একবার বলো ভালবাসি – সিজন ১ । কষ্টের ভালোবাসার কাহিনী

একবার বলো ভালবাসি – কষ্টের ভালোবাসার কাহিনী: এক থাপ্পরে দাত ফেলে দেবো। বেয়াদব মেয়ে নাচতে নাচতে হাটলে। এরকম তো হবেই যত্তসব। মিলন হনহন করে চলে যায়। আর তখন থেকেই। বেচারীর মন খারাপ!
পর্ব ১
কলেজে এ মুখ ফুলিয়ে বসে আছে রোহিনী। Friend রা বেশ মজা নিচ্ছে। তার কারণ হচ্ছে রোহিনী। সবসময় সবাই কে পচায়। আজ ওকে কেউ পচিয়েছে। আর যে পচিয়েছে সে মিলন। মিলন হচ্ছে রোহিনীর ফুপ্পির ছেলে।
কিছুক্ষন আগে…..
দারুম দুরুম হাটছে রোহিনী।
লিয়াঃ রোহিনী আসতে হাট।
রোহিনীঃ নো ওয়ে আমি এভাবেই হাটবো।
নুরিঃ পড়ে গেলে বুঝবি কেমন লাগে।
রোহিনীঃ হাহ সো ফানি।
রুবেলঃ ফানি না? এক্ষুণি পড়বি।
বলতে না বলতে ধপাস। রোহিনী দুরুম করে নিচে পড়ে। আর পড়ে গিয়ে মিলনে’র উপড়।
মিলনঃ হোয়াট দা হেল? [রেগে]
রোহিনীঃ সরি সরি খেয়াল করিনি।
রোহিনী উঠে বসে এবার খেয়াল করে।
রোহিনীঃ তি মিলন ভাইয়া।
ভয়ে ভয়ে বলে কারণ। রোহিনী জানে মিলন অনেক রাগী। মিলন তো রেগে বোম।
মিলনঃ তুই?
রোহিনীঃ আল্লাহ আমাকে বাঁচাও। [মনে মনে]
মিলনঃ এটা কি করলি? [রেগে]
রোহিনীঃ আমি দেখিনি।
মিলনঃ দেখিনি মানে কি? চোখ কোথায় থাকে তোর? [মনে মনে]
রোহিনীঃ সরি ভাইয়া।
মিলনঃ এক থাপ্পরে দাত ফেলে দেবো। বেয়াদব মেয়ে নাচতে নাচতে হাটলে। এরকম তো হবেই যত্তসব। মিলন হনহন করে চলে যায়। আর তখন থেকেই। বেচারীর মন খারাপ!
এখন……
লিয়াঃ আচ্ছা হয়েছে এখন হাসি দে।
রোহিনীঃ পেত্নী, শাঁকচুন্নি হাসবো? কি করে হাসবো? ওই রাক্ষস আমাকে বকলো। আর তোরা কিছু বললি না। আবার এখন আমাকে হাসতে বলছিস? [রেগে]
নুরিঃ তোকে তো বললাম। রোহিনী এভাবে হাটিস না। তখন তো আমাদের কথা শুনলি না।
রুবেলঃ তুই তো জানিস বল। ভাইয়া কত রাগী!
রোহিনীঃ তোর আর তোর ভাইয়ের। গুষ্টির তুষ্টি।
লিয়াঃ আচ্ছা এখন ক্লাসে চল।
রোহিনীঃ হু হু।
রোহিনী আগে আগে চলে যায়। এবার পরিচয় দেই। গল্পের হিরোইন রোহিনী পুরো নাম। রোহিনী ইসলাম নাবিলা। বাবা বিজনেস ম্যান। রোহিনী এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার এ। বয়স ১৮ হয়নি। রোহিনী লম্বা ৫.৫”। গায়ের রং ফর্সা। চোখগুলো বড় বড় মায়াবী। ঠোঁট এমনিতেই লাল। চুল কোমড় পর্যন্ত। নাকের ডগায় একটা তিল আছে। সব মিলিয়ে খুব মিষ্টি মেয়ে। কলেজ এ অনেক ছেলে। রোহিনী কে প্রোপজ করেছে। রোহিনী পাত্তা দেয়না। কেন দেয়না পরে জানবেন।
মিলন এখনো রাগে গজগজ করছে। কেন জানি ও রোহিনী কে। একদম সহ্য করতে পারেনা।
মিলনঃ ফাজিল মেয়ে একটা। এটা কোনদিন ঠিক হবেনা। কেন যে এই কলেজ এ এলাম?
রোমানঃ কি হয়েছে?
মিলনঃ কিছুনা।
রশিদঃ তাহলে এমন ফোস ফোস করছিস কেন?
রোমানঃ কিছুতো হয়েছে।
মিলনঃ আরে আর বলিস না। কলেজ এ একটু আগে। আসতে না আসতে রোহিনী। আমাকে ফেলে দিয়েছে।
রোমানঃ রোহিনী মানে তোর বোন?
মিলনঃ বোন শয়তান মেয়ে একটা।
রশিদঃ আচ্ছা একটা কথা বল তো।
মিলনঃ কি?
রশিদঃ তুই রোহিনী কে সহ্য করতে পারিস না কেন?
মিলনঃ জানিনা শুধু জানি। ওকে আমার সহ্য হয়না।
রশিদঃ কেন? রুবেলে’র মতো রোহিনীও তোর বোন।
মিলনঃ আমার বোন ওর মতো না।
রোমানঃ আচ্ছা বাদ দে।
মিলনঃ চল তো।
আর ইনি গল্পের হিরো, মিলন চৌধুরী। মিলনে’র বাবাও বিজনেস ম্যান। মিলন এবার অনার্স ফাইনাল ইয়ার এ। বয়স ২৩ বছর। লম্বা ৬.২” গায়ের রং হলুদ ফর্সা। চোখগুলো খুব সুন্দর। দেখলে মনে হবে হারিয়ে যাই। চুলগুলো কালো সিল্কি। ঠোঁট ডার্ক রেড। খোচা খোচা দাড়ি। Crush লুক। অনেক মেয়ে পাগল। কিন্তু মিলন পাত্তা দেয়না।
ক্লাস শেষে বেরিয়ে আসে সবাই।
লিয়াঃ চল রোহিনী ফুসকা খাই।
রোহিনীঃ ওয়াও, চল চল।
নুরিঃ এখন?
রোহিনীঃ হ্যা।
রুবেলঃ না রে ভাইয়া বকবে দেখলে।
রোহিনীঃ আরে কিছু হবেনা চল।
৪জন মিলে ফুসকা খাচ্ছে। মিলন এসে হাজির হয়।
মিলনঃ এসব কি খাচ্ছিস?
রুবেল ভয়ে শেষ।
রোহিনীঃ দেখতে পাচ্ছো না?
মিলনঃ তোকে বলিনি।
রুবেলঃ ভাইয়া শোন না।
মিলনঃ এসব খাবার খেতে। তোকে বারন করেছি না?
রুবেলঃ আসলে।
মিলনঃ Shut up যা গিয়ে গাড়িতে বয়।
রোহিনীঃ খেতে এসেছে খেয়ে যাবে।
রোহিনীঃ তুই খা কেউ বারন করেনি। যত্তসব ফালতু।
রুবেল বুঝতে পারছে। মিলন এখানে থাকলে। রোহিনী কে অপমান করবে। তাই মিলন কে নিয়ে চলে আসে।
রোহিনীঃ চল আমরাও যাই।
নুরিঃ খাবিনা?
রোহিনীঃ খাওয়া হয়ে গিয়েছে।
টাকা দিয়ে রোহিনী বাড়ি চলে আসে।
রোহিনী’র মাঃ রোহিনী এসেছিস?
রোহিনীঃ হুম।
রোহিনী’র বাবাঃ মন খারাপ নাকি?
রোহিনীঃ না মা।
রোহিনী’র মাঃ তাহলে?
রোহিনীঃ কিছুনা আমি রুমে যাচ্ছি।
রোহিনী রুমে এসে দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়ে।
রোহিনীঃ এমন কেন করো মিলন? আমি কি করেছি? কেন আমার সাথে এমন করো? কেন আমাকে সহ্য হয়না তোমার? আমার যে খুব কষ্ট হয়। কোনদিন কি বুঝবে না? আমি তোমাকে ভালবাসি। অনেক ভালবাসি মিলন।
রোহিনী’র চোখ থেকে। টপটপ করে পানি পড়ছে। হ্যা রোহিনী মিলন কে ভালবাসে। সেটাও ২ বছর আগে থেকে। ভয়ে বলতে পারেনা।
রোহিনীঃ না আমি বলবো কালই বলবো। আমি তোমাকে ভালবাসি। অনেক ভালবাসি।
পর্ব ২
রোহিনী মিলন কে নিয়ে ভাবছিলো। তখন রোহিনী’র বাবা রোহিনী কে ডাকলো।
রোহিনী’র বাবাঃ রোহিনী মামনি দরজা খোলো।
রোহিনী চোখের পানি মুছে নিলো। কিন্তু তবুও দেখে বোঝা যাচ্ছে। যে রোহিনী কেঁদেছে। তাই ওয়াশরুমে গিয়ে। চোখে মুখে পানি দিয়ে এলো। তারপর দরজা খুললো।
রোহিনী’র বাবাঃ কি হয়েছে মামনি?
রোহিনীঃ কিছুনা বাবা।
রোহিনী’র বাবাঃ আমি কিন্তু বুঝেছি। আমার বাচ্চাটার মন খারাপ।
রোহিনীঃ না বাবা মন খারাপ না।
রোহিনী’র বাবাঃ আচ্ছা নিচে চলো খাবে।
রোহিনীঃ খেতে ইচ্ছে করছে না।
আরমানঃ এই পেত্নী কি হয়েছে তোর? [রোহিনী’র ভাই]
রোহিনীঃ হু আমি পেত্নী না।
আরমানঃ পেত্নী না হলে এভাবে। মুখ ফুলিয়ে আছিস কেন?
রোহিনীঃ বাবা ওকে বারন করো।
রোহিনী’র বাবাঃ আরমান চুপ করো।
আরমানঃ করলাম চুপ এখন খাবি চল।
রোহিনীও আর কথা না বারিয়ে। নিচে গিয়ে খেয়ে নিলো। মিলনও রুবেল কে নিয়ে। বাড়ি চলে এসেছে।
মিলনে’র মাঃ মিলন।
মিলনঃ হ্যা মা বলো।
মিলনে’র মাঃ তোমার বাবা তোমাকে ডাকছে।
মিলনঃ আচ্ছা যাচ্ছি।
মিলন ওর বাবা’র রুমে গেলো।
মিলনঃ ডাকছিলে বাবা?
মিলনে’র বাবাঃ হ্যা এসো বসো।
মিলন গিয়ে বসলো।
মিলনঃ বলো বাবা।
মিলনে’র বাবাঃ মিলন অনেক তো হলো। এত বছর আমি অফিস সামলেছি। এবার তুমি সামলাও। এই বয়সে আর এসব ভাল লাগেনা।
মিলনঃ বাবা আমি তো বলেছি। আমার স্টাডি শেষ হোক। এরপর তোমার বলতে হবেনা। আমি নিজেই অফিস দেখবো। আর তো মাএ ১বছর।
মিলনে’র মাঃ হ্যা গো ও তো ঠিকই বলেছে।
রুমে ঢুকতে ঢুকতে। মিলনে’র মা বললো।
মিলনে’র বাবাঃ আচ্ছা।
মিলনঃ বাবা তুমি আচ্ছা বলে। এরপর কয়েকদিন পর আবার বলো।
মিলনে’র বাবাঃ না রে বেটা আর বলবো না।
মিলনঃ ওকে।
মিলনে’র মাঃ যাইহোক শোনো। কাল ভাইয়া আর ভাবী আসছে।
মিলন যেতে গিয়েও দাড়িয়ে গেলো।
মিলনে’র বাবাঃ তাই নাকি? বেশ ভাল হলো। রোহিনী কে তো কতদিন দেখিনা।
মিলনঃ মানে রোহিনীও আসবে নাকি?
মিলনে’র মাঃ হ্যা তো ওকে কি রেখে আসবে?
মিলনঃ রেখে এলেই ভাল হয়।
মিলনে’র মাঃ আহ এসব কি কথা? তুই আমাকে বল তো। রোহিনী তোর কি করেছে? তুই ওর সাথে ওমন করিস কেন?
মিলনঃ এসব নিয়ে কথা বলতে চাইনা।
মিলন হনহন করে রেগে চলে আসে।
মিলনে’র মাঃ বুঝিনা কিছু।
মিলনে’র বাবাঃ আমিও এটা ভাবি মাঝে মাঝে।
মিলন রুমে বসে ফুসছে।
মিলনঃ ডিসগাস্টিং যাকে সহ্য হয়না। সে নাকি কাল এখানে আসবে। যত্তসব তাতে আমার কি? ওরা নিশ্চই কালই চলে যাবে। আমি কাল সকালে। রোমান’দের বাড়ি চলে যাবো। আর রাতে আসবো।
রোহিনী তো সেই খুশি। মিলন’দের বাড়ি যাবে বলে। রোহিনী ভেবে নিয়েছে। মিলন’দের বাড়ি গিয়ে। ও ওর মনের কথা মিলন কে বলবে।
রোহিনীঃ Yes কালই মিলন কে বলবো। আচ্ছা ও কি আমাকে মেনে নেবে? যদি না নেয় কি হবে? ধেত কি সব ভাবছি? মিলন ঠিক আমাকে মানবে। ইস মিলন ও নিশ্চই। আমাকে জড়িয়ে ধরে বলবে। আই লাভ ইউ টু রোহিনী।
রোহিনী এসব ভেবে ব্লাশিং হচ্ছে।
সকাল ১০টায় রোহিনী রেডি হচ্ছে। একটা কালো গাউন পড়েছে। ফর্সা আবার কালো পড়েছে। পুরোই পরী লাগছে। সবাই গিয়ে গাড়িতে বসলো। এরপর রওনা দিলো। অবশ্য বেশী দুরের পথ না।
মিলনও রেডি হয়ে বের হচ্ছে।
মিলনে’র মাঃ মিলন কোথায় যাচ্ছিস?
মিলনঃ মা আমি বাইরে যাচ্ছি।
মিলনে’র মাঃ আজ না গেলে কি হবে? তোকে না বললাম? রোহিনী’রা আসছে আজ।
মিলনঃ মা আমার দরকার আছে।
মিলনে’র মাঃ কোনো দরকার নেই। তোর মামা আর মামনি। তোকে বাসায় থাকতে বলেছে। আর আরমান ও আসছে। তুই না থাকলে ও একা বোর হবে।
মিলনঃ মা আমি চলে আসবো।
মিলন আর কিছু বলতে না দিয়ে। গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়।
রুবেলঃ মা ভাইয়া কোথায় গেলো?
মিলনে’র মাঃ কি জানি? বললো কাজ আছে।
রুবেলঃ কাজ না ছাই। রোহিনী আসছে বলে চলে গেলো।
মিলনে’র মাঃ হ্যা এটা আমিও বুঝেছি।
রুবেলঃ বুঝিনা রোহিনী কি করেছে? ওর কোন পাকা ধানে মই দিয়েছে। মাঝে মাঝে আমার প্রচুর রাগ লাগে।
মিলনে’র মাঃ আচ্ছা বাদ দে। রোহিনী’রা চলে আসবে। এসে এসব শুনলে কি ভাববে?
রুবেলঃ আচ্ছা।
মিলন গাড়ি নিয়ে রোমান’র বাড়ি গেলো।
রোমানঃ মিলন তুই?
মিলনঃ আসতে পারিনা?
রোমানঃ আরে সেটা কখন বললাম? ভালই হলো তুই এসেছিস।
রোমান’র মাঃ আরে মিলন বাবা।
মিলনঃ আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
রোমান’র মাঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম।
মিলনঃ কেমন আছেন?
রোমান’র মাঃ এইতো বাবা ভাল। তোমার বাড়ির সবাই কেমন আছে?
মিলনঃ জি ভাল আন্টি।
রোমান’র মাঃ রোমান যা ওকে নিয়ে উপড়ে যা।
মিলন রোমান’র রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
মিলনঃ রাতে চলে যাবো বুঝলি?
রোমানঃ কেন থাকবি না?
মিলনঃ না রে দোস্ত।
রোমানঃ থাকবি না তো এলি কেন?
মিলনঃ রোহিনী এসেছে আমাদের বাড়ি। ওরা আজই চলে যাবে। তারপর আমি বাড়ি যাবো।
রোমানঃ ওহ এই ব্যপার?
মিলনঃ হ্যা।
রোহিনী’রা চলে এসেছে।
মিলনে’র মাঃ রোহিনী কেমন আছিস মা?
রোহিনীঃ ভাল ফুপ্পি।
রোহিনী’র মাঃ হুম কত ভাল আছো তুমি।
মিলনে’র বাবাঃ কেন কি হয়েছে?
রোহিনী’র বাবাঃ আহ সে সব ছাড়ো। হ্যা রে মিলন কই? ওকে দেখছি না।
মিলনে’র মাঃ আসলে ভাইয়া ওর নাকি। দরকারি কাজ আছে। তাই একটু বেরিয়েছে।
আরমানঃ এটা কোনো কথা? আমি এখন একা কি করবো?
মিলন নেই শুনে রোহিনী’র মন খারাপ হয়ে গেলো।
রোহিনীঃ আমি এসেছি বলে চলে গিয়েছে? নাকি সত্যিই কাজ আছে? ধুর সত্যিই মে বি কাজ আছে। তবে মিলন কে বলতে হবে। [মনে মনে]
রুবেলঃ ওই তুই কি ভাবছিস?
রোহিনীঃ না কিছুনা।
রুবেলঃ চল আমরা উপড়ে যাই।
রোহিনীঃ হ্যা চল।
সারাদিন সবাই আড্ডা দিলো। কিন্তু মিলন এলো না। এটা নিয়ে রোহিনী’র মন খারাপ। আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো।
মিলনঃ এবার আমি যাই রে।
রোমানঃ থেকে যা না।
মিলনঃ না রে মা কে বলে এসেছি। যাবো আর আসবো। এখন তো সন্ধ্যা আসছি।
মিলন রোমান’র মা কে বলে চলে এলো। ড্রয়িংরুমে এসে মিলনে’র চোখ কপালে। সবাই বাচ্চাদের মতো ছুটোছুটি করছে।
মিলনঃ এরা আমার পরিবার?
রুবেলঃ আরে ভাইয়া তুই।
সবাই এবার তাকালো।
রোহিনী’র মাঃ মিলন?
মিলন গিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
মিলনঃ মামনি কেমন আছো তুমি?
রোহিনী’র মাঃ হয়েছে এত ভাব করতে হবেনা।
মিলনঃ এহ ভাব করছি না।
রোহিনী’র বাবাঃ তাহলে কোথায় ছিলি?
মিলনঃ মামা একটু কাজ ছিলো।
আরমানঃ শালা কি কাজ ছিলো রে?
মিলনঃ এই আমি তোর শালা কি করে হলাম?
মিলন সবার সাথে কথা বললো। শুধু রোহিনী বাদে। রোহিনী চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। রোহিনী নিজেই বললো,
মিলন ভাইয়া কেমন আছো?
মিলনঃ ভাল আছি।
ভদ্রতার খাতিরে বললো,
মিলনঃ মা আমি রুমে যাচ্ছি।
Dinner শেষ করে মিলন ছাদে গেলো। এটা ওর প্রতিদিনের অভ্যাস। রোহিনীও পা টিপে টিপে এলো।
রোহিনীঃ Come on রোহিনী। You can do it। তোকে পারতে হবে। আজ তো আমি বলবোই। [মনে মনে]
রোহিনী গিয়ে মিলনে’র পাশে দাড়ালো। মিলন ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
মিলনঃ তুই এখানে?
রোহিনীঃ আচ্ছা তুমি আমার সাথে। সবসময় এমন করো কেন? আমি কি দেখতে খারাপ?
মিলনঃ আমি কি তোর সাথে প্রেম করছি? তুই কেমন দেখতে? সেটা দিয়ে আমি কি করবো? [দাতে দাত চেপে]
রোহিনীঃ করতেও পারো।
মিলন হু হা করে হেসে দিলো।
রোহিনীঃ কি হলো?
মিলনঃ প্রেম আর তোর সাথে?
রোহিনীঃ কেন করা যায়না?
মিলনঃ জাস্ট শাট আপ। [রেগে]
রোহিনীঃ এমন কেন করো? আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি। প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিওনা। তুমি আমার সাথে ওমন করো। আমার খুব কষ্ট হয়। আই লাভ ইউ মিলন।
মিলন হা করে তাকিয়ে আছে।
মিলনঃ রোহিনী আর ইউ জকিং মি?
রোহিনীঃ না আমি Jokes করছি না। আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি। তোমাকে চাই মিলন। খুব করে চাই। অনেক ভালবাসি তোমাকে।
_ ঠাসসসসসসস!
মিলন ঠাস করে থাপ্পর মারলো রোহিনী কে। রোহিনী গালে হাত দিয়ে। ছলছল করে তাকিয়ে আছে।
মিলনঃ বেয়াদব মেয়ে তোর সাহস হলো কি করে? আমাকে এসব বলিস? আমার আগেই মনে হয়েছিলো। তুই ও ফালতু টাইপ। কি ভেবেছিস? নিজের রুবেল দেখিয়ে। আমাকে মিলন কে পাগল করোমান? আর যদি এসব বলিস। আমার থেকে খারাপ কেউ হবেনা।
মিলন ছাদ থেকে নেমে চলে যায়। রোহিনী গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।
রোহিনীঃ তোমার বুঝতেই হবে মিলন বেবি। আমি তোমাকে ভালবাসি।
পর্ব ৩
রোহিনী আরো কিছুক্ষণ ছাদে থেকে। নিচে রুমে এসে শুয়ে পড়লো!
সকালে সবাই বসে গল্প করছে। অনেকদিন পর এক জায়গায় সবাই। তাই কি করবে না করবে। এটা নিয়ে ভীষণ Excited!
রোহিনী’র মাঃ একি মিলন কোথায়?
রুবেলঃ মামী ও ঘুমানো!
রোহিনী’র মাঃ এখনো?
মিলনে’র মাঃ হ্যা আচ্ছা ওর কথা ছাড়ো। তোমাদের কিন্তু এবার। অনেকদিন থাকতে হবে!
রোহিনী’র বাবাঃ না রে পারবো না। আমরা আজই চলে যাবো!
রুবেলঃ কি?
আরমানঃ হ্যা আবার আসবো!
রোহিনী’র মাঃ কিন্তু আজ যেতে হবে।
রুবেলঃ কি রে রোহিনী? তুই কিছু বলছিস না কেন?
রোহিনী একটা অন্য কথা ভাবছিল!
রোহিনীঃ কি বলবো? তোরাই বল!
আরমানঃ ওই তো মিলন চলে এসেছে!
মিলন সিরি দিয়ে নামছে। গায়ে একটা লাল টি শার্ট। আর একটা থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পড়া। চুলগুলো একটু এলোমেলো। রোহিনী আরেকদফা Crush খেলো!
রোহিনীঃ ইস জানু তুমি এত কিউট কেন?[মনে মনে]
রুবেলঃ রোহিনী!
রোহিনীঃ হুম বল।
রুবেলঃ তুই যাকে দেখছিস। সে তো ওখানে না এখানে! [ফিসফিসিয়ে]
রুবেলে’র কথায় রোহিনী পাশে তাকালো। দেখলো মিলন বসা। আবার সিরির দিকে তাকালো!
রুবেলঃ আবার কি?
রোহিনীঃ না কিছুনা।
রোহিনী’র বাবাঃ আমরা আরেকটু পর বের হবো!
মিলনঃ বের হবে মানে?
আরমানঃ আমরা আজ চলে যাবো।
মিলনঃ কালই তো এলি আজই যাবি?
রোহিনী’র মাঃ হ্যা রে বাবা!
মিলনঃ কয়েকদিন থেকে যাওনা মামনি।
মিলনে’র বাবাঃ হ্যা এইতো এলে!
রোহিনী’র বাবাঃ একটা দরকারি কাজ আছে। রোহিনী গিয়ে Ready হয়ে নাও।
রোহিনীঃ আচ্ছা!
মিলনঃ এটা কি হলো? রোহিনী একবারে রাজী হয়ে গেলো? অন্য অন্যবার তো। এসে যেতেই চায়না! [মনে মনে]
আরমানঃ ওই তোর আবার কি হলো?
মিলনঃ কই কিছুনা!
মিলনে’র মাঃ আচ্ছা চলো Breakfast করে নাও।
মিলনঃ মা আমি পরে করবো।
মিলনে’র মাঃ কেন?
মিলনঃ এমনি!
আরমানঃ আচ্ছা আমিও Ready হয়ে আসছি,,, Then Breakfast করে বেরিয়ে যাবো।
রোহিনী’র বাবাঃ হুম যাও!
ওরা গিয়ে Ready হয়ে আসে!
রুবেলঃ এই রোহিনী তুই থেকে যা!
রোহিনীঃ Ready হয়ে আসার পর?
রুবেলঃ তাতে কি?
রোহিনী’র মাঃ রোহিনী চাইলে থাক,
রোহিনীঃ না মা আমিও যাবো!
Breakfast শেষে!
আরমানঃ আসছি ফুপ্পি!
মিলনে’র মাঃ আবার আসবি কিন্তু।
রোহিনী’র বাবাঃ হ্যা অবশ্যই!
এরপর ওরা বেরিয়ে বাড়ি চলে যায়!
পরেরদিন College এ!
লিয়াঃ যাক এলি তাহলে?
রোহিনীঃ কেন রে কতদিন আসিনি?
নুরিঃ সে যাইহোক।
রুবেলঃ কেন হবে কেন?
লিয়াঃ আচ্ছা শোন কাল তোরা। সন্ধ্যায় আমার বাড়ি আসবি!
রোহিনীঃ কেন?
লিয়াঃ কাল ভাইয়ার জন্মদিন। বাড়িতে পার্টি আছে।
রুবেলঃ কিন্তু সন্ধ্যায় কি করে?
লিয়াঃ আমি আন্টি কে বলে দেবো। তোদের বাড়ি কথা বলবো। চলে আসবি।
নুরিঃ আচ্ছা আমার তো মজা লাগছে!
রোহিনীঃ খেয়ে ফেল পেত্নী!
রুবেলঃ কি খাবে ও?
রোহিনীঃ ওমা বললো যে? ওর মজা লাগছে।
রুবেলঃ রোহিনী তুইও না!
রোহিনীঃ কি হ্যা?
রুবেলঃ কিছুনা মেরি বেহেন।
মিলন College এ এসে। রোহিনী’র কথা ওর Friend দের বলেছে!
রোমানঃ কি বলছিস সত্যি?
মিলনঃ আরে হ্যা কাল রাতে। আমি ছাদে দাড়িয়ে ছিলাম। তখন রোহিনী বললো। আমাকে নাকি ভালবাসে!
রশিদঃ তুই কি করলি?
মিলনঃ দিলাম এক থাপ্পর!
রশিদঃ কেন?
মিলনঃ ও এসব বলবে কেন?
রশিদঃ ভালবাসা কি পাপ নাকি? ও তোকে বলেছে তোর মারতে হবে?
রোমানঃ এই রশিদ তুই সবসময়। রোহিনী’র হয়ে সাফাই গাস কেন?
রশিদঃ রোহিনী আমার বোনের Friend। তাই আমি ওকে। আমার বোনের নজরে দেখি!
মিলনঃ আচ্ছা এসব ছাড়।
রোমানঃ হ্যা ছাড়!
রশিদঃ কাল আমার জন্মদিন। তোরা আসবি কিন্তু!
মিলনঃ অবশ্যই তোর জন্মদিন। আর আমরা থাকবো না?
রোমানঃ চলে আসবো দোস্ত!
সবাই বাড়িতে ম্যানেজ করে। লিয়া’দের বাড়িতে এসেছে!
রুবেলঃ বাবা অনেক ঝামেলা!
নুরিঃ হ্যা মা তো আসতেই দেবেনা।
রোহিনীঃ সে যা বলেছিস!
লিয়াঃ আচ্ছা চল সবার সাথে দেখা করোমান।
রোহিনীঃ হ্যা চল!
ওরা গিয়ে সবার সাথে দেখা করলো। সবশেষে রশিদে’র সাথে!
রোহিনীঃ Happy Birthday ভাইয়া!
রশিদঃ Thank you।
সবাই Wish করলো। একটু পর মিলন এলো। রোহিনী তো আবারও Crush খেলো। মিলন ব্লাক শার্ট পড়া। ব্লাক জিন্স প্যান্ট। হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি। চুলগুলো স্পাইক করা। কিছু সিল্কি চুল কপালে। ডার্ক রেড ঠোট!
মিলনও না চাইতে রোহিনী কে দেখছে। রোহিনী নীল একটা গাউন পড়া। গলায় নীল স্টোনের নেকলেস। কানে নীল ঝুমকো। ঠোটে হালকা লিপস্টিক। চুলগুলো কার্ল করে ছেড়ে দেয়া। ব্যাস এতটুকু সাজ!
রোমানঃ আচ্ছা কেক কাটবি না?
রোমান’র কথায় ওদের হুশ এলো!
মিলনঃ এটা কি করছিলাম আমি? এই মেয়েটাকে কেন দেখছিলাম? [মনে মনে]
রশিদঃ হ্যা বাবা আসুক।
রোহিনীঃ আমি একটু আসছি!
রুবেলঃ কোথায় যাবি?
রোহিনীঃ এসে বলছি!
রোহিনী Washroom এ গেলো। একটু পর বেরিয়ে এলো। হাটতে গিয়ে হোচট খেয়ে। পড়তে গেলেই কেউ ধরে ফেলে!
রোহিনীঃ আল্লাহ গো আমার কোমড়!
লোকটিঃ আপনার কিছু হয়নি।
রোহিনী চোখ বন্ধ করা ছিল। এবার তাকালো একটা ছেলে। নিঃসন্দেহে ছেলেটি কিউট!
রোহিনীঃ আপনি?
ছেলেটিঃ আমি কাদের।
রোহিনীঃ ওহ Thanks!
কাদেরঃ Welcome।
রোহিনী যেতে গেলেই ছেলেটি ডাকে!
রোহিনীঃ কি?
কাদেরঃ আপনার নাম?
রোহিনীঃ আমার নাম রোহিনী!
নাম বলেই রোহিনী চলে আসে!
কাদেরঃ রোহিনী Nice! [মুচকি হেসে]
Then কেক কাটার পর। সবাই অনেক মজা করে। মিলন, রোমান, রশিদ কথা বলছে। তারপাশেই রুবেল, রোহিনী, লিয়া, নুরি। ওরাও আড্ডা দিচ্ছে। হঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে। এসেই মিলনে’র সামনে বসে পড়ে!
লিয়াঃ স্নেহা।
লিয়া’র কথায় সবাই তাকায়। রোহিনী’র তো রাগে শরীর জ্বলছে!
রোহিনীঃ এই পেত্নী আবার কে? [মনে মনে]
মিলনঃ এটা কি করছেন?
স্নেহাঃ প্রথম দেখায় তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। I Love You মিলন। I Love You So Much। Please Accept Me!
সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। স্নেহা যথেষ্ট সুন্দরী। আর মর্ডান একটা মেয়ে। Party’র সবাই হ্যা বলতে বলছে। রোহিনী’র এসব দেখে রাগ লাগছে। মিলন পাশে তাকিয়ে। রোহিনী কে দেখলো!
রোহিনীঃ Please মিলন Accept করো না! [মনে মনে]
স্নেহা একটা হাত বাড়িয়ে দিলো। মিলন মুচকি হেসে। আসতে আসতে ওর হাত দিচ্ছে!
রোহিনীঃ No মিলন You can’t do this to me!
মিলনও স্নেহা’র হাতে হাত রাখলো। রোহিনী’র মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে!
মিলনঃ I Love You 2!
স্নেহা সবার সামনে মিলন কে জড়িয়ে ধরলো।
রোহিনী’র মনে হচ্ছে। কেউ ওর বুকে ছুড়ি চালিয়ে দিয়েছে। রোহিনী দৌড়ে ওখান থেকে চলে এলো!
রোহিনী রাস্তা দিয়ে হাটছে। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে অবাধ্য পানি। চোখগুলোও আজ বেইমানি করছে। মন যেন বলছে কার জন্য কাঁদিস?
রোহিনীঃ কেন এমন হলো? যে আমাকে ভালবাসে না। তাকে আমি কেন এত ভালবাসলাম? কেন এমন হয় আল্লাহ?
রোহিনী এসব ভাবতে ভাবতে। রাস্তার মাঝে চলে আসে। হঠাৎ একটা গাড়ি রোহিনী কে। ধাক্কা দিতে গেলেই। কেউ টান দিয়ে নিয়ে আসে। রোহিনী তাকিয়ে দেখে কাদের!
রোহিনীঃ আপনি?
কাদেরঃ এটা কি করছিলেন? এক্ষুণি Accident হয়ে যেতো!
রোহিনীঃ কি আর হতো? মরে যেতাম।
কাদেরঃ Are you ok? আপনাকে এমন লাগছে কেন?
রোহিনীঃ না কিছুনা আমি বাড়ি যাবো!
কাদেরঃ চলুন আমি দিয়ে আসছি।
রোহিনীঃ আমি যেতে পারবো!
কাদেরঃ আমি দিয়ে এলে তো Problem নেই!
রোহিনী কি করবে বুঝতে পারছে না। ও নিজের গাড়ি নিয়ে আসেনি। রুবেলে’র গাড়িতে ওরা এসেছে। তাই রাজি হয়ে গেলো!
রোহিনীঃ আচ্ছা চলুন।
কাদের খুশিতে গদগদ হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো!
পর্ব ৪
কাদের গাড়ি স্টার্ট দেয়। দুজনই চুপচাপ। হঠাৎ রোহিনী বলে!
রোহিনীঃ আপনি বাইরে ছিলেন? মানে আমি যখন চলে এলাম। তখন তো আপনি ছিলেন না!
কাদেরঃ হ্যা আমি বাইরে ছিলাম। আমার একটা ফোন এসেছিলো। By the way আপনি। এভাবে দৌড়ে চলে এলেন কেন? মানে ভেতরে কি হয়েছিলো?
রোহিনীঃ না কিছুনা!
কাদেরঃ Ok আপনি বলতে না চাইলে। আমি জোর করবো না!
রোহিনীঃ হুম!
কাদেরঃ পরিচয় তো হতে পারি?
রোহিনীঃ জ্বি আমি রোহিনী। রোহিনী ইসলাম নাবিলা!
কাদেরঃ আমি কাদের আহমেদ। এতদিন London এ ছিলাম। ২দিন আগেই এসেছি!
রোহিনীঃ রশিদ ভাইয়া কি হয় আপনার?
কাদেরঃ রশিদ আমার Friend। আসলে London এ যাবার পর। আর যোগাযোগ হয়নি। ওর যে নাম্বার আমার কাছে ছিলো। ওই নাম্বার হারিয়ে ফেলেছিলো। I mean ওই ফোন!
রোহিনীঃ ওহ!
কাদেরঃ আপনি Study করেন?
রোহিনীঃ হ্যা Inter 2nd year এ।
কাদেরঃ Well আপনার বাসায় যেতে। আর কত মিনিট লাগবে?
রোহিনীঃ এইতো একটু সামনে।
এদিকে রোহিনী না বলে চলে আসায়। রোহিনী কে সবাই খুজছে!
নুরিঃ কোথায় গেলো?
লিয়াঃ এখানে তো নেই।
রুবেলঃ মামী কে কি বলবো?
ওদের চিন্তিত দেখে। মিলন, রোমান আর রশিদ এলো!
মিলনঃ কি হয়েছে?
রুবেলে’র মিলনে’র উপড় রাগ লাগছে!
রুবেলঃ কি হয়েছে তোর না জানলেও হবে।
মিলনঃ এভাবে কথা বলছিস কেন?
লিয়াঃ আসলে ভাইয়া রোহিনী কে পাচ্ছিনা।
রশিদঃ মানে?
নুরিঃ ওকে খুজে পাচ্ছিনা।
মিলনঃ কখন থেকে?
নুরিঃ যখন ওই আপুটা। আপনাকে Propose করলো। আমরা তো সবাই দেখছিলাম। তখন রোহিনী ছিলো। এরপর তাকিয়ে দেখি নেই। এরপর আমরা খুজলাম। কিন্তু এখানে কোথাও নেই!
মিলনও এবার চিন্তায় পড়ে গেলো।
মিলনঃ Ohhh no রোহিনী তো আমাকে ভালবাসে। আর আমি ওর সামনে। স্নেহা’র Propose Accept করলাম। সেই রাগে ও কিছু করেনি তো? Damn it কি করবো এখন? [মনে মনে]
রোমানঃ আমাদের খোজা উচিত।
রশিদঃ হ্যা!
এরমাঝে স্নেহা এলো।
স্নেহাঃ তোমাদের এমন লাগছে? কিছু হয়েছে?
মিলনঃ হ্যা আমার বোন কে পাচ্ছিনা।
সবাই অবাক হলো। মিলন কখনোই রোহিনী কে। এভাবে বোন বলে না!
স্নেহাঃ তোমার বোন? তোমার বোন তো রুবেল।
মিলনঃ ও আমার Cousin রোহিনী।
স্নেহাঃ Ohhh my god তাহলে খোজো। চলো আমিও খুজছি!
মিলনঃ হ্যা চলো।
ওরা সব জায়গায় রোহিনী কে খুজলো। বাড়ির প্রত্যেকটা জায়গায়। পার্কিং সাইডেও খুজেছে। কোথাও নেই রোহিনী। থাকবে কি করে? রোহিনী তো বাড়ি চলে গিয়েছে!
স্নেহাঃ আচ্ছা ও বাড়ি যায়নি তো?
রুবেলঃ সেটা কি করে হতে পারে?
মিলনঃ কেন?
রুবেলঃ ও তো ওর গাড়ি নিয়ে আসেনি। আমার গাড়িতে আমরা এসেছি!
মিলনে’র এবার রাগ লাগছে!
মিলনঃ Where are you রোহিনী? কোথায় খুজবো তোকে? Disgusting আর কোথায় খুজবো?
রুবেলঃ তোর খুজতে হবেনা।
মিলনঃ তুই চুপ কর আর এই রোহিনী। ওকে পাই একবার। থাপ্পর মেরে সোজা করে দেবে। বেয়াদব ছিলো আর থাকবেও!
রশিদঃ মিলন হতেও তো পারে। ওর বিপদ হয়েছে!
মিলনঃ বিপদ হবে ওর? বিপদ ওকে দেখলে পালায়।
স্নেহাঃ মিলন এভাবে কেন বলছো? ও তোমার বোন হয়।
মিলনঃ Yeah unfortunately ও বোন হয়। নাহলে আমার বয়েই গিয়েছে। এভাবে ঘুরে ঘুরে ওকে খুজতে।
রুবেলঃ তুই খুজেছিস অনেক উপকার করেছিস। আর করতে হবেনা!
স্নেহাঃ মিলন এসব কি বলছে? [মনে মনে]
মিলনঃ আর খুজবো ও না।
স্নেহাঃ মিলন রিদে’র মতো না। অনেক আলাদা ওরা। [মনে মনে]
স্নেহা একটা দ্বীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
মিলনঃ আমি মামনি কে বলছি।
রুবেলঃ চিন্তা করবে তো!
মিলনঃ কি করার আছে?
মিলন রোহিনী’র মা কে ফোন দেয়।
রোহিনী’র মাঃ হ্যা মিলন বল।
মিলনঃ মামনি আসলে রোহিনী!
রোহিনী’র মাঃ ওহ রোহিনী? রোহিনী তো চলে এসেছে।
মিলনঃ কখন?
রোহিনী’র মাঃ সে অনেকক্ষণ হলো!
মিলনঃ Ok রাখছি।
মিলনে’র রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে।
রুবেলঃ কি হলো?
মিলনঃ দেখলি কত বড় ফাজিল?
লিয়াঃ কেন?
মিলনঃ আমাদের এখানে চিন্তায় ফেলে। উনি বাড়ি চলে গিয়েছে!
রুবেলঃ কি?
স্নেহাঃ আগেই বলেছিলাম।
মিলনঃ দেখ ওর কি করি আমি।
রুবেলঃ আচ্ছা এখন চল তাহলে!
স্নেহাঃ আমিও যাই।
মিলনঃ তুমি যেতে পারবে?
স্নেহাঃ হ্যা পারবো!
মিলনঃ Ok।
রুবেলঃ নুরি আয়!
মিলনঃ তুই তো গাড়ি নিয়ে এসেছিস। আমিও নিয়ে এসেছি। আরেকটা গাড়ি কে নেবে?
রশিদঃ এখানে পার্কিং সাইডে রাখ। কাল এসে নিয়ে যাবি।
মিলনঃ Ok!
এরপর নুরি কে নামিয়ে দিয়ে। ওরা বাড়ি চলে আসে!
রোহিনী’র চোখে ঘুম নেই। বারবার সেই দৃশ্য গুলো মনে পড়ছে। না চাইতেও চোখের সামনে ভেসে উঠছে!
পাঠক আপনাদের জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত লিখে থাকি। আপনাদের আনন্দ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ। তাই এই পর্বের “কষ্টের ভালোবাসার কাহিনী” টি আপনাদের কেমন লাগলো পড়া শেষে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
রোহিনীঃ কেন এমন হলো? এত ভালবাসি মিলন কে। চাইলেও ভুলতে পারছি না। ভালবাসা কি ভোলার জন্য? না ভোলার জন্য না। আমি মিলন কে ভালবাসি। তাই আমি ভুলবো না। কিছুতেই ভুলবো না!
এসব ভাবতে ভাবতেই। একসময় চোখ দুটো বুজে আসে!
সকালে রোহিনী College এ চলে যায়। মিলনও রশিদ’দের। বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে College এ চলে আসে। গাড়ি থেকে নেমেই। কারো সাথে ধাক্কা খায়। তাকিয়ে দেখে স্নেহা!
মিলনঃ স্নেহা তুমি?
স্নেহাঃ তুমি এখানে?
মিলনঃ আমি তো এই College এ পড়ি।
স্নেহাঃ আমিও তো কিন্তু আগে দেখা হয়নি!
অন্তরাঃ স্নেহা ও তো মিলন ভাইয়া।
স্নেহাঃ হ্যা আমার Boyfriend!
অন্তরাঃ What? [চেচিয়ে]
মিলনঃ কি হলো?
অন্তরাঃ না কিছুনা।
মিলন দুরে রোহিনী কে দেখলো বসা!
মিলনঃ তোমরা থাকো আমি আসছি।
স্নেহাঃ হুম!
মিলন যাওয়ার পর।
অন্তরাঃ এসব কি বলছিলি?
স্নেহাঃ কি?
অন্তরাঃ মিলন ভাইয়া তোর Boyfriend মানে?
স্নেহাঃ হ্যা কাল আমি ওকে Propose করেছি।
অন্তরাঃ কিন্তু স্নেহা তুই তো!
স্নেহাঃ Please অন্তরা Leave it।
অন্তরাঃ Ok!
মিলন হনহন করে রোহিনী’র সামনে যায়।
রোহিনীঃ তুমি?
মিলন হুট করেই। রোহিনী কে টেনে বসা থেকে দাড় করায়। মিলনে’র চোখদুটো লাল হয়ে আছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে রেগে আছে!
রুবেলঃ ভাইয়া কি করছিস?
মিলন রোহিনী কে দাড় করিয়েই। ঠাস করে এক থাপ্পর মারে। সবাই ওদের দিকে তাকায়। স্নেহাও চলে আসে। রোহিনী গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে!
স্নেহাঃ মিলন এটা কি করলে?
রোহিনীঃ মারলে কেন?
মিলনঃ সবাই কে চিন্তায় ফেলতে ভাল লাগে না? ফাজিল মেয়ে কাল না বলে কেন এলি? জানিস আমরা কত খুজেছি তোকে। [রেগে]
রোহিনী এসব শুনে হাসি দিলো!
রোহিনীঃ তুমিও খুজেছো?
মিলনঃ হ্যা খুজেছি!
রোহিনীঃ Ohhh my god তারমানে। তুমিও আমাকে ভালবাসো?
মিলন ভ্যাবাচ্যাকা খেলো!
স্নেহাঃ ও তো তোমাকে ভালবাসেই।
রোহিনীঃ তাহলে তুমি ওকে কেন Propose করলে?
স্নেহাঃ মানে?
রোহিনীঃ আমি মিলন কে ভালবাসি। সেটাও ২ বছর আগে থেকে। তুমি কাবাব মে হাড্ডি কেন হলে?
মিলন সহ সবাই অবাক।
নুরিঃ রোহিনী কি বলছে?
লিয়াঃ আমি তো জানতাম না!
রুবেলঃ আমি জানতাম ভালবাসে। কিন্তু ২ বছর আগে থেকে জানতাম না।
মিলনঃ রোহিনী আমাকে ২ বছর। আগে থেকে ভালবাসে? [মনে মনে]
স্নেহাঃ রোহিনী মিলন কে ভালবাসে? সেটাও ২ বছর আগে থেকে? এটা কি হলো? [মনে মনে]
স্নেহা আবার কিছু একটা ভাবলো!
স্নেহাঃ না আমি মিলন কে ছাড়তে পারবো না। আমার জন্য পারবো না। [মনে মনে]
রোহিনীঃ মিলন ওকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাকে ভালবাসি।
স্নেহাঃ রোহিনী ও তোমার ভাই হয়!
রোহিনীঃ তুমি চুপ করো। মিলন কিছু বলো!
মিলনঃ রোহিনী Stop this nonsense।
রোহিনীঃ No stop করবো না। I love you!
মিলন রেগে রোহিনী’র। আরেক গালে থাপ্পর মারলো।
মিলনঃ তোকে বারন করেছি না? আর কখনো এসব না বলতে? স্নেহা আমার Girlfriend। আমি ওকেই ভালবাসি!
মিলন স্নেহা’র হাত ধরে নিয়ে আসে। স্নেহা ও অবাক।
স্নেহাঃ মিলন আমাকে ভালবাসে? হায় আল্লাহ তাহলে কি আমি?
রোহিনীঃ চল ক্লাসে যাই!
রোহিনী এমন ভাব করছে। যেন কিছু হয়নি!
ওরা ক্লাসে গিয়ে ক্লাস করে বের হয়।
রুবেলঃ তুই ভাইয়া কে ২ বছর থেকে ভালবাসিস?
রোহিনীঃ হ্যা ওই তো তোর ভাই যাই!
রোহিনী দৌড়ে চলে আসে।
মিলনঃ তুই আবার?
রোহিনীঃ ও মিলন বলো না ভালবাসি!
মিলনঃ রোহিনী যা এখান থেকে।
রোহিনীঃ Please বলো ভালবাসি!
মিলনঃ Just shut up।
মিলন ওখান থেকে চলে যায়!
রোহিনীঃ আজ না হোক কাল। তুমিও আমাকে ভালবাসবে।
পর্ব ৫
রোহিনীঃ আজ না হোক কাল। তুমিও আমাকে ভালবাসবে!
রুবেলঃ তোর ভাবনা শেষ হলো?
রোহিনীঃ তোরা?
লিয়াঃ হুম তোর পেছনে এসেছি।
নুরিঃ তুই মিলন ভাইয়া কে। এতদিন হলো ভালবাসিস। পুরো ২ বছর থেকে। আর আমরাই জানিনা!
রুবেলঃ আসলেই রোহিনী তুই। আমাকেও তো বলিসনি।
রোহিনীঃ ভেবেছিলাম মিলন বুঝলেই। আমার ভালবাসায়। সারা দিলেই তোদের বলবো।
রুবেলঃ কিন্তু ভাইয়া তো বোঝেই না।
রোহিনীঃ বুঝবে একদিন বুঝবে।
লিয়াঃ এত Sure কি করে তুই?
রোহিনীঃ এটা আমার ভালবাসার প্রতি বিশ্বাস!
লিয়াঃ ঠিকাছে এখন চল।
নুরিঃ হুম চল।
মিলন রাগে ফোস ফোস করছে।
স্নেহাঃ মিলন এত রাগ করছো কেন?
মিলনঃ আরে রাগ করবো না? College এ সবার সামনে। রোহিনী বললো ভালবাসে আমাকে!
স্নেহাঃ মিলন এতে রাগার কি আছে?
মিলনঃ মানে?
স্নেহাঃ মিলন ভালবাসা পাপ না। রোহিনী তোমাকে ভালবাসতেই পারে। আমার মনে হয়না এতে। এত রেগে যাওয়া উচিত। তুমি শুধু শুধু রাগ করছো,,,
মিলনঃ সত্যিই কি তাই? শুধু শুধু রাগ করছি?
স্নেহাঃ একদম তাই আর।
মিলনঃ আর?
স্নেহাঃ আমার মনে হয় রোহিনী কে। ওভাবে থাপ্পর মারাও। তোমার ঠিক হয়নি। ছোট মেয়ে বুঝিয়ে বলতে পারতে!
স্নেহা’র কথাগুলো মিলন ভাবছে। খুব মন দিয়ে ভাবছে!
মিলনঃ আসলেই তাই বোঝাতে পারতাম। আমি তো কখনোই। রোহিনী কোন ভুল করলে। বুঝিয়ে ওকে ঠিক করতে বলিনি। চর থাপ্পরই মেরেছি। কিন্তু আমি কি করবো? আমার তো ওকে সহ্য হয়না। [মনে মনে]
স্নেহাঃ কি ভাবছো?
মিলনঃ আব না কিছুনা।
স্নেহাঃ আচ্ছা চলো যাই।
মিলনঃ Ok!
ওরা সবাই বাড়ি চলে যায়। রিদ ছাদে দাড়িয়ে। এক মনে আকাশ দেখছে। আকাশটা মেঘলা হয়ে আছে। একদম ওর মনের আকাশের মতো।
রিদঃ হাহ আকাশ এত মেঘলা কেন? ওর ও কি আমার মতো মন খারাপ? আমিও না কি ভাবছি। হয়তো বৃষ্টি নামবে।
বলতে না বলতেই। জোরে বৃষ্টি নামতে শুরু করলো। রিদ চোখের পানি ছেড়ে দিলো। এখন কাঁদতে আর বাধা নেই। চোখের পানি আজ বাধ মানছেনা। রিদ চিৎকার করে কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো!
রিদঃ Why? Why আল্লাহ? কেন হলো এটা? কেন চলে গেলো ও? এত ভালবাসলাম ওকে। ও বুঝলো না চলে গেলো। একটা ছোট্ট ভুলের জন্য। তাও যে ভুলটা আমি করিনি। ভুল বুঝে চলে গেলো। ভালবাসায় কেন এত কষ্ট? কেন?
রিদ অনেকক্ষণ কাঁদলো। এরপর উঠে দাড়ালো!
রিদঃ এত চেষ্টা করেছি। ভুলটা ভাঙাতে কিন্তু। তুমি সেটাও হতে দিলেনা। একবার আমাকে Explain ও করতে দিলেনা। কখনো বিশ্বাস করোনি আমাকে। আমিও আর কাঁদবো না। আমার বাঁচার উৎস। আমি পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু ভুলতে তো পারিনা তোমাকে!
রিদ আরো কিছুক্ষণ ছাদে থেকে। নিচে নেমে Change করে। বিছানায় গিয়ে বসলো। বিছানার পাশেই একটা মেয়ের ছবি। রিদ ছবিটা হাতে নিলো!
রিদঃ তোমাকে কখনো ভুলতে পারবো না। কারণ ভোলার জন্য ভালবাসিনি। কিন্তু তোমার স্মৃতি ঠিক ভুলবো।
রিদ ছবিটা উল্টো করে রেখে দিল।
রোহিনী বাড়ি এসে রুমে দরজা দিয়ে বসে আছে। ও যতই শক্ত দেখাক নিজেকে। মিলনে’র কথায় ওর খারাপ লাগে। কিন্তু সেটা প্রকাশ করেনা!
রোহিনীঃ ভালবাসলে বুঝি এত কষ্ট পেতে হয়? কই কেউ তো বলেনি এটা। মিলন কবে বুঝবে আমাকে? আমি মরার পর? আমার যে খুব কষ্ট হয়। মিলন কি সত্যিই। স্নেহা কে ভালবাসে? তাহলে আমি কি করবো? মিলন কে ছাড়া আমি বাঁচবো না। মরে যাবো আমি মরে যাবো!
মিলন বসে ম্যাগাজিন পড়ছে রুবেল এলো।
রুবেলঃ ভাইয়া একটা কথা বলবি?
মিলনঃ কি?
রুবেলঃ সত্যি বলবি কিন্তু।
মিলনঃ মিথ্যে বলিনা।
রুবেলঃ তুই কি সত্যিই স্নেহা কে ভালবাসিস?
মিলন চুপ করে আছে!
রুবেলঃ কি রে বল।
মিলনঃ হঠাৎ এই প্রশ্ন?
রুবেলঃ যা জানতে চাইছি সেটা বল।
মিলনঃ আমি তো স্নেহা কে ভালবাসি না। রোহিনী কে দেখানোর জন্য। ওর সাথে কথা বলি। কিন্তু রুবেল কে বলা যাবেনা। নাহলে নির্ঘাত রোহিনী কে বলবে। [মনে মনে]
রুবেলঃ বলবি না?
মিলনঃ হ্যা ভালবাসি স্নেহা কে?
রুবেলঃ সত্যি?
মিলনঃ Yeah।
রুবেলঃ ওহ!
রুবেল মন খারাপ করে চলে গেলো।
বিকেলে রোহিনী, আর ওর Friend রা। একটা পার্কে এলো ঘুরতে। ওরা মাঝে মাঝেই এখানে আসে!
রুবেলঃ বড্ড মিস করছিলাম।
লিয়াঃ হুম এবার বেশ কিছুদিন পর এলাম!
নুরিঃ হ্যা।
রোহিনী কিছু বলছে না।
রুবেলঃ ওই তোর কি হলো?
রোহিনীঃ কিছুনা চল বসি।
ওরা একটা বেন্চে গিয়ে বসলো।
_ তোরা?
কারো কথায় পেছনে তাকালো। তাকিয়ে দেখলো মিলন, রোমান, রশিদ। আর স্নেহাও আছে!
রুবেলঃ তোরা এখানে?
মিলনঃ আমিও তো তাই বলছি।
রুবেলঃ আমরা আগেও এসেছি।
লিয়াঃ তোমরা কখন এলে?
রশিদঃ আমরা এসেছি একটু আগে।
নুরিঃ আমরাও।
মিলনঃ নাকি এই মেয়েটা। আমাকে ফলো করে এসেছে?
স্নেহাঃ মিলন তুমি তো শুনলে। ওরা আগেও এসেছে। মানে ওরা ঘুরতে এসেছে!
মিলনঃ হয়তো ওদের মিথ্যে বলতে বলেছে।
রোহিনীঃ মানে?
মিলনঃ তুই ওদের মাথা খেয়েছিস।
রুবেলঃ ভাইয়া কি বলছিস?
রোহিনী মুচকি হাসলো।
মিলনঃ হাসছিস কেন?
রোহিনীঃ ভাবছি।
মিলনঃ কি? [রেগে]
রোহিনীঃ তোমাকে ভালবাসার অপরাধে। তুমি আমাকে আর। কি কি বলবে?
মিলনঃ মানে? [শান্ত গলায়]
রোহিনীঃ মানে কিছুনা কিন্তু মিলন। আমি তোমাকে বলছি। তুমি আমাকে ভালবাসবে। হ্যা এটা আমার বিশ্বাস। আর আমার বিশ্বাস। কখনো হারেনা হারবেও না। আর এটাতো ভালবাসার প্রতি। দেখো তুমিও আমাকে ভালবাসবে কিন্তু!
মিলনঃ কিন্তু কি?
রোহিনী আবারও মুচকি হাসলো!
রোহিনীঃ খুব বেশী দেরী না হয়ে যায়।
মিলনঃ মানে কি?
রোহিনীঃ মানে তুমি আমাকে ভালবাসলে। কিন্তু ততদিনে আমার মন থেকে। তোমার প্রতি যেই ভালবাসাটা আছে। সেই ভালবাসাটা হয়তো হারিয়ে গেলো!
মিলন চমকে গেলো। আর বুকের মধ্যে ধক করে উঠলো।
রোহিনীঃ তোমরা থাকো আমি যাই।
রুবেলঃ যাই মানে?
রোহিনী কাউকে কিছু বলতে দিলোনা। ওখান থেকে চলে এলো। তবে কাঁদতে কাঁদতেই এলো। আর মিলন এক ধ্যানে। রোহিনী’র যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো!
পর্ব ৬
মিলনঃ রোহিনী এসব কি বললো? সত্যিই কি ও আমাকে ভুলে যাবে? আমাকে আর ভালবাসবে না? [মনে মনে]
স্নেহাঃ মিলন কি ভাবছো?
স্নেহা’র ডাকে মিলনে’র ধ্যান ভাঙে।
মিলনঃ কি ভাবছিলাম এগুলো আমি? রোহিনী আমাকে ভুললেই কি? আর না ভুললেই কি? ওর কথা ভাবতে চাইনা। [মনে মনে]
স্নেহাঃ কি হলো?
মিলনঃ না কিছুনা।
রুবেলঃ লিয়া, নুরি আমিও যাচ্ছি। তোরা যাবি নাকি থাকবি?
লিয়াঃ না আমরাও যাবো।
নুরিঃ হ্যা চল!
মিলনঃ কেন ঘুরোমান না?
রুবেলঃ আমরা ৪জন এসেছিলাম। তোর জন্য একজন চলে গিয়েছে। তাই আমাদের ঘুরতে ইচ্ছে করছে না।
ওরা ৩জনও চলে আসে। আর রোহিনী বাড়ি গিয়ে। অনেক কাঁদছে কেন জানি? আজ কিছুতেই কান্না থামছে না!
রোহিনীঃ আমি কি এতই খারাপ? আমাকে কি একটুও ভালবাসা যায়না? মানছি ভালবাসো না তাই বলে। আমার সাথে এমন করবে? ভালবাসা তো পাপ না। তাহলে আমার বেলায় এমন কেন? কেন পাচ্ছিনা আমি যাকে ভালবাসি তাকে? আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।
কাঁদতে কাঁদতে রোহিনী ঘুমিয়ে পড়ে। মিলন’রা আরো কিছুক্ষণ থাকে। এরপর ওরাও চলে আসে। আর রুবেল’রা তো আগেই চলে এসেছে!
মিলনে’র মাঃ মিলন তুই এমন কেন?
মিলনঃ কেন? কি করলাম?
মিলনে’র মাঃ তুই রোহিনী কে কি বলেছিস?
মিলনঃ কি বলেছি?
রুবেলঃ কেন তুই বলিসনি? রোহিনী আমাদের মাথা খায়?
মিলনঃ মা আমি আসলে।
মিলনে’র মাঃ চুপ কর আমি জানি। তুই রোহিনী কে সহ্য করতে পারিস না। কিন্তু আমাকে বলতো। কেন পারিস না? কারণ কি?
মিলন চুপ করে আছে। কি বলবে ও? কোনো কারণই নেই যে বলবে!
রুবেলঃ কোনো কারণ থাকলে তো বলবে।
মিলনে’র বাবাঃ শোন মিলন আজকের পর। আর কখনো তুই রোহিনী’র সাথে। বাজে ব্যবহার করোমান না। কখনো ভেবেছিস? এতে মেয়েটা কত কষ্ট পায়। একটা বাচ্চা মেয়ে ও। তবুও কখনো ওর বাবা-মা। বা আরমানে’র কাছে বলেনি। যে তুই ওর সাথে এমন করিস!
মিলনে’র মাঃ এতেও তো তোর বোঝা উচিত।
মিলন হনহন করে উপড়ে চলে আসে। এতক্ষণ মিলন রেগেই ছিলো।
মিলনঃ তোকে আমি ভালবাসি না। তোর জন্য সবাই কথা শোনালো। এরপর যদি তুই আমার সামনে আসিস। আমি যে কি করবো তুই ভাবতেও পারোমান না! [রেগে]
রাতে কাদের ল্যাপটপে কাজ করছে। তখন ওর বাবা এলো!
কাদেরঃ কিছু বলবে বাবা?
কাদের’র বাবাঃ হ্যা তুই তো অফিসে মিলনেন হয়েছিস। এবার বিয়েটা করে নে বাবা।
কাদেরঃ বাবা এত তাড়াতাড়ি?
কাদের’র বাবাঃ তাড়াতাড়ি হোক আর যাই হোক!
কাদেরঃ বাবা আমি পরে তোমাকে বলবো।
কাদের’র বাবাঃ তুই কি কাউকে ভালবাসিস?
কাদের চমকে উঠলো। এরপর কিছু ভেবে জবাব দিলো।
_হ্যা বাবা ভালবাসি। অনেক ভালবাসি। এতটাই ভালবাসি যে!
কাদের’র বাবাঃ হয়েছে বুঝেছি এবার তাহলে। তাকে বিয়ে করে ফেল।
কাদের’র বাবা চলে যায়। কাদের একটা হাসি দেয়!
কাদেরঃ হ্যা বিয়ে করবো।
স্নেহা ব্যালকনিতে দাড়িয়ে আছে। সে এই ব্যস্ত শহর দেখছে। ব্যস্ত শহরটাতে কত কোলাহল। কত মানুষে’র আনাগোনা। টুপটুপ বৃষ্টি পড়ছে। সেই সাথে গড়িয়ে পড়ছে। স্নেহা’র চোখের অবাধ্য পানি। আর সেই পানি মুছে ফেলার। ব্যার্থ চেষ্টা করছে স্নেহা। কিন্তু পারছে না কিছুতেই!
স্নেহাঃ কেন রিদ? কেন ঠকালে আমাকে? পারিনা তোমাকে ভুলতে। কি করে ভুলি বলো? ভালবাসি যে তোমাকে। অনেক ভালবাসি তোমাকে। তোমাকে ভোলার জন্যই। মিলন কে Propose করেছি। কিন্তু তবুও ভুলতে পারছি না। তুমি তো আমাকে ভুলে গিয়েছো। কিন্তু আমি পারিনি ভুলতে। কেন করলে সেদিন ওমন?
রিদ তখন স্নেহা’র জন্যই কাঁদছিলো। ওরা দুজন দুজন কে ভালবাসে। একটা ভুল বোঝাবোঝির জন্য। দুজনই সমান কষ্ট পাচ্ছে। তবে কেন এসব হলো? সেটা পরে জানবেন।
স্নেহাঃ না আমি পারবো না। নিজের জন্য মিলন কে কষ্ট দিতে পারবো না। ভালবাসা হারালে কত কষ্ট হয়। সেটা আমি জানি। তাই আমি মিলন কে সব বলে দেবো। আর রোহিনী ওকে অনেক ভালবাসে। এটা আমি বুঝেছি। তাই মিলন কে বলবো। রোহিনী কে মেনে নিতে কালই বলবো!
লিয়া রশিদ কে ধমকাচ্ছে।
রশিদঃ তুই এমন করছিস কেন?
লিয়াঃ শোন ভাইয়া তুই। মিলন ভাইয়া’র সাথে মিশবি না!
রশিদঃ কেন?
লিয়াঃ মিলন ভাইয়া পচা।
রশিদঃ পচার কি করলো?
লিয়াঃ রোহিনী কে কত কষ্ট দিলো। কত কষ্ট দেয় দেখ। আমার খুব খারাপ লাগে।
রশিদ চুপ হয়ে যায়!
রশিদঃ আমার নিজেরই তো খারাপ লাগে। তোকে আর কি বলবো? [মনে মনে]
লিয়াঃ কি রে।
রশিদঃ আচ্ছা এখন তুই যা!
লিয়াঃ শুনবি কিন্তু আমার কথা।
লিয়া ওর রুমে চলে যায়। মিলন কে সমানে ডেকে যাচ্ছে আরমান। সেই যে বিকেলে ঘুমিয়েছে। এখনো ওঠেনি আরমানে’র ডাকে। রোহিনী পিটপিট করে চোখ খুললো।
রোহিনীঃ রাত হয়ে গিয়েছে?
মোবাইলে তাকিয়ে দেখে ৯টা বাজে।
রোহিনীঃ Omg এত ঘুমিয়েছি?
রোহিনী গিয়ে দরজা খুলে দিলো। আরমান রাগী লুক নিয়ে দাড়িয়ে আছে। রোহিনী দাত কেলিয়ে বললো!
_ বুঝলি ভাইয়া?
আরমানঃ কি বুঝবো? তুই তো এখনো কিছু বললি না। তার আগেই বলছিস। বুঝলি ভাইয়া?
আরমান হু হা করে হেসে দিলো। আর রোহিনী আবুল মার্কা। চেহারা নিয়ে দাড়িয়ে রইলো!
আরমানঃ যাইহোক Dinner করোমান না?
রোহিনী ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
রোহিনীঃ তুই গিয়ে গেল যা!
আরমান বুঝলো রোহিনী রেগে আছে।
আরমানঃ ওলে আমাল গুলুমুলু বনু। Sorry আর বলবো না। তোর যা ইচ্ছে বলিস কেমন?
রোহিনী ফিক করে হেসে দিলো।
আরমানঃ এবার চল।
রোহিনীঃ তুই যা আমি আসছি!
আরমান নিচে গেলো Fresh হয়ে রোহিনীও গেলো।
রোহিনী’র বাবাঃ রোহিনী কি হয়েছে তোর?
রোহিনীঃ কি হবে?
আরমানঃ বিকেলে এসেই দরজা দিলি।
রোহিনীঃ ঘুমিয়েছিলাম!
মেঘে’র বাবাঃ এতক্ষণ?
রোহিনীঃ হ্যা আর এসব বাদ দাও।
কেউ কথা বাড়ালো না। Dinner শেষ করে। রোহিনী নিজের রুমে চলে এলো!
পরেরদিন College এ রোহিনী বসা। পাশে ওর Friend রা!
রোহিনীঃ ওই তোরা থাক আমি আসছি।
লিয়াঃ কোথায় যাবি?
রোহিনীঃ একটু কাজ আছে।
রুবেলঃ আমরা আসবো?
রোহিনীঃ আরে না আমি এখনি চলে আসবো।
রোহিনী College এর সিরির কাছে যেতেই। কেউ রোহিনী’র চোখ পেছন থেকে ধরে!
রোহিনীঃ আরে কে?
লোকটাঃ তুমি বলো।
রোহিনী কন্ঠ শুনে বুঝলো!
রোহিনীঃ তুমি?
চোখ ছেড়ে দিলো।
রোহিনীঃ তুমি এখানে?
লোকটাঃ চলে এলাম বোনে’র কাছে।
রোহিনীঃ অভি ভাইয়া কত মিস করেছি!
অভি রোহিনী’র খালামনি’র ছেলে। মানে খালাতো ভাই। অভি একা ওর কোনো বোন নেই। রোহিনী কে বোনের মত ভালবাসে।
অভি রোহিনী কে জড়িয়ে ধরলো। রোহিনীও জড়িয়ে ধরলো। এসব মিলন দেখছে। কিন্তু অভি ঘুরে থাকার জন্য। ওর মুখ দেখতে পারছে না। রাগে মিলনে’র শরীর জ্বলছে। মিলন ওখান থেকে চলে আসে!
রোহিনীঃ ভাইয়া আমার চকলেট?
অভিঃ এখনো ভুলিসনি?
রোহিনী বাচ্চাদের মতো মাথা নাড়ালো। মানে না ভোলেনি!
অভিঃ আনতে পারিনি।
রোহিনী মুখ ফুলিয়ে রইলো। অভি এক বক্স চকলেট ধরলো রোহিনী’র সামনে!
রোহিনীঃ এত চকলেট? [খুশি হয়ে]
অভিঃ সব আমার বোনের।
রোহিনী বক্সটা হাতে নিলো।
রোহিনীঃ চলো বাসায় যাই!
অভিঃ তুই যা বাইরে গিয়ে দাড়া আমি আসছি।
রোহিনী অভি’র কথামত বাইরে আসে। বাইরে এসেই মিলন কে দেখে। এক দৌড়ে মিলনে’র কাছে যায়। মিলন রোহিনী’র হাতে চকলেট দেখে। আরো বেশী রেগে যায়।
রোহিনীঃ মিলন কি হয়েছে?
মিলনঃ যা এখান থেকে।
মিলনঃ আমি তোমাকে ভালবাসি। এটা কেন বোঝোনা তুমি?
মিলনে’র মনে পড়ে যায়। রোহিনী কাকে জড়িয়ে ধরেছিলো। মিলন ঠাস করে রোহিনী কে থাপ্পর মারে। এত জোরে মারে ঠোট কেটে রক্ত বেরিয়ে গিয়েছে। রোহিনী মাটিতে পড়ে যায়। রোহিনী ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে!
মিলনঃ কয়জন লাগে তোর?
রোহিনী অবাক মাঠের সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। রুবেল, লিয়া, নুরিও চলে এসেছে। পাশে স্নেহাও আছে!
রোহিনীঃ এসব কি বলছো?
মিলনঃ কি বলছি না? ছেলেদের সাথে ঢলাঢলি করতে ভাল লাগে? তোর যখন আশিক আছে। তাহলে আমার পেছনে পড়েছিস কেন? আর তোর কি লজ্জা সরম নেই? এত অপমান করি তোকে। তবুও সেই আমার পেছনে পড়ে আছিস। তোর মতো বেহায়া দুটো দেখিনি। এখন তো মনে হচ্ছে। তোর চরিএ ও খারাপ!
রোহিনী’র চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।
রুবেলঃ ভাইয়া কি বলছিস? চুপ কর এবার!
মিলনঃ কেন চুপ করবো?
রোহিনী নিচ থেকে উঠে দাড়ায়।
রোহিনীঃ ভালবেসেছিলাম তোমাকে। জীবনে প্রথম ভালবাসা তুমি। তাই এত অপমান করার পরও। তোমার পেছনে পড়েছিলাম। আজ তুমি আমার চরিএ নিয়ে কথা বললে। সত্যি আমি বেহায়া। তবে চিন্তা করো না। মিস্টার মিলন চৌধুরী। এই রোহিনী ভালবাসার দাবী নিয়ে। আর কোনদিন তোমার সামনে আসবে না। ভুলে যাবো আমি তোমাকে!
রোহিনী দৌড়ে ওখান থেকে চলে আসে। অভি সবটাই দেখেছে। অভি গিয়ে মিলন কে থাপ্পর মারে। থাপ্পর খেয়ে মিলন সামনে তাকায়।
মিলনঃ অভি ভাইয়া?
পর্ব ৭
_ ঠাসসসস!
মিলনে’র গালে অভি চর মারে। মিলন সামনে তাকিয়ে দেখে অভি।
মিলনঃ অভি ভাইয়া তুমি?
অভিঃ তোর সাহস কি করে হয়? আমার বোন কে আজেবাজে কথা বলিস?
মিলনঃ অভি ভাইয়া তুমি জানোনা রোহিনী।
অভিঃ কি জানবো হ্যা? কি জানবো? তুই এতক্ষণ রোহিনী কে। যা যা বলেছিস সব শুনেছি আমি। যেই মেয়ে কে তার পরিবারের কেউ। একটা ফুলের টোকা দেয়নি। সেই মেয়েকে তুই মারলি?
মিলনঃ আমি এমনি ওকে মারিনি!
অভিঃ কেন মেরেছিস?
মিলনঃ ভাইয়া ও একটা ছেলে কে।
অভিঃ তুই তাকে দেখেছিস?
মিলনঃ মুখ দেখিনি!
অভিঃ তাহলে এখন দেখে নে।
মিলনঃ মানে?
অভিঃ আমিই সে।
মিলনে’র মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।
মিলনঃ কি?
অভিঃ হ্যা আমি আমাকেই রোহিনী। জড়িয়ে ধরেছিলো। আর তুই ওকে কি বললি? ওর চরিএ খারাপ? তোর বিবেকে বাধলো না?
মিলন মাথা নিচু করে আছে। কি বলবে ও? বলার কিছু নেই।
অভিঃ এখন চুপ করে আছিস কেন? কিছু বল।
রুবেলঃ ও আর কি বলবে ভাইয়া? কিছু বলার মুখ আছে ওর? শুধু আজ না ও সবসময়। রোহিনী’র সাথে এমন করে!
অভিঃ কি বলছিস?
মিলনঃ এটা কি করলাম আমি? না জেনে রোহিনী কে চরিএ। নিয়ে কথা বললাম। আজ যেটা করেছি ঠিক করিনি। আমারই বা রাগ লাগছিলো কেন? [মনে মনে]
অভিঃ তুই ঠিক করলি না মিলন।
মিলনঃ আমি বুঝতে পারিনি!
রুবেলঃ আজ না হয় বুঝিসনি। অন্য সময়ও কি বুঝিস না?
স্নেহাঃ আসলেই মিলন। তুমি এটা ঠিক করলে না।
অভিঃ যাইহোক আমি আসছি!
অভি ওখান থেকে চলে আসে। মিলন অপরাধীর মতো তাকিয়ে আছে। আসলেই তো ও অপরাধী।
রুবেলঃ ছিঃ তোকে আমার। ভাইয়া বলতে লজ্জা করছে!
লিয়াঃ রোহিনী তোমার কি ক্ষতি করেছে? তোমাকে ভালবেসেছে। কাউকে ভালবাসা পাপ না। যে তোমাকে এত ভালবাসে। তাকে তুমি যা নয় তাই বললে?
নুরিঃ ও তোমাকে সত্যিই ভালবাসে। অনেক বেশী ভালবাসে ভাইয়া।
মিলন চুপচাপ চলে আসে। স্নেহা আর বলতে পারেনা। যে ও মিলন কে ভালবাসে না। এদিকে রোহিনী বাড়ি এসে। Shower এর নিচে বসে। হাউমাউ করে কাঁদছে!
রোহিনীঃ কাউকে ভালবাসা কি পাপ? কেন এমন হলো? জীবনে প্রথম যাকে এত ভালবাসলাম। সে আমাকে চরিএহীন বললো? যাকে আমি পাবোই না। তার প্রতি আমার মনে। কেন ভালবাসা সৃষ্টি করলে আল্লাহ? কেন?
রোহিনী সমানে ভিজে যাচ্ছে। মিলনও বাড়ি চলে আসে। ওর আজ নিজেকে অপরাধী লাগছে!
মিলনঃ কেন না জেনে রোহিনী কে মারলাম? কেন চরিএ নিয়ে কথা বললাম? খুব বড় ভুল করে ফেললাম আমি। রোহিনী কি আমাকে ক্ষমা করবে?
মিলন এসব ভাবছিলো। হঠাৎ মিলনে’র মা ঝড়ের গতিতে। এসেই মিলন কে থাপ্পর মারে। মিলন চরম অবাক হয়। কারণ ওর মা কখনোই। ওকে মারেনি তাহলে আজ?
মিলনঃ মা তুমি?
মিলনে’র মাঃ তুই রোহিনী কে অপমান করেছিস? ওর চরিএ নিয়ে কথা বলেছিস? কি করে পারলি রে? তোর বিবেকে বাধলো না? ওকে আপন ভাবতে না পারিস। পর ভাবার অধিকার তোকে কে দিয়েছে? আমি তো ভাবতেই পারছি না।
মিলনঃ মা বিশ্বাস করো। আমি বুঝতে পারিনি। না বুঝে এসব বলে ফেলেছি!
মিলনে’র মাঃ চুপ কর তুই তোকে চিনি। তুই কখনো মেয়েটা কে। সহ্য করতে পারিস না। কেন রে কি ক্ষতি করেছে ও তোর? তোর কোন পাকা ধানে মই দিয়েছে? কেন সবসময় এমন করিস?
মিলনঃ মা আমাকে ক্ষমা করে দাও।
মিলনে’র মাঃ আমি ক্ষমা করার কে? যার সাথে অন্যায় করেছিস। তার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইবি!
মিলনঃ ও কি ক্ষমা করবে?
মিলনে’র মাঃ সেটা ও বুঝবে।
মিলনে’র মা চলে যায়। আর মিলন গিয়ে বিছানায় বসে পড়ে। অভি রোহিনী’দের বাড়ি চলে আসে!
রোহিনী’র মাঃ অভি তুই?
অভিঃ খালামনি কেমন আছো?
রোহিনী’র মাঃ এতদিন পর মনে পড়লো?
আরমানঃ অভি ভাইয়া কখন এলে?
অভিঃ মাএ রোহিনী কোথায়?
আরমানঃ রোহিনী ওর রুমে যাও!
অভি তাড়াতাড়ি রোহিনী’র রুমে চলে আসে। রুম ভেতর থেকে আটকানো।
অভিঃ রোহিনী দরজা খোল!
রোহিনী এখনো ভিজছে। আর কেঁদে যাচ্ছে।
অভিঃ রোহিনী শুনতে পাচ্ছিস?
রোহিনী অভি’র ডাক শোনে।
রোহিনীঃ না কাউকে বুঝতে দেয়া যাবেনা।
রোহিনী বেরিয়ে দরজা খুলে দেয়!
অভিঃ তুই ভেজা কেন?
রোহিনীঃ ভাইয়া shower নিয়েছি।
অভি বুঝতে পারছে। রোহিনী লুকাতে চাইছে ওর কান্না। তাই ও আর কথা বাড়ায় না!
অভিঃ আচ্ছা Change করে নে।
রোহিনীঃ হুম!
অভি চলে যায় রোহিনী দরজা আটকে দেয়। এরপর Change করে নেয়। স্নেহা’র খুব খারাপ লাগছে। রোহিনী’র জন্য!
স্নেহাঃ ইস মেয়েটা কত কষ্ট পেলো। অতটুকু একটা মেয়ে। কি কি সহ্য করতে হলো। মিলন কে বলাও হলোনা। কিন্তু কি করে বলবো? মিলন যদি না মানে? ও কি আমাকে ভালবাসে? ওই দিন তো বললো। কিন্তু আমি আর পারবো না। এই মিথ্যে সম্পর্ক টানতে পারবো না। আমার যে করেই হোক। মিলন কে সব বলতে হবে। আর ওকে বোঝাতে হবে। ও রোহিনী’র প্রতি একটু হলেও দূর্বল। তাই তো ও আজ রোহিনী কে। অন্য ছেলের সাথে দেখে ওভাবে রেগে গেলো। যদিও ছেলেটা ওর ভাই। কিন্তু মিলন তো জানতো না!
পাঠক আপনাদের জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত লিখে থাকি। আপনাদের আনন্দ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ। তাই এই পর্বের “কষ্টের ভালোবাসার কাহিনী” টি আপনাদের কেমন লাগলো পড়া শেষে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
রাত ১১টা বাজে। মিলনে’র চোখে ঘুম নেই। কেন নেই সেটা বুঝতে পারছে না।
মিলনঃ কি হচ্ছে এসব? কেন রোহিনী কে নিয়ে ভাবছি আজ? ভুল করেছি ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবো। কিন্তু বারবার ওকে মনে পড়ছে কেন? ওর হাসি, ওর কান্না মাখা Face। বিশেষ করে আজকের কান্না। কেন মনে পড়ছে এত?
রোহিনীও ছাদে দাড়িয়ে আছে। পাশেই অভি দাড়ানো। অভি মাঝে মাঝেই রাতে। ছাদে সময় কাটায়। আজও এসেছিল এসে দেখে রোহিনী!
অভিঃ এতরাতে ছাদে কি করিস?
রোহিনীঃ ঘুম আসছে না তাই এসেছি।
অভিঃ শুধু কি তাই?
রোহিনীঃ হ্যা!
অভিঃ লুকাতে চাইছিস?
রোহিনীঃ মানে?
অভিঃ মিলন কে ভালবাসিস?
রোহিনী অবাক চোখে তাকায়।
রোহিনীঃ তুমি কি করে জানো?
অভিঃ আজ College এ যা হয়েছে। তোর আর মিলনে’র সব কথা। আমি শুনেছি ও তোকে মেরেছে!
রোহিনী’র চোখ থেকে পানি পড়ছে। ঠোট চেপে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে।
অভিঃ পারোমান না কান্না আটকাতে!
রোহিনী অভি কে জড়িয়ে ধরে। চিৎকার করে কেঁদে দেয়। ছাদে তাই কেউ শুনছে না। আর অভি জানতো এমন কিছু হবে। তাই ও ছাদের দরজা আটকে দিয়েছে।
অভিঃ রোহিনী এভাবে কাঁদিস না।
রোহিনীঃ ভাইয়া কেন এমন হলো? আমি তো ওকে এত ভালবাসি। ও আমাকে বুঝলো না? ভাইয়া সবাই বলে। ভালবাসা নাকি বাঁচতে শেখায়। কিন্তু সেই ভালবাসা যে। মানুষ কে তিলে তিলে শেষ করে দেয়। এটা কেন বলেনি? আমি কি করবো এখন? তুমি আমাকে বলে দাও।
অভি কি বলবে বুঝতে পারছে না। অভি’র চোখ থেকেও পানি পড়ছে। অনেক ভালবাসে রোহিনী কে!
রোহিনী কাঁদতে কাঁদতে Senseless হয়ে যায়।
অভিঃ রোহিনী এই রোহিনী Ohhh God। ও তো Senseless হয়ে গিয়েছে!
অভি রোহিনী কে কোলে নিয়ে। রুমে চলে আসে রোহিনী কে। বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চলে যায়। ইচ্ছে করেই Sense ফেরায় না। তাহলে আবার কাঁদবে রোহিনী। একটু কষ্ট মুক্ত থাকুক!
পরেরদিন রোহিনী নিচে নেমে আসে। একদম হাসি খুশি স্বাভাবিক। যেন কিছু হয়নি অভি অবাক হয়!
আরমানঃ কোথায় যাচ্ছিস?
রোহিনীঃ College এ Obviously।
রোহিনী’র মাঃ খেয়ে যা।
রোহিনীঃ মা দেরী হয়ে যাবে আসছি!
রোহিনী অভি কে বলে চলে আসে। College এ ও রোহিনী’র Friend রা। রোহিনী কে এত স্বাভাবিক দেখে। ভীষন অবাক হয়। মিলন রোহিনী কে দেখে খুশি হয়ে যায়।
মিলনঃ রোহিনী কে Sorry বলতে হবে।
রোহিনী দৌড় মারে হঠাৎ। মিলন মুচকি হেসে দেয়!
মিলনঃ পাগলি আমি জানি তো। তুই আমার উপড় রাগ করে। কিছুতেই থাকতে পারোমান না।
মিলনও সামনে এগিয়ে যায়। কিন্তু রোহিনী মিলন কে ক্রস করে। মিলনে’র পেছনে কাদের’র কাছে চলে যায়। মিলন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে!
কাদেরঃ আরে আসতে পড়ে যাবে তো।
রোহিনীঃ আপনি এখানে?
কাদেরঃ হুম চলে এলাম!
রোহিনীঃ ভাল করেছেন ওইদিন। আপনাকে Thanks দেয়া উচিত ছিলো। সেটা না করেই চলে গেলাম!
কাদেরঃ আরে কোন ব্যাপার না।
রোহিনীঃ চলুন বসি।
কাদেরঃ Ok চলো।
মিলনে’র রাগ লাগছে। রোহিনী কে কাদের’র সাথে দেখে।
মিলনঃ এই ছেলেটা আবার কে?
এরমাঝে মিলনে’র ফোন বেজে ওঠে। মিলন দেখে স্নেহা ফোন করেছে। মিলন বিরক্তি নিয়ে ফোন ধরে।
মিলনঃ স্নেহা পরে কথা বলছি।
স্নেহাঃ মিলন আমি আজ College এ আসিনি। তোমার সাথে আমার কথা আছে। খুব Important তুমি। Please কফিশপে চলে এসো। দেরী করো না Please!
মিলন একবার রোহিনী কে দেখে। এরপর চলে যায় Important বলেছে। বলেই মিলন এসেছে!
মিলনঃ কি বলবে?
স্নেহাঃ রাগ করবে না Please। এটা বলা খুব জরুরী।
মিলনঃ বনিতা না করে বলো।
স্নেহাঃ মিলন আমি তোমাকে ভালবাসি না।
মিলনঃ মানে?
স্নেহা মিলন কে সব খুলে বলে। মিলন ও স্নেহা কে ভালবাসে না। তাই ও কষ্ট পাচ্ছেনা!
স্নেহাঃ Please কষ্ট পেয়োনা।
মিলনঃ সত্যি বলতে আমিও তোমাকে ভালবাসি না। রোহিনী কে দেখানোর জন্যই। তোমার সাথে নাটক করেছি!
স্নেহাঃ আমার সাথে Relation করেও। আমাকে কেন ভালবাসোনি জানো?
মিলনঃ কেন?
স্নেহাঃ কারণ তুমি রোহিনী কে ভালবাসো।
মিলন চমকে ওঠে!
মিলনঃ What are you crazy?
স্নেহাঃ এটাই সত্যি মিলন নাহলে তুমি বলো। রোহিনী কে অন্য কোনো ছেলের সাথে। কথা বলতে দেখলে। জড়িয়ে ধরতে দেখলে। তুমি এত রেগে যাও কেন?
মিলনঃ জানিনা।
স্নেহাঃ তুমি নিজেও বুঝতে পারছো না। তুমি ওকে ভালবেসে ফেলেছো!
মিলনঃ আমি যাচ্ছি।
মিলন আবার College এ যায়। গিয়ে রোহিনী’র সামনে দাড়ায়। রোহিনী পাশ কাটিয়ে আসতে গেলেই। মিলন দাড়াতে বলে!
মিলনঃ রোহিনী আমাকে ক্ষমা করে দে।
রোহিনী হো হো করে হেসে দেয়!
রোহিনীঃ কিসের জন্য? এতদিন আমাকে অপমান করেছো তার জন্য? নাকি কাল চরিএ নিয়ে কথা বলেছো তার জন্য?
মিলনঃ রোহিনী please।
রোহিনী হাত দিয়ে থামিয়ে দেয়।
রোহিনীঃ আমার কোন অভিযোগ নেই। তুমি আমার সামনে না এলে। আমি খুশি হবো আসছি!
মিলন Just শকড। রোহিনী’র কথা শুনে!
মিলনঃ রোহিনী এটা কি বললো? আমি যেন ওর সামনে না যাই? যাবোনা না গেলে কি হবে?
মিলন রেগে বাড়ি চলে আসে। কিন্তু কিছুই ভাল লাগছে না!
৭দিন পর মিলন College এ দাড়ানো। স্নেহা আসেনি। রোহিনী কাদের’র সাথে কথা বলছে। মিলন অসহায়ের মতো দেখছে। মিলন এই ৭দিন অনেক বার। রোহিনী’র কাছে ক্ষমা চেয়েছে। প্রতিবার রোহিনী Ignore করেছে। রোহিনী অনেকক্ষণ পর চলে যায়। মিলনও বাড়ি চলে যায়। রাতে ব্যালকনিতে দাড়ানো মিলন। তখন রুবেল আসে রুবেল এসে পাশে দাড়ায়। মিলন একবার তাকিয়ে। আবার চোখ ফিরিয়ে নেয়!
রুবেলঃ ভালবাসিস রোহিনী কে?
মিলন রুবেলে’র দিকে তাকায়। মিলন ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে!
রুবেলঃ কি হলো বল ভালবাসিস?
মিলনঃ আগে কেন বুঝলাম না?
রুবেলঃ রোহিনী একদিন বলেছিলো মনে আছে? তুইও একদিন ওকে ভালবাসবি। কিন্তু হয়তো দেরী হয়ে যাবে।
মিলনঃ না রুবেল এভাবে বলিস না। আমি রোহিনী কে ভালবেসে ফেলেছি। দেরী হতে পারেনা কি করবো এখন?
মিলন বাচ্চাদের মতো কেঁদে দিয়ে নিচে বসে পড়ে।
রুবেলঃ এটাই নিয়তি ভাইয়া। কিছুদিন আগেও এই জায়গায় রোহিনী ছিলো। আর আজ তুই আছিস!
চলবে
একবার বলো ভালবাসি
লেখিকাঃ তিশা ইসলাম নাবিলা
আরো পড়ুনঃ
একবার বলো ভালবাসি – সিজন 2 । ভালবাসার অপমৃত্যু