রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প ২১

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – ভাইয়ের বন্ধু বর পর্ব ২১ | Love Story

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – ভাইয়ের বন্ধু বর পর্ব ২১: কখনো মিষ্টি ভালোবাসা আবার কখনো অভিমানী ভালবাসার মধ্যে মাহি ও নাবিলের সংসার জীবন কাটছে। তবে মাহি এখনো সঙ্কোচ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। নাবিল যেভাবে সবসময় উতেজিত থাকে মাহি ততটাই নীরব ও শান্ত। দেখা যাক মাহি নাবিলের মত হতে পারে কিনা? নাবীলের সংসারে কোন ভিলেনের আগমন কি হতে চলেছে? চলুন দেখি কি হয়?

মধুর ভালোবাসা

আজ মাহি তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গেলো। একটা শাড়ী নিয়ে ওয়াসরুম এ চলে গেলো শাওয়ার নেবার জন্য। শাওয়ার নিয়ে বাহিরে এসে দেখে নাবীল এখনো ঘুমাচ্ছে। এখনো কিছুটা সময় আছে তাই আর ডাক দেয়নি। তাই মাহি আয়নার সামনে গিয়ে নিজের চুলটা তোয়াল দিয়ে ঝাড়ছে যাতে চুলগুলো তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। আর তখনি চুলের কিছু পানি নাবীলের গায়ে পরে ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম ঘুম চোখে মাহির দিকে তাকিয়ে থাকে।

এদিক দিয়ে মাহিতো চুল ঝাড়ছে কিন্তু ওর খবরি নাই, দুটো চোখ কখন ধরে ওকে দেখছে?

পিছে ঘুরে দেখি উনি আমার দিকে কেমন নেশাভরা চোখে তাকিয়ে আছে! আমার বুঝতে বাকি রইলো না, উনার মতলোব ভালো না। কালকের মতো আজকেও না আবার না না। তার আগে ভালো আমি কেটে পরি।

মাহি তোয়ালাটা নিয়ে বারান্দায় গিয়ে মেলে দিয়ে ঘরে প্রবেশ করতে গেলেই নাবীল সামনে এসে দাঁড়ায়।

মাহি নাবীলকে দেখে একটা ঢোক গিলে,

মাহিঃ আপনে এখানে কি করেন, ওয়াসরুম ওদিকে। জান ফ্রেস হয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিন। আমি নিচে গেলাম।

এ কথা বলে সাইড দিয়ে চলে যেতে চাইলাম, কিন্তু উনি আমার কোমড়টা ধরে একটান দিয়ে তার বুকের সাথে চেপে ধরলেন। এতে ভিজা চুলগুলো আমার মুখের সামনে এসে পরেছে।

উনি একএক করে সবগুলো চুল কানের পেছনো সরিয়ে দিলেন। প্রতিটা স্পর্শে যেন হৃদয়ের স্পন্দনটা বেড়ে যাচ্ছে। কেনো জানি আজ উনার চোখে চোখ রাখতেও পারছি না। এই চোখের নেশাভরা চাহনী আমাকে মনে হয় পাগল করে দেবে।

নাবীলঃ তোকে ভিজা চুলে অসাধারণ লাগছে। মনে হয় তোর মাঝে ডুবে যাই আমি। এমন হলে নিজেকে সামলানো আমার জন্য কষ্টকর হবে।

মাহির গালে নাবীল নিজের নাকটা ঘষছে, আর বলছে। গরম নিঃশ্বাসগুলো মাহির মুখে পরছে।

নাবীলঃ তুই আমায় পাগল করে দিবি। আমি তোর মাঝে ডুবতে চাই, দিবি আমাকে একটু ডুবতে। আমার অতৃপ্ত মন তোর ভালোবাসার জন্য ব্যাকুল হয়ে পরছে। কি করবো আমি, কিভাবে সামলাবো নিজেকে আর?

মাহি কিছু বলে উঠার আগেই,
নাবীল মাহির ঠোটটাকে নিজের ঠোটের মধ্যে নিয়ে নিলো। আর মাহি নাবীলের গেনজিটা খামচি দিয়ে ধরে ফেললো। নাবীলের এক হাত মাহির কোমড়ে, আরেক হাত দিয়ে মাহির চুলগুলো আঁকড়ে ধরে রেখেছে, যাতে মাহি নড়তে না পারে। এভাবে কতোক্ষণ ছিলো দুজনেরি কোন খবর ছিলো না।

পারিবারিক সম্পর্ক

হঠাৎ দরজার নক শুনে মাহি নাবীলকে ধাক্কা দিলো, কিন্তু নাবীল এক পাও নড়লো না। আরো শক্ত করে ধরে মাহির ঠোট থেকে গালে, গলায় কিস করতে লাগলো। নাবীল যেন আজ নিজের মধ্যে নেই।

এদিক দিয়ে দরজার বাহিরে নিশি দরজা নক করছে আর ভাইয়া ভাবী বলে চিল্লাচ্ছে।

মাহি নাবীলকে ছাড়াবার বৃথা চেষ্টা করছে কিন্ত পারছে না।

নাবীল প্লিজ ছাড়ুন, নিশি দরজায় নক করছে। ওর চিল্লানিতে বাড়ীর সবাই এসে পরবে, প্লিস।

মাহির কথায় নাবীলের ঘোড় কাটে। নাবীল গিয়ে দরজাটা খুলেই নিশিকে এক ধমক দেয়, বেচারী নিশি কিছুই বুজতে পারে না, কেনো তার ভাই তার সাথে এমন করেছে। রাগ করে চলে যেতে নিলে মাহিও পিছে পিছে যায়।

আর নাবীল রাগে কটমট করে ওয়াসরুম এ চলে যায়।

নাবীল ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে রেডি হচ্ছিলো, এমন সময় অর্কও মাহি মাহি করে ডাকতে এলো। রুমে এসে দেখে নাবীল রেডি হচ্ছে কিন্তু মাহি নেই।

অর্কঃ ভাই মাহি কোথায়?

নাবীল শার্টের বোতামগুলো লাগাচ্ছে আর অর্ককে ইশারা করে বলছে,

নাবীলঃ অর্ক, আমি তোর ছোট নাকি বড়।

অর্কঃ অফকোর্স ভাই, তুমিতো আমার বড়।

নাবীলঃ তাহলে আমার বউকে নাম ধরে ডাকার কারণ কি?

অর্কঃ ভাইয়া মাহিতো আমার ছোট তাই ওকে নাম ধরে ডাকি, আর তেমন কিছু না। এতে সম্পর্ক গভীর হয়।

এমন সময় নাবীল তানজিলাকে দেখতে পায়, তানজিলা তাওহিদকে চা দিয়ে নিচে যাচ্ছিলো।

নাবীলঃ ভাবী, একটু এখানে আসবে।

তানজিলাঃ নাবীল, কিছু বলবে।

নাবীলঃ ভাবী, তুমি আমার কতো বছরের ছোট?

তানজিলাঃ এই কথা কেনো জিজ্ঞেস করছো?

নাবীলঃ আরে বলো না, তারপর বুজবে।

তানজিলাঃ এই তো দুই বছরের ছোট হবো।

নাবীলঃ কখনো তোমাকে আমি নাম ধরে ডাকছি বলো?

তানজিলাঃ নাতো।

নাবীলঃ কেনো, তুমি তো বয়সে আমার ছোট। তাহলে নাম ধরে ডাকতেই পারি, এতে নাকি সম্পর্ক ভালো থাকে।

তানজিলাঃ না, পারো না। কারণ আমি তোমার বড় ভাইয়ের বউ হই। বয়সে তুমি আমার বড় হলেও সম্পর্কে আমি তোমার বড়। তাই তোমার নাম ধরে ডাকাটা যুক্তিসঙ্গত নয়। আর সম্পর্ক ভালো রাখতে নাম ধরে ডাকার প্রয়োজন নয়, সম্মান দিলেই হয়। আর কিছু জানার আছে তোমার?

নাবীলঃ না ভাবী, তুমি সব বলেই দিয়েছো। আশা করি, অর্ক বুঝে গেছে।

এরপর অর্ক মাথা নিচে করে চলে গেলো।

নাবীলঃ আসলে ভাবী….

তানজিলাঃ থাক বলতে হবে না, আমি বুঝে গেছি। তুমিও তাড়াতাড়ি চলে আসো।

ভাবী-ননদ-বোন

এদিকে মাহি নিশির পিছে পিছে ওর রুমে গেলো। নিশি রুমে গিয়ে ন্যাকা কান্না করতে লাগলো।

নিশিঃ ভাইয়া আমাকে একটুও ভালোবাসে না।

মাহিঃ কে বলছে তোমাকে এসব কথা?

নিশিঃ কেনো তুমি দেখোনি, শুধু শুধু আমাকে কিভাবে ধমক দিলো। আমি তো আজ তেমন কিছুই করেনি, মা বলেছে বলে তোমাদের ডাকতে গেলাম। আর ভাইয়া…. (এ্যা এ্যা এ্যা করে কানতে লাগলো)

মাহিঃ আরে পাগলী তখন তোমার ভাইয়া খুব সুন্দর স্বপ দেখছিলো, কিন্তু তোমার কারণে বেচারার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো। তাই রাগে তোমার সাথে এমন বিহেভ করেছে।
তুমিই বলো, তুমি কোন সুন্দর স্বপ্ন দেখছো, এমন সময় কেউ এসে তোমাকে ডাকাডাকি করলে কেমন লাগবে? নিশ্চয় ভালো লাগবে না।

নিশিঃ জানো ভাবী, মা প্রায়ই এমন করে আমার সাথে। যখনি কোন সুন্দর স্বপ্ন দেখি, ঠিক ওই সময়ে মা এসে নিশি উঠ, নিশি কলেজে যাবি না বলে ডাকাডাকি করতে থাকে। আর আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়।

মাহিঃ এই কারণেই তোমার ভাইয়েরও খারাপ লাগছে। তাই হয়তো একটু রেগে গেছে। তুমিতো জানো উনার রাগ কেমন! একটু উন্নিশ বিশ হলেই রাগ উঠে যায়।

নিশিঃ হুমমম, ঠিক বলছো। কিন্তু ভাইয়াকে বলবে আমাকে সরি বলতে। ওকে।

মাহিঃ ওকে ওকে ওকে। এখন চলো। সবাই বসে আছে।

নিশিঃ আবার না তোমার হিটলার ভাই আমার উপর রেগে যায়। তাই তাড়াতাড়ি চলো।

নাবীল রেডি হয়ে নিচে নেমে বড়সড় ধাক্কা গেলো লাবনিকে দেখে।

লাবনি অর্কের বড় বোন। বিদেশে ছিলো এতোদিন, নাবীল বলতে লাবনি পাগল। ছোটবেলা থেকেই নাবীলকে ভালোবাসতো। কিন্তু নাবীল কখনোই লাবনিকে সেই নযরে দেখেনি। এক সময় ওর পাগলামি অনেক বেড়ে যায়। তাই লাবনির বাবা লাবনিকে বিদেশে ওর মামার কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু নাবীলের বিয়ের কথা শুনে কাউকে কিছু না বলেই এখানে চলে আসে আজ।

লাবনি নাবীলকে দেখতে পেয়ে কাছে আসে,

লাবনিঃ কেমন আছো, নাবীল?

নাবীলঃ আলহামদুলিল্লাহ, তুমি কেমন আছো? আর মামা কি জানে তুমি এখানে এসেছো?

লাবনিঃ ওগুলো বাদ দেও, শুনলাম তুমি নাকি বিয়ে করেছো।

নাবীলঃ হুমম, ঠিক শুনেছো।

লাবনিঃ তো সেই লাকি গার্লটাকে, এখনো তো দেখলাম না। কোথায় লুকিয়ে রেখেছো?

নাবীলঃ তেমন কিছু না, ও হয়তো নিশির ঘরে, নিশিকে নিয়ে আসছে।

হিংসুটে ভালোবাসা

এমন সময় মাহি ও নিশি নিচে আসলো।

নিশিঃ ভাবী তোমার জামাইকে বলো সরি বলতে। নিশি মুখ অন্য দিকে ঘুড়িয়ে কথাগুলো বলছে।

নাবীলঃ থাপ্পর চিনোস, তখনতো ধমক দিয়েছি, এখন থাপ্পর দিয়ে দাঁত ফেলে দেবো।

নিশির মন খারাপ বলে, মাহি নাবীলের কাছে এসে বলতে নিবে, সরি বলার জন্য, তখনি নাবীল মাহির দিকে এমন ভাবে তাকালো বেচারী ভয়ে নিশিকে বললো,

মাহিঃ নিশি উনার তরফ থেকে আমি সরি বলছি। উনি বলা আর আমি বলা একই কথা, ঠিক না। এখন রাগকে ঝেড়ে নিচে ফেলে দেও, খালা ঝাড়ু দিয়ে বাহিরে ফেলে দিয়ে আসবে।

মাহির এমন কথা শুনে নিশি হেসে কুটিকুটি হয়ে যাচ্ছে।

নিশিঃ ভাবী তুমি এমন কেনো? এই কারণেই বলি, ভাইয়া তোমার উপর এমন ফিদা কেনো!

মাহিঃ এ্যা, আমি আবার কি করলাম!

নাবীলঃ সেটা তুই বুজবি না, এখনোও তুই বাচ্চা তো। আগে বড় হো, তারপর সব বুঝে যাবি, বলে মাহির হাতটা ধরে লাবনির সামনে নিয়ে আসে, লাবনি এটা আমার মাহি।

মাহির এক কাধে হাত রেখে মাহিকে কাছে টেনে পরিচয় করিয়ে দেয় নাবীল। মাহি কিছুটা অবাক নাবীল এভাবে সবার সামনে কাধে হাত রেখে জরিয়ে পরিচয় করাচ্ছে বলে।

নাবীলঃ আর মাহি উনি আমার কাজিন। অর্কের বড় বোন, আর তোমার ননদ।

মাহিঃ ওওও, হায় আপু, কেমন আছেন?

লাবনি কোন জবাব না দিয়ে, মাহিকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত খুব ভালো করে পর্যবেক্ষণ করছে।

মাহি বুঝে উঠতে পারছে না কি সমস্যা?

কিন্তু নাবীল বুঝে গেছে, লাবনি কি দেখছে?

নাবীলঃ আচ্ছা লাবনি, পরে কথা বলবো। এখন আমার নাস্তা করে অফিসে যেতে হবে। মাহি তাড়াতাড়ি নাস্তা রেডি করো।

নাবীল চলে গেলো খাবার টেবিলে। মাহিও পিছে পিছে চলে গেলো।

মাহি নাবীলকে নাস্তা বেরে দিচ্ছে, আর তাওহিদ ও নাবীল কথা বলছে।

তাওহিদঃ নাবীল তুই অফিস সামলা আজ। আমি ফ্যাক্টরী থেকে ঘুরে আসি। ওখানকার কাজের কি অবস্থা দেখে আসি?

নাবীলঃ ওকে, ভাইয়া।

এদিকে লাবনি নাবীলের দিকে তাকিয়ে আছে। নাবীল মাহির হাত ধরে নিজের পাশের চেয়ারে বসিয়ে দিলো। আর নিজেই মাহিকে নাস্তা বেরে দিচ্ছে, তা দেখে লাবনি দাঁতে দাঁত কটমট করছে।

লাবনিঃ এটা আমার অধিকার ছিলো নাবীল শুধু আমার। (মনে মনে কথাগুলো বলে চলছে)

তৃতীয় ভালোবাসার আগমন

নাবীল মাহির কাছ থেকে কোট আর ব্যাগটা নিয়ে মাহির গালটা ধরে বায় বলে চলে গেলো।

আর লাবনি নাবীলের যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকলো।

নাবীল অফিসে গিয়ে সবার আগে ওর মাকে কল করলো,

নাবীলঃ মা, আমি।

নাবীলের মাঃ হে বল বাবা, কিছু ভুলে গেছোস।

নাবীলঃ না মা, একটা কথা ছিলো।

নাবীলের মাঃ বল।

নাবীলঃ মা, মাহি….।

নাবীলের মাঃ তোকে কিছু বলতে হবে না, আমি মাহির খেয়াল রাখবো। আর লাবনি থেকে দূরে রাখবো। তুই চিন্তা করিস না। আমি ভালো করেই বুজতে পারছি লাবনি এখানে কেনো আসছে। আমি ওর বাবাকে ফোন দেবো যতো তাড়াতাড়ি পারে ওকে যাতে নিয়ে যায় এখান থেকে।

নাবীলঃ ঠিক বলছো, মা। ও যতো তাড়াতাড়ি চলে যাবে ততই ভালো আমার জন্য। তা না হলে আমার সংসার করার আগেই ঘর ভেঙ্গে যাবে।

নাবীল কিছুটা রিলাক্স হলো এখন, তবুও লাবনি যতোদিন থাকবে টেনশনে থাকতে হবে।

এদিকে মাহি সারাদিন ঘরের কাজ আর নাবীলের কাজিনদের সাথে গল্প করে কেটে গেলো। ফাঁকে ফাঁকে নাবীলও অনেকবার কল দিয়েছে মাহির খোঁজ নেবার জন্য। কিন্তু লাবনির সাথে তেমন কথা হলো না। মাহি বুজতে পারলো লাবনির হয়তো তাকে পছন্দ করে না। মাঝে মাঝে কথার ফাজকে কিছু ঠেস মেরে কথা বলছে মাহিকে। তাই মাহিও আর আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যায় নি।

সন্ধ্যার পর মাহি তার ঘরেই ছিলো আর বের হয়নি। কাপড়গুলো ভাজ করছে।

নাবীল এসে দেখে সবাই ড্রয়িংরুম এ কিন্তু মাহি নেই।

নাবীলঃ নিশি, তোর ভাবী কোথায়?

নিশিঃ ভাবী রুমে, ভাইয়া।

নাবীলঃ ওকে। বলে চলে জেতে নিলে।

লাবনিঃ কিরে নাবীল, এসেই বউকে খুজছোস? আমাদের মনে হয় চোখে দেখস না।

নাবীলঃ বউটা আমার, তাই আমি খুঁজবো নাতো কে খুঁজবে?

নিশিঃ কি যে বলো লাবনি আপু, নাবীল ভাইয়াতো ভাবীকে চোখে হারায়। ভাবীকে একদিনও তার বাবার বাড়ীতে থাকতে দেয়নি। আর ভাইয়া বাসায় থাকলে তার আসে পাশে ভাবী না থাকলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে দেয়। যেনো মাহি ভাবী ছোট বাচ্চা একা ছেড়ে দিলেই হারিয়ে যাবে।

সবাই হা হা করে একত্রে হেসে দিলো।

নাবীলঃ বড্ড পেকে গেছোস তুই নিশা! দাঁড়া তোকে বিদায় করার ব্যবস্থা করতে হবে এবার।

নিশিঃ শখ কতো। (মুখ ভেঙ্গচিয়ে) উচিৎ কথা বললেই আমি খারাপ। যাও, তোমার মাহি বেবির কাছে।

আবার সবাই হেসে দিলো।

নাবীল বুজতে পারছে এরা আজ নাবীলকে হেস্তনেস্ত করে ছারবে। তাই কিছু না বলে রুমে চলে গেলো।

ভালোবাসার কাঁটা

নাবীল রুমে গিয়ে দেখে মাহি ধোয়া কাপড়গুলো ভাজ করছে। তাই চুপিচুপি গিয়ে পেছন দিয়ে মাহির কোমড় জরিয়ে ধরলো।

মাহি প্রথমে ভয় পেলেও বুঝতে বেশিক্ষণ লাগেনি কে এটা? কারণ নাবীলের শরীলের এর ঘ্রাণটা মাহি খুব ভালো করে চিনে গেছে এ কয়েকদিনে।

মাহিঃ এটা কি করছেন? ছাড়ুন। দরজা খোলা কেউ এসে পরলে তখন।

নাবীলঃ কে আসবে? সবাই গল্প করছে।

মাহিঃ ওওওও, তাহলে জান আপনেও ফ্রেস হয়ে নিচে গিয়ে গল্প করুন।

নাবীলঃ আমার মাহি যেখানে নেই আমি ওখানে গিয়ে কি করবো? কিন্তু তুই এ সময় এখানে কেনো?

মাহিঃ এমনেই। ভালো লাগছিলো না।

নাবীলঃ কেনো, দেখি শরীলে জ্বর আসছে নি।

মাহিঃ আরে না, এমনেই।

মাহির কাধে মুখ রেখে,

নাবীলঃ কি হয়েছে মাহি বল আমায়? আমি তোকে তোর থেকেও বেশি চিনি, তাই মিথ্যা কথা একদম না।

মাহিঃ লাবনি আপু!

নাবীল কাধ থেকে মুখটা উঠিয়ে,

নাবীলঃ লাবনি তোকে কিছু বলছে।

মাহিঃ তেমন কিছু না। কিন্তু আমার মনে হয় সে আমাকে পছন্দ করে না। কেমন ভাবে তাকিয়ে থাকে? আবার মাঝে মাঝে ঠেস মেরে কথা বলে। কেনো এমন করছে বুঝতে পারছি না? আমি কি তাকে জিঙ্গেস করবো?

নাবীলঃ আরে বাদ দে, ওওওও এমনি। ওকে নিয়ে এতো বেশি চিন্তা করার কিছুই নেই। এখন বল, সারাদিন আমাকে মিস করেছোস।

মাহিঃ না তো, একদমই না। আমি কেনো আপনাকে মিস করতে যাবো?

নাবীলঃ তাই! নাবীল মাহির ঘাড়ে একটা কামড় দিয়ে দিলো।

মাহিঃ আউচ, রাক্ষস কোথাকার?

নাবীলঃ জামাইকে মিস না করার প্রতিদান এটা, বুজলি।

হঠাৎ দরজা খুলে লাবনি ঘরে ঢুকে পরে।

নাবীল ও মাহি দুজনেই অপ্রস্তুত ছিলো, তাই দুজনে একটু দূরে সরে যায়।

নাবীলঃ আরে লাবনি, দরজা নক করে তো ঢুকবি। এখন আর আমি একা নই।

লাবনিঃ ও সরি, আসলে ভুলে গেছিলাম। তোমার জন্য কফি আনছি।

নাবীলঃ সরি লাবনি, আমি এখন চা খাই। তাও আবার শুধু মাহির হাতের।

লাবনিঃ কিন্তু তুমিতো আগে চা খেতে না।

নাবীলঃ হুমমম। কিন্তু মাহির হাতে চা ছাড়া আর কারো হাতের চা খাই না, আমি।

মাহি আমার কাপড়গুলো বের করে এক কাপ চা নিয়ে আস, আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।

নাবীল চলে গেলো।

মাহিঃ আপু আপনে কষ্ট করতে গেলেন কেনো? আমিই আসছিলাম, দেখুন আপনার কষ্টটা বৃথা গেলো। যাই হোক, কফিটা আমাকে দিন। আর আপনে নিচে গিয়ে সবার সাথে বসুন, উনি এখন চেন্জ করবে।

লাবনি রাগে গজগজ করতে করতে নিজের রুমে চলে গেলো। চলবে…

পরের পর্ব- রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – ভাইয়ের বন্ধু বর পর্ব ২২

সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *