ম্যাডাম যখন বউ – দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার গল্প – পর্ব ১: প্রেম নাকি বয়স মানে না, কখন কার উপরে এসে এই প্রেম ভালবাসা অত্যাচার শুরু করবে তা কেউ বলতে পারে না। জাত পাত, ধর্ম, বয়স সব কিছুকে অতিক্রম করে মনের ভিতর যখন কাউকে দেখার ও কাছে পাবার প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা বাঁধে কথন সেই সম্পর্কটাকে প্রেম বা ভালবাসা বলতে দ্বিধা নেই কারো। এমনি এক পাগল ও দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসার গল্প আজ আমরা শুনব। চলুন তবে শুরু করা যাক।
লাভ এট ফাস্ট সাইট
আড্ডার ফাকে এক সুন্দরী ললনার দিকে গেটের দিকে চোখ পড়ল পলাশের। রিক্সাওয়ালার সাথে ঝগড়া করতেছে একটা মেয়ে। মেয়ে বললে ভুল হবে। ডানাকাটা পরী। পলাশের মনে হল, কোন পরী আকাশ থেকে মাটিতে নেমে এসেছে। সাদা ড্রেস এ আরো মেয়েটাকে সুন্দর লাগতেছে। মেয়েটাকে দেখে পলাশের বুকের ডান পাশটা কেমন যেন করে উঠল। মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ী দিয়ে পিটাচ্ছে।
মিশুঃ কিরে থ মেরে গেলি যে?
পলাশঃ দোস্ত, আমি শেষ।
রফিকঃ কি কস! চল্লিশা কবে? অনেক দিন চল্লিশা খাই না।
পলাশঃ হারামজাদা, এইদিকে আয় চল্লিশা খায়াইতেছি।
রফিকঃ কি হইছে ক তো?
পলাশঃ ক্রাশ খাইছি।
মিশু ও রফিকঃ কি কস! তুই ক্রাশ খাইছো!
পলাশঃ ক্যান, আমি কি ক্রাশ খাইতে পারি না?
রফিকঃ সেই ভাগ্যবতী মেয়েটা কেরে?
পলাশঃ ঐ দেখ। (পলাশ আন্ঙুল উঠিয়ে দেখাল)
রফিকঃ দোস্ত, পরী।
মিশুঃ উহু। ডানা কাটা পরী।
পলাশঃ তোরা বস। আমি আসতেছি।
রফিকঃ কই যাস?
পলাশঃ বয়, আইতাছি।
মিশু ও রফিকঃ তাড়াতাড়ি আসিস।
প্রথম কথা
পলাশ ওদের কথার রিপ্লাই না দিয়েই উঠে গেল সুন্দরী ললনার দিকে। যাওয়ার সময় গাধা ফুল গাছ থেকে একটা ফুল ছিড়ে নিয়ে গেল। কাছে গিয়ে শুনতে পেল ভাংতি নিয়ে ঝগড়া হইতাছে। কাছে গিয়ে পলাশ বলল,
পলাশঃ আমার কাছে ভাংতি আছে।
মেয়েটাঃ ধন্যবাদ।
তারপর মেয়েটা পলাশের কাছ থেকে ভাংতি নিয়ে রিক্সা ভাড়া দিয়া চলে যেতে লাগল। পলাশ পিছন থেকে ডাক দিল,
পলাশঃ এই যে শুনো।
মেয়েটাঃ জ্বী, আমি!
পলাশঃ হুমমমম, তুমি।
মেয়েটাঃ বলেন।
পলাশঃ জানো, আমি রাতে ঘুমাইতে পারি না।
মেয়েটাঃ তো আমি কি করতে পারি?
পলাশঃ তুমি কি আমার ঘুম পাড়ানি হবে?
মেয়েটাঃ মানে?
পলাশঃ মানে, মানে হচ্ছে আমার আব্বুর একটা বৌমা দরকার।
মেয়েটাঃ তো?
পলাশঃ তুমি কি আমার আব্বুর বৌমা হবে?
মেয়েটাঃ কি! আপনি কি বলতে চাচ্ছেন ক্লিয়ারলি বলেন।
পলাশঃ আই লাভ ইউ।
মেয়েটাঃ নাম কি?
পলাশঃ পলাশ আহমেদ।
মেয়েটাঃ কোন ইয়ার?
পলাশঃ সেকেন্ড ইয়ার।
মেয়েটাঃ হুমমমমমম।
আর কিছু না বলেই চলে গেল সুন্দরী ললনা। পলাশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার যাওয়া দেখছিলো। কয়েকবার ডাক দিয়েছিল,
পলাশঃ এই মেয়ে, তোমার নামটা তো বলে যাও।
পছন্দের পরী যখন ম্যাম
মেয়েটা পলাশকে পাত্তা না দিয়ে চলে গেল। ভাল্লাগতাছে না পলাশের। আহ, কি ভয়েস! পুরাই পারফেক্ট এই রকম মেয়েই তে পলাশ খুজতেছিল। মেয়েটা কে পলাশের চাই চাই।
পলাশঃ চল, ক্লাসে যাই।
রফিকঃ মানে? তুই বাংলা ক্লাস করবি?
পলাশঃ হুমমম, চল।
মিশুঃ কোনদিন করছোস বাংলা ক্লাস?
পলাশঃ তোরা যাবি? গেলে আয়, না গেলে থাক।
কথাটা বলেই পলাশ ক্লাসের দিকে হাঁটা শুরু করল। ঘণ্টা পড়ে গেছে। পলাশের পিছন পিছন মিশু আর রফিকও হাঁটা শুরু করল।
ক্লাসে পিছনের দিকের একটা বেঞ্চে বসল ওরা তিনজন। ক্লাসেও ভাল্লাগতাছে না পলাশের। ক্লাস থেকে বের হতে যাবে এমন সময় প্রিন্সিপাল স্যার ক্লাসে ঢুকলেন। পিছন পিছন ওই মেয়েটাও ঢুকল। মেয়েটা দেখেই দাড়ানো বসে পড়ল পলাশ। মনে মনে ভাবতে লাগল, যাক, মেয়েটা ওদের ক্লাসেই ভর্তি হইছে। যাক, ভালোই হলো। প্রিন্সিপ্যাল স্যার বল্লেন,
প্রিন্সিপ্যাল স্যারঃ এই হচ্ছে কল্পনা। আমাদের কলেজ থেকে গতবছর বাংলাতে অনার্স শেষ করছে। এই বছর আবার আমাদের কলেজেই বাংলার লেকচারার নিযুক্ত হইছে। আজ থেকে ইনি তোমাদের বাংলা ক্লাস নিবেন।
প্রিন্সিপালের কথা শুনে পলাশ থ মেরে গেল। সাথে মিশু আর রফিকও। মেয়েটা মানে কল্পনা তাদের ম্যাডাম। তার মানে, পলাশ ম্যাডামকে প্রপোজ করছে। চলবে…..
পরের পর্ব- ম্যাডাম যখন বউ – দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার গল্প – পর্ব ২