত জড়িয়ে কাঁদছিলো। আমি দ্রুত হাতটা ছাড়িয়ে স্বাভাবিক কন্ঠে বলেছিলাম,

~ আপু রুমে চলতো, এখনো মেহেদি টাই লাগানো হয়নি। দেরিতে লাগালে রং হবে নাতো…চলো।

আপু আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। আমি নিজেকে ছাড়িয়ে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেই। ফোনটা হাতে নিয়ে প্রথমবারের মতো উনার নাম্বারে ডায়াল করি। বারবার ডায়াল করি।

ওপাশ থেকে বলছিলো ফোনটা নাকি বন্ধ। এই প্রথম আমি উনাকে ফোন দিলাম আর উনি ধরলেন না। এটা কোন কথা? চরম অভিমান হয় আমার। ফোনটা বিছানায় ছুড়ে মারি।

সেদিন ঘন্টা তিনেকের মতো আমি পাগলের মতো কান্না করি। একসময় সেন্সলেস হয়ে যাই।

ওইদিন রাতে উনি রওনা ঠি কই দিয়েছিলেন।

বিয়ের দিন সকালে ঠি ক সময়ে পৌছিয়েওছিলেন। কিন্তু আমি যেভাবে আশা করেছিলাম সেভাবে নয়, একেবারেই ভিন্নরুপে, ভিন্নভাবে। বাচ্চা মানুষতো তাই উনার ওই রুপ দেখার সাহসটা আর হয়নি আমার।

আবছাভাবে শুনেছিলাম সেদিন নাকি উনার কোন একটা মিশনে যাওয়ার কথা ছিলো। সবাই ছিলো উনার দায়িত্ত্বে। সন্ত্রাসীদের সাথে সংঘর্ষের একপর্যায়ে গুলি লাগে উনার।

একটা নয়, পরপর তিনটা গুলি। সেখানেই স্পট ডেড হয়। এর বেশি কিছু আমি শুনিনি। শোনার ইচ্ছাও হয়নি। প্রিয় মানুষের মৃত্যু বর্ণণা শোনার ইচ্ছা কার ই বা থাকে?

উনার সাথে সম্পর্কটা দুরত্বে দুরত্বে হলেও মনের দিক দিয়ে আমরা ছিলাম অনেক কাছাকাছি। যদিও আলতো স্পর্শে উনাকে ছুঁয়ে দেয়ার আগেই উনি হারিয়ে গেলেন।

চলে গেলেন আমার আয়ত্ত্বের বাইরে। আজও রাত হলে আমি ফোনের দিকে তাকিয়ে,

থাকি। অবচেতন মন আকাঙক্ষা করে একটা ফোন কলের, শুনতে চায় একটা কন্ঠ।

মনে পরে যায় আমাকে বলা তার শেষ কথাটা,
আমার বউ হওয়ার জন্য এতটা উদগ্রীব?

তখন খুব করে বলতে ইচ্ছা করে, হ্যাঁ, আমি উদ্রগ্রীব। পাগলের মতো উদগ্রীব।

বিছানা থেকে নেমে যাই আমি। বাইরে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। পর্দাটা হাল্কা করে সরিয়ে দেই। পশ্চিম আকাশের জ্বলজ্বল করা সন্ধ্যাতারাটার দিকে তাকিয়ে ক্ষীন কন্ঠে বলি,

হাজার মাইলের ব্যবধানও আমাদের দুজনের মনের দুরুত্ব সৃষ্টি করতে বিন্দুমাত্র সক্ষম হয়নি।

লেখিকা – মালিহা খান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *