বৃষ্টিতে ভেজা সেই রাত – ভালোবাসার কষ্টের গল্প কাহিনী: জীবনে ভালোবাসার মানুষের সাথে যত ভুল বোঝাবোঝি হয় তার বেশিরভাগটাই সন্দেহ আর জেদ থেকে। যা কিছু সুন্দর মুহুর্ত এবং সম্পর্ক ভেঙ্গে দেয়। চলুন এরকম একটি অবুঝ ভালোবাসার গল্প পড়ি।
পর্ব ১
ছেলেটা আমাকে জোর করে ধর্ষণ করতে চেয়েছিলো আর তুমি তাকে এই বাসায় আশ্রয় দিয়েছো ছিঃ বা। ( রুমা )
রুমার বাবাঃ এই ঝড়ের রাতে অসহায় ছেলেটাকে আশ্রয় দিলাম আর সে কী তোর সাথে জোর জোবস্তি করতে চেয়েছিলো।
রুমার মাঃ আমি তো আগেই বলেছিলাম এই ছেলের চরিত্র ভালো না এখনো কী নিচে আছে নাকি সব কিছু চুরি করে নিয়ে পালালো।
রুমার বাবাঃ আমি এখনি গিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিবো বলেই নিচে চলে আসলাম।
রুমাঃ মা আইডিয়াটা ভালোই ছিলো।
রুমার মাঃ হ্যা তাই বলে তুই নতুন জামাটা ছিড়তে গেলি কেনো।
রুমার বাবাঃ আমার মেয়ের সাথে জোর জোবস্তি করে আরাম করে ঘুমানো হচ্ছে দাড়া তোর আমি ব্যবস্থা করছি। পাশে ফুল দানিটা ছিলো সেটা উঠিয়ে দিলাম মাথায় একটা বাড়ি।
সাইফঃ ওমা গো মরে গেলাম। মাথা থেকে প্রচুর রক্ত বেড়িয়ে যেতো লাগলো লোকটা আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বেড় করে দিলো কিন্তু কেনো আমি কী করেছি।
সাইফঃ কিছু বলার নেই বিপদের সময় প্রকৃত মানুষ চেনা যায় বাইরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে চারদিকে অন্ধকার ঠান্ডায় গা ছম ছম করছে হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে মাথা থেকে রক্তও বেড় হচ্ছে হঠাৎ ঙ্গান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যাই।
তার পর কিছু মনে নেই।
যখন চোখ খুললাম তখন আবছা আবছা ছায়ায় দেখতে পেলাম একটা মেয়ের আমার হাত পায়ে তেল মালিশ করছে।
কিন্তু আমি কোথায় এখানে আসলাম কী ভাবে এরাই বা কারা।
চোখ খুলতেই মেয়েটা।
মেয়েটাঃ আপনি ঠিক আছেন আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম কাল রাত থেকে আপনার হুস নেই মাথা থেকে রক্ত বেড় হচ্ছিলো আপনাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে মা আপনাকে এখানে নিয়ে আসে।
সাইফঃ মেয়েটার কন্ঠটা খুব নরম আর মিষ্টি কিন্তু মুখটা কাপড়ের আড়ালে ডাকা আছে।
মেয়েটাঃ মা মা মানুষটার হুস এসেছে
সঙ্গে সঙ্গে একটা মহিলা দৌড়ে আসলো
মহিলাটাঃ তুমি ঠিক আছো তো বাবা।
সাইফঃ হুম।
মহিলাটাঃ তোমার এই অবস্থা কেমনে হলো
সাইফঃ কাল রাতে আমার গাড়িটা রাস্তায় নষ্ট হয়ে যায় তখনি কিছু ডাকাত আমার পিছনে পড়ে যায় প্রাণ বাচাতে একটা মানুষের বাসায় আশ্রয় নিই কিন্তু সেখানে বেশি ক্ষণ থাকা হলো না তারা আমার উপর অত্যাচার করতে থাকে তার পর তাদের কথা গুলো সব বললাম।
মেয়েটাঃ ইসস মানুষ এততটা নিচে কীভাবে নামতে পারে।
মহিলাটাঃ বাবা তোমাকে খাওয়ানোর মতো আমার কিছুই নেই কাথাটা বলতে বলতে কেদেই ফেললো
সাইফঃ আপনি প্লিজ কাদবেন না আমি খিদে পাই নি। মানি ব্যাগ টা তো গাড়িতেই আছে হাতে একটা টাকাও নেই।
সাইফঃ আপনাদের কাছে একটা ফোন হবে।
মেয়েটাঃ আমারা ঠিক মতো দু বেলা খেতে পারি না আবার ফোন কিনবো কীভাবে।
সাইফঃ ওকে আমি যে কীভাবে আপনাদের ঝ্রণ পরিশোধ করবো তা ভেবেই পাচ্ছি না
মহিলাটাঃ এটা তো আমার কতব্য ছিলো
সাইফঃ আজ তাহলে আমি আসি।
মেয়েটাঃ কোথায় যাবেন আপনি।
সাইফঃ বাসায় যাবো তবে হ্যা আবার আসবো আপনাদের বাসায় বলেই তাদের কাছ থেকে বিদাই নিয়ে চলে আসলাম।
রাস্তায় একটা অটো নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে মা
মাঃ কী হয়েছিলো তোর তোর ফোন বন্ধ কেনো আর মাথা থেকে রক্ত পড়ছে কেনো।
সাইফঃ আমি মা কে সব কিছু খুলে বললাম।
মাঃ কী তারা তোকে বিনা অপরাধে মেরেছে আমি তাদের ছাড়বো না।
সাইফঃ মা ছাড়ো এসব একটা কথা বলবো।
মাঃ হ্যা বল।
সাইফঃ আমাক ৫ লাখ টাকা দাও তো আমি ওই ভদ্র মহিলাটাকে দিয়ে আসবো ওদের খুব অভাব ঠিক মতো খেতে পায় না।
মাঃ ও এই কথা আচ্ছা দিবো এখন ভিতরে এসে রেস নেয়।
এভাবে ৫ দিন কেটে গেলো আমি পুরো পুরি সুস্থ সুন্দর করে সেজে গুজে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম সেখানেই রয়েছে তারা।
মাঃ সাইফ তারাতাড়ি বাসায় আসবি তোর বাবার মামাতো বোন আর তারা স্বামী ও তারা মেয়েরা আসবে।
সাইফঃ আচ্ছা মা এখন আসি বলেই গাড়িটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম
কয়েক ঘন্টা পরে সেখানে পৌছে গেলাম সেখানে যেতেই আমি পুরোই অবাক এ আমি কাকে দেখছি পুরোই পরীর মতো দেখতে।
তখনি মেয়েটা আবার মুখটা ডেকে ফেললো।
মেয়েটাঃ আপনি এস।
সাইফঃ হুম।
মেয়েটাঃ ওয়াও আপনাকে তো খুব সুন্দর দেখাচ্ছে এটা কী আপনার গাড়ি।
সাইফঃ হুম।
সাইফঃ ভিতরে যেতে বলবেন।
মেয়েটাঃ হুম আসেন।
মেয়েটাঃ মা দেখো কে আসছে।
মহিলাটাঃ বাবা তুমি আসছো ভিতরে বসো।
সাইফঃ হুম।
মহিলাটাঃ তুমি তো বড় ফ্যামালির ছেলে এই গরিবের বাড়িতে খারাপ লাগছে তাই না।
সাইফঃ ছিঃ এ আপনি কী বলছেন আমি বড় ফ্যামালির ছেলে কে বললো আপনাক।
মহিলাটাঃ তুমি যে গাড়িটাতে এসেছো তা দেখেই বুঝা যায়।
সাইফঃ গাড়িটা এনে মনে হয় ভুল করলাম। ( মনে মনে)
সাইফঃ কী যে বলেন এটা তো সামন্য একটা কার ১৫ কোটি মতোর দাম।
মেয়েটাঃ ১৫ কোটি টাকা।
সাইফঃ হুম।
আচ্ছা আমি যে জন্য এসেছি এই নিন ৫ লাখ টাকা এই গুলো দিয়ে বাসাটা মেরামত করবেন আর ভালো মন্দ খাবার খাবেন।
মহিলাটাঃ এত টাকা তুমি আমাদের দিচ্ছো আমরা সারা জীবন তোমার কথা ভুলবো না।
সাইফঃ ভুলতেও হবে আমি খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে আসবো। ( মনে মনে)
সাইফঃ আজ আসি বাসায় মেহেমান আসবে।
অপর দিকে।
মাঃ আরে আপনার চলে এসেছেন।
জ্বী ওয়াও এত সুন্দর বাড়ি পুরো রাজ মহলের মতো এত সুন্দর বাড়ি কখনো দেখি নি একা bmw গাড়িও রয়েছে
মাঃ ভিতরে বসেন তারা ভিতরে এসে
ওয়াও বাইরে যততটা সুন্দর তার থেকেও ভিতরে আরো সুন্দর।
মাঃ কী নিবেন আজ প্রথম আসলেন।
কিছু না কেমন আছেন আপনার আর আপনার ছেলে কই।
মাঃ কাজে গেছে এখনি আসবে।
লোক গুলোঃ এ হলো রুমা আর একমাত্র মেয়ে।
মাঃ ও খুব সুন্দর তো মেয়েটা।
মাঃ আমার ছেলেটাও খুব ভদ্র এই বাড়িটা তার টাকা দিয়ে বানানো মাসে ১ লাখ টাকা ইনকাম করে।
রুমাঃ আন্টি কই সে আমি তাকে একবার দেখতে চাই তখনি গাড়ির আওয়াজ শুনতে পেলাম।
মাঃ এইতো চলে আসছে।
রুমা রুমার মা বাবা সবাই বাড়ি এসেছে।
সাইফঃ গাড়ি থেকে নামতেই।
রুমার বাবাঃ এটা আমি কী দেখছি কে এই ছেলে এটা হতেই পারে না।
পর্ব ২
রুমা এই সেই ছেলেটা না যে তোকে জোর করে ধর্ষণ করতে চেয়েছিলো।
রুমাঃ হ্যা বাবা এ তো সেই ছেলেটা কিন্তু এই এখানে এই ছেলেটা কী করছে।
রুমার বাবাঃ কে এই ছেলেটা।
মাঃ কেনো আমার ছেলে।
কথা শুনতেই রুমার বুকটা ধড়ফড় করতে লাগলো।
রুমার মাঃ ছেলেটাকে তো সে দিন ভিক্ষারীর দেখাচ্ছি আর সেই ছেলেটা এই বিশাল বাড়ির মালিক।
রুমার বাবাঃ আমরা একটু আড়ালে দাড়িয়ে পড়লাম যাতে আমাদের দেখতে না পায়।
সাইফঃ গাড়ি থেকে নামতেই মনে হলো কেউ আড়াল থেকে দেখছে আমায়। ধুর এই সব আমি কী ভাবছি। আমি আর মা ছাড়া কে আছে এই বাসায় যে আমায় আড়াল থেকে দেখবে।
আম্মু কই গেলা খুব খিদে পেয়েছে কিছু খেতে দাও।
মাঃ হ্যা দিচ্ছি তুই হাত মুখ ধুয়ে টেবিলে বস আমি খাবার নিয়ে যাচ্ছি।
মাঃ আপনারা বসেন না এভাবে দাড়িয়ে থাকবেন না।
রুমার বাবাঃ হুম।
রুমাঃ মার কথায় তো ওই দিন বাবার সামনে মিথ্যা অভিনয় করেছিলাম যে এই ছেলেটা আমায় রেপ করতে চেয়েছিলো কিন্তু আজ আমি তো মনে হয় ধরা পড়ে যাবো।
সাইফঃ আম্মু আমাকে খাবার টা দিয়েই চলে গেলো।
ইসস একটা যদি বউ থাকতো তাহলে কত আদর করে খাইয়ে দিতো মা তো ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে হারিয়ে যাচ্ছে।
রুমার মাঃ ভাবি একটা কথা বলার ছিলো।
মাঃ হুম বলেন।
রুমার মাঃ রুমা আর সাইফ এর বিয়ে দিলে কেমন হয় এতে আমাদের সম্পকটা আরো সুন্দর হবে।
মাঃ এই বিষয়ে একটু ভাবতে হবে তবে এমন একটা লক্ষি মেয়ের যে ঘরে বিয়ে হবে তার স্বামীটা খুব ভাগ্য বান হবে।
রুমার বাবাঃ আচ্ছা সত্যি কী সেদিন সাইফ রুমার সাথে জোর জোবস্তি করে ছিলো। না সব কিছু জানি রহস্য মনে হচ্ছে ছেলেটাকে দেখে তো এমন মনে হচ্ছে না। ( মনে মনে
মাঃ আপনারা বসেন আমি সাইফকে নিয়ে আসতেছি।
সাইফঃ খাওয়া শেষ করে রুমে বসে ফ্রী ফাইয়ার খেলতে ছিলাম ততখনি মা আসলো।
মাঃ সব সময় দেখি ফোনটা নিয়ে পড়ে থাকিস অল্প দিনে চোখ গুলো নষ্ট করে ফেলবি।
চল তোর ফুপুরা এসেছে ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়।
আর হ্যা রে তোর ফুপুর মেয়ে রুমার কিন্তু তোকে খুব পছন্দ ওরা তোর সাথে তার বিয়ে দিতে চায়
সাইফঃ রুমা নামটা শুনার পর সেই বৃষ্টিতে ভেজা রাতের কথা মনে পড়ে গেলো।
মাঃ কী হলো চল নাকি এভাবে বসে থাকবি।
সাইফঃ হুম যাচ্ছি।
এর পর আম্মুর যেতেই মেজাজটা বিগড়ে গেলো এরা এখানে কী করছি এরা তো মানুষ রুপে অমানুষ।
তবুও নিজের রাগকে কন্ট্রোল করলাম কথায় আছে ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না আর।
রুমাঃ হাই আমি রুমা তুমি।
সাইফঃ মানুষ রুপী রক্ষস।
মাঃ তুই এভাবে কেন মেয়েটার সাথে কথা বলতেছিস।
রুমাঃ আন্টি সাইফ মনে মজা করতেছে।
সাইফঃ একটা বার সুযোগ পাই হারে হারে টের পাবেন আমি কী জিনিস।
রুমার বাবাঃ রুমা আমার সাথে এদিকে আয় তো।
রুমাকে বাইরে নিয়ে এসে।
রুমা সত্যি করে বল ওই রাতে কী হয়েছিলো একটুও মিথ্যা বলার চেষ্টা করবি না।
রুমাঃ আমি বাবাকে খুব ভয় পাই তাই বলে দিলাম।
বাবা ওই রাতে সাইফ কে যেনো তুমি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দাও তার জন্য মা আমাকে বলেছিলো আমি যেনো তোমায় বলি যে সে আমাকে রেপ করতে চেয়েছিলো।
রুমার বাবাঃ সমস্ত শক্তি দিয়ে দিলাম গালে একটা ঠাসসস করে থাপড়।
ছি তোর লজ্জা করলো না এমন একটা ভদ্র ছেলেকে ধর্ষকের উপাধি দিতে আমি বড় ভুল করে ফেলেছি না জেনে মাথায় আঘাত করে ফেলেছি।
সাইফঃ মা আমি রুমার সাথে একটু আলাদা ভাবে কথা বলতে চাই।
রুমার মাঃ বাবা তুমি বসো আমি রুমাকে নিয়ে আসছি বলেই বাইরে এসে রুমাকে বললাম দেখ রুমা এই ছেলেকে যেভাবে হোক ছলে বলে কৌশলে যদি তুই একবার বিয়ে করতে পারিস তাহলে এই সমস্ত সম্পতি তোর তার পর খাবারের সাথে বিষ মিশয়ে মেরে ফেলবি তার পর থেকে এই বিশাল বাড়িটা শুধুই তোর।
রুমাঃ আচ্ছা মা চেষ্টা করবো যদি মিথ্যা মায়াই ভাসাতে পারি।
রুমার মাঃ নিয়ে আসছি রুমাকে কী কথা বলার আছে বলো আমরা বাইরে যাচ্ছি।
রুমাঃ সবাই বাইরে যাওয়ার পর।
দেখো আমি যখন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম ততখনি ভালো বেসে ফেলেছিলাম বিশ্বাস করো তার জন্য আমি বাবাকে সে কথা বলেছিলাম যাতে বাবা মান সম্মান রক্ষাথে আমাদের বিয়েটা দিয়ে দিতো।
সাইফঃ হা হা হা তোমাদের আবার মান সম্মান একটা কথা ভালো মতো কান খুলে শুনে নাও এই বাড়ি থেকে এখনি যদি বেড়িয়ে না যাও ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিবো।
আর হ্যা তোমার মতো চরিত্র হীন মেয়েকে আমি বিয়ে করবো এটা কল্পনাতেও ভাবিস না।
রুমাঃ উপমান করছো আমায়
সাইফঃ হ্যা করছি এখনি বেড়িয়ে যাও এই বাড়ি থেকে আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি আর তাকেই বিয়ে করবো বলে চলে আসলাম।
রুমাঃ যাকেই ভালোবাসো না কেনো বিয়ে আমাকেই করতে হবে তার ব্যবস্থা করে রেখেছি ( মনে মনে)
এর পর জানি না কী হলো রাতে বাসায় এসে দেখি তারা আর নেই যাক শান্তি পেলাম।
সাইফঃ আম্মু তুমি যদি আর কখনো তাদের এই বাসায় নিয়ে এসেছো তাহলে ওই দিনে হবে আমার এই বাড়িতে শেষ দিন
মাঃ সাইফ কী হয়েছে তোর তাদের দেখার পর এমন কেন করছিস।
সাইফঃ আম্মু সব কথা বলা যায় কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।
বলেই দরজাটা লাগিয়ে শুয়ে পড়লাম।
এভাবে রাত ঘনিয়ে এলো স্বপ্নে শুধু সেই মেয়েটার মুখটা ভেসে আসছে আমি মনে তাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
সারাটা রাত তার কথা ভেবে পার করে দিলা। সকাল বেলা তাদের বাসার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম। সেখানেই যেতেই যা দেখলাম তা দেখার অবস্থায় ছিলাম না। মেয়েটার বাসা কে জানি ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। তাদের কোথাও দেখতে পাচ্ছি না।
পাশ দিয়ে একটা বৃদ্ধ মহিলা যাচ্ছিলো।
আমিঃ এই যে শুনুন এই বাড়িতে যারা থাকতে তারা কোথা।
মহিলটাঃ এই বাড়ির মালিক তাড়িয়ে দিয়েছে তার এই বাড়িটা কিনতে চেয়েছিলো কিন্তু সময় মতো টাকা দেয়নি বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।
সাইফঃ তারা কোথায় গেছে বলতে পারবেন।
মহিলাটাঃ না আমি কীভাবে বলবো।
সাইফঃ আমি কী করবো এখন কোথায় খুজবো তাদের কোথায় গেলো তারা।
সারাটা দিন সারা শহরটা তাদের খুজলাম এমন কোথাও বাদ দেইনি যেখানে তাদের খুজি নি। হঠাৎ রাস্তার মাঝে প্রচুর জেম লেগে গেলো। সবাই দাড়িয়ে কী জানি দেখছে গাড়ি থেকে নেমে। আমিও দেখতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। সেই ভদ্র মহিলাটা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর পাশে মেয়েটা বসে কাদছে আমি দৌড়ে গিয়ে মহিলাটার পাশে বসলাম।
সাইফঃ কী হয়েছে আপনার কীভাবে হলো এসব।
মহিলাটাঃ বাবা তুমি এসেছো যাক এখন নিশচিন্তে মরতে পারবো। বেচে থাকতে কখনো মেয়েটাকে সুখের রাখতে পারি নি। কথা দাও আমার মেয়েটার দেখবে তুমি।
সাইফঃ কথা দিলাম সব সময় যত্নে রাখবো।
কথাটা বলার সাথে সাথে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন তিনি। খুব কষ্ট হচ্ছে এনার জন্য আমি এখানে থেকেও কিছু করতে পারলাম।
পর্ব ৩
আমার মেয়েটাকে তোমার কাছে রেখে গেলাম।
আমার মন বলছে তুমি কখনো তাকে অবহেলা করবে না।
সাইফঃ কথা দিলাম তাকে যত্নে রাখবো কথাটা বলার সাথে সাথে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন।
মেয়েটা তার মার পাশে বসে প্রচুর কাদছে আর কাদবেই না বা কেনো পৃথিবীতে তার আপন বলতে তার মায়েই ছিলো।
ততক্ষণে পুলিশ চলে এসেছে।
সাইফঃ এই যে উঠো এভাবে কাদলে তো আর তিনি ফিরে আসবেন না।
মেয়েটার কোনো respond এ নেই আজব তো।
সাইফঃ এভাবে হবে না তার হাতটা ধরে দাড়করালাম।
সাইফঃ কেদে কেদে মেয়েটা চোখ গুলো লাল করে ফেলেছে।
সাইফঃ এখন থেকে চলো।
মেয়েটাঃ না আমি মা ছাড়া কোথাও যাবো না।
আমি ছাড়ুন আমি মার কাছে যাবো।
।
।
সাইফঃ দেখতেছো তো পুলিশ তোমার আম্মুকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে আমরা তো আর সেই গাড়িও যেতে পারবো না তাই তুমি আমার সাথে যাবা আর তোমার আম্মু কী বলেছিলো মনে নেই।
মেয়েটাঃ হুম আছে।
সাইফঃ তাহলে গাড়িতে বসো।
এর পর মেয়েটাকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে আমিও বসে পড়লাম।
মেয়েটা মনে হয় সকাল থেকে কিছুই খাই নি তাই একটা বড় রেস্টুরেন্টের সামনে এসে গাড়ি দাড় করালাম।
মেয়েটাঃ এটা আমরা কোথায় আসল।
সাইফঃ তুমি তো সকাল থেকে কিছুই খাওয় নি তাই এখানে তোমাকে কিছু খেতে নিয়ে এসেছি।
মেয়েটাঃ আপনি কীভাবে বুঝলেন যে আমি সকাল থেকে কিছুই খাই নি।
সাইফঃ সেটা হয় নাই জানলে এখন ভিতরে চলো।
এই হোটেলের একা গুন রয়েছে এখানে পারসোনাল রুম পাওয়া যায় তাই আমিও একটা রুম বুক করলাম।
সাইফঃ ফ্রেশ হয়ে নাও আমি ততক্ষণে কিছু অর্ডার করি।
মেয়েটাকে ভিতরে ডুকিয়ে দিয়ে ভাত আর চিকেন ফ্রাই অর্ডার করলাম।
তখনি মেয়ে।
মেয়েটাঃ এটা কী হচ্ছে দেখুন পানি নিজে থেকে পড়তেছে।
সাইফঃ ভিতরে গিয়ে আরে এটা ঘুরালে আবার বন্ধ হয়ে যাবে তার পর সেখানে দাঁড়িয়ে সব কিছু শিখিয়ে দিলাম।
মেয়েটা যখন তার মুখ থেকে কাপড়টা সরালো তখন আবারো তার উপর cRush খেলাম এত সুন্দর কীভাবে একটা মানুষ হতে পারে।
মেয়েটা আবার মুখটা ডেকে ফেললো।
তার পর বাইরে এসে।
ভাত গুলো খেয়ে নাও।
মেয়েটাঃ না খিদে পাই নি।
সাইফঃ তা বললে হয় কিছু খেয়ে নাও
মেয়েটাঃ না আমি খাবো না।
সাইফঃ এভাবে হবে না আমাকেই কিছু করতে হবে
এই নাও আমি খাইয়ে দিচ্ছি হা করো।
মেয়েটাঃ মুখটা না খুলে আর থাকতে পারলাম না তিনি খুব আদরে করে খাইয়ে দিচ্ছিলো।
অপর দিকে
মাঃ ওই যে ছেলেটা সকাল বেলা বেড় হয়েছে দিন গরিয়ে রাত হয়ে গেলো এখনো ফিরছে না কেনো তখনি ফোনটা বেজে উঠলো।
মাঃ হ্যালো।
অন্য দিক থেকে।
হ্যালো আপনার সাথে জরুরি কথা রয়েছে।
মাঃ কে আপনি।
আমি কে সেটা বড় কথা নয় আপনার ছেলে আজ কাল পতিতালয়ে আসতে শুরু করেছে আজ পতিতালয় থেকে একটা মেয়েকে নিয়ে যাবে।
মাঃ হ্যালো কে আপনি কথাটা বলার আগেই কলটা কেটে দিলো।
কথাটা শুনার পর টেনশনে পড়ে গেলাম আমার সাইফ তো এইরকম ছেলে না তাহলে কে মেয়ে যে এই কথাটা বললো।
সাইফঃ মেয়েটাকে খাইয়ে দিয়ে আচ্ছা তোমার নামটাই তো জানা হলো না।
মেয়েটাঃ আমার নাম আদ্রিতা।
সাইফঃ বা খুব সুন্দর নাম তো।
তার মেয়েটাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
আদ্রিতাঃ এটা আমরা কোথায় এসেছি
সাইফঃ এটা আমার বাসা।
আদ্রিতাঃ এত বড় বাড়ি আমার তো স্বপ্নের মতো লাগছে আচ্ছা আমরা মার কাছে কখন যাবো।
সাইফঃ কাল সকালে।
মাঃ গাড়ির শব্দ পেয়ে বাইরে এসে যা দেখলাম তা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।
তার মানে সাইফ সত্যি খারাপ হয়ে গেছে ছিঃ কখনো ভাবতেও পারি নি সাইফ এমন কাজ করবে।
সাইফঃ ভিতরে চলো এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি।
তখনি মা
মাঃ কে এই মেয়ে আর এত রাতে তোর সাথে কী করছে।
সাইফঃ মা এ আদ্রিতা আজ থেকে আমাদের সাথেই থাকবে।
মাঃ ছিঃ লজ্জা করে না বাসায় একটা পতিতা নিয়ে আসার তোর কী লজ্জা সরম সব পুরে খেয়েছিস।
তোর চরিত্র যে এতটা খারাপ আমি আগে জানতাম না
সাইফঃ আম্মু তুমি এসব কী বলছো ও পতিতা হতে যাবে কেনো এর মতো ভদ্র মেয়ে পাওয়া ভাগ্যর বেপার আর তুমি কী তার চরিত্রে দাগ বসছো।
মাঃ তুই আমার ছেলে বলতেই লজ্জা করে কে করবে তোকে বিয়ে।
সাইফঃ মাথাটা গরম করে দিয়েছে আম্মু কী আজে বাজে বকছে আদ্রিতা কেদেই দিয়েছে।
সাইফঃ আম্মু তুমি যদি আরেকটা আজে বাজে কথা বলো তাহলে আমাকে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে কেনো আমি এসব কথা শুনার জন্য মেয়েটাকে আনি নি।
মাঃ থাক তুই মেয়েটাকে নিয়ে আমাকে মা বলে ডাকবি না।
আদ্রিতাঃ আমাকে ছেড়ে দিন আমি আপনাদের মাঝে কাটা হয়ে থাকতে পারবো না।
সাইফঃ আমি যতদিন বেচে রয়েছি ততদিন আমার সাথেই থাকবে এতে সমাজ কী বললো তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা পতিতা কাকে বলে।
সাইফঃ মেয়েটা কোন দিন বাড়ি থেকে বেড় হয় নি তাই পতিতা কাকে বলে জানে না।
ওই যে কোনো ছেলে যদি কোনো অপরিচিত মেয়েকে নিয়ে আসে ততখন তাকে পতিতা বলে এমনিতে।
আদ্রিতাঃ ওও
এর পর তাকে আমার রুমে নিয়ে আসলাম।
অন্য দিকে।
রুমাঃ হ্যালো আন্টি।
মাঃ হুম বলো রুমা
রুমাঃ আমি সাইফকে ভালোবাসি আর তাকেই বিয়ে করতে চাই
মাঃ এটাই সুযোগ সাইফের সাথে রুমার বিয়ে দেওয়ার যেভাবে হোক রুমার সাথে বিয়েটা দিতে হবে।
মাঃ আচ্ছা তাই তুমি বিয়ের প্রস্তুতি নাও আমি সাইফকে রাজি করাচ্ছি।
পর্ব ৪
এই পতিতা মেয়েটাকে আমার ছেলের জীবন থেকে সরাতে হলে যে করে হোক রুমার সাথে ওর বিয়েটা দিতে হবে কিন্তু কীভাবে।
সাইফঃ ইসস আমি তো ভুলেই গেছিলাম তুমি এক ড্রেসে এসেছিলে এখন তোমার ড্রেস কই পাবো।
আদ্রিতাঃ থাক লাগবে না এটাই হবে।
আপনার রুমটা তো খুব সুন্দর।
সাইফঃ হুম দেখতে হবে না কার রুম।
রাত তো অনেক হয় গেলো এবার ঘুমাতে হবে না হলে কাল সকালে উঠতে দেরি হবে।
আদ্রিতাঃ আমি আপনার সাথে ঘুমাতে পারবো না।
সাইফঃ আমি কী বলছি আমার সাথে ঘুমাতে তুমি বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ো আমি সোফায় গিয়ে ঘুমাচ্ছি।
এর পর মেয়েটাকে বিছানায় শুয়েই দিয়ে গায়ে একটা চাদর ঢেকে দিলাম কেনো না রুমে এসি চলতেছে মাঝ রাতে ঠান্ডা লাগবে।
এর পর আমিও গিয়ে সোফায় ঘুমিয়ে পড়লাম।
মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো মনে হচ্ছে বুকের উপর কোনো ভারি কিছু শুয়ে আছে।
ঠিক তখনি ভুত আত্মার কথা মনে গেলো তাহলে কী আমাকে কোনো ভুতে ধরেছে।
না এবার দেখতে হচ্ছে
এর পর আমি যা দেখলাম তা তো বিশ্বাসি করতে পারছি আদ্রিতা আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে কিন্তু কেনো একটু বিষয়টাভাবাচ্ছে।
তখনি বাইরে বৃষ্টি পড়ার আওয়াজ শুনতে পেলাম সাথে বজ্র পাতের তার মানে আদ্রিতা ভয় পেয়ে জরিয়ে ধরেছে যাক ভালোই লাগতেছে।
এভাবে রাত কেটে দিনের আলো ফুটলো কিন্তু মেয়েটা কোথায় গেলো।
তাহলে কী ওটা স্বপ্ন ছিলো নাকি একবার বলবো থাক তখন খারাপ মনে করবে।
সাইফঃ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আদ্রিতার জন্য কিছু নাস্তা নিয়ে আসলাম।
আদ্রিতাকে নিজের হাতে দিয়ে।
সাইফঃ আমি একটু কাজে বাইরে যাচ্ছি আমি যতক্ষণ না বাড়ি আসছি তুমি রুম থেকে বেড় হবে না।
আদ্রিতাঃ হুম কিন্তু আমরা মার কাছে কখন যাবো।
সাইফঃ আমি আসলেই।
তার পর বাসা থেকে বেড় হয়ে গেলাম কিন্তু মেয়েটাকে একা রেখে যেতে কোথাও মন চাচ্ছে না তাই রাস্তা থেকে আবার গাড়িটা ঘুরিয়ে বাড়ির দিকে রাওনা দিলাম।
এর পর বাসায় এসে যা দেখতেছি তা বিশ্বাস এ হচ্ছে না যে আম্মু এমন করতে পারে।
মাঃ সাইফ বাড়ি থেকে বেড়িয়েছে এটাই সুযোগ মেয়েটাকে তাড়ানোর।
মাঃ এই মেয়ে তোর লজ্জা করলো না একটা অবিবাহিত পর পুরুষের সাথে রাত কাটাতে তোর কী লজ্জা সরম বলতে কিছু নেই ছিঃ তোদের মতো মেয়েদের জায়গা হলো পতিতালয়।
আদ্রিতাঃ কিছু বলতে পারছি না আর কোন মুখেই বা বলবো আমরা নিচু জাতির মানুষ সকলের কাছে অবহেলিত তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে সব শুনে যাচ্ছি।
মাঃ কী হলো কথা মাথায় ডুকছে না এই মুহূর্তে বেড়িয়ে যা বাড়ি থেকে দেখে তো মনে হচ্ছে ফকিরানির মেয়ে।
সাইফঃ বাশ মা অনেক বলে ফেলেছো।
মাঃ সাইফ তো বাইরে গেছিলো কখন আসলো।
সাইফঃ আমার তো তোমাকে আম্মু বলে ডাকতে ঘৃণা করছে তোমাকে না বলেছি আদ্রিতাকে কিছু বলবে না।
মাঃ কেনো বলবো না কী হয় মেয়েটা তোর।
সাইফঃ আমার যেই হোক না কেনো তুমি আর একবার যদি আদ্রিতাকে কিছু বলো তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।
কথাটা বলেই আদ্রিতাকে নিয়ে রুমে চলে আসলাম।
মাঃ সাইফ তো এইরকম ছিলো না নিশ্চয়ই মেয়েটা কিছু খাইয়েছে আমার ছেলেটাকে ততখনি রুমার ফোন।
রুমাঃ হ্যালো আন্টি কেমন আছেন।
মাঃ ভালো আর কই এই মেয়েটার জালায় বাচি না।
রুমাঃ আরে আন্টি এত টেনশন করলে তো শরীর খারাপ হবে।
মাঃ এই টেনশন যে মাথা থেকে নামতেই চাইছে না।
রুমাঃ আন্টি এই টেনশনটাই না যদি বেচে থাকে।
মাঃ মানে।
রুমাঃ আন্টি যদি মেয়েটাই না বেচে থাকে তাহলে তো সাইফ আর মেয়েটার সাথে থাকবে কীভাবে।
আমি বলি কী আপনি আজ রাতে সাইফ আর মেয়েটার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।
আপনি যেহেতু ওর মা ও আপনাকে নিশ্চয়ই মাফ করে দিবে তার পর এক গ্লাস দুধের সাথে বিষ মিশিয়ে মেয়েটাকে কোনো মতো খাইয়ে দিবেন বাশ কাজ শেষ।
মাঃ বাহ খুব সুন্দর বুদ্ধি তো।
সাইফঃ আম্মুর কথায় কিছু মনে করিও না।
ওনি এমনি।
আদ্রিতাঃ না কিছু মনে করিনি।
তবে পৃথিবীতে যদি আপন বলতে কেউ না থাকে তাহলেই বুঝা যায় মানুষ কত নিষ্ঠুর।
সাইফঃ কে বললো তোমার আপন জন বলতে কেউ নেই আমি তো আছি ( মেয়েটা খুব কষ্ট পেয়েছে কিন্তু প্রকাশ করতে পারছে না)
সাইফঃ এই দেখো তোমার জন্য কত গুলে কাপড় নিয়ে এসেছি ( জামা গুলো বেড় করে)
আদ্রিতাঃ সত্যি এগুলো আমার জন্য ( জামা গুলো খুব সুন্দর ছিলো। )
সাইফঃ হুম একা পড়ে দেখাও তো আমাক তোমাকে কেমন লাগছে।
আদ্রিতাঃ কোনটা পড়বো।
সাইফঃ এই নীল রং এর শাড়িটা আর সাথে মেচিং চুড়ি আর সাথে ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিবা আমি বাইরে যাচ্ছি তুমি তায় রেডি হয়ে নাও।
এর পর আমি বাইরে বেড়িয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ মা আমাকে শাড়ি পড়ানো শিখিয়েছে তাই শাড়ি পড়তে কোনো সমস্যাই হচ্ছে না নীল শাড়িটা পড়ে তার সাথে মেচিং চুড়ি দুল আর লিপস্টিক টা লাগিয়ে রেডি হয়ে নিলাম।
এর পর যখন নিজেকে আয়নায় নিজেকে দেখলাম তখন তো আমারি মনে হচ্ছিলো এটা কী সত্যিই আমি নাকি অন্য কেউ।
ভিতরে আসুন আমি রেডি।
সাইফঃ রুমের ভিতরে যেতেই মনে হলো পুরো পৃথিবীটা থমকে গেছে আদ্রিতাকে এতটাই সুন্দর দেখাচ্ছিলো যে সেট বলে প্রকাশ করতে পারবো।
এত সুন্দর মেয়ে আমি কখনো দেখি নি আর কখনো কল্পনাও করতে পারি না এমন সুন্দর একটা মেয়ে আমার লাইফ এ আসবে।
আদ্রিতাঃ ওমন ভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো মুখে তো মশা ডুকে যাবে।
সাইফঃ আদ্রিতার কথায় ঘোর ভাঙ্গলো না মানে এমনি।
আদ্রিতাঃ আপনিই প্রথম পুরুষ যে আমাকে প্রথম দেখেছেন তাছাড়া মা ছাড়া আমাকে আর কেউ এই দুনিয়ার দেখে নি।
সাইফঃ হুম তাই তো তুমি এত সুন্দর।
আচ্ছা আজ চলো না কোথাও থেকে ঘুরে আসি।
আদ্রিতাঃ না না আমি কোথাও যাবো না আমার ভয় করে।
সাইফঃ আর এ ভয় কীসের আমি আছি তো।
আদ্রিতাঃ না তবুও আজ নয় কাল যাবো।
সাইফঃ আচ্ছা।
এর পর সারাটা দিন আদ্রিতার সাথে গল্প করেই কাটিয়ে দিলাম রাতে এ।
মাঃ যাই গিয়ে ক্ষমা চেয়ে। নিয়ে আসি।
মাঃ সাইফ আমাকে মাফ করে সাথে তুমিও ( মানে আদ্রিতা)।
সাইফঃ হঠাৎ আম্মুর আবার কী হলো।
মাঃ আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দেয়।
আদ্রিতাঃ ওনি যখন ওনার ভুল বুঝতে পেরেছে তখন ওনাকে মাফ করে দেন।
সাইফঃ হুম মাফ করে দিলাম।
মাঃ সত্যি তো।
সাইফঃ হুম
মাঃ তোদের জন্য খাবার নিয়ে আসতেছি তোরা বস।
আদ্রিতাঃ থাক লাগবে না।
মাঃ বলেই হলো আমি নিয়ে আসতেছি।
সাইফঃ এর পর মা খাবার নিয়ে আসলো তার পর মা নিজের হাতে আদ্রিতাকে খাইয়ে দিলো বুঝতে ছি না মা এতটা বদলে গেলো কীভাবে।
মাঃ খাওয়া শেষ তোরা বস আমি দুধ নিয়ে আসি বলেই নিচে চলে আসলাম।
এর পর মেয়েটার গ্লাসে বিষ মিশিয়ে দিলাম
আজ বুঝবে কত ধানের কত চাল।
মাঃ এই নে দুধ।
আদ্রিতাঃ আমি খাবো না।
মাঃ এটা বললে হয় আমি তো তোমার মায়ের মতো আমি নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছি খাবে না তুমি।
আদ্রিতাঃ না খেয়ে আর পারলাম না ওনি খাইয়ে দিয়ে চলে গেলেন।
তার কিছু খন পর মাথাটা কেমন যানি করছে চোখ গুলে ঝাপসা ঝাপসা লাগছে।
হঠাৎ মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেলাম।
সাইফঃ এটা কীসের আওয়াজ রুমে যেতেই আদ্রিতা।
মাটিতে পড়ে গিয়েছে মুখ থেকে সাদা সাদা ফেনা বেড় হচ্ছে তার মানে মা কিছু খাবারের সাথে খাইয়েছে।
আদ্রিতা কথা বলো কী হলো তোমার এই তো মেয়েটা ঠিক ছিলো আদ্রিতা কথা বলো প্লিজ।
পর্ব ৫
আদ্রিতা কথা বলো প্লিজ হঠাৎ কী হয়ে গেলো তোমার আদ্রিতা কথা বলছো না কেনো আমার সাথে।
আদ্রিতাকে এখনি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে কিন্তু হঠাৎ মেয়েটার কী হয়ে গেলো।
আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে ফুল স্পিডে গাড়ী চালাতে লাগলাম।
কিছু খনের মধ্যে সিটি হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
ডাক্তার দেখুন না আদ্রিতা আমার সাথে কথা বলছেন আপনারা প্লিজ আমার আদ্রিতাকে ঠিক করে দিন।
ডাক্তারঃ আপনি প্লিজ আগে শান্ত হন আমরা দেখছি কী করা যায় নার্স দুরুত্ব আইসিও তে নাও রোগীর অবস্থা খুব খারাপ।
ডাক্তারা আদ্রিতাকে আইসিও তে নিয়ে চলো ঠিক হয়ে যাবে তো আমার আদ্রিতা আগের মতো কথা বলবে তো আমার সাথে।
কিছুই ভালো লাগতেছে আইসিওর বাইরে দাড়িয়ে আছি প্রায় ২ ঘন্টা যাবত।
ডাক্তাররা এখনো বেড় হচ্ছে কেনো কিছু হয়ে যায়নি তো আদ্রিতার ওমনি।
ডাক্তারঃ দেখুন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ বাচবে কী না তার গ্যারান্টি নেই।
আপনার রোগীকে দুধের সাথে যে বিষটা খাওয়ানো হয়েছে তাতে ৯৯% মানুষ মারা যায়।
২৪ ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে রোগীকে বাচানো সম্ভব হবে না এখন বাকিটা উপর ওয়ালার ইচ্ছে।
না না এভাবে আমাকে একা রেখে কখনো আদ্রিতা যেতে পারে না।
সাইফঃ আমি আদ্রিতার মা কথা রাখতে ব্যর্থ আমরা জন্যই আজ আদ্রিতা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
আমাকে ভিতরেও যেতে দিচ্ছে না নার্স গুলো।
কাচের মধ্যে দিয়ে আদ্রিতা মায়াবী মুখ দেখতে পাচ্ছি।
আমার মনে হচ্ছে আদ্রিতা আমাকে বলছে এইতো আমি তোমার সামনে দেখো আমি পুরো সুস্থ আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবা না।
এসব যে সত্যি নয় সব কিছু মনের ভুল।
মাঃ এত ক্ষণ হয়ে গেলো বিষটা এখনো কাজ করে নি বড় আজব বিষয় তো না এবার গিয়ে দেখতেই হয়।
এক পা দু পা করে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম রুমের মধ্যে কেউ নেই।
কোথায় গেলো এরা।
যেখানেই যাক না কেনো ওই নষ্টা মেয়েকে তো মরতেই হবে।
সাইফঃ রাত পেরিয়ে দিনের আলো ফুটলো এখনো আদ্রিতার জ্ঞান ফিরে নি এভাবে ২৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিট হতে চললো ডাক্তারা তো সব আশা ছেড়ে দিয়েছে।
কিন্তু আমার মন বলছে আদ্রিতার কিছু হবে না।
তখনি নার্স।
নার্সঃ স্যার ভিতরে আসুন রোগীর জ্ঞান ফিরেছে।
ডাক্তারঃ এটা কীভাবে সম্ভব। ২৪ ঘন্টা হয়ে গেছে ভিতরে গিয়ে দেখলাম সত্যি সত্যি রোগীর জ্ঞান ফিরেছে।
কিছু খন পর।
ডাক্তারঃ আপনার রোগী এখন।(out of danger)
সাইফঃ আমি দেখা করতে পারবো আদ্রিতার সঙ্গে।
ডাক্তারঃ হ্যা কিন্তু পেসেন্টের সঙ্গে বেশি কথা বলতে পারবেন না।
সাইফঃ আচ্ছা এর পর ভিতরে গিয়ে।
আদ্রিতাঃ কী হয়েছে আমার আমি এটা কোথায় আর এভাবে শুয়ে রয়েছি কেনো।
সাইফঃ সে অনেক বড় ঘন্টা অন্য সময় বলবো এখন কেমন লাগছে।
আদ্রিতাঃ মাথাটা হালকা ভারি ভারি লাগছে আর শরীরে মনে হচ্ছে এক ফোটাও শক্তি নেই।
সাইফঃ মেয়েটার শরীরটা খুবি দুর্বল হয়ে গেছে।
আচ্ছা আমি এখনি আসছি তুমি তায় শুয়ে রেস্ট নাও।
আদ্রিতাঃ কোথায় যাচ্ছেন আপনি আমার একা একা ভয় লাগবে।
সাইফঃ আমি এই যাবো এই আসবো বলেই রুম থেকে বেড় হয়ে আদ্রিতার জন্য সুপ কমলালেবুর জুস আরো কিছু পুষ্টি কর খাবার নিয়ে গেলাম।
সাইফঃ একটু উঠে বসার চেষ্টা করবো।
আদ্রিতাঃ পারছি না।
সাইফঃ দাড়াও আমি উঠিয়ে দিচ্ছি আস্সে করে আদ্রিতাকে তুলে বেডে বসিয়ে দিলাম।
এবার মুখটা হা করো।
আদ্রিতাঃ কী এটা
সাইফঃ সুপ তোমার শরীরটা এখন খুব দুর্বল এসব পুষ্টি কর খাবার না খেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে কীভাবে।
আদ্রিতাঃ এই মানুষট কত ভালো পৃথিবীতে এনার মতো মানুষ মনে হয় একটাই রয়েছেন।
যেদিন থেকে প্রথম পরিচয় সে দিন থেকে কতটা খেয়াল রাখছেন আমার।
সাইফঃ কী হলো মুখটা খুলে খাবার গুলো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো।
আদ্রিতাঃ আপনি খেয়েছেন আমার তো মনে হচ্ছে আপনি কিছুই খান নি।
সাইফঃ আগে তুমি খেয়ে নাও তার পর আমি খেয়ে নিচ্ছি এর পর মেয়েটাকে খাবার খাইয়ে দিয়ে নার্স কিছু ঔষধ দিয়ে গেছিলো সে গুলো খাইয়ে দিলাম।
সাইফঃ এখন তুমি রেস্ট করো আমি এখানেই বসে রয়েছি।
আদ্রিতাঃ একা রেখে আবার চলে যাবেন না তো।
সাইফঃ আরে না এর কিছু পরেই আদ্রিতা ঘুমিয়ে পড়লো।
এর ফাঁকে আমিও কিছু খেয়ে নিলাম তার পর হাসপাতালের সব বিল পরিশোধ করে দিলাম।
ডাক্তারঃ আপনি চাইলে পেসেন্টকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন।
পরে দিন সকাল বেলা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে।
আদ্রিতাঃ কোথায় যাচ্ছি আমরা এখন।
সাইফঃ আমাদের নতুন বাসায় যেখানে তোমার আমার মাঝে কেউ আসবে না।
আমি সব বুঝতে পেরেছি সব কিছু মায়ে এ করেছে ছিঃ মা হয়ে কীভাবে এমন একটা কাজ করতে পারলো আমি ওনাকে কোনোদিন ও ক্ষমা করতে পারবো না।
আজ সকাল। বেলা নতুন একটা ফ্লাট ভাড়া নিয়েছি।
যেখানে কেউ আমাদের মাঝে আসতে পারবে না।
অপর দিকে।
রুমার বাবাঃ আমার একটা ভুলের জন্য আমার আজ এই অবস্থা একটা বার জানতেও চাইলাম না যে সে আসলেই ওমন করেছিলো কী না।
একটা মাসুম ছেলেকে না জেনেই কতটা আঘাত করে ফেলেছি।
উপর ওয়ালাও মনে হয় কখনো মাফ করবে না আমায়।
অন্য দিকে।
রুমাঃ আন্টিকে যেভাবে হোক এই কাজে সাইফ এর সাইন করিয়ে নিতে পারলেই কাজ শেষ।
কিন্তু কীভাবে করবো এই সাইন।
সাইফঃ কিছু খন পরেই নতুন ফ্লাটে চলে আসলাম।
কেমন লাগছে এই বাসাটা।
আদ্রিতাঃ খুব সুন্দর।
কিন্তু আমি কী আপনার এই ঝ্রণ পরিশোধ করতে পারবো।
সাইফঃ আমি কী কখনো পরিশোধ করতে বলেছি।
তুমি যদি আমাকে। বলতে যেও বলতে পারলাম না।
আদ্রিতাঃ কী বলতে বলতে থেকে গেলেন কেনো।
সাইফঃ ও কিছু না আচ্ছা তুমি রেস্ট আমি বাইরে থেকে আসছি।
আদ্রিতাঃ আমিও যাবো।
সাইফঃ না। তোমার শরীরটা দুর্বল ঠিক মতো তো হাটতেও পারছো না।
আজ মা সাথে শেষ দিন তিনি আজকের পর থেকে আমার আর আদ্রিতার চাইলেও কোনো যোগাযোগ করতে পারবে না
আদ্রিতাঃ ওনার অসমাপ্ত কথাটা কী ছিলো।
এই কয়েক দিনে মনে হয় তার প্রেমে পড়ে গেছি।
এই রকম মানুষের প্রেমে না পড়ে থাকাও যায় না আচ্ছা ওনিও কী ভালোবাসে আমায়।
পর্ব ৬
তুই একটা নষ্টা মেয়ের জন্য নিজের মায়ের সঙ্গে সম্পর্কটা নষ্ট করছিস।
ভালো ভালো খুব ভালো তাহলে তুই থাক ওই মেয়েকে আমার কাছে কোনো দিনও আসার চেষ্টা করবি infact আমি মরে গেলেও না।
সাইফঃ আচ্ছা ভালো থাকো বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম জানি না কাজটা ঠিক করলাম নাকি ভুল তবে এমন মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা আমার পক্ষে সম্ভব না।
কিছু খন পরেই বাসায় চলে আসলাম।
আদ্রিতাঃ এত ক্ষণ কই ছিলেন আপনি জানেন না আমার একা থাকতে ভয় করে।
সাইফঃ একটু কাজ ছিলো সেখাই গেছিলাম।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা একটা কথা বলবো আপনাক কিছু মনে করবেন না তো।
সাইফঃ আরে না বলে ফেলো।
আদ্রিতাঃ থাক আজ বলবো না অন্য কোন দিন ( হয়তো আজ কথাটা বললে আমাকে স্বার্থ পর মনে হয় আমার আপনার সঙ্গে থাকতে অনেক ভালো লাগে তাই বলতে যেও বলতে পারলাম না)
সাইফঃ আচ্ছা ঠিক আছে তোমার যখন বলতে মন চাইবে তখনি বলিও এখন কিছু খেয়ে ঔষধ গুলো খেয়ে নাও।
আদ্রিতাঃ এত খেতে ভালো লাগে না।
সাইফঃ না খেলে আবার শরীর খারাপ করবে
আদ্রিতাঃ তখনি আমরা বেস্টু ফ্রেন্ড। নীলের ফোন।
নীলঃ হ্যালো বা রে তোর তো খোজ খবরে পাওয়া যাচ্ছে না।
সাইফঃ কী করবো বল আমি তো আমারি খোজ রাখি না তোদের আর কী খোজ রাখবো।
নীলঃ আচ্ছা যাই হোক কাল আমার বিয়ে তোকে কিন্তু আসতেই হবে।
সাইফঃ কী কাল বিয়ে তুই আমাক আজ জানাচ্ছিস।
নীলঃ কী করবো বল তোর ভাবির অত্যাচার আর সহ্য হচ্ছে না ওর কথা অনুযায়ী আজ তোকে ফোন দিলাম।
সাইফঃ বা রে সালা বিয়ের আগেই বউরে গোলাম হয়ে গেলি তোর কপালে দুঃখ আছে বলে দিলাম তো মেয়েটা কে শুনি।
নীলঃ তাসফিয়া।
সাইফঃ ও ( তাসফিয়া মেয়েটা একটু সাইকো টাইপ এর আমার অফিসে কাজ করে কিছু দিন আগে আমাকে প্রপোজও করেছিলো কিন্তু আমি একসেপ্ট করিনি কারণ তার আচরণ গুলো আমার ভালোই লাগতো না )
নীলঃ কী হলো। কথা বলছিস না কেনো তোকে কিন্তু আসতেই হবে না হলে আমি কিন্তু বিয়ে করবো না।
সাইফঃ আরে আসবো তো সাথে একজনকে নিয়েও যাবো যাকে দেখে তাসফিয়া লুচির মতো জ্বলবে।
নীলঃ এখনতো কিছুটা সম্মান কর ওর তোর ভাবি হয়।
সাইফঃ চুপ কর। এখন ফোন রাখি কাল দেখা হচ্ছে।
বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
আদ্রিতাঃ কে ছিলো।
সাইফঃ আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। নীল কাল ওর বিয়ে আমাদের যেতে বলেছে।
আদ্রিতাঃ আমাকে নিয়ে যাবেন না।
সাইফঃ কে বললো নিয়ে যাবো না তোমাকে একা রেখে যেতে পারি।
এখন ঘুমিয়ে পড়ো কাল তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।
আদ্রিতাঃ হুম এর পর আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম আর ওনি সোফায়।
সাইফঃ হে উপর ওয়ালা আজও বৃষ্টি দেয় না।
ধুর সারা রাত বৃষ্টির আশায় থাকলাম এক ফোটা পানিও পড়লো না।
সারা রাত ঘুম হয় নি বলে যে একটু ঘুম ধরে এসেছিলো ওমনি মেঘের আওয়াজ শুনতে পেলাম মনে হয় বৃষ্টি হবে।
ওমনি বৃষ্টি শুরু।
যাক আমার মনের কথা তাহলে উপর ওয়ালা শুনছে খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে আর বজ্রপাত ও ঠিক তখনি আমি যেটা চাচ্ছিলাম ঠিক সেটাই হলো
আদ্রিতাঃ মেঘের আওয়াজ শুনলে আমি খুব ভয় পায় তার উপর এত জোরে বজ্র পাত হচ্ছে এতটাই ভয় পেয়ে গেছিলাম যে ওনাকে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলাম।
সাইফঃ কথায় আছে না সবুরে মেওয়া ফলে কথাটা ঠিকি বলেছিলো এখনকার ফিলিংসটাই আলাদা।
সাইফঃ এখন একটু ঘুমের অভিনয় করতে হবে না হলে যদি জানতে পারে আমি জেগে আছি তাহলে আবার চলে যাবে।
ঘুমরে অভিনয় করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ আমিও ওনাকে জরিয়ে ধরে কখন যে
ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তা মনে নেই। যখন চোখ খুলো তখন নিজেকে ওনার কোলেই দেখাম যাক বাবা ওনি দেখননি।
তাড়াতাড়ি উঠে বিছানায় চলে আসলাম।
সাইফঃ হুম যাও তুমি তো আর জানো না আমি এসবের সব জানি।
এর পর আমিও উঠে পড়লাম অনেক বেলা হয়ে গেছে আজ আবার নীলের বাসায় যেতে হবে।
আদ্রিতাঃ এতক্ষণে ঘুম ভাঙ্গলো।
আমি তো সেই কখন উঠছি।
সাইফঃ এত বড় মিথ্যা কথা এই মাএ দৌড়ে বিছানায় গেলো আর বলে সেই কখন উঠছে।
আচ্ছা রেডি হয়ে নাও নীলের বাসায় যেতে হবে তো।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা।
সাইফঃ আমি ততক্ষণে ফ্রেশ হয়ে গাড়ি, ড্রাইভার কে গাড়ি বেড় করতে বললাম।
আদ্রিতাঃ এই যে শুনছেন কোন শাড়িটা পড়বো।
সাইফঃ তোমাকে না আমি দুটা নীল শাড়ি এনে দিচ্ছি ওগুলোর মধ্যে যেকোনো একটা পড়ে নাও।
আদ্রিতাঃ আপনার কী নীল খুব পছন্দ।
সাইফঃ হুম অনেক।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আপনি কী পড়বেন।
সাইফঃ তোমার ড্রেসের সাথে মেচিং নীল কমপ্লিট টা পড়বো।
কিছু খনের মধ্যে আমিও রেডি হয়ে নিলাম।
এর পর আদ্রিতা সেজে গুজে বেড় হলো বাহ আদ্রিতাকে এতটাই সুন্দর দেখাচ্ছিলো যে যেটা বলে প্রকাশ করতে পারবো না।
আদ্রিতাঃ আমি এভাবে যাবো সবাই তো আমাকে দেখবে।
সাইফঃ দেখুক তুমি তো আর সঙ্গেই থাকবা ভয় কীসের।
আদ্রিতাঃ আপনি বলছেন বলে এভাবে যাচ্ছি না হলে কিন্তু কখনোই যেতাম না।
তার পর দুজনে বেড়িয়ে পড়লাম কয়েক ঘন্টা পরে নীল বাসায় পৌঁছে গেলাম সেখানে যেতেই।
অফিসের সকল স্টাফদের সাথে দেখা তার তো আমার সাথে আদ্রিতাকে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে।
নীলঃ কে রে এই মেয়েটা।
সাইফঃ কেনো তোকে সব বলতে হবে নাকি।
তখনি নীলের বাবা।
নীলের বাবাঃ নীল কে এই ছেলে।
নীলঃ বাবা আমার অফিসের বস মিঃ আবু সাইফ সরকার।
নীলের বাবাঃ সরি বাবা বুঝতে পারি নি।
সাইফঃ আরে আঙ্কেল কোনো ব্যপার না।
এখানে এতে তো আদ্রিতা হাত টা ছাড়ছেই না।
সাইফঃ হাতটা একটু ছাড়ো না।
আদ্রিতাঃ না আমি যদি হারিয়ে যাই তাই আর ছাড়ছি না
সাইফঃ আজকাল দুনিয়ায় ই কেউ হারিয়ে যায় তা ভাবা যায়।
তার পর নীলের গায়ে হলুদ পর পর্ব শেষ বিকেল বেলা বর যাএী আমি আর আদ্রিতা আমাদের গাড়িতে গেছিলাম সেখানে যেতেই।
রুমাঃ আরে এটা তো সাইফ পাশের ওই মেয়েটা সেদিন কার মেয়েটা না।
সাইফঃ গাড়ি থেকে নামতেই চোখটা হঠাৎ রুমার উপড়ে পড়ে গেলো।
এই মেয়েটা এখানেও এসেছে ধুর সব মজাই নষ্ট করে দিলো।
সেখানে কিছু খন পরেই
আদ্রিতাঃ দেখুন না ছেলে গুলো কীভাবে আমার দিকে আছে।
সাইফঃ সত্যি তো ছেলে গুলো কুনজরে আদ্রিতার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
সাইফঃ এই যে মিস্টার সমস্যা কী ওমন ভাবে ওর দিকে কী তাকাচ্ছেন।
ছেলেগুলোঃ তাতে তোর কীরে।
সাইফঃ আমার কী দিলো মেজাজটা খারাপ করে দিলাম দুই গালে দুটা থাপ্পড় ওমনি ভয়ে দিলো সবাই দৌড় তখনি পিছনে থেকে।
সাইফ আমি তোমাকে অনেক ভালো বাসি বিয়ে করবে আমায়।
পর্ব ৭
পিছন থেকে আমি তোমাকে অনেক ভালো বাসি সাইফ বিয়ে করবে আমায়।
সাইফঃ কন্ঠটা বেশ চেনা জানা মনে হচ্ছে এর আগে অনেক বার এই কন্ঠটা শুনেছি পিছনে তাকাতেই দেখলাম এ কি এ তো সেই মেয়ে যে আমার অফিসে কাজ করে।
সাইফঃ এই মেয়ে তোর সাহস হলো কী করে আমাকে কথাটা বলার।
মেয়েটাঃ ভালোবাসালে ভয় কীসের আমি আপনাকে ভালোবাসি সেটা বলতে লজ্জা কীসের।
সাইফঃ আপনার তো সাহস কম না আপনি আপনার অফিসের বসকে এই কথা বলছেন।
মেয়েটাঃ এটা আপনার অফিস না যে ভয় পাবো।
সাইফঃ ওকে কাল অফিসে এর একটা কিছু হবে।
মেয়েটাঃ এই রে কাজ সারছে খুব জোর গলায় তো কথাটা বললাম যদি কাল চাকরি থেকে বেড় করে দেয় তখন।
মেয়েটাঃ সরি স্যার ভুল হয়ে গেছে না জেনে বলে ফেলেছি আপনি নিশ্চয়ই অন্য কাউকে ভালোবাসেন।
সাইফঃ হুম ওই যে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে আদ্রিতার দিকে দেখিয়ে দিয়ে।
আদ্রিতাঃ ওই মেয়েটা যখন ওই কথাটা বলেছিলো মনে হচ্ছিলো একটা ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিয় গালে কিন্তু ওনি আমার দিকে কী দেখিয়ে দিচ্ছেন আঙ্গুল দিয়ে।
সাইফঃ নেক্সট টাইম যদি এই রকমের কোনো বিহেব করো। তাহলে আমি কী করতে পারি সেটা তো জানোই বলে সেখান থেকে চলে আসতেছিলাম তখনি৷
মেয়েটাঃ স্যার এক মিনিট ওই মেয়েটাকে যদি আপনি ভালোবাসেন তাহলে এই মেয়েটা কে।
রুমাকে দেখিয়ে দিয়ে।
সাইফঃ আমি চিনি না এই মেয়েকে কে এই মেয়ে।
স্যার ওই ম্যাম এ তো বললো আপনাক এই কথাটা বলতে ওনার সাথে আপনার বলে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে পরশু বিয়ে।
সাইফঃ সব মিথ্যা কথা ( এই রুমা মেয়েটার কিছু একটা করতে হবে)
মেয়েটাঃ সরি স্যার ওনার কথা অনুযায়ী আমি আপনাকে এই কথা বলেছি।
সাইফঃ its ok.
তার পর আমি আদ্রিতার কাছে চলে আসলাম।
আদ্রিতাঃ কী বলতেছিলো মেয়েটা আপনাকে।
সাইফঃ কিছু না।
তার পর যথা নিয়মে বিয়েটা শেষ হয়ে গেলো সবাই বাড়িতে ফিরলো আর আমরাও অনেক রাত হয়ে গেছে।
হোটেল থেকে খাবার খেয়ে এসেছি।
এভাবে প্রায় কিছু দিন কেটে গেলো।
মাঃ অনেক দিন তো হলো ছেলেটার কথা খুব মনে পড়ছে যতই হোক না কেনো আমি তার জন্ম দাতা মা।
আচ্ছা সাইফ কী সত্যি খারাপ হয়ে গেছে নাকি আমার চোখে খারাপ বানানোর জন্য সব চক্রনাতো।
হঠাৎ সেদিনের কথা মনে পড়ে গেলো
আমি সে দিন টার কথা বলছি যে দিন ওই অচেনা নাম্বার টা থেকে কল এসেছিলো।
আচ্ছা সে কীভাবে জানালো সাইফ পতিতালয়ে যায় তাহলে সে নিশ্চয়ই পতিতালয়ে থাকে তাই আবারো সেই নাম্বারে ফোন করলাম ঔই পাশ থেকে ফোনটা ধরতে অনেকটাই অবাক হয়ে গেলাম কেনো এটা তো রুমা।
রুমাঃ আমার ফোনে দুইটা সিম আছে আন্টি যে সিম ২ এ ফোন দিচ্ছিলো সেটা বুঝতে পারি নি।
তাই হ্যালো আন্টি কেমন আছেন।
মাঃ কে রুমা।
রুমাঃ জ্বী আন্টি।
মাঃ এইটা তো রুমা।
তাহলে রুমা জানলো কীভাবে যে সাইফ পতিতা লয়ে যায় আর সে মেয়েটার কথা তাহলে তো রুমা ও পতিতা লয়ে যায়।
এ কথাটা আগে কেনো মাথায় আসে নি।
মাথাটা কিছুই কাজ করছে না অন্যর কথা শুনে নিজের ছেলেকে সন্দেহ করলাম আর কখনো জানতেও চাইলাম যে কে সেই মেয়েটা।
তার পর রুমার সম্পর্কে খোঁজ নিতে থাকলাম আর সে মেয়েটা সম্পর্কেও এর পর যেটা জানতে পারলাম তা শুনে তো নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না আমি এক জন মা হয়ে কীভাবে এই কাজ গুলো করতে পারলাম।
রুমাই সে মেয়ে যে কী না সেই বৃষ্টির রাতে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ছেলেটাকে তার বাবার কাছে অপরাধী বানিয়েছিলো আর আমি কী না সে মেয়েটার সাথে ওর বিয়ে দেওয়া জন্য একটা নিরহ মেয়ের প্রাণ নিতে চাইছিলাম এটা তো সেই মেয়ে যে ওই রাতে তাকে তার বাসায় নিয়ে গেছিলো যার জন্য সাইফ এই পৃথিবীতে বেচে আছে আমি কী না সেই মেয়েকে মিথ্যা অপবাদ দিলাম ছিঃ নিজের উপর ঘৃণা লাগছে।
সাইফঃ আদ্রিতা।
আদ্রিতাঃ হুম বলেন।
সাইফঃ আজ কী ভাত রান্না করবা নাকি হোটল থেকে খেয়ে নেবো।
আদ্রিতাঃ না না হোটেল থেকে রোজ রোজ খাবার খেলে পেট খারাপ করবে এক কাজ করি আমি রান্নাটা করে নিচ্ছি।
সাইফঃ তুমি রান্না করতে জানো।
আদ্রিতাঃ হুম কিছু টা তবে ভালো হবে কী তা জানি না।
সাইফঃ আচ্ছা যেমনি হোক না কেনো আমার সমস্যা নেই
আদ্রিতাঃ আচ্ছা এই বাসায় তো কোথাও মাটির চুলো দেখতে পাচ্ছি না তাহলে কীভাবে রান্না করবো
সাইফঃ শহরে কেউ মাটির চুলো ব্যবহার করে না সবাই গ্যাস চুলো ব্যবহার করে।
আদ্রিতাঃ গ্যাস চুলো আবার কী রকম।
সাইফঃ রান্না ঘরে চলো সব শিখিয়ে দিচ্ছি।
আদ্রিতাঃ হুম
তার পর ওনি সহ রান্না ঘরে গেলাম।
সাইফঃ এটা হচ্ছে গ্যাস চুলো এটা এভাবে ঘুরিয়ে দাও বাশ আগুন বেড় হতে শুরু করলো।
আদ্রিতাঃ ওয়াও এই আগুন টা কোথা থেকে আসতেছে।
সাইফঃ আহাত থেকে এবার তুমি রান্না করো আমি এখানেই বসে আছি।
কিছু খনের মধ্যে আদ্রিতা যে কী রান্না করলো আল্লাই জানে।
আদ্রিতাঃ খাবার রেডি আপনি খেয়ে অফিস যান।
সাইফঃ হুম আসতেছি। খাবার টেবিলে এইটা কীসের তরকারি।
আদ্রিতাঃ তেলাপোকার ( মজা করলাম)
সাইফঃ ওমা তাই এটা তো ডিম ভাজি মনে হচ্ছে বা বা সট কাট রান্না।
আদ্রিতাঃ হুম।
এর পর মেয়েটাকে খাইয়ে দিয়ে আমিও খেয়ে অফিসে চলে আসলাম।
না এভাবে আর কতো দিন চলবে আজ সব মনের কথা আদ্রিতাকে খুলে বলবো।
রাতের বেলা।
সাইফঃ একটা কথা বলার ছিলো।
আদ্রিতাঃ জ্বী বলুন।
সাইফঃ দেখো আদ্রিতা জানি না তুমি কথা শুনে কেমন রিয়েকট করবে কিন্তু এটাই সত্যি যে আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালো বাসি।
আদ্রিতাঃ কী বলেন।
সাইফঃ যেটা বললাম আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি যে দিন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম সেদিনে ভালোবেসে ফেলেছিলাম কিন্তু মুখ ফুটে বলার সাহস হয় নি।
আমি তোমার সৌন্দর্য কে নয় তোমার ভিতরে যে একটা সুন্দর মন রয়েছে সেটাকে ভালোবাসি।
রুপ যৌবন তো আজীবন থাকবে না।
তুমি ভালোবাসো না আমায়।
আদ্রিতাঃ ওনি এই কথা গুলো বলবেন তা কোন দিনও ভাবতে পারি নি সত্যি কথা বলতে আমিও ওনাকে খুব ভালোবাসি।
ভালোবাসলেও তো ভালোবাসার মানুষকে পাওয়া যায় না কেনো না আমি তার কাছে আশ্রিয়তা।
সাইফঃ কী হলো কিছু বলছো না কেনো।
আদ্রিতাঃ পারবো না আমি বিয়ে করতে আপনাকে কেনো না আমার কোনো পরিচয় নেই তার চেয়ে বড় কথা আমি আপনার কাছে একজন আশ্রিয়তা।
সাইফঃ সত্যি আমার জন্য তোমার মনে এতটুকু কোনো ফিলিংস নেই।
আদ্রিতাঃ না কারণ আমি কখনো সে চোখে আপনাকে দেখেনি।
কথাটা বলতে বলতে হঠাৎ মাথাটা ঘুড়ে মাটিতে পড়ে গেলাম।
পর্ব ৮
আদ্রিতাঃ বলাম তো পারবো না আমি বিয়ে করতে আপনাক ভালোবাসি না আমি আপনাক তবুও বিয়ে করবেন আমায়।
কথাটা বলতে বলতে হঠাৎ মাথাটা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেলাম তার পরে আর কিছু মনে নেই।
সাইফঃ আদ্রিতা কী হলো তোমার হঠাৎ মাটিতে এভাবে পড়ে গেলো কেনো।
আদ্রিতা চোখ খুলো।
[ও পারবো না আমি ছাড়তে তোকে আর ছেড়ে যেতে পারবো না তোর বায়না শুন রেখে দেবো সাজিয়ে আর আলাপে আমি পারবো না। ওরে মন বোকা মন বোকা মন বুঝে না শুনে না সে বারণ শুধু যায় ছুটে যায় দিকে তোর তাই আমি পারবো না ]
সাইফঃ কিছু খন পরে।
আদ্রিতার জ্ঞান ফিরলো।
থাক বিয়ে করতে হবে না আমায় তোমার যেটা ভালো লাগে সেটাই করো আর কখনো বলবো তোমায় ভালোবাসি।
আদ্রিতাঃ কিছু কথা বলতে যেও বলা যায় না আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি কিন্তু তা কখনো প্রকাশ করতে পারবো না।
আমি শুধু চাই আপনি সব সময় ভালো থাকেন হাসি মুখে থাকেন এর বেশি কিছুই চাই না।
সাইফঃ টেবিলে খাবারটা রাখা আছে খেয়ে নিয়ও আমি বাইরে গেলাম বলেই বাইরে চলে আসলাম।
বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। কেউ নেই এই পৃথিবীতে বুঝার মতো আমায়। যাকে এতটা ভালোবাসলাম সেও আমাকে ভালোবাসে না।
লাইফে কোনো দিন এতটা কষ্ট লাগে নি যতটা আজ লেগেছে এই জন্য সবাই বলে ভালোবাসলে কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় কথাটা বাস্তব।
আদ্রিতার কথা ভেবে আমার লাভ কী আমার লাইফটাকে আমার মতো গুছিয়ে নিতে হবে এভাবে ভেঙ্গে পড়লো চলবে না।
সে যখন আমাকে চায় না তখন আমি কেনো তার সঙ্গে জোর করতে যাবো থাক না সে তার মতো।
আদ্রিতাঃ প্রায় বেশ কয়েকদিন হলো ওনি আগের মতো আমার সাথে গল্প করে না নিজের হাতে খাইয়েও দেয় না কেমন যানি একটা হয়ে গেছে সব সময় মন মরা হয়ে থাকে।
আনি এসবের জন্য আমিই দায়ী।
সাইফঃ এভাবে তো বসলে থাকলে হবে না কিছু একটা করতে হবে আমার অফিসের একটা মেয়ে ওর নাম লিমা সে আমাকে আজ প্রপোজ করেছিলো বিয়ে করতে চায় আমায় আমি না চাইতেও রাজি হয়ে গেলাম।
কেনো এভাবে আর কত দিন চলবে তিন বেলা ঠিক মতো খাওয়া হয় না এভাবে তো আর চলতে পারে না।
তাই সিদ্ধান্ত নিয়েই নিলাম লিমাকেই বিয়ে করবো আগামী কাল আমার বিয়ে।
সাইফঃ আদ্রিতা কাল আমার বিয়ে তুমি এই রুমটাতে আর থাকতে পারবে না তোমার জন্য আলাদা একটা রুম ভাড় নিচ্ছি।
আদ্রিতাঃ কথা শুনে যতটা আঘাত পেয়েছি ততটা আঘাত মায়ের মৃত্যুতেও পায় নি।
আপনি মজা করছেন না আমার সাথে।
সাইফঃ আমি কোনো মজ করতে যাবো কাল সত্যি সত্যি আমার আর লিমার বিয়ে।
আদ্রিতাঃ তাহলে কী হারিয়ে ফেললাম এনাকে সত্যিই জীবনটা বড়ই অদ্ভুত যাকেই আপন ভাবি সেই দুরে সরিয়ে দেয় ভাবছিলাম আজ সব সত্যি কথা বলে দিবো যে আমি ওনাকে কতটা ভালোবাসি কিন্তু না তিনিই আমাক উল্টে সারপ্রাইজ দিয়ে দিলো।
সাইফঃ আমাকে এখন আর ডিসটার্ব করবা না শান্তিতে ঘুমাতে দাও কাল অনেক কাজ আছে বলেই শুয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ চোখ থেকে পানি পড়তে লাগলো কেনো এতটা কষ্ট লাগছে আমায় কাদতে কাদতে চোখের পানিও শেষ হয়ে গেছে প্রায় অধেকটা রাত হয়ে গেছে দু চোখে কোনো ঘুম নেই আজি তার শেষ রাত।
আমি হারিয়ে ফেললাম আপনাক।
তার পর কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই।
সাইফঃ আমি জানি আদ্রিতাও আমাক ভালোবাসে কিন্তু তা বলছে না মেয়েটা কেদে কেদে চোখ গুলো লাল করে ফেলেছে তবুও মনের কথাটা বললো না।
একটি বার যদি বলতো ভালোবাসি তোমায় তাহলে কোনদিনও ছেড়ে যেতাম না।
হারাতে না চাইলেও এখন হারিয়ে ফেলতে হচ্ছে।
পরে দিন বাসায় আমার বন্ধু গুলো আসতে শুরু। করে দিয়েছে বাসায় আমার অফিসের সবাই চলে এসেছে বিয়ের সব নিয়ম কানুন মেনে সব কিছু হচ্ছিলো।
গায়ে হলুদ তার পর বর যাএী কিন্তু সব থেকে কষ্ট লাগলো আদ্রিতাকে দেখে মেয়েটা যদি এখনো বলতো ভালোবাসি তোমায় তাহলে এখনি বিয়েটা বন্ধ করে দিতাম কিন্তু না সে হয়তো ভালোই বাসেনা আমায় এটা আমার মনের ভুল।
লিমাদের বাসায় চলে আসছি প্রথমে হালকা কিছু খাওয়া দাওয়া তার পরেই শুনতে পেলাম কাজি চলে এসেছে বিয়ে পড়াতে।
কাজিঃ মিঃ আবু সাইফ সরকার কে তুমি তোমার স্বামী বলে গ্রহন করো বলো কবুল।
লিমাঃ কবুল কবুল কবুল।
কাজিঃ এই বার এই কাজে সাইন করে দাও।
লিমাঃ কাজটাতে সাইন করে দিলাম।
আমার মনে আশা পূরণ হলো আজ সব স্বপ্ন আমার সত্যি হলো।
আদ্রিতাঃ বুকের ভেতরটা ছটফট করছে ওনার কাছে যেতে মন চাইছে দৌড়ে গিয়ে ওনাকে জরিয়ে ধরে বলি খুব ভালোবাসি আমি তোমায় আমি অন্য কারো হতে দিবো না তোমায় কিন্তু আফসোস এই অধিকার ঢুকু আমার নেই নিজেই হারিয়ে ফেলেছি সেটাকে।
অন্য দিকে মাঃ শুনলাম আজ আমার ছেলেটার বিয়ে কিন্তু সে অন্য একজনকে কেনো বিয়ে করছে এমন একটা লক্ষী মেয়ে তার পাশে থাকতে তাদের মাঝে কী হয়েছে বড়ই মনটা জানতে ইচ্ছে করছে মনে হচ্ছে দৌড়ে গিয়ে গিয়ে বলি কেনো সে এমন টা করছে।
সাইফঃ আদ্রিতাকে কোথায় দেখতে পাচ্ছি না কোথায় গেলো মেয়েটা এই তো এখানে বসে ছিলো।
তখনি কাজি
কাজিঃ মিঃ আসাদ সাহেবের একমাএ কন্যা লিমাকে বিনা দেন মহরে বিয়ে করতে আপনি রাজি বলুন কবুল।
সাইফঃ বলতে না চাইলেও বলতে হচ্ছে কবু।
পর্ব ৯
কবু। এতটাই উচ্চারণ করতে পেরেছিলাম তার আগেই।
আদ্রিতাঃ দাড়ান এই বিয়েটা হবে না।
সেখান কার মানুষ জন গুলো ভুত দেখলে যততটা অবাক হয় তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছিলো আদ্রিতার কথাটা শুনে।
কাজি সাহেবঃ কে আপনি আর এই বিয়েটা হবে কেনো।
আদ্রিতাঃ কারণ ওনি আমাকে ভালোবাসেন ওই মেয়েটাকে না আর এই মেয়েটাকে বিয়ে করলে ওনি কোন দিনও সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারবেন না।
লিমার ভাইঃ যখন আপনাকেই ভালোবাসতো তাহলে তো আপনাকেই বিয়ে করার কথা ছিলো আমার বোনকে না কী হয়েছিলো যে এনি আপনাকে বিয়ে না করে লিমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছেন।
আদ্রিতাঃ সে অনেক বড় ঘন্টা সর্বশেষ কথা হলো এই বিয়েটা হবে মানে হবে না।
লিমার ভাইঃ আপনি কিন্তু অতিরিক্ত করে ফেলতেছেন।
আদ্রিতাঃ আপনি চুপ করুন আর আপনি কেমন মানুষ হ্যা যাকে ভালোবাসেন তাকে ফেলে অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করতে চলে এলেন
কাজি সাহেবঃ আপনি চাইলেও এ বিয়ে বন্ধ হওয়া সম্ভব না কারণ অধেক বিয়ে হয়েই গেছে আর এই কাগজে পাএীর সাক্ষর ও হয়েগেছে বাশ এনি সাইন করে দিলে বিয়েটা সম্পুর্ণ হয়ে যাবে।
আদ্রিতাঃ এই কাগজটাই তো বাধা হয়ে দাড়াছে তাই বইটা থেকে কাগজটা ছিড়ে কুচি কুচি ছিড়ে ফেলেদিলাম।
লিমার ভাইঃ এটা আপনি করলেন পাগল হয়ে গেছেন।
আদ্রিতাঃ হ্যা আমি পাগল হয়ে গেছি।
লিমার বাবাঃ আপনার জন্য আমার মান সম্মান সব মাটিতে মিশে গেলো কে করবে আমার মেয়েটাকে বিয়ে।
ঠিক তখনি পিছন থেকে অচেনা কন্ঠে ভেসে এলো আমি করবো বিয়ে।।
কে বললো কথাটা তখনি ভিড় থেকে একটা ছেলে বেড়িয়ে আসলো।
ছেলেটাঃ আমি করবো বিয়ে আজ এই মেয়েটা বিয়েটা না বন্ধ করলে আমিই বন্ধ করে দিতাম কেনো আমি লিমাকে ভালোবাসি।
ছেলেটাঃ অভিমান করে আর বা রাগ করে লিমা আমাকে ছেড়ে চলে এসেছে হয়তো কষ্ট গুলো মুছে ফেলতে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
লিমার বাবাঃ কী লিমা তোমাকে ভালোবাসতো আর আমরা কখনো জানতেই পারি নি।
লিমার ভাইঃ লিমা এই লিমা বেড় হও ঘর থেকে।
লিমাঃ রুম থেকে বেড় হয়ে কী হয়েছে ভাইয়া ( ভয়ে ভয়ে)
লিমার ভাইঃ এই ছেলেটা যা বলছে তা কী সত্যি নাকি মিথ্যা। সত্যি করলে বল।
লিমাঃ হুম সত্যি আমিও ওকে ভালোবাসতাম কিন্তু যখন ওকে বিয়ের কথা বলি ও রাজি হয় নি কারণ ওর কাছে ভালো জব নেই তাই আমার খুব রাগ হয়ে আর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি
লিমার বাবাঃ পরিবারের মান সম্মান বাচাতে ওই ছেলেটার সঙ্গেই লিমার বিয়েটা দিয়ে দিলাম
কিছু খন পরে
সাইফঃ গাড়িতে দুজন দুপাশে কারো মুখে একটাও কথা নেই গাড়িটা নিজের গতিতে ছুটে চলেছে।
আদ্রিতাঃ কথা বলতেছে না কেনো হুম তাই।
এই যে মিঃ সাইফ শুনতে পাচ্ছেন।
সাইফঃ শুনতে পাবো না কেনো আমি কী কানে শুনতে পাইনা যতসব।
আদ্রিতাঃ এই রে ওনি তো প্রচন্ড রেগে আছেন এখন কিছু না বলটাই ভালো।
আমি জানি তার রাগ করার কারণটা।
হয়তো কেউ বলবে নিজের স্বাথের কারণে এমনটা করেছি।
যে যাই বলুক না কেনো যখন ওনাকে ভালোবাসতে পেরেছি তাহলে ওনাকে হারিয়ে যেতে দিবোই বা কেনো।
সাইফঃ বিয়েটা ভেঙ্গে গেলো এটা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথাই নেই।
তবে এটা ভেবে কষ্ট লাগছে যে এই দিনটায় যদি আব্বু আম্মু থাকতো তাহলে তারা কতটা আনন্দ করতো আফসোস আব্বু এই দিনটা দেখার জন্য বেচেই রইলো না আর আম্মু তো বেচে থেকেও আমার কাছে মৃত্য।
সাইফঃ ড্রাইভার গাড়িটা থামাও।
ড্রাইভারঃ কেনো স্যার এই জন মানব হীন জায়গায় আপনি কী করবেন।
সাইফঃ গাড়ি থামাতে বলছি থামাও ওত কথার উওর নেই আমার কাছে গাড়ি থেকে নেমে যাও সবাই বাড়িতে ফিরে যাও আমি সময় হলে চলে আসবো।
ড্রাইভারঃ কিন্তু স্যার আপনি আসবেন কীভাবে।
সাইফঃ গাড়িটা রেখে যাও আর হ্যা তোমরা নীলের গাড়িতে চড়ে বসো আদ্রিতাও আমার সঙ্গে থাকতে চেয়েছিলো কিন্তু না ওকেই পাঠিয়ে দিয়েছি।
আদ্রিতাঃ ওনার কী এমন হয়েছে যে আমার সাথে এমন করছে।
নীলঃ ওখান থেকে কিছু দুরে একটা কবর স্থান রয়েছে সাইফ ওখানে যাবে কেনো না ওই জায়গায় ওর বাবার কবরটা রয়েছে।
আদ্রিতাঃ ওনার বাবার কী হয়েছিলো।
নীলঃ আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে সাইফ ওর আম্মু আব্বু আর সাইফের আদরের বোন অনু সবাই মিলে ঘুরতে বেড়িয়েছিলো।
কিন্তু আফসোস ওই দিনটাই ছিলো ওর আব্বু আর বোনের জীবনের শেষ দিন মাঝ রাস্তায় সাইফের আম্মুর প্রচুর বমি হচ্ছিলো তাই ও আর ওর আম্মু গাড়ি থেকে নিচে নামতেই একটা বড় ট্রাক এসে তাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে।
গাড়িতে তার বোন আর আব্বু ছিলো তারা সেখাই মরা যায় তার পর থেকে যখনি ওদের কথা মনে পড়ে সাইফ একা একা সেখানে চলে যায়।
আদ্রিতাঃ ও আজ মনে হয় ওদের কথা খুব মনে পড়েছিলো।
সাইফঃ আব্বু আর অনুর কবরটা পাশাপাশি
ইসস আজ যদি অনু বেচে থাকতো তাহলে কতই না আনন্দ করতো ছোটবেলায় অনু বলতো
ভাইয়া তোর বিয়েতে আমি খুব নাচবো আর খুব খুব আনন্দ করবো আমার সব বান্ধবীদের দাওয়াত দিবো।
আজ সেই বোনটা আমার আমার সাত ফিট মাটির নিচে ঘুমিয়ে রয়েছে ভাইয়া বলে ডাক দেওয়ার মতো কেউ নেই।
বাবা তুমি খুব স্বার্থ পর কেনো একা রেখে চলে গেলে আমায় মা আমাকেও সাথে নিয়ে যেতে পারতে তুমি জানো আব্বু আম্মু একটুও ভালো না আমি আম্মুকে রেখে চলে এসেছি।
সেখানেই কিছু খন বসে ছিলাম বসে থাকতে ভালো লাগেই বাবার কবরের পাশে।
আজ মনে খুব বৃষ্টি হবে আহাতের অবস্থা ভালো নেই।
কথাটা বলতে না বলতেই আহাত বেয়ে বৃষ্টি পড়তে লাগলো সারা শরীরের উপর ঝড় ঝড়র করে বৃষ্টি পড়ছে।
মনে হচ্ছে বাবা আমার কষ্ট দেখে কাদতেছে আর এই বৃষ্টিটা তারি চোখের জল।
সেখান কিছু খন থাকার পর মনে হলো মেয়েটা বাসায় একা রয়েছে বৃষ্টি পড়লে খুব ভয় পায় এখানে বেশি খন থাকাটা ঠিক হবে না।
আদ্রিতাঃ আহাতটার অবস্থা এত খারাপ না জানি ওনি কোথায় আছেন আর কী অবস্থাই বা আছেন ওনার জন্য খুব চিন্তা হচ্ছিলো এমন সময় বিদ্যুৎ টাও চলে গেলো পুরো রুমটা অন্ধকার প্রচন্ড ভয় লাগতে শুরু করলো বৃষ্টি পড়লে আমরা এমনিতে ভয় লাগে।
বজ্রপাতের আলোয় আবছা আবছা করে দেখতে পাচ্ছি কেউ রুমে এসেছে আমি শিওর ওটা ওনিই দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলাম ওনাকে
ওনার পুরো শরীরটা ভিজে একাকার হয়ে গেছে হাত গুলো প্রচন্ড ঠান্ডা হয়ে গেছে।
আদ্রিতাঃ আপনার শরীরটা তো পুরো পুরি ঠান্ডা হয়ে গেছে তারাতাড়ি কাপড় গুলো বদলে ফেলুন না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে।
সাইফঃ আদ্রিতাকে ছাড়িয়ে কাপড় গুলো বদলে ফেললাম।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা একটা কথা বলবো আপনি এমন কেনো।
সাইফঃ আমি যেমন ছিলাম তেমনটাই আছি শুধু মাএ মরে গেছে সেই আগের সাইফ টা।
আদ্রিতাঃ আপনি যেমনি হোন না কেনো আমার এই মানুষটাকেই খুব ভালো লাগে
বিয়ে করবেন আমায়।
সাইফঃ হঠাৎ কেনো বিয়ে করতে চাও আমায় যখন আমি বলেছিলাম তখন কী হয়েছিলো।
আদ্রিতাঃ সত্যি জানতে চান তাহলে শুনুন আমি কখনো সন্তানের মা হতে পারবো না তাই আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই নি কারণ আমি কখনো আপনাকে বাবা হওয়ার সুখটা দিতে পারবো না।
এখন বলেন এই কথাটা আপনি জানলে বিয়ে করতেন আমায় উওর দিন।
পর্ব ১০
আদ্রিতাঃ আমি কোনো দিন মা হতে পারবো এটা জানলে আপনি বিয়ে করতেন আমায় উওর দিন।
সাইফঃ ( মুখ থেকে একটা কথাও বেড় হলো না)
আদ্রিতাঃ সত্যি টা জানার পর তো এখন আফোস হচ্ছে বিয়েটা না করেই ভালোই হয়েছে বিয়েটা হলে কোন দিনও বাবা হতে পারতাম না আর এখন তো সত্যি টা জানার পর নতুন কাউকে বিয়ে করবেন তাই না।
আর হ্যা আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি যখনি মনে পড়ে যায় আমি কখনো মা হতে পারবো তখনি সব ভালোবাসা নিজের মাঝেই বন্দি হয়ে যায়।
আমি আর এভাবে থাকতে পারছি তাই সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছি আমি আপনার কাছ থেকে অনেক দুরে কোথাও চলে যাবে এতটাই দুরে চলে যাবো যে আপনার আর আমার কথা কখনোই মনে পড়বে না ( এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে ফেললাম)
চলে যাচ্ছিল আমি বলেই বেড়িয়ে যাচ্ছিলাম। তখনি।
সাইফঃ পিছন থেকে হাতটা ধরে টান দিলাম হয়তো নিজকে সামলাতে না পেরে আমারি বুকে এসে পড়লো আমিও শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
তুমি আমাকে এই কয়েক দিনে এতটাই চিনলে তুমি মা হতে পারবে না বলে আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো এটা তুমি ভাবলে কীভাবে।
তোমার মতো তো হাজারো মেয়ে রয়েছে এই পৃথিবীতে যারা কোন দিনও মা হতে পারবে না তাদের কী বিয়ে হয় নি।
আমার শুধু তোমাকে চাই কোন বাচ্চা চাই না আমার তুমি হলেই চলবে পুরো পৃথিবীটা লাগবে না।
আদ্রিতাঃ আপনিই এতটাই ভালোবাসেন আমায়।
সাইফঃ হ্যা যতটা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।
তুমি কথা দাও জীবনে যত বড়ই বিপদ আসুক না কেনো তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো যাবে না।
আদ্রিতাঃ এই যে প্রতিঙ্গা করলাম আমি কখনো আপনাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না
এই পৃথিবীতে আমাকে আপনার কাছ থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না।
সাইফঃ হুম।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো।
সাইফঃ হুম বলো।
আদ্রিতাঃ থাক আজ বলবো না আরেক দিন বলবো।
সাইফঃ ওকে অনেক রাত হয়েছে এবার ঘুমাতে হবে।
আদ্রিতাঃ হুম।
সাইফঃ আমি গিয়ে সোফায় শুতে যাচ্ছিলাম তখনি।
আদ্রিতাঃ এই আপনি আজও সোফায় ঘুমোতে যাচ্ছেন। আজ থেকে আপনি আমার সাথে ঘুমাবেন আমার একা ঘুমাতে ভয় লাগে।
সাইফঃ সাইফ চুপ করে রইলো।
আদ্রিতাঃ কী হলো বিছানায় আসুন আজ মনে হয় সারা রাত বৃষ্টি পড়বে।
সাইফঃ হুম পড়ুক না বৃষ্টি। বৃষ্টি পড়লে আমার খুব ভালো লাগে।
আদ্রিতাঃ ওও
সাইফঃ আমি বিছানার এক পাশে একটা বালিশ নিয়ে শুয়ে পড়লাম তখনি আদ্রিতার কান্ড গুলো দেখে অবাক হয়ে গেলাম।
আদ্রিতা আমার বুকে উপর এসে শুয়ে পড়লো আর শক্ত ভাবে জরিয়ে ধরলো।
সাইফঃ বা বা তুমি তো খুব রোমান্টিক মুডে আছো দেখছি।
আদ্রিতাঃ হুম ল
সাইফঃ হয়ছে এবার ঘুমিয়ে পড়ো।
( বাকি রাতে কী হলো সেটা জানতে হবে না)
পরে দিন।
সকাল বেলা কেউ কলিং বেলটা বাজিয়ে বাজিয়ে যাচ্ছে ধুর এত সকালে কে এলো আর এভাবে পাগলের মতো কলিং বেলটা বাজিয়ে যাচ্ছে কেনো।
সাইফঃ আদ্রিতাকে ছাড়িয়ে উঠে পড়লাম মেয়েটা এখনো ঘুমোচ্ছে।
সাইফঃ নিচে এসে দরজাটা খুলতে কিছু টা অবাক হয়ে গেলাম এত সকালে পুলিশ এখানে কী করছে।
পুলিশঃ মিস আদ্রিতা সাথে আমরা দেখা করতে চাই।
সাইফঃ পুলিশ গুলোর কথা শুনে মাথায় হাজারটা প্রশ্ন ঘুর পাক খাচ্ছে আদ্রিতা আর সঙ্গে আছে এটা কীভাবে জানলো আর আদ্রিতার সঙ্গে দেখা করতে চায় বা কেনো।
সাইফঃ কী দরকার ওর যা বলার আমাকে বলুন।
পুলিশঃ মিস আদ্রিতাকে আমাকে সাথে পুলিশ স্টেশনে যেতে হবে তার উপর কেস টার্চ করা হয়েছে।
সাইফঃ কেস মানে কী করছে ও।
পুলিশঃ মিস আদ্রিতা যে বাসায় আগে থাকতো সেই বাসার মালিক তার উপর কেস করেছে।
সাইফঃ ওও আপনারা যা আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি।
পুলিশঃ ওকে তাড়াতাড়ি আসবেন।
সাইফঃ তার পর তারা চলে গেলো কিন্তু আদ্রিতা তো কিছুই করে নি তাহলে তিনি কেনো এমন করলো সেটা সেখানে গেলেই বুঝা যাবে।
সাইফঃ আদ্রিতা এই আদ্রিতা উঠো।
আদ্রিতাঃ উম্ম এত সকাল সকাল ডাকছেন কেনো।
সাইফঃ আরে উঠো তো আগে একটা জরুরি কাজে যেতে।
আদ্রিতাঃ তার পর আর কী উঠে ফ্রেশ হয়ে লিমাম তার পরে রেডি হয়ে নিলাম।
আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি।
সাইফঃ থানায়।
আদ্রিতাঃ কথাটা শুনে কেমন যানি ভয় ভয় করতে শুরু করলো।
সাইফঃ কিছু খন পরে থানায় পৌছে গেলাম সেখানে যেতেই একটা ভয়ানক কান্ড ঘটে গেলো যেটা আমি কল্পনাও করতে পারি নি।
পর্ব ১২
আদ্রিতাঃ ছাড়ুন সারা রাত আমাকে একটুও ঘুমাতে দেন নি এখন নিজেই আরাম করে ঘুমাচ্ছেন।
সাইফঃ কেনো এত তাড়া কিসের আরেকটু আদর করি না।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আপনার এত আদর কোথা থেকে ভেসে আসতেছে।
সাইফঃ কেনো নিজের বউকে না আদর করলেন কাকে করবো।
আদ্রিতাঃ আমি জানি না।
সাইফঃ ওকে তাহলে আমার কিন্তু আরেকটা গালফ্রেন্ড আছে ও কাছে গেলে আমায় খুব আদর করে
আদ্রিতাঃ কী কবে থেকে চলছে এই সব
সাইফঃ পরশু থেকে
আদ্রিতাঃ ভালো তো তাহলে ওর কাছেই যান আমার কাছে আসবেন না
সাইফঃ আচ্ছা আমি তখন উঠে এমনি বাইরে যাচ্ছিলাম ( আমি জানি ও আটকাতে আসবেই)
আদ্রিতাঃ ওনি তো সত্যি সত্যি চলে যাচ্ছে তার মানে কী সত্যি কোনো মেয়ে সাথে সম্পর্ক আছে না এটা হতে পারে না।
যে করেই হোক ওনাকে আটকাতে হবে। আমি কাউকে এনার একটুও ভাগ দিতে পারবো না।
আদ্রিতাঃ এই যে শুনছেন।
সাইফঃ শুনেও না শুনার ভান করে।
আদ্রিতাঃ ধুর কেনো যে এই কথা বলতে গেলাম। না এবারে যেতেই হচ্ছে দেখছি তার পর তাড়াতাড়ি নিচে গিয়ে
এই যে দাড়ান বলছি।
সাইফঃ কী হয়েছে
আদ্রিতাঃকই যাচ্ছেন হুম আমাকে রেখে।
সাইফঃ কেনো এইতো কিছু খন আগে বললাম আমার গালফ্রেন্ডের বাসায়।
আদ্রিতাঃ কেনো আপনার ওই গালফ্রেন্ড কী আমার থেকে বেশি যত্ন নেয় আপনি এখন কোথাও যেতে পারবেন না ঘরে চলুন।
সাইফঃ যেতে পারি এক সত্য।
আদ্রিতাঃ কী।
সাইফঃ আগে দুটো ইয়ে দিতে হবে
আদ্রিতাঃ ইয়ে টা আবার কী।
সাইফঃ সাইফ এটা উম্মাহহ।
আদ্রিতাঃ এটা কী হলো
সাইফঃ এটাকে তো ইয়ে বলে
আদ্রিতাঃ আপনি কী চুমুটার নতুন নাম ইয়ে রাখছেন আপনি পারেন ও বটে।
সাইফঃ হুম এবার দাও না হলে গালফ্রেন্ডের বাসায় চলে যাবে ( বউকে কন্ট্রোল এ রাখার নতুন উপায়)
আদ্রিতাঃ চোখ বন্ধ করুন তার আগে।
সাইফঃ কেনো।
আদ্রিতাঃ এমনি লজ্জা লাগে তো আমি তো আপনার মতো রোমান্টিক না।
সাইফঃ ওত পাম দিতে হবে এই যে চোখ বন্ধ করলাম।
আদ্রিতাঃ উম্মাহ হ ( এনার সাথে কথায় পারা যাবে না তাই দিতেই হলো)
সাইফঃ হুম আজ থেকে সকালে তিনটা। দুপুরে দুটা আর রাতে তো ওটা স্পেশাল।
আদ্রিতাঃ স্পেশাল মানে।
সাইফঃ আরে ছোট বাচ্চা কিছু বুঝে না আজ রাত হলেই বুঝতে পারবে
আদ্রিতাঃ এনার মাথায় সব সময় শয়তানি বুদ্ধি গুলো ঘুর পাক খায়।
সাইফঃ তুমি যদি চলো ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা এবার তো রুমে যাবেন নাকি।
সাইফঃ হুম।
তার পর রুমে এসে হালকা নাস্তা করে অফিসের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ ধুর একটুও ভালো লাগতেছে না ওনি যখনি বাসা থেকে বেড়িয়ে যান তখন কেমন যানি একলা একলা লাগে কিছু ভালো লাগে না।
কিছু খেতেও মন চায় না আগে এক মুঠো খাবারের জন্য কত কষ্ট করতে হতো তবুও তিন বেলা ঠিক মতো খেতে পেতাম না কিন্তু এনার সঙ্গে আসার পর খাবার খাওয়ার ইচ্ছেই করে না ওনি পাশে থাকলেই মনে হয় পৃথিবীতে সব থেকে সুখে আমিই আছি।
সাইফঃ অফিসে এসে হালকা কিছু কাজ ছিলো সে গুলো শেষ করে বাসার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম কেনো না মেয়েটা একা বাসায় আছে।
আদ্রিতাঃ বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগতেছিলো না তাই ফ্রিজ থেকে মুরগীর মাংস বেড় করে তাড়াতাড়ি রান্না করে ফেললাম ওনার আবার মুরগীর মাংস খুব পছন্দ।
সাইফঃ বাসায় এসে।
আদ্রিতা চলো হোটেলে দুপুর হয়ে গেছে।
আর আমার প্রচন্ড খিদে পেয়েছে।
আদ্রিতাঃ কেনো বাসায় খাবার নেই বুঝি।
সাইফঃ কই আমি তো দেখতে পাচ্ছি না
আদ্রিতাঃ আপনি দেখতে পাবেন না হাত মুখ ধুয়ে। টেবিলে খেতে বসুন আমি খাবার নিয়ে আসছি।
সাইফঃ কী আর করার হাত মুখ ধুয়ে টেবিলে বসে পড়লাম তখনি।
আদ্রিতাঃ ওনাকে ভাত আর মুরগির মাংস টা বেরে দিলাম।
সাইফঃ একটু মুখে দিতেই ওয়াও খুব সুন্দর হয়েছে কোথা থেকে এনেছো।
আদ্রিতাঃ আনতে যাবো কেনো আমি বুঝি রান্না করতে শিখিনি
সাইফঃ ওয়াও আমার তো বিশ্বাস এ হচ্ছে না তুমি এত সুন্দর রান্না জানো।
আদ্রিতাঃ জানতে তো হবেই।
সাইফঃ হুম তুমি খেয়েছো।
আদ্রিতাঃ না।
সাইফঃ কেনো খাও নি হুম।
আদ্রিতাঃ আপনাকে রেখে কী আমি কখনো খাইছি।
সাইফঃ সত্যি তো আজ পযন্ত আমি না খাওয়া পযন্ত মেয়েটা কখনো একা খায় নি।
দাঁড়িয়ে আছো কেনো বসে পরো।
আদ্রিতাঃ কোথায় বসবো হুম।
সাইফঃ বসার কী জায়গার অভাব রয়েছে নাকি তার পর আদ্রিতাকে কোলে বসিয়ে খাবার খাইয়ে দিলাম।
মেয়েটার স্বভাব টা এখনো ছোট বাচ্চাদের মতোই রয়ে গেলো একটু কিছু হলে ছোট বাচ্চার মতো ভ্যা করে কেদে দেয় আর মেয়েটা কাদলে ওর থেকে বেশি আমারি কষ্ট লাগে।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা একটা কথা বলার ছিলো।
সাইফঃ কী কথা হুম আজ থেকে বলতেছো।
আদ্রিতাঃ থাক আর বলবো না ( বলতে গেলেই ভয় লাগে)
সাইফঃ থাক এ নিয়ে কত বার বলবে বলবে বলে বলছো তার পর আর বলোই নি।
আদ্রিতাঃ সময় হোক তার পর এ সব বলবো।
সাইফঃ সময়টা কবে হবে শুনি।
আদ্রিতাঃ পরের জন্মে
সাইফঃ আচ্ছা।
অপর দিকে।
রুমাঃ আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে শান্তিতে সাংসার করা হচ্ছে তাই না।
আমি বেচে থাকতে তা কখনো হতেই দিবো না তোদের সুখের সংসারে যদি ভেঙ্গে না দিয়েছি তাহলে আমি রুমা না
রুমাঃ যে করেই হোক ওই মেয়েটার একটা খারাপ ভিডিও করে সাইফ কে দেখাতে হবে বাশ খেলা শুরু যেমন কথা তেমনি কাজ।
একদিন সাইফের বাসায় এসিটা নষ্ট হয়ে যায় সে দিন এসি মেকানিকের দ্বারা গোপনে একটা ক্যামেরা ফিট করিয়ে নিয়।
আদ্রিতাঃ ওনি সকাল বেলা যে বেড়িয়েছেন এখনো আসেনি।
তখনি কলিং বেলটা বেজে উঠলো।
আদ্রিতাঃ দরজাটা খুলে দিতেই একজন অচেনা মানুষ।
লোকটাঃ মিঃ সাইফ স্যার ভিতরে আছেন।
আদ্রিতাঃ না তো কেনো।
লোকটাঃ একটু দরকার ছিলো।
আচ্ছা আপনি ওনার কী হোন।
আদ্রিতাঃ আমি ওনার বউ যা বলার আমাকেই বলতে পারেন আমি ওনাকে বলে দিবে।
লোকটাঃ তেমন কোনো একটা কাজ নেই এই কাগজে একটা সাইন লাগতো।
আদ্রিতাঃ কীসের কাগজ এটা।
লোকটাঃ তেমন কিছু না যাস্ট একটা সাইন করে দিন।
আদ্রিতাঃ কিছু না ভেবেই সাইনটা করে দিলাম কিন্তু এই সাইনটাই যে আমার জীবনে সব থেকে বড় বিপদটা টা ডেকে আনবে তা জানতাম না।
সাইফঃ অফিসে বসে কাজ করছিলাম তখনি একজন মানুষ আসলো।
মানুষটাঃ স্যার আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
সাইফঃ জ্বী বলুন।
লোকটাঃ স্যার আদ্রিতা ম্যাডাম আপনার সমস্ত প্রোপার্টি নিজের নামে করে নিতে চাচ্ছেন তাই আমাকে এই সমস্ত প্রোপার্টির কাজ বানিয়ে দিতে বলেছেন এই হলো কাগজটা এই ম্যাডামের সাইন।
সাইফঃ প্রথমে তো কথাটা শুনে মেজাজট খারাপ হয়ে গেছিলো যখন কাগজটা দেখলাম তখন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
যে মেয়েটাকে এতটা ভালো বাসতাম তার জন্য সব কিছু করেছি সে এমন কিছু করবে কল্পনাও করে নি।
অন্য দিকে।
রুমাঃ ওই সময়ে যে মেয়েটা কাগজটাতে সাইন করেছিলো সেটা ভিডিও করে নিয়েছি কাজে লাগবে।
আমার সাথে আজ পযন্ত কেউ পেরে উঠতে পারে নি আর পারবেও না।
হা হা হা its only me tamanna.
আদ্রিতাঃ ওনাকে এত ফোন করতেছি ধরছে না কেনো ওনি তো কখনো এমন করে না।
সাইফঃ আদ্রিতাও এতটা নিচে নামতে পারলো আমাকে বললে আমি খুশি খুশি ওর নামে সব কিছু লেখে দিতাম আর সে কী না ছিঃ ভাবতেও ঘৃণা লাগতেছে।
পর্ব ১৩
সাইফঃ পৃথিবীতে সবাই স্বার্থপর সবাই নিজের স্বার্থ নিয়েই ভাবে at last আদ্রিতাও এমন করতে পারবে সেটা কল্পনাও কোন দিন ভাবি নি।
আদ্রিতাঃ সেই সকাল বেলা বেড়িয়েছে দিন গরিয়ে রাত হয়ে গেলো এখনো ফিরছেন না কেনো ওনি কিছু হয়ে যাই নি তো ওনার ( এবারে খুব টেনশন হতে শুরু করলো)
সাইফঃ সারাটা দিন কীভাবে যে কেটে গেলো বুঝতেই পারি নি বাড়িতে ফিরতে মন চাইছিলোই না তবুও যেতে হলো।
বাসায় গিয়ে।
আদ্রিতাঃ এই আপনি সারাটা দিন কোথায় ছিলেন হুম এত ফোন করলাম আপনি ফোনটা রিসিভ করছিলেন না কেনো ( জরিয়ে ধরে )
সাইফঃ ধুর এই সব ন্যাকামি আর ভালোই লাগে না যত সব ( ব্যস্ত ছিলাম তাই এবারে ছাড়ো আমার প্রচুর ঘুম পেয়েছে) বলেই বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ ওনি এমন করছেন কেনো সারা দিন মনে কিছুই খায় নি এখনো খান নি তাই আমিও আর খেলাম ওনার পিছে পিছে রুমে গিয়ে ওনার পাশে শুয়ে পড়লাম তার পর আস্তে করে জরিয়ে ধরলাম।
সাইফঃ ধুর বাবা ছাড়া তো ভালো লাগছে।
আদ্রিতাঃ আপনি এমন করতেছেন কেনো।
সাইফঃ কী করলাম হুম তুমি যা করেছো তা তো ভাবাই যায় না যত সব বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আমি কী এমন করলাম যে ওনি রাগ করে চলে গেলেন।
সে রাতে তিনি আর ঘরে আসেন নি আর আমারো সাহস হয় নি ওনার কাছে যাওয়ার এভাবে প্রায় একটা দিন কেটে গেলো হঠাৎ আমার ফোনে একটা অচেনা৷ নাম্বার থেকে কল আসলো।
আদ্রিতাঃ হ্যালো কে বলছেন।
লোকটাঃ আমি কে সেটা না জানলেও হবে নিজের স্বামীকে বাচাতে চাইলে এখনি পাচ লাখ টাকা নিয়ে নদীর পাশের জঙ্গল টায় চলে আসুন
আদ্রিতাঃ লোকটা কথাটা বলেই ফোনটা কেটে দিলো আমার ওনার জন্য খুব চিন্তা হতে লাগলো ওনাকে বাচানোর জন্য আলমারিতে ৭ লাখ টাকা ছিলো সেখান থেকে পাচ লাখ টাকা নিয়ে নদীর ধারের জঙ্গল টার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম।
অন্য দিকে।
লোকটাঃ হ্যালো স্যার।
সাইফঃ জ্বী কে।
লোকটাঃ স্যার আমি সেই যাকে আপনার স্থী প্রোপার্টির কাগজ বানাতে দিচ্ছে স্যার আপনার বউকে কী আপনি পাচ লাখ টাকা দিচ্ছেন।
সাইফঃ না তো কেনো।
লোকটাঃ এই কাজের জন্য পাচ লাখ টাকা লাগবে আর আজকেই টাকা জমা দেওয়া লাস্ট দিন এই কিছু খন আগে আপনার বউ কল দিচ্ছিলো ওনি টাকা নিয়ে আসতেছেন।
স্যার আপনার ভালোর জন্য বলতেছি ওত গুলো টাকা দিবেন না।
সাইফঃ লোকটা কথা বলেই ফোনটা কেটে গেলো।
সাইফঃ কথাটা যদি সত্যি হয় তাহলে আমাকে এখনি বাড়িতে যেতে হবে।
তাড়াতাড়ি বাড়িতে এসে যা দেখলাম তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে কাল রাতে আলমারিতে সাত লাখ টাকা রেখেছিলাম এমন দু লাখ আছে পাচ লাখ কোথায় আদ্রিতাও বাসায় নেই তার মানে এসব সব সত্যি।
না এভাবে চলতে পারে না এটার আজকেই কিছু একটা করতে হবে বলেই বেড়িয়ে পড়লাম।
অপর দিকে।
রুমাঃ এবার জমবে আসল খেলা সাপ মরলো লাঠিও ভাঙ্গলো না যখন সাইফ নিজের চোখে নিজের প্রাণ প্রিয় বউকে অন্যর হাতে টাকা তুলে দিতে দেখবে তখন সব কিছু বিশ্বাস করে ফেলবে আর ওকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে হা হা হা।
সুখে সংসার ভেঙ্গে ছাড় খাড় হয়ে যাবে বাহ রুমা বাহ তোর বুদ্ধির জনাব নেই।
আদ্রিতাঃ ওনাকে কী লোক গুলো কিন্ডন্যাপ করে নিয়েছেন টাকার জন্য না আর ভাবতেই পারছি না ওনার সাথে কার এত শএুতা।
সাইফঃ রাস্তায় আদ্রিতাকে একটা অটোরিকশায় যেতে দেখে তার পিছু নিলাম,।
সাইফঃ আদ্রিতা নদীর ধারে কীসের জন্য আসলো।
আদ্রিতাঃ এখানে তো চলে আসলাম কিন্তু কাউকে দেখতে পাচ্ছি না কেনো।
তখনি সামনে একজন লোক মুখটা রুমাল মুখে দিয়ে আমার সামনে এসে টাকা গুলো নিয়ে চলে গেলো।
সাইফঃ এই লোকটা কে দেখা দেখা মনে হচ্ছে তার মানে সত্যি আদ্রিতার আমার প্রোপার্টির জন্য এতটা নিচে নামতে পারলো।
সেখান থেকে চলে আসতেছিলাম তখনি একটা আওয়াজ ভেসে আসলো যা আমাকে পুরোই অবাক করে দিয়েছিলো।
আদ্রিতাঃ আমার স্বামী কোথায় আমি তো আপনাদের টাকাটা দিয়ে দিলাম ওনাকে ছেড়ে দিন।
লোকটাঃ তোর স্বামী বাসায় পৌঁছে গেছে এত খনে আর এই কথা যদি নিজের স্বামীকে বলেছিস তার তোর স্বামীকে আমি নিজের হাতে মেরে ফেলবো।
সাইফঃ কী শুনলাম আমি এটা তার মানে আদ্রিতা আমার প্রোপার্টির জন্য আমার জীবন বাচাতে টাকা গুলো দিয়েছে না এই লোকটা কে সেটা জানতেই হবে আদ্রিতা সেখান থেকে যাওয়ার পর।
লোকটাঃ ম্যাডাম কাজ শেষ কিন্তু সাইফ কে তো কোথায় দেখলাম না
রুমাঃ কী আসে নি ও ধুর সব প্লেনটা নষ্ট হয়ে গেলো তুই টাকা গুলো নিয়ে আমার কাছে আয়।
সাইফঃ দ্বারা তোকে দেখাচ্ছি মজা।
পিছন থেকে গিয়ে ধাক্কা মেরে মানুষটাক ফেলে দিলাম মুখের রুমলটা সরিয়ে নিতেই আরেক বার অবাক হয়ে গেলাম এই তো সেই লোকটাই।
সাইফঃ কে তুই বল বলতেই দিলাম একটা মুখে ঘুষি।
বলবি নাকি আরো মার খাবি তার পর ইচ্ছে মতো রাম ধলাই দিয়ে।
লোকটাঃ বলছি সব বলছি।
এগুলো সব রুমা ম্যাডামের কাজ ওনিই আমাকে এসব করতে বলছে।
সাইফঃ কেনো এতে তার কী লাভ।
লোকটাঃ আপনার সুখের সংসারটা ভেঙ্গে যায় যাতে তার জন্য বিশ্বাস করুন। এতে আমার কোনো হাত নেই আমি টাকার জন্য এসব করেছি।
সাইফঃ তোকে তো আমি আবারো বেধুম মার দিয়ে আধ মর করে ছেড়ে দিলাম।
সাইফঃ ছিঃ আমি আদ্রিতাকে কীভাবে ভুল বুঝতে পারলাম আর মনটা আগে থেকে বলছিলো আদ্রিতা এমন করতে পারেই না।
অনেক হয়েছে রুমা এবার তুই বুঝবি কত ধানের কত চাল।
অনেক ক্ষমা করেছি আর না এবার তোকে শাস্তি পেতেই হবে।
পর্ব ১৪
সাইফঃ অনেক হয়েছে আর না এবার রুমাকে কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
এর জন্য আমাকে যা করার লাগে আমি সব করবো কিন্তু রুমাকে তার পাপের শাস্তি পেতেই হবে।
আদ্রিতাঃ তাড়াতাড়ি করে আমি বাসায় চলে আসলাম হয়তো ওনি বাসায় ফিরে এসেছেন কিন্তু না কোথাও ওনাকে দেখতে পেলাম না পুরো বাড়িটা খুজে দেখলাম কোথাও ওনাকে দেখতে পেলাম না।
অপর দিকে।
রুমাঃ এটা কী করে সম্ভব ধুর এত সুন্দর প্লেন টা ভেসতে গেলো এবার আলাদা কিছু দিয়ে ট্রাই করতে হবে।
সাইফঃ একটা বুদ্ধি মাথায় এসেছে এটা কাজে লাগাতে পারলেই খেলা পুরো জমে ঘি হয়ে যাবে।
সেই সকাল থেকে না খেয়ে আছি আর এখন তো দেখছি প্রচুর খিদেও পেয়েছে।
না এবারে গিয়ে কিছু একটা খেতে হবে না হলে না খেয়েই মারা যাবো নদীর ধারে একটা ছোট্ট দোকান ছিলো সেখানে গিয়ে হালকা কিছু খাওয়া করতে শুরু করলাম তখনি।
একটা ছোট্ট ছেলে।
ছেলেটাঃ স্যার দু টাকা দেন না সকাল থেকে না খেয়ে আছি।
পাশে থাকা মানুষ গুলো
যা ভাগ এখান থেকে জানি না কোথা থেকে উড়ে আসে।
সাইফঃ দাড়াও।
ছেলেটাঃ।
সাইফঃ ছেলেটাকে এভাবে বলতে লজ্জা লাগলো না আপনারা মানুষ নাকি জানোয়ার।
মানুষ গুলোঃ কেন এদের মতো ছোট্ট লোকেদের সাথে কথা বলতে ঘৃণা লাগে ছিঃ গা থেকে গন্ধ বেড় হচ্ছে।
সাইফঃ ঠিক বলেছেন এরা হতে পারে ছোটো লোক নিম্ন বৃও শ্রেণির মানুষ তবে আপনাদের থেকে অনেক ভালো?।
সাইফঃ আচ্ছা তোমার বাসায় কে কে আছে।
ছেলেটাঃ মা আর আমি। মা চোখে দেখতে পান না আর আমাকেও কেউ কাজে নেয় না তাই এই পথ বিছে নিতে হয়েছে।
সাইফঃ ছেলেটার কথা শুনে খুব কষ্ট লাগলো তখনি আদ্রিতার কথা মনে পড়ে গেলো।
আমার পকেটে তখন মনে হয় দু হাজার এর মতো টাকা ছিলো সে সমস্ত টাকা গুলো ছেলেটাকে দিয়ে।
সাইফঃ আজ আর কারো কাছে সাহায্যে না চেয়ে সোজা বাসায় গিয়ে মার জন্য খাবার নিয়ে যাও আর হ্যা আমি তোমাকে একটা কাজ দিতে পারি। তার পর আমার বাসার এড্রেস টা দিলাম।
ছেলেটাঃ স্যার আমি আপনার কথা কোন দিনও ভুলবো না এই গরিবের জন্য আপনি এতটা করবেন ভাবতেও পারি নি আজ পযন্ত জানতাম ভগ্যবান একটাই না আমি ভুল ছিলাম উপরে একজন আর নিচে আপনি আমার ভগ্যবান।
সাইফঃ ছিঃ ছিঃ কী বলছো এসব আমি ওসব কেনো হতে যাবো।( ছেলেটা মনে হয় হিন্দু ধর্মের )
সেখান কার মানুষ গুলো কিছু বললো না শুধু দেখেই থাকলো।
সাইফঃ তার পর আমি সেখান থেকে চলে আসলাম।
রাস্তায় হঠাৎ বৃষ্টি পড়তে লাগলো।
প্রচন্ড জোরে বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো আজ কাল মেঘের অবস্থা খুবই খারাপ যাচ্ছে না এবার বাসায় যেতেই হবে।
বৃষ্টিতে ভিজতে মন চাইছিলো কিন্তু না বৃষ্টিতে আর ভিজলাম না বাসায় ডুকতেই
আদ্রিতাঃ আমি ওনার জন্য সেই কখন থেকে দরজায় দাড়িয়ে আছি যে ওনি কখন আসবেন।
হঠাৎ ওনার গাড়ির শব্দ পেয়ে দৌড়ে বেড় হলাম ওনি এসেছেন দৌড়ে গিয়ে ওনাকে জরিয়ে ধরলাম।
আপনার কিছু হয়নি তো ওরা আপনার কোন ক্ষতি করে নি তো বলতে বলতে কেদে ফেললো মেয়েটা।
সাইফঃ আমি হয়তো এই কয়েক দিনে অনেকটা কষ্ট দিয়ে ফেলেছি মেয়েটাকে।
সাইফঃ না না ওরা আমরা কিছুই করে নি তুমি ঠিক আছো তো।
আদ্রিতাঃ হুম
সাইফঃ এবারে ভিতরে চলো বাইরে তো প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে।
আদ্রিতাঃ হোক তাতে কী আপনার কিছু হয়নি এর থেকে বড় কিছুই নেই।
সাইফঃ মেয়েটা আমাকে এতটাই ভালোবাসে যে সেটা নিজের চোখে না দেখলে হয়তো বিশ্বাসি হতো না।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলা হয় নি।
সাইফঃ কী কথা হুম।
আদ্রিতাঃ কয়েক দিন আগে একটা মানুষ আপনাকে খুজতে আসছিলো আপনি তখন বাসায় ছিলেন না ওই মানুষটা আপনাকে না পেয়ে আমার কাছে একটা কাগজে সাইন করিয়ে নিয়ে গেছে
সাইফঃ আমার বুঝতে বাকি রইলো না যে আর কেউ নয় ওই লোকটাই।
এই কথাটা আগে বললে কী হতো তোমাকে এতটা কষ্ট পেতে হতো না,।
আদ্রিতাঃ কিছু বলছেন না কেনো আপনাকে আজ কাল দেখছি অনেকটাই পরিবর্তন পরিবর্তন হয়ে গেছেন আগের মতো কথা বলেন না আমার সাথে নিজের মনে মনেই কী যেনো বিড় বিড় করতে থাকেন।
সাইফঃ তেমন কিছু না কয়েক দিন ধরে মনটা ভালো নেই তাই আর কী ( মিথ্যা কথা বলাম)
আদ্রিতাঃ কেনো আমার কোন কথায় কষ্ট পেয়েছেন।
সাইফঃ আরে না তুমি তো আমার লক্ষি বউ তোমার কথায় কষ্ট পেতে পারি ( কিন্তু তোমাকে যারা কষ্ট দিতে চেয়েছিলো তাদের ছাড়বো না। মনে মনে)
আদ্রিতাঃ ভিতরে চলুন।
সাইফঃ হুম ভিতরে গিয়ে।
হ্যালো রাজিব।
রাজিবঃ হুম বল এত দিন পর কী মনে করে।
সাইফঃ একটা কাজ করে দিতে হবে তার পর রুমার ফটো পাঠিয়ে দিয়ে।
রাজিবঃ কাজ হয়ে যাবে তবে টাকাটা একটু বেশি লাগবে।
সাইফঃ তা নিয়ে চিন্তা করিস না রাতের মধ্যে যেনো কাজটা হয়ে যায়।
রাজিবঃ টেনশন বটেও করিস না এটা। আমার বা হাতের কাজ।
সাইফঃ আচ্ছা এখন রাখি।
আদ্রিতাঃ আপনি কার সাথে কথা বলতেছিলেন।
সাইফঃ এইতো অফিসের এক স্টাফের সঙ্গে।
আদ্রিতাঃ রাত হয়েছে তো ঘুমাবেন না।
সাইফঃ হুম বলেই শুয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ আমিও ওনার পাশে শুয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ অনেক দিন হলো ওনাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাই নি তাই আজ শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম ওনাকে।
তার পর ওনার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরে দিন
সাইফঃ এত খনে হয়তো কাজ হয়ে গেছে তাই দেরি না করে জঙ্গলের মধ্যে একটা ভাঙ্গা বাড়ি আছে সেখানে চলে গেলাম কেনো না ওরা রুমাকে সেখানেই নিয়ে আসবে।
সেখানে যেতেই দেখলাম তারা ওদের কাজ করে ফেলেছে।
রুমাকে একটা চেয়ারে বেধে রেখেছে।
আমি গিয়ে।
রুমাঃ ছাড়ো আমায় আমি কিন্তু ছাড়বো না তোমাদের।
সাইফঃ ছাড়াছাড়ি পরে হবে আগে এখান থেকে বেড় হও তো সোনা।
সঙ্গে একটা নাপিত নিয়ে এসেছি।
সাইফঃ এই মেয়েটার মাথা নেড়া করে ফেলুন।
নাপিত আমার কথা মতো রুমার মাথা নেড়া করে ফেললো আমি সেটা ভিডিও করে নিলাম
বেচারা কিছুই করতে পারলো ওয়াও জোস দেখাচ্ছে।
রুমাঃ এটা কী করলেন আপনি এত বড় সর্বনাশ করলেন আমার।
সাইফঃ সর্বনাশ কই করলাম আপনার কপাল ভালো যে শুধু মাথাই নেড়া করেছি এর পর যা করবো তা ভাবতেও পারবে না বলেই।
পর্ব ১৫
সাইফঃ তোমার সাথে এখন যা করবো তা কল্পনাও করতে পারবি না কারণ এবারের শাস্তি টা অনেক ভয়ানক হতে চলেছে।
রুমাঃ কথাটা শুনেই বুকটা ধড়ফড় করতে লাগলো কী করতে চলেছে সাইফ আমার সাথে।
ভাবতেই ভয় লাগছে এত বড় সর্বনাশ করার পরো আমার উপর আরো প্রতিশোধ নিবে।
সাইফঃ রুমার ফোনটা নিয়ে তার ফেসবুক আইডিতে তার নেড়া মাথার ছবি আপলোড করলাম সাথে স্ট্যাটাশ দিলাম চুল গুলো বড়ো বার গেছিলো আমার কথা শুনেই না তাই আজ নাপিতের কাছে নেড়া করে নিলাম কেমন লাগছে আমায় বন্ধুরা।
বা বা পোস্টটা আপলোড করার সাথে সাথে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার শুরু হয়ে গেছে বিদ্যুৎ এর গতিতে।
রুমাঃ এই মুখটা আমি আর কাউকে দেখাতে পারবো সবাই আমাকে দেখলে হাসবে।
সাইফঃ রুমার পোস্টে তার এক ফ্রেন্ড কমেন্ট করছে বাহ দোস্ত তোকে তো সানি লিওনের মতো দেখাচ্ছে।
আমিও শয়তানি করে রিপলাই দিলাম।
কী করবো বল যুগটাই যে এমন।
রুমাঃ আপনারা কাজটা ভালো করলেন না আমি আপনাদের ছাড়বো না
সাইফঃ তোমার মতো কত এলে গেলো তাও কিছু করতে পারে নি আর এই মেয়ে নাকি আমাদের ছাড়বে না হা হা
সাইফঃ তার পর রুমাকে ছেড়ে দিলাম।
বেচারা নিজের মান সম্মান বাচাতে তাড়াতাড়ি ফেসবুক থেকে ছবি গুলো ডিলেট করে ফেললো। কিন্তু আফসোস তার ছবি গুলো ততক্ষণে ১ হাজার শেয়ার হয়ে গেছিলো তার সব বন্ধুদের কাছে এই পিক গুলো রয়েছে।
রুমাঃ এর প্রতিশোধ আমি নিবোই তাতে যে বাধা দিতে আসবে তাকেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে।
সাইফঃ রাজিবকে ১ লাখ টাকা দিয়ে দিলাম।
রাজিবঃ দরকার লাগলে ফোনটা করবি শুধু বাকি কাজটা আমি করে দেবো।
সাইফঃ ওকে এখন তাহলে আসি।
তার পর বাসায় ফিরে আসলাম।
আদ্রিতাঃ আপনি এত সকাল সকাল কোথায় গেছিলেন হুম ঘুম থেকে উঠে দেখি আপনি বিছানায় নেই।
সাইফঃ কীভাবে বলবো বলো আজ সকাল বেলা যা একটা মুভি দেখলাম না তা বার বার দেখতে মন চাচ্ছে।
আদ্রিতাঃ আপনার জন্য এত সকাল বেলা কে থিয়েটার খুলে রাখছে হুম।
সাইফঃ জানতাম বিশ্বাস করবে না তাই ভিডিওটা নিয়ে এসেছে এই দেখো।
আদ্রিতাঃ আল্লাহ এটা তো রুমা আপু।
রুমা আপু কেনো মাথাটা এভাবে নেড়া করলো।
সাইফঃ রুমা আপু মানে তুমি এই শয়তান মেয়েটাকে চিনো।
আদ্রিতাঃ হুম আম্মুকে ডাকতে প্রায় আমাদের বাসায় আসতো। কিন্তু রুমা আপু একদমি ভালো না খুব অহংকারী ছিলো।
সাইফঃ আজ সব অহংকার মাটিতে মিশে গেলো
আদ্রিতাঃ এই কাগজটা যায় করছে তাকে তো একটা নোবেল দেওয়া দরকার তাই না।
সাইফঃ হুম তবে নোবেল না দিলেও মন থেকে দোয়া দাও যাতে পরবর্তীতে আরো এর থেকে ভয়ানক শাস্তি দেয়।
আদ্রিতাঃ হুম।
সাইফঃ এখন আমাকে আবার অফিসে যেতে হবে তাড়াতাড়ি নাস্তা রেডি করো।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা।
সাইফঃ এর পর ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে অফিসের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম।
হঠাৎ রাস্তায় মা কে দেখতে পেলাম।
মা শরীরটা আগের থেকে অনেকটাই শুকিয়ে গেছে কিন্তু মা এখানে কী করছে যাই তো গিয়ে দেখি গাড়ি থেকে নিচে নেমে একটু আড়ালে দাড়িয়ে পড়লাম যাতে আমাকে দেখতে না পায়।
মাঃ আপনি কী বলছেন এসব টাকা নেই মানে।
ব্যাংক অফিসারঃ দেখুন ম্যাডাম আপনার একাউন্টে যত টাকা ছিলো সব তো শেষ হয়ে গেছে এখন মাএ ১০০ টাকা রয়েছে।
মাঃ এই একশত টাকাই দিন খুব অভাবে মধ্যে রয়েছে ঔষধ কিনার মতো টাকা নেই।
সাইফঃ ইসস এতটা কষ্টে মা রয়েছে আমাকে একবার বলতে তো পরতো।
সেখান থেকে অফিসে চলে আসলাম।
অফিসে এসে।
সাইফঃ আহাত।
আহাতঃ স্যার আমায় ডেকেছিলেন।
সাইফঃ হুম এই নাও ১ কোটি টাকার চেক এটা আমায় বাসায় গিয়ে আম্মুকে দিবে আরেকটা কথা আমি যে এই টাকা গুলো দিচ্ছি সেটা আম্মুকে বলবে না বলবে আব্বুর একাউন্টে টাকা গুলো পড়েছিলো সে দিতে গেছো।
আহাতঃ ওকে স্যার
তার কর স্যার বাসায় গিয়ে কলিং বেলটা বাজাতে স্যার এর মা দরজাটা খুলে দিতে।
মাঃ কে আপনি।
আহাতঃ জ্বী আমি সোনালী ব্যাংক থেকে আসছি।
মাঃ কেনো।
আহাতঃ আপনার স্বামীর ব্যাংক একাউন্টে এক কোটি টাকা ছিলো কিন্তু ওনি মারা যাওয়ার পর থেকে তো একাউন্ট টা পড়ে রয়েছিলো তাই টাকা গুলো দিতে এসেছি পকেট থেকে এক কোটির টাকার চেকটা ওনার হাতে দিয়ে দিলাম।
আহাতঃ আমি তাহলে আসি এখন বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম।
মাঃ এই টাকা গুলো পেয়ে খুব উপকার হলো না হলে তো না খেয়েই মরে যেতাম তবে আমার মন বলছে এই টাকা গুলো সাইফ দিয়েছে যখনি চেকটা খুললাম তখনি ওর সাক্ষর দেখতে পেলাম।
সাইফঃ আরে একটা ভুল হয়ে গেছে ওই চেকের পাতায় তো আমার সাইন করা আছে।
মাঃ আমার জন্যই এতটা দুরে চলে গেছে আমার ছেলেটা আজ বুঝতে পারছি আপন জনকে হারানোর কষ্ট টা কতটা ভয়ানক আর কত কষ্টের আচ্ছা আমার ছেলেটা কী কখনো আমায় আর মা বলে।
ডাকবে না।
সাইফঃ অফিসে বসে ছিলাম তখনি রহিম চাচা এসে বলেন একটা ছেলে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি আমি ছেলেটাকে আমার রুমে পাঠিয়ে দিতে বললাম কিছু খন পরেই আরে এটা কালকের ছেলেটা।
ছেলেটাঃ স্যার আসবো।
সাইফঃ হুম বসো।
ছেলেটাঃ স্যার এই চেয়ারে বসার আমার যোগ্যতা হয় নি।
সাইফঃ ধুর বেশি কথা না বলে বসো তা তোমার নাম কী।
ছেলেটাঃ মা আমায় আদর করে শান্ত বলে।
সাইফঃ ও তা শান্ত তুমি কোন ক্লাস পযন্ত পড় লেখা করছো।
শান্তঃ স্যার ক্লাস সেভেন তার পর পড়া হয় নি।
সাইফঃ ও তা তুমি গাড়ি ধুতে পারো তো নাকি।
শান্তঃ হুম পারি।
সাইফঃ তাহলে তোমাকে এই কাজে এপারমেন্ট করলাম রোজ বিকালে এসে অফিসের স্টাফদের গাড়ি গুলো ধুয়ে চলে যাবে।
শান্তঃ স্যার সকালে দিলে হয় না।
সাইফঃ না সকাল বেলা রোজ স্কুলে যাবে আজ তোমাকে একটা স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবো স্কুল থেকে এসে খেয়ে কাজে চলে আসবা।
শান্তঃ সত্যি স্যার আমি আবার স্কুলে যাবো।
সাইফঃ হুম এই নাও ১৫ হাজার টাকা তোমার বেতন এটা অগ্ররিক এক মাসের দিয়ে দিলাম।
এবার চলো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়।
এর পর শান্তকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলাম সাথে কিছু কাপড় ও কিনে দিলাম তখন ছেলেটার চোখে মুখে একটা আনন্দের হাসি এসেছিলো তা দেখে খুবই ভালো লাগেছিলো।
এর পর শান্ত কে বিদাই দিয়ে আদ্রিতার জন্য কয়েকটা ড্রেস কিনে নিলাম।
অপর দিকে।
রুমাঃ সাইফ অনেক হয়েছে এবার তোকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে তোকে মরতে হবে।
সাইফঃ শপিং মল থেকে বেড়িয়ে বাসায় আসতেছিলাম তখন হঠাৎ পিছন থেকে একটা বড় ট্রাক এসে আমার গাড়িতে ধাক্কা মারলো।
সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটা ছিটকে রাস্তার পাশের জঙ্গলে পড়ে গেলো আমার এর পর যা হলো তা হয়তো কেউ কল্পনাও করে নি।
পর্ব ১৬
সাইফঃ হঠাৎ পিছন থেকে একটা বড় ট্রাক এসে আমার গাড়িতে খুব জোরে একটা ধাক্কা মারলো।
গাড়িটা সাথে সাথে রাস্তা থেকে ছিটকে অনেকটা দুরে গিয়ে পড়লো আমিও ছিটকে একটা বড় গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেলাম এর পর আর কিছুই মনে নেই।
আদ্রিতাঃ ওনার জন্য আজ পোলাও, মুরগীর মাংস আরো নানা রকমের ভালো ভালো খাবার রান্না করেছি।
ওনাকে আজ সারপ্রাইজ দিবো
তখনি আমার ফোনে ওনার ফোন থেকে কল আসলো
আদ্রিতাঃ হ্যালো।
অপর দিক থেকে। আপনি কে সেটা আমি জানি না তবে।
আদ্রিতাঃ কে আপনি ওনার ফোন আপনার কাছে কেনো।
লোকটাঃ দেখুন আমিও আসলে জানি না এনি কে এই নাম্বারটা কার।
আদ্রিতাঃ আমার স্বামীর।
লোকটাঃ যাক তাহলে ভালোই হলো আপনার স্বামীর বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে বাচবে কী না তার সন্দেহ আছে মাথা থেকে প্রচুর রক্ত বেড়াচ্ছো আমরা ওনাকে নিয়ে সিটি হাসপাতালে যাচ্ছি আপনি সেখানেই আসুন।
আদ্রিতাঃ কথাটা শুনার পর হাত থেকে ফোনটা পড়ে ভেঙ্গে চুরমাচার হয়ে গেলো চোখ দুটো ঝপসা হয়ে আসছিলো ওনি ছাড়া আমার পুরো দুনিয়া অন্ধকার।
এই পৃথিবীতে আমার একমাত্র আপন বলতে ওনিই তার কিছু হয়ে গেলো আমিও এক সেকেন্ড বাচবো না।
ওনাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আমিই সারপ্রাইজ হয়ে গেলাম।
তাড়াতাড়ি হাসপাতালের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়লাম।
মনে হচ্ছে এক একটা সেকেন্ড একেকটা বছরে মতো লাগছে।
তক্ষণে ওনার অফিসেও এই খবরটা পৌঁছে গেছে সবাই ওনাকে দেখতে হাসপাতালে এসেছেন।
আমি হাসপাতালে আসার আগেই ওনাকে আইসিওতে নিয়ে গেছে।
আইসিওর বাইরে সবাই দাড়িয়ে আছে তখনি হঠাৎ নজর পড়লো ওনার আম্মুর উপর সাইডের এক চেয়ারের উপর বসে প্রচুর কাদতেছেন।
প্রায় ঘন্টা দুয়েক পর ডাক্তার বেড়িয়ে আসলো।
ডাক্তার রোগীর জন্য এখনি Ab negative রক্ত লাগবে আপনাদের মাঝে কারো শরীরের রক্ত Ab negative রয়েছে।
সবাই না বললো আমারোও রক্ত Ab negative না তাহলে কী হবে।
ডাক্তারঃ ২৫ মিনিটের মধ্যে রক্ত না পেলে রোগীকে আর বাচানো সম্ভব হবে না কারণ ওনার শরীর থেকে সমস্ত রক্ত বেড়িয়ে গেছে।
আদ্রিতাঃ আপনারা প্লিজ ওনাকে বাচিয়ে নিন প্লিজ আমি ওনাকে ছাড়া বাচবো না
ডাক্তারঃ দেখুন আমাদের হাতে যেটা রয়েছে সেটা তো আমরা করছি কিন্তু রক্ত না হলে ওনাকে বাচানো impossible।
আদ্রিতাঃ কিছু বলতে। যাবো তখনি ভিড় থেকে।
আমার শরীরের রক্ত Ab negative.
যতটা রক্ত লাগে আমার শরীর থেকে বেড় করে নিন যদি আমার শরীরে সমস্ত রক্ত টুকু লাগে স্যারের জীবন বাচাতে তাহলে আমি মরে যেতেও রাজি কারণ আমি মারা গেলে কারো কিছু যায় আসবে না কিন্তু যদি স্যার মারা যায় তাহলে আমাদের মতো হাজারো অনাথ ছায়া হীন হয়ে পড়বে।
আদ্রিতাঃ কে এই ছেলেটা।
ডাক্তারঃ নার্স তাড়াতাড়ি এক ব্যাগ রক্ত বেড় করে নিন।
হাতে বেশি সময় নেই তার পর এক ব্যাগ রক্ত সেই ছেলের শরীর থেকে বেড় করে নার্স আইসিও তে ডুকলো।
কে সেই ছেলেটা যে আমার স্বামীর প্রাণ বাচানোর জন্য নিজে মরতে প্রস্তুত।
তাকে গিয়ে একটা বাড় দেখে আসি।
ছেলেটার পাশে বসে কে তুমি।
ছেলেটাঃ পরিচয় হীন একজন।
আদ্রিতাঃ কেনো তোমার আব্বু আম্মু নেই।
ছেলেটাঃ না তারা আমার জন্মের পর তারা মারা যায়। তখন থেকেই আমি এতিম কিন্তু স্যার এর ছায়া ছিলো বলে আমার মতো হাজারো অনাথ শিশু আজ হাসি মুখে তিন বেলা শান্তিতে খেতে পারছে।
স্যার আমাদের অনাথ আশ্রমে প্রতিমাস ১ লাখ টাকা দেয়।
আমার তার কাছে চিরো জীবন কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবো।
আদ্রিতাঃ পৃথিবীতে মনে হয় ওনার মতো মানুষ খুজে। পাওয়া আসলেই খুব ভাগ্য বেপার।
আজ যদি ওনার কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি কী নিয়ে বেচে থাকবো এই পৃথিবীতে।
সকাল গরিয়ে রাত আর আইসিওতে একজন ব্যক্তিই থাকতে পারবে আমি ডাক্তারকে অনেক বুঝিয়ে আইসিওর ভিতরে গিয়ে ওনার পাশে গিয়ে বসে পড়লাম।
আজ সকাল বেলা হাসি মুখে বাসা থেকে বেড়িয়ে ছিলো বলেছিলো আজ আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে কিন্তু এখন ওনিই শান্তিতে ঘুমিয়ে রয়েছেন।
হাতের মধ্যে অনেক গুলো ব্যন্ডেজ লাগিয়ে দিয়েছে এখনো ওনার মাথা থেকে একটু হলেও রক্ত বেড়াচ্ছো।
উপরে দুটা সালাইন দেওয়া আছে মুখে অক্সিজেনর মাস্ক।
ওনার এমন অবস্থা দেখে নিজেই ভেঙ্গে পড়েছি।
সাইফঃ যখন চোখ খুললাম তখন ঝাপসা ঝাপসা দেখতে শুরু করলাম পুরো মাথাটা ব্যাথায় ছিড়ে যাচ্ছে সারা শরীরটা অসহ্য ব্যাথা করছে মনে হয় এর থেকে মৃত্যুও অনেক ভালো নিজের উপর মনে হচ্ছে ভারি কোনো কিন্তু চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু আমি এখন কোথায় এত কষ্ট হচ্ছে কেনো কী হয়েছে আমার নিজের শরীরটাক এমন মনে হচ্ছে কেনো আমি কীভাবে শক্তি হীন হয়ে গেলাম।
আস্তে আস্তে চোখের ঝাপসা ভাবটা চলে গিয়ে দেখলাম আদ্রিতা আমার বুকের উপর মাথা রেখে প্রচুর কাদছে।
আদ্রিতা তুমি কাদছো কেনো একি আমার মুখ থেকে কথা বেরোচ্ছে না কেনো।
আদ্রিতাঃ মনে হলো ওনি নেড়ে উঠলেন তাহলে কী ওনার জ্ঞান ফিরেছে এমা সত্যি তো ওনার জ্ঞান ফিরেছে আপনার কী খুব কষ্ট হচ্ছে।
সাইফঃ হুম খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তুমি আমার কথা গুলো শুনতে পাবে না হয়তো চিরদিনের মতো কথা বলার শক্তি টুকু হারিয়ে ফেলেছি।
আদ্রিতাঃ কী হলে কথা বলছেন না কেনো আমার উপর কী রাগ করে আছেন ওনি ঠোঁট গুলো নোরাচ্ছেন কিন্তু কথা বলছেন না কেনো আমার সাথে।
সাইফঃ এতটা কষ্ট হচ্ছে যে কাউকে বলে বুঝাতে পারবো না হঠাৎ আইসিওর বাইরে নজর টা চলে গেলো বাইরে একজনকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে প্রচুর কষ্ট লাগছিলো সে আর কেউ নয় আমার নিজের এ মা।
হয়তো সাহস হচ্ছে না ভিতরে আসার তাই বাইরে থেকে দেখতেচ্ছেন আম্মুর চোখে চোখ পড়তেই আম্মু সেখান থেকে সরে গেলেন।
মাঃ আজ ছেলেটার এত বড় এক্সিডেন্টের কারণ আমিই আমি মা হয়ে নিজের ছেলেকে সন্দেহ করেছি কত গুলো উল্টো পাল্টা কথা বলেছি এই মুখ নিয়ে তার সামনে যাওয়ার সাহস টুকু আমার নেই।
আদ্রিতাঃ আপনি ওমন ভাবে বাইরে তাকিয়ে আছেন কেনো আপনি একবার সুস্থ হয়ে বাড়িতে চলুন আপনাকে আমি কোথাও একা একা যেতে দিবো না এই বলে দিলাম কিন্তু
সাইফঃ আমার পাশে একটু শুয়ো না কথাটা হয়তো শুনতে পাই নি হাতের ইশারায় বললাম।
আদ্রিতাঃ কী ওমন ভাবে দেখিয়ে দিচ্ছেন আপনার পাশে শুতে বলতেছেন।
সাইফঃ হয়তো সে বুঝতে পেরেছে তাই মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললাম।
তখনি।
নার্সঃ দেখুন ওনার সাথে একদমি কথা বলার চেষ্টা করবেন না ওনি কথা বললে ব্রেণে চাপ পড়বে এতে ওনার প্রচুর ক্ষতি হতে পারে।
এই আমি ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে গেলাম ওনি আরামে ১২ ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকবেন আপনি চাইলে পাশের বেড টাতে ঘুমাতে পারেন।
আদ্রিতাঃ নার্স চলে যাওয়ার পর কে শুনে কার কথা আমি ওনার পাশে শুয়ে পড়লাম আর ওনাকে হালকা ভাবে জরিয়ে ধরলাম সারাটা রাত ওনাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে ছিলাম।
সকাল বেলা।
ডাক্তারঃ আপনি বাইরে গিয়ে বসুন আমি এনার শরীরটা চেক করবো।
আদ্রিতাঃ আমি থাকলে কী হবে।
ডাক্তারঃ থাকতে পারবেন না বললসম তো এখন যান তো।
আদ্রিতাঃ না চাইতেও বেড়িয়ে পড়লাম।
কিন্তু খন পর।
ডাক্তারঃ রোগীর অবস্থা কিছু টা ভালো তবে একটা সমস্যা হয়ে গেছে।
আদ্রিতাঃ কী বলুন আমাকে।
ডাক্তারঃ ওনার মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগার ফলে ওনি কথা বলতে পারবেন না হয়তো চিরদিনের মতো কথা বলার শক্তি টুকু। হারিয়ে ফেলেছেন ওনি।
আদ্রিতাঃ না এটা হতে পারে না।
আপনি মিথ্যা কথা বলছেন না না এটা হতে পারে না দৌড়ে গিয়ে ওনাকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলাম এটা কী হয়ে গেলো আপনার আপনি নাকি কথা বলতে পারবেন না।
বলুন না এ কথাটা মিথ্যা।
সাইফঃ বলতে যেও কিছু বলতে পারছি না মুখ ফুটে কিছু বেড়াচ্ছোই না।
এভাবে কয়েক দিন যাওয়ার পর রিলিজ দিয়ে দিলো বাসায় গিয়ে সবাই আমাকে দেখতে আসলেও আম্মু আসে নি আম্মুকে দেখতে প্রচুর মন চাইছিলো কিন্তু আম্মু একটি বারো দেখতে আসলো না আমায়
আদ্রিতাঃ আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো আমায় বলুন।
সাইফঃ হাতের ইশারায় ( কিছু না মন খারাপ)
আদ্রিতাঃ ভেঙ্গে পড়বেন না আপনি যদি ভেঙ্গে পড়েন তাহলে আমার কী হব।
সাইফঃ হুম
আদ্রিতাঃ আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন দেখবেন একদিন না একদিন ওনি আপনার কথা বলার শক্তি টুকু ফিরিয়ে দিয়েছেন।
সাইফঃ তোমার কথাই যেনো সত্যি হয় হয়তো আল্লাহ তায়ালা তোমার জন্যই আমাকে বাচিয়ে রেখেছেন।
আদ্রিতাঃ কিছু খেয়ে নিন কাল থেকে কিছুই মুখে তুলেন নি।
সাইফঃ খাওয়ার ইচ্ছে টাই যে মরে গেছে।
আদ্রিতাঃ আমি খাবার নিয়ে আসছি মুখ হা করুন আমি নিজের হাতে খাইয়ে দিবো আপনাকে।
সাইফঃ জানি কিছু বললেও সে বুঝবে না তাই চুপ চাপ খেয়ে নিলাম।
আদ্রিতাঃ এবার শুয়ে পড়ুন আমি আসতেছি ওনাকে শুইয়ে দিয়ে আমিও ওনার পাশে শুয়ে পড়লাম।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আমি তো রোজ আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতাম আজ আপনি আমার বুকে মাথা রেখে ঘমাবেন
সাইফঃ মেয়েটা পারেও বটে।
আদ্রিতাঃ ওনি আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন আমি চুপ করে ওনার দিকে তাকিয়ে রয়েছি আর মাঝে মাঝে আস্তে করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
ঘুমন্ত অবস্থায় ওনাকে ছোট বাচ্চাদের মতো দেখাচ্ছে।
আজ ওনার জন্যই আমি বেচে রয়েছি যদি ওনার কিছু হয়ে যেতো সত্যি সত্যি আমি মরে যেতাম এই পৃথিবীতে ওনি ছাড়া আমার কেউ নেই।
অপর দিকে।
রুমাঃ এত কিছুর পরেও বেচে যায় কিভাবে আজ রাতেই কিছু একটা করতে হবে।
হ্যালো সামিউল একটা কাজ করে দিতে হবে এর বদলে যা চাইবি তাই দিবো।
সামিউলঃ সত্যি একটা রাত আমার সঙ্গে কাটাতে হবে বেবি।
রুমাঃ What.
সামিউলঃ এক রাত আমার সঙ্গে থাকতে হবে যদি রাজি থাকিস তাহলে আমিও তোর কাজ করে দিবো।
রুমাঃ হ্যা আমি তাতেও রাজি কিন্তু কাজ হওয়া চাই।
সামিউলঃ প্রথমে রুম ডেট তার পর বাকি কাজ।
রুমাঃ তাই বলে আজ।
সামিউলঃ হ্যা এখনি আমার বাসায় চলে আয়।
রুমাঃ সাইফ কে মারতে যা করতে লাগে সব করবো তবুও ওকে বাচতে দিবো না।
কিছু খন পরে সামিউলদের বাসায় যাওয়ার পরে।
সামিউল ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দিলো আমায় আমার ঠোঁটের সাথে তার ঠোঁট মিলিয়ে দিয়ে স্বাদ নিতে থাকলো এক সময় আমার জামাটাও খুলে ফেললো তার পর।
পর্ব ১৮
এক পর্যায়ে সামিউল আমার শরীর থেকে জামাটা খুলে ফেললো সঙ্গে নিজের জামাটাও।
দুজনের নগ্ন শরীর দুটা একে অপরের সাথে আষ্টে পৃষ্ঠে লেগে রয়েছে তার পর সামিউল যা চাইছিলো তাই হয়ে গেলো আই মিন আমাদের মাঝে শরীরক সম্পর্কটা হয়েই গেলো নষ্ট হয়ে গেলো আমার সতীতা এখন আমার আমি আগের রুমা নেই।
প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নিজের শরীরটাকেও বিলিয়ে দিতেও রাজি।
সামিউলঃ অনেক মজা হলো তাই না বেবি।
রুমাঃ হ্যা আর এখন নিজের কথা রক্ষা করো আর ওই সাইফ কে মেরে ফেলো।
রোড নাম্বার ৭ ডানে পাশেী তিন নাম্বার বিল্ডিং ফ্লাট দুইয়ে পেয়ে যাবি এই তার ফটো।
সামিউলঃ ফটো টা না দেখেই পকেটে ডুকিয়ে নিলাম কাজটা হয়ে গেলো ইচ্ছে মতো শরীরটাকে ভোগ করতে পারবো।
তাড়াতাড়ি রোড নাম্বার ৭ এ গিয়ে ডান পাশের বিল্ডিং এর ২ নং ফ্ল্যাট এ যেতেই দেখলাম জানালাটা খুলা রয়েছে যাক ভেবেছিলাম কাজটা মনে হয় কঠিন হবো কিন্তু কাজটা তো অনেক সোজা।
জানালা দিয়ে ভিতরে ডুকতেই পাশে বেড রুমটা দেখতে পেলাম পকেট থেকে ধারালো ছুরিটা বেড় করে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলাম সামনে একজন শুয়ে আছে নিশ্চয়ই এই ছেলেটা। সাইফ।
তার পরেই নজরটা পড়লো একটা মেয়ের উপর ওয়াও এত সুন্দর মেয়ে আগে কখনো দেখি নি চাদের আলোটা মুখের উপর পড়ায় মেয়েটার চেহেরাটা মনে হয় পুরো রুমটাকে আলোকিত করে ফেলেছে।
যাই হোক আগে কাজটা শেষ করি তার পর না হয় এই মেয়েটার শরীরটাকে আত্মসাধ করবো।
ছুরিটা ঠিক বুক বরাবর ধরে ডুকিয়ে দিবো ঠিক তখনি যা দেখলাম তা দেখতেই সমস্ত শরীরটা কেপে উঠলো আমার এটা আমি কী করতে যাচ্ছিলাম এনি তো সেই যে আমার কিছু দিন আগে প্রাণ বাচিয়ে ছিলো।
আমি মনে হয় ভুল বাসায় চলে এসেছি পকেট থেকে ফটো টা বেড় করতেই দেখলাম না আমি সঠিক বাসায় এসেছি তবে আমি এই কাজটা করতে পারবো না।
রুম থেকে বেড় হয়ে রাস্তার পাশে বসে পড়লাম আর ভাবতে লাগলাম এখনি আমি যেটা করতে যাচ্ছিলাম সেটা করার পর নিজেকে কখনো মাফ করতে পারতাম যে মানুষটার কারণে আমি বেচে রয়েছি তাকেই মারতে গেছিলাম।
আজ থেকে ৫ মাস আগের কথা আমার মায়ের অপারেশন এর জন্য দু লাখ টাকা লাগবে সারাদিন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে একটি হাজার টাকা জোগার করতে পেরেছিলাম আরো এক লাখ নিরানব্বই হাজার টাকা কই পাবো এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যাই যখন চোখ খুললাম তখন নিজেকে হাসপাতালে দেখলাম।
সাইফঃ আপনি ঠিক আছেন।
সামিউলঃ হুম কিন্তু আমার কী হয়েছিলো।
সাইফঃ রাস্তায় বেহুস হয়ে পড়ে ছিলেন তাই আমি আপনাকে এখানে নিয়ে আসি।
সামিউলঃ এখন কয়টা বাজে।
সাইফঃ বিকাল ৪ টা।
সামিউলঃ কথা শুনে কেদে ফেললাম এক ঘন্টার মধ্যে টাকা না পেলে মা কে বাচাতে পারবো না।
সাইফঃ আপনি এভাবে কাদছেন কেনো।
সামিউলঃ ওনাকে সব কিছু খুলে বললাম।
সাইফঃ এই বেপার ওনি তো আমার মায়ে মতো চলুন আমি না হয়ে টাকাটা দিয়ে দিচ্ছি।
সামিউল ওনি অপারেশন এর জন্য সব টাকা দিয়ে যখন চলে যাচ্ছিলো।
সামিউলঃ আপনার কে আপনার নামটাই তো জানা হলো না
সাইফঃ আমি না হয়ে অচেনা হয়ে রইলাম উপর ওয়ালা চাইলে আবারো দেখা হবে।
বর্তমানে।
সামিউলঃ ওনার সাথে এভাবে দেখা হবে সেটা জানা ছিলো না মা হয়তো সত্যি বলতো ভালো মানুষের শএু অনেক।
আমি মরে গেলেও এই কাজটা করতে পারবো না তখনি রুমার ফোন।
রুমাঃ কী হলো কাজ শেষ হয়েছে।
সামিউলঃ না আমি এই কাজটা করতে পারবো না।
রুমাঃ কেনো এই কথাটা শুনার জন্য নিজের শরীরটাকে তোর কাছে বিলিয়ে দিলাম নিজের সতীত্ব নষ্ট করলাম।
সামিউলঃ তোর মতো বেশ্যার আবার সতীত্ব হা হা হা।
শোন আমি কেনো যে কেউ সাইফ এর মতো ওমন একটা ভালো মানুষকে খুন করতে চাইবে না।
রুমাঃ বড় বড় লেকচার দেওয়া হচ্ছে লোভী প্রতারক।
সামিউলঃ হ্যা আমি প্রতারক কিন্তু যে আমার মায়ের প্রান বাচিয়েছিলো তাকে আমি কোনো দিনও মারতে পারবো না বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
রুমাঃ অনেক হয়েছে এবার আমাকেই কিছু করতে হবে।
আদ্রিতাঃ এত সকাল বেলা কে এলো দাড়ান আমি আসতেছি।
ওনি তখন ঘুমিয়ে ছিলেন নিচে গিয়ে দরজাটা খুলতেই।
এটা কী দেখছি আমি রুমা আপুর সাথে পুলিশ এখানে আসছে।
পুলিশঃ মিঃ সাইফ কোথায় ওনাকে আমার এ্যরেস্ট করতে এসেছি।
আদ্রিতাঃ কেনো ওনি কী করেছেন।
পুলিশঃ ওনার নামে ধর্ষণের মামলা হয়েছে এই যে মিস রুমাকে রাতে ফোন করে হোটেলে নিয়ে গিয়ে জোর করে ধর্ষণ করে।
আমাদের কাছে ভিডিও রয়েছে।
আদ্রিতাঃ কী ওনি রুমা আপুকে হোটেল এ নিয়ে গিয়ে রেপ করেছে আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে ওনি সারা রাত আমার সাথেই ছিলেন।
পুলিশঃ নিজের স্বামীকে বাচানোর জন্য সবাই তাই বলে মিঃ সাইফকে ফাঁসির হাত থেকে কেউ বাচাতে পারবে না।
আদ্রিতাঃ আমি আপনাদের ওনাকে কোথাও নিয়ে যেতে দিবো না প্রামান কী রয়েছে ওনি এসব করেছে।
পুলিশঃ। ভিডিও টা অন করে দেখালাম।
আদ্রিতাঃ এটা আমার স্বামী না দেখুন এই মানুষটার পিঠে কোনো দাগ নেই আর আমার স্বামীর পিঠে কেটে যাওয়া দাগ রয়েছে।
তখনি মনে পড়লো ওনি তো কথা বলতে পারেন তাহলে ফোন করলো কীভাবে।
আদ্রিতাঃ ওয়েট আমার স্বামী তো কথা বলতে পারেন না তাহলে ফোন করলো কীভাবে।
রুম থেকে মেডিকেল রিপোর্ট তাদের হাতে তুলে দিলাম।
পুলিশঃ সত্যি তো নিচের ডাক্তার এর নাম্বার দেওয়া ছিলো ওই নাম্বার এ ফোন দিয়ে।
ডাক্তারঃ হ্যালো কে।
পুলিশঃ আমি কুষ্টিয়া থানার ওসি বলছি আপনার পেসেন্ট মিঃ আবু সাইফ সরকার
সম্পর্কে জানতে চাই।
ডাক্তারঃ কয়েক দিন আগে এক এক্সিডেন্ট এ ওনি গুরুতর ভাবে আহত হন এর ফলে ওনি কথা বলতে পারছেন না আর ওনি ঠিক মতো এক মাস চলতেও পারবে না।
পুলিশঃ ধন্যবাদ বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
সত্যি টা শুনার পরেও যদি বারাবাড়ি করতে যাই তাহলে আমার চাকরিটা নিয়ে টানা টানি শুরু হয়ে যাবে।
পুলিশঃ ম্যাডাম আই এম সরি ভুল ইনফরমেশন পাইছি বলেই চলে আসলাম।
আদ্রিতাঃ রুমা আপু এমনটা কেন করলো।
সাইফঃ সকালের মিষ্টি আলোয় ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো কিন্তু আদ্রিতা কোথায় তখনি যা দেখলাম।
পর্ব ১৯
তখনি যা দেখলাম তা দেখে অনেকটাই অবাক হয়ে গেলাম
কেনো না আমার পাশে ধারালো ছুরি পড়ে রয়েছে।
অবাক করার বিষয় হলো এটাই যে এই ছুরিটা এখানে কী করছি ঠিক আমার পাশে একটু উনিশ বিশ হলেই তো কেটে যেতো বুকটা।
এটা নিশ্চয়ই আদ্রিতার কাজ।
আদ্রিতাকে যে ডাকবো সেটারো কেনো উপায় নেই।
( আজ বুঝতে পারছি যারা কথা বলতে পারে না তাদের কষ্টা। )
উঠে দাড়ানোর শক্তি টুকুও হারিয়ে ফেলেছি।
সব সময় শক্তি হীন মনে হচ্ছে আর হবেই না বা কেনো যতটা রক্ত শরীর থেকে বেড়িয়েছে তার পুর্ণ হতে প্রায় ১ বছর সময় লেগে যেতে পারে।
পাশের টেবিল থেকে খাতা আর কলমটা নিয়ে একটা কাগজে লেখলাম আদ্রিতা তুমি এই ধারালো ছুরিটা আমার পাশে কেনো রেখেছিলে।
তখনি।
আদ্রিতাঃ আপনি উঠে গেছেন দেখছি ( কিছু আগে যা হয়েছে তা ওনাকে বলা যাবে না বললে ওনি টেনশন করবে ডাক্তার ওনাকে টেনশন করতে বারণ করেছে — মনে মনে)
তখনি ওনি একটা কাগজ এগিয়ে দিলো সেটাতে লেখা ছিলো আদ্রিতা তুমি এই ধারালো ছুরিটা আমার পাশে কেনো রেখেছিলে।
আদ্রিতাঃ আমি তো কেনো ছুরি টুরি আপনার পাশে রাখি নি তাহলে এটা আসলো কোথা থেকে।
ছুরিটা হাতে নিয়ে ভালো ভাবে দেখে বুঝতে পারলাম এটা আমাদের বাসার ছুরি না তাহলে এটা আসলো কোথা থেকে বিষয়টা বড় ভাবাচ্ছে।
সাইফঃ আবারো একটা পৃষ্ঠায় লিখলাম কী হলো কিছু বলছো না কেনো।
আদ্রিতাঃ ওনার লেখাটা পড়ে না মানে এরক ছুরি তো আমাদের বাসায় ছিলো না তাহলে এটা আসলো কোথা থেকে সেটাই তো বুঝতে পারছি।
সাইফঃ সত্যি তো ছুরিটা দেখতেও আজব এরকম ছুরি তো আগে দেখি নি তাহলে কীভাবে আসলো এটা যাই হোক এটা নিয়ে ওতটা ভাবার কোনো দরকার নেই।
আদ্রিতাঃ আপনি উঠে বসুন আমি নাস্তা বানিয়ে নিয়ে আসতেছি বলেই নিচে এসে ওনার জন্য হালকা নাস্তা বানিয়ে উপরে এসে ওনাকে খাইয়ে দিলাম।
আদ্রিতাঃ এবার শুয়ে পড়ুন রেস্ট না করলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হবেন কীভাবে।
সাইফঃ একা একা শুয়ে থাকতে ভালো লাগে আদ্রিতা যে সেই গেছে এখনো আসার কোন নাম গন্ধেই নেই।
শুয়ে থাকতে থাকতে অসহ্য লাগতে শুরু করেছে।
তখনি আহাত টা অন্ধকার হয়ে আসলো
আহাতে কালো মেঘ জমতে শুরু করলো ঠিক তখনি আহাত বেয়ে বৃষ্টি পড়তে লাগলো।
ওমনি আদ্রিতা নিচ থেকে দৌড়ে উপর চলে আসলো।
আদ্রিতাঃ এই বৃষ্টিটারো না আসার কোনো সময় পেলো না তাড়াতাড়ি গোসল টা সেরে নেই। না হলে আবার কিছু খন পরেই বজ্র পাত শুরু হয়ে যাবে বাথরুমে গিয়ে গোসলটা সেরে ফেললাম এর পর কাপড় গুলো চেনজ করে বাইরে বেড়াতোই হঠাৎ বজ্র পাত আওয়াজ শুনতে পেয়ে দৌড়ে গিয়ে ওনাকে জরিয়ে ধরলাম।
আমার বজ্র পাতের শব্দটা খুব ভয় লাগে।
সাইফঃ আহাতটার মনে হয় আমার একা থাকতে কষ্ট দেখে তার কান্না পেয়ে গেছে আর বৃষ্টি গুলো তারি চোখের জল বৃষ্টি হলেই আদ্রিতা যেখানেই থাক না কেনো আমার কাছে আসবেই।
মেয়েটাকে কিছু বলবো সেটাও করতে পারছি না ভিতর থেকে কোনো আওয়াজ এ বেরোচ্ছে না তখনি আদ্রিতার ভেজা চুলের মধ্যে থেকে পাগল করে দেওয়ার মতো ঘ্রাণ বেড়াতো শুরু করলো।
বুঝি না এটা কী শুধু আদ্রিতার চুল থেকে বেড় হয় নাকি সব মেয়েদের আরেকটা বিয়ে করলে বুঝতে পেতাম
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আপনার ভয় লাগছে না।
সাইফঃ মাথা নারিয়ে না।
আদ্রিতাঃ কেনো আপনার বুঝি কোনো কিছুতেই ভয় লাগে না
সাইফঃ ভয়ের সঙ্গে বেচে থাকাটা মৃত্যুর সমান যত দিন বেচে রয়েছি তদিন সাহসের সঙ্গে বেচে থাকবো এতে যা হবার হোক ( মনে মনে )
আদ্রিতাঃ কয়েক ঘন্টা পরে যাক বাবা বৃষ্টি টা কিছুটা হলেও কমেছে ওনার জন্য খাবার নিয়ে আসলাম তার পর ওনাকে খাইয়ে দিয়ে নিজেও খেয়ে নিলাম।
কথায় আছে স্বামীর পায়ে নিচে স্থীর জান্নাত
সাইফঃ এভাবে আর কত দিন চলবে কে জানে আর ভালো লাগছে না এসব।
রাতের বেলা
আদ্রিতাঃ আচ্ছা একটা কথা বলার ছিলো আপনি এত রোমান্টিক মানুষ টা এতটা আনরোমান্টিক কীভাবে হয়ে গেলেন।
সাইফঃ বা বা এখন অসুস্থ বলে এসব বলছে একবার সুস্থ হয়ে যাই তার পর বুঝাবো কত ধানের কত চাল।
আদ্রিতাঃ এই যে মিঃ সাইফ বাবু আমি কিন্তু মোটেও বদলায়নি আগের মতো আছি
সাইফঃ হ্যা হ্যা থেকে নাও আর কয়েকটা দিন।
আদ্রিতাঃ আপনি তো এখন অসুস্থ কিছু করতে পারবেন না আমিই তাহলে কিছু করি।
সাইফঃ কথাটা বলতে না বলতেই দুই ঠোঁট এক করে দিলো এভাবে কয়েক মিনিট থাকার পর দমটা বন্ধ হয়ে আসছিলো।
কোনো মতো নিজেকে ছারিয়ে নিলাম না হলে তো দম বন্ধ হয়েই বুঝি মরে যেতাম।
আদ্রিতাঃ কী হলো।
সাইফঃ কী আবার হবে ( মনে মনে)
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আরেক বার প্লিজ
সাইফঃ বলতে না বলতেই আবার দুই ঠোঁট এক করে দিলো এভাবে কয়েক মিনিট ছেড়ে দিলো বুঝতে ছি মেয়েটার আজকে কী হয়েছে এত রোমান্টিক মুডে কীভাবে।
তার পর কী হলো সেটা সিকরেট বলা যাবে না
এভাবে প্রায় কয়েক মাস কেটে গেলো এখন পুরো পুরি সুস্থ হয়ে উঠেছি শুধু কথা বলতে পারছি না।
প্রতিদিনর মতোও আজ রাতে শুয়ে ছিলাম আর আদ্রিতা আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে মেয়েটার এই কয়েক মাসে অনেকটাই কষ্ট গেছে কিন্তু কখনো তা প্রকাশ করে নি নিজের মাঝেই চেপে রেখেছে।
রাত ১ টা গভীর ঘুমে তালিয়ে গেছি ঠিক তখনি একটা ভয়ানক স্বপ্ন দেখলাম।
রুমা আদ্রিতার পেটে কয়েক মাসে আগে যে ছুরিটা পেয়েছিলাম তা ডুকিয়ে দিয়েছে আদ্রিতার শরীর থেকে রক্ত বেড়িয়ে যাচ্ছে
আদ্রিতার বার বার বলতেছিলো আমি বাচতে চাই প্লিজ আপনি আমাকে বাচান।
আমি থেকেও কিছু করতে পারছিলাম
তখনি মুখ ফুটে বেড় হলো আদ্রিতা আমি তোমার কিছু হতে দিবো জোরে চিৎকার করে।
আদ্রিতাঃ এত রাতে কে চিৎকার করলো ( চিৎকার এর আওয়াজ শুনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো)
তখনি যা দেখলাম তা দেখে আমার বিশ্বাসি হচ্ছে না ওনার।
পর্ব ২০
ভয়ংকর স্বপ্ন টা দেখে পুরো শরীরটা ঘেমে ভিজে গেছে তখন প্রায় রাত ২ টার কাছাকাছি।
আদ্রিতাঃ গভীর রাতে কারো চিৎকারের আওয়াজ শুনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো এত রাতে কে এমন ভাবে চিৎকার করলো তখনি যা দেখলাম তা বিশ্বাসি হচ্ছিলো না।
সাইফঃ আদ্রিতা তোমার কিছু হয় নি বলেই জরিয়ে ধরতে।
আদ্রিতাঃ আপনার কথা বলার শক্তি টা ফিরে আসছে আপনি আবার আগের মতো কথা বলতে পারতেছেন।
সাইফঃ সত্যি আমি কথা বলতে পারতেছি।
আদ্রিতাঃ হ্যা সত্যি সত্যি আপনি কথা বলতে পারতেছেন কিন্তু আপনার শরীরটা এতটা ঘেমে ভিজে গেছে কেনো।
সাইফঃ ভয়ানক স্বপ্নটার কথা আদ্রিতাকে বললাম না।
ও কিছু না একটু গরম লেগেছিলো তাই মনে হয় ঘেমে গেছে।
আদ্রিতাঃ কী গরম লেগেছিলো রুমের মধ্যে এসি চলতেছে পুরো রুমটা ঠান্ডা আর আপনি বলতেছেন গরম লেগেছিলো।
সাইফঃ জানতাম বিশ্বাস করতে পারবে।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা ঠিক আছে এ বিষয়ে আর কথা বলে লাভ নেই আপনি কথা বলতে পারতেছেন তাই আমি কাল এই আনন্দ উপলক্ষে গরিব আসহায় মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করবো।
সাইফঃ হুম যত টাকা লাগে আলমারি থেকে নিয়ে নিও।
আদ্রিতাঃ হুম।
সাইফঃ এখন তাহলে শুয়ে পড়ি।
আদ্রিতাঃ না না একদমি না এত দিন আপনার সঙ্গে একটুও কথা বলতে পারি নি কতটা যা কষ্ট পেয়েছি তা বলে বুঝাতে পারবো না আর আজকে যখন কথা বলতে পারতেছেন তাই আজ পুরোটা রাত গল্প করে কাটিয়ে দিবো চলুন ছাদে যাই।
সাইফঃ এত রাতে।
আদ্রিতাঃ হুম।
সাইফঃ যদি বৃষ্টি পড়তে শুরু করে তখন
আদ্রিতাঃ হবে না বৃষ্টি রাতে খোলা আহাতে চাঁদের আলোয় পুরো পৃথিবীটা আলোকিত হয়ে গেছে আর আপনি বলছেন বৃষ্টি হবে।
( আমার গল্পে একটু বেশিই বৃষ্টি হয় বলা তো যায় না কখন হুট করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করবে। )
সাইফঃ হুম চলো।
ছাদে এসে।
আদ্রিতাঃ দেখেছেন চাঁদ টা কত সুন্দর।
সাইফঃ কে বললো চাদটা সুন্দর চাঁদের থেকে তুমি বেশি সুন্দর।
আদ্রিতাঃ বললেই হলো।
সাইফঃ হুম আর এই মিষ্টি চাঁদের আলোয় আমার লক্ষি বউটাকে আরো বেশি সুন্দর লাগতেছে।
আদ্রিতাঃ
সাইফঃ
আদ্রিতাঃ আচ্ছা আমি যখন বুড়ি হয়ে যাবো তখনো কী এতটাই ভালোবাসবেন আমায়।
সাইফঃ হুম এর থেকেও বেশি বলেই গালে একটা চুমু দিলাম উম্মাহহহ
আদ্রিতাঃ আপনিও না পারেন বটে।
সাইফঃ হুম পারতে তো হবেই চলো আজকে বাসর রাত পালন করি।
আদ্রিতাঃ বাসর রাত মানে আমাদের কী আজ বিয়ে হয়েছে।
সাইফঃ নতুন বিয়ে হলেই কী বাসর রাত করা যায় এমনি করা যায় না বুঝি আমি আমার লক্ষি বউটার সাথে যখন মন চাইবে তখনি সোহাগ রাত করবো।
আদ্রিতাঃ এ্যা আপনার এসব বলতে লজ্জা করতেছে না।
সাইফঃ না তো আমি কী অন্য কাউকে বলছি আমি তো আমার পিচ্চি বউটাকে বলছি
আদ্রিতাঃ আমি পিচ্চি
সাইফঃ হুম না হলে এমন কথা বলতে পারতে না
আদ্রিতাঃ আপনিও পিচ্চু
সাইফঃ হা হা পিচ্চি টা বলে কী এবার রুমে চলো না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে।
আদ্রিতাঃ রুমে যাওয়া মতলব নাকি আলাদা কিছুর।
সাইফঃ রুমে গেলেই বুঝতে পারবে।
রুমে এসে
এক টান মেরে আদ্রিতাকে বুকে নিয়ে আসলাম আদ্রিতাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই দুই ঠোঁট এক করে দিলাম
তার পর দু জনে ভালোবাসার গভীর সাগরে হারিয়ে গেলাম।
সকাল বেলা।
আদ্রিতাঃ ঘুম থেকে উঠে গোসল টা সেরে নিলাম।
রুমে এসে আয়নার সামনে চুল গুলো ঠিক করতেছিলাম ঠিল তখনি।
সাইফঃ সকাল বেলা পানির ফোটা ছিটকে ছিটকে মুখের উপর পড়তেছিলো যার ফলে ঘুমটাই ভেঙ্গে গেলো ঘুম থেকে উঠেই ওয়াও আদ্রিতা গোসল করে নিজের চুল গুলো ঠিক করতেছিলো আর তার চুলের সুবাস পুরো রুমটাকে গন্ধে ভরিয়ে দিচ্ছে তাই পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম।
আদ্রিতাঃ সকাল সকাল বেলা আবার শয়তানি বুদ্ধি মাথায় চাপলো নাকি।
সাইফঃ হুম
আদ্রিতাঃ এখন কিছু করবেন না বলছি এই মাএ গোসল করলাম।
সাইফঃ গোসল করছো তা কী হয়েছে দরকার হলে আরেকবার করবে।
আদ্রিতাঃ পারবো না।
সাইফঃ পারবে বলতে না বলতেই দুই গালে দুটা চুমু দিয়ে দিলাম
ঠিক তখনি।
আদ্রিতাঃ ছাড়ুন না সেই কখন থেকে ফোনটা বেজে যাচ্ছে।
সাইফঃ ধুর কত রোমান্টিক মুডে ছিলাম ফোনটা আসার সময়ই ও পেলো না।
আদ্রিতাঃ হুম হ্যালো।
আসিফঃ ম্যাডাম আমি স্যার এর অফিসের ম্যানেজার বলতেছি।
আদ্রিতাঃ জ্বী বলুন ফোনটা লাউড স্পিকার দিয়ে।
আসিফঃ ম্যাডামে আমাদের প্রতেকটা শেয়ার এর প্রায় চারশো কোটি টাকা লোকশান এভাবে চলতে থাকলে একসময় আমাদের অফিস বন্ধ করে রাস্তায় বসতে হবে।
এ ছাড়া আর কোনো উপায়াই নেই স্যার আপনার নামে যে শেয়ারটা দিয়েছে তা দিয়েই এখন আমাদের অফিসটা চলতেছে আপনার নামের এই শেয়ারটা আমাদের শেষ ভরসা আপনি প্লিজ স্যারকে বলে দিয়েন।
সাইফঃ কথা গুলো শুনার পর মাথাটা পুরো ঘুরতে শুরু করছে এই মাসে পুরো চারশো কোটি। টাকা লোকসান ম্যানেজার তো ঠিকি কথা বলেন এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের অফিসটাই বন্ধ হয়ে যাবে।
আদ্রিতাঃ কী হলো আপনার আপনাকে এ রকম দেখাচ্ছে কেনো।
সাইফঃ পুরো চারশো কোটি টাকা এ মাসে লোকসান মানেটা বুঝতে পারছো সামনের মাসে যদি আরো চারশো কোটি টাকা লোকসান হয়ে যায় তাহলে আমাদের রাস্তায় বসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
আদ্রিতাঃ এভাবে বলবেন না।
সাইফঃ আমাকে এখনি অফিসে যেতে হবে না হলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
আদ্রিতাঃ এত সকাল বেলা না না আপনি একা যাবে না।
সাইফঃ যেতেই হবে এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
রুমাঃ সাইফ আজ তোকে কেউ বাচাতে পারবে না একবার শুধু অফিসে আয় তার পর বুঝবি আসল মজা আজ উপর ওয়ালাও তোকে বাচাতে পারবে না।
রুমাঃ যেই সাইফ অফিসে ডুকবে ওমনি পুরো বিল্ডিং টা ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশে যাবে আর সেখাই চাপা পড়বে মরে যাবে হা হা।
সাইফঃ তাড়াতাড়ি অফিসে চলে আসলাম এত সকালে হয়তে কেউ আসে নি আমার কেবনি ডুকতেই পুরো বিল্ডিং টা কাপতে লাগলো ওমনি।
পর্ব ২১
অফিসে ডুকার সাথে সাথে পুরো অফিসটাই কাপতে শুরু করলো মনে হচ্ছে এই ভেঙ্গে পড়ে তাহলে কী ভূমিকম্প যাচ্ছে যার ফলে এমনটা হচ্ছে।
রুমাঃ বোমটা এখনো একটিভ হচ্ছে না ধুর আবার কী সমস্যা হলো।
সাইফঃ দ্রুত নিচে চলে আসলাম।
রুমাঃ বিল্ডিং এর নিচে যেতেই অবাক হয়ে গেছি এখন আমি কী করবো বোমটা তো আগেই একটিভ হয়ে গেছে আর মাএ ১০ সেকেন্ড বাইরে যেতে কম করে হলেও ৩০ সেকেন্ড লাগবে তখনি।
সাইফঃ উপর থেকে নিচে নামার সময় হঠাৎ একজনকে দেখতে পেলাম ততক্ষণে মনে হচ্ছে বিল্ডিং টা ভেঙ্গে পড়ে যাবে তাই দ্রুত ওই মেয়েটাকে ধাক্কা মরে বাইরে বেড় করে দিলাম।
সাইফঃ ঠিক তার ১ সেকেন্ড পরেই পুরো অফিসটাই ভেঙ্গে মাটির সাথে তালিয়ে গেলো।
এটা কীভাবে হলো ততক্ষণে পুলিশ ফায়ার সার্ভিস চলে এসেছে।
এই খবরটা টিভিতেও লাইভ দেখানো হচ্ছে খবর টা শুনেই আদ্রিতা এখানে চলে এসেছে।
আদ্রিতাঃ আপনাকে কত বার বলেছিলাম এখানে না আসতে তবুও চলে আসলেন। আমার কোনো কথাই শুনেন না আপনি। এখনি যদি কিছু হয়ে যেতো আপন। ( কাদতে কাদতে )
সাইফঃ সেই মেয়েটা কোথায় যাকে ধাক্কা মেরে বাইরে ফেলে দিচ্ছিলাম তার আবার কিছু হয়ে যায় নি তো।
আদ্রিতাঃ এখনি বাড়ি চলুন এখানে আর একটি মুহূর্ত থাকতে হবে না আপনাক।
সাইফঃ একটু দাড়াও না।
আদ্রিতাঃ না একটুও না কথাটা বলতে না বলতেই ওনাকে সেখান থেকে টেনে নিয়ে চলে আসলাম আসার সময় মানুষ গুলো কেমন ভাবে জানি তাকিয়ে ছিলো তাতে আমার কী আসে যায়।
সাইফঃ কোথা থেকে কী হয়ে গেলো কিছুই বুঝতেই পারলাম না।
আদ্রিতাঃ আজ থেকে বাসার বাইরে যাওয়া একদমি বন্ধ কোথাও যেতে হবে আমার সাথে যেতে হবে।
সাইফঃ এখন তো মনে হচ্ছে আমিই আদ্রিতার বউ আর ও আমার স্বামী যে ওর সব আদেশ মেনে চলতে হবে
এগুলো ভাবা যায়।
আদ্রিতাঃ কোথায় গুলো মাথার মধ্যে ডুকছে নাকি আবারো বুঝিয়ে দিতে হবে।
সাইফঃ থাক আর বলতে হবে না।
অপর দিকে।
রুমাঃ যাকে মারার জন্য এত কিছু করলাম সেই কী না আমার প্রাণ টা বাচালো।
সে কেনো এমনটা করলো আমি তার শএু হয়েও আমার প্রাণটা বাচালো।
রুমাঃ অন্যর জন্য ফাদ পাতলে নাকি সেই ফাদে নিজেকে পড়তে হয় কোথাটা আজ প্রমাণ হয়ে গেলো।
আজ আমার চোখটা খুলে গেছে আমি এত গুলো পাপ কাজ করেছি যার কোনো ক্ষমা হয় না তবুও একবার সাইফের কাছে মাফ চেয়ে নিবো না হলে জাহান্নামেও জায়গা হবে না আমার।
তার দু দিন পর।
সাইফঃ আজ সকালটা বেশ সুন্দর কাল সরকার বলেছি অফিসের ক্ষতি পুরণ সরকারে দিবে।
আদ্রিতাঃ আজ মনে হয় বৃষ্টি হবে আহাতটা অন্ধকার হয়ে আসতেছে।
সাইফঃ হুম অনেক দিন হয়ে গেলো বৃষ্টি হয় নি।
আদ্রিতাঃ ওমনি কয়েক দিন আগেই তো বৃষ্টি হলো।
সাইফঃ সেটা অতীত হয়ে গেছে আজকের বৃষ্টি টা কিন্তু অনেক রোমান্টিক হবে
আদ্রিতাঃ কিছু বললেন।
সাইফঃ কই না তো।
তার কিছু খন পরেই ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো।
ছাদে আদ্রিতা আর আমি ভিজতে ছিলাম তখনি নজরটা পড়লো আদ্রিতার লাল টুকটুকে ঠোঁট গুলোর উপর
এক টান মেরে আদ্রিতাকে বুকে টেনে নিয়ে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই দুই ঠোঁট এক করে দিলাম।
এভাবে কয়েক মিনিট থাকার পরে।
আদ্রিতাঃ নিজেকে কোনো মতো ছাড়িয়ে
বা বা এই বুড়ো রয়সেও আপনি এত রোমান্টিক কেনো।
সাইফঃ কে বললো আমি বুড়ো হয়ে গেছি হুম
আদ্রিতাঃ আমি ঠিক তখনি বৃষ্টি টা সেরে গেলো।
ভিতরে এসে কাপড়টা চেনজ করে ওনার সাথে বাইরে বেড়িয়ে পড়লাম।
সাইফঃ এই মেয়েটাকে নিয়ে একদমি পারা যায় না এত করে বললাম আমার সঙ্গে আসতে হবে না তবুও চলে আসলো
গাড়ি থেকে নেমে কাজটা সেরে গাড়িতে উঠতে যাবো ঠিক তখনি।
রুমাঃ এই যে একটু শুনন।
সাইফঃ ধুর কাকে না কাকে বলছে গাড়ির দরজাটা খুলে ভিতরে ডুকার সময়।
রুমাঃ মিঃ সাইফ তোমাকে বলছি।
সাইফঃ আমার নাম ধরে কে ডাকলো পিছনে ঘুরে তাকাতেই একি এটা তো রুমা।
রুমাঃ সাইফের কাছে গিয়ে দেখুন আমি না জেনে অনেক বড়ো ভুল করে ফেলেছি আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দিন আপনার পায়ে পড়ছি।
সাইফঃ আরে এটা তুমি কী করতেছো আমার কখনো তোমার উপর রাগ ছিলো না নিজের ভুলটা বুঝতে পারছো আমি এতেই খুশি।
রুমাঃ সত্যি।
সাইফঃ হুম
রুমাঃ সত্যি সাইফ মতো মানুষ হয় না আমি এই মানুষ টাকে না বুঝেই কত বার মারতে চেয়েছি।
রুমাঃ সাইফ গাড়িতে উঠতেছিলো ঠিক তখনি লক্ষ্য করলাম একজন মানুষ ওর দিকে বন্দুক নিয়ে শান্ত করে আছে সে সামনে এগতোই দেখলাম লোকটা ফায়ার করতে যাচ্ছে ওমনি।
সাইফঃ গাড়িতে উঠার সময় হঠাৎ গুলির শব্দ পেয়ে পিছনে তাকাতেই দেখলাম রুমার বুকে গুলি লেগেছে।
রুমাঃ যখন দেখলাম লোকটা ফায়ার করছে দৌড়ে সাইফের সামনে চলে গেলাম আর গুলিটা আমার বুকে এসে লাগলো লোকটা আমাকে নয় সাইফকে। মারতে চেয়েছিলো।
সাইফঃ রুমা এটা কী হলো তোমার কে করলো তোমার এ অবস্থা দ্রুত এম্বুলেন্স কে কল করলাম।
রুমাঃ এসবের দরকার নেই আমি বেশি ক্ষণ বাচবো না তবে মরার আগে একটি বার একবার বলো ক্ষমা করে দিয়েছো।
সাইফঃ কী বলছো এসব আমি অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি।
রুমাঃ কথাটা শুনে শান্তি পেলাম এবার খুশি খুশি মরতে পারবো আর হ্যা সাবধানে থাকবেন কারণ আপনাকে মারার জন্যই গুলিটা চালানো হয়েছিলো।
সাইফঃ কথাটা শুনে অবাক হয়ে গেলাম কে আমাকে মারতে চায়।
আর রুমাকে কীভাবে গুলিটা লাগলো।
পর্ব ২২
হঠাৎ গুলিটা এসে বুকের ঠিক মাঝ খানে লেগে গেলো।
গুলিটা আমাকে মারার উদ্দেশ্য চালানো হয় নি বরং সাইফকে মারাট জন্য চালানো হয়েছিলো।
তাই নিজেই গিয়ে সাইফের সামনে গিয়ে দাড়ালাম আর গুলিটা ঠিক এসে আমার বুকের মধ্যে লাগলো।
সাইফঃ কতক্ষণে এম্বুলেন্স আসবে তার আগেই রুমা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছে।
সাইফঃ কেনো করলো মেয়েটা এমন আমার জীবন বাচাতে গিয়ে নিজেই মারা গেলো।
আদ্রিতাঃ রুমা আপু এই রুমা আপু কথা বলছো না।
সাইফঃ আদ্রিতা উঠো রুমা আর কোন দিন কথা বলবে না তার কিছু খন পরেই এম্বুলেন্স চলে আসলো আর রুমার লাশটাকে নিয়ে চলে গেলো।
মেয়ের মৃত্যুর খবরটা শুনলে হয়তো তার বাবা মার মনটা পাথর হয়ে যাবে।
তবে যে এই কাজটা করেছে তাকে উচিত শাস্তি পেতে হবে।
( ডিসকাসটিং ম্যন হঠাৎ করে এই মেয়েটা কেনো সামনে চলে আসলো না হলে আজি এই লোকটিকে উপরে পাঠিয়ে দিতাম)
সাইফঃ সে সেই ব্যক্তি যে আমাকে মারতে চেয়েছিলো।
আদ্রিতাঃ তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলুন এখানে থাকাটা বটেও ভালো না।
সাইফঃ হুম তার পরে বাসায় ফিরে আসলাম।
বাসায় এসেও বার বার একটা কথাই মাথায় ঘুরতেছিলো কে সে।
সব কিছু যেনো রহস্য হয়ে যাচ্ছে
এই রহস্যের সমাধান কী করে করবো।
আদ্রিতাঃ আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো কী নিয়ে ভাবতেছেন এতো।
সাইফঃ কিছু না এমনি রুমার কথা ভেবে খারাপ লাগতেছিলো।
আদ্রিতাঃ খারাপ তো আমাকেও লাগতেছে আচ্ছা রুমা আপুর উপর কে গুলি করতে পারে আমার মনে হচ্ছে রুমা আপুর বয় ফ্রেন্ড এ এমনটা করেছে।
সাইফঃ আদ্রিতা হয়তো জানে না রুমাকে নয় আমাকে মারার জন্য চালানো হয়েছিলো আর তখনি আমার সামনে রুমা চলে আসায় গুলিটা তার বুকে লাগে।
আদ্রিতাঃ আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি খাবার টা নিয়ে আসতেছি।
সাইফঃ বাথরুমে গোসল করার সময় মনে হচ্ছে কেউ আমার উপর নজর রেখেছে কিন্তু কে সে আমি তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।
রুমার মৃত্যুর আগে থেকেই মনে হচ্ছিলো কেউ আমায় ফলো করতেছে কিন্তু যখনি পিছনি তাকিয়ে দেখি কাউকে দেখতে পাই না।
আজও ঠিক তেমনটাই মনে হচ্ছে সত্যিই কী কেউ আমায় ফলো করতেছে নাকি এটা আমার মনের ভুল।
আদ্রিতাঃ সেই যে গোসল করতে গেছে এখনো আসতেছে না কেনো।
কথাটা বলতে না বলতেই ওনি চলে আসলেন তার পর দুজনে মিলে এক সঙ্গে খেয়ে নিলাম।
এর পর গল্প করতে শুরু করলাম।
রাত ১২ টা আমি ওনার বুকে ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ কেনো জানি ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো তখনি যা দেখলাম তা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না জানালার পাশে কেউ দাড়িয়ে আমাদের কে দেখতেছে।
আমি কী সত্যি এসব দেখতেছি নাকি স্বপ্ন যখনি চোখ গুলো মুছে জানালায় দেখলাম তখন কাউকে দেখতে পেলাম না হয়তো আমারি দেখতে কোথায় ভুল হয়েছে।
তাই আবারো ওনার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম।
( যাক বাবা আরেকটু হলেই ধরা পড়ে যেতাম এই মেয়েটা এত রাত পযন্ত জেগে কী করছিলো। যাই করুক তাতে আমার কী একবার সুযোগ পাই তার পরে সোজা পৃথিবী থেকে বিদাই করে দিবো। )
আদ্রিতাঃ সকাল বেলা বৃষ্টির আওয়াজে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।
প্রতিদিনি বৃষ্টি হচ্ছে জানি না কেনো হালকা হালকা ঠান্ডাও করতেছে আর ওনাকে ছেড়ে উঠতেও মন চাইছে না তাই আবারো শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম ওনাকে আর ওনার বুকেই শুয়ে রইলাম।
সাইফঃ আজ মনে হয় একটু বেশিই ঘুমিয়ে ফেলেছি কিন্তু আদ্রিতা তো এখনো উঠে নি তাহলে কী এখনো সকাল হয় নি কে জানে বাইরে তো আবার বৃষ্টি হচ্ছে ততক্ষণে আর বুঝতে বাকি রইলো না যে আদ্রিতা জেগে রয়েছে।
সাইফঃ আজ এখনো উঠো নি যে,।
আদ্রিতাঃ এমনি, আজ সারাটা দিন এভাবে জরিয়ে ধরে শুয়ে থাকবো।
সাইফঃ কেনো।
আদ্রিতাঃ এমনি।
সাইফঃ উঠো আমি একটু কাজে বাইরে বেড়োবো।
আদ্রিতাঃ একা একা তো কোথাও যেতে পারবেন না আমিও আপনার সাথে যাবো।
সাইফঃ ছোট বাচ্চার মতো জেদ করো না তো অনেক ইমপোর্টেন্স কাজে যাচ্ছি।
আদ্রিতাঃ আমার থেকেও কাজটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেলো
সাইফঃ আমি কী সে কথা বলেছি।
আদ্রিতাঃ তাহলে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন না কেনো
সাইফঃ এই মেয়েটার সঙ্গে কথায় পারা যাবে না তাই সঙ্গে নিয়ে আসতেই হলো।
সাইফঃ গাড়িতে চুপটি করে বসে থাকো আমি ভিতর থেকে মিটিং টা সেরে আসতেছি।
আদ্রিতাঃ আমিও যাবো ভিতরে এর আগে কখনো তো যায় নি তাই একবার দেখতাম।
সাইফঃ আচ্ছা আসো তবে চুপচাপ হয়ে বসে থাকবা।
আদ্রিতাঃ হুম।
সাইফঃ ভিতর গিয়ে মিটিংটা শেষ করে।
রাজ ইনড্রাসটির বস রাজ।
রাজঃ মেয়েটা তো অনেক কিউট আর অনেক নম্র ভদ্র তা মেয়েটা কে হয় আপনার মিঃ সাইফ
সাইফঃ জ্বী আমার বউ।
রাজঃ ওয়াও অনেক সুন্দরী একটা বউ পাইছেন কয় জনে বা পায় এমন বউ।
তা তোমার নামটা কী।
আদ্রিতাঃ জ্বী আদ্রিতা।
রাজঃ Really Nice Name.
আদ্রিতাঃ ধন্যবাদ
সাইফঃ তার পর বাইরে বেড়াতেই মনে হলো পিছনে কেউ একজন আমায় ফলো করতেছে হঠাৎ পিছনে তাকাতেই যা দেখলাম তা পুরোই অবিশ্বাস্য একটা মেয়ে পিস্তল হাতে নিয়ে আমার পিছনে দাড়িয়ে আছে।
সাইফঃ এই কে আপনি আমায় ফলো করেছেন কেনো।
মেয়েটাঃ ওখানেই দাড়ান একটু আগে আসার চেষ্টা করলে গুলি করে দিবো কিন্তু।
আদ্রিতাঃ কে গো ওনি আমার কিন্তু খুব ভয় লাগতেছে।
সাইফঃ কে আপনি আর আমার সাথেই বা শএুতা কীসের।
মেয়েটাঃ এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন আমায়।
সাইফঃ ভুলে গেলাম মানে আপনাকে তো আমি চিনিই না।
মেয়েটাঃ এখন তো চিনবেনই না কেনো না আমায় ভোগ করা তো অনেক আগেই হয়ে গেছে।
সাইফঃ আপনি কী পাগল নাকি মাথায় কোনো সমস্যা আছে।
মেয়েটাঃ পাগল আমি না পাগল আপনি।
সাইফঃ মানে।
মেয়েটাঃ আমি আপনার প্রথম স্থী তুলি আর আপনি কী আমাকেই ভুলে গেলেন।
পর্ব ২৩
—-> গল্পের নতুন মোড় <—
আপনি আপনার প্রথম বিবাহিত বউ তুলি আর আপনি আমাকেই ভুলে গেলেন।
সাইফঃ what are you crazy.
মেয়েটাঃ আমি পুরানো হয়ে গেছি বলে আরেকটা বিয়ে করছেন লজ্জা লাগলো না আপনার।
সাইফঃ মেয়েটার কথা গুলো শুনে মেজাজটা গরম হয়ে গেলো গিয়ে দিলাম গালে একটা ঠাসস করে থাপ্পড়।
বেহায়া মেয়ে লজ্জা করে না এসব কথা বলতে।
মেয়েটাঃ এই মেয়েটার জন্য আপনি আমার গায়ে হাত তুলেন এই ছিলো আপনার মনে আমার ভালোবাসা।
সাইফঃ মেয়েটার কথা গুলো শুনে মেজাজটা আরো বেশি গরম হয়ে যাচ্ছিলো কীসব যা তা বলে যাচ্ছে আমি ওর মতো একটা চরিত্র হীন মেয়েকে বিয়ে করতে যাবো।
মেয়েটাঃ জানি না তুমি কে কিন্তু আমার সাথে যা হয়েছে তা তোমারো সাথে হবে যখন তোমার শরীরটাকে ভোগ করা হয়ে যাবে তখন নিজের থেকে আস্তে আস্তে করে দুরে সরিয়ে দিবে ঠিক আমার মতো ( আদ্রিতা কে উদ্দেশ্য করে )
আদ্রিতাঃ আপনি যাই বলুন কেনো ওনি এমন কাজ করতেই পারেন না কারণ ওনি আমাকেই ভালোবাসেন আর কাউকে না আর কারো কথা কখনো ভাবতেই পারে না।
আপনি এসব মিথ্যা কথা —বলতেছেন ওনার আর আমার মাঝের সম্পর্কটা নষ্ট করার জন্য।
মেয়েটাঃ good very good এত বুঝার পরেও যখন বুঝলা না তখন আমি যখন এনাকে পাই নি তাই আমিও এনাকে ওনো কারো হতে দিবো না।
সাইফঃ হাতে একটা পিস্তল নিয়ে কী পুরো দুনিয়াটা নিজের মনে করে নিচ্ছো নাকি।
মেয়েটাঃ পুরো দুনিয়াটা না হলেও এখন আপনাকে এই দুনিয়া ছাড়তে হবে বলেই গুলি চালিয়ে দিলাম।
এটা কী হলো গুলি বেড় হলো না কেনো।
সাইফঃ কী হলে চালাও গুলি দেখি কত বড় সাহস আপনার। ( থাপ্পড় টা দেওয়ার সময় বন্দুকের গুলি গুলো কয়দা করে বেড় করে নিচ্ছিলাম। )
মেয়েটাঃ পিস্তল টা জাম লেগে গেলো নাকি।
নিচে তাকাতেই যা দেখলাম তা দেখে অবাক হয়ে গেলাম গুলি গুলো কোথায় গেলো।
সাইফঃ কী হলো গুলি খুজছেন নাকি এই যে আমার হাতে গুলি গুলো।
মেয়েটাঃ সুযোগ বুঝে এখান থেকে কেটে পড়তে হবে। আস্তে আস্তে করে পিছনে এগিয়ে দৌড়াতে শুরু করলাম।
সাইফঃ মেয়েটা দৌড়ে পালাচ্ছিলো তাই মেয়েটাকে ধরতে তার পিছু নিলাম কিন্তু রাস্তার ওলি গলিতে যে কোথায় হারিয়ে গেলো আর খুঁজে পেলাম না।
আদ্রিতাঃ এই মেয়েটাকেই তো মনে হয় আজ সকাল বেলা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলা তার মানে ওটা স্বপ্ন ছিলো না।
আদ্রিতাঃ এই মেয়েটার এসব করে কী লাভ তা মাথায় আসছে না আর ওনি এমন কাজ কখনো করতেই পারেন না।
পৃথিবীর সবাই যদি এই এক কথাই বলে তবুও আমার এক ফোটাও বিশ্বাস হবে না।
সাইফঃ আরেকটু হলে ধরে ফেলতাম কে এই মেয়েটা কেনোই বা এসব করতেছে না এখন থেকে সাবধানে থাকতে হবে।
এর পর আদ্রিতাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
আদ্রিতাঃ বাসায় এসে মনটা কেমন যানি ছটফট করতেছে একবার ওনাকে কী জিজ্ঞাসা করবো মেয়েটাকে ওনি চিনেন কী না। থাক বললে হয়তো ওনি ভাবেন আমি ওনাকে একটু বিশ্বাস করি না বরং সন্দেহ করি।
সাইফঃ কেনো আমার সঙ্গে এসব হচ্ছে একটা দিনিও শান্তিতে থাকতে পারছি না।
একটা বিপদে যেতে না যেতেই আরেকটা বিপদ এসে হাজির হয়ে যাচ্ছে।
আদ্রিতাঃ আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন আর এসব নিয়ে একদমি ভাববেন না কে কী বললো তাতে আমার কিছু যায় আসে না কারণ আমি জানি আপনি এসব করতেই পারেন না।
বিকেল বেলা
নদীর পাশে একা একা হাঠতে ছিলাম তখনি পিছন থেকে চেনা কণ্ঠ থেকে।
এই সাইফ একটু দাড়াও।
সাইফঃ পিছনে তাকাতেই দেখলাম হেনা আমার ক্লাস মেট ছিলো আর আমার ভালো বন্ধুও।
হেনাঃ কেমন আছিস।
সাইফঃ আছি আরকি তা তোর খবর কী।
হেনাঃ ভালো তা একা একা কই যাওয়া হচ্ছে।
সাইফঃ এমনি হাঠতে ছিলাম তা কবে আসা হলো বাংলাদেশ
হেনাঃ কালি এসেছি।
সাইফঃ ও তা তোর স্বামী আসে নি বুঝি।
হেনাঃ না ও কাজে প্রচুর ব্যস্ত তাই আসতে পারে নি।
সাইফঃ ও তা এতো মেটো দেখাচ্ছে কেনো স্বামী মনে হয় আদরটা একটু বেশিই করে
হেনাঃ যা এসব কেউ বলে তা বিয়ে করিস নি তুই।
সাইফঃ হুম করেছি এই ধর ছয় সাত মাস হলো।
হেনাঃ তবুও তো বললি না।
সাইফঃ তোর সাথে যোগাযোগ এর রাস্তায়ই ছিলো না তা চল না আমাদের বাসায়।
হেনাঃ আজ না ওন্য দিন এই ধরো আমার নাম্বারটা 017xxxxxxxxx সময় হলে একটু আধ টু কল করিস।
সাইফঃ আচ্ছা এখন তাহলে আসি রে বাসায় তোর ভাবি আবার একা আছে দেরি হলে ভয় করবে।
বলেই চলে আসতে লাগলাম।
আদ্রিতাঃ ওনি যে আবার কোথায় একা একা চলে গেলেন কে জানে। এত কর বারণ করলাম কোথায় একা একা না যেতে তবুও চলে গেলেন আজ আসুক মজা দেখাবো।
ততক্ষণে বরং রুমটা সাজিয়ে নিয় কেমন যানি অগোছালো হয়ে রয়েছে।
রুমটা সাজানো শেষে হঠাৎ বিছানার নিচে একটা সুটকেস দেখতে পেলাম এটা তো আগে কখনো দেখি নি এখানে
ধুর ছিলো হয়তো আমিই দেখি নি।
দেখি তো কী রয়েছে এর মধ্যে
নিচ থেকে বেড় করে খুলে দেখলাম কয়েকটা কাপড় আর তার মধ্যে থেকে কয়েকটা ছবি বেড়িয়ে আসলো।
ছবি গুলো দেখতেই মাথাটা ঘুরতে শুরু করলো নিজের অজান্তেই চোখ বেয়ে পানি পড়তে শুরু করলো ওনি এত বড় কথাটা আমার কাছ থেকে লুকতো পারলো কীভাবে।
আজ সকাল বেলা যে মেয়েটা এসেছিলো সে তাহলে সব সত্যি কথাই বলেছে যে ওই মেয়েটা ওনার প্রথম বিবাহিত বউ।
আর এই ছবি গুলোতে ওনি আর ওই মেয়েটার কয়েকটা ফটো রয়েছে তাও আবার বিয়ের দিনের ওনি এমনটা করতে পারলো কীভাবে।
( শেষ পর্ব)
——> হঠাৎ ছবি গুলো দেখে মাথাটা ঘুরতে শুরু করলো ওনি এত বড় কথাটা আমার কাছ থেকে লুকোতে পারলো কীভাবে।
আমাকে একটি বারো বললো।
আমার বিশ্বাসের এই প্রতিদান দিলো।
সাইফঃ বাসায় আসতে আসতে একটু মনে হয় দেরিই হয়ে গেলো সেই কখন থেকে দরজাটা খুলতে বলতেছি কিন্তু আদ্রিতা খুলছে না কেনো আজব তো
তাই বাধ্য হয়ে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজাটা খুলে ভিতরে ডুকলাম এর পর রুমে গিয়ে যা দেখলাম।
আদ্রিতাঃ তার মানে ওই মেয়েটা সত্যি কথাই বলেছিলো যে ওনি আস্তে আস্তে আমাকেও ওই মেয়েটার মতো ভুলে যাবে।
সাইফঃ আদ্রিতা কী হয়েছে তোমার হুম এভাবে মেঝেতে বসে আছো কেনো আরে তোমার চোখে জল কেনো।
চোখের জলটা মুছতে গিয়ে।
আদ্রিতাঃ একদম ছুবেন না আমায় আপনি ধোকা দিয়েছেন আমায়।
সাইফঃ তুমি কী পাগল হয়ে গেছো কী আবোল তাবোল বকছো।
আদ্রিতাঃ আমি আবোল তাবোল বকছি এত বড় কথাটা আমার কাছ থেকে লুকোতে পারলেন।
সাইফঃ আজ পযন্ত এমন কোথা আছে যেটা তোমায় বলি নি।
আদ্রিতাঃ এই কথাটা তো বলেন নি যে আপনি বিবাহিত আর সকাল বেলা যে মেয়েটা এসেছিলো সে আপনার প্রথম বিবাহিত বউ তুলি।
সাইফঃ কথা গুলো শুনে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে দিয়ে দিলাম গালে একটা থাপ্পড়।
আদ্রিতাঃ গালে হাত দিয়ে আরো জোরে কাদতে লাগলাম আপনি মারতে পারলেন আমায়।
সাইফঃ তোমার পাগলামোর জন্য মেরেছি ( আজ প্রথম আদ্রিতার উপর হাত তুললাম)
আদ্রিতাঃ মারুন আরো মারুন মারতে মারতে মেরে ফেলুন আমায়।
সাইফঃ মেয়েটার মাথাটা খারাপ হয়ে গেলো না তো তখনি আদ্রিতার হাত থেকে কয়েকটা ফটো মাটিতে পড়ে গেলো।
ছবি গুলো হাতে নিতেই যা দেখলাম তা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না এটা তো আমার পিক আর ওই মেয়েটার তাও আবার এক সাথে।
এটা কীভাবে সম্ভব ছবি গুলো ভালো মতো দেখতে লাগলাম হঠাৎ চোখটা পড়লো ছবিটার কোণে সেখানে লেখা ছিলো সাজিদ ফটো সেন্টার।
এই সাজিদ ফটো সেন্টার এ এই রহস্য লুকিয়ে রয়েছে।
আদ্রিতাঃ আমি চলে যাচ্ছি আপনার থেকে অনেক দুর এ।
সাইফঃ কী বললে আরেক বার বললে হাত পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো আমি না আসা পযন্ত যদি এই রুম থেকে বেড় হয়েছো তাহলে কী যে করবো তোমার সেটা উপর ওয়ালাই জানে বলে চলে আসলাম।
আদ্রিতাঃ ওনার কথা গুলো শুনার পর রুম থেকে বেড় হওয়ার সাহস হলো না।
সাইফঃ সাজিদ ফটো সেন্টার এ এসেছে এই ছবি গুলো আপনার এখান থেকে নেওয়া হয়েছে।
জ্বী কাল একটা মেয়ে এডিট করে নিয়ে গেছে।
তা স্যার আপনি তো ওই মেয়েটার স্বামী হবেন তাই না।
সাইফঃ শালা গালে দিবো না একটা থাপ্পড় মেয়েটার নাম কী আর কোথায় থাকে আর এই কাজের জন্য কত টাকা নিয়েছিস বল।
মানে কী।
সাইফঃ সোজা কথায় বলবে না জামার কলারটা ধরে দু চারটা থাপ্পড় খেতেই সব কিছু পেট থেকে বেড়িয়ে আসলো।
স্যার বলছি বলছি মেয়েটার নাম তুলি রোড নাম্বার ৩২ এর ডানে পাশের বাসায় থাকে এই কাজের জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়েছে।
সাইফঃ আজ এই তুলির একদিন কী আমার একদিন তাড়াতাড়ি রোড নাম্বার ৩২ এ এসে ডানের বাসা টায় ডুকে গেলাম হঠাৎ সেই মেয়েটাকে দেখতে পেলাম।
মেয়েটাঃ একি এই লোকটা এখানে কী করছে।
আস্তে আস্তে পিছতে পিছতে দেওয়ালে পিট ঠেকে গেছে।
সাইফঃ অনেক হয়েছে লুকোচুরি খেলা এবারে বলো কে তুমি আর এই সব করে কী লাভ তোমার।
মেয়েটাঃ ইয়ে মানে না মানে আমি তো আপনার বউ।
সাইফঃ মাথাটা আগে থেকেই গরম ছিলো তার পর এই কথাটা শুনার পর আরো রাগটা বেড়ে গেলো উঠিয়ে দিলাম গালে কয়েকটা থাপ্পড় আমি তোর স্বামী আজ তোর একদিন কী আমার একদিন বলেই আরো কয়েকটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিলাম।
মেয়েটাঃ আপনার নামে নারী নিযাতনের কেস করবো।
সাইফঃ কী করবি কর তোর আজ রেহাই নেই আশে পাশে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না হঠাৎ একটা ছুরির উপর নজর পড়লো সেটা হাতে নিতেই তোকে আজ মেরেই ফেলবো এতে যা হবার হবে।
মেয়েটাঃ এবার সত্যি সত্যি ভয় করতে শুরু করলো যদি রাগের মাথায় ছুরিটা চালিয়ে দেয়।
দেখুন এমনটা করবেন না আমি সব বলতেছি।
সাইফঃ যা বলার এখানে না আমার বউ সামনে বলবি না হলে।
মেয়েটাঃ ঠিক আছে তাই হবে।
সাইফঃ এর পর মেয়েটাকে বাসায় নিয়ে এসে।
আদ্রিতাঃ মনে হলো কেউ এসেছে তখনি উনি ওই মেয়েটাকে নিয়ে রুমে ডুকলেন।
মেয়েটাঃ দেখুন আমিই এসব করেছি এই ফোটো গুলো এডিটিং করে। আজ সকাল বেলা যখন আপনারা বাইরে গেছিলেন তখন জানালা দিয়ে ভিতরে এসে এই সুটকেস আর ফটো গুলো রেখে যাই। যাতে এই কথাটা বিশ্বাস হয়ে যায় যে আমিই সত্যি কথা বলতেছি।
আর এসব আমি লোভে পড়েই করেছি এর জন্য আমাকে রুমা টাকা দিয়েছিলো। কিন্তু ওই দিন গুলিটা রুমাকে লেগে যায়। আর আমি টাকা হালালি করে খেতে চেয়েছিলাম তার জন্য এসব করা।
প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন। আমার কিছু হয়ে গেলে আমার মেয়েটাকে দেখার মতো কেউ নেই।
সাইফঃ মেয়েটার কথা শুনে একটু মায়া হলো তাই যেতে দিলাম সাথে আমি বেড় হয়ে যাচ্ছিলাম।
তখনি।
আদ্রিতাঃ নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছি না বুঝে শুনে কত কথাই না বলে ফেলেছি ওনাকে দৌড়ে পিছন থেকে গিয়ে ওনার পা ধরে।
আমাকে ক্ষমা করে দিন আমি না বুঝেই এসব বলে ফেলেছি।
সাইফঃ ভুলটা তাহলে বুঝতে পেরেছো তা তোমার জায়গা পায়ের নিচে না আমার এই বুকের মাঝে বলেই তুলে কোলে জরিয়ে ধরলাম
এর পর থেকে আমাদের সুখে দিন কাটতে লাগলো আমাদের মাঝে কেউ বাধা হয়ে দাড়ানোর মতো কেউ নেই সব বিপদ পেড়িয়ে আজ মুক্ত।
সমাপ্ত
আরো পড়ুন – বেলা শেষে তোমারি অপেক্ষায় – একটি প্রেমের গল্প
পাঠক আপনাদের জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত লিখে থাকি। আপনাদের আনন্দ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ। তাই এই পর্বের “ভালোবাসার কষ্টের গল্প কাহিনী” টি আপনাদের কেমন লাগলো পড়া শেষে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।