পুলিশ বউয়ের রোমান্টিক অত্যাচার – রাগী বউয়ের ভালোবাসা: মেয়েরা বেশিরভাগই রাগী হয়, কারণে অকারণে ভালোবাসার মানুষকে রাগ দেখায়। তবে এই রাগের মাঝে আছে রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, আছে খুনসুটি প্রেমের সুবাতাস। চলুন তবে এরকম একটি দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার গল্প পড়ি।
পর্ব ১
ইয়ে মানে আপু বিয়েটা না করলে হয়না? (সাকিব)
বিয়ে করবিনা মানে। বিয়ে না করলে তোরে ডিরেক্ট জেলে ঢুকাইয়া দিমু। (মুন)
আপু দেখেন না আমি বাচ্চা ছেলে আমার কি বিয়ের বয়স হইছে আমি আপনাকে কি খাওয়াবো বিয়ে করে?
আর আমিতো আপনার ছোট বোনকে….. (সাকিব)
তোর খাওয়ানো লাগবো না আমিই তোকে খাওয়াবো। মাথা কিন্তু এমনিতেই গরম হয়ে আছে বেশি কথা বলবিনা। (মুন)
আচ্ছা। (সাকিব)
সাকিব চুপচাপ মেয়েটার দিকে তাকালো।
কি কাহিনি বুঝেন নাই। দাড়ান বুঝাইতাছি তবে এরজন্য একটু ফ্লাশব্যাকে যাওয়া লাগবো চলুন। দেখে আসি কাহিনি কি!
সাকিব কেবল ভার্সিটিতে পা রাখলো।
প্রথম দিন ভার্সিটিতে ঢুকেই একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খায় সে। ধাক্বা খেয়ে পড়ে যায় মাটিতে সেই সাথে মেয়েটার প্রেমে।
মেয়েটা চশমাটা ঠিক করে খুব ঠান্ডা ভাবেই বলে,
চোখে দেখেন না?
সাকিব ভাবলো মেয়েটা ভালো আছে কিছু বললো না।
কিন্তু ঠিক সেই সময় মেয়েটা চিৎকার করে বলে উঠে,
ওই ছেলে ওই কালকে থেকে চশমা পড়ে আসবা চোখে দেখে না আসছে ভার্সিটিতে। যত্তসব। (মেয়ে)
আপু আপনারটা ধার দেন দেখি কেমন লাগে চশমা পড়লে ভালো লাগলে কিনবো। (সাকিব)
মেয়েটা রাগি লুক নিয়ে তাকালো তারপর বললো,
দুর হন তো আমার চোখের সামনে থেকে। (মেয়ে)
সাকিব ই বা কম কিসে। মেয়েটার পেছনে গিয়ে দাড়িয়ে বললো,
এবার দেন আমি আপনার চোখের সামনে থেকে দুরে চলে গেছি। (সাকিব)
মানে কি পাগল নাকি আপনি? (মেয়ে)
না আমি সাকিব। (সাকিব)
ওহ আমি রিয়া। (মেয়ে)
আমি আপনারর নাম জানতে চাইছি নাকি আজিব তো আপনি চশমা দেন আমি ট্রাই করবো। (সাকিব)
আমার চশমা আমি দিতে পারবো না ভালো একটা উপদেশ দেই ওই সামনের দোকানটা থেকে একটা কিনে আনেন। (রিয়া)
আপু উপদেশ যখন দিলেন তাহলে আরেকটু হেল্প করেন। (সাকিব)
কি হেল্প? (রিয়া)
টাকা দেন ৫০০ উপদেশটা ভালো দিছেন কিন্তু আমারর কাছে টাকা নাই। আম্মু বলেছে কেউ উপদেশ দিয়ে কিছু করতে বললে সাথে সাথে করবি এইটা আমার অর্ডার।
আপু আপনি যদি এখন টাকা না দেন মায়ের আদেশ অমান্য করা হবে। আল্লাহ মানবে না আপু প্লিজ হেল্প মি। (সাকিব)
সাকিব মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটার করুন অবস্থা। জানেনই তো মেয়েরা টাকা খরচ করতে চায়না তবে মেয়ের বয়ফ্রেন্ড আছে মনে হয় এতো সুন্দরি একটা মেয়ের বয়ফ্রেন্ড থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
মেয়েটা ব্যাগে হাত ঢুকালো তারপর ৫০০ টাকার একটা নোট আমার হাতে দিয়ে বললো,
পরে ফেরত দিয়ে দিবেন। (রিয়া)
আম্মু বলছে কোনো মেয়ে কিছু দিলে ওইটা আর ফেরত দিবিনা। তার বদলে অন্য কিছু দিবি। (সাকিব)
অন্য কিছু মানে? (রিয়া)
ওই কিস টিস আরকি! (সাকিব)
আপনি অলরেডি আমাকে টিস করতাছেন আর কিছু লাগবোনা ভাই। (রিয়া)
কিস তো আর করি নাই। (সাকিব)
এই বান্দরের মতো থোবলা নিয়া আসছে আমাকে কিস করতে হুহ ভাগেন। (মেয়ে)
আম্মু বলছে কাওকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে হয়না। (সাকিব)
ভাই ফাও পেচাল বাদ দেন আমি ক্লাসে যাবো এমনিতেই আমার ৫০০ টাকা চলে গেলো।
আজকে কার মুখ দেখে যে ঘুম থেকে উঠছিলাম। (রিয়া)
আপু কথাটা হবে ঘুম থেকে উঠে কার মুখ দেখছিলাম। (সাকিব)
ধুর বাল চুপ থাকেন তো। (রিয়া)
বলেই মেয়েটা চলে গেলো।
হিহিহি চরম ফাসা ফাসছে মেয়েটা।
যাক ধাক্কা খাইয়া অন্তরে প্রেম ডুকলো আর পকেটে ৫০০ টাকা।
তবে মেয়েটা বোকা টাইপের চাইলাম আর দিয়ে দিলো।
তবে প্রেমে তো পড়েই গেছি কি আর করার।
সাকিব ক্লাসে গেলো মেয়েটার সাথে ঝগড়া করতে করতে ক্লাসের লেট হয়ে গেছে খেয়ালই করেনি।
গিয়ে দেখলো স্যার অলরেডি ক্লাসে।
সাকিবকে দেখে স্যার বললো,
নাম কি?
সাকিব।
কি নাম সানি?
সানি না স্যার সাকিব।
ওহ আচ্ছা তো প্রথম দিনেই লেট কেনো?
স্যার একটা মেয়ে গাধার সাথে ধাক্কা খেয়ে লেট হয়ে গেছে।
কিহ মেয়ে গাধা ভার্সিটিতে?
সরি স্যার না বুঝলে কিছু করার নাই।
যাও গিয়ে বসো।
ভিতরে ঢুকে দেখে একটাও সিট ফাকা নাই।
প্রথম দিন তাই সবাই আসছে।
একটা সিট আছে তবে সিটটাতে ওই বজ্জাত বোকা টাইপের মেয়েটা বসে আছে।
সাকিব মেয়েটার পাশে গিয়ে বসলো।
মেয়েটা রাগি একটা লুক নিয়ে তাকালো।
সাকিব একটু চেপে বসলো মেয়েটার দিকে।
মেয়েটা সরে গেলো।
সাকিব আবার চাপলো, মেয়েটা আবারো সরে গেলো।
তারপর সাকিব তার জায়গায় গিয়ে বসলো।
হিহিহি মেয়েটাকে একটু ভয় দেখালো সাকিব।
মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে চরম বিরক্তি মেয়েটার মুখে। তবে চশমা পড়া মেয়েদের একটু বেশিই কিউট লাগে।
যাই হোক ক্লাস শেষ করে সাকিব বাইরে আসতেই মেয়েটা ব্যাগ টেনে ধরলো সাকিবর।
ওই কি হইছে? (সাকিব)
কি হইছে মানে এগুলা কি বললা তখন মেয়ে গাধার সাথে ধাক্কা খাইছো আমাকে কি গাধা মনে হয়? (রিয়া)
না তোমাকে গাধা মনে হওয়ার কি আছে তুমিতো সত্তিই গাধা। (সাকিব)
মানে কি ওই ছেলে? (রিয়া)
মানে আমি কিভাবে বলবো? (সাকিব)
হুহ বলা লাগবোনা বাই। (রিয়া)
হুমম বাই? (সাকিব)
পর্ব ২
মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে চরম বিরক্তি মেয়েটার মুখে। তবে চশমা পড়া মেয়েদের একটু বেশিই কিউট লাগে।
যাই হোক ক্লাস শেষ করে সাকিব বাইরে আসতেই মেয়েটা ব্যাগ টেনে ধরলো সাকিবর।
ওই কি হইছে? (সাকিব)
কি হইছে মানে এগুলা কি বললা তখন মেয়ে গাধার সাথে ধাক্কা খাইছো আমাকে কি গাধা মনে হয়? (রিয়া)
না তোমাকে গাধা মনে হওয়ার কি আছে তুমিতো সত্তিই গাধা। (সাকিব)
মানে কি ওই ছেলে? (রিয়া)
মানে আমি কিভাবে বলবো? (সাকিব)
হুহ বলা লাগবোনা বাই। (রিয়া)
হুমম বাই? (সাকিব)
দুজনেই যার যার বাসায় চলে গেলো। সাকিব বাসায় গিয়ে মেয়েটার কথা ভেবে হাসতে লাগলো।
সাকিবরর আম্মু সাকিবকে হাসতে দেখে বললো,
কিরেরে এভাবে হাসিস কেনো? (আম্মু)
আর বইলো না মা ভার্সিটিতে মেয়ে গাধা। (সাকিব)
ভার্সিটিতে গাধা যাবে কোথা থেকে? (আম্মু)
তুমি বুঝবা না। (সাকিব)
সাকিব ফ্রেস আসে এসে খাওয়া দাওয়া করে প্রতিদিনের মতো ক্রিকেট খেলতে চলে যায়।
আজকে আবার ছেলে বনাম মেয়েদের খেলা।
কি যুগ আসলো রে বাবা মেয়েেরাও ক্রিকেট খেলে দাও আবার ছেলেদের সাথে প্রতিযোগিতা করে।
সাকিব মনে মনে ঠিক করে রাখছে সবকয়টায় পা আজকে ভেঙে দিবে। একটা করে বল লাগবে আর একটা করে বাইরে।
খেলতে গিয়ে দেখে সবাই হাজির সে ছাড়া।
টস করার সময় একটা ঝটকা খায় সাকিব। কারন অপর পক্ষের ক্যাপ্টেন রিয়া নামের গাধি মেয়েটা।
ওহ আপনি ক্যাপ্টেন তাহলে তো ম্যাচ সিওর হারবেন। (সাকিব)
দেখা যাবে। (রিয়া)
টসে জিতে ব্যাট করতে নামে সাকিব।
আট অভারে রান টার্গেট হয় ২০০।
বলে বলে ৬ হায়রে বোলিং একেকটা।
এরপর বল করে সাকিবর দল।
ব্যাটিংয়ে টপাটপ উইকেট পড়ে যায় ওদের।
যে গতিতে বল করে মেয়েরা চোখেই দেখেনা।
হিহিহি। দুজন অলরেডি ইনজুরিতে।
এরপর ব্যাট করতে নামে রিয়া এবার বোলিংয়ে সাকিব।
বলটা একটু দেখে নিয়ে দৌড় শুরু করে।
নজরটা রিয়ার পায়ের দিকে।
লাস্ট উইকেট এটাই। ওদের রান কেবল ৩৬।
সাকিব পা থেকে নজর না সরিয়ে সর্বোচ্চ গতি দিয়ে বলটা ছুড়ে।
ইয়োর্কার বলটা রিয়া ব্যাট চালানোর আগেই তার পায়ে আঘাত হানে। আম্পায়ার এর কাছে আবেদন করতেই আউট দিয়ে দেয়। সাথে সাথে একটা চিৎকার। সবাই মিলে দৌড়ে এলো মাঠে। মেয়েগুলা হেরে গেছে তাই যে যেখান দিয়ে পারছে ভাগছে।। ওদিকে রিয়া খোড়াতে খোড়াতে গিয়ে দুরে একটা ব্রেন্চের ওপরর বসে। প্রচন্ড ব্যাথা পায়ে। শক্ত বলটা তার পায়ে লাগছে।
সন্ধা হয়ে আসছে প্রায়।
সাকিবর চোখ পড়ে যায় মাঠের কোনে।
মেয়েটা বসে আছে। কিন্তু কেনো।
দেখা লাগবো,
আচ্ছা রাফি তোরা যা আমি আসতাছি একটু কাজ আছে। (সাকিব)
আচ্ছা। (রাফি)
বাকিরা চলে যেতেই সাকিব পা বাড়ায় মাঠের কোনটার দিকে।
গিয়ে দেখে রিয়া বসে আছে পায়ে হাত দিয়ে।
চেখে পানি মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে ব্যাথা পেয়েছে মেয়েটা।
সাকিব জিজ্ঞেস করে,
ব্যাথা পাইছেন? (সাকিব)
না। (রিয়া)
সেটা তো বুঝতেই পারতাছি। যানেন ঠিক এইজন্য বলি সব কাজ মেয়েদের জন্য না। ক্রিকেট খেলবেন খেলেন তাই বলে ছেলেদেরর সাথে কেনো। (সাকিব)
আপনি জান তো আপনাকে দেখতে ইচ্ছা করতাছে না ইচ্ছে করেই মেরেছেন আপনি আমাকে। (রিয়া)
হুমম সরি। (সাকিব)
দেখি পা টা কোথায় লাগছে।
কথাটা বলেই সাকিব রিয়ার পায়ে হাত রাখে।
হাতটা একটু উপরে নিতেই বুঝে যায় অনেক ব্যাথা পাইছে মেয়েটা ফুলে গেছে পা। হাটতেও পারতাছে না।
কি করবে এখন।
আচ্ছা আপনি কই থাকেন। (সাকিব)
খালার বাসায়। (রিয়া)
বাসাটা কোথায়? (সাকিব)
সোজা গিয়ে বা দিকে তারপর ডান দিকে তারপর বা আবার বা তারপর ডান দিকে গিয়ে ৫ মিনিট হাটলেই নিরিবিলি বিলাস বাড়িটাই। (রিয়া)
খালুর নাম কি? (সাকিব)
মানে? (রিয়া)
মানে আপনার খালুর নাম কি? (সাকিব)
আফসার আলি। (রিয়া)
এইটুকু বললেই তো হতো তা রেখে আমাকে ডান বাম শিখাচ্ছে।
সাকিব মেয়েটার হাতটা ধরে তারপর উঠে দাড়ড় করায়।
মেয়েটা সাকিবর কাধে হাত রেখে আস্তে আস্তে হাটে।
মাঠের ওপাশে যেতে যেতে দশ মিনিট টাইম নিয়ে নেয় মেয়েটা।
সাকিবর বাসায় ফিরতে হবে তারাতারি।
সাকিব ভাবে রাস্তাটা নির্জন সন্ধা হয়ে গেছে আর শীতের দিনে সন্ধা মানেই ঘন কালো অন্ধকার।
সে আর কিছু না ভেবেই রিয়াকে কোলে তুলে নেয়।
রিয়া বেশ লজ্জা পায় কিন্তু কি করবে হাটতে তো পারতাছে না।
সাকিব মনে মনে বলে।
মেয়ে দেখতে চিকন হলে কি হবে একদম আটার বস্তা।
রিয়া লজ্জায় চোখ বন্ধ করে রাখে।
আর সাকিব তো মজায় আছে। ভালোবাসার মানুষকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে।। এরপর প্রায় দশমিনিট হেটে রিয়াকে তার খালার বাসায় দিয়ে এলো।
হায়রে মেয়েরে একটা ধন্যবাদ ও দিলোনা।
কি আর করার খালি হাতেই বাসায় ফিরলো তবে ধন্যবাদ এর চাইতে বড় কিছু পাইছে সে।
রাতে শুয়ে রিয়া সাকিবর কথা ভেবেই লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
ওদিকে সাকিবরর চোখে ঘুম নাই।
মাথার ভিতরে রিয়া রিয়া আর রিয়া।
পর্ব ৩
সারারাত ঘুমাতে পারেনা সাকিব। অনেক ভালবেসে ফেলছে সে রিয়াকে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? এবার বলেই দেই নাকি? দেখি কি হয়।
কিন্তু এতো তারাতারি বলাটা কি ঠিক হবে?
সে যাই হোক এভাবে মাথায় নিয়ে ঘোরাটাও ঠিক লাগতাছে না আমার কাছে। এবার বলেই দিবো।
এসব ভাবতে থাকে সাকিব। কিন্তু কিভাবে বলবে এটাই ভেবে পায়না সে। যা হবার দেখা যাবে। এসব ভাবতে ভাবতেই সকাল হয়ে যায়। উঠে ফ্রেস হয় সারারাত ঘুমায়নি সে।
খাওয়া দাওয়া করে ভার্সিটিতে গিয়ে বসে প্রতিদিনের বসার জায়গাটায়। রিয়া আসবে কখন মাথার মধ্যে শুধু এই একটাই চিন্তা। অনেকক্ষণ বসে থাকে উত্তেজনায়য় কেমন যানি লাগতাছে তার কিন্তু রিয়ার দেখা নাই। কোথায় সে আসতাছে না কেনো। তবে কি আসবে না সে।
এসব চিন্তা করতে করতেইই অনেক সময় পেরিয়ে যায় রিয়া আসেনা। মাঠেও খেলতে আসেনা বিকেলে।
সেদিনের মতো সাকিব বাসায় চলে যায়।
কিন্তু একটা চিন্তা তাকে ক্রমশই গ্রাস করে নেয় রিয়া কই।
পরের দিন একটু আগেই কলেজে যায় সে। কিন্তু আজকেও নাই।
এভাবে কেটে যায় ৪ দিন।
আজকে ৫তম দিন নিরাশা নিয়েই বসে আছে সাকিব।
আজকেও হয়তো আসবে না এই ভেবে।
পকেট থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে নাড়াচারা করে টাইম দেখে কিন্তু রিয়া আসে না।
মনে হয় আজকেও আসবে না উঠে দাড়াতেই দেখে রিয়া।
সাকিব কিছু না ভেবেই রিয়াকে জড়িয়ে ধরে।
খুবব শক্ত করে। রিয়াও অবাক হয়েছে হঠাৎ করেই ঘটে যায় ঘটনাটা।
সাকিব জড়িয়ে ধরেই বলে,
আমি তোমাকে ভালোবাসি রিয়া। কোথায় ছিলে এই ৪ দিন জানো আমি প্রতিদিন অপেক্ষা করছি তোমার জন্য।
বলোনা তুমি আমাকে ভালোবাসো। (সাকিব)
রিয়া নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সাকিবর গালে ঠাসসস করে একটা চড় মেরে বলে,
আর কোনোদিন আমার সামনে আসবি না।
বলেই চলে যায়। সাকিব হা করে তাকিয়ে থাকে।
সবার সামনে চর খাওয়ায় তার ভিষন লজ্জা লাগছিলো তারর চাইতে বেশি কষ্ট হচ্ছিলো।
আশেপাশের সবাই স্তব্ধ। কেও কেও হাসতাছে ফ্রিতে বিনোদন যাকে বলে।
সাকিব মাথা নিচু করে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে যায়।
চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে তার। বাসায় এসেই দরজা আটকিয়ে দেয়। তারপর সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। কিন্তু চোখের সামনে রিয়ার মুখটাই ভেসে উঠে।
ওদিকে রিয়া এখনো রেগে আছে দুদিনের পরিচয়েই প্রোপোস সবার সামনে। আরো কয়টা মারলে তার রাগ কমতো। রাগের মাথায় অন্যকিছু মাথায় থাকেনা তার।
ক্লাস শেষ করে বাসায় আসে রিয়া। তারপর খাওয়া দাওয়া করে বিকেলে মাঠে যায় প্রতিদিনের মতোই।
খেলা শেষ করে সন্ধায় চলে আসে। খেয়ালই করেনা আজকে সাকিব নাই। বলতে গেলে তার কথা মনেই পড়েনা তার। রাস্তা দিয়ে হাটতাছে সে হঠাৎ পায়ের ব্যাথাটা আবারো শুরু হয়। ঠিক তখন মনে পড়ে সাকিবর কথা। কয়দিন আগে সে তাকে বাড়ি পৌছে দিছিলো। কিন্তু তাকে তো আজকে মাঠে দেখলাম না। তখন মনে পড়ে আজকে সকালেই তাকে সে বলেছে আর সামনে না যেতে। নাহ সবার সামনে চড় মারাটা ঠিক হয়নাই সরি বলতে হবে।
কোনমতে বাসায় আসে রিয়া। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমাতে যায় কিন্তু ঘুম আসেনা। মনের ভিতরর অপরাধবোধ কাজ করে তার।
ওদিকে সাকিব ভাবতাছে শহড় ছেড়ে অন্য কোথাও থেকে কয়দিন ঘুরে আসবে। সে খাওয়ার টেবিলে গিয়ে তার মাকে বলে,
আম্মু আমি ঘুরতে যাবো কোথাও। (সাকিব)
ভার্সিটি বন্ধ? (আম্মু)
না ভালো লাগতাছে না ১৫ দিনের জন্য কোথাও যাবো। (সাকিব)
১৫ দিনন তো আর কোথাও হোটেল এ থাকতে পারবি না এক কাজ কর তোর খালার বাসায় চলে যা সিলেট কিছুদিন থেকে আয় তোর খালাও যেতে বলছিলো। (আম্মু)
আচ্ছা যাবো। (সাকিব)
খাওয়া শেষ করে রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছায় কালকে সকালেই চলে যাবে।
পরের দিন রিয়া ভার্সিটি যায় কিন্তু আজকে জায়গাটা খালি। যেখানে সবাই মিলে আড্ডা দেয় সবাই আছে কিন্তু সাকিবকে কোথাও দেখতে পায়না রিয়া। সে ভাবে হয়তো ক্লাসে আছে। কিন্তু ক্লাসে গিয়েও কোথাও খুজে পায়না।
পাবে কিভাবে সাকিব তো আর এই শহড়ে নাই সকাল হতেই বেরিয়ে গেছে বাসা থেকে।
টাংগাইল থেকে সিলেটের বাসে উঠেই নিজের সিট খুজে নেয় সাকিব কিন্তু পাশের সিটে বসে আছে একটা মেয়ে যাকে দেখে সাকিব টাশকি খেয়ে যায়। এটাতো রিয়া। কিন্তু রিয়া এখানে কিভাবে? মাথায় ঢুকেনা তার। রিয়াতো ভার্সিটিতে।
মেয়েটা সাকিবকে দেখে বলে এই সিটটা আপনার? (মেয়েটা)
জ্বি (সাকিব)
মেয়েটা সাকিবকে যেতে দেয় বরাবরের মতোই সাকিবর সিটটা জানালার পাশেই।
সে যাই হোক এটা কোনো সমস্যা না কিন্তু রিয়া তাকে চিনতে পারছে না এটা হলো সমস্যা। রিয়া কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতাছে সাকিবর দিকে একবারো তাকাচ্ছে না।
এটা কেমন ব্যাপার। বুঝতে পারেনা সাকিব।
সাকিব নিজেই মেয়েটাকে প্রশ্ন করে।
আপনি রিয়া না? (সাকিব)
কি বললেন বুঝলাম না? (মেয়েটা)
আপনি রিয়া। (সাকিব)
আমাকে কিভাবে চিনেন। (মেয়েটা)
আমরা তো একি ভার্সিটিতে পড়ি তারপর কালকে থাপ্পড় মনে নাই? (সাকিব)
আমি রিয়া না আমি মুন! (মেয়েটা)
মানে? (সাকিব) অবাক হয়ে।
মেয়েটা তার ফোনে একটা ছবি দেখায় সাকিবকে যা দেখে সাকিবর মাথা ঘুরে যায় দুইটা রিয়া একসাথে।
মেয়েটা বলে,
আমরা টুইন। আমার বোন রিয়া আর আমি মুন আপনার ওর সাথে দেখা হইছে আমার সাথে না কিন্তু থাপ্পড় কেনো দিছে ও আপনাকে? (মুন)
সাকিব মন খারাপ করে বলে,
প্রোপোস করছিলাম। (সাকিব)
কিন্তু ওর তো বিয়ে হয়ে গেছে বলে নি কিছু আপনাকে? (মুন)
সাকিবর মাথায় ছাব্বির ভেঙে পড়ে।
সে কিনা একটা বিবাহিতা মহিলার প্রেমে পড়লো অবশেষে।
আল্লাহ আম্রে উঠাইয়া নাও।
পর্ব ৪
সাকিবর মাথায় ছাব্বির ভেঙে পড়ে।
সে কিনা একটা বিবাহিতা মহিলার প্রেমে পড়লো অবশেষে।
আল্লাহ আম্রে উঠাইয়া নাও।
ছিছিছি কাওকে না জেনে প্রেমে পড়ার মজা আজ বুঝলাম।
মাথা থেকে রিয়া নামটা ঝেড়ে ফেলে দিতে চেষ্টা করতাছি কিন্তু পারতাছি না। কেনো যানি বারবার তার মায়াবি মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠতাছে। রিয়া যদি বিবাহিতই হতো তাহলে আমাকে একবারের জন্যও কেনো বললো না। আর বলবেই বা কখন সেই সুযোগটাই তো দেইনি। কি করবো
এখন ভুলে যাবো? গভির ভাবনায় পড়ে যায় সাকিব। হঠাৎ চোখ পড়ে যায় মুনর দিকে।
আপনার যা ভাবছেন আমিও ওইটাই ভাবতাছি।
মুন হ্যা মুন যেহেতু দুজন দেখতে একি তাই খুব একটা মানিয়ে নিতে সমস্যা হবেনা তবে ঘটনা হলো দুজনের মনমানসিকতা তো আর এক না। একজনকে ভালোবেসে আরেকজনের সাথে প্রেম ব্যাপারটাই কেমন জানি ঘোলাটে লাগে। সে যাই হোক তাওতো বিবাহিত মেয়ের সাথে প্রেম করকাছি না।
সাকিব মেয়েটার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
আপনিও কি বিবাহিত? (সাকিব)
মানে? (মুন)
মানে আপনার বোনের মতো আপনিও বিবাহিত কিনা? (সাকিব)
না আমিপুলিশের চাকরি করি। (মুন)
পু পুপুলিশ? (সাকিব)
সাকিব একটু চেপে বসে ওদিকে। মাথা থেকে ঘাম ছুটে যায় তার।পুলিশে খুব ভয়পায় সে। রুমালটা বের করে ঘাম মুছতে থাকে। তার এসব কাহিনি দেখে মুন শব্দ করে হেসে উঠে।
ভয় পান কেনো আমি আপনাকে কিছু বলবোনা। (মুন)
সরি আমি যদি জানতাম আপনিপুলিশ তাহলে বলতাম না কিছুই। (সাকিব)
কেনোপুলিশরা কি মানুষ না? (মুন)
মানুষ তবে তারা খুব মিথ্যাবাদি আর বদমেজাজি হয়। (সাকিব)
কিহ আমি মিথ্যাবাদি? (মুন)
কি জানি এতোক্ষন তাও বিশ্বাস হচ্ছিলো রিয়ার বিয়ে হইছে তবে এখন সন্দেহ হচ্ছে। (সাকিব)
কিইই? (মুন)
জ্বি। (সাকিব)
মুন রাগ করে ফোনটা হাতে নিয়ে বলে,
চুপচাপ শুনো কথা বলবা না একটাও ওকে? (মুন)
ওকে। (সাকিব)
ওদিকে রিয়া ভাবতাছে ছেলেটাকে মারাটা ঠিক হয়নি সবকিছু বুঝিয়ে বললেই সব ঠিক হয়ে যেতো। রাগের মাথায় কি কি যে করি আমি কিছুই বুঝিনা।
ঠিক তখন রিয়ার ফোনে মুনর কল আসে,
সে রিসিভ করে বলে,
হুম কি খবর বল? (রিয়া)
মুন ফোনটা লাউড স্পিকারে দেয়।
এইতো ভালো তোর কি খবর? (মুন)
ভালোনারে? (রিয়া)
কেনো কি হইছে? (মুন)
আর বলিস না একটা ছেলেকে কালকে চড় মারছি রাগের মাথায় এখন সরি বলবো বাট খুজেই পাচ্ছিনা। (রিয়া)
কেনো চড় কেনো মারছিস কি করছিলো ছেলেটা? (মুন)
তুই তো জানিস আমি বিবাহিত কিন্তু ছেলেটা কিছু না জেনে শুনেই প্রোপোস করে বসলো। (রিয়া)
হাহাহা মজা পাইলাম আচ্ছা রাখি পরে কথা বলবোনি। (মুন)
আচ্ছা। (রিয়া)
কি মিষ্টার রোমিও শুনলেন তো নিজের কানেই এখনও সন্দেহ আছে? (মুন)
সাকিব মন খারাপ করে বলে,
না।
তারপর আবার বাইরের দিকে তাকায় সাকিব।
প্রায় ১৩ ঘন্টা লাগবে যেতে তাই সে চিপস আর চকলেট নিয়ে আসছে ব্যাগে করে।
কানে হেডফোন গুজে দিয়ে লাল শাড়ি গানটা প্লে করে ব্যাগ থেকে চকলেট বের করে সাকিব।
তারপর একা একাই খেতে থাকে।
কিছুক্ষন পর মুন টান দিয়ে সাকিবর হেডফোন খুলে ফেলে,
কি হইছে? (সাকিব)
আপনি তো মানুষ ভালোনা। (মুন)
কেনো আমি আবার কি করলাম? (সাকিব)
কি করলেন মানে। একা একাই চকলেট খাচ্ছেন তাও আবার একটা মেয়ের পাশে বসে। (মুন)
ওই আপনি খাবেন? (সাকিব)
মুন সাকিবর হাত থেকে চকলেট নিয়ে খাওয়া শুরু করে।
কি মেয়েরে বাবা এমন মেয়ে জিবনেও দেখিনাই।
এভাবে কেটে যায় ৪ ঘন্টা সাকিব ঘুমিয়ে পড়ে।
আর মুনও। কিছুক্ষন পর ঘুম ভেঙে যায় সাকিবর সে খেয়াল করে মুন সাকিবকে প্রায় জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।
এমন মুহুর্তে তার কি করা উচিত সে বুঝতে পারেনা।
সরিয়ে দিতে গিয়েও দেয়না। ঘুমাচ্ছে মেয়েটা ঘুমাক ও। সাকিব ভাবে রিয়া নাই তো কি হইছে মুন তো আছে।
মেয়েটার মায়াবি মুখেরর দিকে তাকিয়ে প্রেমে পড়ে যায় মুনর।
হায় আল্লাহ ছেকা খাইতে না খাইতেই আবারো প্রেমে পড়ে গেলাম। জাতি কি আমাকে মেনে নিবে?
পর্ব ৫
সরিয়ে দিতে গিয়েও দেয়না। ঘুমাচ্ছে মেয়েটা ঘুমাক ও। সাকিব ভাবে রিয়া নাই তো কি হইছে মুন তো আছে।
মেয়েটার মায়াবি মুখেরর দিকে তাকিয়ে প্রেমে পড়ে যায় মুনর। ওভাবেই ঘুমাতে দেয় মুন কে। চুপচাপ দেখতে থাকে মেয়েটাকে। বাইরে থেকে বাতাস এসে মেয়েটার চুলগুলা এলোমেলো করে দিছে। আর সেই চুলগুলা এসে পড়ছে সাকিবর মুখের ওপর।
এক অজানা ভালোলাগা কাজ করতে লাগলো সাকিবর মাঝে।
রিয়ার কথা ভুলেই গেলো প্রায়। চুলের ঘ্রান নিতে নিতে আবারো ঘুমিয়ে গেলো সাকিব।
এবার মুনর ঘুম ভেঙে গেলো সে তাকিয়ে দেখে সাকিব ঘুমিয়ে আছে কেমন একটা বাচ্চা বাচ্চা ভাব চেহারায়।
মুন তার চুলগুলা সাকিবর মুখ থেকে সরিয়ে আনতেই ঘুম ভেঙে যায় সাকিবর।
মুন একটু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে সাকিব ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বাইরে বেরোয়।
পাচ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেছে আরো ৮ ঘন্টা বাকি।
,
প্রেমে ব্যার্থ হয়ে খালার বাসায় যাওয়া বাসে একটা সুন্দরি রমনির পাশে বসে রোমান্টিক সব কাজকর্ম। সত্তি বলতে খারাট লাগছে না সাকিবর। যদি আপনারাও ছেকা খেয়ে থাকেন আমি মাস্ট বলবো ঘুরে আসতে পারেন দুরে কোথাও।
পাইলেও পাইতে পারেন পাশের সিটে সুন্দরি মাইয়া।
কিছুক্ষন পর বাসটা থামলো।
হেল্পার মামা চিল্লিয়ে বললো,
৩০ মিনিট পর গাড়ি ছাড়বে কারো কিছু খাওয়া বা কাজ থাকলে করতে পারেন।
যাক একটু বিরতি পাওয়া গেলো ক্ষুদা লাগছে প্রচুর একটু খেয়ে নেওয়া যাবে।
বাইরে যাবেন? (সাকিব)
না আপনি যান। (মুন)
আচ্ছা সরেন। (সাকিব)
মুন সরে দাড়ায় সাকিব বের হয়ে আসে।
হঠাৎ পকেটে ফোনটা বেজে উঠে।
সাকিব ফোনটা রিসিভ করে বলে,
হ্যা আম্মু বলো। (সাকিব)
কিছু খাইছিস? (আম্মু)
না ক্ষুদা লাগছে অনেক বাইরে যাইতাছি খাওয়ার জন্য। (সাকিব)
বাইরে যাওয়ার দরকার নাই তোর ব্যাগের এক কোনে দেখ বিরিয়ানি রেখে দিছি খেয়ে নি। (সাকিব)
মা তুমি কেমনে জানলা আমার বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছা করছিলো? (সাকিব)
আমি বুঝতে পারি তোর কখন কি লাগবে যেমন কালকে একটা মেয়ের হাতে চড় খেয়ে তুই দেবদাস হতে চাইছিলি সেটাও জানি। (আম্মু)
মানে কি তুমি কিভাবে যানো? (সাকিব)
যেভাবেই হোক শোন তোর খোজ খবর আমি রাখি ওকে। (আম্মু)
জ্বি বুঝলাম। (সাকিব)
কি বুঝলি? (আম্মু)
অনেক ক্ষুদা লাগছে খেয়ে নেই। (সাকিব)
আচ্ছা রাখ। (আম্মু)
ফোনটা কেটে দেয় সাকিব। পাশ থেকে মুন খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো মা ছেলের কথোপকথন। অবাক হয়ে যায় মুন এতোটা ফ্রি মা ছেলে এটা ভেবে।
সাকিব আবার তার সিটে গিয়ে বসে,
কি ব্যাপার বাইরে গেলেন না? (মুন)
নাহ আম্মু খাবার রেখে দিয়েছে ব্যাগের মধ্যে। (হেসে উত্তর দেয় সাকিব)
ওহ ভালো। (মুন)
সাকিব ব্যাগ থেকে টিফিন বক্সটা বের করে দেখে বিরিয়ানি রাখা আছে সত্তিই আর সাথে লেবু আর সালাদ। লোভনীয় দৃষ্টিতে তাকায় সাকিব।
ওদিকে মুনর অবস্থা খুব একটা ভালোনা। ক্ষুদায় পেট জ্বলতাছে আর পাশে বিরিয়ানি কিন্তু খেতে পারছে না।
সাকিব খাওয়া শুরু করে।
হঠাৎ খেয়াল হয় পাশে তো মুন আছে যদি চোখ লাগায় আমারতো আবার পেট খারাপ হবে তার চাইতে ভালো কিছুটা ওকে দেই।
আপনি খাবেন? (সাকিব)
না আপনি খান। (মুন)
অনেক মজা হইছে আম্মু অনেক ভালো বিরিয়ানি রাধে নিন একটু? (সাকিব)
না আপনি খান সমস্যা নাই। (মুন)
ধুরর অল্প একটু খান আপনাকে রেখে আমি খেতে পারবো না কেমন যানি লাগে। (সাকিব)
আসলে আমার হাত কাটা তাই চাইলেও খেতে পারবো না। (মুন)
আমি খাইয়ে দিলে মাইন্ড করবেন? (সাকিব)
মুন কি উত্তরর দিবে ভেবে পায়না।
সাকিব কিছুটা খাবার হাত তুলে নিয়ে মুনর মুখে তুলে দেয়। মুন মুখে নিয়েই বুঝতে পারে বিরিয়ানি টা সেই হইছে।
বলতে গেলে ক্ষুদা বেড়ে যায় তার।
সাকিব তাকায় মুনর মুখের দিকে। একটা অদ্ভুত মায়া কাজ করে তাকে দেখে। কেনো যানি সবকিছুই ভালো লাগছে তার।
হঠাৎ হাতে কামর লেগে যায় সাকিবর। সাকিব ব্যাথা পেয়ে উহহ বলে উঠে রিয়া ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আঙুলটা চুষতে থাকে। সাকিব কিছুটা অপ্রস্তুত হয় রিয়াও কিছুটা অপ্রস্তুত। তবে সামলে নেয় দুজনে।
সাকিব খেতে থাকে আর খাওয়াতে থাকে মুনকে।
অনেকটা বিরিয়ানি দিয়েছিলো আম্মু তাই দুজনের খাওয়া হয়েও বেচে যায় অনেকটা।
খাওয়া শেষ করে এবার নিচের বক্সটা খুলে সাকিব।
সাকিব জানে এতে কি আছে মুনর এক্সাইটমেন্ট বেশি কারন সে জানেনা সেখানে কি আছে।
সাকিব বক্স টা থেকে দুই প্যাকেট তেতুলের চাটনি বের করে আর ভিতরে রেখে দেয় টাংগাইলের জনপ্রিয় মিষ্টি।
একটা প্যাকেট মুনর হাতে দিয়ে আরেকটা খেতে থাকে সাকিব।
মুন অবাক হয়ে দেখে সাকিবকে। কতটা তারাতারি মিশে গেছে তার সাথে। বলতে গেলে মুন প্রেমে পড়ে যায় সাকিবর। সাকিব তাকিয়ে দেখে মুন চাটনি খাচ্ছে চোখ বন্ধ করে। পুরোটা শেষ করতেই ঝাল লেগে যায় মুনর।
পানি খেতেই ঝালটা আরো বেড়ে যায়। সাকিব একটা মিষ্টি রিয়ার দিকে বাড়িয়ে দেয়। রিয়া বুঝতে পারেনা জিনিসটা কি কারন কখনো দেখেনি এমন মিষ্টি।
কারন সব মিষ্টি তো সাদা আর কালো আর গোলগোল এরকম মিষ্টি রংয়ের লম্বা জিনিস কখনো দেখেনি।
কিছুটা মুখে দিতেই বুঝতে পারে আজ পর্যন্ত যত মিষ্টি খাচ্ছে তার মধ্যে সেরা এটা। সাকিব স্বাভাবিকভাবেই খায় কারন সে অভ্যস্ত এমন মিষ্টি খেয়ে।
কিন্তু রিয়ার ব্যাপারটা ভিন্ন। সে তো প্রথম খাচ্ছে। তৃপ্তির সাথে খায় সে।
সে জিজ্ঞেস করে,
এটার নাম কি? (মুন)
চমচম। (সাকিব)
কিহ চমচম হাহাহা এর চাইতে টমটম থাকলে ভালো হতো! (রিয়া)
হুহ নাম চমচম তো কি হইছে খেতে কেমন? (সাকিব)
খুবই বাজে এরকম জিনিস আমি এর আগে কখনো খাইনি। (মুন)
কিহ? এই প্রথম কেও বললো টাংগাইলের চমচম খারাপ। (সাকিব)
আচ্ছা এখানে এই মিষ্টি পাওয়া যাবে? (মুন)
কেনো? (সাকিব)
বাসায় নিতে যেতাম। (মুন)
এতো বাজে জিনিস বাসায় কেনো নিবেন? (সাকিব) রাগের সাথে বলে কথাটা।
কারন এরকম বাজে জিনিস আমি জিবনের প্রথম খেলাম তাই আর বাসায় খাওয়িয়ে দেখাতাম তারা কি বলে। (মুন)
হু বুঝি বুঝি কুকরের পেট এ ঘি হজম হয়না। (সাকিব)
কিহ বললেন আমি কুকুর? (মুন)
না কুকুরনি। হিহিহি? (সাকিব)
রিয়ার মাথা গরম হয়ে যায়।
এই ছেলে শুনো বেশি তর্ক করলে না জেলে ঢুকাই দিবো বুঝছো ভুলে যেওনা আমিপুলিশ। (মুন)
সাকিব থমকে যায় আর কথা বলেনা।
চুপচাপ বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ইতিমধ্যে সবাই চলে আসছে বাসও ছেড়ে দিবে এবার।
পর্ব ৬
বাসটা ছেড়ে দিলো। জনশুন্য বাসটা আবারো মানুষে ভর্তি হয়ে গেলো। সাকিব কোনো কথা বলছেনা বাইরের প্রকৃতি দেখছে। মনে পড়ে যায় ছোটবেলার কথা যখন বাসে উঠলে বাইরে তাকিয়ে ভাবতো বাস এগুচ্ছে নাকি রাস্তা পিছিয়ে যাচ্ছে। আপনমনেই হেসে উঠে সে।
ব্যাপারটা চোখ এড়ায়না রিয়ার। সে জিজ্ঞেস করে,
কি মিস্টার সাকিব একা একা কেনো হাসছেন? (মুন)
এমনি। (সাকিব)
এমনি মানে কি? এমনিতে কেও হাসে নাকি? (মুন)
আপনিপুলিশ তো তাই সবকিছুতেই সন্দেহ হয় আপনার। (সাকিব)
হতে পারে তবে একটা জিনিস আমি কিন্তু বুঝতে পারলাম না। (মুন)
কি জিনিস? (সাকিব)
আমরা এতোটা পথ একসাথে আসলাম খাবার ভাগ করে খেলাম কিন্তু আপনি থেকে তুমিতে নামতে পারলাম না। (মুন)
১৩ ঘন্টার পরিচয়ে তুমিতে নামাটা কি ঠিক হবে মিস মুন? (সাকিব)
জানিনা তবে আমি আপনার বন্ধু হতে চাই। (মুন)
সাকিব কিছু বলেনা চুপচাপ বাইরে তাকায়।
মুনও চুপ করে যায় ভাবতে থাকে হয়তো বন্ধু হওয়ার কথাটা তার ভালো লাগেনি। ঠিক সেই মুহুর্তেই মনে পড়ে সাকিব তো রিয়াকে ভালোবাসে তাহলে এতো তারাতারি কিভাবে মেনে নিবে। সে মনে মনে নিজেকে আস্ত একটা গাধা মনে করে।
তবে সাকিব ভাবছে অন্য কথা। বন্ধু হলে ক্ষতি কি?
সাকিব বলে,
বন্ধু হলাম তবে ফেসবুক আইডি + নাম্বার কোনোটাই দিতে পারবো না। যদি ভাগ্যে থাকে তাহলে আবার দেখা হবে। (সাকিব)
বন্ধু হলেন ঠিক আছে তবে ওগুলা না পেলে যোগাযোগ কিভাবে করবো? (মুন)
জানিনা। (সাকিব)
আচ্ছা আপনি কি সাহিত্যিক? এমন ভাবে কথা কেনো বলেন? (মুন)
বাদ দেন।
সারা রাস্তা অনেক কথা বলে তারা। বেশ জমে উঠে বন্ধুত্ব তবে এবারর বিদায়ের পালা। বাসটা গন্তব্য স্থানে এসে থেমে গেছে। বাস থেকে নামে দুজনে।
জানিনা আবার কবে দেখা হবে তবে আপনার সাথে কাটানো এই ১৩ ঘন্টা কোনোদিনও ভুলবো না। (মুন)
জ্বি আমিও না। (সাকিব)
আচ্ছা সাবধানে থাকবেন আর ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ। (মুন)
আল্লাহ হাফেজ। (সাকিব)
মুনর জন্য গাড়ি পাঠানো হইছে সে চলে যায় গাড়িতে করে।
কিন্তু সাকিবর ছুটে চলা গাড়িতে যেতে হবে।
সাকিবও গাড়িতে উঠে। তারপর চলে যায় খালার বাসায়।
দরজায় গিয়ে কলিং বেল বাজাতেই দরজা খুলে যায়।
সাকিব সামনে তাকিয়ে থমকে যায়,
রিনি এতো বড় আর সুন্দর হলো কবে?
ভাইয়া কেমন আছো? (রিনি)
ভালো তুই? (সাকিব)
ভালো। ভিতরে আসো। (রিনি)
সাকিব ভিতরে ঢুকে। খালাকে সালাম করে খালুর কাছে যায়। সবার সাথে কথা বলে তারপর রিনি তাকে তার রুম দেখিয়ে দেয়।
সাকিব রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়।
রিনি তাকে ডাকে খাওয়ার জন্য,
সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করে যার যার রুমে চলে যায়। সাকিব চলে যায় ছাদে। রাতের ছাব্বির দেখতে ভালোই লাগে তার। রিয়াকে মনে পড়ে যায় কিন্তু রিয়ার মধ্যে খুজে পায় মুনকে। খুব একটা খারাপ লাগেনা সিলেট শহড়টা।
পরের দিন রিনি আর সাকিব নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। সারাদিন ঘুরাঘুরির পর ক্লান্ত হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুমিয়ে যায় সে।
কিন্তু ঘুম ভেঙে যায় ফোনের শব্দে,
হ্যালো? (সাকিব)
কিরে পৌছে একটা ফোনও তো দিলিনা? (আম্মু)
সরি আম্মু মনেই ছিলোনা। (সাকিব)
হুম মনে থাকবে কিভাবে। (আম্মু)
আম্মু আমি ঘুমাবো অনেক ঘুম পাচ্ছে। (সাকিব)
আচ্ছা ঘুমা। (আম্মু)
সাকিব ঘুমিয়ে যায়। স্বপ্নে মুনকে দেখে একটা নিল শাড়িতে বউ সেজে বসে আছে বাসর ঘরে। সাকিব মুনর কাছে চলে যায় খুব কাছে হঠাৎ মেয়েটা হাতে হাতকড়া পড়িয়ে দিয়ে বেদম পিটাতে থাকে। ঘুম ভেঙে যায় সাকিবর।
এক গ্লাস পানি খেয়ে মনে মনে বলে,
ঘুমের মধ্যেওপুলিশি অত্যাচার।
দেখতে দেখতে কেটে যায় ১৫ দিন। সিলেট শহড়টা খুব ভালোলাগে সাকিবর। তবে এবার বাড়ি যাবার সময় হয়েছে।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সন্ধার বাসে উঠে সাকিব।
সারারাতের যার্নি। ঘুমিয়েই কেটে যাবে এই ভেবেই রাতের টিকেট কাটা।
কিন্তু জানতো না বাসে আবারো একি কাহিনি হবে। কিন্তু এবার ঘটনা উল্টো,
সাকিব বসে আছে তার সিটে হঠাৎ একটা মেয়ে ডাক দিয়ে বললো,
আরেহ আপনি?
সাকিব সামনে তাকিয়ে অবাক হয় কিছুটা।
এটাতো মুন। কিন্তু ও আবার বাসে কেনো?
বুঝতে পারেনা।
পর্ব ৭
সাকিব বলে,
আপনি আবার বাসে, কোথায় যাবেন? (সাকিব)
টাংগাইল আপনিও কি আজকেই যাচ্ছেন? (মুন)
হুমম দেখতেই তো পাচ্ছেন। (সাকিব)
যাক ১৩ ঘন্টার জার্নিটা তাহলে আর বোরিং হবেনা। (মুন)
কিভাবে? (সাকিব)
আপনি সাথে থাকলে জার্নি কিভাবে বোরিং হবে বলেন। (মুন)
ওহ, তা আবার টাংগাইল কেনো যাচ্ছেন? (সাকিব)
বিয়েতে যাচ্ছি। (মুন)
কার বিয়ে? (সাকিব)
খালাতো বোনের (মুন)
খালাতো বোনের বিয়ে মানে নিঝুম এর বিয়ে? (সাকিব)
হুমম। (মুন)
বিয়ে কয় তারিখ আর কার সাথে বিয়ে? (সাকিব)
ভাবনায় পড়ে যায় সাকিব। কারন নিঝুম এর সাথে ছাব্বিরের প্রেম চলে। দুজন দুজনকে ভালোবাসে। ছাব্বির তো সেনাবাহিনী তে আবেদন করছে কিন্তু নিঝুম এখন বিয়ে কেনো করবে। আর ছাব্বিরকে ছাড়া তো নিঝুম কাওকে বিয়ে করবেনা মনে হয়। কারন নিঝুম মেয়েটা ছাব্বিরকে প্রচন্ড ভালোবাসে।
ভাবনায় পড়ে যায় সাকিব।
হঠাৎ একটা ঝাকিতে মুন সাকিবর ওপর পড়ে যায়।
দুই মিনিটের জন্য সবকিছু নিরব হয়ে গেছে।
মুন নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
সরি। (মুন)
ইটস ওকে। (সাকিব)
সাকিব জিজ্ঞেস করে,
কার সাথে বিয়ে বললেন না কিন্তু আর বিয়েটা কবে সেটাও বললেন না। (সাকিব)
বিয়েতো ১৫ দিন পর বাট আমাদের আগে যেতে হচ্ছে সবকিছুর দায়িত্ব তো আমাদের হাতে। আর বিয়ের ব্যাপারে এতোকিছু জানিনা আমি। (মুন)
ওহ আচ্ছা। (সাকিব)
চিন্তাটা বেড়ে যায় সাকিবর। পকেট থেকে ফোনটা বের করে ছাব্বিরকে কল দেয় সাকিব।
দুবার রিং হতেই রিসিভ হয়।
সাকিব বলে, শুনলাম নিঝুমের নাকি বিয়ে? (সাকিব)
হুমম।
কার সাথে?
জানিনা তবে সেনাবাহিনী তে চাকরি করে ছেলেটা। (গম্ভিরভাবে বলে ছাব্বির)
তোর কি অবস্থা? (সাকিব)
এইতো ভালো দেবদাস হয়ে আছি। (ছাব্বির)
সাকিবর খটকা লাগে এতো সহজভাবে কথা বলে কিভাবে ছাব্বির। মেয়েটার সাথে একবার ব্রেকআপ হইছিলো কি রকম কান্না করছিলো আর সামনে বিয়ে ও এতো স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতাছে নিশ্চই কাহিনি আছে।
ছাব্বির তোর চাকরি হইছে? (সাকিব)
ওপাশ থেকে চার বন্ধু মিলে চিৎকার করে বলে উঠে,
ছাব্বির সাহেবের চাকরিও হইছে আর বিয়েও হবে।
সাকিবর মুখে অজান্তেই একটা হাসি ফুটে উঠে।
মুন কথাবার্তা শুনছে মনোযোগ দিয়ে,
সালা তোর বিয়ে ঠিক চাকরি পাইছোস একবার জানাইলিও না? (সাকিব)
ভাবছিলাম সারপ্রাইজ দিবো বাট দেওয়া হইলো না। তুই তারাতারি আয় রিয়ার খালাতো বোন নিঝুম তোরটাও ক্লিয়ার হয়ে যাবে। (ছাব্বির)
বিবাহিত মহিলার সাথে আমার প্রেম হবেনা রে তোদের কে বাসায় গিয়ে ছ্যাকা পার্টিতে ইনভাইট করবোনি। (সাকিব)
ওপাশ থেকে কিছু বলার আগেই ফোন কেটে দেয় সাকিব।
ফোন কাটতেই মুন প্রশ্ন করে,
ছাব্বিরটা কে? (মুন)
নিঝুম এর বয়ফ্রেন্ড আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আর আপনার হবু দুলাভাই। (সাকিব)
লাভ ম্যারেজ বাট নিঝুম আমাকে কিছুই বলেনাই এবার বাসায় গিয়ে ওকে জেলে ঢুকাবো। (মুন)
সারাক্ষণ জেল জেল করেন কেনোপুলিশ বলে কি শুধু জেলে ঢুকাতে হবে। ভয় লাগে তো। (সাকিব)
আপনি ভয় ও পান নাকি? (মুন)
হুমম। (সাকিব)
তাহলে সেদিন যে আমার কপালে হাত দিলেন চুল ছুয়ে দিলেন তখন ভয় লাগেনি? (মুন)
কি মানে কখন কিসের কথা বলছেন। (সাকিব)
কিছুনা। (মেয়েটা মাথা নিচু করে হাসে)
সাকিবও বাইরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।
প্রেমটা মনে হয় হয়েই যাবে। সামনে তো ১৫ দিন আছেই।
দেখাই যাক কি হয়।
১৩ ঘন্টার লম্বা সময়টা মনে হয় সামান্য কিছুক্ষন। বেশ আনন্দের সাথেই কেটে যায়। দুজনের নিজেদের সম্পর্কে চেনাজানা প্রায় অনেককিছুই হয়ে যায় এই সময়টাতে।
ভোর ৬ টা বাস এসে থামে টাংগাইল।
মেয়েটা সাকিবর কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে।
মেয়েটার চুলগুলা সাকিবর মুখের ওপর এসে পড়ছে।
হেল্পার মামার চিৎকারে ঘুম ভাঙে দুজনের।
দুজনের একসাথে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় দুজনেই বেশ লজ্জা পায়। তবে কিছুটা অভ্যস্ত হয়ে গেছে দুজনেই তাই মানিয়ে নেয় ব্যাপারটা। বাস থেকে নেমে হাটতে থাকে সাকিব সাথে মুন।
বলুন কেমন হলো রাতের জার্নি? (সাকিব)
হুম ভালোই হইছে তবে ঘুম হয়নি। (মুন)
কে বলছে ঘুম হয়নি বেশ তো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিলেন। (সাকিব)
আপনি কি আমাকে দেখছেন সারারাত? (মুন)
এমন প্রশ্নে দুজনেই অপ্রস্তুত হয়।
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করছে। কুয়াশা কাটেনি এখনো।
হালকা ঠান্ডা লাগতাছে রিয়ারর যদিও চাদর আছে গায়ে।
সাকিব আড়চোখে মুনকে দেখে আর মনে মনে বলে তোমাকে ভালোবাসতেই হবে।
পর্ব ৮
হাটতে হাটতে মুনর বাসার সামনে চলে আসে দুজনে।
আমি যাই তাহলে? (মুন)
হুম যেতে তো হবেই। (সাকিব)
আচ্ছা বাই পরে কথা হবে। (মুন)
কিভাবে কথা হবে? (সাকিব)
আছিতো আপনার এলাকায়ই কথা কোনো না কোনোভাবে হবেই। (মুন)
ওহ আচ্ছা যান তাহলে। ভালো থাকবেন। (সাকিব)
আচ্ছা। বাই। (মুন)
মুন বাসায় ঢুকে গেলো। সাকিবও হাটা দিলো বাড়ির দিকে।
বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে সেই একটা ঘুম দিলো সাকিব।
ঘুম থেকে উঠে দেখে ২৭ টা মিসড কল।
ছাব্বির কল দিছিলো।
এইরে ভুলেই গেছি ওর সাথে তো দেখা করার কথা ছিলো।
তারাতারি ফ্রেস হয়ে মাঠে যায় সাকিব।
গিয়ে দেখে ছাব্বির বসে আছে।
সাকিব কাছে গিয়ে বলে,
কিরে কি খবর? (সাকিব)
অনেক ভালো তবে প্যারায় আছি। (ছাব্বির)
কিসের প্যারা? (সাকিব)
আরে বিয়ের প্যারা রে ভাই। (ছাব্বির)
বিয়ে করছিস এটাতো ভালো কথা প্রেমে সফল হচ্ছিস এতে আবার প্যারার কি হলো? (সাকিব)
অনেক কিছু হইছে। একা একা এতোগুলা মেয়ে নিয়ে শপিংয়ে যাওয়া যায় নাকি। আর তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তাই আজকে থেকে বিয়ের সব দায়িত্ব তোর আর মেয়েগুলারও। আমার সাথে থাকবি এই পনের দিন। (ছাব্বির)
আচ্ছা থাকবোনি সমস্যা নাই। এখন চল ক্রিকেট খেলি। (সাকিব)
হুম চল।
পরের দিন সকালে উঠে ফ্রেস হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সাকিব। রাস্তা দিয়ে হাটতাছে আর রিয়ার কথা ভাবতাছে। কিন্তু কেনো ভাবতাছে? সে নিজেও জানেনা।
শুধু এটুকুই ভাবতাছে আজ ১৬ দিন পর তাকে দেখে রিয়ার রিয়েকশন টা কি হবে?
কি আর হবে! একটা বিবাহিত মেয়ের প্রেমে পড়ছি হয়তো একটা সরি বলবে।
এসব ভাবতে ভাবতে ভার্সিটিতে পা রাখে সাকিব।
বন্ধুগুলা ওকে দেখে প্রশ্ন করে,
কোথায় ছিলি এতোদিন?
ঘুরতে গেছিলাম দোস্ত।
তো বলে যাবিনা?
আচ্ছা সরি এবার চল মামার দোকানে অনেকদিন হলো মামার দোকানের চা খাইনা।
হুমম চল।
রাস্তার দিকে পা বাড়ায় সাকিব। হঠাৎ পেছন থেকে একটা মেয়ে হাত টেনে ধরে। পিছনে ঘুরতেই ঠাসসসসস করে একটা থাপ্পর মারে রিয়া।
কই ছিলা এতোদিন? জানো তোমাকে আমি কত খুজছি? (রিয়া)
মানে? (সাকিব)
মানে টানে বুঝিনা আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলছি আর ওইসব বিয়ে টিয়ে কিছু হয়নাই আমার হবে ঠিক করা আছে। (রিয়া)
কি বলতাছেন এসব। দেখেন আমি আপনাকে আর ভালোবাসি না আর হাত ছাড়েন। (সাকিব)
এতো তারাতারিই ভালোবাসা গায়েব হয়ে গেলে? (রিয়া)
আমি কোনো বিবাহিত মেয়েকে ভালোবাসতে চাইনা। (সাকিব)
আপনি থাকেন আমি গেলাম। (সাকিব)
বলেই আবারর সামনের দিকে পা বাড়ায় সাকিব।
হঠাৎ পেছন থেকে বলে, সরি।
পিছনে তাকিয়ে প্রায় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয় তার।
দুইটা রিয়া একসাথে?
কনফিউশনে পড়ে গেলো কোনটা মুন কোনটা রিয়া।
তখন একজন বলে উঠলো,
আমি সরি তোমাকে না বলার জন্য যে আমি বিবাহিত। আর সেদিন থাপ্পর দেওয়ার জন্যও সরি। আসলে সেদিন মাথা ঠিক ছিলোনা তাই দিয়ে দিছি কিছু মনে করোনা প্লিজ সাকিব। (রিয়া)
সেদিনের টা নাহয় বুঝলাম আর আজকেরটা কেনো মারছেন? (সাকিব)
আজকেরটা মুন মানে আমার বড় বোন মারছে। (রিয়া)
মানে কি কেনো? (সাকিব)
ওই ছেলে ওই একদম কথা বলবানা তোমার সাহস তো কমনা তুমি আমার বোনকে প্রোপোস করো। কোনো কথা বললে একদম জেলে ঢুকাই দিবো। (মুন)
চলেন। (সাকিব)
কোথায়? (মুন)
জেলখানায় চলেন তারপরও ভয় দেখাইয়েন না। (সাকিব)
হিহিহিহি।
দুই বোন হেসে উঠে। একদম সেম টু সেম। কোনো পার্থক্য নেই। দুজনেই হাসছে একি ভাবে। একিরকম হাইট চুল এমনকি ড্রেসটাও সেম।
আবারো কনফিউজড হয়ে যায় সাকিব।
এদের কাওকে যদি বিয়ে করি তাহলে কোনটা বউ কোনটা সালি বুঝতেই পারবোনা।
চলো আজকে তোমার শহড়টা ঘুরিয়ে দেখাবা আমাকে। (মুন)
আচ্ছা। চলেন। (সাকিব)
ভার্সিটির সামনে থেকে একটা রিক্সা নেয় সাকিব।
দুজনে মিলে চাপাচাপি করে বসে একটা রিক্সায়।
অবশ্য খারাপ না শীতের সকাল হালকা কুয়াশা এখনো রয়েছে। তাই একটু শীত লাগলেও দুজনে চাপাচাপি করে বসায় একটু গরম লাগতাছে। মুন বেশ উপভোগ করছে।
আর সাকিব বেচারা ভয়ে কিছু বলতে পারেনা।পুলিশ বলে কথা। কখন কি করে বসে বলা তো যায়না।
মুন মুখ খুলে বলে,
শুধু কি রিক্সায় ই ঘুরবো নাকি কোথাও যাবো? (মুন)
আমি টাকা আনিনাই বাসা থেকে বের হয়ে আসছি খালি পকেটে নইলে যমুনা নদি দেখতে যেতাম। (সাকিব)
ওহ। (মুন)
হুমম অন্য একদিন যাবো। (সাকিব)
কেনো? আমার কাছে কি টাকা নেইই? (মুন)
তো আমার সাথে ঘুরতে বের হইছেন আপনার টাকা কেনো নিবো? (সাকিব)
আমি কি তোমার গার্লফ্রেন্ড নাকি যে নিজের টাকায় ঘুরাবা। (মুন)
না তবে ফ্রেন্ড তো।,,, সে যাই হোক আমি টাকা নিতে পারবোনা। (সাকিব)
ঠিকআছে আমি আর তোমার সাথে কোথায় যাবোনা। (মুন)
কেনো? (সাকিব)
আমি অন্যসব মেয়ের মতো না যে ছেলেদের টাকায় ঘুরবো। (মুন)
আমি কি ওইটা বলছি? (সাকিব)
তাহলে? আমি যা বলছি তাই করো। (মুন)
আচ্ছা মামা সামনে রাইখেন তো। (সাকিব)
তারপর দুজনে মিলে রওনা দেয় যমুনাসেতুর দিকে।
প্রায় ১ ঘন্টা পর যমুনাসেতু তে পৌছায় দুজন।
সকাল তো ১১৩০ মিষ্টি মিষ্টি রোদ এসে গায়ে লাগছে।
যমুনা সেতুর ওপর দাড়িয়ে উপভোগ করছে দারুন দৃশ্যটা।
নৌকায় উঠবেন? (সাকিব)
তুমি চালাতে পারো? (মুন)
হুম পারিতো। এগুলা কোনো ব্যাপার হলো? (সাকিব)
চলো তাহলে। (মুন)
শীতকাল তাই যমুনায় পানি নাই তেমন আর স্রোত ও নাই।
নিরিবিলি আর স্রোতহীন একটা জায়গায় গিয়ে নৌকা ভাড়া নেয় সাকিব। তারপর নিজেই চালাতে শুরু করে। নৌকা এগুচ্ছেনা শুধু ঘুরতাছে।
মুনতো হাসতে হাসতে শেষ।
শেষমেষ নৌকাওয়ালা পানিতে নেমে নৌকা ঘাটে আনে।
সাকিব তো লজ্জায় শেষ।
সে ভাবছিলো নৌকা চালানো খুব সহজ।
ধুরর মান সম্মান সব গেলো।
মামা আপনাকে আগেই বলছিলাম পারবেন না আপনি। (নৌকাওয়ালা)
ধুর মিয়া চুপ থাকেন আপনার নৌকাই ভালোনা খালি ঘুরে। (সাকিব)
মুনর সাথে সাথে মামাও মুচকি হাসে।
হইছে বুঝছি আপনার ক্ষমতা কতটুকু। এবার চলেন। (মুন)
দেখছেন নৌকার কি অবস্থা মনে হয় পুরনো হয়ে গেছে এইজন্য চলেনা খালি ঘুরে। (সাকিব)
মুন সাকিবর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায়।
সাকিব অবাক হয়ে দেখে মেয়েটাকে হাসলে তো দারুন লাগে।
,
বিকেল পর্যন্ত ঘুরাঘুরি করে বাসায় ফিরার পথে আবারো রিক্সা নেয় সাকিব। তার স্পর্শ পেতে বারবার ইচ্ছে করে সাকিবর।
রিক্সায় বসে সাকিব মুনকে বলে,
একটা কথা বলবো কিছু মনে না করলে? (সাকিব)
কি কথা বলো। (মুন)
আপনার ছোট বোনের বিয়ে হয়ে গেছে খালাতো বোনের বিয়ে সামনে আপনি কেনো বিয়ে করছেন না? (সাকিব)
করবো। এতোদিন মনের মতো ছেলে পাইনি তাই করিনি এখন পেয়ে গেছি দেখি কবে করা যায়। তবে একটু ঝামেলা আছে ছেলেটা জানেই না আমি তাকে ভালোবাসি। (মুন)
ছেলেটার নাম কি? (সাকিব)
এসব তোমাকে কেনো বলবো? আগে বিয়ে করি তারপর দেখা করাই দিবোনি। (মুন)
সাকিবর মনটা খারাপ হয়ে যায়। ভাবছিলো কি আর হলো কি? ওরও পছন্দের কেও আছে। কি আর করার লেগে থাকি যদি হয়ে যায় তাহলে তো ভালোই হবে।
পর্ব ৯
কিছুটা মন খারাপ করেই বাসায় ফিরে সাকিব।
বাসায় গিয়ে সেই একটা ঘুম দেয়। এক ঘুমে রাত শেষ।
সকালে খাওয়া দাওয়া করে রেস্ট নিতাছে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো।
হ্যালো
হ্যা সাকিব দোস্ত আজকে শপিংয়ে যেতে হবে নিঝুম কে নিয়ে।
শপিংয়ে যাবি তো যা আমাকে কেনো বলছিস?
নিঝুম একা গেলে তো কোনো সমস্যা ছিলোনা কিন্তু সাথে দুই খালাতো বোন ও যাবে। বিপদে পড়ে গেছি দোস্ত হেল্প কর।
দুই বোনের কথা শুনে সাকিব আর মানা করতে পারেনা।
আচ্ছা ঠিকআছে যাবোনি। কখন যাবি?
সন্ধায় বের হবো।
ওকে।
বাসায় বসে বসে বোরিং সময় কাটানোর চাইতে শপিংয়ে যাওয়া ভালো।
ভার্সিটিতে যায় সাকিব। ১২ টারর দিকে চলেও আসে।
কিন্তু মনটা খালি ছটফট করতাছে মুনকে দেখার জন্য তার সাথে একটু কথা বলার জন্য। কখন যে সন্ধা হবে।
সন্ধার দিকে সাকিব আর ছাব্বির বের হয় সাথে ওরটা আমারটা আর বিবাহিত মহিলা একটা। কিন্তু কাহিনি হলো হালায় মজা নিতাছে দারুন আর আমি ইনোসেন্ট এর মতো মাথা নিচু করে হাটতাছি।
শপিং করতে গিয়ে দেখি এরা তো পুরো মলটাই উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে এসেছে। একের পর এক দেখছে আর কিনতাছে অলরেডি আমার আর ছাব্বিরের হাত ভর্তি হয়ে গেছে উনাদের গুলা কিনতে কিনতে।
যাই হোক শপিং শেষ করে বাসায় ফিরার পথে উনাদের জিনিসগুলা ওদের হাতে দিলো সাকিব।
তারপর তারা বাসার দিকে ঘুরলো।
হঠাৎ মুন সাকিবর হাতটা ধরে ফেললো।
সাকিব অবাক হয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে মুন তার দিকে তাকিয়ে আছে। লক্ষন তো ভালো মনে হচ্ছে না।
কেটে পড়তে হবে।
মুন আরো শক্ত করে হাতটা ধরে তার বাম হাতের প্যাকেটটা হাতে দিয়ে বললো,
বিয়েতে এই পান্জাবিটা পড়বা বুঝছো? (মুন)
বলেই তার হ্রদয় ছোয়া হাসি দিয়ে চলে গেলো।
এই মেয়ে আমাকে শেষ করে ফেলবে। ক্রাশ খাইতে খাইতে আমার বারোটা বেজে যাবে। আর যদি বিয়ে করি তাহলে তো কথাই নাই। দোয়া করেন সবাই আল্লাহর কাছে যাতে আবারো সেকা না খাই। এবার আমি সফল হতে চাই। হিহিহি।
এভাবে দেখতে দেখতে কেটে গেলো আরো ১৩ টা দিন।
হাসি আড্ডা ঘুরাঘরির মধ্য দিয়ে ভালোই কেটেছে সময়গুলা।
আজকে ছাব্বিরের বিয়ে,
মানে আজকেই তার ব্যাচেলর লাইফ শেষ হতে চলেছে।
নাহ সবাই বিয়ে করে ফেলতাছে আমি যে কবে করবো।
এইসব ভাবে সাকিব।
যেহেতু একই এলাকায় বিয়ে তাই একটু দেরিতেই বের হলাম।
বিকেল ৪ টার দিকে সবাই মিলে গেলাম।
বরের গাড়িতে সাকিব আর কয়েকটা ফ্রেন্ড আর ছাব্বির।
ওরে যত পারি ক্ষাপাইতাছে। চরম মজা নিতাছে।
ছাব্বির বেচারা আর কি করবে মাথা নিচু করে বসে আছে।
গাড়ি এসে গেট এ থামলো। সবাই নামলাম গাড়ি থেকে।
কিন্তু ঢুকবে কিভাবে গেট এর সামনে অনেকগুলা সেয়ে দাড়িয়ে আছে।
আপু আপনারা কি চান? (সাকিব)
আপনাদের মিষ্টিমুখ করাবো।
ওহ তো এতোজন কেনো একাই তো খাওয়াতে পারতেন ডাকতেন কোথাও আলাদা দেখা করতাম। এখানে কেনো?
শুনেন বরকে এখানে?
আমি। (সাকিব)
ছাব্বির আবালেরর মতো হা করে তাকায় সাকিবর দিকে।
সাকিব আর ছাব্বিরের ড্রেস একদম সেম তাই বুঝার সাধ্য নেই যে কে বর।
আপনি বর তো এতো কথা কেনো বলতাছেন হা করেন।
ওকে।
সাকিব মিষ্টি খায় মেয়েটার হাতে।
এবারতো সরেন।
উহু এতো সহজ মিষ্টি খাইলেন এবার টাকা দেন।
কিসের টাকা?
কিসের টাকা জানেন না?
ওহ মিষ্টির টাকা? আপনি এক কাজ করেন আমার সাথে চলেন এক প্যাকেট মিষ্টি আপনাকে খাওয়াবোনি।
ওই মিয়া আমি মিষ্টি খাইনা টাকা ফালান ১০ হাজারর তারাতারি।
দোস্ত দিয়া দে দিয়া দে। (ছাব্বির)
হ তোমার তো আর বিয়ে করার জন্য তর সইতাছে না। (সাকিব)
সবাই হেসে উঠলো।
আমি বললাম আপু একটু এদিকে আসেন কথা বলি।
কি বলেন।
আপু আমরা তো এতো টাকা আনিনাই। ৫ হাজার রাখেন বাকিটা একসময় দিয়ে দিবো।
আপনারে কই পাবো পরে যা দেওয়ার এখনি দেন নইলে বিয়ে বন্ধ।
আচ্ছা ওদেরকে তো ঢুকতে দেন। ওরা না খেয়ে আছে অনেকক্ষণ ধরে।
বলেই ৫ হাজার টাকা হাতে দিলাম।
মেয়েটা বললো,
একে বাদে সবাইকে যেতে দে। বর কে যেতে দিবিনা দেখি টাকা না দিয়ে বিয়ে কিভাবে হয়।
সবাই ভিতরে ঢুকলো এইবার বললাম সত্তি কথা।
আপু আসলে বর ভিতরে চলে গেছে আমি বরের বন্ধু।
কিহ। চিটিং।
মেয়েটা রাগ করে চলে গেলো। যাক এবার সাকিবও ভিতরে ঢুকলো। শত শত সুন্দরি মেয়েদের মধ্যে সাকিব একজনকেই খুজে চলেছে মুনকে।
কিন্তু মুন কই। সারাদিন দেখেনাই সাকিবর মনটা কেমন জানি করতাছে।
খুজতে খুজতে ক্লান্ত হয়ে গেলো কিন্তু কোথাও পেলো না সাকিব।
খাওয়াও হয়নাই প্রচন্ড ক্ষুদা লাগছে।
ক্লান্ত হয়ে যখন ফিরে আসবে তখন মুন হাত ধরে টান দিলো।
তারপর হাত ধরে টানতে টানতে প্যান্ডেলের পিছনে নিয়ে গেলো।
কোথায় ছিলেন আপনি? (সাকিব)
উপর থেকে দেখছিলাম কি করো তুমি। (মুন)
কি দেখছেন? (সাকিব)
খাওয়া বাদ দিয়ে আমাকে কেনো খুজছিলা? (মুন)
আপনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো সারাদিন দেখিনাই তো তাই। (সাকিব)
আমি যখন চলে যাবো তখন কি করবা? (মুন)
জানিনা বাট আমি তোমাকে অনেক মিস করবো। (সাকিব)
কেনো মিস করবা? (মুন)
কারনন আমি তোমাকে।
হ্যা আমাকে কি?
আমি তোমাকে,
না বলতে পারলে জেলে ঢুকাই দিবো কিন্তু।
সাকিব এবার ভয়ে চোখ বন্ধ করে বলে,
আমি তোমাকে ভালোবাসি। বলেই দৌড়ড় দিতে যাবে ঠিক তখন মুন হাতটা ধরে টান দেয়। তারপর জড়িয়ে ধরে সাকিবকে।
সাকিব বুঝতে পারেনা কি করবে। তবে কেমনন জানি শান্তি লাগতাছে ভিতরে। সাকিব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মুনকে।
কিছুক্ষন পর নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় মুন,
এখন জড়িয়েই থাকবা নাকি কিছু খাবা? (মুন)
খাবো মানে? (সাকিব)
মানে দুপুরেও তো খাওনাই তাই তোমারর জন্য বিরিয়ানি নিয়ে আসছি তোমারর ফেবারিট খাবা? (মুন)
তুমি খাইয়ে দিলে খাবো। (সাকিব)
আমিও না খেয়ে আছি। (মুন)
কেনো? (সাকিব)
তুমি খাইয়ে দিবে তাই। (মুন)
সাকিব মুনর পাশে বসে তারপর দুজন দুজনকে খাইয়ে দেয়। ঠিক যেভাবে প্রথম দিন বাসে খাইয়ে দিয়েছিলো সাকিব ওভাবেই খাইয়ে দেয়। আর অবাক হয়ে দেখে মুনর মায়াবি মুখটা। চারপাশে লাইটিং এর লাল নিল আলোতে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে তাকে।
হঠাৎ ঝাল লেগে যায় মুনর। কিন্তু পানি কই?
পানির বোতল আনতে ভুলে গেছে। চোখে পানি চলে আসছে মুনরর। প্রচন্ড ঝাল লাগছে সাকিব আবারো ক্রাশ খায় মেয়েটাকে দেখে। কিন্তু এবার যেটা ঘটে সেটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা সাকিব।
হুট করে মুন সাকিবকে লিপ করতে শুরু করে।
সাকিব চোখ বড় বড় করে বুঝার চেষ্টা করে কি হচ্ছে তার সাথে।
পর্ব ১০
হুট করে মুন সাকিবকে লিপ করতে শুরু করে।
সাকিব চোখ বড় বড় করে বুঝার চেষ্টা করে কি হচ্ছে তার সাথে। কয়েক মুহুর্ত পর ব্যাপারটা বুঝতে পেরে সাকিবও কিস করতে থাকে।
মুন লজ্জা পেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। সাকিব বসে বসে মুচকি হাসে। অবশেষে হয়েই গেলো। ভালোই হইছেছে বন্ধুর সাথে সাথে নিজের ও হয়ে গেলো খারাপ না।
সেও উঠে ওখান থেকে ছাব্বিরের কাছে যায়,
কিরে কই ছিলি এতোক্ষন? (ছাব্বির)
এইতো ঘুরাঘুরি করছিলাম। (সাকিব)
আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে? (ছাব্বির)
কেনো? কি হইছে? (ছাব্বির)
নিজেকে রোবট রোবট লাগতাছে। এইরকম অদ্ভুতত ভাবে বসে থাকতে আর ভালোলাগেনা। (ছাব্বির)
ভাবতাছি পালিয়ে বিয়ে করবো! (সাকিব)
কেনো? (ছাব্বির)
তাহলে এইরকম বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবেনা। (সাকিব)
সেটা অবশ্য ঠিকই বলছোস। (ছাব্বির)
হুম এখন চুপচাপ বসে থাক। (সাকিব)
আচ্ছাহহ
সাকিব শুধু সুযোগ খুজতাছে কখন মুনকে একা পাবে।
আর মুন দুষ্টামি করতাছে। কাছেই যায়না। লুকিয়ে লুকিয়ে থাকে। সাকিবর আম্মু আব্বু সবাই আসছে তাই কিছু করতে পারতাছেনা।
বিয়ে সম্পন্ন হলো রাত ৯ টায় শীতের রাত এটাই গভীর রাত মনে হচ্ছে। সাকিব দেখছে মুনকে কিন্তু কিছুই করতে পারতাছে না আরেকটা কিস করতে ইচ্ছা করতাছে তার অথচ মুন তার থেকে দুইহাত দুরে থাকা সত্তেই কিছুই হচ্ছেনা। হঠাৎ কারেন্ট চলে গেলো। এই সুযোগ।
সাকিব মুনর ঘারে একটা কিস করে সরে পড়লো।
মুন বুঝতে পারলো দুষ্টুটার কাজ। রাগি একটা ভাব নিয়ে তাকালো সাকিবর দিকে। অন্ধকারের মধ্যেও মুনকে দেখতে পারছে সে। আর বুঝতে পারছে মুন রেগে আছে।
হঠাৎ কারেন্ট চলে আসলো। সাকিব একটা সরি বলে গাড়িতে এসে বসলো।
সাকিব চলে আসলো।
দোস্ত বাসর রাত কিন্তু বুঝসোস? একটু ভুল করলে খবর আছে। (সাকিব)
দোস্ত ভয় লাগতাছে। (ছাব্বির)
সালা এতোদিন প্রেম করে এখন বলে ভয় লাগতাছে। (সাকিব)
দোস্ত তুই ও চল। (ছাব্বির)
ধুর হালা কি কস এগুলা আল্লাহ গুনাহ দিবো শোন একটা টিপস দেই। তুই গিয়ে তোরর বউয়ের ঘোমটা তুলবি তারপর বলবি তোমাকে পরির মতো লাগতাছে একটু পা টা টিপে দিবা? সারাদিন অনেক পরিশ্রম গেছে। (সাকিব)
হ দোস্ত ঠিক বলছোস পা টা প্রচন্ড ব্যাথা করতাছে বাট বিড়াল মারার ব্যাপারটা? (ছাব্বির)
তোকে যা বলছি ওগুলা বললে তোর বউই মারবে তোকে কিছু করতে হবেনা। (সাকিব)
আচ্ছা দোস্ত দোয়া করিস।
ওকে যা।
ও ভিতরে ঢুকতেই চার বন্ধু একসাথে হেসে উঠলো সালায় আজকে সেই বাশ খাইবো।
দরজায় কান পেতে থাকলো সবাই।
প্রায় ১০ মিনিট পর বেচারারর আর্তচিৎকার আর শুনে কে।
মায়া হতে লাগলো ওর জন্য। আগে গার্লফ্রেন্ডের হাতের মাইর খাইতো আর এখন বউয়ের হাতের।
হাহাহাহা।
ওকে তো পাঠাই দিলাম।
কিন্তু আমার আর ঘুম হচ্ছেনা। বারবার মুনর ঝাল লাগার পর যে ফেসটা হইছিলো সেটা চোখের সামনে ভাসতাছে। সারারাত শুধু মুন আর মুন মাথায় আর কিছু ঘুরেনা।
পরের দিন সকালে উঠে হাত মুখ ধুয়ে ছাদে বসে বসে সকালটা উপভোগ করছে সাকিব এমন সময় ছাব্বির ছাদে আসলো।
কি অবস্থা দোস্ত খবর ভালো? (সাকিব)
এইতো ভালো। (ছাব্বির)
বিড়াল মারছিস? (সাকিব)
আমি না তোর ভাবিই মারছে। (ছাব্বির)
কস কি মামা সত্তি নাকি? (সাকিব)
হুমম তবে বিড়াল না আমাকেআমি গিয়ে তোর কথামতো বলছি যে পা টা টিপে দাও। নিঝুম কাছে এসে সুন্দর করে ইচ্ছা মতো পিটাইছে তারপর সারারাত কান ধরে দাড় করাই রাখছিলো। সারারাত ঘুম হয়নাই এখন যাই একটু ঘুমাবো। (ছাব্বির)
ধুর হালা এখন ঘুমাইস না মানুষ হাসাহাসি করবো শোন রাতে একটু তারাতারি ঘুমাবি ওকে। (সাকিব)
আচ্ছা বাট তুই কাজটা ঠিক করোস নাই তোর জন্য সারারাত পেইন দিছে। (ছাব্বির)
হ এখন সব দোষ আমার। (সাকিব)
হু। (ছাব্বির)
বলেই নিচে চলে গেলো।
দিনটা অসহ্য রকমের বড় মনে হতে লাগলো সাকিবর। কখন বিকেল হবে কখন মুন আসবে। মুনকে দেখার জন্য সাকিবর মন ছটফট করে উঠে। ফোন নাম্বার টাও নাই যে কথা বলবে। জিবনে এতো কাচা কাজ কোনোদিন করেনাই সাকিব। রিলেশন হয়ে গেলো অথচ নাম্বারই নেওয়া হয়নি।
ধুররর।
অনেক কষ্টে দিন কাটলো সাকিবর ওদিকে মুনও কেমন যানি অস্থির হয়ে আছে সাকিবর সাথে দেখা করার জন্য।
বিকেল হতেই সাকিব অপেক্ষা করতে লাগলো কখন মুন আসবে। ৪ টার দিকে ছাদ থেকে দেখতে পেলো ওরা আসতাছে।
সাকিব দৌড়ে নিচে নামলো। তারপর লুকিয়ে পড়লো একটা ফাকা রুমে।
কিছুক্ষন পর মুন নিঝুম এর রুমের দিকে পা বাড়াতেই।
সাকিব মুনর হাত ধরে টান দিয়ে রুমের ভিতর নিয়ে আসে।
তারপর দড়জাটা বন্ধ করে মুনর কানে কানে বলে,
এবার কোথায় যাবা? (সাকিব)
ছাড়ো কেও দেখে ফেলবে(মুন)
সাকিব মুনকে বিছানায় ফেলে দিয়ে বলে।
এইযে মিসপুলিশ অফিসার আপনি এখন ডিফেন্স করেন দেখি কি শিখছেন এতো ট্রেনিং নিয়ে। (সাকিব)
বলেই মুনর ঠোটের দিকে তাকায়।
হালকা পিংক কালারের লিপস্টিক দেখে লোভ সামলাতে পারেনা সাকিব।
পর্ব ১১
সাকিব মুনর হাত ধরে টান দিয়ে রুমের ভিতর নিয়ে আসে।
তারপর দড়জাটা বন্ধ করে মুনর কানে কানে বলে,
এবার কোথায় যাবা? (সাকিব)
ছাড়ো কেও দেখে ফেলবে। (মুন)
সাকিব মুনকে বিছানায় ফেলে দিয়ে বলে।
এইযে মিসপুলিশ অফিসার আপনি এখন ডিফেন্স করেন দেখি কি শিখছেন এতো ট্রেনিং নিয়ে। (সাকিব)
বলেই মুনর ঠোটের দিকে তাকায়।
হালকা পিংক কালারের লিপস্টিক দেখে লোভ সামলাতে পারেনা সাকিব।
ঠোটের দিকে এগিয়ে দেয় তার ঠোট।
মুন ভাবতাছে এবার কি করি? কিস করলে সমস্যা ছিলোনা বাট আমার চাকরি নিয়ে এতো বড়ো কথা! নাহ মেনে নেওয়া যায়না। আজকের মতো কিস বাদ ওরে আমার বিশেষ কৌশল দেখাবো এবার। মুন একটা দুষ্টামিমাখা হাসি দিয়ে সাকিবর চোখের দিকে তাকায়। সাকিব একমনে তাকিয়ে আছে মুনর চোখের দিকে।
সাকিবর ঠোট মুনর ঠোট স্পর্শ করতেই মুন শিউরে উঠে।
সারা শরির কেপে উঠে। কিন্তু এবার হবে আসল খেলা। সাকিব মুনর ঠোটে একটু চাপ দিতেই মুন সাকিবর ঠোটে কামড় মারে।
সাকিব ব্যাথায় নিজেকে ছাড়িয়ে নিতেই মুন দৌড় লাগায়।
কি বজ্জাতপুলিশরে বাবা! কিস করতে গিয়ে কামড় মেরে দিলো। সাকিব চুপচাপ ঠোটে হাত দিয়ে বসে থাকে। মন হয় কেটে গেছে। ধুরর এতো কষ্ট করে শুধু একটা কামড় পেলাম।
সাকিব ছাদে চলে যায় রাগ করে।
মুন খাওয়া দাওয়া করে সবার সাথে। কিন্তু সাকিবকে দেখেনা। সাকিব ছাদে বসে আছে মন খারাপ করে।
সন্ধা হয়ে গেছে তারপরও ছাদেই বসে আছে। রাতের ছাব্বির দেখতে তার ভালোলাগে তাই বসে বসে তারা গুনছিলো। কিন্তু বারবার ভুল হয়ে যায়। ছোট বেলায় ভাবতো ছাব্বিরের তারাগুলো যেদিন মাটিতে নেমে আসবে ওইদিন অনেকগুলা তারা সে তার রুমের মধ্যে রেখে দিবে বড় হয়ে সবাইকে দেখাবে তাই।
সাকিব ভাবে ওই দিনগুলাই ভালো ছিলো যখন কিছু বুঝতাম না। এসবই আবোল তাবোল ভাবতেছিলো।
ওদিকে মুন সাকিবকে খুজছে। কিন্তু কোথাও পাচ্ছেনা।
খুজতে খুজতে ছাদে চলে আসে। মুন একটু হাসে সাকিবকে এখানে দেখে। তারপর আস্তে করে সাকিবর কাধে হাত রাখে।
সাকিব কিছুটা ভয় পায়। পিছনে তাকিয়ে দেখে মুন।
সাকিব উঠে দাড়ায়।
তুমি ছাদে কেনো আসছো? (সাকিব)
কেনো আসতে পারিনা? (মুন)
পারো তবে রাতে আসছো তারওপর আমি ছাদে কেও দেখে ফেললে খারাপ ভাববে। (সাকিব)
কিস করার সময় মনে ছিলোনা তখন কেও দেখে ফেললে কি ভাববে? (মুন)
কিস আর করলাম কই কামড় খেয়েই তো সব শেষ। (সাকিব)
তুমিই তো বললা কিভাবে বাচবো সেটা দেখাতে তাই দেখাইলাম। (মুন)
হইছে ভালো করছো। (সাকিব)
মুন সাকিবকে জড়িয়ে ধরে বলে, সরি। (মুন)
হইছে! (সাকিব)
কিস করো। (মুন)
কেনো? (সাকিব)
কেনো আবার তখন কামড় দিছি এখন কিস করবা আবার কি। (মুন)
সাকিব মুনর কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
তারপর দুজনে মিলে রাতের ছাব্বির দেখে।
কিন্তু এবার মুনকে যেতে হবে।
নিঝুম আর ছাব্বিরকে নিয়ে যাবে সাথে যাবে ছাব্বিরের বন্ধুগুলা।
মুন গিয়ে রেডি হয় সেতো জানেনা যে সাকিবও যাবে। তাই মুনর একটু মন খারাপ। সবার সাথে বের হয় মুন।
যাওয়ার আগে সাকিবকে বলে,
মিস করবো তোমাকে বাবু। (মুন)
হুমম। আচ্ছা যাও। (সাকিব)
মন খারাপ করে গাড়িতে গিয়ে বসে মুন,
ছাব্বির নিঝুম আর মুন যাবে একটা গাড়িতে বাকিরা অন্যগুলায়।
কিছুক্ষন পর সাকিব গাড়িতে এসে বসে,
আরে তুমি এখানে? (মুন)
তো আমি যাবোনা আমার ফ্রেন্ডকে নিয়ে যাবা। (সাকিব)
হিহিহি ভালোই হইছে বাট আগে কেনো বলোনাই? (মুন)
আগে বললে কি আর তোমার এই হাসিমাখা মুখটা দেখতে পারতাম? (সাকিব)
হুম পাগল। (মুন)
গাড়ি চালাচ্ছে ছাব্বির আর ওর পাশে নিঝুম আর পেছনে বসে বসে প্রেম করছে সাকিব আর মুন। নিঝুম বারবার আড়চোখে পিছনে তাকায়। বুঝতে পারেনা কি হচ্ছে এসব।
তাই মুনকে জিজ্ঞেস করে,
মুনপু সাকিব ভাইয়ার সাথে তোমার সম্পর্কটা কি? (নিঝুম)
সাকিব তোর হবু দুলাভাই হিহিহি। (মুন)
বাট কেমনে কি সাকিব ভাইয়া তো রিয়াকে ভালোবাসতো। (নিঝুম)
হুম বাসতো এখন বাসেনা। (মুন)
ওহ আচ্ছা প্রেম করো এখন চুটিয়ে। (নিঝুম)
সাকিব মুনর কোলে মাথা রাখে। মুন সাকিবর চুলে হাত বুলায়। আর মিষ্টি মিষ্টি প্রেম দেখে ছাব্বিরের সহ্য হয়না।
গাড়িটা থামিয়ে বলে,
ওই তোরা দুজন নাম গাড়ি থেকে। (ছাব্বির)
কেনো কি হইছে? (মুন)
আরে ভাই বিয়ে করছি আমরা আর আমাদের ড্রাইভার বানিয়ে আপনারা প্রেম করতাছেন। (ছাব্বির)
হাহাহা আচ্ছা দুজনে পেছনে গিয়ে প্রেম করে আমি আর আমার জানু সামনে বসতাছি। (সাকিব)
আচ্ছা। (ছাব্বির)
তারপর সাকিব আর মুন সামনে বসে।
সাকিব ড্রাইভ করে আর মুন সাকিবর কাধে মাথা রাখে।
আর পেছনে নিঝুম আর ছাব্বির প্রেম করতাছে।
এভাবেই সারা রাস্তা যায়।
নিঝুমের বাসায় এসে গাড়ি থেকে নামে সাকিব।
ছাব্বির তখনও নিঝুমের কোলে মাথা রেখেই আছে।
এইযে মিস্টার রোমিও এবার বের হন সবাই দেখতাছে। (সাকিব)
ছাব্বির ঝটপট উঠে পড়ে। তারপর নিঝুমকে নিয়ে বের হয় গাড়ি থেকে।
পর্ব ১২
ভিতরে ঢুকার পর মুন উধাও হয়ে গেলো।
কি আর করার একা একাই বসে থাকতে হচ্ছে।
রাত ১০ টা বাজে,
সবাইকে খাবার টেবিলে ডাকা হলো।
সাকিবও গেলো। সাকিবর সামনে মুন বসে আছে।
সাকিব এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
এমন সময় মুন সাকিবকে চোখ মারলো।
সাকিব আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো সবাই খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিছে। হঠাৎ সাকিবর পায়ের ওপর একটা ঠান্ডা কিছু অনুভব করলো।
নিচে তাকিয়ে দেখে মুন তার পা দিয়ে সাকিবর পায়ে সুরসুরি দিচ্ছে। দুজনের মুখেই মুচকি হাসি।
সাকিব মুনর পায়ে আলতো করে ছুয়ে দিতেই মুন শব্দ করে উঠে।
সাকিব চুপ হয়ে যায়।
কি হয়েছে?
বিড়াল মনে হয়। (মুন)
ওহ খাচ্ছোনা কেনো খাও।
হুম।
তারপর খাওয়া শেষ করলো। রাতে শোয়ার আগে মুন সাকিবর রুমে আসলো।
এইযে মিস্টার আপনি তখন আমার পায়ে সুরসুরি কেনো দিলেন? (মুন)
তখন তো পায়ে দিছি এখন অন্য জায়গায় দিবো (সাকিব)
মানে? (মুন)
দাড়াও মানে দেখাচ্ছি। (সাকিব)
বলেই দরজাটা আটকে দিলো। তারপর মুনর দিকে আগাতে লাগলো। মুন পেছনে যেতে লাগলো। সাকিব আস্তে আস্তে মুনর কাছে চলে গেলো। মুন দেয়ালের সাথে আটকে গেলো।
সাকিব মুনকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
হাত দুটা চেপে ধরে মুনর দিকে আগালো।
মুন চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। সাকিব মুনর ঘারের ওপর থেকে চুল সরিয়ে ফেললো। তারপর পেছন থেকে মুনকে জড়িয়ে ধরে চুলগুলা ছেড়ে দিলো।
মুনর ঘন চুলে নাক ডুবিয়ে দিলো সাকিব।
কেমন একটা মাতাল মাতাল লাগছে তাকে।
মুখটা চুল থেকে সরিয়ে মুনর ঘারে একটা কিস করলো সাকিব।
মুন কেমন যেনো শিউরে উঠলো। সাকিব মুনকে ছেড়ে দিতেই মুন দৌড়ে পালালো।
সাকিব বিছানায় বসে হাসতে লাগলো।
দুই মিনিট পর আবার রুমে আসলো মুন,
সাকিব বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলছে। এখানকারই ছেলে। আব্বুর নাকি খুব পছন্দ হইছে তাকে। আগামি শুক্রবার আমার বিয়ে। কিছু একটা করো। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা। (মুন)
মানে? (সাকিব)
মানে টানে কিছু জানিনা তুমি ডিসিশন নিয়ে আমাকে জানাইয়ো। (মুন)
বলেই চলে গেলো।
সাকিব চিন্তায় পড়ে গেলো। তবে কি সত্তিই মুনর বিয়ে হয়ে যাবে? ধুরর বিয়ে কেমনে হবে। দরকার হলে পালিয়ে যাবো তারপরও মুনকেই চাই আমার। আনমনে ভাবতে থাকে সাকিব। এমন সময় ফোনটা বেজে উঠে,
আম্মু ফোন দিছে,
হ্যালো আম্মু? (সাকিব)
হ্যা। শোন কালকে সকালের মধ্যে বাসায় চলে আসবি। (আম্মু)
আচ্ছা। (সাকিব)
আম্মুর আবার কি হলো?
ধুরর ভালোলাগেনা এতো প্যারা আর।
সারারাত চিন্তায় ঘুম হলোনা সাকিবর।
রাত তিনটার দিকে ঘুমাইছে। সকালে আর ঘুম ভাঙেনাই।
৮ টার সময় হঠাৎ মুখের ওপর ভাড়ি নিশ্বাস অনুভব করতেও ঘুমটা ভেঙে গেলো সাকিবর। চোখ খুলে দেখে মুন সাকিবর বুকের ওপর সুয়ে আছে। দরজাটা আটকানো।
মুন(সাকিব)
হুমম। (মুন)
কখন আসছো? (সাকিব)
অনেকক্ষণ। (মুন)
কেও দেখে ফেলবে তো। (সাকিব)
কিন্তু আমার তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে ইচ্ছা করে। (মুন)
আমারো ইচ্ছা করে পরিটাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাই কিন্তু কি করবো বলো আমাদের তো বিয়ে হয়নাই। (সাকিব)
তুমি বাসায় বলোনা সাকিব। আব্বু আম্মু লেগে পড়ছে আমার বিয়ে নিয়ে। এই ছেলের সাথেই মনে হয় বিয়ে ফাইনাল হয়ে যাবে। (মুন)
দাড়াও আমি বাসায় গিয়ে দেখছি ব্যাপারটা আরো তো ৪ দিন সময় আছেই হাতে। (সাকিব)
হুমম যা করার তারাতারি করো আমার কেমন যানি লাগতেছে। তোমাকে ছাড়া আমি কল্পনাও করতে পারতাছি না। (মুন)
সাকিব মুনর কপালে চুমু দিয়ে বলে,
আমি আছিতো কিছু হবেনা। আমি কি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো। (সাকিব)
সাকিব মুনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
মুনও নিশ্চিন্তে ঘুমায়।
দশটার দিকে খাওয়া দাওয়া করে সাকিব সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসে।
এইরে মুনর নাম্বারটা নেওয়া হয়নি।
ধুরর পরে নিয়ে নিবো।
বাসায় ঢুকতেই দেখে সাকিবর আম্মু আর আব্বু দুজনে বসে আছে।
সাকিব গিয়ে তাদের পাশে বসলো।
বলো কি বলবা। (সাকিব)
তুই তো দেখলি ছাব্বির ও বিয়ে করে ফেললো। আমারও বয়স হয়ে গেছে সব কাজ করতে পারিনা। তাই আমরা তোর জন্য একটা মেয়ে পছন্দ করেছি। মেয়ে দেখতে পরির মতো।
আগামি শুক্রবার তোদের বিয়ে। (আম্মু)
মানে কি এসবের? আমাকে না জানিয়ে বিয়ে আসলো কোথা থেকে আর আমি কিছু করিও না বিয়ে করলে খাবো কি? (সাকিব)
তোর বাবারর এতো কিছু কি আমরা কবরে নিয়ে যাবো? (আম্মু)
কিন্তু
আব্বু কঠিন গলায় বললো,
কোনো কিন্তু টিন্তু নাই বিয়ে ফাইনাল মানে ফাইনাল।
কালকে বিকেলে দেখা করতে যাবি। (আব্বু)
আব্বুকে আমি প্রচন্ড পরিমানে ভয় পাই তাই কিছু না বলে রুমে চলে আসলাম।
মুনর কথা ভাবতেই ভিতরটা কেমন যেনো করে উঠলো।
এ কেমন ব্যাথা বলে বুঝাতে পারবোনা। মনে হচ্ছে ভিতর থেকে কেও কলিজাটা কেটে নিচ্ছে। যাই হোক দেখাই যাক কি হয়।
পর্ব ১৩ ( শেষ পর্ব )
সারারাত আর ঘুম হলোনা। সাকিব সকালে খাওয়া দাওয়া করে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে। মাঠের পেছনের পুকরপাড়ে গিয়ে বসলো। একা একাই পানিতে ঢিল ছুড়ছিলো
তখন হঠাৎ মুন পাশে এসে বসলো। সাকিব তার দিকে তাকিয়ে আবার ঢিল ছুড়ায় মনোযোগ দেয়।। মুন সাকিবর হাত ধরে বলে, তুমি আমাকে নিয়ে পালাতে পারবা? (মুন)
পা পা পালাতে কেনো হবে? আমি আব্বুকে বলবো আজকে রাতে তুমিও বইলো দেখবে তারা মেনে নিবে। (সাকিব)
আর যদি না মানে তখন? (মুন)
পালাবো। (সাকিব)
মুন সাকিবর কাধে মাথা রাখে। সাকিব
আবারো ঢিল ছুড়ায় মন দেয়।
বিকেলে বাসা থেকে বের হয় সাকিব।
আব্বুর জোড়াজুড়িতে মেয়েটার সাথে দেখা করতে হচ্ছে। মেয়েটার ছবি দেখায়নাই তবে নাম্বার দিছে। আর কালো শাড়ি পড়ে আসবে বলছে।
বাসা থেকে বেরিয়ে রিক্সা নিলো। ২০ মিনিট পর গিয়ে নামলো দ রেস্টুরেন্টের সামনে।
ভাড়া মিটিয়ে ভিতরে ঢুকলো সাকিব।
আশেপাশে কালো শাড়ি পড়া কাওকে দেখলো না।
একটা কফির অর্ডার দিয়ে বসে বসে ফোন টিপছিলো।
কফি আসার আগেই মেয়েটা চলে আসলো।
মেয়েটাকে দেখে বড়সড় একটা ধাক্কা খেলো।
এটাতো জেরিন।
ও এখানে কিভাবে?
আরে তুই? (জেরিন)
হ্যা আমি কেনো অন্য কাওকে আশা করেছিলি নাকি? (জেরিন)
না কিছুনা এমনি হঠাৎ এভাবে দেখা হয়ে গেলো তো তাই ভাবলাম হয়তো ভুল দেখলাম। (সাকিব)
যাই হোক বাদ দে এবার আমার কথা শোন তুই কি আমাকে বিয়ে করবি? (জেরিন)
সাকিব কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছেনা।
তার কি হ্যা বলা উচিত নাকি না বলা উচিত কোনটা।
সাকিব চুপচাপ নিচের দিকে তাকালো,
জেরিন তার অনেক ভালো একটা বন্ধু দেখতেও মুনর চাইতে ভালো কিন্তু সে তো মুনকে ভালোবাসে।
ওকে ছাড়া তো অন্য কাওকে বিয়ে করা সম্ভব না।
সাকিব মাথা নিচু করে বলে, আমি তোকে বিয়ে করতে পারবোনা। আমি মুনকে ভালোবাসি। (সাকিব)
মাথা উচু করে যা দেখলো তাতে তার শরির কেপে উঠলো। সামনে মুন বসে আছে জেরিন কোথায় গেলো?
তু তু তুমি এখানে? (সাকিব)
হ্যা আমি এখানে। (মুন)
কিন্তু কেমনে কি? (সাকিব)
আমিতো আগে থেকেই জানতাম তোমার সাথে আমার বিয়ে হবে। (মুন)
মানে এতোদিন তুমি মজা নিছো? (সাকিব)
হ্যা নিছি। (মুন)
ইয়ে মানে আপু বিয়েটা না করলে হয়না? (সাকিব)
মুন রেগে গিয়ে বললো, বিয়ে করবিনা মানে। বিয়ে না করলে তোরে ডিরেক্ট জেলে ঢুকাইয়া দিমু। (মুন)
আপু দেখেন না আমি বাচ্চা ছেলে আমার কি বিয়ের বয়স হইছে আমি আপনাকে কি খাওয়াবো বিয়ে করে? আর আমিতো আপনার ছোট বোনকে। (সাকিব)
তোর খাওয়ানো লাগবো না আমিই তোকে খাওয়াবো। মাথা কিন্তু এমনিতেই গরম হয়ে আছে বেশি কথা বলবিনা। (মুন)
আচ্ছা। (সাকিব)
সাকিব চুপচাপ মুনর দিকে তাকালো।
মুন রাগ কন্ট্রোল করে বললো,
চলো। (মুন)
কোথায়? (সাকিব)
বাসায় পৌছে দিবা। (মুন)
আচ্ছা চলো। (সাকিব)
হাটবা নাকি রিক্সা নিবো? (সাকিব)
হেটে হেটে যাবো। আর লাস্টের গলিটা তুমি আমাকে কোলে করে নিয়ে যাবা। (মুন)
অ্যা?
হ্যা। এবার চলো।
সাকিব মুনর হাত ধরে হাটতে থাকে।
কোনো সংকোচ নেই নেই কোনো ভয় দুদিন পরে তো মুন তারই হবে।
সাকিবর মনের ভিতর তখন কি চলতাছে সেটা ওই জানে।
ভালোবাসার মানুষকে নিজের করে পাবে এটা ভাবতেই অবাক লাগে। আর যখন সেটা বাস্তব হয়। পৃথিবির সবচাইতে ভাগ্যবান মানুষগুলার মধ্যে সে একজন হয়ে যায়। সাকিবকে নিজের ভাগ্যবানই মনে হচ্ছে যদিও সারাজিবন তার এই অত্যাচারর সহ্য করতে হবে।
হাটতে হাটতে গলির কাছ চলে আসে সাকিব।
এবার মুনকে কোলে নিতে হবে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেও আছে কিনা।
নাহ কেও নাই। সাকিব মুনকে কোলে তুলে নিয়ে হাটতে থাকে।
৪৮ কেজি আটার বস্তা একটা। কিছুদুর হাটতেই মুনকে সাকিব ফেলে দিলো।
মাটিতে পড়ে মুন কোমরে একটু ব্যাথা পেলো। ওদিকে সাকিব দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছেই।
মুন কিছু বুঝতে না পেরে সামনে তাকিয়ে দেখে সাকিবর বাবা। মুন এবার কাহিনি বু্ঝতে পেরে নিজেও দৌড় দেয়।
রাতে আম্মু খাওয়ার জন্য ডাকতাছে কিন্তু সাকিব সাহস পাচ্ছেনা যাওয়ার। শেষে ক্ষুদায় আর থাকতে না পেরে সাহস করে গিয়ে বসলো বাবার বিপরিত সাইটে।
খুব তো বলছিলেনন বিয়ে করবোনা বিয়ে করবোনা। কিন্ত্র বউকে পেয়ে তো একদম কোলে তুলে নিয়ে হাটছিলেন দেখলাম। (আব্বু)
আব্বু তুমি যা ভাবছো তা না আসলে। (সাকিব)
থাক আমাকে মানে বুঝাতে এসোনা। (আব্বু)
কি আর করার মাথা নিচু করে খাওয়া শুরু করলাম।
পরের দিন থেকে লেগে পড়লাম শপিংয়ে। বউয়ের জন্য জিনিসপত্র নিজের জন্য সবকিছু কেনাকাটা শেষ করে বাসায় ফিরলাম। পুরো বাড়ি সাজানো হয়েছে।।
ভালোই লাগছে দেখতে। এর মধ্যে মুনর সাথে খুব একটা কথা হয়নাই। ঠিকক করছি একদম বাসর রাতে কথা বলবো।
আজ শুক্রবার মানে আমার বিয়ে। সকাল থেকেই মনের ভিতর টান টান উত্তেজনা কাজ করছে।
কেমন জানি অস্থির অস্থির লাগতাছে। জিবনের প্রথম বিয়েতো তাই।
অবশেষে বিয়েটা ঠিকঠাক ভাবেই শেষ হলো।
আমিও খুশি মুনও খুশি। কিন্তু ঝামেলা বাধলো বাসর ঘরে। বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কাপা কাপা পায়ে রুমে ঢুকলাম। রুমে ঢুকে চোখের সামনে ডাবল দেখতাছি। একি বিয়ে করলাম একটা বউ দেখি দুইটা।
এক চোখ বন্ধ করে ভাবলাম এবার নিশ্চই একটা দেখবো। কিন্তু না এবারো দুইটা দেখলাম। কাহিনি কি?
আমি কি মদ খাইছি? নাতো এখন তো মদ খাওয়ার সময় না তাহলে আমি মাতলামি কেনো করছি?
বিছানায় গিয়ে বসতেই একজন বলে উঠলো, আগে নিজের বউ কোনটা বেছে নিন
তারপর বিছানায় আসবেন। কিন্তু কেমনে বুঝবো কোনটা আমার। দুজনেই তো একি। (সাকিব)
যদি আপনি ভুল মানুষকে বেছে নেন তাহলে আপনি আজকে বাইরে ঘুমাবেন। কিহ!
জ্বি এবার ঝটপট বউকে বেছে নেন।
এইবার মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। দাড়াও তোমাদের মজা আমি বের করছি। আমার একটা শর্ত আছে সেটা হলো আমি সরাসরি লিপ কিস করে বউ বেছে নিবো। (আমি)
এইবার দুজনে একটু ঘাবরে গেলো।
দুজনে দুজনের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, আচ্ছা।
আমি ছোটবেলার মতো দুইটা আঙুল মুখে মুনম। একটায় রিয়ার নাম আরেকটায় মুন। মনে মনে ঠিক করলাম ডান সাইটের টা মুন আর বাম সাইটে রিয়া। আঙুলে কামড় দিবো যেটাতে বেশি ব্যাথা পাবো ওইটা বেছে নিবো।
কামড় দিয়ে সিওর হলাম ডান সাইটের টাই আমার বউ।
তাই শর্ত অনুযায়ি কিস করতে এগিয়ে গেলাম।
দুজনের ঠোটের মধ্যে গ্যাপ প্রায় ১ ইঞ্চি ঠিক তখন মেয়েটা দৌড় দিলো।
আমি শব্দ করে হেসে উঠলাম।
শালিকা এবার বুঝো মজা।
আরেকটু হলেই কিসটা করতে পারতাম।
হিহিহি।
বউ আমার ঘোমটা তুলে রাগি লুক নিয়ে তাকালো।
এইবার রাগ ভাঙাতে হবে।
তবে একটু ভিন্নভাবে।
এর জন্য আপনাদের কি করতে হবে জানেন?
চোখটা বন্ধ করে চলে যান। অন্যের বাসর ঘরে আপনাদের কি হুমম?
আগে নিজে বিয়ে করেন তারপর বাসর দেইখেন।
সমাপ্ত
আরো পড়ুন বেস্ট ফ্রেন্ড যখন অফিসের বস – রোমান্টিক কষ্টের গল্প
Nice.অনেক সুন্দর গল্প ধন্যবাদ । আমার পড়া ২সেরা গল্পের একটি এটা।
❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️